বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে শিক্ষা নিতে। কিন্তু স্কুলে যদি শিক্ষিকারা পডাশোনা না করিয়ে ফোনে ব্যস্ত থাকতেন, ভাবতেই কেমন লাগছে তাই তো! কিন্তু এবারে এমনটাই অভিযোগ উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশের এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, স্কুলের শিক্ষিকারা পড়ুয়াদের না পড়িয়ে স্কুলে এসে রিলস বানাতে ব্যস্ত থাকেন। শুধু তাই নয়, সেসব রিলস লাইক, শেয়ার করতে বাধ্য করা হয় পড়ুয়াদের। ফলে তাদের অভিভাবকেরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। জানা গিয়েছে, ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের আমোরা জেলার।
সূত্রের খবর, অভিযোগ উত্তরপ্রদেশের আমোরা জেলার এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকারা স্কুলে এসে রিলস বানান। পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, কয়েকজন শিক্ষিকা বিভিন্ন গানে রিলস বানান ও কিছুজন সেই রিলস ভিডিও শ্যুট করে দেন। এর পর সেই ভিডিও পড়ুয়াদের দিয়ে লাইক, শেয়ার করান। এখানেই থেমে থাকেননি শিক্ষিকারা। কিছু পড়ুয়া দাবি করেছে, শিক্ষিকারা তাদের দিয়ে চা বানানোর কাজ করান, এমনকি বাসন মাজানোরও কাজ করান।
শিক্ষিকাদের এমন কাণ্ডেই বিরক্ত হয়ে পড়ুয়াদের অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ জানান। তাঁরা জানান, শিক্ষিকাদের এমন আচরণে তাঁদের সন্তানরা ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পাচ্ছে না। জেলা প্রশাসকের কাছে এসব জানাতেই তিনি জানিয়েছেন, ব্লক এডুকেশন অফিসার এই ঘটনার তদন্ত করছে। আর এই অভিযোগগুলো সত্যি কিনা তা জানতে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বিষয়টি।
বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নদীর ধারে রিলস বানাতে ব্যস্ত, আর এই অবস্থায় নদীতে তলিয়ে গেল তিন বন্ধু। তবে বিপদের আঁচ টের করতে পারেননি বাকি বন্ধুরা। কিন্তু যখন তাঁরা বুঝতে পারলেন, তখন অনেকটাই দেরী হয়ে যায়। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি বিহারের (Bihar) পূর্ব চম্পারন জেলার মোতিহারির (Motihari)। গত রবিবার টিকুল্যা (tikulya) ধাবা ঘাটে ঘটে এই দুর্ঘটনাটি।
সূত্রের খবর, সত্যম নামে এক বন্ধুকে দেখতে গিয়েছিলেন সাত জন বন্ধু। এরপর মোতিহারির টিকুল্যা ধাবা ঘাটে তাঁরা রিলস বানাতে, আড্ডা দিতে ও সেলফি তুলতে আসেন তাঁরা। তবে তাঁদের মধ্যে তিনজন বন্ধু নদীতে নামেন ও অন্যদিকে বাকি চারজন নদীর ধারে দাঁড়িয়েই রিলস বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আর ঘটে যায় দুর্ঘটনা। তিনজন যে কখন জলে তলিয়ে যান, বাকিরা সেটা বুঝতেই পারেননি। এরপর যখন বুঝতে পারেন যে, নদীতে কিছু হয়েছে, তখন তাঁরা চেষ্টা করেও তাঁদের বাঁচাতে পারেননি।
এরপরই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মোতিহারির পুলিস। তাঁরা নদী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের নাম প্রিন্স কুমার (১৪), আকচার কুমার (১৪) ও মনজিৎ কুমার (১৫)। তাঁরা প্রত্যেকেই জামালিয়ার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন পুলিস। বাকি চারজনের মধ্যে এক বন্ধু গোলু বলেন, তাঁরা এক তিন চাকার গাড়িতে করে এসেছিলেন বন্ধু সত্যমের সঙ্গে দেখা করতে। তখনই রিলস বানাতে তাঁরা নদীর পাড়ে গিয়েছিলেন। আর এরপরেই তাঁরা তাঁদের তিন বন্ধুকে হারিয়ে ফেলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক ও ফলোয়ার্সের 'দৌড়ে' প্রাণ হারাল এক যুবক। ইনস্টাগ্রামে (Instagram) রিল বানানোর জন্য রেললাইন ধরে দৌড়তে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ল নবম শ্রেণির এক ছাত্র। ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদের (Hederabad) সনৎনগরে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে মৃতের নাম মহম্মদ সরফরাজ। বয়স ১৬ বছর। সমাজমাধ্যমে সাহসী ভিডিও পোস্ট করতে গিয়ে রেললাইন ধরে দৌড়চ্ছিল সরফরাজ ও তার বন্ধুরা। তাদের মধ্যে বাজি ছিল ট্রেনের সামনে দৌড়তে হবে। ফোনে ভিডিও করছিল এক বন্ধু। বাকি দুই বন্ধু পাশের রেললাইন ধরে একটি চলন্ত ট্রেনের সমান্তরালে দৌড়চ্ছিল। হঠাৎ ঘটে এই দুর্ঘটনা। ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় যুবকের দেহ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয়েরা। খবর দেওয়া হয় পুলিসকেও। পুলিস এসে রেললাইনের ধার থেকে যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে সরফরাজের মোবাইল ফোন। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দুই বন্ধুকেও। ঘটনার জেরে শোকস্তব্ধ ওই এলাকা।
রিলস (Reels) করার খেসারত! রিলসের নেশা এতটাই যে এবারে এই রিলস বানাতে গিয়েই প্রাণ হারাতে হল নেপালের এক ২০ বছরের যুবককে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ট্রেন দেখতে গিয়ে রেল ট্র্যাকে রিলস বানানোর সময় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
জানা গিয়েছে, নেপালের এই যুবকের নাম প্রকাশ মঙ্গল বিকে। তিনি নেপালের কৈলাসনগরের বাসিন্দা। তবে তিনি বর্তমানে গুজরাটে থাকতেন। প্রকাশের দাদা অনিল জানিয়েছেন, জীবনে এর আগে একবারও ট্রেন দেখার সুযোগ পাননি তাঁর ভাই প্রকাশ। তাই প্রকাশ তাঁকে ও বন্ধুদের বলেছিলেন, ট্রেন দেখাতে নিয়ে যেতে। এরপর তাঁকে ট্রেন দেখাতে নিয়ে যান সতভল্লা ব্রিজের নীচে। সেখানে ট্রেন দেখে উন্মাদনা ধরে রাখতে পারেননি প্রকাশ। ফলে ট্র্যাকে দাঁড়িয়েই রিলস ভিডিও বানাতে বলেন তাঁর ভাই। আর তখনই পিছন থেকে গান্ধীধাম এক্সপ্রেস এসে প্রকাশকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃ্ত্যু হয় প্রকাশের।
সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) খুললেই আজকাল রিলের (Reel) ঝড়। অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে মাঝবয়সী, এমনকি বয়স্করাও আসক্ত হয়ে পড়েছেন ইনস্টাগ্রাম রিলের দুনিয়ায়। আর রিল বানাতে গিয়ে কত আতরঙ্গি কাজটাই না করছেন? অনেকে কয়েক সেকেন্ডের রিল বানাতে গিয়ে নিচ্ছে জীবনের ঝুঁকি। রবিবার দিল্লির (Delhi) নজফগড়ের এক কিশোরের ঝুলন্ত দেহ (Hanging Body) উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, নেট দুনিয়ার জন্য ভিডিও শ্যুট করতে গিয়েই এমন দুর্ঘটনা। তবে সত্যি দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা করেছে ওই কিশোর তা তদন্ত করে দেখছে পুলিস।
পুলিস জানিয়েছে, যখন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, তখন কিশোরের পরনে ছিল তার মায়ের শাড়ি এবং মেক আপ। আর সেই অবস্থাতেই ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় মৃতদেহ। পুলিস মনে করছেন, ইনস্টা রিল বানাতে গিয়েই হয়তো মৃত্যু হয়েছে কিশোরের। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা অবধি এবিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। ওই কিশোরের বাবা-মা বাজারে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন ঘরের মধ্যে ঝুলছে ছেলে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুতে আসেন, থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। কিশোরের বাবা-মা জানিয়েছেন, তাঁদের ছেলে মোবাইলে আসক্ত ছিল। কিশোরের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, কিশোর কোনো সুইসাইড নোট লিখে যায়নি। তবে মোবাইলের সমস্ত কিছু দেখা হচ্ছে। এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন।