"মদন মিত্র (Madan Mitra) ছাড়া ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে কাউকে মানি না, মানতে পারি না। ও মন্ত্রিসভাতে নেই ভাবলেও অবাক লাগে৷" এবার বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Prasun Banerjee)৷ সম্প্রতি শনিবার বিশ্বকর্মা পুজোর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনই মন্তব্য করেন তৃণমূল সাংসদ৷ তাঁর এমন মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক৷
শনিবারের ওই অনুষ্ঠানে মদন মিত্রের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, "পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের কেউ যদি ক্রীড়ামন্ত্রী হয়ে থাকেন, সেটা একমাত্র মদন মিত্রই। এছাড়া অন্য কাউকে ক্রীড়ামন্ত্রী বলে মানি না, সে তিনি যেই হোন না কেন৷" তাঁর কথায়, "দিদির পাশে দু-একজন থাকত, তাঁর মধ্যে মদন মিত্র অন্যতম। এখন অনেকেই দিদির পাশে ঘুরছে। মদন মিত্রকে সম্মান দিতে হবে এটা আমি চাই। ক্রীড়ামন্ত্রী থাকাকালীন খেলা সংক্রান্ত বহু সমস্যার তিনি স্বচ্ছতার সঙ্গে সমাধান করেছেন। তাঁর সময়ে ক্রীড়া দফতরে বহু পরিকল্পনা রূপায়িত হয়েছে যথেষ্ট স্বচ্ছতার সঙ্গেই। গভীর রাত পর্যন্ত কোনও সমস্যা হলেও মদন মিত্র তাঁর সময় দিতেন। ময়দানের অনেক ছোট ছোট খেলোয়ারদের তিনি অর্থ সাহায্য করেছেন। তাঁর মতো কাজের মানুষ রাজ্যের মন্ত্রিসভায় স্থান না-পাওয়ায় আমি অবাক।"
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তরজা।
কোনও সন্দেহ নেই যে আজও তৃণমূল কংগ্রেস দলের মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজও দলের শেষ কথা তিনিই বলেন। এমনটাই মনে করেন শাসক দলের কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু একটা সম্ভাবনাও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ভাবাচ্ছে, সুচিন্তিতভাবে কি দলের সংগঠনের দায়িত্ব কোনওভাবে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই হস্তান্তর হচ্ছে? খানিকটা এমনটাই সত্যি মনে করেন সাংসদ তথা প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়াড় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের হাওড়ার সাংসদ প্রসূনবাবু টেলিফোন সাক্ষৎকারে সিএন পোর্টালকে জানালেন, নতুন পুরাতন বলে দলে কিছু নেই। দিদিই আমাদের আদর্শ কিন্তু অভিষেক দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর মনে হয়েছে, এতো অল্প বয়সে এই অভিজ্ঞতা খুব কম মানুষের আছে। যা এখন পাওয়া যাচ্ছে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, দল কি তবে অভিষেকের ফর্মুলা মেনে এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে চলেছে?
তিনি বললেন, 'এটা খারাপ কীসে? দীর্ঘদিন ধরে একই নেতারা সবধরনের ক্ষমতা দখল করে রয়েছেন এটা ঠিক নয়, এতে আত্মম্ভরিতা বাড়ে। দায়িত্ব সবসময়ে ভাগ করে দিতে হয়।' প্রসূনবাবু বললেন, 'দলের অন্দরে ১ শতাংশ মানুষেরও যদি কোনও কেলেঙ্কারি মানুষের সামনে চলে আসে তবে সেটা তো দলেরই সংকট। তাই পরিবর্তন যদি আসে মন্দ কী?'
এই সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রসূন জানান, অভিষেক কারও উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার ছেলে নয়। বরং সর্বদা আলোচনা করে সকলের অভিমত জানতে চান, যেটা তাঁদেরও ক্ষেত্রে হয়েছে দিল্লিতে। প্রশ্ন করা হয়, অভিষেক তো সব তরুণদের দায়িত্ব দিতে চাইছে? প্রসূনবাবু বলেন একদম বাজে কথা, ও উপযুক্ত মানুষকেই খুঁজে নিচ্ছে যেখানে বয়স কোনও সমস্যা নয়।
বাস্তবেই কিন্তু তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শিক্ষা কেলেঙ্কারির কারণ এক লহমায় দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। তেমনই শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলকে সরিয়ে দেওয়া হলো পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্ব থেকে। বাকি রইলো বীরভূম, সে তো সময়ের অপেক্ষা|