
যুদ্ধবাজ রাশিয়ার আচমকা ইউক্রেন আক্রমণে নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। অহেতুক নিজেদের ওই দেশে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্যই নাকি এই আক্রমণ। আমেরিকা সহ ন্যাটো দেশগুলি বারংবার অনুরোধ রাখার পরেও ভ্লাদিমির পুতিন নিজের জায়গায় জেদ ধরে বসে আছেন যে ইউক্রেনকে মাথা নত করতে হবে। শান্তিপ্রিয় দেশগুলি ক্রমাগত অনুরোধ করছে পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য। পুতিনকে ক্রমাগত উস্কানি দিচ্ছে চিন উত্তর কোরিয়া সহ কমিউনিস্ট দেশগুলি, এরই মধ্যে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ভারতের প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তিনি কোন পক্ষ নেবেন সম্ভবত দ্বিধায়। রাশিয়ার সঙ্গে মোদির সম্পর্ক খুবই ভালো অন্যদিকে নতুন আমেরিকা সরকার ডেমোক্র্যাটার জো বাইডেনের সঙ্গে এখনও তেমন মধুর বলে শোনা যায় না কিন্তু অর্থনীতি এবং বাণিজ্যের খাতিরে আমেরিকাকে চটানোও যাবে না। এদিকে ইউক্রেনের খারকিভে আটকে রয়েছে কয়েকশো ভারতীয় ছাত্রছাত্রী, যাদের অবিলম্বে দেশে বা সেফ প্লেসে নিয়ে আসা দরকার। মোদী বুঝছেনও তা কিন্তু এখনও তীব্র ভাবে যুদ্ধ বন্ধ করার কোনও আবেদন করতে পারছেন না , উল্টে বারবার পুতিনকে ফোন করে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের সেফ জোনে নিয়ে আসার দাবি তুলছেন।
রাশিয়া জানাচ্ছে এই ভারতীয়দের নাকি আটকে রেখে তাদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে ইউক্রেন। বাস্তব তো তা বলছে না কারণ রাশিয়া তাদের আগ্রাসন নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের উপর বোমা বর্ষণ করছে। নিহত হচ্ছে চিকিৎস্যবিদ্যায় ছাত্র নবীন শেখরাপ্পা। তার মরদেহ নিয়ে আসার ব্যবস্থা হচ্ছে না | আতঙ্কে মারা গেলো আরএক ছাত্র চন্দন জিন্দাল। এই পাঞ্জাবি ছাত্রের হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বয়স মাত্র ২২ | আর এক ছাত্র শিশোনকুমারকেও হৃদরোগে আক্রান্ত হবার পর সঙ্কটজনক ভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বাবা বর্ডারে পৌঁছে ছেলেকে রোমানিয়াতে নিয়ে আসতে চাইছেন। শোনা গেলো আচমকা প্যারাট্রুপারদের আক্রমণ দেখেই নাকি ভারতীয় ছাত্ররা আতঙ্কিত হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। রাশিয়া নাকি মোদীকে জানিয়েছে যে ভারতীয়দের তারা তাদের দেশে নিয়ে আসতে চাইছে । এই বার্তায় ইউক্রেন জানাচ্ছে মিথ্যাচার করছে রাশিয়া , দেশ দখলের নেশায় তারা ফ্যাসিস্টদের মতো আচরণ করছে । যাই হোক না কেন এই তিন ছাত্রের কি ব্যবস্থা করবেন মোদী , দেশকে জানিয়ে স্বস্তি দিন।
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন(Ukraine) থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের ফেরাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে কেন্দ্রের তরফে জোরকদমে চলছে 'অপারেশন গঙ্গা'। আজ থেকে আগামী ২দিনে ২৬টি বিমান পরিষেবা চালু করা হয়েছে পড়ুয়াদের উদ্ধার করে আনার জন্য। অন্যদিকে তৎপর হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনাও(Indian Air force)।
ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে রুশ সেনা। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে ইউক্রেনে আটকে পড়া পড়ুয়াদের জন্য বিমান বাহিনী C-17 বিমান পাঠিয়েছে। এই বিমানগুলি অপারেশন গঙ্গার অধীনে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে ভারতীয় ছাত্র ও অসামরিক নাগরিকদের ফিরিয়ে আনবে। এখনও পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগো বিমান উদ্ধারের কাজে নিয়োজিত ছিল। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ফের ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ৬দিনে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পুতিনের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২৫ শে ফেব্রুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আবেদন জানিয়ে পুতিনের সঙ্গে কথোপকথন হয়েছিল। পাশাপাশি ইউক্রেনে আটকে পড়া পড়ুয়াদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ (Ukraine-Russia War) অব্যাহত। ক্রমশ বিধ্বংসী হয়ে উঠছে রুশ বাহিনী। যুদ্ধংদেহি মনোভাব থেকে পিছপা হতে রাজি নয় রাশিয়া। অন্যদিকে বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও চান না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট (Ukraine President Volodymyr Zelensky)। বর্তমানে রাশিয়ার লক্ষ্য ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ(Kyiv)-এর দখলদারি। যার জেরে তছনছ হয়ে গিয়েছে গোটা শহর। বিধ্বস্ত ইউক্রেন।
রাশিয়ার এই আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করেছিল আমেরিকা থেকে শুরু করে পশ্চিমের একাধিক দেশ। রাশিয়ার পাশে তারা নেই বলে স্পষ্টত জানিয়ে দিয়েছিল। এমনকি ইউক্রেনকে অস্ত্র থেকে শুরু করে খাবার-আশ্রয় সার্বিকভাবে সাহায্যের হাতে বাড়িয়ে দিয়েছে দেশগুলি। কিন্তু বুধবার বেজিংয়ের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাশিয়ার উপর কোনরকম নিষেধাজ্ঞা চাপাতে রাজি নয় তারা।
বুধবার চিনের সরকারি ব্যাংকিং ও বিমা পরিষেবা কমিশনের চেয়ারম্যান গুয়ো সুকিং জানিয়েছেন, 'আমরা কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছি না। একেবারে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক লেনদেনই চলবে।'
নিষেধাজ্ঞা লাগু না করার পিছনে চিন যে কারণ দেখিয়েছে, তা হল এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা একতরফা। এর আইনি কোনও ভিত্তি নেই। তাই আমেরিকা কিংবা পশ্চিমি দেশগুলোর মত একই পথে হাঁটতে রাজি নয় বলে জানায় তারা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার এহেন পদক্ষেপ নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব পেশ করেছিল আমেরিকা। সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোটদানে বিরত ছিল চিন, ভারত সহ সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। সেখান থেকেই খানিকটা আন্দাজ করা গিয়েছিল পুতিনের বিরোধিতার পথে হাঁটবে না চিন। তবে ভারত এখনও স্পষ্টভাবে কার পক্ষে রয়েছে তা জানায়নি। কেবল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধা থেকে বিরত থাকার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সমালোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের কথাও বলেছিলেন।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ (Russia-Ukraine war) আজ, বুধবার সপ্তম দিনে পড়েছে। যুদ্ধ থামার কোনও নামই নিচ্ছে না রাশিয়া। আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে রুশ সেনা। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের (Indian Student) মধ্যে রুশ সেনার গোলায় প্রাণ (Death Indian Student) হারিয়েছিলেন কর্ণাটকের বাসিন্দা এক ডাক্তারি পড়ুয়া। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই প্রাণ গেল আরেক ভারতীয় পড়ুয়ার।
তবে রুশ সেনার আক্রমণে নয়, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। যার জেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত পড়ুয়ার নাম চন্দন জিন্দল। বয়স ২২ বছর। পঞ্জাবের বারনালের বাসিন্দা। তিনি অসুস্থ হয়ে ভিনিৎসিয়ার এক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বুধবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়াদের মৃত্যু নিয়ে সরব হতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুধবার উত্তরপ্রদেশের ভোটপ্রচারের (Uttarpradesh Election) জন্য বারাণসীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যাওয়ার পূর্বে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারকাজ নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বললেন, প্রধানমন্ত্রী তিন মাস আগে থেকে সব জানতেন। তাহলে কেন ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেননি ছাত্রদের? ছাত্রদের তাহলে বাঙ্কারে থাকতে হত না, খাবারের জন্য কাঁদতে হত না। মৃত্যুও হত না। এটা অবহেলা। আর অবহেলাটা অপরাধ বলে মনে করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপির মন্ত্রীরা দেখন্দারি করছে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেছেন, 'মানুষের কাজ করার দরকার হলে আমি নিজে যুদ্ধে যেতে রাজি।'
যদিও এই মুহূর্তে ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে কেন্দ্রের তরফে জোরকদমে চলছে 'অপারেশন গঙ্গা'। আগামী ৩দিনে ২৬টি বিমান পরিষেবা চালু করা হয়েছে পড়ুয়াদের উদ্ধার করে আনার জন্য।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিপাকে পড়েছেন ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়ারা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে প্রায় ১২ হাজার ভারতীয় ইউক্রেন ছেড়েছেন। কেবল এখন তাঁরা দেশে ফেরার অপেক্ষায়।
দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে প্রায় ২ হাজার ভারতীয় পড়ুয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে সরকার। ৪ থেকে ৫ হাজার ভারতীয় এখনও বিমানের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে রয়েছেন। আগামী ৩ দিনে ২৬টি বিমানে ফেরানো হবে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের। বুধবার তাঁদের উদ্দেশ্যে ভারতীয় দূতাবাসের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়
বর্তমানে Lviv এবং Ternopil এবং পশ্চিম ইউক্রেনের অন্যান্য স্থানে থাকা ভারতীয়রা পোল্যান্ডে দ্রুত প্রবেশের জন্য বুডোমিয়ের্জ সীমান্তের চেক-পয়েন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। বিকল্প পথ হিসেবে তাঁদের হাঙ্গেরি বা রোমানিয়া হয়ে দক্ষিণে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
২. শেহিনি-মেডিকা সীমান্ত ক্রসিং-এ যানজট থাকে। তাই ওই দিকটা এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
3. পোল্যান্ডে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মেডিকা এবং বুডোমিয়ের্জ সীমান্তের চেক-পয়েন্টগুলিতে মোতায়েন করা রয়েছে। যাতে ভারতীয়দের সবরকম সাহায্য করতে পারেন।
৪. যাঁরা অন্য কোনও সীমান্ত ক্রসিং থেকে পোল্যান্ডে প্রবেশ করছেন, সেখানে যদি ভারতীয় কর্মকর্তারা মোতায়েন না থাকেন, তাহলে সরাসরি হোটেল প্রেজিডেনকি, উল-এ যেতে পারেন। সেখানে তাঁদের থাকার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং যেখান থেকে ভারতের গঙ্গা অপারেশনের ফ্লাইটগুলি নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে।
৫. ভারতীয় পড়ুয়াদের যদি কোনও অর্থের প্রয়োজন হয়, ভারতীয় দূতাবাস সেক্ষেত্রে সাহায্য করবে।
ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ (Ukraine-Russia War) অব্যাহত। ক্রমশ বিধ্বংসী হয়ে উঠছে রুশ বাহিনী। এমনকি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভ্যাকুয়াম বোমা (Vacuum Bomb) ব্যবহার করেছে রাশিয়া, এমন অভিযোগও তুলেছে ইউক্রেন সহ বিশ্বের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। ১৯৪৯ সালের জেনিভা চুক্তি অনুযায়ী, এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এই বোমার ব্যবহার নিয়ে কোনওরকম মুখ খোলেনি রাশিয়া। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা যুদ্ধাপরাধের সমান হবে বলে জানিয়েছে মানবধিকার সংগঠনগুলি। ভ্যাকুয়াম বোমার পাশাপাশি রাশিয়া ক্লাস্টার বোমাও ব্যবহার করেছে বলে জানান ইউক্রেনের দূত।
ভ্যাকুয়াম বোমা বা থার্মোবারিক অস্ত্র কেন এত ভয়ঙ্কর? কী এই ভ্যাকুয়াম বোমা? ভ্যাকুয়াম বোমা এক ধরনের বিস্ফোরক। যা রকেট লঞ্চারের মাধ্যমে নিক্ষেপ করা হয়। এই বোমায় রয়েছে ফুয়েল-এয়ার এক্সপ্লোসিভস বা এফএই। যা বিস্ফোরণের ফলে বায়ু থেকে অক্সিজেনের মাত্রাকে কমিয়ে দেয়। এই জ্বালানিতে ৭৫ শতাংশ অক্সিডাইজার থাকে। অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলেই তা বিস্ফোরণ ঘটে। এই বোমায় ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান শরীরের ভেতর ঢুকে প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
এতে দেহের অভ্যন্তরে বেশি প্রভাব পড়ে। ফুস্ফুস এবং মস্তিষ্কের কোষে সবচেয়ে বেশি আঘাত হয়। এছাড়াও ইগনিশন পয়েন্টের কাছাকাছি কেউ থাকলে শরীরে ভয়ঙ্কর আঘাত আসতে পারে। মৃত্যুও হতে পারে। তাই এই বোমা মারাত্মক ভয়ঙ্কর।
উল্লেখ্য, এই বোমা প্রথম আবিষ্কার করেন মারিও জিপারমায়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এর ব্যবহার দেখা গিয়েছিল। তবে রাশিয়া আদৌ ব্যবহার করেছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
টানা ছ'দিন ধরে হামলা জারি রেখেছে রাশিয়া (Russia)। যুদ্ধংদেহি মনোভাব থেকে পিছপা হতে রাজি নয় রাশিয়া। অন্যদিকে বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও চান না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট (Ukraine President Volodymyr Zelensky)। বর্তমানে রাশিয়ার লক্ষ্য ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ(Kyiv)-এর দখলদারি। যার জেরে তছনছ হয়ে গিয়েছে গোটা শহর। বিধ্বস্ত ইউক্রেন।
ফের একবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনকে নিয়ে কড়া সমলোচনা করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার বাইডেন বলেন, পুতিন ইউক্রেনকে দুর্বল ভাবছেন। ইউক্রেনের পাশে আমেরিকা আছে। রাশিয়া যা খুশি তাই করতে পারে। পুতিন ভাবছেন উনি ইউরোপ ভেঙে দেবেন। রাশিয়ার জন্য আকাশসীমানা বন্ধ করা হচ্ছে। রাশিয়ার অর্থনীতিও ভেঙে পড়েছে। এখন রাশিয়া ভাবছে ইউরোপের অর্থনীতি ভেঙে দেবে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। বিশ্ব পুতিনকে একঘরে করেছে। রাশিয়াকে এর বড় মূল্য দিতে হবে।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রুশ প্রেসিডেন্টকে একহাতে নেন। তীব্র আক্রমণাত্মক সুরে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুটি ভুল করে ফেলেছেন। পুতিন ইউক্রেনের প্রতিরোধের শক্তি বুঝে উঠতে পারেননি। পাশাপাশি তিনি পশ্চিমি একতা সম্পর্কেও হিসেবে ভুল করেছেন।
জনসন আরও বলেন, পুতিন যদি ভেবে থাকেন তিনি যা করবেন তা থেকে ন্যাটোকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবেন, তাহলে তিনি আরও ভুল করবেন। ন্যাটোর শক্তি বাড়বে বই কমবে না। এমনকি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করার দাবিও তুলেছেন তিনি।
এদিকে ব্রিটেনের পাশাপাশি আমেরিকাও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন দাবি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকেও বাদ দেওয়া হোক রাশিয়াকে। এরই মধ্যে বাইডেন, জনসন, ব্লিংকেনের আক্রমণে আরও কোণঠাসা হল রাশিয়া।
রুশ গোলাবর্ষণের (Russia Invades Ukraine) মধ্যে পড়ে মঙ্গলবার মৃত এক ভারতীয় পড়ুয়া। কর্নাটকের বাসিন্দা নবীন শেখরাপ্পার মৃত্যুর (Indian student Death) পর থেকে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন যুদ্ধক্ষেত্রে আটক ভারতীয়রা। উদ্ধারকাজে মোদী সরকারের ঢিলেমির দিকেই আঙুল তুলেছে তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে মেডিক্যাল পড়তে যাওয়া ভারতীয়দের প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি (Union Minister Prahlad Joshi)। তাঁর মন্তব্য, 'যারা বিদেশে পড়তে যান, তাঁদের ৯০% এদেশে মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করতে পারেন না।'
যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন,'মোদী সরকার প্রায় ২০ হাজার পড়ুয়াকে নিজের দায়িত্বে ছেড়ে দিয়েছে। দায়িত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে এখন ইউক্রেনে যাওয়া পড়ুয়াদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। এটা লজ্জাজনক।'
এদিকে, শাসক-বিরোধীদের এই বাকযুদ্ধের মধ্যে কেন্দ্রের ঘোষণা কিয়েভে আর কোনও ভারতীয় আটকে নেই। আগামি কয়েকদিন ইউক্রেনের পড়শি দেশগুলতে যাবে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের মোট ২৬টি উড়ান। থাকবে ভারতীয় বায়ুসেনার সি-১৭ গ্লোব মাস্টার। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্র। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ইউক্রেনে অন্তত কুড়ি হাজার ভারতীয় ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০ হাজারের বেশী ভারতীয় যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়েছেন। কিছু ভারতীয় খারকিভে আটকে রয়েছেন। কিছু পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে রোমানিয়া, পোল্যান্ডের দিকে আসছেন।
কমবেশী ৭-৮ হাজার ভারতীয়কে উদ্ধার করতে আরও ৪-৫ দিন লাগবে। এমনটাই জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
রুশ সেনার গোলাবর্ষণে এক ভারতীয় পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। আর এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক বেড়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে আটক ভারতীয়দের। দেশের বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, 'ঢিমেতালে উদ্ধারকাজের জন্য প্রাণ হারাতে হয়েছে এক ভারতীয় নাগরিককে।' এবার এই এক সুর শোনা গিয়েছে ইউক্রেনে আটক এক ভারতীয় পড়ুয়ার গলায়। রীতিমতো ট্যুইট করে পূজা প্রহরাজ নামে ওই পড়ুয়ার মোদী সরকারকে প্রশ্ন,'আপনারা আমাদের জীবিত ফেরাবেন, না ৪০০০ ভারতীয়র মৃতদেহ ফেরাবেন?'
যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালায়নি। বরং নিজে অস্ত্র হাতে যুদ্ধক্ষেত্রে নেমে অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি (Ukraine President)। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও রাজি নন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর এই নির্বীক, হার না মানা দৃঢ় মনোভাবকে কুর্নিশ জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (Europian Union)। এই প্রথম কোনও রাষ্ট্রনেতাকে সম্মান জানাতে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যরা উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দেন। তাতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন জেলেনস্কি (Voladimir Zelenskye)।
মঙ্গলবার যুদ্ধের ষষ্ঠ দিনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সামনে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বললেন, তাঁরা ও তাঁদের দেশ স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন। ইউক্রেনের প্রায় সব শহরকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। তবুও তাঁরা পিছু হটবেনা। কেউ তাঁদের ভাঙতে পারবে না। 'আমরা শক্তিশালী, আমরা ইউক্রেনিয়ান'।
পাশাপাশি ইউরোপিয়ান সংসদদের উদ্দেশ্যে বলেন, ' দয়া করে প্রমাণ করুন আপনারা আমাদের পাশে রয়েছেন। আপনাদের ছাড়া আমরা একলা হয়ে পড়ব। আমাদের আপনারা হারতে দেবেন না। পাশে থাকলে তবেই মৃত্যুকে হারিয়ে জিতবে জীবন। অন্ধকারকে হারিয়ে আলো আসবে।'
রুশ হামলার বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদের জন্য এদিন তিনি আবেদনও করেন। প্রতিরক্ষার স্বার্থে এ পদক্কেপ বলে জানান জেলেনস্কি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
রুশ সেনার (Russia-Ukraine Conflict) গোলাবর্ষণে এক ভারতীয় পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। আর এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্ক বেড়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে আটক ভারতীয়দের। দেশের বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, 'ঢিমেতালে উদ্ধারকাজের জন্য প্রাণ হারাতে হয়েছে এক ভারতীয় নাগরিককে।' এবার এই এক সুর শোনা গিয়েছে ইউক্রেনে আটক এক ভারতীয় পড়ুয়ার গলায়। রীতিমতো ট্যুইট করে পূজা প্রহরাজ নামে ওই পড়ুয়ার মোদী সরকারকে প্রশ্ন,'আপনারা আমাদের জীবিত ফেরাবেন, না ৪০০০ ভারতীয়র মৃতদেহ ফেরাবেন?'
জানা গিয়েছে, এদিন রুশ গোলার হামলায় মৃত নবীন শেখরাপ্পা খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পূজা লেখেন, 'ভারতীয় দূতাবাস কিংবা প্রধানমন্ত্রীর দফতর আমাদের আবেদন কানে তুলছে না। কেউ কী আছে, যারা উদ্ধার করতে পারবেন? সনু সুদ অনুগ্রহ করে আমাদের সাহায্য করুন।'
এদিকে, যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় বসুন। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে ফের আবেদন ভারতের। সংঘাত মেটাতে দীর্ঘ এবং ইতিবাচক আলোচনাই একমাত্র বিকল্প। রাষ্ট্রসংঘে এই মন্তব্য করেছে দিল্লি। পূর্ব ইউরোপের পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্র সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে ভারতের নিযুক্ত প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি বলেন, 'সব ধরনের প্রচেষ্টা করেই ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করা হচ্ছে। ইউক্রেনে বেড়ে চলা সঙ্কট নিয়ে ভারত যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। তাই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ডেকে আলোচনায় বসুক দুই পক্ষ।'
তাঁর মন্তব্য, 'ভারত সরকার মনে করে কূটনীতি ছাড়া এই সঙ্কট মোকাবিলার অন্য কোনও পথ নেই।' এমনকি রাশিয়া-ইউক্রেনের রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে টেলিফোন বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দীর্ঘমেয়াদি, ইতিবাচক আলোচনার পক্ষেই পরামর্শ দিয়েছেন।
পরমাণু (Nuclear War) যুদ্ধের পথে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)? সোমবার সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর ছিল, দেশের পরমাণু কমিশনকে সর্বোচ্চ সক্রিয় থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এবার পুতিনের সবচেয়ে বড় সমালোচক দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট তাঁর পরিবারকে পরমাণু-নিরোধক বাঙ্কারে সরিয়েছেন। এই দাবির পর ফের প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কী ইউক্রেন দখলে পুতিনের (russia invades ukraine) শেষ তুরুপের তাস পরমাণু যুদ্ধ!
আন্তর্জাতিক মহলে ভ্লাদিমির পুতিনের বড় সমালোচক হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক ভ্যালোরি সলোভের এই দাবি করেন। তিনি রাশিয়ার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক। তাঁর দাবি, 'সাইবেরিয়ার ভূগর্ভস্থ শহরের বিলাসবহুল গোপন বাঙ্কারে পরিবারকে সরিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। আলতাই পর্বতের কাছে কোনও এক বাঙ্কারে রয়েছেন প্রেসিডেন্টের পরিবার। উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন এই বাঙ্কার পরমাণু-নিরোধক।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ বৈঠকে এদিন গোটা মহাদেশকে ইউক্রেনের পাশে থাকতে আবেদন জানান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তাঁর এই বক্তব্য এদিন হাততালির মাধ্যমে অভিবাদন কুড়িয়েছে। জেলেনস্কি বলেছেন, 'আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদে পেতে লড়াই করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়া ইউক্রেন খুব একা। প্রমাণ করুন আপনারা আমাদের সঙ্গে আছেন এবং কখনও একা হতে দেবেন না।'
এখানেই থামেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, 'আমরা আমাদের স্বাধীনতা এবং মাটির অধিকার জিইয়ে রাখতে লড়াই করছি। আমাদের সব শহর অবরুদ্ধ। তাও কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না, আমরা শক্তিশালী, আমরা ইউক্রেনিয়ান।'
প্রসূন গুপ্ত, কলকাতা:
১৯৪৩ এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় এডলফ হিটলার জানিয়েছিলেন, প্রচুর ভারতীয় এদেশে পড়াশুনা করে অথবা চাকরি করে, এদের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। কারণ এরা যুদ্ধের অঙ্গ নয়। মনে রাখতে হবে, তখন ছিল অবিভক্ত ভারত এবং হিন্দু, মুসলমান সহ বহু ভারতীয় ওদেশে পড়তে গিয়েছে অথবা চাকরি করছে। মনে রাখতে হবে, জার্মানির ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা চিরকালই সেরা, বিশেষ করে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। বিশ্বের সেরা গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির বেশিরভাগই জার্মান মডেল। হিটলারের মতো বিশ্বসেরা ডিক্টেটর কিন্তু বিদেশি পড়ুয়া এবং চাকরীজীবি তাঁর দেশে আছে বলেই তাদের নিরাপত্তা দিয়েছিলেন।
কিন্তু পক্ষান্তরে স্তালিন কোনওদিন পরোয়া করেননি। তাই গুঞ্জনে প্রকাশিত নেতাজির হদিশ রাশিয়াতে পায়নি কেউ। আজ সেই স্তালিনের একান্ত ভক্ত প্রাক্তন কেজিবির প্রধান পুতিনের সৈন্যবাহিনীর বোমায় নিহত হল এক ভারতীয়। তার আর দেশে ফিরে ডাক্তারি করা হল না। নবীন শেখরাপ্পা জ্ঞানাগউধার কি এবার শহিদের শিরোপা পাবেন?
ছোট থেকেই পড়াশুনায় খুবই ভালো নবীন। কর্ণাটকের ছেলে। ক্রিকেট ভক্ত থুড়ি রাহুল দ্রাবিড়ের ভক্ত। হয়তো ক্রিকেট খেলতেন, কিন্তু বাড়িতে চিরকাল তিনি শিক্ষার পরিবেশ পেয়েছেন। ভাবা গিয়েছিল, হয়তো ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডাক্তারিতেই সুযোগ পেলেন নবীন। প্রাথমিক ভালো ফল করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য ইউক্রেনে যাত্রা।
মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা বিদ্যার পীঠস্থান কিয়েভ বা কেভ। সুযোগ এসে যাবার পর চলে গেলেন সে দেশে। কয়েকদিন যুদ্ধ থাকার ফলে বারবার বাড়ি থেকে ফোন এসেছিল, কী অবস্থা জানতে। পরামর্শ এসেছিল, খারাপ বুঝলে ফিরে এস। কিন্তু খবরে প্রকাশ পেয়েছিল, সাধারণ নাগরিকের উপর হামলা হবে না। কোথায় সেই আশ্বাসবাণী? নির্মমভাবে রাজ্যের প্রাণকেন্দ্রে বোমাবর্ষণ করল ফ্যাসিস্ট লাল ফৌজ, নিহত হলেন নবীন। কয়েকদিন ঘরে বন্দি থাকার পর জানা গিয়েছে, তিনি বেরিয়ে কিছু শুকনো খাবার ও রান্নার সামগ্রী কিনে আনবেন। কিন্তু সেই বেরনোটাই কাল হল। সুপার মার্কেটের উপরই বোমাবর্ষণ হল। এরপর?
বিশ্ব ক্রীড়ামঞ্চে বড় ধাক্কা পুতিনকে। কেড়ে নেওয়া হল তাঁর সাম্মানিক ব্ল্যাক বেল্ট। একের পর এক ধাক্কায় বলা যায় একেবারে একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে রাশিয়াকে। অন্যদিকে, একের পর এক শহর দখল করেই চলেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলের মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। মিশাইল, গোলা, আকাশপথে হামলা। অনবরত চলছে। যার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন বহু ইউক্রেনবাসী এবং সেনা।
ইউক্রেনের ওপর হামলা মানতে পারছে না বিশ্ব তায়কোন্ডা সংস্থা। টুইট করে সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, 'ইউক্রেনের নিরীহ মানুষের উপর নৃশংস রুশ আক্রমণকে কঠোরভাবে নিন্দা করছে বিশ্ব তায়াকোন্ডো সংস্থা। যুদ্ধের চেয়ে শান্তি অনেক মূল্যবান। এই কারণে ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্মানিক নাইন ডান ব্ল্যাক বেল্ট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব তায়াকোন্ডো সংস্থা, যা ২০১৩ সালে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল।'
উল্লেখ্য্য,পুতিনের সাম্মানিক প্রেসিডেন্ট পদ এবং রাষ্ট্রদূতের পদ কেড়ে নিয়েছে আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশনও।
অন্যদিকে, উয়েফার তরফেও জানানো হয়েছে, রাশিয়ার কোনও ক্লাব আন্তর্জাতিক কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না। ফিফার দেখানো পথে হেঁটে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিও। এর ফলে একদিকে যেমন কাতার বিশ্বকাপ খেলা হবে না রাশিয়ার, অন্যদিকে অলিম্পিক মঞ্চ থেকেও বাদ পড়েছে ।
IOC Executive Board recommends no participation of Russian and Belarusian athletes and officialshttps://t.co/XZyLIi11XR
— IOC MEDIA (@iocmedia) February 28, 2022
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, 'যুদ্ধবিরতি নীতি লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া। এছাড়াও পূর্বে রাশিয়ার সরকার অলিম্পিক্স চার্টারের বেশ কিছু নিয়ম লঙ্ঘন করেছিল। তাই বর্তমানে রাশিয়া সরকারে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অলিম্পিকের অর্ডার প্রত্যাহার করে নেবে আইওসি বোর্ড।'
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পরই বিক্ষোভের মুখে পড়েছে রাশিয়া। ক্রীড়াজগতের একাধিক বড় বড় প্রতিযোগিতা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে রাশিয়া থেকে। এমনকি ফুটবল নিয়ামক সংস্থা ফিফাও সরব হয়েছিল। পাশাপাশি সরব হয়েছিল খেলার দুনিয়ার একাধিক তারকারাও। আর সেই তালিকায় রয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের বিশ্বটাকে সুন্দর করে তুলতে হবে। বিশ্ব শান্তির কামনা করি।'
FIFA/UEFA suspend Russian clubs and national teams from all competitions
— FIFA Media (@fifamedia) February 28, 2022
▶️ https://t.co/Q2htzW3W9z pic.twitter.com/LFo1bUtqmm
ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর ইউক্রেনে(Ukraine)। ভেবেছিলেন ডাক্তার হয়ে দেশে ফিরে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন। সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। রুশ-ইউক্রেনের হামলার শিকার হতে হল নবীন শেখরাপ্পা জ্ঞানগৌড়াকে।
মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন নবীন। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য দোকানের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেসময় রুশ সেনাদের গোলা আছড়ে পড়ে ওই জায়গায়। নিহত হন নবীন।
ইউক্রেনে রুশ সেনার (Russia invades Ukraine) হামলায় প্রাণ গেল ওই ভারতীয় পড়ুয়ার। মঙ্গলবার সকালে খারকিভে রুশ বাহিনীর ছোঁড়া গোলায় মৃত্যু হয়েছে ওই পড়ুয়ার (Indian student Died)। আর তা টুইট করে জানাল বিদেশ মন্ত্রক। জানা গিয়েছে ,ওই ভারতীয় পড়ুয়া কর্ণাটকের বাসিন্দা। এদিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী টুইট করে বলেন, 'গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আজ সকালে খারকিভে শেলিংয়ের আঘাতে এক ভারতীয় পড়ুয়ার প্রাণ গিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমরা এই ঘটনায় গভীর শোকাহত।' অরিন্দম বাগচী আরও বলেন, 'রাশিয়া এবং ইউক্রেনে আমাদের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জোরালো করতে বলেছি। দুই দেশের দূতাবাসের তরফেও সেই দাবি জানানো হয়েছে।”
এই ঘটনার পরই দুই দেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন বিদেশ সচিন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে এই প্রথম প্রাণ হারাল ভারতীয় পড়ুয়া। আর তা জানার পরই আতঙ্কিত ইউক্রেনে আটকে থাকা সকল ভারতীয় পড়ুয়া এবং তাঁদের পরিবার। সরকারি হিসেব অনুযায়ী ২০ হাজার ভারতীয় আটকে ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে। ভারত সরকারের উদ্যোগে ফেরানোও হচ্ছিল পড়ুয়াদের। আর তারই মাঝে এই খবরে রীতিমতো চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
যুদ্ধংদেহি পরিস্থিতি জারি রয়েছে ইউক্রেনে (Ukraine)। বেলারুস সীমান্তে রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia-Ukraine) বৈঠকে জট কাটেনি। উভয়পক্ষই নিজের দাবিতে অনড়। রাশিয়ান প্রতিনিধিরা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে আত্মসমর্পণের কথা বলেন, যা সঙ্গে সঙ্গেই অসম্ভব বলে উড়িয়ে দেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা (America), কানাডা (CanaDa) এবং পশ্চিমের একাধিক দেশ। এবার দেখা গেল অন্য চিত্র।
রাশিয়ান নাগরিকরাই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি তুললেন। ইউক্রেনের পাশে থাকারও বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। এক রাশিয়ান নাগরিক ক্যাটরিনা রেপিনা তাঁর শিশুকন্যা জোকে-কে এক হাতে ধরে রেখেছেন, আর অন্য হাতে একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, তিনি রাশিয়ান, কোনও যুদ্ধ চান না। তিনি দুঃখিত। তিনি আরও বলেন, তিনি পুতিনকে সমর্থন করেন না। ধ্বংসলীলার ছবি দেখে তাঁর হৃদয় বেদনাগ্রস্থ। তিনি ইউক্রেনীয় জনগণের বেদনা অনুভব করছেন এবং সেই ব্যথা দূর করতে চান।
গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুতিনের যুদ্ধ ঘোষণার পরই ইউক্রেন দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে রুশ সেনা। একের পর এক জায়গা নিজেদের দখলেও আনতে সবরকম চেষ্টা করে চলেছে। যদিও রাজধহানী কিয়েভ এখনও রুশ সেনাদের দখলে যেতে পারেনি। তবে উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে দীর্ঘ ৬৮ কিলোমিটার রাস্তা ধরে কিয়েভমুখী রুশ সেনারা।
তারই মাঝে মঙ্গলবার সকালে কিয়েভ এবং খারকভের মধ্যে অবস্থিত ওখতিরকা সেনাঘাঁটিতে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হানা হয়। আর তাতে প্রাণ হারায় প্রায় ৭০ জন ইউক্রেনীয় সেনা। যা নিঃসন্দেহে ইউক্রেনের কাছে এক বড় ধাক্কা। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। তাই অবিলম্বে ভারতীয়দের কিয়েভ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস।