অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার ডিপফেক ভিডিও নিয়ে যখন সারাদেশে শোরগোল পড়ে গিয়েছে, সেসময়ই আরও এক বিকৃত ভিডিও এল প্রকাশ্যে। সেই ভিডিওতেও দেখা যাচ্ছে, স্বল্প পোশাক পরে নাচছেন রশ্মিকা। মুখে চোখে অদ্ভুত অভিব্যক্তি। তবে উনি যে রশ্মিকা নন, প্রায় সবাই বুঝতে পারছেন এটি ডিপফেকের কারসাজি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ভীষণই রেগে রশ্মিকার ভক্তরা। কেন বারংবার রশ্মিকাকে সাইবার ক্রাইমের শিকার হতে হচ্ছে, তা নিয়েই প্রশ্ন করছে তাঁর অনুরাগীরা। অন্যদিকে আগের ডিপফেক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর এবারে সরব হয়েছে দিল্লি পুলিসও। এবারে সেই ভিডিও-র নেপথ্যে কে রয়েছে, তাকে ধরতে এফআইআর দায়ের করল দিল্লি পুলিস।
দিল্লি পুলিস সূত্রে খবর, যে অ্যাকাউন্ট থেকে রশ্মিকার ডিপফেক ভিডিও শেয়ার করা হয়েছিল, সেই অ্যাকাউন্টের গুরুত্বপূর্ণ নথির জন্য দিল্লি পুলিস এবার মেটাকে চিঠি দিয়েছে। শহরের পুলিস ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি এফআইআর দায়ের করার একদিন পরে এই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছিল। ভিডিও নিয়ে দিল্লির মহিলা কমিশন নোটিস পাঠানোর পরই এফআইআর জারি করেছে দিল্লি পুলিস। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৫, ৪৬৯ ধারায় এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত আইনের ৬৬সি ও ৬৬ই ধারায় জারি করা হয়েছে অভিযোগ। কড়া পদক্ষেপ নেওয়াও হয়েছে সরকারের তরফে। কিন্তু এত কিছুই মধ্যেই রশ্মিকার আরও এক ডিপফেক ভিডিও ভাইরাল। ফলে দিল্লি পুলিসের হাতে আসল অপরাধী ধরা পড়বে কিনা সেটাই এখন দেখার।
রশ্মিকা মান্দানা (Rashmika Mandanna) 'ডিপফেক' (Deepfake) ভিডিও-র পর অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফের (Katrina Kaif) বিকৃত ছবি নিয়েও শোরগোল পড়ে গিয়েছে সারা দেশজুড়ে। এবারে কেন্দ্রের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ার উদ্দেশে নির্দেশিকা জারি করা হল। 'ডিপফেক' ভিডিও-র বাড়বাড়ন্তের মাঝে সমাজমাধ্যমগুলির কাছে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা ডিপফেক ভিডিও আটকাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেবে সরকার, এমনটাই জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের তরফে সোশ্যাল মিডিয়াকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেখানে উল্লেখ করা রয়েছে, কোনও ব্যক্তি যদি অন্য কোনও ব্যক্তির ছবি-ভিডিও বিকৃত করেন, তবে তাঁর তিন বছরের জেল বা তাঁকে ১ লক্ষ টাকার জরিমানা হতে পারে। এছাড়াও কোনও বিকৃত ছবি বা ভিডিও শেয়ার হওয়ার পর কোনও রকমের অভিযোগ আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সব রকমের সমাজমাধ্যম থেকে মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
রশ্মিকা (Rashmika Mandanna) এখন আর কেবল দক্ষিণী অভিনেত্রী নন, সর্বভারতীয় অভিনেত্রীর পালক নিজের মুকুটে বসিয়েছেন কবেই। নামমাত্র নয়, সারা ভারতের মানুষ তাঁকে নিজের করে নিয়েছেন কবেই। এত ভালোবাসা অবশ্য রশ্মিকা নিজেই অর্জন করেছেন। অফ ক্যামেরা অভিনেত্রীর ব্যক্তিত্ব সকলের খুব পছন্দের। তাঁর জনপ্রিয়তা এত বেশি, প্রতি সিনেমা পিছু তাঁর পারিশ্রমিক কম নয়। কিন্তু রশ্মিকার চলনে বলনে পোশাকে একেবারেই তারকাসুলভ কোনও উচ্চকিত যাপন দেখা যায় না। সম্প্রতি অভিনেত্রীর কাণ্ড দেখে দর্শক আবারও রশ্মিকাতে মুগ্ধ হয়েছেন।
অনেকেই জানেন না, একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর পিছনে একটি বড় টিমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। এই দলই অভিনেত্রীর দশ হাতের মতো দশ দিক সামলান। এই দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সহকারী। ছায়ার মতো এই সহকারীরা তারকাদের সাহায্য করেন। রশ্মিকার জীবনেও এমন সহকারী রয়েছেন। সম্প্রতি তাঁরই বিয়েতে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই ছবি এখন ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে।
ছায়া সঙ্গিনী সহকারীর বিয়েতে, রশ্মিকাকে দেখা গিয়েছে একেবারে দরাজ হাসিতে। বিশেষ সাজ নেই, লাখ টাকার গয়না নেই। রশ্মিকাকে দেখা গিয়েছিল হলদেটে কমলা রঙের একটি শাড়িতে। সাজের লেশমাত্র নেই। এত বড় অভিনেত্রী হয়েও রশ্মিকাকে এত সাধারণ সাজে দেখে প্রশংসার বন্যা বইয়েছেন নেটিজেনরা।
কিছুদিন আগেই সামাজিক মাধ্যমে রশ্মিকা মন্দনাকে (Rashmika Mandanna) নিয়ে একটি খবর ছয়লাপ হয়েছিল। অভিনেত্রীর (Actress) সঙ্গে নাকি তাঁর বহু পুরনো ম্যানেজারের বনিবনা হচ্ছে না। শোনা গিয়েছিল, রশ্মিকা নাকি তাঁর ম্যানেজারকে কাজ থেকে বরখাস্ত করেছেন। কিন্তু কেন? গুঞ্জন ছড়িয়েছিল, অভিনেত্রীর ম্যানেজার নাকি প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছেন তাঁর সঙ্গে। তাই নাকি রশ্মিকা তাঁকে কাজ থেকে সরাতে বাধ্য হয়েছিলেন।
যদিও অভিনেত্রী এই বিষয়ে চুপ থেকে ছিলেন প্রথম থেকেই। তবে এই বিষয়ে এবার রশ্মিকা এবং তাঁর ম্যানেজার এবার মুখ খুললেন। 'আমাদের মধ্যে কোনও নেগেটিভিটি নেই। আমরা স্বতন্ত্রভাবে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা কীভাবে আলাদা হয়েছি, এই বিষয়ে যে গুজব ছড়াচ্ছে তা সত্যি নয়। আমরা আপাদমস্তক পেশাদার এবং স্বাধীনভাবে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
রশ্মিকা মন্দনার পরবর্তী সিনেমা এনিমেল। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করবেন অভিনেতা রণবীর কাপুর। পুরো টিমের সঙ্গেই অভিনেত্রীর ভালো সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। বেশ মজা করেছেন শ্যুটিংয়ে। এবার কেবল মুক্তির অপেক্ষা।
তারকাদের জীবনে ম্যানেজারদের অনেক গুরুত্ব। তাঁদের মুখপাত্র ম্যানেজাররাই। অভিনেত্রীদের কাজের শিডিউল থেকে টাকা পয়সার হিসেবে থাকে ম্যানেজারদের কাছেই। আর এই ম্যানেজারদের অবাধ ভরসা করেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা (Actress)। কিন্তু এই বিশ্বাসযোগ্য মানুষেরাই মাঝেমধ্যে ঠকান। এমন কাণ্ড ঘটল অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দনার (Rashmika Mandanna) সঙ্গে। তাঁর ম্যানেজার নাকি প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছেন।
সূত্রের খবর, অভিনেত্রীর কেরিয়ারের একেবারে প্রথম থেকেই তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ওই ম্যানেজার। অভিনেত্রীর ভরসার হাত ছিলেন তিনি। সেই ম্যানেজারই নাকি ৮০ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে রশ্মিকার থেকে। তবে সেই কথা গোপনে থাকেনি। অভিনেত্রী এই খবর পাওয়া মাত্রই নাকি ম্যানেজারকে কাজ থেকে বহিস্কার করেছেন। তবে অভিনেত্রী নাকি চান না একথা চার কান হোক। তাই এই নিয়ে কথা বলতে রাজি নন অভিনেত্রী।
বলিউডে তাঁর পরের ছবি 'অ্যানিম্যাল'। অভিনেতা রণবীর কাপুর এবং ববি দেওলের সঙ্গে দেখা যাবে তাঁকে। চলতি বছরের আগস্ট মাসেই মুক্তি পেতে চলেছে সিনেমাটি। বর্তমানে অবশ্য রশ্মিকা ব্যস্ত রয়েছেন পুষ্পা ২-এর শ্যুটিংয়ে। এত ব্যস্ততার মাঝে ম্যানেজারের কুকীর্তিতে সমস্যায় পড়লেন অভিনেত্রী।
দক্ষিণী সিনেমার জগৎ পেরিয়ে সর্বভারতীয় অভিনেত্রী হয়ে উঠেছেন রশ্মিকা মন্দনা (Rashmika Mandanna)। তাঁর অভিনয় জীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও সাধারণ মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ নিয়েও সকলেই অবগত। এক সাক্ষাৎকারে রশ্মিকা বলেছিলেন তিনি ভেগান অর্থাৎ নিরামিষাশী (Vegetarian)। সেই রশ্মিকাকে তাঁর বক্তব্যের বিরুদ্ধাচরণ করতে দেখে অবাক হলেন নেটিজেনরা। সম্প্রতি এক বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রীকে। সেই নিয়েই তাঁর ভক্তদের মনে সমালোচনার ঝড়।
বিজ্ঞাপনটি বিশ্বব্যাপী এক খাবার সংস্থার। সেই প্রতিষ্ঠানের হয়েই মুখ দেখা গিয়েছে রশ্মিকার। বিজ্ঞাপনটি যেহেতু খাবারের তাই রশ্মিকা সেই খাবার চেখে দেখলে প্রচার আরও শক্তিশালী হবে, সেই ভেবেই বিজ্ঞাপনটি করা হয়েছে। একটি বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে বার্গারে রসনা তৃপ্তি করছেন রশ্মিকা। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল কিন্তু সমস্যা আরও একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে। সেই বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে, মাংসের টুকরো দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে খাচ্ছেন অভিনেত্রী। এই বিজ্ঞাপন দেখে বেশ রেগে গিয়েছে জনতা।
অভিনেত্রী নিজের সামাজিক মাধ্যমে এই বিজ্ঞাপন শেয়ার করেছেন। এক নেটিজেন লিখেছেন,'দ্বিচারিতা করে প্রথমে রশ্মিকে বলেছিলেন তিনি নিরামিষাশী, এখন চিকেন বার্গার খাচ্ছেন।' যদিও এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি রশ্মিকা। বরং নিজের কাজেই মন দিয়েছেন তিনি।
রশ্মিকা মন্দনা (Rashmika Mandanna), দক্ষিণী সিনেমার জগতে নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছিলেন আগেই। তাঁর অভিনয়, অভিব্যক্তি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা এনে দিচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু একটি গান তাঁর জীবন রাতারাতি বদলে দেয়। 'পুষ্পা-দ্য রাইজ' (Pushpa-The Rise) ছবিতে 'স্বামী স্বামী' গানে নাচতে দেখা গিয়েছিল রশ্মিকাকে। হুক স্টেপ ও রশ্মিকার মুখের ভাব নিমেষেই ঝড় তোলে বিনোদন জগতে। দর্শক বুঁদ হয়ে যায় 'স্বামী স্বামী'র নেশায়। ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম ছেয়ে যায় রশ্মিকার নাচের ভিডিওতে।
এরপর থেকে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান হোক কিংবা রিয়েলিটি শো, রশ্মিকা উপস্থিত রয়েছেন মানেই তাঁকে 'স্বামী স্বামী' গানে নাচ করার অনুরোধ করা হয়েছে। রশ্মিকাও সেই অনুরোধ রেখে এসেছেন এতদিন। এমনকি অন্য সিনেমার প্রচারে গিয়েও এই গানে নাচ করার অনুরোধ করা হয়েছে অভিনেত্রীকে। কিন্তু এইবার থেকে আর হয়তো অনুরোধ রাখবেন না রশ্মিকা।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি প্রশ্ন ও উত্তর পর্বে অংশ নেন রশ্মিকা। সেইখানেই এক ভক্ত লেখেন, তিনি রশ্মিকার সঙ্গে 'স্বামী স্বামী' গানে নাচতে চান। উত্তরে অভিনেত্রী বলেন,'আমি এই গানে অনেক বার নেচেছি, আর এই গানে নাচব না।' রশ্মিকা কি পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিলেন, এইবার তাঁকে এই গানে নাচ করার অনুরোধ করলেই তিনি সেই অনুরোধ রাখবেন না!
প্রসঙ্গত এই গানটিই 'দক্ষিণী অভিনেত্রী'র তকমা ঘুচিয়ে, সর্বভারতীয় অভিনেত্রী করে তুলেছে তাঁকে। বলিউডে অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে তাঁর ডেবিউ হয় 'গুডবাই' ছবি দিয়ে। কিন্তু যেই 'স্বামী স্বামী' গানের প্রচারের আলোয় রশ্মিকার উত্তরণ, সেই আলোতেই যেন ঢাকা পড়ে যাচ্ছিলেন কোথাও। তাই বোধহয় 'পুষ্পার' বাইরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে স্বপ্রণোদিতভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিলেন রশ্মিকা।