
প্রসূন গুপ্ত: পুজো, দীপাবলি আর বিশ্বকাপ ক্রিকেট শেষ হলেই ভারতের ৫ রাজ্যের বিধানসভার ভোট (Election)। ছত্রিশগড় , মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা এবং মিজোরাম। এই ৫ রাজ্যের ভোটকে অনেকেই লোকসভা ভোটের সেমিফাইনাল হিসাবে দেখছে। এই ৫ রাজ্যে সরাসরি ক্ষমতায় বিজেপি আছে শুধুমাত্র মধ্যপ্রদেশে। কাজেই তাদের লক্ষ থাকবে বাকি রাজ্যগুলির মধ্যে অন্তত ৪টি রাজ্য দখল করা। প্রশ্ন হচ্ছে, কাজটি কতটা সোজা বা কঠিন?
১০ বছর প্রায় নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রের ক্ষমতায়। এবারেও তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনিই আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ। একটি বিষয় কিন্তু বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভাবাচ্ছে, তৃতীয়বারের জন্য পরপর প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন একমাত্র জহরলাল নেহেরু এবং তখন কংগ্রেসের বিকল্প দল বলতে কিছু ছিল না। আজকের পরিস্থিতি কিন্তু একেবারেই আলাদা। কাজেই মোদী নিজেও চাইছেন এই ৫ রাজ্যের ফল যেন ভালো হয়। ইদানিং 'ইন্ডিয়া' নামক জোট হয়েছে এবং যতটুকু খবর তারা এই রাজ্যগুলিতে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেবে কাজেই হিসাব করে চলতে চাইছে বিজেপি।
নানান সূত্র মারফত যা জানা যাচ্ছে, যে প্রতিটি রাজ্যেই অনেকটাই চাপে বিজেপি। প্রথমত ছত্রিশগড়ের মানুষ বর্তমান কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেলের কাজে খুবই সন্তুষ্ট। ৯০ আসনের মধ্যে কংগ্রেস আশা করছে ৭৫ আসন। অন্যদিকে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নেই। মধ্যপ্রদেশেও কংগ্রেস কমলনাথের নেতৃত্বে পোক্ত জায়গায় রয়েছে বলেই খবর। গতবারই কংগ্রেস এখানে জিতেছিল কিন্তু দল ভাঙিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা দখল করে বিজেপি, ফলে এলাকার মানুষের একটা ক্ষোভ আছেই। এমনটিই দেখা গিয়েছিল সম্প্রতি কর্নাটকে, বিজেপি পর্যদস্তু হয়েছিল। রাজস্থানে প্রতি ৫ বছর বাদে বাদে নতুন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কংগ্রেস এবং বিজেপি ক্ষমতায় আসে। এতদিন ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস কাজেই এবারে হিসাব মতো বিজেপির আসার পালা কিন্তু এখানেও সংকট। মোদীর অপছন্দের নেত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, তাই পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে দল তাঁকে নিয়ে ভাবছে না।
বসুন্ধরা শোনা যাচ্ছে তাঁর নিজের ঘনিষ্টদের নির্দল করে সিংহভাগ কেন্দ্রে প্রার্থী দিচ্ছে। এরা ভোট কাটুয়া। ফলে ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে লাভ কংগ্রেসের। এছাড়া অশোক গেহেলথ যথেষ্ট জনপ্রিয় তিনি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে পেরেছেন। মিজোরাম কোনও দিনও বিজেপির জমি ছিল না এবারেও হওয়ার সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে তেলেঙ্গানায় মূল লড়াই তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয়র সঙ্গে কংগ্রেসের। বিজেপি এখানে বড়োজোর কিছু আসন পেতে পারে। জনপ্রিয় প্রার্থীর অভাবে বিজেপি ১৮ সাংসদদের ফের বিধানসভার প্রার্থী করছে বিভিন্ন রাজ্যে। কাজেই কঠিন সেমিফাইনালে, দেশের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি।
সৌমেন সুর: শ্রী রবিশঙ্কর বলেছেন, 'ভালোবাসাই পৃথিবীর চালক। বসুধৈব কুটুম্বকম। কৃষ্ণের ছলনায় ভুলো না। রাধার মতো চালক হও। কৃষ্ণ রাধা থেকে পালিয়ে যেতে পারতেন না। কারণ রাধার সমস্ত জগৎই ছিল কৃষ্ণময়।' কৃষ্ণ হলেন দিব্যশক্তি। আমাদের মধ্যে রয়েছে সেই কৃষ্ণ, সেই দিব্যশক্তি। তাঁকে খুঁজতে হবে, তাঁকে ধরে থাকতে হবে। তাঁর জন্য আমাদের সংকল্প করতে হবে। পৃথিবীতে সার্বিক সংকল্প হল সেবা। যদি আমাদের জীবনে কোনও ভয় থাকে, তাহলে তা এসেছে সংকল্পের অভাব থেকে।
আধ্যাত্মিকতা ও রাজনীতি, দুটোই মানুষকে নিয়ে কাজ করে। অধ্যাত্মিকতাহীন রাজনীতি মানুষকে বিকৃত করে। অসাধু তৈরী করে এবং আবওহাওয়ায় কৃত্রিম পরিবেশ সৃষ্টি করে রাজনীতি ও মানবতাহীন রাজনীতি নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, অপরাধ প্রবণতা ও অসাধুতা সৃষ্টি করে। কথা হল, রাজনীতি ও আধ্যাত্মিকতা একসঙ্গে চলার প্রয়োজন আছে। একমাত্র আধ্যাত্মিকতাই পারে আত্মবিশ্বাস ও দায়বদ্ধতা তৈরী করতে। প্রশাসনে যারা থাকেন, তাদের জন্য মানবিকতা ও এই মূল্যবোধগুলি বিশেষ প্রয়োজন। যিনি সকলকে সমানভাবে দেখতে পারেন। অর্থাৎ একজন নেতার সমদর্শী হওয়া প্রয়োজন। সত্যাদর্শী সত্য দ্বারা চালিত হন। পারদর্শী তাঁর কাজে স্বচ্ছ হন। দূরদর্শী উদার মনের হন। প্রিয়দর্শিনীর মধ্যে প্রেম করুনার মৈত্রী থাকে। এইসব গুণগুলো প্রশাসনের জন্য জরুরি।
যদি সমাজে বিশৃঙ্খলা থাকে, আধ্যাত্মিকতার মূল্য না থাকে, তাহলে সেই সমাজকে পরিচালনা করা কঠিন। আধ্যাত্মিকতা মানুষকে সৎ ও দায়বদ্ধ করে। অপরাধ মুক্ত সমাজ তৈরির জন্য এটা প্রয়োজন। যখন ধর্মের নাম অনেক যুদ্ধ হয়, তখন আধ্যাত্মিকতা সাহস দেয়, আত্মবিশ্বাস তৈরী করে। এবং কঠিন সময়েও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে মানুষকে। আজ ধর্ম ও রাজনীতির সংস্করণ দরকার। ধর্মকে অনেক বেশি আধ্যাত্মিক হতে হবে। কলার খোলসটা হল ধর্ম, আর ভিতরের শাঁসটা হল আধ্যাত্মিকতা। স্বাধীনতা দিতে হবে, প্রত্যেকের নিজের ধর্মকে, প্রার্থনাকে। তাহলে পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞান ভান্ডারকে এক করা যাবে। সমস্ত রাজনীতিবিদদের মধ্যে সহাবস্থান হয় না, তখনই আমরা পাই ছদ্মধর্মীয় নেতাদের। সবশেষে বলি, আধ্যাত্মিকতা জীবন সম্বন্ধে উদার দৃষ্টিভঙ্গি এনে দেয়। যাতে করে সকলের সঙ্গে সবকিছু ভাগ করে নেওয়া যায়। তথ্যঋণ- কোন বসু মিত্র।
ছেলে ছাত্র রাজনীতি করতেন বলে শুনেছিলেন। সেই কারণেই কি ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে? এখন এই প্রশ্নই তোলপাড় করছে যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত মনোতোষ ঘোষের মায়ের মনে। কারণ স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পিছনে তাঁদের ছেলের কোনও হাত থাকতে পারে না বলে দৃঢ় বিশ্বাস তাঁদের।
মনোতোষের বাড়ি হুগলির আরামবাগে। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার পরেই কার্যত হতবাক তাঁর বাবা-মা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিদ্যার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মনোতোষ। তাঁর বাবা শান্তিনাথ এবং মা টগর ঘোষ একটি ‘ফাস্ট ফুড’-এর দোকান চালান। মনোতোষের বাবার কথায়, তাঁদের ছেলে বলেছিল পুলিশ আমাকে ডাকতে পারে। চিন্তা না। করতে। অন্যদিকে, মনোতোষের মা টগরের দাবি, ছেলে ছাত্ররাজনীতি করেন বলেই হয়তো তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পার্থ ভৌমিক (সেচমন্ত্রী-পশ্চিমবঙ্গ সরকার): সিএন পোর্টাল থেকে বললো যে রবিবার বন্ধুত্বের দিবস বা ফ্রেন্ডশিপ ডে। আমাদের যুগে এতশত বুঝতাম না যে এটারও আবার একটা দিন হতে পারে। একটা কথাই বাস্তব, ছোটবেলা থেকে পড়াশুনা-খেলাধুলা সবেতেই বন্ধুত্ব থাকতো যা কিনা আজকেও আছে। আমি হয়তো আজ রাজ্য সরকারের মন্ত্রী হতে পারি, হয়তো সরকারি সিকিউরিটি নিয়ে অফিস যেতে হতে পারে, কিন্তু এখনও অফিসে যাওয়ার পথে কাউকে দেখলে থেমে যাই বা হাত নাড়িয়ে ডেকেনি।
এ অভ্যাস আমার আর পাঁচ জনের মতো। মানে বন্ধুত্বের কথা বলি। মনে পড়ে যাচ্ছে স্কুল জীবনের কথা। ক্লাস করার থেকে টিফিনে দুস্টুমিই বেশি মনে পড়ে। খেলাটা আমার নেশা ছিল স্কুলে তো ফুটবল খেলতামই। কিন্তু ছুটির পর পাড়ার মাঠে খেলাটাই বেশি পছন্দের ছিল। লাল হলুদ জার্সির আকর্ষণ তো ছিলই। লাইন দিয়ে বিস্তর খেলা দেখেছি। দলবল নিয়েই যত কাণ্ড আমার ছিল। এমন কোনও দিন থাকতো না যেদিনটা বন্ধুহীন হয়ে থাকতাম।একটু বড় হওয়ার পর তো আমাদের পুজোর মধ্যে চলে এলাম। তখন পড়ার বাইরে খেলা আড্ডা এবং পুজোতে কাজ করাটাই ছিল আসল। অষ্টমীতে দল বেঁধে সবার বাড়িতে খিচুড়ি বিতরণ এবং কালী পুজোতে তো দায়িত্ব আরও বেড়ে যেত। আমাদের নৈহাটিতে কালী পুজো বিখ্যাত। ফলে অন্য ক্লাবের পুজোর সঙ্গে টক্কর তো থাকতো।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর বন্ধুদের সঙ্গে একটু ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে সিগারেট খাওয়া শুরু করেছিলাম। বাড়ি ফেরার পথে পেয়ারা পাতা চিবিয়ে গন্ধ দূর করার একটা আর্ট ছিল। ধরা পরে মার খাবার কথাও ভুলিনি। ইস এতো বছর বাদে ওই দিনের কথা লিখতে বসে কত কথা মনে পরে চোখে জল এসে যাচ্ছে। আমার মনে হয়ে ছোটবেলার বন্ধুই সেরা বন্ধু। যদিও কলেজে ঢুকে নিজেকে অনেকটাই স্বাধীন মনে হয়েছিল। এরপর তো কলেজের আড্ডা, রাজনীতি, অমিতাভ বচ্চনের সিনেমা ইত্যাদির সঙ্গে ভীষণ ভাবে যেটা ভালো লাগলো তা হচ্ছে নাটক। আজকেও শত কাজের মধ্যে নাটকটা সুযোগ পেলে করি। এখানকার বন্ধুরা আবার একটু গম্ভীর মেজাজের। আমার গিন্নি দারুন সংগীত শিল্পী, কাজেই ওর সঙ্গে আগে অনেকটা সময় কাটতো সংস্কৃতি মানসে। ও তো আমার প্রিয় বন্ধুই বটে, এ ছাড়া আমার সন্তানরাও আমার বন্ধু।
রাজনীতি করি, যাদের সঙ্গে করি তাঁরা আমার বন্ধু। এখন তো ওদের সঙ্গেই কাজ। এ ছাড়া দপ্তরে তো কাজের ফাঁকে যোগাযোগ রাখি বন্ধুদের সাথে। মনে হয়ে ভগবানকে বলি, আমি যেন সকলের পার্থ হয়েই থাকতে পারি এবং আপনারা আমার বুদ্ধিদাতা কৃষ্ণ। (অনুলিখন- প্রসূন গুপ্ত)
প্রসূন গুপ্ত: পরপর অনেকগুলি ঘটনা কিন্তু ফের কেন্দ্রীয় রাজনীতিকে জনতার কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। প্রথমত কেন্দ্রীয় এনডিএ জোট বনাম ইন্ডিয়া জোটের কে কোথায় অবস্থান করছে তা কখনও পরিষ্কার কখনও ধোঁয়াশা করে তুলেছে। সম্প্রতি এক সভায় একই মঞ্চে উপস্থিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বর্ষীয়ান গান্ধীবাদী নেতা শারদ পাওয়ার। লোকমান্য তিলকের নামাঙ্কিত পুরস্কারে নাকি এবারে নাম ছিল শারদ পাওয়ারের। এদিকে বিরোধী জোটের অন্যতম কারিগর এই পাওয়ারই। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর দল এনসিপিতে ভাঙ্গন দেখা গিয়েছে। যেমন শিবসেনা ভেঙে দুটি দল হয়েছে এবং বিদ্রোহী শিন্ডে দল ভেঙে শিবসেনা (শিন্ডে) তৈরি করে বিজেপির সাথে হাত মিলিয়ে, নিজে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মহারাষ্ট্রের জোট সরকার তৈরি করেছে। এরপর ফের রাজনীতির ট্যুইস্ট ভাঙলো পাওয়ারের দলটিও। শারদের ভাইপো অজিত পাওয়ার দল ভাঙিয়ে, তাঁর দল নিয়ে মহারাষ্ট্রের জোট সরকারে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এই ডিগবাজিতে আতংকিত একদিকে পাওয়ার অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডেও। নিজেদের অবস্থান এবং শক্তি নিয়ে চিন্তায় দুটি দল। এরই মধ্যে মোদীর সঙ্গে একই মঞ্চে থেকে এবং তাঁর হাত থেকে পুরস্কার নিয়ে বিরোধী জোটের ব্যাডবুকে চলে গিয়েছেন।
অন্যদিকে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের বিচারে চলে যাওয়া সাংসদ পদ ফিরে পেতে চলেছেন রাহুল গান্ধী। ভোটের প্রচার করতে গিয়ে রাহুল নাকি "সব মোদী একই রকম" গোত্রীয় ভাষণ দিয়েছিলেন। এই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে কোনও এক মোদী গুজরাটের একটি আদালতে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। বিচারপতি আদেশ দেন যে, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হবে এবং দুই বছর অবধি জেল হতে পারে। ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাহুলের পক্ষ থেকে সুপ্রিম করতে যায় কংগ্রেস। শুক্রবার গুজরাটের আদেশকে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপরেই উলহাস শুরু হয় কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুলকে অভিনন্দিত করেন আবার খুশির বার্তা জানান পাওয়ার কন্যা সুপ্রিয়া সুলে।
অন্যদিকে দিল্লির প্রশাসন নিয়ে কেজরিওয়ালকে সমর্থন জানায় কংগ্রেস আবার মোদীর জোটে নতুন মুখ হিসাবে আসতে চাইছে অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু নাইডু। কাজেই বোঝাই দায়, কে কোথায়!
সৌমেন সুর: মানুষ যাবে কোথায়! কাকে বিশ্বাস করবে! বিশ্বাস তো কখনো কাউকে করতেই হবে, নইলে বেঁচে থাকার মানে কি! সমাজ বদলায়। বদলায় মানুষ। পরিবর্তন হয় সমাজ-মানসিকতার। আজ একদিকে কিছু মানুষের বিপুল ঐশ্বর্য বিলাস, অন্যদিকে অসংখ্য মানুষের দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও শোষণের জ্বালা। একদিকে সভ্যতার উজ্জ্বল চিত্র, অন্যদিকে দূর বিস্তৃত জমাট অন্ধকার। আজও মানুষের প্রতিকার হীন বিচারের বাণী, নীরবে নিভৃতে কাঁদে। আজ ধর্মে ধর্মে বিভেদের প্রাচীর। সম্প্রদায়িকতার বিষ নিঃশ্বাসে, জাত-পাতের বজ্জাতি, যুদ্ধের মহড়া, অশুভ বুদ্ধিরই আজ আধিক্য। এইরকম ডামাডোলে সমাজের কোনায় কোনায় ছেয়ে গেছে দুর্নীতি।
দুর্নীতির সমাজ বললে অত্যুক্তি হয় না। আর বলব নাই বা কেন! শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি, প্রাণীতে দুর্নীতি, কয়লায় দুর্নীতি, রেশনের দুর্নীতি, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে দুর্নীতি, আর কত বলব! এরপর ভেজাল আর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা বললে তো সামান্য এইটুকু অংশে ফুরোবে না। এরকম অন্ধকার সময় সমাজে আগে ছিল না। কম্বলের লোম বাছলে যেমন
কম্বলের অস্তিত্ব থাকে না, তেমনই সমস্ত রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীদের মহলকে যদি ধরা হয় তাহলে মানুষের অস্তিত্ব থাকবে কিনা সন্দেহ। তবুও বলব মানুষ আজ জীবনে বিশ্বাস হারায়নি, এখনও বিশ্বাস করে হিংসায় উন্মক্ত পৃথিবীর বুকে প্রেমের দেবতার অভিষেক হবে। মনুষ্যত্বের মহিমাকে হারালে তার যে আর কিছুই থাকেনা। তাই এখন মানুষকে প্রকৃত সৎ হতে হবে, দেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে। আপামর মানুষ তাকিয়ে থাকে প্রতিনিধিত্বকারী মানুষের দিকে, তাই যতদিন না পর্যন্ত নির্লোভ ও সৎ মানসিকতায় কেউ না ফিরছেন, ততদিন দুর্নীতি সমাজ থেকে মুছবে না। মনে রাখা উচিত, দেশবাসী নির্বাচিত করে আপনাদের পাঠিয়েছেন, তাই মানুষের প্রতি একটু দয়াশীল হোন নইলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে।
সৌমেন সুর: যে রং তখন ছিল আজও সেই রং বহমান। প্রাচীন লগ্নে মানুষের গুহাবাসকালে হিংস্রতায়, গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে দ্বন্দ্বের কারণে জীবন হয়ে উঠেছিল অতিষ্ঠ-আজও তেমনি বার্তা বয়ে চলেছে। সারা দেশ জুড়ে ক্ষমতার লড়াই। কে কাকে কোনঠাসা করতে পারে। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও মানুষ হিংসার ছোবলে প্রাণ হারাচ্ছে। আজও কত রক্তপাত, কত খুন, নির্লজ্জ বেআব্রুর বীভৎস ছবি। এত খুন এত রক্তপাত স্রেফ হিংসার জন্য। সভ্যতার সেই আদি যুগেও মানুষ মানুষের উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে চেয়েছে, এই প্রাধান্য বিস্তারের জন্যই সেদিন মারামারি কাটাকাটির শেষ ছিল না। পাশাপাশি রাজ্যগুলোর মধ্যে পরস্পর পরস্পরে ঠোকাঠুকি লেগেই থাকতো।
রাজ্য জয়ের নেশায় মেতে উঠতো দল। শুরু হতো ঘরবাড়ি জ্বালানো, মুড়ি মুড়কির মতো খুন। যুদ্ধ আর রক্তপাতের মধ্যে দিয়েই সূচনা হতো জয়যাত্রা। এমনি করেই দিন বদলায়। সমাজ বদলায়। মেন্টালিটি বদলায়। যুদ্ধ কিন্তু থামেনা। রূপ বদলে নতুন কৌশলে আবার আক্রমণ। আবার রক্তে হোলি খেলা। শুরু হয় অন্য মুডে খেলা। কত যে নিরীহ মানুষের প্রাণ অকালে চলে যায় সেদিকে দলের ভ্রুক্ষেপ নেই। সর্বত্র চলছে স্টান্টবাজির খেলা। বর্তমানে চলছে সমস্ত মানুষের শান্ত রিপুগুলোকে মিথ্যে ভাষণ দিয়ে ধ্বংস করে ফেলে, দলে তুলে নিয়ে এসো তাকে। তারজন্য তৈরি করে হিংসার ছক। যে ছকে পা দিলেই আজ নয়তো কাল মৃত্যু। দেওয়ালে ছবি হয়ে দলের সৌন্দর্য বাড়াও। যত ছবি টাঙ্গানো হবে-তত দলের আপডেট। দলের লোক খারাপ হলেও ভাল। আবার ভাল লোক অন্য দলের হলে খারাপ। এক অদ্ভুত খেলা। অদ্ভূদ যুক্তি।
আমার মতে, যদি আপনার মন সত্যি সত্যি মানুষের কাঁদে তাহলে নিঃস্বার্থভাবে আত্মশুদ্ধি করে, মানুষের পাশে দাঁড়ান। হিংসা দিয়ে সাময়িক ক্ষমতার জয় করা যায় অবশ্য, কিন্তু সেটা কখনো চিরস্থায়ী হয় না। আজ নয়তো কাল সরে যেতেই হবে। এটাই নিয়ম। কেউ যদি ভাবেন আমি সব পাল্টে দেব ক্ষমতার বলে, হিংসার আশ্রয়ে-তাহলে তিনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, হিংসা মানুষের জীবনে সত্য, কিন্তু শেষ সত্য নয়। হিংসা দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না।
প্রসূন গুপ্ত: সোমবার দ্বিতীয় জোট বৈঠক হচ্ছে কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে। ২৬টি ছোট বড় দল উপস্থিত হয়েছে এই বৈঠকে। কংগ্রেস (National Congress) বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) গুরুত্ব দিচ্ছে এই সভাতে। এ ছাড়া এই সভাতে উপস্থিত হতে পারবেন না বলে আপ পার্টি থেকে বলা হয়েছিল। মমতা নিজে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং একই সাথে কথা বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মালিকার্জুন খার্গের সাথেও। মমতার বিশেষ অনুরোধে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উপস্থিত হয়েছেন এবং তাঁর যে দাবি ছিল দিল্লির প্রশাসন নিয়ে তারও সমাধান হচ্ছে বলেই সংবাদ।
বেঙ্গালুরুর এই বৈঠকের আয়োজক এবারে সদ্য ক্ষমতা পাওয়া কংগ্রেস দল কাজেই তাদের লক্ষ যে ভাবেই হোক বিজেপি বিরোধীদের একাট্টা করা। অবিশ্যি নূন্যতম মোদী ঘনিষ্ঠদের পাটনা সভা থেকে বাদ রাখা হয়েছে। মজার বিষয় আপ দল যেমন কংগ্রেস বিরোধিতা করে ক্ষমতায় এসেছে তেমনই সিপিএম বিরোধিতা করে আজ বাংলার মসনদে মমতা কিন্তু এসব অঙ্ক বাদ দিয়ে বিরোধিতার প্রশ্নে আজ সকলেই এক টেবিলে।
সম্প্রতি বাংলায় হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস বাম পর্যদস্তু হয়েছে তৃণমূলের কাছে।ভোট নিয়ে মৃত্যু হয়েছে কয়েক ডজন কর্মীর। রাজ্য কংগ্রেসের আপত্তি তৃণমূলের জোটে থাকা নিয়ে। তাদের বক্তব্য তাদের কর্মীরা খুন হয়েছে তৃণমূল আশ্রিত সমাজবিরোধীদের হাতে।
একই বক্তব্য সিপিএমেরও। এ বিষয় প্রবল কটাক্ষ আসছে রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে এই দুই দলের দিকে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটকে আমল দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় কংগ্রেস বা অন্য জোটের দলগুলি। কংগ্রেস এবারে প্রবলভাবে তৃণমূলকে পাশে চাইছে। তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়ান অবিশ্যি জানিয়েছেন যে, কংগ্রেসের ইদানিং কাজের ধারা খুবই সন্তোষজনক।
এদিকে জোটের অন্যতম উদ্ধব ঠাকরের দল শিবসেনা ভেঙে গিয়েছে অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের অন্যদল এনসিপিও সম্প্রতি ভেঙে বিজেপির সাথে হাত মিলিয়েছে কাজেই এই দুই দল এখন সম্পূর্ণ কংগ্রেস নির্ভর হয়ে পড়েছে।
সোনিয়া গান্ধী সোমবার সন্ধ্যায় সমস্ত দলকে ডিনারে ডেকেছেন, কিন্তু মমতা জানিয়েছেন যে সম্প্রতি তাঁর পায়ের সংকট হওয়াতে হয়তো থাকতে পারবেন না কিন্তু হয়তো সোনিয়ার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হবে বলেই সংবাদ। তৃণমূলের পক্ষ থেকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে যে মেঘালয়ে যদি কংগ্রেস তাদের সঙ্গে জোট করে তবে এ রাজ্যে তারা কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে রাজি আসন্ন লোকসভায়। নাটকীয় ঘটনার কিছু ঘটতেই পারে।
বলিউড অভিনেতা অভিষেক বচ্চনের বাবা-মা দু'জনেই একসময় রাজনীতি করেছেন চুটিয়ে। মা জয়া তো এখনও সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ। বছর তিনেক আগে তৃণমূলের হয়ে কলকাতার মাটিতে প্রচারও করেছেন। বাবা বিগ-বি, অর্থাৎ অমিতাভ অবশ্য রাজনীতির পাট চুকিয়ে দিয়েছেন আগেই। আর এখন জল্পনার কেন্দ্রে নাম চলে এসেছে অভিষেক বচ্চনের (Abhisekh Bachchan)। শোনা যাচ্ছে নাকি তিনিও রাজনীতিতে যোগ দেবেন।
এমনটা একেবারেই নয় যে সিনেমার কাজ তাঁর হাতে নেই। পরিচালক আর বাল্কীর 'ঘুমর' ছাড়াও রেমো ডিস্যুজার একটি প্রজেক্টে কাজ করছেন অভিষেক। তবে এরই মধ্যে একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মা-বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অভিষেকও নাকি অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেবেন এবং সেটা হবে খুব তাড়াতাড়িই।
এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন, অমিতাভ বচ্চনের রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিল কংগ্রেস পার্টির হাত ধরে। ১৯৮৪ সালে পারিবারিক বন্ধু ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর আহ্বানে তিনি তৎকালীন এলাহাবাদ তথা অধুনা প্রয়াগরাজ থেকে লোকসভা নির্বাচন লড়েন ও বিরাট ব্যবধানে জয়লাভ করেন। তবে কিছুদিনের মধ্যেই রাজনীতি থেকে দূরে সরে আসেন। এরপর সমাজবাদী পার্টির প্রয়াত নেতা অমর সিংয়ের সঙ্গে পারিবারিক ঘনিষ্ঠতার দৌলতে এই দলের কাছাকাছি আসেন বচ্চন দম্পতি।
তাহলে কি অভিষেকও রাজনীতিতে আসছেন! সহজ কথায় বললে আপাতত 'সে গুড়ে বালি।' কারণ, এই জল্পনা নিয়ে যখন বচ্চন পরিবারের সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল, তখন একটি পারিবারিক সূত্র জানায়, 'সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। এমন কোনও সম্ভাবনাই নেই।'
২০১৩ সালে একটি সাক্ষাৎকারের দরুণ যখন অভিষেকের কাছে রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাওয়া হয়েছিল, তখন তিনিও এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি জানান, 'আমার অভিভাবক রাজনীতি করেছেন। কিন্তু ওই জায়গায় আমি নিজেকে দেখি না। আমি পর্দায় রাজনৈতিক নেতার ভূমিকায় অভিনয় করতেই পারি। কিন্তু আসল জীবনে নয়। আমি কোনও দিন রাজনীতিতে যাব না।'
আইপিএল (IPL) ফাইনালেই ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। এবার সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিতে চান প্রাক্তন ক্রিকেটার অম্বাতি রায়াডু (Ambati Rayadu)। নিজের জেলা গুন্টুরে (Guntur) চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। রাজনীতিতে (Politics) নামার ব্লু-প্রিন্টও তৈরি করছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের সব জেলায় গিয়ে ঘুরছেন রায়াডু। মানুষের সুখ-দুঃখের কথা শুনছেন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের রায়াডু জানিয়েছেন, মানুষের সেবা করতেই রাজনীতিতে যোগ দিতে চান তিনি। পোক্ত পরিকল্পনা করে রাজনীতির ময়দানে নামতে চান তিনি। কোন দলে যোগ দেবেন, তা যদিও ঠিক করেননি রায়াডু। তবে মনে করা হচ্ছে, অন্ধ্র্রের শাসক দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসেই যোগ দেবেন।
সম্প্রতি, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডির সঙ্গে দুবার দেখা করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী চান, লোকসভা নির্বাচনেই লড়াই শুরু করুক রায়াডু। বিধানসভা না লোকসভা থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করবেন, তা যদিও স্পষ্ট নয়। লোকসভায় দাঁড়ালে মছলিপত্তনম কেন্দ্র থেকে দাঁড়াতে পারেন তিনি।
পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি (Politics)। একাধিক ইস্যুতে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এবার কলকাতা হাইকোর্টে (HighCourt) জনস্বার্থ মামলা করল বিজেপি ও কংগ্রেস (BJP-CONGRESS)। দুই দলেরই দাবি প্রায় এক। মোট পাঁচটি দাবি নিয়ে আদালতে দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। সেখানে মনোনয়ন জমা থেকে সর্বদলীয় বৈঠক, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট-সহ একাধিক দাবি উঠে এসেছে।
এদিন, বিজেপির আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী এবং কংগ্রেসের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর তরফে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে আবেদন জানানো হয় হাইকোর্টে। সেই অনুমতি দিয়েছে আদালত। ইতিমধ্যেই সেই মামলার আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। পাঁচটি দাবি কী কী ?
প্রথমত, মনোনয়ন জমা দেওয়ার বরাদ্দ সময় নিয়ে প্রথম থেকেই সরব বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, প্রতি কেন্দ্রে মনোনয়নের জন্য ৩৯ সেকেন্ড সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। হাতে মাত্র ৫ দিন সময়। সেক্ষেত্রে এত প্রার্থী কীভাবে মনোনয়ন জমা দেবে? দ্বিতীয়ত, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় বহু প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে আদালতের। তৃতীয়ত, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। সেইসঙ্গে সব বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর জন্যও আর্জি জানানো হয়েছে। চতুর্থত, নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়নি কেন, সেই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। পঞ্চম ও শেষ দাবি, কেন্দ্রীয় অফিস ছাড়াও অন্যত্র মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
নবম বর্ষপূর্তির প্রচার চলেছে বিজেপির। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ফের যে নরেন্দ্র মোদীকেই দলের মুখ করা হবে তা একপ্রকার নিশ্চিত। কিন্তু লোকসভার আগে চার রাজ্যের ভোটের কাঁটা রয়েছে তাদের। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড় এবং তেলেঙ্গানা। কর্ণাটক এবং হিমাচল তাদের হাতে নেই, কংগ্রেসের হাতে চলে গিয়েছে। কাজেই এই চার রাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা থাকাই স্বাভাবিক।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বার্তা রয়েছে যে কর্ণাটক এবং হিমাচলে মোদীকে সামনে রেখে ফল অতি খারাপ হয়েছে। জনগণের কাছে কে হবে রাজ্য নেতা তার কোনও পরিষ্কার বার্তা ছিল না। আমল দেওয়া হয়নি ইয়াদুরাপ্পাকে। কাজেই সেই ভুল আর করতে চায় না কেন্দ্রীয় বিজেপি। আপাতত রাজস্থান জয়ের বিষয়ে কিছুটা স্বস্তিতে তারা। এর অন্যতম কারণ রাজস্থানে প্রতি ৫ বছর অন্তর সরকার বদল হয়। একই সঙ্গে সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। মধ্যপ্রদেশে গতবারে ক্ষমতায় এসেছিলো কংগ্রেস কিন্তু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছেড়ে দেওয়াতে এবং কংগ্রেসে ভাঙ্গন ধরিয়ে কমলনাথের মন্ত্রিসভা ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এবারে কিন্তু হওয়া উল্টো পথে।
অবস্থা বুঝে আদবানি ঘনিষ্ঠ শিবরাজকেই মুখ করছে বিজেপি। ছত্রিশগড়ের কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা কাজেই ওই রাজ্যে পুরাতন মুখকেই ভরসা করছে দল। রইলো বাকি তেলেঙ্গানা। এখানে মূল লড়াই এতদিন ছিল কংগ্রেস এবং টিআরএসের মধ্যে। বিজেপি সংগঠন বাড়ালেও এমন শক্তিশালী হয়নি যে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করতে পারবে। কাজেই স্থানীয় মুখের সন্ধানে দল।
অন্যদিকে, কর্ণাটক দখল করে কংগ্রেসের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আবার ওই রাজ্যের। কিন্তু এটাও বাস্তব বহু রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তি হ্রাস পেয়েছে কাজেই যে যে রাজ্যে কংগ্রেস দুর্বল, সে রাজ্যে তারা বন্ধুর খোঁজে রয়েছে। নিয়মিত তাদের ম্যানেজাররা যোগাযোগ রাখছে নীতীশ কুমার সহ বিভিন্ন নেতার সঙ্গে। আসন্ন চার রাজ্যের নির্বাচন কিন্তু দুই দলের কাছে সেমিফাইনাল ম্যাচ।
কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে (Minor) যৌন নিগ্রহ করে খুনের অভিযোগে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি (Politics)। রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এবার কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় বড় পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার কালিয়াগঞ্জের (Kaliyaganj) কিছু জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিগত কিছুদিন ধরেই উত্তপ্ত কালিয়াগঞ্জ। সোশ্যাল মিডিয়ায় নাবালিকা মৃত্যু নিয়ে একাধিক তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসনের দাবি, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ভুয়ো বা প্ররোচনামূলক তথ্য ছড়াতে পারে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয় সেই জন্যই আগামী কয়েকদিন প্রশাসনের তরফে এই অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ফোন, এসএমএস বা খবরের কাগজ পৌঁছনো নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না। কালিয়াগঞ্জের মানুষ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। খবরের কাগজও পৌঁছাবে। শুধু ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার দোষীদের শাস্তির দাবিতে ফের আন্দোলনে নামেন স্থানীয়রা। ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশের গাড়ি, বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয়। মারধর করা হয় পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও। কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির ভূমিকা আছে বলে মনে করছেন। তাঁর দাবি, বিহার থেকে লোক এনে এই অশান্তি করা হয়েছিল। মহিলা পুলিশ কর্মীদের গায়ে হাত দিয়েছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তিও নষ্ঠ করা হয়েছে। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসূন গুপ্ত: মঙ্গলবার থেকে খবরের বাজারে চমকদার বিষয় মুকুল রায়। বেশ কিছুদিন ধরে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন রাজনীতি থেকে। যদিও তিনি বর্তমানে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তিনি হারান স্ত্রীকে। পরবর্তীতে ইনি সপুত্র যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তাঁকে বরণ করে নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে বিধানসভার পাবলিক একাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করতে চান। কিন্তু বিজেপির তরফে তীব্র আপত্তি এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা তুলে এই প্রস্তাব সায় পায়নি। তবে মুকুলের দলবদলের পরপরই আরও অনেক বিধায়ক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং এই তালিকায় নামজাদা নাম।
এদিকে, শোনা যায় মাঝেমধ্যে মুকুল রায় নাকি সল্টলেকের বাড়ি ছেড়ে কাঁচরাপাড়ায় নিজের বাড়িতে থাকছেন। তাঁর ছেলের দাবি, বাবা পারকিনসন ও ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত। অবশ্য মাঝে-মধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সামনে একাধিকবার সাক্ষৎকারে দিয়েছেন মুকুল রায়। সেই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক হয়েছে বিস্তর। এরপরে সোমবার সকাল থেকে ফের খবরের শিরোনামে মুকুল রায়। তিনি হঠাৎ রবিবার সন্ধ্যা থেকে 'নিখোঁজ' হয়ে যান। পরে সিসিটিভিতে তাঁর ছবি ধরা পরে দিল্লি বিমানবন্দরে। জল্পনা ওঠে তিনি নাকি ফের ফেরত যাচ্ছেন বিজেপিতে। এ বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পুত্র শুভ্রাংশু জানান, তাঁর বাবা অসুস্থ। তিনি পুলিসে অপহরণ ডায়রি করেন। অবশ্য ততক্ষণে মুকুল রায় রাজধানী নয়াদিল্লিতে। এরপর বিভিন্ন মিডিয়া জানাতে শুরু করে, মুকুল রায়ের সঙ্গে নাকি অমিত শাহের কথা হয়েছে।
যদিও মুকুল রায় সিএন-কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বলেন, 'তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বিজেপির এমএলএ।' কিন্তু এখানেই রাজনৈতিক টুইস্ট। একেবারে দলের অন্দর থেকে জানা গিয়েছে, নাড্ডা বা শাহ মুকুলকে প্রাথমিকভাবে আমল দেয়নি। মুকুলের কথা হয়েছে নাকি পুরোনো বন্ধু কৈলাস বিজয়বর্গীর সঙ্গে। অন্যদিকে বঙ্গ বিজেপির একটি গোষ্ঠীর নাকি ঘোরতর আপত্তি আছে মুকুলের বিষয়। আবার অন্য গোষ্ঠীর ইচ্ছা তিনি ফিরুন। তবে জল্পনা যাই হোক না কেন, আজকের মুকুল কিন্তু প্রাক্তন মুকুলের ছায়া মাত্র। অতএব ...
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) কালিমালিপ্ত করতে বাবাকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি (Politics) চলছে। মঙ্গলবার এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন মুকুল (Mukul Roy) পুত্র শুভ্রাংশু রায়। তাঁর দাবি, অভিষেককে বদনাম করতে একটি রাজনৈতিক দল খেলায় নেমেছে। কারণ এখন নিশানা অভিষেক। শুভ্রাংশু সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, বাবার সঙ্গে এখনও তাঁর যোগাযোগ হয়নি। রীতিমতো উদ্বেগে রয়েছেন তিনি। দিল্লিতে গিয়ে মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা প্রসঙ্গে শুভ্রাংশুর দাবি, তাঁর বাবা অসুস্থ। একটা সুস্থ মানুষ বিজেপিতে যোগ দেওয়া আর মানসিকভাবে সুস্থ নয় এমন মানুষের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মধ্যে ফারাক আছে। সোমবার সন্ধ্যায় মুকুল রায়ের 'নিখোঁজ' হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায়। দু'টি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শুভ্রাংশু। যদিও পরে জানা যায়, দিল্লি গিয়েছেন 'মুকুল'।
রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, ফের বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তিনি। কিন্তু মুকুলের দিল্লি যাওয়ার বিষয়ে কিছুই জানতেন না শুভ্রাংশু। না বলেই তাঁর বাবাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। মুকুল রায়কে কে দিল্লি নিয়ে গেল, বিমানে কীভাবে টিকিট কাটলেন মুকুল, এখন সেসব কথাই ভাবাচ্ছে তাঁকে। সেই সঙ্গে উঠে আসছে ৫০ হাজার টাকার প্রসঙ্গ। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে শুভ্রাংশু জানান, পুরো বিষয়ে টাকার খেলা রয়েছে। মুকুল পুত্রের দাবি, বাবার কাছে এখন বেশি টাকা নেই। মাসিক আয় ২১ হাজার টাকার মতো। এই পরিস্থিতিতে সোমবার একটি এজেন্সির তরফে এক অবাঙালি ব্যক্তিকে বলা হয়, মুকুল রায়ের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আসার জন্য। বাবার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। শুভ্রাংশুর দাবি, মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন তাঁর বাবা। ভাল করে হাঁটতে পারছেন না। দিনে ১৮টি ওষুধ খান। এখনও বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি।
ফের বিজেপিতে যোগ দিতে পারে মুকুল রায়। সেকারণেই দিল্লি গিয়েছেন বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু, দিল্লি বিমানবন্দরে মুকুলকে প্রশ্ন করতেই তাঁর উত্তর, এমনই দিল্লি এসেছেন। কিছু আছে। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। কাজ মিটলেই তিনি ফিরে যাবেন।