বাগদেবীর আরাধনাতেও রাজনৈতিক উত্তাপ। সরস্বতী পুজোতেও বাদ গেল না অশান্তি। তৃণমূল-বিজেপির বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। ঘটনায় আহত ১১ জন। জোর করে জমি দখলের অভিযোগ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের অকারণে মারধরের অভিযোগ ওঠে পুলিসের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি মালদার হবিবপুর থানার শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতেই সরস্বতী পুজো করে আসছেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল কর্মী দেব মণ্ডল জমিটি নিজের বলে দাবি করতেই শুরু হয় বিবাদ। জোর করে জমি দখলের অভিযোগ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। ক্ষমতার অপব্যবহার? ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রামবাসীদের অকারণে মারধরের অভিযোগ হবিবপুর থানার পুলিসের বিরুদ্ধে।
পুলিসের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপির দাবি দেব মণ্ডলকে সহযোগিতা করার জন্যই লঠিচার্জ করে পুলিস। রাজ্য জুড়ে মিথ্যা প্ররোচনা দিচ্ছে বিজেপি, পাল্টা দাবি তৃণমূলের। গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে হবিবপুর থানা ও জেলা পুলিস সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
ফের রাজ্য়ে খুন তৃণমূল কর্মী। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ। ঘটনায় এখনও অবধি ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাকে ঘিরে ব্য়াপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় এসডিপিও বারুইপুরের নেতৃত্বে বিশাল পুলিস বাহিনী। মৃত ব্য়ক্তির নাম সাইদুল আলী শেখ। পেশায় একজন গাড়িচালক।
পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি থেকে পাড়ার পরিচিত এক যুবক সাইদুলকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর তাঁর কাছে জানতে চায় ক্লাবের সামনের মাঠে কেন গাড়ি চালিয়েছিলেন, তা নিয়ে শুরু হয় ক্লাবের ছেলেদের সঙ্গে সাইদুল আলি শেখের বচসা। কথা কাটাকাটি চলাকালীন আচমকা তাঁকে এলোপাথারি কোপাতে শুরু করে এবং লোহার গরম রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে ক্লাবের ছেলেরা।
অভিযোগ, চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে সাইদুলের বাড়ির লোকজন তাঁকে বাঁচাতে গেলে তাঁদের সামনেই তাঁকে মারধর করা হয়। এমনকি সাইদুলের স্ত্রী ও মেয়েকে নাকি মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে অনেকবার অনুরোধ করলেও সাইদুলকে নির্মমভাবে মারা হয়। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়।
রবিবার ভোরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় সাইদুল আলী শেখের। এই মর্মান্তিক মৃত্য়ুর ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। স্থানীয়দের দাবি, সাইদুল আলী শেখ এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে গাড়ি চালনো নিয়ে ঝামেলার জেরে এই ঘটনা নাকি এর পিছনে রাজনৈতিক হিংসা রয়েছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
সৌমেন সুর: মানুষ জন্মালে সে মানুষ হয় না। মানুষ হতে গেলে চাই কিছু বাড়তি গুণ। যারা মানুষ নন তারা লোক। সেবা মানুষের এক পুণ্য ব্রত। সেবার মধ্যে দিয়েই মানুষ ফিরে পায় তার মনুষ্যত্বকে। খুঁজে পায় আত্ম বিকাশের পথ। মানুষের চিরকালের সাধনা হলো বৃহত্তের সাধনা। সেবা হল সেই বৃহৎ জীবনেরই আহ্বান।
সব ধর্মের মূল বিষয় মানুষের কল্যাণ। সব ধর্মের মধ্যেই বারবার ধ্বনিত হয়েছে মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব। মানুষের সেবায় ঈশ্বরের সেবা, নরই নারায়ন। দিন-দুঃখী, লাঞ্ছিত, নিপীড়িত, মানুষের মধ্যেই বাজে দেবতার চরণধ্বনি। তবু ভন্ড, স্বার্থপর মানুষের সংখ্যা বর্তমানে বেশি। তারা আচার অনুষ্ঠানকে বড় করে তোলে, আর ঈশ্বরের মহিমাকে বন্দী করে রাখে মন্দিরে। সেবা একটা সৎ বৃত্তি। সেবায় সবারই অধিকার। বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। নিপীড়িত, দুঃখী, বিপন্ন মানুষকে সেবা করা একমাত্র প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য। আমাদের দেশের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বলতে রামকৃষ্ণ মিশন, রেড ক্রস, ভারত সেবাশ্রম সংঘ, মারোয়ারি রিলিফ সোসাইটি প্রবৃত্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মুখ্য উদ্দেশ্য জনগণের সেবা। এটা এমনিই এক কর্ম, যেখানে রাজনৈতিক দলের মানুষকে হতে হবে ত্যাগী ও সচেতন। যেটা এখন কোন দলের আছে বলে তো মনে হয় না। সবার উদ্দেশ্য, যেমন করে হোক ক্ষমতা দখল। এই ক্ষমতা দখলের জন্য যা করতে হয় করব। তাতে মানুষ ধ্বংস হয় হোক। ক্ষমতা দখলের জন্য নৃশংস অত্যাচারের আবহাওয়া তৈরি হোক। আর নারীদের সম্মান ধুলোয় লুটিয়ে পড়ুক, তবে ক্ষমতা হাতে থাকে, এটাই মুখ্য উদ্দেশ্য। কোন কিছুতেই মাথা নোয়াবনা।
তাহলে মানুষের সেবা দাঁড়ালো কোথায়! সেবা-ই এখন অভিধানে কোন এক পাতায় ছোট্ট খুদে অক্ষরে প্রকাশ মাত্র। দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরে সব ভালো জিনিসগুলো অদৃশ্য ভাবে উবে যাচ্ছে। সাধারণ অ-জ্ঞান মানুষ কিছু টের পাচ্ছে না। ফায়দা লুটে যাচ্ছে রাজনৈতিক দল। এর শেষ কোথায়?
মণি ভট্টাচার্য: পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election) ঘোষণার পর থেকে এখনও অবধি রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি পার। কিন্তু এবার মৃত্যুর পরিসংখ্যান বলছে অন্যবারের তুলনায় চিত্রটা কিছুটা আলাদা। প্রত্যেকটি একক দলের কর্মীদের মৃত্যুর সংখ্যার তুলনায় ৪ গুন্ বেশি তৃণমূল কর্মীদের মৃত্যু হয়েছে। একটি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখনও অবধি রাজনৈতিক হিংসা (Political Violence), বোমা বিস্ফোরণ, ইত্যাদি সব মিলিয়ে মোট ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই হিংসা ও মৃত্যু নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এছাড়া মমতা বন্দোপাধ্যায় অথাৎ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক হিংসায় বিরোধী দলগুলির থেকে শাসক দলের কর্মীর মৃত্যু বেশি হয়েছে এ ঘটনা বিরল, এমনটাই রাজনৈতিক মহলের দাবি, এঘটনায় অবশ্য শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, 'মমতা বন্দোপাধ্যায় মৃত্যুর হিসেবে কমিয়ে বলছেন।'
যদিও সূত্রের খবর অনুযায়ী, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বোমাবাজি, রাজনৈতিক হিংসায় রাজনৈতিক কর্মীর ছেলে, পোলিং এজেন্ট, প্রার্থীর পরিবার সহ তৃণমূল কর্মী বা তৃনমূল সমর্থনকারী মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে সমানভাবে বিজেপি কর্মী ও বিজেপি সমর্থনকারী মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৭ জন কংগ্রেস কর্মীও রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন। রাজনৈতিক হিংসায় বাদ যায়নি নির্দল বা সিপিআইএম। সিপিআইএম কর্মীদের ৪ জন প্রাণ হারিয়েছে, হিংসায় প্রাণ গিয়েছে ১ জন নির্দল কর্মীরও। এ ছাড়া ভাঙড়ে হিংসায় বৃহস্পতিবার অবধি প্রাণ গিয়েছে ৩ জন আইএসএফ কর্মীরও। ফলে এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট যে অন্য যে কোনও একক দলের কর্মীদের নিরিখে তৃণমূল কর্মীরাই বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দোপাধ্যায় ১৯ জনের মৃত্যুর হিসেব দেখালেও রাজনৈতিক হিংসায় যে তৃণমূলেরই বেশি মৃত্যু হয়েছে সেটা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা অবধি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, পঞ্চায়েত নির্বাচনী হিংসায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৪ জন, মুর্শিদাবাদে ১৪ জন, কোচবিহারে ৬ জন, মালদহে ৬ জন, উত্তর দিনাজপুরে ৪ জন, নদিয়ায় ৩ জন, পুরুলিয়ায়, উত্তর ২৪ পরগনায়, পূর্ব বর্ধমানে ২ জন করে মৃত্যু হয়েছে, এছাড়া বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ জন করে মৃত্যু হয়েছে।
পাশাপাশি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১ দফার ভোটে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৮ সালে ৩ দফার ভোটে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালে ৩ দফার ভোটে ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালে ১ দফা নির্বাচনে এখনও অবধি ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভোট (Panchayat Election 2023) মিটেছে। ফলও বেরিয়েছে। রক্তপাত কিন্তু থামছে না। ফের ভোট পরবর্তী (political) হিংসার বলি একজন। কংগ্রেস কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার, ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ (Malda) জেলার রতুয়া থানার ভাদো গ্রাম পঞ্চায়েতের রামপুর এলাকায়। পুলিস সূত্রে খবর, মৃত (dead) কংগ্রেস কর্মীর নাম ফটিকুল হক (২৪)। ঘটনায় আহত (injured) হয়েছেন আরও পাঁচজন কংগ্রেস কর্মী। বর্তমানে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রতুয়া থানার পুলিস।
অভিযোগের তীর ভাদো গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী রোজিনা বিবি ও তাঁর স্বামী তোফাজুল হক সহ তাঁর দলের বিরুদ্ধে। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে ভাদো গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী রোজিনা বিবি। জয়ের পরেই এলাকায় বেরিয়েছিল বিজয় মিছিল। সেই মিছিলেই ফটিকুল হকের বাড়ির সামনে বাজি ফাটাচ্ছিল রোজিনা বিবির স্বামী ও তাঁর দলের কর্মীরা। আর তার প্রতিবাদ করাতে ফটিকুল হককে বেধরক মারধর করা হয়।
পাশাপাশি তাঁর মাথায় বাঁশের আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে আসেন ফুটিকুলের মামা হবিবুর রহমান সহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদেরকেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তড়িঘড়ি আহতদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে ফটিকুল ও তাঁর মামা হবিবুরকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
বুধবার, সকালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় ফটিকুল হকের। এই বিষয়ে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে রতুয়া থানার পুলিস। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে মৃতের পরিবারসহ গোটা গ্রামে।
ইতিমধ্য়ে এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রাজ্য জুড়েই হিংসার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তৃণমূল দাবি জেলা বিজেপির দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ীর। তৃণমূলের মালদহ জেলার সহ-সভাপতি শুভময় বসু বলেন, রাজ্য থেকেই ঘোষণা হয়েছে কোনও বিজয় মিছিল করা যাবে না। কেউ যদি বিজয় মিছিল করে থাকে দল তার দায়ভার নেবেনা।
পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলির (Political parties) গাড়ির ব্যবহার নিয়ে নির্দেশিকা দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commision)। এই বিষয়টি নিয়ে সব জেলার পঞ্চায়েত অফিসারকে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, চলতি পঞ্চায়েত ভোটে বাইক ব়্যালি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রোড শো-এর জন্য সর্বোচ্চ চারটি গাড়ি ব্যবহার করতে পারে রাজনৈতিক দলগুলি। নির্বাচনের দিন গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টি নিয়েও নির্দেশিকা দিয়েছে কমিশন। ভোটের দিন ২টির বেশি গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না। কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতীক, প্রার্থীর পরিচয়, স্লোগান, রাজনৈতিক মতবাদ গাড়িতে লাগানো যাবে না।
কমিশন নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, জেলা পরিষদের কোনও প্রার্থীকে গাড়ি ব্যবহার করতে গেলে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পারমিশন করাতে হবে। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীরা কোনও গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না। বাইক, টোটো বা অটো ব্যবহার করতে পারবেন। চারচাকা ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনও রাজনৈতিক দল মহকুমা এলাকায় একটিই গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। মহকুমা শাসকের থেকে সেই গাড়ির পারমিট করাতে হবে।
৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোটের দিন কনভয়ে ২টির বেশি গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না। নিয়ম ভাঙলে শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কমিশন।
মঙ্গলবার রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা (Rajib Sinha)। মনোনয়ন পর্বে অশান্তি এবং নিরাপত্তা সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওই বৈঠকে।
সর্বদলীয় বৈঠক না করে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল বামফ্রন্ট সহ সব বিরোধী রাজনৈতিক দল। তারপর মঙ্গলবারের ওই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। মনোনয়ন জমার সময় বৃদ্ধি, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সহ মোট পাঁচ দফা আবেদন করে ওই মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ১৪ জুলাই নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও মামলার রায়দান এখনও বাকি।
মণি ভট্টাচার্য: এমনিতেই বৈশাখের প্রাক্কালে তীব্র তাপপ্রবাহে জ্বলছে বাংলা (West Bengal), আজ অর্থাৎ শুক্রবার চড়তে পারে রাজনীতিরও (Politics) পারদ। কথামতই বঙ্গে পা রাখছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহ যখন বাংলার মাটিতে পা রাখবেন তখন রীতিমত তপ্ত থাকবে বাংলা। সূর্য থাকবে মাথার উপর। এই অবস্থায় দুপুরে বীরভূমের সার্কিট হাউসে খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রামের পর বীরভূমে সভা করবেন তিনি।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট, বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে শাহি সফর ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের ২ দিনের সফরে বীরভূমকে কেন শাহী সভাস্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হলো! তার রাজনৈতিক তাৎপর্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। গত পঞ্চায়েত ভোট বিরোধী শুন্য ছিল বীরভূম! বীরভূমের দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা কেষ্ট মণ্ডল এখন গরু পাচার-কাণ্ডে তিহার জেলে। এসময়ে বীরভূমের গোষ্ঠীকোন্দল, হিংসা আটকাতে হিমশিম খাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বীরভূমকে সামলাতে আলাদা করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক ও নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। বীরভূম নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতিতে রাজ্যে অমিত শাহের উপস্থিতি যে তৃণমূলের কাছে ভীষণ চাপের সেটাও স্পষ্ট।
বীরভূম শিল্পে পিছিয়ে, পিছিয়ে প্রকৃত উন্নয়নেও, ভুরিভুরি অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত ভোটে ওই জেলার ভোটের সমসাময়িক চিত্র, গোটা রাজ্যের ভোটে প্রভাব পড়েছে বরাবর। যেমন, 'রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকবে।' কেষ্টর এই প্রবাদের প্রভাবে ২০১৮-তে পঞ্চায়েত ভোট কতটা রক্তক্ষয়ী হয়েছিল সেটা সবারই জানা। এই পরিস্থিতে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি তৃণমূলের রয়েছেই। একের পর এক ইস্যু যেমন বগটুই, নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা, গরু পাচার-কাণ্ড, বাংলার হিংসা, সব নিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে থাকা তৃণমূল শাসিত বাংলায়, পঞ্চায়েতের আগে অমিত শাহ যে অপ্রতিরোধ্য এবং আক্রমণাত্মক হবেন সেটা পরিষ্কার।
পঞ্চায়েতে ভোটে ভাঙন ধরলে, লোকসভা সামলানো যে মুশকিল সেটা গোটা রাজনৈতিক মহল জানে। একদিকে যখন মমতার ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী পার্থ নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন, অন্যদিকে তখন গরু পাচার-কাণ্ডে তিহার জেলে কাটাচ্ছেন, মমতার গ্রাম বাংলার অন্যতম সৈনিক অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি রামনবমীতে হওয়া অশান্তিকে কেন্দ্র করে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। পঞ্চায়েত ভোটার দামামা বেজে গিয়েছে, বাংলাকে পাখির চোখে দেখলে, বিরোধীদের এর থেকে ভালো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আর নেই। পাশাপাশি বছর গড়ালে লোকসভা ভোট, সমস্ত পরিস্থিতি নজরে রেখে শাহী সফর কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চরমে।
এমনিতেই বাংলা তপ্ত হয়ে রয়েছে, এর উপরে চড়তে পারে রাজনৈতিক পারদ। সরকার থেকে সতর্কতা স্বরূপ বলা হয়েছে, বিনা প্রয়োজনে বাইরে বেরোবেন না এবং প্রয়োজনীয় ঠান্ডা পান করুন। এই পরিস্থিতিতে নবান্নের ১৪ তলা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো কি ঠান্ডা জল খেয়ে এই রাজনৈতিক উত্তাপ সামলাতে পারবেন কিনা সেটাই দেখার।
শিক্ষা দুর্নীতির মাঝেই রাস্তা থেকে উদ্ধার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা। ৫ প্যাকেট খাতা কুড়িয়ে পেয়েছেন এক প্রাতঃভ্রমণকারী। খাতাগুলি কুড়িয়ে পেলেন কোচবিহারের মহাকালী নয়ারহাট KNB হাইস্কুলের পার্শ্বশিক্ষক দুলাল বর্মন। জানা গিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকের যেই খাতাগুলি পাওয়া গিয়েছে সেগুলি মূলত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের। যে বিষয়ে পরীক্ষা গত ১৮-ই মার্চ হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কোচবিহারের মহাকালী নয়ারহাট KNB হাইস্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক দুলাল বর্মন শনিবার সকালে প্রাতঃভ্রমণ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ই তিনি রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ৫টি উচ্চ মাধ্যমিকের খাতার বান্ডিল কুড়িয়ে পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষা সংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের প্রতিনিধিদের হাতে খাতার বান্ডিলগুলি তুলে দিয়েছেন তিনি। তবে উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হওয়ার আগেই এই ঘটনা সাধারণের মনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠছে, রেজাল্ট বেরোনোর আগে কীভাবে খাতাগুলি রাস্তায় এল? যদি কোনওভাবে খাতাগুলি নষ্ট হয়ে যেত, তাহলে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত? রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার এই বেহাল দশার মধ্যে খাতাগুলির নিরাপত্তা নিয়েও বারবার প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির।
যদিও শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত কোথা থেকে এই খাতা এল? কার অধীনে এই খাতা ছিল? কোন জেলা পরিদর্শকের অধীনে এই পুরো বিষয়টি ছিল? তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
প্রসূন গুপ্ত: সম্প্রতি দুটি ঘটনা কংগ্রেস, বাম ও বিজেপিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছিলো। প্রথমটি সাগরদিঘির উপনির্বাচন, দ্বিতীয়টি কৌস্তভ কাণ্ড। দুটি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে সমালোচনার জেরে তৃণমূল খানিক বিপাকে পড়ায় খুশির হওয়া বিরোধী শিবিরে। ভোটের ফলের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, 'সাগরদিঘিতে অনৈতিক জোট'। তিনি অভিযোগ করেন, 'এক সময়ে বামেদের ভোট যেমন বিজেপিতে গিয়েছিল, তেমন এবারে বিজেপির ভোট এসেছে বাম-কংগ্রেসের জোটে।'
তাঁর এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার নয় নিশ্চয়। কিন্তু এতে অবাক হওয়ার মতো নতুন ঘটনা কিছু নেই। ১৯৭৭-এ ইন্দিরাকে হারাতে এবং ১৯৮৯-এ রাজীব সরকারের পতন ঘটাতে বামেরা দক্ষিণপন্থী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। মমতা তো সেই ঘটনা জানেন। কিন্তু এই ধরণের জোট কতদিন টিকে থাকে? বিজেপি বুঝেছে তাদের ঘোষিত স্লোগান কংগ্রেস মুক্ত দেশ। সেক্ষেত্রে বাংলায় কংগ্রেস শূন্য থেকে একটি আসন পাওয়া এবং গেরুয়া শিবিরের তৃতীয় স্থানে চলে যাওয়া মোটেই সুখকর নয়। এছাড়া কৌস্তভ-কাণ্ডে মানবিকতার খাতিরেই হোক বা রাজনীতিগত ভাবেই হোক তারা প্রাথমিক ভাবে কৌস্তভের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
কিন্তু রবিবার সেই অবস্থান থেকে একেবারেই সরে গিয়েছে রাজ্য বিজেপি। দলের অন্দরে সাগরদিঘি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারা দেখেছে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান থেকে এবার ভোটে শতাংশের বিচারে বিজেপি তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। তাদের পূর্বতন ভোটের নিরিখে ১৯ হাজার ভোট কমেছে। প্রশ্ন উঠেছে এই ভোট গেলো কার বাক্সে? যদি জোটের বাক্সে গিয়ে থাকে তবে ভাবতেই হচ্ছে। আবার যদি ওই ভোট তৃণমূল পেয়ে থাকে তবে শুভেন্দুর ভাষায় 'সনাতনী' ভোট পাওয়া শুরু করলো কি তৃণমূল?
কাজেই দেরি না করে দলের অন্দরে স্থির হয়েছে তৃণমূল বিরোধী ঐক্য সম্মিলিত আন্দোলন করে বাম-কংগ্রেসকে সুবিধা করে দেওয়া যাবে না। কৌস্তভ কাণ্ডে তারা আর নেই। অবশ্য মিডিয়ার সামনে তারা জানিয়েছে যে তাদের আটকানোর জন্য তৃণমূলই, কংগ্রেস-বামেদের 'স্পেস' দিচ্ছে।
প্রসূন গুপ্ত: দলের অন্দরে তো বটেই একইসঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে তৃণমূল সুপ্রিমো কি 'দিদির দূত' পরিকল্পনা নিয়ে বেশ ঝুঁকি নিলেন? তৃতীয় বিশ্বের কোনও রাজ্য বা দেশে ঘরে ঘরে গিয়ে যদি প্রশ্ন করা যায় যে, কেমন আছেন, তার উত্তর যে মধুর হবে না বলাই বাহুল্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরও এগিয়ে বলা যায়, নতুন তৃণমূলের প্রধান সংগঠক সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দিদির দূতেরা ঘরে ঘরে গিয়ে কেমন আছেন বা কি সমস্যা এই প্রশ্ন করছেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই প্রকল্পে অজস্র প্রশাসনিক ত্রুটি উঠে আসতে বাধ্য। যে দেশে অর্থনৈতিক সংকট চলছে, কর্মহীন মানুষ, বাজারে চাকরি নেই সেখানে দলের প্রচার নিয়ে গেলে বা ভালো কাজের খতিয়ান নিয়ে গেলেও উত্তর নেতিবাচক তো হবেই। এমনটাই বলছেন সমালোচকরা।
এই দিদির দূত হিসাবে বিভিন্ন জেলায় গিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে নেতা-মন্ত্রীদের। শতাব্দী রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বা মহুয়া মৈত্র কিংবা শনিবারে বারবেলার আগেই রথীন ঘোষকে। ক্ষেত্র বিশেষে নিজেদের ধৈর্য ধরে রাখতে পারছেন না নেতারা কাজেই সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ড.বিধান রায় ওপার বাংলা থেকে আগত ভিটেহারাদের জন্য প্রচুর কাজ করেছেন, যা স্বর্ণাক্ষরে ইতিহাসে থাকা উচিত। কিন্তু এই ডাঃ রায়কে নিয়মিত অভিযোগ শুনতে হয়েছিল, 'আমরা ভালো নেই।' আসলে হাতে কাজ, পকেটে পয়সা না থাকলে মানুষ সুখে না হোক শান্তিতে থাকবে কী করে?
নিয়মিত জনসংখ্যা বাড়ছে, পক্ষান্তরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিও বাড়ছে তাল মিলিয়ে। সুতরাং দূত হিসেবে গেলে কন্যাশ্রী থেকে লক্ষী ভাণ্ডার ইত্যাদি দিয়ে পেট ভরানো যায় না, তাই জানাচ্ছেন জনতা। এদিক থেকে বাম জমানাতেও ভয়ঙ্কর সমস্যা থাকা সত্বেও কেউই মুখ খোলেনি। প্রথমত মানুষে দুয়ারেও যাওয়ার এই পদ্ধতিতে বিশ্বাসী ছিল না বামেরা। তাঁদের আমলে সব পশ্চিমবঙ্গের এলাকায় নজরদারি থাকতো এলাকায় এলসিএম বা এলসিএসদের।
জ্যোতিবাবু বা বুদ্ধদেববাবুর ভাবনায় ছিল না, এই বিষয় ফলে অভিযোগের সুযোগই ছিল না। আজ সেই সুযোগ খোদ তৃণমূল হাইকমান্ড দিয়েছে, ফলে অভিযোগের ঢেউ উঠে আসছে। অর্থনীতিবিদরা বলেন, 'এভাবে সমাধান হওয়া কঠিন অন্তত তৃতীয় বিশ্বে। এ ধরণের কাজ আমেরিকা বা প্রথম বিশ্বের দেশে করতে হয় না। কারণ সেসব দেশে নাগরিকদের অধিকারের মধ্যে পড়ে সমস্যা সরকারকে জানানো।' এ রাজ্যে এই কাজ নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। কিন্তু ঝুঁকি সামলিয়ে সার্থক হওয়া কঠিন।
কারণ কথিত আছে অভাব ঘুলঘুলি দিয়ে ঢুকলেও, দরজা দিয়ে বেরোতে চায় না।
১৫ দিনের মধ্যে যদি উল্লঙ্গ করতে না পারি তাহলে আমি রাজনীতির ময়দানে আসা ছেড়ে দেব। কাঁথির কলেজ মাঠের (Contai College Ground) জনসভা থেকে এভাবেই নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি বলেন, 'আমাকে তোলাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত বলে, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। আজ তিন তারিখ, ৫-৮ আমি কলকাতায় থাকবো না দিল্লি যাবো। আমি ১৫ দিন সময় দিয়ে গেলাম এই কলেজের মাঠে আবার সভা হবে। তুমি তোমার খাতা নিয়ে আসবে, আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। মানুষের সামনে উলঙ্গ যদি না করতে পারি, আমি রাজনীতির ময়দানে পা রাখবো না।'
ডিসেম্বর মাসেই আরও একজন বিশ্বাসঘাতক দু'বছর আগে এই ডিসেম্বর মাসেই অমিত শাহের পদলেহন করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল। বিশ্বাসঘাতক বললে মানুষ যখন কথায় কথায় মীরজাফরের প্রসঙ্গ টানে, এই মেদিনীপুরের বিশ্বাসঘাতককে মানুষ আগামি ৫০০ বছর গদ্দার বলে মনে রাখবে। এভাবেও রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে পরোক্ষে আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ।
কাঁথির কলেজ মাঠে দাঁড়িয়ে তাঁর অভিযোগ, '২০১১-২০২০ কী কাজটা এই এলাকার জন্য করেছে আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই। একটা ঠিকাদার এবং একটা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে নেক্সাস চালিয়েছে বছরের পর বছর।' পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, 'আমি মা-মাটি-মানুষের ঘরে এসেছি, পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষের গড়ে এসেছি। আমি ভেবেছিলাম বুক চিতিয়ে লড়াই হবে। আমার কথা শুনবে, সে এখানেই থাকবে কিন্তু সে তো লেজ গুটিয়ে ডায়মন্ডহারবার পালিয়েছে।'
আগামি দিনে বিজেপি (BJP) বাংলায় অশান্তি তৈরি করতে পারে। রাজ্য মন্ত্রিসভার (State Cabinet) বৈঠকে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। তাই মমতা মন্ত্রিসভার সদস্যদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। রাজ্যজুড়ে নাকা চেকিং বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের (Nabanna) একটি সূত্র মারফৎ এই খবর। মূলত, নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সতর্ক থাকতে মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে।
পাশাপাশি এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার থেকে বিধবা ভাতার প্রাপকরাও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাবেন। এমনকি বুধবারের রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত, এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে করতে হবে যেকোনও প্রকল্পের ঘোষণা।
পরিবহন দফতর নবান্নকে না জানিয়ে বিভিন্ন রুটে বাস চালিয়ে দিচ্ছে, এটা করা যাবে না। ১০০ দিনের কাজে যারা যুক্ত তাদের অন্য দফতরের কাজে ব্যবহার করতে হবে। এমনকি, মেলায় খরচ কমাতে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। মেলার খরচ কমিয়ে ১০০ দিনের কাজে টাকা ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি।
এদিকে, ক্যাবিনেট বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর অশান্তি পাকানোর আশঙ্কা প্রসঙ্গে বিজেপি জানিয়েছে, কোনও দলকে ভাঙানো যায় না। দল নিজের মতো করে চলে। সরকার যেভাবে চলছে তাতেই ডিসেম্বরের পর সরকার চালানো মুশকিল। বিজেপি এভাবে সরকার ভাঙানোর পক্ষপাতী নয়। বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বাস্তব চিত্রটা জানেন। উনি দল এবং সরকার তৈরি করেছেন। একা সামনে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিজেপি কোনওদিন এই সরকারকে অগণতান্ত্রিক ভাবে ফেলার কথা বলেনি। সরকার যেভাবে চলছে, তাতে রাজ্যে চরম নৈরাজ্য। হেভিওয়েট মন্ত্রীরা গ্রেফতার হচ্ছেন, কেউ গ্রেফতারির জায়গায় চলে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে। একটা অরাজক অবস্থা তৈরি হচ্ছে, এই সরকার, এখন সরকারে নেই। অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে তৃণমূল আর টিকে থাকতে পারবে না, সেটা ইঙ্গিত পেয়েই এভাবে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।'
কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর খোঁচা, 'সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুন মুখ্যমন্ত্রী। এত বড় ঘটনায় একা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী। উনি আগে দলকে সামলান, যারা রাজ্যজুড়ে জহ্লাদরাজ কায়েম করেছে তাঁদের সামলান। মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত করতে না পেরে এসব বাহানা তৈরি।'
সিপিএম-র সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, 'বিজেপি কী কী করতে পারে, ভালো জানেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। উনি বিজেপির সব অপরাধের শরিক। কারণ বিজেপিকে স্বাভাবিক শরিক মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।'
কীভাবে একটা নির্বাচিত সরকার পড়ে যেতে পারে? এই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, 'কী করে সরকারের পতন হবে? ভারতের আইন, সংবিধান আছে, একজন নির্বাচিত সরকার কীভাবে এভাবে পড়ে যেতে পারে? দেশে সংবিধান, আইন ব্যবস্থা নেই? এসব প্রচার করে বিজেপি হাওয়া গরম করছে।'
খসড়া ভোটার তালিকা (Voter List) প্রকাশ বিষয়ে আলোচনার জন্য সর্বদল বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (Election)। সূত্রের খবর, আগামী ২ নভেম্বর দুপুরে কমিশনের কলকাতা অফিসে এই বৈঠক হওয়ার কথা। উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সবক’টি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলকে (political Party)। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২০২৩-র জন্য সারা দেশে ভোটার তালিকার খসড়া ৯ নভেম্বর প্রকাশিত হবে। ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে তালিকা সংশোধনের কাজ। ২০২৩-র বছর ৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।
২০২৩-র জানুয়ারি থেকে পরবর্তী এক বছরে বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচন এবং উপনির্বাচন এই নতুন ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই হবে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে কমিশনের এই সর্বদল বৈঠক একটি রুটিন প্র্যাকটিস। প্রতিবছর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার আগে প্রতিটি রাজ্যের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে কমিশন। তারপর প্রয়োজনীয় সংশোধন এবং বিয়োজনের পর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। দেশের নতুন ভোটারদের হাতে ২৫ জানুয়ারি, ‘জাতীয় নির্বাচক দিবসে’ আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোটার কার্ড তুলে দেওয়া হয়।
বাসন্তীর ঝড়খালিতে বিজেপি (BJP) করার অপরাধে মার। বিজেপি মণ্ডল সহ-সভাপতিকে এলোপাথাড়ি মারধর করার অভিযোগ তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। ঘটনায় গুরুতর আহত বাসন্তী বিজেপির চার নম্বর মণ্ডলের সহ-সভাপতি অমল মণ্ডল। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ (South 24 Pargana) পরগনার ঝড়খালি কোস্টাল থানার ঝড়খালি বাজারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝড়খালি পার্বতীপুরের বাসিন্দা অমল মণ্ডল গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ করেছিলেন এবং বর্তমানে তিনি বিজেপির চার নম্বর মণ্ডলের সহ-সভাপতি। আর সেটাই রাগের কারণ হয়েছে স্থানীয় শাসক দলের নেতৃত্বর। এমনটাই অভিযোগ পুলিসের কাছে করা হয়েছে। আর বিজেপি করার অপরাধে অমল মণ্ডলকে ঝড়খালি বাজারে পথ আটকে বেধড়ক মারধর করে স্থানীয় শাসকদলের কর্মী ও নেতৃত্বরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
অভিযোগ, গত বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পরে থেকে পরিবার-সহ ঘরছাড়া ছিলেন অমল মণ্ডল। এরপর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঘরে ফেরে তাঁরা। ঘরে ফিরলেও কিন্তু শাসকদলের হাত থেকে রেহাই পায়নি অমল মণ্ডল। তাঁকে ঝড়খালি বাজারে মারধরের পাশাপাশি পেটে কিল চড় ঘুষি মারতে থাকে বেশ কয়েকজন যুবক। তারা সবাই শাসক দলের কর্মী। এমনটাই অভিযোগ আক্রান্তর পরিবারের। এ ঘটনা ঝড়খালি কোস্টাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
যদিও ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল। বিজেপির অভিযোগ, '২০২১ থেকে এভাবে বিজেপি কর্মীদের মারধর করছে। সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। প্রশাসন বলেও কোনও লাভ হয়নি। এঁরা আইন-কানুন মানছে না।' পাল্টা স্থানীয় বিধায়ক জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ঝড়খালি বাজারে একটা ঝামেলা হয়েছে। কিন্তু এই ঝামেলার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। আমি পুলিসকে অনুরোধ করব বিশদে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।'