পাওয়ার ব্লকের দরুন বর্ধমান মেইন এবং বর্ধমান কর্ড শাখায় রবিবার একাধিক লোকাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করল পূর্ব রেলওয়ে। ফলে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। হাওড়া বর্ধমান ছাড়াও কাটোয়া-আজিমগঞ্জ, খানা-গুমানি এবং ব্যান্ডেল নৈহাটি শাখাতেও একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
পূর্ব রেলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, হাওড়া থেকে ৩৬৮২৫, ৩৬৮২৭, ৩৬০৩৩, ৩৭৯১৫, ৩৭৮২৭, ৩৭২৩৭, ৩৭২৩৫, ৩৭২৩৭, ৩৭৮১৯ এবং ৩৭৬১৫ নম্বর আপ লোকাল বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে বর্ধমান থেকে বাতিল করা হয়েছে ৩৬৮৪০, ৩৬৮৪২, ০৩৫১৭, ৩৭৮৩২, ৩৬৮৪৪ নম্বর ডাউন লোকাল।
বর্ধমান-হাওয়ার মতো ব্যস্ততম একটি শাখায় একাধিকবার পাওয়ার ব্লকের জন্য সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, বেশিরভাগ সরকারি অফিস ছুটি থাকলেও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অনেককেই রবিবার অফিস যেতে হয়। সেকারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
অন্যদিকে শ্রাবণ মাসের সোমবার থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে পুণ্যার্থীরা তারকেশ্বরে যাচ্ছেন। ফলে কামারকুন্ডু স্টেশন থেকে তারকেশ্বর যাওয়ার ট্রেন ধরছেন তাঁরা। কিন্তু কর্ড লাইন লোকাল বন্ধ থাকায় তাঁরাও সমস্যায় পড়ছেন।
শনিবার বন্ধ থাকবে কলকাতা মেট্রোর (Metro) একাংশ। আগেই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে একথা জানাল মেট্রো রেল কতৃপক্ষ। মেট্রো কতৃপক্ষ সূত্রে আরও খবর, ২৭ মে সকাল ৬টা ৫০ মিনিট থেকে ১০টা পর্যন্ত পাওয়ার ব্লক (Power Block) চলবে। দক্ষিণেশ্বর বা দমদম থেকে মেট্রো চলবে মহানায়ক উত্তম কুমার স্টেশন, অর্থাৎ টালিগঞ্জ পর্যন্ত। এই পাওয়ার ব্লক শেষ হওয়ার পর মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক হবে।
কলকাতা মেট্রোর পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, যাত্রী নিরাপত্তা মাথায় রেখেই এই পাওয়ার ব্লক। সকালের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। এরপর দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ লাইনে মেট্রো পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। সকালের দিকে মেট্রো কম চলতে পারে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারেন নিত্যযাত্রীরা।
কলকাতা মেট্রোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাত্রীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন, তাই এই কাজ করা হচ্ছে। ট্র্যাক রক্ষাণবেক্ষণের জন্য পাওয়ার ব্লক নেওয়া হবে। এই নিয়ে কোনও গুজবে কান দিতেও বারণ করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রোতে এই নিয়ে ঘোষণাও করা হচ্ছে।
উন্নযনের কাজের জন্য হাওড়া বিভাগে একাধিক লোকাল ট্রেন বাতিল।হাই স্পিড ট্রেনের জন্য ওভারহেড ইকুইপমেন্টের ট্র্যাক পরিবর্তন এবং আপগ্রেডের কারণে পুরো মার্চ মাস লিলুয়া-বর্ধমান বিভাগে ট্র্যাফিক এবং পাওয়ার ব্লকের পরিকল্পনা রয়েছে৷ ফলস্বরূপ, নিম্নলিখিত ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে:
হাওড়া থেকে:৩৭৬১১, ৩৭৮১৫,৩৭৩৪৩,৩৬০৭১,৩৭০১১,৩৬৮২৫,৩৬০৮৫।
পাণ্ডুয়া থেকে: ৩৭৬১৪।
বর্ধমান থেকে: ৩৭৮৩৪,৩৭৮৪০।
তারকেশ্বর থেকে: ৩৭৩৫৪।
গুরাপ থেকে: ৩৬০৭২।
শ্রীরামপুর থেকে: ৩৭০১২।
মশাগ্রাম থেকে: ৩৬০৮৬।
এভাবে ট্রেন বাতিলের কারণে যাত্রীদের অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে পূর্ব রেল।
থার্ড লাইনে কাজের জন্য ১৫, ১৬ এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি আড়াই ঘণ্টা করে পাওয়ার ব্লক (Power Bloc) থাকবে নৈহাটি (Naihati Junction) এবং হালিশহর স্টেশনে। জানা গিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৩টে অবধি, বৃহস্পতিবার রাতে সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৩টে অবধি এবং শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৩টে অবধি এই পাওয়ার ব্লক থাকবে। ফলে কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে এবং কয়েকটি ট্রেন বাতিল (Train Cancel) করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ১৫ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি আপ শিয়ালদহ-রানাঘাট মেমু বাতিল হয়েছে। সেই একই দিনে (১৫ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি) ডাউন লালগোলা-শিয়ালদহ মেমু রানাঘাট অবধি যাবে। এদিকে, ১৬ এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি বালিয়া-শিয়ালদহ এক্সপ্রেস ডানকুনি হয়ে যাবে এবং ডানকুনি জংশনে দাঁড়াবে। এই দু'দিন মুজজফরপুর-কলকাতা তিরহুত এক্সপ্রেস এবং যোগবাণী-কলকাতা এক্সপ্রেসের যাত্রা ব্যান্ডেল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত থাকবে। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য দুঃখিত। প্রেস বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে পূর্ব রেল।
হাওড়া-বর্ধমান লোকাল (Howrah-Burdwan) ট্রেন নিয়ে বড়সড় ঘোষণা রেলের (Eastern Rail)। হাওড়া শাখার ডিআরএম (Howrah DRM) মণীশ জৈন জানান, 'যে সেতু ভেঙে ফেলা হচ্ছে, সেটা ১৯০১ সালের সেতু। তাই আমাদের ভাঙতে হচ্ছে। নতুন কেবল ব্রিজ ২০১৯ সালে চালু হয়েছে। পুরনো ব্রিজে টোটো, সাইকেল ইত্যাদি উঠছিল। এতে বিপদ বাড়ছিল। এমনকি নতুন কিছু দূরপাল্লার রেক বা কয়লা রেকের মাথা পুরনো ব্রিজের নিচে ঠেকে যাচ্ছিল। আমরা নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।'
তিনি দাবি করেন, 'ব্রিজ ভেঙে ফেলার পর প্ল্যাটফর্ম এবং ট্র্যাকের পরিধি বাড়বে। ন্যূনতম যেটুকু না করলেই নয়, বাধ্য হয়ে ট্রেন বাতিল করেছি। বুধবার মধ্যরাতের পর পুরনো সমস্ত গার্ডার একে একে ক্রেন দিয়ে তুলে ফেলা হবে।' মেইন লাইনের ১৭টি ট্রেন, ১৪টি কর্ড লাইনের ট্রেন এবং ৪১টি মেল এবং এক্সপ্রেস বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাতিল। রাজধানী-সহ হাতে গোনা গুরুত্বপূর্ণ দূরপাল্লার ট্রেন ৩ নম্বর লাইন দিয়ে পাস করবে কিন্তু প্ল্যাটফর্ম পাবে না। এদিন জানান হাওড়া শাখার ডিআরএম।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এই রেলকর্তা জানান, '২০১৯-এ এটা প্রথম ভেঙে ফেলার প্ল্যান হয়। সে সময় তিন মাস সময় লাগতো। এবার কিন্তু ২৪ দিনে গোটা কাজ হবে। কিছু শাটল ট্রেন চলবে, যাত্রীদের ক্রমাগত ঘোষণা করতে থাকব।' মেইন লাইনে শক্তিগড়ে ১১ জোড়া, কর্ড লাইনে মশাগ্রাম ১০ জোড়া স্পেশাল শাটল ট্রেন চলবে।
অর্থাৎ ট্রেন বর্ধমান স্টেশন না ছুঁলেও, যতটা সম্ভব কাছাকাছি যাত্রী পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা হবে। এদিন রেল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। পাশাপাশি এনজেপি শতাব্দী, পাটনা শতাব্দী, রাঁচি শতাব্দী, শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস-সহ ৪১টি মেইল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত মেইন পাওয়ার ব্লক থাকবে, জানা গিয়েছে পূর্ব রেল সূত্রে। তারপর থেকে ধাপে ধাপে পাওয়ার ব্লক শিথিল করবে রেল। জানা গিয়েছে, কাজ শেষ হতে আনুমানিক ২১ ফেব্রুয়ারি।