প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে রক্ষাকবচ দিল না দেশের শীর্ষ আদালত। এছাড়াও ডেপুটি সেক্রেটারিকেও কোনও রক্ষাকবচ দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী-র বেঞ্চ সোমবার ওই আবেদন খারিজ করে দেয়।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গৌতম ও পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রয়োজনে তাঁদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন পর্ষদ সভাপতি। সেই আবেদন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ওএমআর শিট নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পর্ষদ সভাপতির বিরুদ্ধে। সেকারণে সিবিআইকে বিচারপতি নির্দেশ দেন, অতি দ্রুত পর্ষদ সভাপতি এবং ডেপুটি সেক্রেটারিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। যদিও তারপরেই রক্ষাকবচ পেতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টে আগামী শুক্রবার ফের মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে
প্রাথমিক শিক্ষায় (Primary Education) লিখিত পরীক্ষায় বসতে হবে না? জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নতুন এই খসড়ায় রাখা প্রস্তাবে ভ্রু কুঁচকেছেন শিক্ষাবিদরা। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের (Union Education Ministry) কাছে পাঠানো খসড়ায় বলা, দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষায় বসতে হবে না পড়ুয়াদের। ২০২০-র জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) অনুসরণ করে তৈরি জাতীয় পাঠক্রম অনুযায়ী নতুন এই বদলের পথে হাঁটবে কি মোদী সরকার। ন্যাশনাল সিলেবাস কমিটির নয়া খসড়ায় বলা, নয়া পদ্ধতিতে তৃতীয় শ্রেণি থেকে লিখিত পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে ছাত্রছাত্রীদের।
ওই খসড়ায় বলা, 'পাঠ্যক্রম এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি এমন হওয়া উচিত, যাতে শিশুদের উপর বাড়তি চাপ না পড়ে।' কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০২২ সালে জাতীয় এবং রাজ্যস্তরে এ সংক্রান্ত সমীক্ষা হয়েছিল। সেই সমীক্ষার ফল পর্যালোচনা করেই এই পদক্ষেপের সুপারিশ। লিখিত পরীক্ষা উঠে গেলে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি কী? বলা হয়েছে, শিশুর পর্যবেক্ষণ এবং শেখার অভিজ্ঞতার বিশ্লেষণের উপর জোর দেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জুলাই মাসে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। সেখানে প্রথম শ্রেণির আগে তিন বছরের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়েছিল।
প্রাথমিক শিক্ষায়(Primary Education) সিভিক ভলান্টিয়ার-কাণ্ডে বাঁকুড়া(Bankura) জেলা পুলিসের(Police) নতুন বিবৃতি। হইচইয়ের পর নবান্ন নড়েচড়ে বসতেই অবস্থান বদল অঙ্কুর প্রকল্পের। অঙ্কুর নিয়ে বাঁকুড়া জেলা পুলিসের নতুন বিবৃতিতে বলা, কিছু মানুষ এই উদ্যোগকে বিদ্যালয়ের নিয়মিত ক্লাস প্রতিস্থাপনের প্রচেষ্টা হিসাবে দেখিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিকৃত, ভুল তথ্য। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাবিজ্ঞানের যে ক্লাসগুলি নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কোচিং ক্লাসের আকারে বিদ্যালয়ের পশাপাশি ক্লাসের মতো চলবে।
বাঁকুড়া পুলিসের বিবৃতিতে আরও বলেন, বর্তমান উদ্যোগের সঙ্গে বিদ্যালয়ের ক্লাসের কোনও সম্পর্ক নেই। বিদ্যালয়ের নিয়মিত ক্লাসের পরেই এই কোচিং চলবে। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই ক্লাসগুলি কোনও বিদ্যালয়ে করা হবে না। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শের পরে শিশু-শিক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের সুবিধা অনুসারে নির্বাচিত স্থানগুলি থেকেই পরিচালিত হবে। বাঁকুড়া পুলিস জেলার সাধারণ মানুষদের জন্য নিরন্তর কাজ করে যাবে। আপনাদের গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া সাদরে গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলা পুলিসের নেওয়া এই অঙ্কুর প্রকল্প ঘিরে বুধবার হইচই বাঁধে রাজ্য রাজনীতিতে। সরকারি স্কুলে পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়ার! ভলান্টিয়ারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি থাকলে সুযোগ দেওয়া হবে। সমাজের পিছিয়ে পড়া প্রাথমিক পড়ুয়াদের শিক্ষার মান উন্নতি করতে নয়া পদক্ষেপ নিয়েছিল বাঁকুড়া জেলা পুলিস। কিন্তু হইচই শুরু হতেই পদক্ষেপ করে নবান্ন।
সরকারি স্কুলে পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়ার! ভলান্টিয়ারদের(Civic Volunteer) শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি থাকলে সুযোগ দেওয়া হবে। সমাজের পিছিয়ে পড়া প্রাথমিক পড়ুয়াদের(Primary Education) শিক্ষার মান উন্নতি করতে নয়া পদক্ষেপ নিয়েছিল বাঁকুড়া(Bankura) জেলা পুলিস। কিন্তু হইচই শুরু হতেই পদক্ষেপ করে নবান্ন। সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিক স্কুলে অংক-ইংরেজির পাঠ দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো ক্ষুব্ধ নবান্ন।
এই কর্মসূচি অবিলম্বে স্থগিত করার নির্দেশ দিল নবান্ন। এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হয়েছিল, তা বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে 'অংকুর' নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সামাজে পিছিয়ে পড়া প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষা প্রদানের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বাঁকুড়া জেলা পুলিস।
বুধবার বাঁকুড়া পুলিস লাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই 'অংকুর' প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। বাঁকুড়ার জেলা পুলিস সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান, 'প্রাথমিক পর্যায়ে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের পাঁচটি থানা এলাকার মধ্য দিয়েই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে এই কর্মসূচি বাঁকুড়া জেলার সবকটি থানাতেই নেওয়া হবে বলে জানান ওই আইপিএস। খবর, জেলা পুলিসের প্রায় শতাধিক সিভিক ভলান্টিয়ারকে উপযুক্ত পরিমাণ প্রশিক্ষণ দিয়েই এই কাজে করাবে বাঁকুড়া জেলা পুলিস।'
এবার পুলিসের এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রী শেখর দানার দাবি, 'পুলিসের কাজ শিক্ষকতা করা নয়, পুলিসের কাজ আইনশৃঙ্খলাকে রক্ষা করা। এক্ষেত্রে পুলিসকে কেন দেখা যাচ্ছে? তার মানে জঙ্গলমহলে বুনিয়াদি শিক্ষার উন্নতিতে সরকার ব্যর্থ। তাছাড়া সামনেই পঞ্চায়েত ভোট তাই সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে ভোট পাওয়ার জন্যই এমন কাজ।'
এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, 'সিভিক ভলান্টিয়াররা ছোটদের স্কুলে অঙ্ক আর ইংরেজি শিখাবে। এটা একবিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমবাংলার লজ্জা। এখানে শিক্ষক নিয়োগে যেমন দুর্নীতি, শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। আর এই অবস্থাতে প্রত্যন্ত গ্রামের বাচ্চা তাঁদের ইংরেজি শিখাবে সিভিক ভলান্টিয়ার, এর থেকে লজ্জার আর কিছু হয় না। সরকার যদি রাজ্য চালাতে না পারে তাহলে পদত্যাগ করুক।'
অপরদিকে শাসক দলের নেতা শ্যামল সাঁতরার দাবি 'পুলিস তাদের দায়িত্ব ছাড়াও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। এমনকি পুলিস প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাগার, কোচিং ক্যাম্প ফ্রিতে করিয়ে থাকেন। সেরকমই জঙ্গলমহলের শিশুদের আরও ভালো পড়াশুনো করানোর জন্য তাঁরা উদ্যোগ নিয়েছেন। এটা সম্পুর্ণরূপে উন্নয়নমূলক কাজ। ভালো কাজ করলে যদি কেউ সমালোচনা করেন তাহলে করবেন। সমালোচনা করতে তো কোনও পয়সা লাগে না।'
নতুন প্রাথমিক টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট-এর (TET) প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অন্দরে। জেলাভিত্তিক পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা জরুরিভিত্তিতে চেয়ে পাঠানো হয়। গত বৃহস্পতিবারই প্রতিটি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এই তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচি (Ratna Chakraborty Bagchi)।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল (Gautam Pal) জানান, "আমরা প্রস্তুতি শুরু করছি। কবে হবে জানি না। কিন্তু, যদি পরীক্ষা নিতে হয়, তা ধরে সেভাবেই এগোতে হবে। শেষ পর্যন্ত কত প্রার্থী আবেদন করল, সেই অনুযায়ী পরীক্ষাকেন্দ্র স্থির করব, আমি সেই পদ্ধতিতে হাঁটি না। আমি ভেবে কাজ করি, করে ভাবি না। তাই আগে পরিকল্পনা করি। তারপর তা কার্যকর করি।"
প্রসঙ্গত, পর্ষদের তরফে সংসদ চেয়ারম্যানদের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী টেট পরীক্ষার জন্য জেলাভিত্তিক পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা প্রয়োজন। নির্দিষ্ট ফরম্যাটে আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালিকা পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পর্ষদের তরফে। নির্বাচিত পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির ভালো পরিকাঠামো ও পর্যাপ্ত পরিবহনের সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে। কোন পরীক্ষাকেন্দ্রে কত পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া যাবে, তাও জানাতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদের দায়িত্ব গ্রহণের দিনই গৌতম পাল বলেছিলেন, "আমি চাই প্রত্যেক বছর টেট পরীক্ষা হোক এবং নির্দিষ্ট সময়ে হোক।"
তিনি জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের টেট পরীক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে, জরুরিভিত্তিতে জেলাভিত্তিক পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা চেয়ে পাঠানো টেট পরীক্ষা হওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করছে।