
বৃহস্পতিবার হায়রাবাদের (SRH) রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলারদের নিয়ে কার্যত খেলা করলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। ১২টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৬২ বলে শতরানের গণ্ডি টপকে যান। দীর্ঘ চার বছর পরে আইপিএলে (IPL) সেঞ্চুরি করলেন কোহলি। এর আগে আইপিএলে তাঁর ব্যাট থেকে শেষ শতরান এসেছিল ২০১৯ সালে। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শতরানকারী হলেন কোহলি। মোট ৬টি শতরান করেছেন বিরাট। আইপিএলে সমসংখ্যক শতরান করেছেন তাঁর এক সময়ের সতীর্থ ক্রিস গেইলও।
৫টি শতরান করে দ্বিতীয় স্থানে জস বাটলার। ম্যাচে হেনরিক ক্লাসেনের শতরানে ভর করে ১৮৬ করে হায়দরাবাদ। রান তাড়া করতে নেমে ১৭২ রানের পার্টনারশিপ করেন কোহলি ও দুপ্লেসি। ৭১ রান করেন ডুপ্লেসি। ৮ উইকেটে ম্যাচ জেতে আরসিবি। উল্লেখ্য এই জয়ের ফলে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় আরসিবি পাঁচ নম্বর থেকে উঠে এল চারে। তাদের প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত। চার থেকে নেমে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। চলতি আইপিএলে প্লে-অফের আশা শেষ হয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের।
বিরাটের বেঙ্গালুরুলকে (RCB) হারালো দাদার দিল্লি (DC)। দিল্লি জিতল (Win) সাত উইকেটে। প্রথমে ব্যাটিং করে কোহলির বেঙ্গালুরু ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ১৮১। জবাবে দিল্লি ক্যাপিটালস সহজে সেই রান তুলে দিয়েছে। ১৮৭/৩ করে দিয়েছে ২০ বল বাকি থাকতেই। এই ম্যাচে কোহলি ৫৫ রান করেছেন। দিল্লিকে জয় এনে দেওয়ার মূল কারিগর হলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটার ফিল সল্ট। তিনি করেছেন ৪৫ বলে ৮৭ রান। তাঁর এই স্বপ্নের ইনিংসে রয়েছে আটটি চার ও ছয়টি ওভার বাউন্ডারি। দিল্লি ক্যাপিটালস এই জয়ের সুবাদে আইপিএল প্লে-অফের লড়াইয়ে ভেসে থাকল। তারা হায়দরাবাদকে টপকে লিগ টেবিলের নয় নম্বরে উঠে এল। ধরে ফেলল কলকাতাকে।
কোটলায় টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আরসিবি দলনায়ক ফ্যাফ ডু’প্লেসি। অ্যাওয়ে দল প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৮১ রানের বড়সড় ইনিংস গড়ে তোলে। আরসিবির হয়ে জোড়া হাফসেঞ্চুরি কোহলি ও মহিপালের। কোহলি ৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৪৬ বলে ৫৫ রান করে আউট হন। মহীপাল ৬টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ২৯ বলে ৫৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। বিরাট ৪২ ও লোমরোর ২৬ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান করেন। এছাড়া নিশ্চিত হাফ-সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন ফ্যাফ ডু’প্লেসি। তিনি ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩২ বলে ৪৫ রান করে আউট হয়ে যান। দিল্লির হয়ে অর্ধেকের বেশি কাজ করে দিয়েছেন সল্ট। পাশাপাশি রিলে রসৌও ৩৫ রান করে দলের জয় সহায়তা করেছেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্য বদলে গিয়েছিল ইডেনের রং। কেকেআরের সোনালি-বেগুনি নয়, ক্রিকেটের নন্দনকানন মুড়ে গিয়েছিল হলুদে। সোম-সন্ধেয় খানিকটা তেমনই ছবি ধরা পড়ে লখনউয়ে। কেএল রাহুলদের (KL Rahul) ঘরের মাঠে থেকে থেকেই ‘কোহলি… কোহলি’ চিৎকার। গ্যালারির অনেকটা অংশ দখল করেছিলেন আরসিবি (RCB) সমর্থকরা। আর তাঁদের সামনেই ২২ গজের দখল নেন আরসিবি বোলাররা। সিরাজ, কর্ণ শর্মাদের দাপুটে বোলিংয়েই জয়ে ফিরলেন বিরাট কোহলিরা (Virat Kohli)। কিন্তু শুধু হার নয়, উলটো দিকের শিবিরে চিন্তা বাড়ল অধিনায়ক রাহুলকে নিয়েও।
ম্যাচের শুরুর দিকেই চোট পেয়ে ফিজিওদের কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রাহুলের। আরসিবির ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিল্ডিংয়ের সময় ডু প্লেসির বাউন্ডারি আটকাতে গিয়েই চোট পান রাহুল। থাই মাসলে চোট পেয়ে একেবারে মাঠে শুয়েই পড়েন তিনি। মাঠ ছাড়ার সময়ও তাঁর চোখে-মুখে স্পষ্ট যন্ত্রণার ছাপ। গ্যালারিতে উদ্বিগ্ন দেখায় স্ত্রী আথিয়া শেট্টিকেও। চিন্তার ভাঁজ পড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার কপালেও। রাহুল মাঠ ছাড়ায় ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার নেতৃত্বে খেলে দল। যদিও প্রবল ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে শেষ উইকেটে ব্যাট হাতে মাঠেও নামেন রাহুল। যদিও তিন বল খেলে খাতা খোলার আগেই শেষ হয় ম্যাচ। তাঁর চোট কতখানি গুরুতর, তা এখনও স্পষ্ট করে জানানো হয়নি
লখনউয়ের আউটফিল্ড এমনিতেই তুলনামূলক স্লো। তার উপর আরসিবি ইনিংসের মাঝে এক পশলা বৃষ্টিও হয়। আবার ওপেনিংয়ে নেই রাহুলও। ফলে ব্য়াঙ্গালোর স্কোরবোর্ডে বিরাট রান তুলতে না পারলেও লখনউর কাছে সব মিলিয়ে টার্গেটে পৌঁছনোর কাজটা কঠিন হয়ে পড়ে। হ্যাজলউড, ম্যাক্সওয়েলদের সুইংয়ে ক্রিজে দাঁড়াতে পারেননি ক্রুণাল, দীপক হুডা, স্টয়নিসরা।
লখনউ হারলেও রবি বিষ্ণোইয়ের দুরন্ত বোলিংয়ের প্রশংসা করতেই হয়। কোহলি এবং ম্যাক্সওয়েলের (৪) মূল্যবান উইকেট তুলে নিয়ে আরসিবিকে জোর ধাক্কা দেন তিনি। কার্যত একাই লড়াই চালান অধিনায়ক ডু প্লেসি। তবে মিডল অর্ডারের লাগাতার ব্যর্থতার দুশ্চিন্তা এই জয়ের পরও কাটল না আরসিবির।
ঔদ্ধত্য,লড়াই, আর শক্তি প্রদর্শন এগুলো অবশ্য ক্রিকেটের (Cricket) অঙ্গ নয়। কিন্তু কখনও কোনো আগ্রাসন যে কখন দুপক্ষের লড়াইয়ের উৎপত্তি ঘটিয়ে দেয় সেটা সময়ও বলতে পারে না। লড়াই যেন রয়েই গেল। বরং যার মাত্রা বেড়ে গেল বহুগুণ। সোমবার আইপিএলে (IPL) যা ঘটল ব্যাঙ্গালোর (RCB) আর লখনউয়ের (LSG) ম্যাচে তা মনে থাকবে ক্রিকেট বিশ্বের।
কী ঘটেছিল সোমবার? ম্যাচ শেষে দু’দলের ক্রিকেটারদের হাত মেলানোর সময়। ম্যাচ চলাকালীন লখনউয়ের একটা করে উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। লখনউয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান। স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার দিকে চুমুও ছুড়তে দেখা যায় তাঁকে। আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নবীন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভাল ভাবে নেননি নবীন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলেন লখনউয়ের বিদেশি ক্রিকেটার। পাল্টা কিছু বলেন কোহলিও। তার পরেই সেখানে আসেন গম্ভীর। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেন। তার পরেই বিবাদ বেড়ে যায়।
লখনউ সুপার জায়ান্টস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ম্যাচ মানেই বিরাট কোহলি বনাম গৌতম গম্ভীর। সোমবার ম্যাচ শেষে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। শাস্তিও পেতে হল তাঁদের। বিরাট এবং গম্ভীরের পুরো ম্যাচ ফি কেটে নেওয়া হল। বাদ গেলেন না নবীন উল হকও।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনউয়ের স্পিনার অমিত মিশ্র ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সেই কারণে তাঁরা কোহলি, গম্ভীরকে ভাল ভাবে চেনেন। তাঁরাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে আলাদা করেন। লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে যান আরসিবির অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি
অবশেষে আইপিএলে (IPL) জয়ের রাস্তা ফিরল কলকাতা (KKR)। বুধবার বেঙ্গালুরুতে (RCB) বিরাট কোহলির (Virat Kohli) আরসিবিকে ২১ রানে হারিয়ে দিল তারা। টানা চার ম্যাচে হারের পর জিতল কলকাতা। এ দিন প্রথমে ব্যাট করে ২০০-৫ তোলে কলকাতা। জবাবে কলকাতার বোলারদের দাপটে ১৭৯-৮ শেষ আরসিবি। ব্যাটারদের ব্যর্থতাই ডোবাল আরসিবিকে। কোহলি বাদে বাকি ব্যাটাররা কেউই খেলতে পারলেন না। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রাসেল উইকেট তুলে নিলেন, যার মধ্যে রয়েছে কোহলির দামি উইকেট। একটি অসাধারণ ক্যাচ নিলেন। কলকাতার শুরুটা দুর্দান্ত করলেন জেসন রয়। মাঝের দিকে চালিয়ে খেলে ভদ্রস্থ রানে পৌঁছে দিলেন নীতিশ রানা।
২০০ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে বৈভব অরোরা প্রথম ওভারে খেলেন ১০ রান। উমেশ যাদবের পরের ওভারে উঠল ১৯। মনে হচ্ছিল ১৫ ওভারেই দুশো রান তাড়া করে নেবে আরসিবি। খেলা ঘুরল তার পরেই। উপায় না দেখে তৃতীয় ওভারেই সুযশ শর্মাকে নিয়ে এলেন নীতিশ। দ্বিতীয় বলেই সুযশকে ছয় মারতে গিয়ে রিঙ্কু সিং-এর হাতে ক্যাচ দিলেন ডুপ্লেসি। বলের মতো ব্যাটেও ব্যর্থ শাহবাজ (২)।
দায়িত্ব গিয়ে পড়েছিল সেই ম্যাক্সওয়েল এবং কোহলির উপরেই। বড় ম্যাচে হতাশ করলেন ম্যাক্সওয়েল। তাঁকেও তুলে নিয়ে সুযশ। একাই আরসিবির হয়ে রান তাড়া করছিলেন কোহলি। সঙ্গী পেয়েছিলেন মহিপাল লোমরোরকে। কেকেআরের স্পিনারদের আক্রমণ করে বেশ সাফল্য পাচ্ছিলেন মহিপাল। অন্যদিকে, কোহলিও খেলছিলেন ভালই। দু’টি উইকেটই গেলে বেঙ্গালুরুর কাছে জেতার মতো আর কোনও রসদ ছিল না।
এ দিকে, কেকেআরের ব্যাটিংও প্রথম দিকে খুব ভাল হয়নি। আগে ব্যাট করলে পাওয়ার প্লে-তে বড় রান তুলতে হবে। বিশেষত যদি ম্যাচ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে হয় তা হলে রানের পরিমাণ অনেকটাই বেশি হতে পারে। কিন্তু কলকাতা ৬৬ রানের বেশি তুলতে পারল না। তার পিছনে দায়ী ওপেনার নারায়ণ জগদীশন। প্রথম তিন ওভারে কলকাতার খুব বেশি রান ওঠেনি। কিন্তু চতুর্থ ওভার থেকেই চালাতে শুরু করেন জেসন রয়। ডেভিড উইলির সেই ওভারে ওঠে ১৭ রান। উল্টো দিকে নারায়ণ ব্যাটে-বলে করতেই পারছিলেন না। আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন খুচরো রান নিয়ে জেসনকে স্ট্রাইক দেওয়ার। কিন্তু খুচরো রান নিতে গেলেও তো সঠিক জায়গায় বল মারতে হয়। নারায়ণকে দেখে মনে হচ্ছিল সেটাও হবে না।
পর পর দু’টি উইকেট চলে যাওয়ায় চাপে পড়েছিল কলকাতা। কিন্তু চাপ কাটিয়ে দিলেন বেঙ্কটেশ আয়ার এবং নীতিশ রানার জুটি। দু’জনের জুটি ৮০ রান উঠে গেল। কিন্তু এর পরে স্লো হয়ে যায় তাদের রান। হাতে আটটি উইকেট থাকা সত্ত্বেও কেন যে আরও সাহসী হয়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নিলেন না তাঁরা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। দু’জনের জুটি চলল ১৮তম ওভার পর্যন্ত। পরের দিকে নেমে রিঙ্কু সিং এবং ডেভিড আগ্রাসী ক্রিকেট খেললেন। তাঁরা যদি আরও কয়েকটা বল পেতেন, তা হলে নিঃসন্দেহে আরও বেশি রান উঠতে পারত।
টানা চারটি ম্যাচে হার। সব মিলিয়ে পাঁচটি ম্যাচে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) কাছে এ বারের মতোও প্লে-অফে ওঠার স্বপ্ন ফিকে হতে চলেছে। দলের মনোবল তলানিতে। খুঁজে পাওয়া যায়নি প্রথম একাদশ। সেই অবস্থায় শক্তিশালী রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (RCB) বিরুদ্ধে বুধবার মুখোমুখি হতে চলেছে তারা। খেলা হবে বেঙ্গালুরুতে, যেখানে রানের বন্যা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা।
এই মুহূর্তে কলকাতার কাছে এর চেয়ে কঠিন ম্যাচ হতে পারত না। শার্দূল ঠাকুরের (Shardul Thakur) ব্যক্তিগত ক্ষমতায় ঘরের মাঠে আরসিবিকে হারালেও বেঙ্গালুরুতে কাজ একদম সহজ নয়। কেকেআরের কোনও কিছুই ঠিক হচ্ছে না। না ব্যাটিং, না বোলিং, কিছুই ঠিকঠাক নেই।
আগের ম্যাচে কেকেআরের বোলারদের পিটিয়ে ২৩০ রান তুলে দিয়েছিলেন চেন্নাইয়ের ব্যাটাররা। তা-ও আবার ঘরের মাঠে। কলকাতার কোনও বোলারই দাঁড়াতে পারেননি চেন্নাইয়ের বোলারদের সামনে। মঙ্গলবার তারা এমন এক দলের মুখোমুখি যে দলে বিরাট কোহলি, ফাফ ডুপ্লেসি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, দীনেশ কার্তিকের মতো ক্রিকেটার রয়েছেন। এঁদের প্রত্যেকে একার হাতে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখেন।
এ বার অন্তত দু’টি ম্যাচে ডুপ্লেসি এবং ম্যাক্সওয়েলের ঝোড়ো ব্যাটিং দেখা গিয়েছে। আগের ম্যাচে রাজস্থানের বিরুদ্ধেই মারমুখী ব্যাট করেছেন দু’জন। কেকেআর বোলারদের প্রথম কাজ বেঙ্গালুরুর টপ অর্ডারকে আগে সাজঘরে ফেরানো, ছন্দের বিচারে যা এই মুহূর্তে অসম্ভব কঠিন কাজ।
ওপেনিং নিয়ে কেকেআরের সমস্যা কাটছেই না। আগের ম্যাচে হঠাৎ করেই ওপেনে নামিয়ে দেওয়া হল সুনীল নারাইনকে। তিন বলে তাঁর অবদান ০। এ ছাড়া নারায়ণ জগদীশন, লিটন দাস, জেসন রয়, রহমানুল্লা গুরবাজ— ওপেনারদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন দেখার আরসিবি ম্যাচে নতুন আর কোনও জুটি পাওয়া যায় কি না।
এ দিকে, আগের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে রাজস্থানকে সাত রানে হারিয়ে ফুটছে আরসিবি। সাত ম্যাচের চারটিতে জিতে পঞ্চম স্থানে রয়েছে তারা। কিন্তু বুধবার জিতলে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে চলে আসতে পারে।
আরসিবির সাফল্যের মূল কারণ তাদের টপ অর্ডারই। কিন্তু বল হাতে মহম্মদ সিরাজ, শাহবাজ আহমেদ, ওয়েন পার্নেল, ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গরা তো আছেনই। ম্যাচ জেতাতে তাঁরাও সমান পারদর্শী। সিরাজ তো এই মুহূর্তে বেগনি টুপির অধিকারী। অন্য দিকে ডুপ্লেসির মাথায় রয়েছে কমলা টুপি। বোঝাই যাচ্ছে আইপিএলে দাপাচ্ছে কোন দল।
২৩ এপ্রিল রবিবার, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আইপিএলের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (RCB) এবং রাজস্থান রয়্যালস (RR)। রাজস্থানের বিরুদ্ধে জয় এসেছিল বেঙ্গালুরুর। কিন্তু সেই ম্যাচের জন্যই এবার মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি-সহ বেঙ্গালুরুর গোটা টিমকে। একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ। জরিমানা হিসেবে বিরাট কোহলিকে (Virat Kohli) দিতে হবে ২৪ লক্ষ টাকা। টিমের বাকি সদস্যদের অবশ্য কম টাকা জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু কী কারণে এই জরিমানা?
জানা গিয়েছে, রাজস্থান রয়্যালসদের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুর স্লো-ওভার রেটের জেরেই এই জরিমানা চোকাতে হবে। আইপিএল কর্তৃপক্ষ একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, 'রাজস্থান রয়্যালসদের বিরুদ্ধে মাঠে নামা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর প্রত্যেক ক্রিকেটারদের প্রাপ্ত ম্যাচ ফি-র ২৫ শতাংশ বা ৬ লক্ষ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। বিরাট কোহলিকে দিতে হবে ২৪ লক্ষ টাকা।'
আইপিএলে বেঙ্গালুরুর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, ফাফ ডু প্লেসিস। কিন্তু চোটের কারণে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। তাই শেষ দু'টি ম্যাচে বেঙ্গালুরুর হয়ে অধিনায়কত্ব করছেন বিরাট কোহলি। তবে জরিমানা নিয়ে এবার বিপাকে কোহলি। স্লো-ওভার রেট, আইপিএলের অপরাধ সংক্রান্ত আইনবিধির মধ্যে পড়ে। এই জন্যেই মোটা টাকা মাশুল গুনতে হবে কোহলি-সহ গোটা টিমকে।
কোহলির (Kohli) গোল্ডেন ডাক। ম্যাচের প্রথম বলেই কোহলি আউট হওয়ায় বেঙ্গালুরু (RCB) তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলার অলরাউন্ডার শাহবাজ় আহমেদ। ব্যাটিং অর্ডারের উপর দিকে শাহবাজ়কে ঠেলে দেওয়া, অনেকটা যেন টেস্টে নাইট ওয়াচ ম্যান নামিয়ে প্রধান ব্যাটারদের আড়াল করার চেষ্টা! ঘরোয়া ক্রিকেটেও শাহবাজ় ব্যাট করেন পাঁচ থেকে সাত নম্বরের মধ্যে।
শাহবাজ়কেও (২) দ্রুত আউট করলেন নিউ জ়িল্যান্ডের জোরে বোলার। ১২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া আরসিবির হাল ধরেন ফ্যাফ ডুপ্লেসি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তৃতীয় উইকেটে তাঁদের জুটিতে উঠল ১২৭ রান। ডুপ্লেসি করলেন ৩৯ বলে ৬২ রান। ৮টি চার এবং ২টি ছয় দিয়ে সাজালেন নিজের ইনিংস। ব্যাট হাতে একই রকম মানানসই ছিলেন ম্যাক্সওয়েলও। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪৪ বলে ৭৭ রান। ৬টি চারের পাশাপাশি ৪টি ছক্কা মারলেন অসি অলরাউন্ডার।
ডুপ্লেসি এবং ম্যাক্সওয়েল ছাড়া বেঙ্গালুরুর কোনও ব্যাটারই রবিবার সাফল্য পেলেন না ঘরের মাঠে। মাহিপাল লোমরোর (৮), সুয়ষ প্রভুদেশাইরা (শূন্য) পর পর আউট হয়ে গেলেন। ইনিংসের শেষ দিকে আগ্রাসী ব্যাটিং দেখা গেল না দীনেশ কার্তিক বা ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গার (৭ বলে ৬) কাছ থেকে। গত এ বারের কার্তিক যেন গত বারের আইপিএলের ছায়া। ব্যাট হাতে দাপট দেখাতে পারছেন না কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন অধিনায়ক। কার্তিকের ব্যাট থেকে এল ১৩ বলে ১৬ রান। সঞ্জুদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত বেঙ্গালুরু করল ৯ উইকেটে ১৮৯ রান।
রাজস্থানের সফলতম বোলার ট্রেন্ট ৪১ রানে ২ উইকেট নিলেন। সন্দীপ শর্মা শেষ ওভারে পর পর দু’বলে ২ উইকেট নিলেও খরচ করলেন ৪৯ রান। এ ছাড়া যুজবেন্দ্র চহাল ২৮ রানে ১ উইকেট এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৩৬ রানে ১ উইকেট নিলেন।
বৃহস্পতিবার মোহালিতে পঞ্জাব কিংসের (Punjab Kings) ঘরের মাঠে তাদের হারিয়ে দিয়েছে বেঙ্গালুরু (Bengaluru)। আগে ব্যাট করে বেঙ্গালুরুর তোলা ১৭৪ রানের জবাবে পঞ্জাবের ইনিংস থেমে গিয়েছে ১৫০ রানে। ফাফ ডুপ্লেসির ৮৪ রান এবং কোহলির ৫৯ রান ব্যাটিংয়ের সময় বেঙ্গালুরুকে সাহায্য। বল হাতে ২১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পঞ্জাবের ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ড ভেঙে দেন সিরাজ। ২৪ রানে বেঙ্গালুরুর কাছে হারলো পঞ্জাব। টসে জিতে (IPL) প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্জাব। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান তোলে বেঙ্গালুরু। সেই রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান তোলে পঞ্জাব।
পাশাপাশি বৃহস্পতিবার আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় ব্যাটার হিসাবে ৬০০টি চার মারার নজির তৈরি করলেন কোহলি। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ম্যাচে এই নজির গড়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে কোহলির নামের পাশে ৬০৩টি চার রয়েছে। তিনি খেলেছেন ২২৯টি ম্যাচ। এ দিন ৪৭ বলে ৫৯ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। পাঁচটি চার মেরেছেন। একটি ছক্কাও রয়েছে। এই তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন শিখর ধাওয়ান। এ দিনের ম্যাচে তিনি খেলেননি। কিন্তু যত গুলি চার মেরেছেন তার ধারেকাছে এখন কেউ নেই। আইপিএলে ২১০টি ম্যাচে ৭৩০টি বাউন্ডারি মেরেছেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। তিনি ১৬৭টি ম্যাচে ৬০৮টি চার মেরেছেন। ওয়ার্নারকে হয়তো পরের ম্যাচেই পেরিয়ে যেতে পারেন কোহলি।
বিরাট কোহলিদের (Virat Kohli) ঘরের মাঠে দাপট দেখাল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল (MS Dhoni)। টস হেরে চেন্নাই সুপার কিংসকে (CSK) প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে দাপুটে ব্যাটিং করে রান তুললেন চেন্নাইয়ের ব্যাটাররা। ডুপ্লেসি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝড়ের তুলনায় তাঁদের দাপট ম্লান মনে হলেও শেষ হাসি হাসলেন ধোনিরাই। ধোনিদের ৬ উইকেটে ২২৬ রানের জবাবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর করল ৮ উইকেটে ২১৮।
৭৫ দিন আগে শেষ রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ হয়েছিল চেন্নাই-বেঙ্গালুরু ম্যাচের ২২ গজে। শুকনো এবং পাটা উইকেটে কত রান করলে নিরাপদে থাকা যাবে, তা নিয়ে ম্যাচের শুরুতে নিশ্চিত ছিলেন না ধোনি। তাই চেন্নাই অধিনায়কের নির্দেশ ছিল, যতটা সম্ভব বেশি রান তুলতে হবে। সেই মতোই প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলতে শুরু করেন ডেভন কনওয়ে। অন্য ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড় (৩) দ্রুত আউট হলেও প্রভাব পড়ল না চেন্নাইয়ের ইনিংসে। অজিঙ্ক রাহানে, শিবম দুবেরাও একই রকম দাপটে খেললেন। কনওয়ে খেললেন ৪৫ বলে ৮৩ রানের দুরন্ত ইনিংস। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৬টি করে বাউন্ডারি এবং ওভার বাউন্ডারি। তিন নম্বরে নামা রাহানে করলেন ২০ বলে ৩৭। এ বারের আইপিএলে নতুন মেজাজে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় দল থেকে দূরে চলে যাওয়া অভিজ্ঞ ব্যাটারকে। ৩টি চার এবং ২টি ছক্কা মারলেন রাহানে। শিবমকে সামলাতেও সমস্যায় পড়লেন আরসিবির বোলাররা। তাঁর ২৭ বলে ৫২ রানের ইনিংসে রয়েছে ২টি চার এবং ৫টি বিশাল ছক্কা।
এক সময় মনে হচ্ছিল ধোনিরা ২৪০ রানের কাছাকাছি তুলবেন। তা হল না শেষ দিকে ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারানোয়। মইন আলি ৯ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকলেও অম্বাতি রায়ডু, রবীন্দ্র জাডেজারা ব্যাট হাতে ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলেন না। রায়ডু ৬ বলে ১৪ এবং জাডেজা ৮ বলে ১০ রান করে আউট হয়ে গেলেন। শেষে মইনের সঙ্গে ২২ গজে অপরাজিত ছিলেন ধোনি (১)।
বেঙ্গালুরুর কোনও বোলারই তেমন সুবিধা করতে পারেননি। সফলতম বোলার ওয়ানিন্দু হারসঙ্গ। শ্রীলঙ্কার স্পিনার ২ ওভারে ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেন। বেঙ্গালুরুর সব বোলারই একটি করে উইকেট পেয়েছেন। কিছুটা ভাল বল করলেন মহম্মদ সিরাজ। তিনি ৩০ রান খরচ করে ১ উইকেট নিয়েছেন।
জয়ের জন্য ২২৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি বেঙ্গালুরুর। প্রথমেই আউট হয়ে গেলেন কোহলি। ৪ বলে ৬ রান করে আকাশ সিংহের বলে বোল্ড হলেন তিনি। ব্যর্থ তিন নম্বরে নামা মহীপাল লোমরোরও (শূন্য)। ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ঘরের মাঠে চাপে পড়ে যায় আরসিবিরা। সেই চাপ কাটল অধিনায়ক ডুপ্লেসির ব্যাটে। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করলেন অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন তাঁরা। চেন্নাইয়ের কোনও বোলারকেই রেয়াত করলেন না তাঁরা। ডুপ্লেসি-ম্যাক্সওয়েল জুটির দাপটে কিছুটা দিশেহারা দেখাল অভিজ্ঞ ধোনিকেও। তাঁদের তৃতীয় উইকেটের জুটিতে উঠল ৬১ বলে ১২৬ রান। ম্যাক্সওয়েল করলেন ৩৬ বলে ৭৬ রান। মারলেন ৩টি চার এবং ৮টি বিশাল ছক্কা। তিনি আউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারলেন না ডুপ্লেসিও। বেঙ্গালুরু অধিনায়কের ব্যাট থেকে এল ৩৩ বলে ৬২ রান। তিনি মারলেন ৫টি চার এবং ৪টি ছয়।
তাঁরা পর পর আউট হওয়ার পর আবার লড়াইয়ে ফেরেন ধোনিরা। যদিও বেঙ্গালুরুর ইনিংসের হাল ধরেন শাহবাজ় আহমেদ এবং দীনেশ কার্তিকের জুটি। কার্তিক আউট হলেন ১৪ বলে ২৮ রান করে। তাঁর পরই সাজঘরে ফিরলেন শাহবাজ়ও (১২)। এই দুই ব্যাটার আউট হতেই বেঙ্গালুরুর জয়ের আশা এক রকম শেষ হয়ে যায়। শেষ দিকে সুযশ প্রভুদেশাই চেষ্টা করলেও দলকে জয় এনে দিতে পারলেন না। তিনি করলেন ১১ বলে ১৯ রান।
চেন্নাইয়ের বোলারদের মধ্যে সফলতম তুষার দেশপাণ্ডে নিলেন ৪৫ রানে ৩ উইকেট। মাথিশা পাথিরানা ৪২ রান খরচ করে নিলেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট পেলেন আকাশ সিংহ, মাহিশ থিকসানা এবং মইন আলি।
সোমবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে চেন্নাই-বেঙ্গালুরু। কোহলিদের বিরুদ্ধে ধোনিদের নজির ভাল। দু’দলের মধ্যে আইপিএলে ৩০টি ম্যাচ হয়েছে। তার মধ্যে ২০টি ম্যাচ জিতেছে চেন্নাই। বেঙ্গালুরু জিতেছে ১০টি ম্যাচ। এবারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত দু’দলই ৪টি করে ম্যাচ খেলেছে। পয়েন্টও সমান (৪)। অর্থাৎ, পয়েন্ট তালিকায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য দু’দলের কাছেই এই ম্যাচ সমান গুরুত্বপূর্ণ।
আইপিএলে চেন্নাইকে ২০০টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন ধোনি। তার মধ্যে চেন্নাই জিতেছে ১২০টি ম্যাচ। হেরেছে ৭৯টি ম্যাচ। এই নজির গড়া সহজ নয় বলে মনে করে ক্রিকেট মহল। ক্রিকেট মহলের মতে, ২০০ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া খুব কঠিন। কারণ, মাথার উপর বিশাল চাপ নিয়েও ভাল খেলতে হয়। নিজের ব্যাটিংয়ের দিকেও মন দিতে হয়। কিন্তু ধোনির বিষয়টা আলাদা। ও অন্য ধরনের অধিনায়ক। আমার মনে হয় ভবিষ্যতে ওর মতো অধিনায়ক আর দেখতে পাব না।
ওদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে বিরাট কোহলির ব্যাটিংয়ের দিকে। প্রথম থেকেই বিরাট কোহলি ও প্লেসিস ফর্মে রয়েছেন। পাশাপাশি চেন্নাইয়ে ফর্মে রয়েছেন ঋতুরাজ। চেন্নাই এবং ব্যাঙ্গালোরের দুপক্ষই বোলিং দিক থেকে সমান মাপের।
৫টি ম্যাচ খেলেও জয় অধরা দিল্লির (DC), শনিবার বিকেলে ব্যাঙ্গালোরের ঘরের মাঠে খেলতে নেমেছিল দিল্লি। টসে জিতে প্রতিপক্ষ ব্যাঙ্গালোরকে (RCB) প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় দিল্লি। প্রথম ব্যাট পেয়ে ভালো শুরু করে ব্যাঙ্গালোর। কোহলির (Virat Kohli) অর্ধশতরান ছাড়াও রান আসে ম্যাক্সওয়েল, লোমরো ও প্লেসিসের ব্যাটে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাঙ্গালোর মোট ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করে। ১৭৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে, প্রথম পাওয়ার-প্লেতে ৪ উইকেট হারায় দিল্লি। তারপরে তাসের ঘরের মত উইকেট পড়তে থাকে। সব শেষে দিল্লি ২০ ওভারে বলে ৯টি উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান তুলতে সক্ষম হয়। ব্যাঙ্গালোরের কাছে ২৩ রানে হারতে হয় দিল্লিকে।
টসে হেরে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ব্যাঙ্গালোরের কোহলির ব্যাটে আসে ৩৪ বলে ৫০ রান, প্লেসিস করে ১৬ বলে ২২ রান, লোমরো ১৮ বলে ২৬ রান করে, এছাড়া ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে ১৪ বলে ২৪ রান আসে, শাহবাজ আহমেদের ব্যাটে আসে ১২ বলে ২০ রান। মোট ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাঙ্গালোরের রান ১৭৪। ১৭৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ২ ওভারে ৩ উইকেট হারায় দিল্লি।
শুন্য রানে ফেরেন পৃথ্বী শ ও মিচেল মার্শ। উল্লেখযোগ্য মনীশ পাণ্ডে ৩৮ বলে ৫০ রান করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজে এল না তাঁর লড়াই। ওয়ার্নার করে ১৯ রান। ১৪ বলে ২১ রান করে অক্ষর প্যাটেল। পাশাপাশি নোকিয়ে ১৪ বলে ২৩ রান করে। টসে জিতে প্রথম বলে গিয়ে দিল্লির পক্ষে উল্লেখযোগ্য ২টি করে উইকেট নেয় মার্শ ও কুলদীপ যাদব। একটি করে উইকেট নেয় অক্ষর ও ললিত যাদব। পাশাপাশি ব্যাঙ্গালোরের হয়ে উল্লেখযোগ্য ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেয়। সিরাজ নেয় ২ উইকেট ও ১টি করে উইকেট নেয় পার্নেল, হাসারাঙ্গা ও হার্শল প্যাটেল। শনিবারের দিল্লির হারের পর প্রশ্নের মুখে কোচ পন্টিং ও মেন্টর সৌরভের ভূমিকা।
রুদ্ধশ্বাস লড়াই করে, বিরাটদের (Virat Kohli) সঙ্গে ১ উইকেটে জয় রাহুলদের (KL Rahul)। বেঙ্গালুরু (Rcb) অর্থাৎ বিরাটদের বোলিং নিয়ে আশঙ্কা ছিলই, এবার তাই সত্যি হলো। নিকোলাস পুরাণ এবং স্টয়নিসের ব্যাটে ভরসা করে শেষ বলে ম্যাচ যেতে রাহুলরা। টসে জিতে প্রথম বল করার সিদ্ধান্ত নেয় লখনউ সুপার জায়ান্ট। বলে তারা খুব ভালো শুরু করতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে বিরাট, ম্যাক্সওয়েল এবং ডিউ প্লেসির উপর ভরসা করে, কুড়ি ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ২১২ রান তোলে বেঙ্গালুরু। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব ভালো হয়নি রাহুলদের। পরে ম্যাচের হাল ধরে মার্কাস স্টয়নিস। সঙ্গ দেয় নিকোলাস পুরাণ এবং আয়ুষ বাদোনি। নিকোলাস পুরাণের ঝড়ো ইনিংসে শেষ বলে এক উইকেটে ম্যাচ যেতে লখনউ।
শেষ ওভারে ৫ রান দরকার ছিল রাহুলদের। হার্শল প্যাটেলের ২ নম্বর বলে আউট হয় মার্ক উড। পঞ্চম বলে আউট হয় উনাদকাট। শেষ বলে ১ রান দরকার ছিল লখনউয়ের। আবেশ খান তখন স্ট্রাইকে। শেষ বলে ব্যাটে লাগাতে না পারলেও ছুটে বাই রান হিসেবে ১ রান নিয়ে নেন তিনি।
টসে হেরে বেঙ্গালুরুকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় লখনউ। দারুন শুরু করে বেঙ্গালুরু কোহলি ৪৪ বলে ৬১ রান করে, প্লেসিস ৪৬ বলে ৭৯ রান করে, পাশাপাশি ম্যাক্সওয়েল ২৯ বলে ৫৯ রান করে। ২ উইকেট হারিয়ে বেঙ্গালুরু তোলে ২১২ রান। রানের পাহাড় মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিকে উইকেট হারায় লখনউ। রাহুল করে ২০ বলে ১৮ রান। রান আসে স্টয়নিসের ব্যাটে, ৩০ বলে ৬৫ রান করে স্টয়নিস। পরে যখন স্টয়নিস আউট হয়ে ফেরে ম্যাচ হাতের বাইরে মনে হয়েছিল লখনউয়ের। তখনই পুরানের ব্যাটে ১৯ বলে ৬২ রান আসে।
প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে লখনউয়ের পক্ষে ১ টি করে উইকেট পায় অমিত মিশ্র ও মার্ক উড। পাসপাশি বেঙ্গালুরুর সিরাজ ও পার্নেল ৩ টি করে উইকেট নেয়। ২ টি উইকেট নেয় হার্শল প্যাটেল, ১ টি উইকেট নেয় করন শর্মা।
এবারের আইপিএল মরশুমে ১৫ তম ম্যাচে সোমবার বিরাটের সামনে রাহুলরা। বেঙ্গালুরু অর্থাৎ বিরাটদের ঘরের ম্যাচে এই ম্যাচ জিততে মরিয়া হবে বিরাটরা। শেষ ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর কাছে হেরে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছেন বিরাটরা। এই অবস্থায় বিরাটদের দলে আজ, সোমবার যোগদান করবে ওয়াইন পার্নেল। যদিও ওয়াইন পার্নেল প্রথম একাদশে সুযোগ পাবে কিনা সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। পাশাপাশি লখনউয়ের হয়ে খেলতে পারেন মার্ক উড, ফিটনেস সংক্রান্ত কারণে গত ম্যাচ খেলেননি তিনি।
ব্যাঙ্গালোর এবং লখনউ দুটি দলেই সমান ভারসাম্য রয়েছে। সোমবারের ম্যাচের আগে লখনউ লীগ টেবিলে তিন নম্বর জায়গা এবং ব্যাঙ্গালোর সাত নম্বর জায়গায় রয়েছে। লখনউ তিনটি ম্যাচ খেলে দুটি জিতেছে এবং একটি ম্যাচ হেরেছে। শেষ ম্যাচে কলকাতার কাছে হেরে অবশ্যই এই ম্যাচ জিততে চাইবে বিরাটরা। এবং চেন্নাইয়ের কাছে শেষ ম্যাচে হেরেছে লখনউও। ফলে রাহুলরাও এই ম্যাচ জিততে মরিয়া হয়ে রয়েছে। ব্যাঙ্গালোরের তরফে প্লেসিস এবং বিরাট ফর্মে থাকলেও চিন্তায় রয়েছে ব্যাঙ্গালোরের বোলিং নিয়ে। কারণ স্পিনার করণ শর্মা ছাড়া কাউকেই তেমন ফর্মে পায়নি ব্যাঙ্গালোর।
ব্যাঙ্গালোররের বিরুদ্ধে বারোটি ইনিংসে খেলে কে এল রাহুল সংগ্রহ তিনটে অর্ধশত রান এবং একটি শত রান। বিশেষত এবারের মরশুমে ব্যাঙ্গালোরের প্রথম পাওয়ার প্লের ইকোনমি রেট ৬.৩৩, যা নিয়ে কিছুটা চিন্তায় থাকবে রাহুলরা।
এ মরশুমে আরসিবি অর্থাৎ ব্যাঙ্গালোরের (RCB) প্রথম ম্যাচেই মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে কিং কোহলি (Virat Kohli)। দীর্ঘ ৮৩ দিন পর আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ইডেনে (Eden Gardens) নামছেন কোহলি, কেকেআরের (KKR) বিরুদ্ধে ভালো ট্রাক রেকর্ড নিয়ে নামছেন তিনি। কোহলির ফর্ম নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তায় থাকবে কেকেআর। কেকেআরের বোলিং নিয়েও একই চিন্তায় আছে কেকেআর। সাকিবের অনুপস্থিতি যে ভাবাচ্ছে কেকেআরকে সেটা স্পষ্ট।
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে আরসিবিআর হয়ে বিরাট কোহলি, নট আউট থেকে ৪৯ বলে ৮২ রান করে। তাঁর ইনিংসে ছিল ৬ টি বাউন্ডারি ও ৫টি ওভার বাউন্ডারি। বৃহস্পতিবার ইডেনের ম্যাচে বিরাটকে আটকানোর সুপরিকল্পনা করবে কেকেআরের বোলিং কোচ ভরত অরুন। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে বিরাটকে ম্যাচের প্রথম দিকেই আউট করতে, প্রথম থেকেই টিম সাউদির বলে সুইং দরকার। এছাড়া ব্যবহার করা যেতে পারে সুনীল নারিনকে। নারিনের বিরুদ্ধে বিরাট আইপিএলে বিরাট ৩ বার আউট হয়েছেন। এবং ৯৮ বল খেলে ১০১ রান করেন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নারাইনকে দিয়ে বিরাট কে আউট করার অস্ত্র হিসেবে লাগাতে পারে। এ ছাড়া বরুন চক্রবর্তীকে কাজে লাগাতে পারে কেকেআর।
ইডেনে আরসিবির রেকর্ড যেমন ভালো তেমনিই মোলায়েম। এখানে বিরাটের দলের সর্বনিন্ম ৪৯ রানের টোটাল আছে। সূত্রের খবর, ইডেনে বিরাট ১১ টি ম্যাচ খেলে ৩৩২ রান করেছে, একটি করে সেঞ্চুরি ও একটি করে অর্ধসেঞ্চুরির রেকর্ড আছে, এবং আইপিএলে ইডেনে বিরাটের স্ট্রাইকরেট ৪১,৫০। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ইডেনে আইপিএলের সর্বোচ্চ রান ২৩২। এছাড়া ইডেনে দ্বিতীয় ব্যাটিং অর্থাৎ রান তাড়া করে জেতার সংখ্যা ৭৮টি ম্যাচের মধ্যে ৪৭ টি। কেকেআর আইপিএলে ৭৪টি ম্যাচের মধ্যে ৪৫টি ম্যাচ জয়লাভ করেছে, এবং ২৯ টি ম্যাচ হেরে গিয়েছে।
বিরাট ম্যাচের আগে যে কার্যত উন্মাদনা রয়েছে শহর জুড়ে সেটা স্পষ্ট। বুধবার সন্ধ্যাতেই আইপিএলে কেকেআরের বিরুদ্ধে খেলতে কলকাতায় এসেছেন কিং কোহলি। বৃহস্পতিবার ইডেনে ৭.৩০ থেকে এই খেলা শুরু হবে।