দূষণের কবলে খোদ দুর্গাপুরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অফিস। নোংরা আবর্জনা স্তূপে পরিণত হয়েছে সরকারি এই অফিসের দোরগোড়ায়। যেখানে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বারংবার সতর্কবার্তা জানিয়েছে দুর্গাপুর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অফিস। সেখানে খোদ দুর্গাপুরের পরিবেশ ভবনের সামনেই এখন ডেঙ্গি আতঙ্ক।
দুর্গাপুরের পরিবেশ ভবন বার্তা দেয় জনসমাজের পরিবেশ রক্ষার জন্য। কিন্তু আজ সেই ভবনের দুয়ারেই ময়লা আবর্জনার স্তুপ। যার ফলে পথ চলতি মানুষের দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক বর্জনের জায়গায়, খোদ পরিবেশ ভবনের বাইরে প্লাস্টিকের ছড়াছড়ি।
দুর্গাপুরের পরিবেশ ভবনের সামনেই রয়েছে প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিস, জিএসটি অফিস, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গার মাঝেও সহবস্থান আবর্জনার স্তুপ। স্থানীয়েদের দাবি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অফিসের সামনে ময়লা আবর্জনায় স্তূপ তৈরী হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাটাই এখন ভীষণ সমস্য়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ চারিদিকে যে নোংরা আবর্জনার স্তূপ, সেখানেই মাছি ঘুরছে এবং দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যার কারণে স্বাস্থ্যের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ডেঙ্গি আতঙ্কও বেড়ে চলেছে।
সমস্ত অভিযোগ মেনে নিলেন দুর্গাপুর নগর নিগমের দু'নম্বর বোরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার। তিনি বিরোধীদের ষড়যন্ত্র বলে পুরো দায়ভার এড়িয়ে যান।
শব্দ দূষণ (Sound Pollution) নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ প্রশাসনের? রাজ্য সরকার (Mamata Government) এবং পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের (Pollution Control Board) কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে এই মর্মে করা জনস্বার্থ মামলায় এই রিপোর্ট তলব আদালতের। জানা গিয়েছে, এই জনস্বার্থ মামলায় উল্লেখ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের গাইডলাইন এবং পরিবেশ আদালতের নির্দেশকেও মানা হচ্ছে না। বেপরোয়াভাবে চলছে শব্দ দূষণ। এই বিধিভঙ্গে রাজ্য সরকার এবং পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড কী পদক্ষেপ নিয়েছে? সেই মর্মেই রিপোর্ট পেশের নির্দেশ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের।
মামলায় অভিযোগ, 'কেন্দ্র, রাজ্য এবং সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন এবং পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যজুড়ে যথেচ্ছ ভাবে বাজানো হচ্ছে ডিজে, লাউড স্পিকার, মাইক্রোফোন ইত্যাদি।' এই মামলার প্রেক্ষিতেই আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকার এবং পালিউশন কন্ট্রোল বোর্ডকে হলফনামা জমা দিয়ে জানাবে কী কী পদক্ষেপ এযাবৎকাল গ্রহণ করা হয়েছে। কীভাবে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ-সহ কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি কার্যকর করেছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সুপ্রিম কোর্টের ২০০৫ সালে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি ২০০০ সালে লাগু হয়েছে। এই মর্মে রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি আছে ২০০৯ সালে।
এবার হাইকোর্টের নির্দেশ, রাজ্যকে জানাতে হবে কলকাতা পুরসভা এলাকায় এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কতগুলো অভিযোগ জমা পড়েছে। পুলিস কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সেটাও হলফনামায় উল্লেখ করতে হবে। ৩ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্লাস্টিক (Plastic) সমাজের শত্রু। বারেবারে এই নিয়ে প্রচার থেকে অভিযান, সবই করা হয়েছে কিন্তু ফল তাতেও মেলেনি। সম্প্রতি, প্লাস্টিক ব্যবহারে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। প্লাস্টিক বন্ধের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আইন করে জরিমানা (penalty) ধার্যও করা হয়েছে। তা সত্ত্বে এখনও বহু মানুষ অনেকটাই অসচেতন। এমতাবস্থায় উত্তর দমদম (North Dumdum) পুর এলাকায় মানুষ কতটা সচেতন এবং প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে কীভাবে পুরসভা ব্যবস্থা নিচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে বাজারে ঘুরে দেখলেন কেন্দ্র ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অধিকারিকেরা।
এদিন বাজারে ক্রেতা বা বিক্রেতারা ব্যাগ না প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন তা খতিয়ে দেখা হয়। বেশ কিছু সময় তা সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে প্লাস্টিক নিয়ে পুরসভার ভূমিকার প্রশংসা করেন। উত্তর দমদম পুরসভার পুরপ্রধান জানান, মানুষ প্লাস্টিক নিয়ে বর্তমানে যথেষ্টই সচেতন। তাঁরা আশা করছেন এই পুর-এলাকা কিছু দিনের মধ্যে গ্রিনজোন হিসেবে ঘোষিত হবে।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক শিশির মণ্ডল জানান, আগেই তাঁদের কাছে খবর ছিল প্লাস্টিক বর্জনে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে উত্তর দমদম পুরসভা। সোমবার বাজারগুলি ঘুরে তাঁরা সেটাই পর্যবেক্ষণ করেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথেষ্ট সন্তুষ্ট তাঁরা। তাঁরা আশাবাদী আগামীদিনে প্লাস্টিকমুক্ত পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হবে।