ফের উত্তপ্ত সন্দেশখালি। ইডির উপর হামলার পর এবার আক্রান্ত পুলিস। গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতে সন্দেশখালির শীতলিয়ার পুলিস ক্যাম্পে ঘটে দুষ্কৃতী হামলা। আর সেই হামলায় আক্রান্ত হন সন্দীপ সাহা নামে একজন পুলিসকর্মী। এই ঘটনায় সন্দেহভাজনভাবে তিন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিস। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পুলিস সূত্রে খবর, সোমবার রাত ১১ টা নাগাদ সন্দেশখালির শীতলিয়া পুলিস ক্যাম্পে আচমকা হামলা চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। অভিযোগ, ক্য়াম্পের পুলিস কর্মীদের উপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। তখনই আহত হন এক পুলিসকর্মী। এরপর তড়িঘড়ি আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে খুলনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি ওই আহত পুলিসকর্মীর শারীরিক অবস্থা।
তবে পুলিস ক্য়াম্পে কে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে, কিংবা ঠিক কী উদ্দশ্য়ে ঘটানো হল এমন ঘটনা তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিস। গত জানুয়ারি মাসে ইডি হানার পর থেকে সন্দেশখালিকাণ্ডে তোলপাড়া হয়েছিল গোটা রাজ্য়। তারপর একেক করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির পর কিছুটা হলেও শান্ত হয়েছিল সন্দেশখালি। তাহলে আবার কী কারণে রণক্ষেত্রে পরিণত হল সন্দেশখালি?
কেষ্টগড়ে ‘মদ্যপ’ রাজ্য পুলিসের ‘কীর্তি’! নেশার চুর উর্দিধারী। কর্মরত অবস্থায় একেবারে মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি খেলেন শান্ত মুখোপাধ্যায় নামের এক পুলিস কর্মী। যা দেখে রীতিমত হাঁসির রোল। টালমাটাল পুলিস কর্মীর গলায় আবার 'কেষ্ট' ওরফে অনুব্রত মণ্ডলের নাম। ঘটনায় শোরগোল বোলপুর লজমোড়ে। দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার পর ঘটনাস্থলে যায় বোলপুর থানার পুলিস। ‘অসুস্থ’ বলে সাফাই বোলপুর থানার এক পুলিস আধিকারিকের।
পরে নেশাগ্রস্ত পুলিসকে পুলিসের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই দৃশ্যও দেখতে হচ্ছে বাংলার মানুষকে! উর্দির অবমাননা! এই লজ্জা কার! রাজ্য পুলিসের এহেন কর্মকাণ্ডে সমালোচনার ঝড় সব মহলে। উঠেছে শাস্তির দাবি।
লুঠের রাজত্ব করলে যা হয় তাই হবে। রাজ্যের পুলিস মন্ত্রীকে নিশানা করে কটাক্ষ বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।একজন পুলিস কর্মীর অসলগ্ন আচরণ কি শোভনীয়? সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে একজন পুলিস কর্মী যদি মদ্যপ অবস্থায় রাস্তায় গড়াগড়ি খান তাহলে মানুষকে সুরক্ষা দেবে কে?
মহেশতলা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লার গেট সাফা রায়পুরে বৌমার হাতে শাশুড়ি খুন। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, শাশুড়ি যমুনা নস্করও বৌমা ভারতী নস্করের মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা লেগেই থাকত। শনিবার রাতেও ঝামেলা হয় শাশুড়ি ও বৌমার মধ্যে। বাড়িতে ছেলে, বৌমার সঙ্গেই থাকতেন যমুনা নস্কর। মৃতের ছেলে জানান, বাড়ি এসে তিনি দেখেন মা মেঝেতে পড়ে আছে। দেখার পরই আত্মীয়দের ডেকে আনেন তিনি।
পুলিস সূত্রে খবর, রবিবার সকালবেলায় বৌমা ভারতী নস্কর মহেশতলা জিনজিরা ফাঁড়িতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। পুলিসকে সে জানায় সে তার শাশুড়িকে হত্যা করেছে। তারপরেই মহেশতলা থানার পুলিস ঘটনাস্থলে এসে ৭৭ বছরের বৃদ্ধা যমুনা নস্করের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। বেহালা বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন ডিএসপি কামরুদ জামাল মোল্লা। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মহেশতলা থানার পুলিস। গ্রেফতার করা হয়েছে বৌমা ভারতী নস্করকে।
সাতসকালে সল্টলেকের জিসি ব্লকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার বৃদ্ধ দম্পতি। খবর পেয়ে, ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিধাননগরের পুলিস কমিশনার গৌরব শর্মা এবং বিধায়ক সুজিত বোস। দম্পতির দেহের পাশ থেকে উদ্ধার সুইসাইড নোট। সত্যিই কি আত্মহত্যা, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য রহস্য। তদন্তে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিস।
জানা গিয়েছে, সল্টলেকের জিসি ব্লকের বাসিন্দা যদুনাথ মিত্র এবং তাঁর স্ত্রী মন্দিরা মিত্র বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন। যদুনাথবাবু পেশায় চিকিৎসক। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সকালে কাজ করতে এসে যুগলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করেন বাড়ির কাজের লোক। চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা বাড়িতে এসে দম্পতিকে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিস আধিকারিকরা। আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বোসও।
তদন্তের স্বার্থে ঘটনাস্থলে আসেন বিধাননগরের পুলিস কমিশনার গৌরব শর্মা। তাঁর দাবি, দেহগুলির পাশ থেকে রান্নায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। তাতে লেখা রয়েছে, স্ত্রী মন্দিরা মিত্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে আত্মঘাতী হন ডঃ জেএন মিত্র। ধারালো অস্ত্রের কোপে স্ত্রী মন্দিরা মিত্র-র মৃত্যু হলেও অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিলেন স্বামী। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল? তা নিয়ে সন্দিহান পুলিস। তদন্তে বিধাননগর দক্ষিণ থানা।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল আম আদমি পার্টি। সেই মতো সকাল থেকেই প্যাটেল চক এলাকায় জোড়ো হতে শুরু করেছিলেন আপ নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রস্তুত ছিল পুলিসও। কর্মসূচি শুরু হতেই রণক্ষেত্রের আকার নেয় পরিস্থিতি। প্রতিবাদকারীদের আটকাতে শুরু হল ধরপাকড়। দিল্লি পুলিসের হাতে আটক হলেন পঞ্জাবের মন্ত্রী তথা আপ নেতা হরজোৎ সিং বাইন।
আবগারি মামলায় গত কয়েকদিন আগেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপর থেকেই ইডি হেফাজতে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি কেজরি। জেলে বসেই সরকার চালাবেন বলেও জানিয়েছেন। এই অবস্থায় আজ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করলেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
দিল্লি পুলিস সূত্রে খবর, প্যাটেল চক মেট্রো স্টেশনের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিস। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে মুক্তি দেওয়া হোক। বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের নেতাকে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ভয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে ভোটের প্রচার থেকে দূরে রাখতেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
বেপোরোয়া গতির প্রতিবাদ করায় মারধর নিউটাউন থানার পুলিসকে। অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার চার। পুলিস সূত্রে খবর, ধৃতরা হরিয়ানা ও দিল্লির বাসিন্দা।
জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ন'টা নাগাদ দুটি গাড়ি বেপোরোয়া ভাবে যাচ্ছিল। সেই সময় নিউটাউন ওয়াচ টাওয়ার ব্রিজের নিচে এক পথ চলতি ব্যক্তি প্রতিবাদ করেন। তারপরই গাড়ি থেকে নেমে সেই ব্যক্তিকে মারধর করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নিউটাউন থানার পুলিস। পুলিসকে দেখেও শান্ত হয়নি অভিযুক্তরা। ব্যাট, উইকেট দিয়ে মারধর শুরু করে পুলিসকেও। এরপরে গাড়িতে থাকা সাত আট জনের মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।
লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসল রাজভবন। শনিবার জলদর্শন কর্মসূচি শেষে রাজ্যপাল বোস, রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, বাংলায় কোনভাবেই হিংসা এবং দুর্নীতি বরদাস্ত করবেন না। পঞ্চায়েত-এর রেশ টেনে তিনি আরও বলেন, এরাজ্যে মানুষের রক্তে আর কোনও রাজনৈতিক হোলি খেলতে দেবেন না।সূত্রের খবর, ভোটপর্বে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজভবনের তরফে রাজ্য পুলিসকে পরিচিত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারির নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতের হিংসা রুখতে রাজভবনে একটি পিস রুম চালু করা হয়। সেই পিস রুমের মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে পাওয়া দুষ্কৃতীদের তালিকা তৈরি করা হয়।ইতিমধ্যে, সেই তালিকাও গোপনে রাজ্য পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুষ্কৃতীদের শণাক্ত করতে রাজভবন সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত চালাচ্ছে।এমনটাই সূত্রের খবর।
রেশন দুর্নীতি মামলা নিয়ে পরপর ঘটনাক্রম কী, তা অজানা কারোও নয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে রেশন দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই গতি পায় তদন্তে। এরপর বালুর সূত্র ধরে শঙ্কর আঢ্য, শেখ শাহজাহান। এমন পরিস্থিতিতেই হঠাৎ কলকাতা পুলিস তৎপর হয়ে উঠল রেশন দুর্নীতি নিয়ে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবারের মধ্যেই লালবাজারকে, কলকাতা পুলিসের অন্তর্গত প্রত্যেক ডেপুটি কমিশনারকে তথ্য দিয়ে জানাতে হবে। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত কত অভিযোগ জমা পড়েছে? সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? এই সবটা শুক্রবারের মধ্যেই জানতে চায় লালবাজার।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রেশন দুর্নীতি মামলায় যখন কেন্দ্রীয় সংস্থার উপর বর্তমানে তদন্তাধীন, তখন হঠাৎ কলকাতা পুলিস কেন সে সংক্রান্ত অভিযোগ দেখতে তৎপর হয়ে উঠল? এর নেপথ্যে কোন উদ্দেশ্য কাজ করছে রাজ্য পুলিসের- তারই হদিশ খুঁজছে ওয়াকিবহল মহল। বিরোধী মহলের দাবি, আবার বড় কোনও লিঙ্ক কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে আসার আগেই ঢেকে দেওয়ার জন্য পুলিসের এই চাল নয় তো?
সাতসকালে গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় পুকুর থেকে উদ্ধার এক মহিলার মৃতদেহ। শুক্রবার ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে পর্ণশ্রী থানার অন্তর্গত শ্যামসুন্দর পল্লীতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পর্ণশ্রী থানার পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য় পাঠিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে শ্যামসুন্দর পল্লীতে রাস্তায় ধারের একটি পুকুরে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এক মহিলার দেহ ভাসতে দেখা যায়। তারপর খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। মৃত ওই মহিলার মুখে জড়ানো ছিল ওড়না, পায়ে চটিও পড়েছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত ওই মহিলার কোনও পরিচয় পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের অনুমান, অন্য কোনও জায়গায় খুন করে হয়তো এই পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তবে খুন নাকি আত্মহত্যা? তা জানতে পুরো ঘটনাটাই খতিয়ে দেখছে পর্ণশ্রী থানার পুলিস। তবে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
বিজেপির এসটি মোর্চার প্রতিনিধি দলকে মালঞ্চে আটকে দিল পুলিস। সোমবার কলকাতা থেকে রাজ্য বিজেপির এসটি মোর্চার প্রেসিডেন্ট তথা বিধায়ক জুয়েল মুর্মু সহ ১৫ জনের একটি দল সন্দেশখালির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সন্দেশখালি এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে কথা বলার জন্য গিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু মিঁনাখার মালঞ্চ-এর কাছে কলকাতা বাসন্তী হাইওয়েতে বিশাল ব্যারিকেট দিয়ে পুলিস আটকে দেয় তাদের।
এরপর পুলিসের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ ধরে প্রতিনিধির ওই দলটির চলে কথোপকথন। পুলিস তাদের যেতে না দেওয়ায় তারা কলকাতা বাসন্তী হাইওয়ের উপর রাস্তাতেই বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে বিক্ষোভ দেখানোর পর তারা আবার কলকাতায় ফিরে যায়। সন্দেশখালি এলাকায় আবার আসবে বলেও জানিয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার সন্দেশখালির ধামাখালিতে প্রবেশ করেছেন ছয় সদস্য়ের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। সন্দেশখালির অত্য়াচারিত মহিলাদের এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন তারা। রবিবার সকালে সাড়ে আটটা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সন্দেশখালির উদ্দেশ্যে রওনা হন তাঁরা। তারপর ধামাখালিতে প্রবেশ করেছেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। কিন্তু ফ্য়াক্ট ফাইন্ডিং টিমকে সন্দেশখালি প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও কেন বাধা দেওয়া হল বিজেপির এসটি মোর্চার প্রতিনিধি দলকে? যা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
ডিউটি থেকে বাড়ি ফিরে নিজের সার্ভিস রিভলবার দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হলেন এক পুলিসকর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুর থানার বাথনা মাঠপাড়ায়। জানা গিয়েছে, মৃত পুলিস কর্মীর নাম জয়ন্ত সরকার। রাজ্য পুলিসের কমবাট ফোর্সের কর্মী ছিলেন তিনি। ঠিক কী কারনে এমন ঘটনা তা এখনো স্পস্ট নয়। তবে এই ঘটনাকে ঘিরে ব্য়াপক চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পুলিস সূত্রে খবর, গতকাল অর্থাৎ বুধবার ভিক্টরিয়া মেমোরিয়ালে ডিউটি ছিল জয়ন্ত সরকারের। রাতে ডিউটি শেষে ব্যারাকে ফিরে আনুমানিক রাত ৯ টা নাগাদ। তারপর তিনি এমন কান্ড ঘটান বলে অনুমান করা হচ্ছে। আত্মঘাতী জয়ন্ত সরকার কোনও রকম মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলেও জানা যায়নি।
পারিবারিক কোনও অশান্তি ছিল না বলে দাবি পরিবারের। তবে ঠিক কী কারনে এমন ঘটনা ঘটনো হল তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিবাহ ঠিক হয়েছিল কমবাট ফোর্সের ওই কর্মীর। শুক্রবার ছিল তাঁর আশীর্বাদ। তবে আশীর্বাদ অনুষ্ঠানের জন্য ছুটি না পাওয়ায় মানসিক অবসাদ থেকে এমনটি ঘটাতে পারেন বলে অনুমান।
শেখ শাহাজাহানকে গ্রেফতার করা নিয়ে এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর দাবি, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন ওই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। যদিও শুভেন্দুর ওই মন্তব্যকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
বুধবার সকালেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি দাবি করেন, মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ বেড়মজুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে শেখ শাহজাহানকে ধরেছে পুলিশ। এছাড়াও উডবার্ন ওয়ার্ডেও একটি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও দাবি শুভেন্দুর। যদিও শুভেন্দু অধিকারীর এই দাবিকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল শেখ শাহাজাহানের। তাই শুভেন্দু জানিয়ে দিক এখন কোথায় রয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা।
শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে কোনও বাধা নেই। স্পষ্ট জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। যা রীতিমত চাপ বাড়ছে শাসকদলের উপর। এই অবস্থায় নতুন করে সন্দেশখালির 'বেতাজ বাদশা' শেখ শাহজাহনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল রাজ্য পুলিস। গৌর দাস নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে এই এফআইআর বলে জানা গিয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো-ঘর-বাড়ি ভাঙচুর সহ একাধিক ধারা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নয়া এফআইআরে ৮০ হাজার টাকা লুটের মতো অভিযোগ রয়েছে 'বাদশা'র বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বসিরহাট জেলা পুলিস।
উল্লেখ্য, আজ সোমবার সন্দেশখালির ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয় রাজ্য-প্রশাসনকে। যা নিয়ে চরম অস্বস্তি। যদিও দীর্ঘ শুনানি শেষে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করার উপর আদালতের কোন স্থগিতাদেশ নেই বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। সন্দেশখালির অশান্তির ঘটনায় হাই কোর্টের দায়ের করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় এমনটাই জানালেন প্রধান বিচারপতি। পাশাপাশি, আদালত বান্ধব জয়ন্ত নারায়ন চট্টোপাধ্যায় রিপোর্ট পেশ করতে পারবেন বলে নির্দেশ আদালতের। এর পাশাপাশি রাজ্য পুলিস, সিবিআই, ইডি-কেও মামলায় পার্টি করা হল। শেখ শাহজাহান কেও মামলায় পার্টি করা হল। হাইকোর্টের তরফ থেকে দুটি সংবাদপত্রে নোটিশ দিয়ে জানানো হবে যে তাকে মামলায় পার্টি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৪ মার্চ এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে শাহজাহানের গ্রেফতারি চেয়ে পথে নেমেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। প্রায় প্রতি দিনই চলছে বিক্ষোভ। নতুন এফআইআর এবং আদালতের নির্দেশের পর এবার সন্দেশখালির বাঘ খাঁচাবন্দি হয় কিনা, তা সময়ের অপেক্ষা।
ক্ষোভ-বিক্ষোভে উত্তাল সন্দেশখালি। শিবু-উত্তমের পর অত্যাচারি শাসকের খাতায় নাম তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির। শেখ শাহজাহান, শেখ সিরাজউদ্দিনের পাশাপাশি অজিত মাইতির গ্রেফতারির দাবিতে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সরব বিক্ষোভকারীরা। জনরোষ থেকে বাঁচতে সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে গিয়ে লুকিয়ে পড়েন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা। তাঁকে দেখা মাত্রই ঝাঁটা-লাঠি নিয়ে সেখানে পৌঁছে যায় উত্তেজিত গ্রামবাসী। জনরোষ থামাতে কার্যত হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে।
এদিন মন্ত্রী সুজিত বসু ও পার্থ ভৌমিকের কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে অজিত মাইতিকে তাড়া করেন গ্রামের মহিলারা। অভিযোগ, গ্রামের ৭০ জনের নামে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেছেন অজিত মাইতি।
যদিও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি অজিত মাইতির। তবে আইন মোতাবেক কাজ হবে বলে দাবি পুলিসের। শাসকের ঔদ্ধত্য যেন ক্রমেই সীমা ছাড়ায়। এতকিছুর পরেও নাকি গ্রামবাসীদের হুমকি দিচ্ছেন অজিত মাইতি। প্রতি রাতে চলছে ভাঙচুর। আতঙ্কে গ্রামবাসী।
পুলিস-প্রশাসন ক্ষোভের আগুনে জল ঢালার চেষ্টা করলেও এত সহজে যে ঠাণ্ডা হবার নয় তা এদিনের জনরোষ থেকেই স্পষ্ট। অজিত মাইতির গ্রেফতারির দাবিতে অনড় গ্রামবাসী। এরপরেই অজিত মাইতিকে অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাকে আটক করে পুলিস। নিয়ে যাওয়া হয় সন্দেশখালি থানায়।
সন্দেশখালির পরিস্থিতির উপর টানা নজর রেখে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রবিবার সন্দেশখালি যাওয়ার পথে পুলিসি বাধার মুখে পড়ে দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। ভোজেরহাটে আটকে দেওয়া হল তাদের। রাস্তায় বসে বিক্ষোভ ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যদের বলে সূত্রের খবর। কেন সন্দেশখালি যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, প্রশ্ন তাদের।
এদিকে, দিল্লি থেকে চেয়ে পাঠানো হলো সন্দেশখালির প্রতিদিনকার রিপোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আগামী ৪ মার্চ রাজ্যে আসার কথা রয়েছে। ৫ই মার্চ তারা বৈঠক করবে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে।
প্রতিদিনই উত্তপ্ত হচ্ছে সন্দেশখালি। আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় জারি করতে হয়েছে ১৪৪ ধারা। রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অফিস সূত্রে খবর, প্রতিদিনই সন্দেশখালি নিয়ে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে। একই সঙ্গে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চিফ ইলেকশন কমিশনার বৃহস্পতিবারই সিআরপিএফের নোডাল অফিসারের সাথে দীর্ঘ বৈঠক সেরেছেন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে।
গত জানুয়ারি মাসে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে তল্লাশি করতে গিয়ে ইডির আধিকারিকদের কার্যত রক্তাক্ত হয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল কলকাতায়। তারপর থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সন্দেশখালি। স্থানীয়দের তরফে একাধিক অভিযোগ জমা করা হয়েছে পুলিস প্রশাসনের হাতে। শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতে পথে নেমেছেন সন্দেশখালির মহিলারাও। নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন প্রকাশ্যে। থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। এখন অপেক্ষার কবে শান্ত হয় সন্দেশখালি।