কয়লাখনিতে চাল ধসে মৃত্য়ু হল দুজনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি আরও ২ জন। ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে আসানসোলের রানিগঞ্জের কুনুস তরিয়া এলাকায়। ঘটনাস্থলে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে সরব হন তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএম নেতারা।
বিজেপির অগ্নিমিত্রা পলের দাবি, বাংলায় রোজগার নেই। কয়লা পাথর কুড়িয়ে সংসার চলে অনেকের। অবৈধ কয়লা ব্যবসার কারণে রানিগঞ্জে এমন ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।অপরদিকে সিপিএম নেতার দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন এই খনি পরিত্যক্ত হওয়ার পরে তার ফেন্সিং দেওয়া হয় না। কী কারণে ওই চারজন গিয়েছিল তা জানা যায়নি। যদিও তৃণমূলের দাবি যে, কয়লা খনিতে মৃত্যু হয়েছে সেখানে সুরক্ষার অভাব।
প্রসঙ্গত, বিগত দিনেও দেখা গিয়েছে আসানসোলের বিভিন্ন জায়গায় কয়লা কাটতে মধ্য রাতে শ্রমিকরা কয়লা খনিতে গিয়েছিল। ভোরবেলা তারা আবার চলে যায়। তবে এখানের ঘটনার কী কারণ তা তদন্তের পর জানা যাবে।
শাহরুখের জওয়ান-এর (Shahrukh Khan) বিজয়রথ এখনও অব্যাহত। সিনেমাটি মুক্তির ৩৩ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর সারা ভারত এবং সারা বিশ্বে সিনেমাটির বক্স অফিস কালেকশন ১১১৭ কোটি টাকা। এখনও জওয়ান দেখতে হলমুখী হচ্ছেন দর্শকেরা। কিন্তু শাহরুখের সাফল্য অনেকটা ঢেকে দিয়েছে অভিনেতা অক্ষয় কুমারকে (Akshay Kumar)। সম্প্রতি তাঁর অভিনীত সিনেমা মিশন রানিগঞ্জ মুক্তি পেয়েছে। বলিউডের খিলাড়ি কুমার এইবার বক্স অফিসে নিজের জায়গা করতে পারলেন না।
৬ অক্টোবর সারা ভারতে মুক্তি পেয়েছিল অক্ষয় কুমার অভিনীত সিনেমা 'মিশন রানিগঞ্জ'। একেবারে বাস্তব থেকেই অনুপ্রাণিত সিনেমার প্রেক্ষাপট। সিনেমার ট্রেলার দর্শকদের পছন্দ হলেও সিনেমাহলে দর্শকদের ভালোবাসার প্রতিফলন দেখা গেল না। মুক্তির দিন সিনেমাটি উপার্জন করেছিল ২.৮ কোটি টাকা। এরপর সেই সংখ্যা আবারও ঊর্ধ্বমুখী হলেও সোমবার সিনেমার কালেকশন আবারও মুখ থুবড়ে পড়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত মিশন রানিগঞ্জের উপার্জন ১৪.১০ কোটি টাকা।
অর্থাৎ 'জওয়ান' সিনেমার সামনে যে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি অক্ষয়ের 'মিশন রানিগঞ্জ' তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যদিও নিজেদের মধ্যে কোনও রেষারেষি রাখতে চান না বলিউড তারকারা। এর আগে অক্ষয় একেবারে প্রকাশ্যে জওয়ান-এর প্রশংসা করেছিলেন। বলিউডে 'জওয়ান'-ই একমাত্র সিনেমা যা রেকর্ড ব্রেক করেছে।
অভিনেতা অক্ষয় কুমারকে (Akshay Kumar) 'বায়োপিক সম্রাট' বললে খুব একটা ভুল হবে না। তাঁর আগের সিনেমাগুলি অন্তত তাই-ই বলছে। 'এয়ারলিফ্ট', 'রুস্তম', 'গোল্ড', 'প্যাডম্যান', 'সম্রাট পৃথ্বীরাজ' প্রত্যেকটিই বায়োপিক। তবে এই লিস্ট বোধহয় আরও লম্বা হতে চলেছে। কারণ অক্ষয় কুমারের পরবর্তী সিনেমা 'মিশন রানীগঞ্জ' (Mission Raniganj)। সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করেই তৈরী হয়েছে এই সিনেমাটি। মূল চরিত্রে 'খিলাড়ি কুমার'।
'ক্যাপসুল গিল' এর চরিত্রে অভিনয় করবেন অক্ষয়। কে এই ব্যক্তি জানেন? সত্য ঘটনাটি যশওয়ান্ত সিং গিল-এর। পশ্চিমবঙ্গের রানিগঞ্জের কয়লা খাদানে কর্মরত ছিলেন শতাধিক শ্রমিক। এমন সময় আচমকাই জল ঢুকে পড়ে সেই খাদানে। ৬ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল জলের তোড়ে ভেসে। বাকি প্রায় শ্রমিকদের বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন কোল ইঞ্জিনিয়ার যশওয়ান্ত সিং গিল। ঊর্ধ্বতন কর্তাদের আপত্তি সত্বেও তিনি পিছু হটেননি। ৬৫ জন শ্রমিকের জন্য এল হয়ে উঠেছিলেন গিল। লোহা দিয়ে একটি ক্যাপসুলের আকারের যন্ত্র বানিয়ে উদ্ধার করেন শ্রমিকদের। এমনকি গিল নিজে মাটির নিচে নেমে এই উদ্ধারকার্য চালিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে তাঁকে ভারত সরকারের তরফ থেকে পুরস্কৃত করা হয়। এই ক্যাপসুল গিলের চরিত্রেই অভিনয় করবেন অক্ষয় কুমার। ইতিমধ্যেই সিনেমার ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। ছবিতে অক্ষয়ের বিপরীতে অভিনয় করবেন পরিণীতি চোপড়া। ৬ অক্টোবর সিনেমাহলে মুক্তি পাবে ছবিটি।
আসানসোলের রানিগঞ্জের কুয়ার ডিহি এলাকার কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকায় ধস। আতঙ্কে ঘর ছাড়া এলাকাবাসী। জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান এলাকাবাসীরা। এরপর চারদিকে খোঁজ শুরু করেন স্থানীয়রা। দেখতে পান, কোয়ার্টার সংলগ্ন মাঠে একটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যত সময় এগোচ্ছে, গর্তের গভীরতা তত বাড়ছে। এমনকি মাটির নিচ থেকে ভেঙে পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে দাবি করেন গ্রামবাসীরা।
এলাকাবাসীরা জানান, বেশ কিছু বছর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিল, তবে সেটা বেশ দূরে। এবার একেবারে কোয়ার্টারের সামনে চলে এসেছে। ধসের কারণে ও ভাইব্রেশনে কেঁপে উঠছে এলাকা। সরে যাচ্ছে বাড়ির ছাদের এসবেস্টর। বাড়ির দেওয়ালেও ফাটল দেখা গিয়েছে। কোয়ার্টার সংলগ্ন মাঠে এলাকার শিশুরা খেলাধুলা করে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত প্রচুর মানুষের আনাগোনা রয়েছে ওই এলাকায়। এরফলে যথেষ্ট চিন্তিত এলাকাবাসীরা।
এলাকাবাসীর এও দাবি যে, নেতা-নেত্রী থেকে ইসিএল প্রশাসন সবাই দেখে গিয়েছেন। তবুও পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা করেনি। বার বার ধসের মতো ঘটনা ঘটলেও কোনওরকম পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইসিএল আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, এলাকায় আতঙ্ক রয়েছে। বাড়তে পারে ধস। বহু বছর আগে যখন বেসরকারি কয়লাখনি চলত তখন হয়ত মাটির নিচে কয়লা উত্তোলিত হয়েছে। যার ফলে ধসের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তা তদন্তের পরেই বলা যাবে। এই মুহূর্তে ধস এলাকায় ফেন্সিং করা হবে। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাড়ির মহিলা থেকে শুরু করে গোটা এলাকার সকলেরই ঘুম উড়েছে ঘটনায়। তাঁদের কথায়, দিনের বেলা ঘটনা হলে তো বাঁচার উপায় আছে, কিন্তু রাতে হলে কী হবে। কারণ, যে কোনো মুহূর্তে হতে পারে আবারও ধস।