ফাইনালে (World Cup 2022) তাঁর খেলা নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। চোটের জন্য গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচ খেলতেই পারেননি ডি মারিয়া (Di Maria)। কিন্তু ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মেগা ফাইনালে ত্রাতা হয়ে উঠলেন সেই ডি মারিয়া। প্রথম গোলের সময় তিনি পেনাল্টি আদায় করে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় গোলের সময় তিনি নায়ক। দুরন্ত মুভমেন্ট ফিনিশ হয় ডি মারিয়ার বাঁ পায়ে। বিশ্বকাপ জেতার দু'দিন পর সাজঘর থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ফাইনালের ২৪ ঘণ্টা আগে এক হোয়াটস আপ বার্তায় স্ত্রী জর্জেলিনাকে সেলিব্রেশনের প্রস্তুতি নিতে বলেন ডি মারিয়া। এমনকি, স্ত্রীকে জানান ফাইনালে তিনি গোল করবেনই। তিনি গোল করার ব্যাপারে নিশ্চিত। কোপা ফাইনালে গোল ছিল ডি মারিয়ার। আর ওয়েম্বলিতে ফিনালিসিমায় গোল ছিল তাঁর। আর্জেন্টিনা দল দেশে ফেরার পর একান্ত আলাপচারিতার কথা ফাঁস করেছেন ডি মারিয়ার স্ত্রী।
নিজের ওপর কতটা আত্মবিশ্বাস থাকলে এমন ভবিষ্যৎবাণী করা যায়! ডি মারিয়া সেটাই দেখালেন। হয়তো নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেললেন এই তারকা। মেগাস্টার লিও মেসির ছায়ায় ঢাকা থেকেছেন দীর্ঘ সময়। কিন্তু নীল-সাদার ইতিহাসে ঝকঝকে রোদ্দুর এনে দেওয়ার অন্যতম কারিগর তিনি, ডি মারিয়া।
প্রসূন গুপ্ত: খেলার হচ্ছে কাতারে (Qatar World Cup 2022), একমাত্র মহাদেশ ছাড়া ভারতের সঙ্গে বিশ্বকাপের সম্পর্কজনিত কোনও কিছুর নামগন্ধ নেই। কিন্তু খেলা পাগল বাঙালি (Bengal means Football) দর্শকের সমর্থন কিন্তু টিভি সম্প্রচারকারীদের দরকার টিআরপি তোলার জন্য। তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় সারা ভারত, বাংলাদেশ (India- Bangladesh) পাকিস্তান ইত্যাদি উপমহাদেশে টেলিভিশনের সব থেকে বেশি দর্শক। সুতরাং এ দেশগুলির সুবিধাজনক খেলা দেখার সময় ঠিক করছে ফিফা। এই একটি বিষয়ে ভারত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেলা পাগল দর্শক দুই বাংলাতে। লক্ষ্য করে দেখুন রাশিয়া এবং কাতারে ফাইনাল হয়েছে ভারতীয় সময় রাত ৮.৩০-এ। শহর কলকাতা থেকে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে খেলা দেখা হয়েছে। এই একটি বিষয়ে বৈরিতা নেই তৃণমূল বিজেপি বা সিপিএমে। কাল রাতে সব মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছিলো। তবে সবাই যে আর্জেন্টিনার সমর্থক এমন মোটেই নয়। ব্রাজিল বা জার্মানির সমর্থকরা কাল ফ্রান্সের জন্য গলা ফাটিয়েছে। কারণ লাটিন আমেরিকায় আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল খেলার মাঠে পরম শত্রু , তেমন সমর্থক বিচারে শত্রুতা এদেশেও।
এতদিন বাংলার ব্রাজিল সমর্থকরা দেখাতেন তাঁদের প্রিয় দলের ঝুলিতে পাঁচটি বিশ্বকাপ। ফুটবল বলতে পেলে, রোমারিও, রোনাল্ডো, রিভাল্ডো, রবার্তো কার্লস, কাকা এবং হালফিলের নেইমার। যদিও রবিবারের পর থেকে আর্জেন্টিনা সমর্থকরা বলা শুরু করবে তাঁদের প্রিয় দলের ঝুলিতে তিনটি বিশ্বকাপ। ফুটবল বলতে পাসারেল্লা, মারাদোনা, মেসি, ডি মারিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।
বাংলায় ফুটবলের কিছু পাগলপ্রেমী তো আছেই। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের সচিব দেব সাহা আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত। সন্ধ্যাতেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ছবি এবং লাইভ করে আর্জেন্টিনার জন্য গলা ফাটিয়েছেন। হুগলির ব্যবসায়ী অমল কুন্ডুর বোনের বিয়ে গেলো, ওসব উৎসব বাদ দিয়ে প্রথম থেকে হৈচৈ আর্জেন্টিনার জন্য। বারাসতের সূর্যদের পারিবারিক বনভোজন ছিল প্রথম থেকেই, কতক্ষনে বাড়ি ফিরবে তাঁর জন্য ছটফট করে খেলা শুরুর আগেই বাড়ি ফিরে মেসির জার্সি পরে চিৎকার ইত্যাদি। কাল শহর কলকাতার একাধিক মহল্লায় রাত পর্যন্ত বাজি পুড়েছে। নেপথ্যে ফুটবলের তথাকথিত ঈশ্বর মেসির হাতে কাপ ওঠা।
শিলিগুড়ির তৃণমূল/সিপিএম/ বিজেপির সমর্থকরা এককাট্টা হয়ে আর্জেন্টিনার জন্য গলা ফাঁটিয়েছে এবং সব থেকে গোড়া সমর্থক হিসাবে পত্র পত্রিকায় নাম কুড়িয়েছেন কলকাতার অমিত নাইয়া। শনিবার থেকে নির্জলা উপোস। খেলা শেষে দিশাহারা হয়ে পাগলের মতো ভ্যামস ভ্যামস করে চেঁচিয়ে পাড়া মাত করেছে।সোমবার এলাকার বাজারে লোকজনের একটিই কথা, উফ আর খেলা নেই।
আগে থেকেই বহু জায়গায় মাংস/ভাতের আয়োজন করা হয়েছিল। আর্জেন্টিনা ৩ গোল দিয়ে ৩ গোল খাওয়ার পর এদেরই অনেকে বলেছিলো, না জিতলে সব ফেলে দেব। বিরাটির মহারাজ মুখার্জি আবার বাড়িটিকেই নীল/সাদা করে মেসির ঢাউস এক ছবি টাঙিয়ে জয়ের উৎসব পালন করেছেন।
ভারত বিশ্ব ফুটবলের এই প্রতিযোগিতার ধারে কাছে নেই। আগামী ৫০ বছরেও যেতে পারবে কিনা সন্দেহ কিন্তু ফিফা জানে দর্শক তাদের এই ভারতেই নাকি দুই বাংলায়।
কাতার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup) ফাইনাল রাজ্যের ক্রীড়া ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের (Arup Biswas) চোখে। খেলা দেখে কী লিখলেন তিনি..
১৪ ঘন্টা কেটে গিয়েছে, এখনও ফাইনাল (World Cup Final 2022) জ্বরে আচ্ছন্ন সারা পৃথিবীর ফুটবলপ্রেমীরা। কী খেলাটাই দেখলাম রবিবাসরীয় রাতে। এরকম একটা ফাইনাল এর আগে কবে দেখেছি মনে করতে পারছি না। আমি একসময় মোহনবাগান ও ব্রাজিলের প্রচন্ড সমর্থক ছিলাম। কিন্তু মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে আসার পর একেবারেই নিরপেক্ষ।
রবিবার রাতে আমার এলাকায় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে ফাইনালের (Argentina beats France) ব্যবস্থা করেছিলাম। বললে বিশ্বাস করবেন না প্রায় ৫ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল। নানা পোশাকে, বিশেষ করে নীল-সাদা জার্সিতে এই ঠান্ডায় সব এসে উপস্থিত। একেক সময়ে ভাবি এই খেলা পাগল দর্শকের দেশ ভারত বা বাংলাদেশ, অথচ এখন থেকে কবে যে ফুটবলার উঠবে কে জানে।
অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন বা এআইএফএফের ভাবনার বিষয়। যাই হোক, এবারে লিখি খেলা কেমন হলো! নিঃসন্দেহে প্রথম অর্দ্ধে অসাধারণ আর্জেন্টিনা। মুহুর্মুহু আক্রমণে কাহিল করে দিয়েছিলো ফ্রান্সকে। মনে হচ্ছিলো ফ্রান্স কি খেলা ছেড়ে দিলো? ডি'মারিয়া বাঁ প্রান্ত থেকে দুজন ফ্রান্স ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সেঢুকেছে , অমনি ফাউল। আর্জেন্টিনার কোচের এবার টুর্নামেন্টে একটা বিশেষ স্ট্রাটেজিই ছিল বক্সে ঢুকে কাটাও, ড্রিবল করো, তোমাকে মারবেই এবং মারলেই পেনাল্টি। লক্ষ্য করে দেখা প্রায় প্রতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা পেনাল্টি পেয়েছে এবং গোল করেছে মেসি। দ্বিতীয় গোলটি কয়েক মিনিটের মধ্যে ৫টি টাচ এবং বাঁ প্রান্ত থেকে ডি'মারিয়ার অসাধারণ গোল।
দ্বিতীয়ার্দ্ধে একসময় কোচ ডি'মারিয়াকে কেন তুলে নিলো বুঝলাম না। ও উঠে যাওয়ার পর ফ্রান্সের কোচ একে একে গ্রিসম্যান এবং জিরুডকে তুলে নেওয়ার পর ফ্রান্সের খেলার ঝাঁজ বাড়লো। এই সময়ে আর্জেন্টিনা কি খেলায় একটু হালকা দিলো। এমবাপেকে অনেকটাই মাঠজুড়ে খেলতে দেখা গেলো।
এরপর বক্সের মধ্যে ধাক্কা এবং পেনাল্টি। প্রথম গোল এমবাপের। কিছুক্ষণের মধ্যে দ্বিতীয় অসাধারণ মুভে ফের এমবাপেই গোল করলেন। এক্সট্রা টাইম, ফের খেলা ধরলো আর্জেন্টিনা এবং টাচ ফুটবলে ড্রিবল করে গোল পেলেন মেসি কিন্তু ওই কিছুক্ষণ। বক্সে হাতে বল লাগার জন্য ফের পেনাল্টি পেলো ফ্রান্স।
ফের গোল করলেন এমবাপে। শেষ পর্যন্ত টাই ব্রেকারের মাধ্যমে খেলা শেষ হলো। আর্জেন্টিনা টাই ব্রেকে অনেক সপ্রতিভ ছিল। পরপর ৪টি গোল করলো মেসির দল কিন্তু এখানেই পিছিয়ে ফ্রান্স কারণ গ্রিসম্যান , জিহুর মতো খেলোয়াড় ছিল না যাঁরা পেনাল্টি বিশেষজ্ঞ।
ভালোই হয়েছে, পেলে , মারাদোনার পর একটি নামই আসে বিশ্ব ফুটবলের সেরাদের মধ্যে তিনি জাদুকর মেসি। তাঁর হাতে কাপটি না উঠলে খারাপ লাগত। তবে মেসি হয়তো বিদায় নিলেন এবং দেখে গেলেন নতুন প্রজন্মের এমবাপে এসে গিয়েছেন আগামীর জন্য।
সাড়ে তিন দশকের প্রতীক্ষার অবসান। ফ্রান্সকে টাই ব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। দিনের শেষে এই ট্রফি হয়তো বা মারাদোনাকে উৎসর্গ করবেন মেসিরা। কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসের পাতায় এখন পেলে, মারাদোনা, জিদান, রোনাল্ডোর সঙ্গেই মেসির নাম ঢুকে গেল। ২০১৪-তে তীরে এসে তরী ডুবেছিল, কিন্তু 2022 মানেই ভামোস ভামোস আর্জেন্টিনা।
লুসেইল স্টেডিয়ামে নাটকীয়, রোমহর্ষক ফাইনালে ১২০ মিনিট পর্যন্ত খেলার ফল ৩-৩। পেনাল্টিতে দুটি গোলের পাশাপাশি ফ্রান্সের তৃতীয় গোলও এমবাপের ঝুলিতে। ১৯৬৬-র পর এই প্রথম কোন ফুটবলার ফাইনালে হ্যাট্রিক করলেন। ব্যস ওইটুকুই, কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের প্রথম ৮০ মিনিট দেশর ছেলেদের সঙ্গে দাপট রেখেই খেলেছে আর্জেন্টিনা। প্রথম ৭৫ মিনিট মাঠেই খুঁজে পাওয়া যায়নি এমবাপে, গ্রিজম্যানদের আক্রমণ।
প্রথম অর্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় স্কালোনির দল। ম্যাচের ৬০ মিনিট পর্যন্ত ফ্রান্সের ঝুলিতে না ছিল কর্নার, না অফসাইড। বল পজেশন থেকে শুরু করে গোলমুখী শট এগিয়ে সেই নীল-সাদাই। আর্জেন্টিনার ৩ গোলের পিছনে অবদান মেসি ২ আর ডি মারিয়া ১। মেসির করা দুটি গোলের মধ্যে একটি আবার পেনাল্টি থেকে। কিন্তু ৮০ মিনিটের মাথায় ডি মারিয়াকে স্কালোনি তুলে নিতেই আক্রমণের ধার ভারে এমবাপের।
প্রথম ৯০ মিনিট শেষ হয় ২-২ গোলে। অতিরিক্ত সময় শেষ হয় ৩-৩ গোলে। অবশেষে ম্যাচের ভাগ্য লিখতে হয় পেনাল্টি শুটআউটে। কোয়ার্টার ফাইনালের মতো এই ম্যাচেও নায়ক আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক ই মার্টিনেজ। ফ্রান্সের দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে চাপে ফেলে দেন এমবাপেদের। এরপর শুধু সময়ের অপেক্ষা, কারণ ফুটবল দেবতা বিশ্ব ফুটবলের এল এম -১০-কে নিরাশ করেনি।
কাতার বিশ্বকাপ এই নামে খ্যাত হল আমি 'মেসিরই বিশ্বকাপ।' ঠিক যেভাবে ৯৪ রোমারিও, ৯৮ জিদান, ৮৬ মারাদোনা আর ২০২২ মানে লিওনেল মেসি। ৭৮,৮৬,২০২২ বিশ্বকাপের হ্যাটট্রিক এখন মারাদোনার দেশে।
মুন্নি চৌধুরীঃ বিশ্বকাপ ফাইনালের কাউন্টডাউন শুরু। আজ, রবিবার রাতে লুসেইল স্টেডিয়ামে হবে চলতি বিশ্বকাপের (Qatar World Cup 2022) মেগা ফাইনাল ম্যাচ। মেসি (Lionel Messi) না এমবাপে (Kylian Mbappe)? কাপ উঠবে কার হাতে? বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন।
হাইভোল্টেজ ম্যাচের আগে নানা ফ্যাক্টর নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে বসে পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর্জেন্টিনা শিবিরে যেমন হঠাৎ উদয় হয়েছেন সেরগিও আগুয়েরো (Sergio Leonel Agüero)। সম্পর্কে দিয়েগো মারাদোনার জামাই। নীল-সাদা জার্সিতে খেলতে খেলতেই হৃদযন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়ে তাঁর। খেলা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। আগুয়েরো ছিলেন লিও মেসির রুম পার্টনার। টিমের সঙ্গে খেলতে গেলে মেসির রুম পার্টনার হতেন তিনি। আগুয়েরো খেলা ছাড়ার পর নতুন কোনও ফুটবলার মেসির রুম পার্টনার হননি।
২০১০, ২০১৪ আর ২০১৮। তিনটে বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি। মেসির সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে সেরগিও-র। ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা শিবির উড়িয়ে নিয়ে এসেছে আগুয়েরোকো। আর্জেন্টিনা অনুশীলনে দেখা গিয়েছে তাঁকে। শুধু তাই নয়। মেসির সঙ্গে রুম ভাগ করে থাকবেন তিনি। সেই নিয়ম আদায় করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। লিও মেসিকে তাজা রাখতে, মন ফুরফুরে রাখতে চেষ্টার ত্রুটি নেই। মারাদোনার জামাই কি গুড লাক নিয়ে আসতে পারবেন?
কাতার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) শেষ হচ্ছে ১৮ ডিসেম্বর, রবিবার। ভারতীয় সময় রাত ৮.৩০টা থেকে শুরু হবে ফাইনাল ম্যাচ, যুযুধান দুই দল ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা (France-Argentina)। এই ম্যাচ যত না বিশ্বকাপ ফাইনাল, ততবেশি মেসি বনাম এমবাপে লড়াই। একদিকে, ফ্রান্সের কাছে পরপর দু'বার কাপ জেতার হাতছানি, অন্যদিকে ৩৬ বছর পর কাপ খরা কাটানোর সুযোগ নীল-সাদা ব্রিগেডের। পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মতো সমাপ্তিও (Closing Ceremony) জমকালো করতে চায় ফিফা(FIFA)।
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থার বিবৃতি, ম্যাচ শুরু কাতারের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়। অন্তত দেড় ঘণ্টা আগে অর্থাৎ বিকেল নাগাদ সবাইকে আসন গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। সমাপ্তি অনুষ্ঠান এতটাই জমকালো হবে যা সারা জীবন মনে থাকবে।
কারা কারা অংশগ্রহণ করবে, সেই তালিকাও দিয়েছে ফিফা। অডিওয় একটি গানের সংকলন চলবে, সেখানে ভিডিওয় থাকবে এই বিশ্বকাপের স্মরণীয় মুহূর্তগুলির কোলাজ। কাতার বিশ্বকাপের থিম সং ‘হায়া হায়া’ গাইবেন আমেরিকার গায়ক ডেভিডো এবং আইশা। এই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করবেন বলিউডের ডান্স ক্যুইন নোরা ফাতেহিও। ‘লাইট দ্য স্কাই’ গানের সঙ্গে নাচবেন তাঁরা। বলিউডে বহু সিনেমায় আইটেম গানের সঙ্গে নাচ করেছেন নোরা।
কাতার বিশ্বকাপ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তীর চোখে। কী লিখছেন তিনি
এই সেদিন বিশ্বকাপ শুরু হলো আর এর মধ্যেই রবিবার শেষ হবে এই উৎসব। ফের ৪ বছর বাদে আমেরিকা মহাদেশের মার্কিন যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং মেক্সিকোতে আয়োজন হবে পরের ফুটবল বিশ্বযুদ্ধ। মনটা খারাপ লাগে, সোমবার থেকে ফের রাতে দ্রুত টিভির সামনে বসার দরকার নেই। কোথাও ফাঁকা লাগবে বারবার। যদিও আমরা রাজনীতির মানুষ এবং আমাদের সারা বছর সংগঠন থেকে জনসেবামূলক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল দলের সভাপতি হিসাবে অনেক কাজ। সামনে আবার পঞ্চায়েত নির্বাচন, তবুও ব্যস্ততার মধ্যে মনটা উদাস লাগবে বেশ কিছুদিন। ২০২২-র বিশ্বকাপের স্মৃতিতে, খেলা গেলো বটে। সারা বিশ্বের ৩২টি বাছাই করা দল এসে কী খেলাটাই না খেললো।
এক আয়োজক কাতার ছাড়া প্রতিটি দলই তাদের সেরা উপহার দিয়েছে। আসলে ৩২টির মধ্যে ১টি দলই 'সোনার ফিফা কাপ'টি পাবে। বাকিরা ফের প্রস্তুতি নেবে চার বছরের জন্য। দেখুন কে কোন দলের সমর্থক তা নিয়ে তর্কের প্রয়োজন নেই। কেউ ব্রাজিল, কেউ আর্জেন্টিনা বা ফ্রান্স। আবার কেউ আফ্রিকার দামাল ছেলেদের কামাল করা মরক্কোর সমর্থক ছিল, থাকতেই পারে। আমাদের ভারত বিশ্ব ফুটবলে নেই এটা যথেষ্ট ভাবনার। এতো আইএসএল খেলা হচ্ছে তারপরেও খেলোয়াড় উঠে আসছে না কেন? বিশ্বকাপ ফুটবল একটি ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে থাকা একটি উৎসব। লক্ষ্য করে দেখুন একটা সময়ে বর্ণ সংকট মাথাচাড়া দিয়েছিলো বিশ্বের শ্বেতাঙ্গদের দেশে। কিন্তু আজকের ফুটবলের দিকে তাকান।
এখানে বর্ণ মানে না কেউই। ফ্রান্স দলটার মধ্যে ৭-৮টি খেলোয়াড় কৃষ্ণাঙ্গ এবং এদের বেশিরভাগ ইসলাম ধর্মের। একটি গোল হলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দর তুলনা হয় কখনও? মরক্কো তিউনেশিয়া দলটি ইসলাম ধর্মের আফ্রিকা জাত অথচ দিব্বি শ্বেতাঙ্গদের প্রশংসা পেলো তারা। আমরা বলি, ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। এই বিশ্বকাপ দেখে বলতে হয় "ধর্ম বর্ণ যার যার, কিন্তু ফুটবল সবার।" (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই জোর গুঞ্জন এবার হয়তো শেষ বিশ্বকাপ মেসি, রোনাল্ডো, মড্রিচের। এই নামগুলোর মধ্যে শেষ দু'জন বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত করেছেন। অর্থাৎ সিআর-৭ আর লুকা মড্রিচের কাতার বিশ্বকাপ জয় অধরা। তবে মঙ্গলবার রাতে স্বপ্নের খেলা খেলে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলে লিয়োনেল মেসি জানিয়ে দিলেন, বিশ্বকাপে এটাই তাঁর শেষ ম্যাচ। পরের বিশ্বকাপে তিনি আর খেলবেন না। সেমিফাইনালে ৩-০ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে দুরমুশ করে ফাইনালে আর্জেন্টিনা। ১৮ ডিসেম্বর লুসেইল স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ কে? ঠিক হবে বুধবার রাতে ফ্রান্স বনাম মরোক্কোর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে। কিন্তু প্রথমস সেমিফাইনালে ক্রোটদেওর বিরুদ্ধে একটি গোল করেন মেসি। আর আল্ভারেজ গোলের জন্য পাস বাড়িয়েছেন একটি।
মেসির বয়স ৩৫ বছর। পরের বিশ্বকাপ চার বছর পর অর্থাৎ ৩৯ বছর বয়সে পরের বিশ্বকাপ খেলতে হবে মেসিকে। যদিও ফুটবল বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ বলছে পেপে ৪০ বছর বয়সে কাতার বিশ্বকাপ খেলতে পারলে মেসি নয় কেন? যদিও আর্জেন্টিনার কোচ লিয়োনেল স্কালনি বলেছিলেন, মেসি পরের বিশ্বকাপ খেলবেন। কিন্তু মেসি নিজে জানালেন, এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। মেসিদেরকে কড়া মার্কিংয়ে রাখেন বিপক্ষের ফুটবলাররা। যে পরিমাণ চাপ মেসিদের নিতে হয়, যত বয়স বাড়ে সেই ট্যাকেল নেওয়ার ক্ষমতা কমে। এই বিশ্বকাপে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে নিষ্প্রভ দেখিয়েছে, পরের বিশ্বকাপে হয়তো মেসিকেও তেমন দেখাবে। সেটা হতে না দিয়ে এই বিশ্বকাপেই শেষ করতে চাইছেন তিনি। এমনটাই মত অনেক ফুটবল লিখিয়ের।
এদিকে, ১৯৮৬-র পর বিশ্বকাপ জেতেনি আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছর পর আবার বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ তাদের কাছে। ২০১৪-তে আশা জাগিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। অতিরিক্ত সময়ের ১১৩ মিনিটের মাথায় জার্মানির গোটজের গোলে কাপ হাতছাড়া হয়ে আর্জেন্টিনার। এদিকে, আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেসি গোলদাতার তালিকায় এখন মেসি। মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত তাঁর আগে ছিল গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা। কিন্তু ১১ গোল করে বাতি গোলকেও ছাপিয়ে যান মেসি। এখন ১৮ ডিসেম্বর লুসেইল স্টেডিয়ামে সব চোখ থাকবে বিশ্ব ফুটবলের এলএম-১০-র দিকে।
মুন্নি চৌধুরীঃ মহারণের অপেক্ষায় লুসাইল স্টেডিয়াম (Lusail Stadium)। নীল-সাদা বনাম লাল-সাদা। বিশ্বকাপের হাইভোল্টেজ ম্যাচে আর্জেন্টিনার (Argentina) সামনে ক্রোয়েশিয়া (Croatia)। ভারতীয় সময় ম্যাচ শুরু বুধবার রাত সাড়ে ১২টা অর্থাৎ মঙ্গলবার মধ্যরাত। এই মেগা ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে অদ্ভুত পরিসংখ্যান ঘুরছে কাতারে। বিশ্বকাপ (World Cup 2022) সেমিফাইনালে কখনও হারেনি আর্জেন্টিনা। এবার স্কালনির দল আর ফাইনালের মাঝে দাঁড়িয়ে শুধু ক্রোট-রা। ২০১৪-র পুনরাবৃত্তি কি হবে লুসেইল স্টেডিয়ামে। ৮ বছর বাদে কি আবার ফাইনাল খেলবেন মেসিরা?এ ধরনের কাধিক প্রশ্ন ঘুরছে ফুটবল প্রেমী বাঙালির মনে। যদিও কাতার কাপযুদ্ধে মেসি (Lionel Messi) ম্যাজিকের দিকেই তাকিয়ে আর্জেন্টিনা সাজঘর।
টুর্নামেন্টে চার গোল হয়েছে লিওর। প্রতি ম্যাচেই ধেয়ে আসছে কড়া ট্যাকল। আটকানো যায়নি মেসিকে। ডালিচের দলের জমাট দুর্গ ভাঙতে মারাদোনার দেশ তাকিয়ে মেসির বাঁ পায়ের দিকে। তবে স্কালনির কাজটা মোটেও সহজ নয়। ৫-৩-২ আর্জেন্টাইন কোচের প্রিয় স্ট্রাটেজি। সিঁড়ি ভাঙা অংকের মতো সেটা কখনো হয়ে দাঁড়ায় ৪-২-৩-১ সিস্টেমে। লুকা মদ্রিচদের বিরুদ্ধে নামার আগে প্রবল চিন্তায় নীল-সাদার কোচ। কার্ড সমস্যার কারণে নেই লেফটব্যাক আকুইনা, নেই মন্ত্রিয়েল।
কোচের চিন্তা আরও বাড়িয়েছে ক্রোট কোচের স্ট্রাটেজি। দুটো উইংকে চমৎকার ব্যবহার করেন ডালিচ। ব্রাজিল ওখানেই ডুবেছে। স্কালনি সেই ভুল করতে চান না। ফ্যাক্টর আরও আছে। দুই গোলকিপারের ডুয়েল। মেসির দলে মার্টিনেজ আছেন। মদ্রিচদের আছেন লিভাকভিচ। দুজনেই টাইব্রেকারে বিশেষজ্ঞ। মার্টিনেজ শপথ নিয়েছেন মেসির হাতে কাপ তুলেই ছাড়বেন। ডাইনামো জাগরেবে খেলা লিভাকোভিচ এবার গোল্ডেন গ্লাভসের দাবিদার। ২০১৮-র পর ২০২২। টানা দু'বার ফাইনালে ওঠার হাতছানি ক্রোয়শিয়ার সামনে।
টাইব্রেকারে এই দল অপ্রতিরোধ্য। ৯০ মিনিটে ম্যাচ শেষ করতে চাইবে আর্জেন্টিনা। ডিফেন্স জমাট করে ম্যাচটা রবারের মতো টেনে নিয়ে যেতে চাইবে ডালিচের দল। কাউন্টডাউন কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছে।
কাতার বিশ্বকাপ বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চোখে। খেলা দেখে কী লিখলেন তিনি
২০২২-র বিশ্বকাপে একের পর এক অঘটন দেখে অনেকেই চমকে উঠেছেন, ভাবছেন 'এমনটা হলো কি করে'? আমি চমকে যাইনি। আমি খেলার মাঠের মানুষ। রাজনীতির সঙ্গে ফুটবল আমার ভয়ানক প্রিয়। নিয়মিত ইউরোপের ক্লাব ফুটবলগুলো দেখি কাজেই এই ঘানা থেকে মরোক্কোর খেলোয়াড়দের বিস্তর চিনি। আমার মনে হয়, বিশ্বকাপ শেষ হলে দর্শকদের খেলা দেখা বন্ধ করে পরের বিশ্বকাপের জন্য অপেক্ষা করা উচিত নয়। দেখা উচিত ইউরোপিয়ান ও কোপার খেলাগুলি। যাই হোক, রাত জেগে প্রায় প্রতিটি খেলা দেখেছি। দেখতেই হবে তাই রাত জাগা কোনও সমস্যা নয়।
একটা কথা প্রথমেই বলে রাখা ভালো আফ্রিকান ও এশিয়ান ফুটবলের প্রচুর উন্নতি হয়েছে। লিখে রাখুন এরাই আরও চমক দেবে ২০২৬ এবং ৩০-এ। কে বলতে পারে এদের মধ্যে থেকেই নতুন চ্যাম্পিয়ন উঠে আসবে না। মরোক্কোর কথাই ধরুন না কেন। আগামীকাল রাতে ফ্রান্সের সঙ্গে খেলা। এটা সত্যি যে এমবাপে, জিরুড, গ্রিজম্যান ত্রয়ী এখন আক্রমণের সেরা। কিন্তু তবুও মরক্কোর গোলে বনু আর বাকি দশজন মাঠে দাপট দেখাচ্ছে। এদের অধিকাংশই কিন্তু স্পেন ইতালিতে খেলে এবং সারা বছর ওখানেই থাকে।
ওদের ক্লাব ফুটবলের খেলা দেখেছি, দারুন খেলে। ঘানা তিউনিশিয়া ইত্যাদি দেশের খেলোয়াড়রাও বিদেশে দুর্দান্ত খেলছে। অতএব মাঠে নেমে ফ্রান্সকে চাপ দেবেই মরোক্কো।
এবার আজ রাতের খেলায় আসি। দেখুন ২০১৮-র বিশ্বকাপ রানার্স ক্রোয়েশিয়া। সুতরাং তারা ব্রাজিলকে কীভাবে হারালো এই প্রশ্ন অবান্তর। তারা আর্জেন্টিনাকেও চাপে রাখবে নিঃসন্দেহে। গোলে লিভোকোভিচ তা ছাড়া পেরিসিচ, পেটকোভিচ, কোভাচিচ, ব্রাজোভিচ, প্রত্যেকেই দুর্দান্ত। একসময়ে গৌতম সরকারের খেলা দেখেছিলাম, তুলনা করছি না। কিন্তু গৌতমদা সারা মাঠ জুড়ে খেলতেন। এটাই খেলে লুকা মদ্রিচ, অসাধারণ, ফলে আর্জেন্টিনাকে সতর্ক হয় খেলতে হবে। আর্জেন্টিনাতে ভালো খেলোয়াড়ের অভাব নেই।
রড্রিগো দি'পল কিংবা দি'মারিয়া, ফ্রেন্ট ইত্যাদি ছাড়াও বিশ্বমানের গোলরক্ষক আছে তাদের। তবে ডিফেন্সে সতর্কতা প্রয়োজন। আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডকে ২ গোল দিয়ে দু গোল খাওয়া কাজের কথা নয়। চেষ্টা করতে হবে সমস্ত বল যেন মেসিমুখী হয়। মেসিকে অবশ্যই জোনাল মার্কিং করবে ক্রোটরা, সেটার সুযোগ নিতে হবে দি'মারিয়াকে। একা মেসিই বদলে দিতে পারে খেলার ফলাফল। এটাই ওর শেষ বিশ্বকাপ, খেলছেনও ভালো।একটাই অসুবিধা আগের ম্যাচে অধিকাংশ খেলোয়াড় হলুদ কার্ড দেখেছে। অতএব মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলতে হবে। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
কাতার বিশ্বকাপ তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর চোখে। খেলা দেখে কী লিখলেন তিনি
ধনী মহাদেশের মধ্যে প্রথম স্থানে নিঃসন্দেহে ইউরোপ। ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স তো বটেই ইতালি, স্পেন, সুইৎজারল্যান্ড ইত্যাদি দেশও যথেষ্ট ধনী। কাজেই খেলাধুলার ক্ষেত্রে এরা দেদার খরচ করে থাকে। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পূর্ব ইউরোপের অধিকাংশ দেশ বামপন্থার হাত ধরে। ব্যতিক্রম ছিল না যুগোশ্লোভিয়া। ৮০-র দশকে এই পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রবল ভাবে দেখা যায়। সাম্যবাদের নামে এই দেশগুলিতে চলতো রীতিমতো একনায়কতন্ত্র। যা কিছু সব বুঝে নেবে বামপন্থী দলগুলো বা কম্যুনিস্ট পার্টি। এলো ১৯৯১, সব ভেঙেচুরে গেলো। যুগোশ্লোভিয়ার অস্তিত্বই রইলো না। এর মধ্যে একটি দেশের জন্ম হলো ক্রোয়েশিয়া। দ্রুত বামপন্থা ছেড়ে তার ন্যাটোর অর্থাৎ আমেরিকার হাত ধরে ফেললো। ধীরে ধীরে বিশ্ব অর্থনীতিতে এবং বাণিজ্যে উন্নতি আসতে শুরু হলো। ক্রোয়েশিয়ার মূল সম্পদ শিপ বিল্ডিং। এছাড়া ফুড প্রসেসিং, মেডিসিন, আইটি, বায়ো-কেমিক্যাল এবং কাঠের ব্যবসায়ে দ্রুত উন্নতি করে বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু করলো। একইসঙ্গে গড়ে তুললো ফুটবল খেলার উন্নয়ন। ক্রোয়েশিয়াকে ইউরোপের উচ্চ মধ্যবিত্ত বলা হয়ে থাকে।
আসলে যুগোস্লাভিয়া ফুটবল দলটি যথেষ্ট শাক্তিশালী দল ছিল। ক্রোয়েশিয়ার জন্ম হওয়ার পর অধিকাংশ ফুটবলার চলে এসেছিলেন তাদের দেশে। পরবর্তীতে ক্রোয়েশিয়া বর্তমানে ইউরোপের নামি দল এবং গত বিশ্বকাপের রানার্স আপ। মাঝমাঠের মদ্রিচকে সোনার বল দেওয়া হয়েছিল। সেই ক্রোয়েশিয়া এবারে ব্রাজিলকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি। কেমন খেলবে তারা?
এবারও তাদের দল যথেষ্ট শক্তিশালী। মাঝমাঠে মদ্রিচ ছাড়াও রয়েছেন ব্রুনো পেটকোভিচ, কোভাচিচ, ব্রোনেভিচ ইত্যাদি। তাদের ডিফেন্সও যথেষ্ট ভালো। গোলে বিশ্বমানের গোলরক্ষক লিভাকোভিচ ইতিমধ্যে পেনাল্টি বাঁচিয়ে প্রথমে জাপান পরে ব্রাজিলকে বিদায় করে দিয়েছে। এটা বাস্তব যে আর্জেন্টিনায় মেসি ডি'মারিয়ার মতো খেলোয়াড় আছে। কোচ ডালিচ জানিয়েছেন যে, আলাদা করে কারও পিছনে পুলিশম্যান মার্কিং করা হবে না। জোনাল মার্কিংয়ে থাকবেন সবাই, আর্জেন্টিনা কিন্তু এই দলকে উড়িয়ে দিতে পারে না। এ স্বত্বেও ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে একজনই তিনি লিওনেল মেসি। গুরুত্বপূর্ণ খেলায় ভাগ্যনিয়ন্ত্রক মেসি ছাড়া আর বিশ্ব ফুটবলে আছে কে? (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
কাতার বিশ্বকাপ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনের চোখে। খেলা দেখে কী লিখছেন তিনি
খেলা দেখেছি, দেখছি এবং দেখবো। এটা বিশ্বকাপ, চার বছরে একবার হলেও আমি ইউরোপিয়ান বা কোপার খেলা সুযোগ পেলেই দেখি। কাজেই আজকের মাঠের খেলোয়াড়রা আমার অপরিচিত নয় মোটেই। প্রতিটি খেলা দেখেছি, কাজের জন্য বা সংগঠনের জন্য যদি মিস যায় তবে পরে হাইলাইটে দেখে নিয়েছি। এবার বিশ্বকাপ কিন্তু বিকল্পহীন। কাকে সেরা বলবেন? হয়তো কেউ তো নিশ্চই চ্যাম্পিয়ন হবে কিন্তু কিছুতেই সেরা বলতে পারবো না। আমার প্রিয় বাজিল, বেশ খেলেছে কিন্তু টুর্নামেন্ট জুড়ে এবং ব্রাজিল মানে শুধু নেইমার নয়। দেখবেন পরের ফিফা টুর্নামেন্টে দারুণ খেলবে ব্রাজিল। আমি নিজে রোনাল্ডোর ফ্যান কিন্তু ওঁরা হেরে গেলো স্রেফ কোচের গোয়ার্তুমির জন্য। কোয়ার্টার ফাইনালে কেউ রোনাল্ডোকে বসিয়ে রেখে খেলতে নামে? ব্রুনো ফার্নান্দেজ বা রামোস নিশ্চয় ভালো কিন্তু এঁরা মূলত রোনাল্ডো নির্ভর। নিচ থেকে পেপে অজস্র বল ভাসিয়ে দিয়েছে কিন্তু মরোক্কোর ডিফেন্স ভেঙে হেড করার লোক কোথায়?
সেই রোনাল্ডো তো শেষ পর্যন্ত নামলেনই তখন সিআর-৭-কে গার্ড করার জন্য আলাদা ব্যস্ততা এসে গেলো। আমি বলবো অসাধারণ মরোক্কো, তৃতীয় বিশ্বের দেশ আফ্রিকার এই মরোক্কো কী খেলাটাই না খেললো! এবার সব উলটপালট করে দিয়েছে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি। আফ্রিকার দল তো বটেই তা ছাড়া ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, পর্তুগাল ইত্যাদি দেশগুলিতে ওই আফ্রিকা থেকে মাইগ্রেট করা মানুষের বংশধর। যেমন এমব্যাপে, কিন্তু উত্তর আফ্রিকার এই মরোক্কোকে কিন্তু অগ্রাহ্য করা যাবে না। ওরা শুধু পর্তুগাল নয় প্রতিটি দলকে বেগ দিয়েছে এবং ফ্রান্সকেও দেবে। আমি মরোক্কোর মতো তৃতীয় বিশ্বের দারিদ্র ইসলামিক দেশের ভক্ত হয়ে গেলেও পরের খেলায় প্রিয় এমবাপের দিকেই সমর্থন থাকবে।
মনে করি ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের খেলা সামনে সমানে হয়েছে। ফারাক যেটা তিনি এমবাপে। শনিবার রাতে ওকে একেবারে বোতলবন্দি করার চেষ্টা করেছিল ইংল্যান্ড ফলে ওদের ২ নম্বর জার্সির রাইট ব্যাক একেবারেই ওভারল্যাপে যায়নি। আক্রমণকে গোলে পরিণত করার ফর্মুলা এখন ফ্রান্সের থেকে ভালো কেউ জানে না। দুটি গোল কিন্তু তারই ফসল। প্রথম গোলটিতো দারুন শট থেকে পাওয়া। ইংল্যান্ড প্রথমে ফাউলের কারণে পেনাল্টি পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে ফের পেনাল্টিকে আমি সমর্থন করি না। ওটা কি সত্যি পেনাল্টি ছিল? তবুও চেয়েছি ফ্রান্স জিতুক, শত ব্রিটিশ শাসন তো আর ভুলে যেতে পারি না। আরেকটি দল নিয়ে না বললে অন্যায় হবে, ক্রোয়েশিয়া। দুর্দান্ত মিডফিল্ড, পেনাল্টি শুটে ওস্তাদ কাজেই আর্জেন্টিনাকে ভেবে খেলতে হবে। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
কাতার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর চোখে। খেলা দেখে কী লিখছেন তিনি
বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের (Quarter Final) দুটি ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পর একটাই স্লোগান হওয়া উচিত 'কাতার তুমি কার'? এবার বিশ্বকাপ নাটকীয়তায় ভরা। কে যে কখন কাকে হারিয়ে দেবে বা দিতে পারে পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। প্রতিটি ম্যাচের আগে মনে হয়েছে অমুক দল জিততে পারে। কিন্তু খেলা শেষে দেখা গেলো তমুক দল দুর্দান্ত খেলে জিতে গিয়েছে। এই টুর্নামেন্টে গ্রুপ লিগের পর জার্মানি নেই, যোগ্যতা অর্জন করেনি ইতালি। বিদায় নিয়েছে বেলজিয়াম, স্পেন এবং শুক্রবার রাতে বিদায়ের ঘন্টা বেজে গেলো ব্রাজিলের জন্য। হলুদ সবুজ পতাকাগুলি আজ সকাল রাস্তার মোড়ে মোড়ে যেন হঠাৎই জৌলুশ হারিয়েছে। ব্রাজিলের ভক্তদের মুখ দেখে মনে হচ্ছে, হয়তো কোনও নিকট আত্মীয় চলে গেছে গত রাতে।
আমরা ওপার বাংলার, ছেলেবেলা থেকে দেখেছি বাড়িতে লাল-হলুদ সংস্কৃতি। আমি তো আর পরিবারের বাইরে নই কাজেই...। বাবাদের আমলে বিদেশি খেলা দেখার সুযোগ ছিল না, টিভিতে পাওয়া যেত না। কিন্তু ১৯৭৮ থেকে, তখন আমার বাল্যকাল, দেখেছি কিছু বিশ্বকাপের খেলা। সেই থেকে শুরু, চলছে আজ অবধি। আমার লাতিন আমেরিকার ফুটবল ভালো লাগে চিরকালই। ব্রাজিল ,আর্জেন্টিনা কিংবা উরুগুয়ের খেলা মানেই পায়ের শিল্প। এবার কিন্তু তার অভাব প্রকট হয়েছে বারবার। কোথায় বিপক্ষের ডি বক্সে একচেটিয়া আক্রমণ থাকবে ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার, তার জায়গায় স্থান পেয়েছে অজস্র পাসিং ফুটবল। নেইমার চেষ্টা করেছিল, ব্রাজিলের আক্রমণ, বল পজেশন নিশ্চয় ক্রোয়েশিয়ার থেকে বেশি ছিল। কিন্তু ক্রোটরা খেলাটাকে এলোমেলো করে দিলো নিজেদের মধ্যে প্রচুর দিশাহীন দিশাহীন পাশ খেলে। দ্বিতীয়ার্ধে নেইমার বাহিনী খেলা ধরলো। গোল এলো কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে। একটা জিনিস লক্ষ করলাম সারা মাঠজুড়ে খেললো গত বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় লুকা মদ্রিচ। ৩৭ বছরের অধিনায়কই ব্রাজিলের খেলার ছন্দ নষ্ট করে দিলেন, সারা মাঠের প্রতি অঞ্চল ঘুরে দৌড়ে।
আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ব্রাজিলকে ওই সময়েই গোল খেতে হলো। তখন খেলা শেষ হতে আর বাকি নেই। ক্রোটরাতো এটাই চাইছিলো। ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকভিচ বিশ্বের অন্যতম সেরা। তাঁর উপরেই ভরসা করে জাপানকে টাই ব্রেকে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া, এবারে বিদায় ব্রাজিলের।
এদিকে, আর্জেন্টিনার খেলা মানেই মেসি। কিন্তু প্রথমে নেদারল্যান্ড খেলায় অসংখ্য পাস খেলে চাপে রাখলেও মেসি বাহিনী প্রথম অর্ধের শেষে খেলা ধরে নিয়েছিল। সতীর্থ মলিনাকে দুর্দান্ত পাস বাড়িয়ে গোল মুখ খুলে দেন এলএম-১০। প্রথম অর্ধেই ১-০ আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে আকুনহাকে বক্সে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। নিজেদের ফলে খেলার ফল ২-০ করতে ভুল করেননি লিও। কিন্তু ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত ২-০ এগিয়ে থেকেও কি খানিকটা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস গ্রাস করেছিল স্কালোনির ছেলেদের। ডিফেন্সের দুর্বলতা খুঁজে ডাচরা দুটি গোল শোধ করে দিলো। অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিট অবশ্য ২-২ স্কোর লাইন রেখে টাই ব্রেকে ৪-৩ গোলে কমলা ব্রিগেডকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালের ছাড়পত্র পেয়ে যায়। এক্ষেত্রে নায়ক অবশ্য আরজেন্টাইন গোলরক্ষক ই মার্টিনেজ। তবে একটি কথা বলবো টাইব্রেকে কোনও দলের মান বোঝা যায় না। কিন্তু এটাই এবারের বিশ্বকাপের ট্যাগলাইন। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
শুক্রবার সন্ধ্যার কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইবেকার হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ব্রাজিলের (Brazil lost to Croatia)। ছ'টি বিশ্বকাপ (World Cup 2022) জেতার লক্ষ্যমাত্রা এই মুহূর্তে দেরাজে তুলে রাখতে হয়েছে নেইমারদের। এদিকে, রুদ্ধশ্বাস এই ম্যাচে এক্সট্রা টাইম অবধি গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে গোল দিয়ে ম্যাচ টাইবেকার অবধি নিয়ে যায় লুক মদ্রিচের দল। অপরদিকে ব্রাজিল ম্যাচের রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগে শুক্রবার মধ্যরাতে মাঠে নামে আর্জেন্টিনা, প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ড (Brazil versus Netherland)। কমলা ব্রিগেড বনাম নীল-সাদা ম্যাচ দেখতে রাত জাগে কলকাতা। প্রথম অর্ধ আর্জেন্টিনা এক গোলে এগিয়ে গেলেও, প্রিয় টিমের খেলা দেখে মন ভরেনি ফুটবলপ্রেমীদের। দ্বিতীয় অর্ধে পেনাল্টিতে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু খেলা শেষের ২০ মিনিট নীল-সাদার ডিফেন্সের উপর চাপ বাড়িয়ে পিছিয়ে থেকেও ম্যাচ ড্র করে ডাচরা।
খেলা গড়ায় এক্সট্রা টাইম পর্যন্ত। আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচে নাটকের পর নাটক। নেদারল্যান্ডসকে ৪-৩ ব্য়বধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে গেলেন মেসিরা। এই ম্যাচে মেসিকে রুখে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ভাগ্য নিজের দিকে টানার চেষ্টা করেছিলেন ডাচ কোচ লুই ফান গল। জোনাল মার্কিংয়ে থাকা মেসি বল ধরলেই ছেঁকে ধরছিলেন তিন থেকে চার জন। কিন্তু ডাচ টিমের সব কৌশল ভোতা করে মলিনাকে দিয়ে গোল করালেন মেসি। নিজেও আবার পেনাল্টি থেকে গোল করলেন।
দু’দলই রক্ষণ মজবুত রেখে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিল। নেদারল্যান্ডস দু’প্রান্ত ব্যবহার করে আক্রমণে উঠছিল, প্রথম ২০ মিনিটে দু’বার আর্জেন্টিনার বক্সে ঢুকে পড়েন মেম্ফিস দেপাই, কোডি গাকপোরা। কিন্তু খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি এমিলিয়ানো মার্টিন। অন্যদিকে থ্রু বলে ধরে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিল আর্জেন্টিনা। মেসির পায়ে বল পড়লেই অন্তত তিন জন মিলে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করছিলেন।
দু’দলেরই খেলা তৈরি হচ্ছিল নিজেদের রক্ষণ থেকে নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাসে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করছিলেন ফুটবলাররা। তার পরে আক্রমণে উঠছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের রক্ষণ জমাট থাকায় গোলের সুযোগ তৈরি হচ্ছিল না। মাঝে মধ্যে খেলার গতি খুব মন্থর হয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত মেসির জাদুতে ৩৪ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। প্রায় ৩০ গজ দূরে বল ধরেন মেসি। ঘাড়ের কাছে চার জন ডিফেন্ডারকে নিয়ে সামনের দিকে এগোন। তার পর কোনাকুনি বল বাড়ান বক্সে থাকা মলিনার দিকে। গোলরক্ষকের ডান দিক থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন মোলিনা।
লুই ফন গাল (Louis van Gaal)। আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে নেদারল্যান্ডস শিবিরে রূপকথার মতো উঠে আসছে চিফ কোচের গল্প। জীবনযুদ্ধের গল্প। ৭১ বছরের ফন গাল ডাচ ফুটবলের নমস্য ব্যক্তিত্ব। কোচের কেবিনেটে অন্তত ২০টি বড় ট্রফি রয়েছে। বিশ্বকাপের (World Cup) ইতিহাসে তিনি তৃতীয় কোচ, যিনি ৭০ পেরিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বড় কথা, দু'বছর আগেই প্রস্টেট ক্যান্সার (Cancer) ধরা পড়ে তাঁর। কিন্তু ফুটবলাররা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। কোচ চাননি ফোকাস সরে যাক। শেষ পর্যন্ত খবরটা জানাজানি হয় গত এপ্রিলে।
ততদিনে ২৫টি রেডিয়েশন থেরাপি হয়ে গিয়েছে কোচের। ২০২১ সালে যখন ডাচেরা বিশ্বকাপের টিকিট পায়, তখন হুইল চেয়ারে বসে কোচিং কাটিয়েছেন তিনি। তাই নিয়েই হাজির থেকেছেন প্র্যাক্টিস সেশনে। ইস্পাতের মতো মানসিকতা। ১৯৯৪ সালে স্ত্রী ফেরানদাকে হারিয়েছেন। তিনিও ক্যানসার আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন ফান গাল সবে ৩৯।
ভেঙে পড়লেও নতুনভাবে লড়াই শুরু করেন কিংবদন্তি কোচ। আর এবার তো নিজেকেও লড়তে হচ্ছে প্রতিদিন। কোচের জন্য ম্যাচ জিততে চাইছেন ফুটবলাররা। কারণ, ভিতরে ভিতরে ঝাঁঝরা হয়েও লড়ে যাচ্ছেন ফান গাল। লড়তে হবে, জিততে হবে। মাঠ আর মাঠের বাইরে কমলা বিপলবের নায়কের নাম ফান গাল।