২২ জানুয়ারি ছিল সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত! সেদিন উদ্বোধন করা হয় নবনির্মিত রাম মন্দির ও এর পাশাপাশি গর্ভগৃহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় রামলালা। আর সাধারণের জন্য রাম মন্দিরের দ্বার খোলার পর থেকেই মন্দিরের সামনে জনজোয়ার। ফলে বিপুল সংখ্যক ভক্তদের কথা ভেবেই রাম মন্দিরের দর্শনের সময় পরিবর্তন করা হল। রামলালা দর্শন এখন থেকে ভক্তরা করতে পারবেন ভোর ছ'টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত।
কোটি কোটি মানুষের জনসমাগমে অযোধ্যা ঘিরে প্রবল উৎসাহ সাধারণ মানুষের মনে। প্রথম দিনেই তিন কোটির বেশি অনুদান জমা পড়েছে। এদিকে ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিস। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ তাঁদের পূর্ব নির্ধারিত অযোধ্যা ভ্রমণসূচি স্থগিত রেখেছে। অযোধ্যায় ঢোকার সমস্ত বাস রুটও বন্ধ করে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। তা সত্ত্বেও ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে হাজারে হাজারে মানুষ প্রতিদিন আসছেন রামলালার দর্শনে। আর এরই মাঝে সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই রামলালা দর্শনের সময় পরিবর্তন করা হল। এখন থেকে ভক্তরা রামলালা দর্শন করতে পারবেন ভোর ছটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত। এই সময় টানা খোলা থাকবে রাম মন্দিরের দরজা।
প্রথমে প্রতিদিন রাম মন্দিরের দর্শনের সময় নির্ধারিত হয়েছিল সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১১টা। এরপর আবার দুপুর ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছিল মন্দিরের দরজা। ফের ২টো থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দর্শনের অনুমতি মিলছিল। কিন্তু, কাতারে কাতারে ভক্ত সমাগমের কথা মাথায় রেখে এবার থেকে সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রামলালার দর্শন করতে পারবেন পুণ্যার্থীরা।
আর মাত্র ৫টা দিন। তারপরই ঐতিহাসিক মুহূর্ত! ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই নিয়েই সাজ সাজ রব অযোধ্যায়। শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতিও তুঙ্গে। আর এরই মাঝে ওই দিনই কলকাতায় 'সংহতি মিছিলে'র ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, হাজরা থেকে এই মিছিল হবে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত। এরপরই বুধবার এই মিছিল বন্ধের দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামীকাল এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিনই বাংলায় 'সংহতি মিছিলে'র ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২২ জানুয়ারি এই মিছিলের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই মিছিল পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। শুধু তাই নয়, রামপুজোর দিন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনেরও আর্জি জানালেন শুভেন্দু। তাঁকে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে।
আর মাত্র কয়েকটা দিন! আগামী ২২ জানুয়ারি উদ্বোধন হবে ঐতিহাসিক রাম মন্দির। অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন নিয়ে দেশজুড়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। রাম রাজ্য অযোধ্যায় সাজ সাজ রব। শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। আর এর মাঝেই রাম রাজ্যে জমি কিনলেন বিগ বি অমিতাভ বচ্চন। অযোধ্যায় সেভেন স্টার এনক্লেভে একটি জায়গায় এই জমি তিনি কিনেছেন বলে জানা গিয়েছে। এই জমির দাম স্পষ্ট জানা না গেলেও এক সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, এই জমির দাম ১৪.৫ কোটি।
জানা গিয়েছে, অযোধ্যার রাম মন্দির থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে সরযূ নদীর পারে জমি কিনেছেন অমিতাভ বচ্চন। মুম্বইয়ের নির্মাণ সংস্থা দ্য হাউস অফ অভিনন্দন লোধার বিশাল 'দ্য সরযূ' প্রজেক্টে জমি কিনেছেন বলিউডের শাহেনশাহ। ৫১ একরের জমিটিতে নিজের বাড়ি তৈরি করবেন ও সেই বাড়ি প্রায় ১০,০০০ বর্গফুট হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। অযোধ্যায় জমি কেনা প্রসঙ্গে বিগ বি বলেছেন, 'এই শহরের সঙ্গে আমার আবেগ ও আধ্যাত্মাতিক সংযোগ রয়েছে। এই শহরে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা নির্বিঘ্নে সহাবস্থান করে। আমি এই আধ্যাত্মিক রাজধানীতে আমার বাড়ি নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছি।'
রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আরএসএস-বিজেপির অনুষ্ঠান, তাই থাকবে না জাতীয় কংগ্রেস। মঙ্গলবার অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। দলের তরফে সোনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং অধীর চৌধুরীকে ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাঠিয়েছে রাম মন্দির ট্রাস্ট। কিন্তু নির্মীয়মান রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না সোনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরী এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে।
প্রেস বিবৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানালেন জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমশে। কেন শতাব্দী প্রাচীন এই দলের এই সিদ্ধান্ত। সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছেন জয়রাম রমেশ। প্রেস বিবৃতিতে জয়রাম রমেশ লেখেন, ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র পেয়েছেন কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং রাজ্যসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। দেশে লক্ষ-কোটি মানুষ ভগবান রামের পুজো করেন। ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু আরএসএস-বিজেপি অযোধ্যার রামমন্দিরকে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়েছে। নির্মীয়মান রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ভোটকে মাথায় রেখে এগিয়ে এনেছে বিজেপি-আরএসএস। ২০১৯ সালের সু্প্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানিয়ে দেশের লক্ষ-কোটি মানুষের আবেগকে সম্মান জানিয়ে আরএসএস-বিজেপির এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ সসম্মানে ফিরিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরী এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে।
উল্লেখ্য, ২২ জানুয়ারির এই অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় আসমুদ্র হিমাচল। এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তাঁরা কী করবেন, স্পষ্ট নয় অবস্থান। ইতিমধ্যে মন্দির নগরী নবরূপে নির্মিত রেলস্টেশন এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পেয়েছে। ১৪-২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় চলবে অমৃত মহোত্সব। এদিকে ৩০ ডিসেম্বর অযোধ্যায় গিয়ে কার্যত মূল উৎসবের সূচনা করেন নরেন্দ্র মোদী। এখন সব চোখে ২২ জানুয়ারির সেই পুণ্যক্ষণের দিকে।
আর মাত্র কয়েকটা দিন। আগামী ২২ জানুয়ারি অবশেষে অযোধ্যার রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে। আর সেই উদ্বোধনের আগে আজ অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর, শনিবার অযোধ্যায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন রূপে বিমানবন্দর, রেলস্টেশন উদ্বোধনের পাশাপাশি অযোধ্যাবাসীকে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উপহার দেবেন তিনি। তাই এদিন প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে অযোধ্যা। বিমানবন্দরে গিয়ে অযোধ্যার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অযোধ্যা সফর নিয়ে সাজ সাজ রব। ফুলে ফুলে সেজেছে পথ। মোদীর উপর পুষ্পবৃষ্টি করতে রাস্তার পাশে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। এখন ধর্মপথ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি এগিয়ে চলেছে রেলস্টেশনের দিকে। জনতাকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানিয়েছেন মোদী।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সকাল সাড়ে ১০ টায় অযোধ্যা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ও সেখান থেকেই তাঁর ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রোডশো শুরু হয়। এদিন পুনর্নির্মিত অযোধ্যা রেলওয়ে স্টেশন বা অযোধ্যা ধাম রেলওয়ে স্টেশনের উদ্বোধন করেন এবং নতুন অমৃত ভারত ট্রেন এবং বন্দে ভারত ট্রেনগুলিকে পতাকা দিয়ে উদ্ধোধন করবেন। মোদী আরও কয়েকটি রেল প্রকল্প দেশকে উৎসর্গ করবেন। দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত অযোধ্যা বিমানবন্দর বা মহর্ষি বাল্মীকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্বোধন করবেন। দুপুর ১ টায়, মোদী একটি জনসভায় অংশ নেবেন যেখানে তিনি একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। রাজ্যে ১৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে অযোধ্যা এবং এর আশেপাশের এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রায় ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প এবং উত্তরপ্রদেশ জুড়ে অন্যান্য প্রকল্পগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প। এছাড়াও আজ ৬টি বন্দে ভারত ও ২ টি অমৃত ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। যার মধ্য়ে একটি অমৃত ভারত পাচ্ছে বাংলা।
অবশেষে সমস্ত জল্পনার অবসান করে অযোধ্যা রাম মন্দির (Ayodhya Ram Temple) উদ্বোধনের দিন ঘোষণা করা হল। আগামী বছরের শুরুতেই অযোধ্যা রাম মন্দিরের দরজা খুলে যাবে সর্বসাধারণের জন্য। মঙ্গলবার অযোধ্যায় (Ayodhya) শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্র আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিলেন রামমন্দির উদ্বোধনের দিন। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ২২ জানুয়ারি হবে রাম মন্দিরের উদ্বোধন। ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে কোনও এক শুভ মুহূর্তে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হবে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, এমনকি সেপ্টেম্বরের মধ্যেই রামমন্দিরের এক তলার কাজ শেষ হয়ে যাবে।
রাম জন্মভূমিতে মন্দির তৈরির জন্য ও ভগবান রামের দর্শনের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় ছিলেন দেশবাসী। একাধিক গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল মন্দিরের উদ্বোধনের দিনক্ষণ নিয়ে। অবশেষে মন্দির কমিটির তরফে বহু প্রতীক্ষিত তারিখ ঘোষণা করা হল। নৃপেন্দ্র মিশ্র জানিয়েছেন, ২২ জানুয়ারি দ্বারোদ্ঘাটন হবে অযোধ্যার রাম মন্দিরের। আগামী ১৪ জানুয়ারি, মকর সংক্রান্তির দিনে মন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালার মূর্তি স্থাপন করা হবে। এর পর ২০-২৪ জানুয়ারির মধ্যেই প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর হাতেই রাম মন্দির উদ্বোধন হবে বলে সূত্রের খবর। তবে প্রাণ প্রতিষ্ঠা কবে হবে, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এখনও চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।