যাদবপুরের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা নিলেন মিমি চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। অপমানের অভিযোগ তুলেছিলেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী।যদিও এখনও পর্যন্ত ইস্তফা গ্রহন করা হয়নি। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে মিমি জানিয়েছেন, রাজনীতি আমার জন্য় নয়। পলিটিক্স আমি বুঝতে পারি না। লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাই না। দিদিকে আমি আমার সমস্য়ার কথা জানিয়েছি।
সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে মিমি চক্রবর্তী বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়ে বৈঠক করেন তিনি। মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষ করে বেরিয়ে মিমি নিজেই জানান, তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। যদিও দিদি এখনও পর্যন্ত ইস্তফা গ্রহন করেননি। তবে দিদি দ্রুত ব্য়বস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
অনেকের মতে, তবে কি এবার দেবের পথ ধরেই হাঁটতে চলছেন তৃণমূল সাংসদ মিমি। সম্প্রতি ঘাটালের সাংসদ দেব নিজের সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়েছিল। কিন্তু তারপর ফের রাজনীতিতেই ফিরেছেন অভিনেতা। তাই এবার সকলের দেবে মতই কি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন মিমি!
সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডে দিল্লি পুলিসের হাচে গ্রেফতার আরও এক যুবক। জানা গিয়েছে, তার নাম সাইকৃষ্ণ জাগালি, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিস কর্মচারী। সংসদের ধোঁয়া কাণ্ডে ধৃত মনোরঞ্জন ডি- এর সঙ্গে এই ব্যক্তির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলেই জানা যাচ্ছে। এছাড়াও ৫৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করেছে জালাউন পুলিস। পুুলিস সূত্রে খবর, এই ব্যক্তির নাম অতুল কুলশ্রেষ্ঠ ও ইনি 'ভগৎ সিং ফ্যান পেজ' এর সদস্য এবং সংসদ ভবনে ধোঁয়া কাণ্ডে তার গুরুতর যোগাযোগ আছে বলে সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, সংসদের ধোঁয়া কাণ্ডে কর্নাটকের এক ইঞ্জিনিয়ার সাইকৃষ্ণ জাগালিকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। সাইকৃষ্ণ ও ধৃত মনোরঞ্জন একই কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তেন। ২০০৮-২০০৯ সালে বেঙ্গালুরুতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় মনোরঞ্জন এবং সাইকৃষ্ণ রুমমেটও ছিলেন। আর এর খোঁজ ধৃত মনোরঞ্জন ডি-এর ডায়েরি থেকেই পাওয়া গিয়েছে। মনোরঞ্জনের ঘর তল্লাশির সময় একটি ডায়েরিও উদ্ধার করে দিল্লি পুলিস। আর সেখানেই একাধিকবার সাইকৃষ্ণর নাম পাওয়া যায়। এছাড়াও মনোরঞ্জনের মোবাইলের কল লিস্ট তদন্ত করেও সাইকৃষ্ণর সঙ্গে একাধিকবার কথা হওয়ার সূত্র পেয়েছে দিল্লি পুলিস। এছাড়াও সংসদে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় সাইকৃষ্ণর নাম পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে, দিল্লি পুলিস সূত্রে খবর।
এছাড়াও দিল্লি পুলিস সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের মামলার তদন্তের জন্য জালাউন ওরাই এলাকা থেকে ৫৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। জালাউন পুলিস অভিযুক্তকে অতুল কুলশ্রেষ্ঠ বলে শনাক্ত করেছে। তারা বলেছে যে সন্দেহ করা হচ্ছে যে, কুলশ্রেষ্ঠ সোশ্যাল মিডিয়ার "ভগৎ সিং ফ্যান পেজ" এর সদস্য এবং সংসদ ভবনে ধোঁয়া কাণ্ডে তার গুরুতর যোগাযোগ আছে। জানা গিয়েছে, কুলশ্রেষ্ঠ, একজন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট। তিনি একটি উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন। বাম-চালিত কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি ওরাইতে বামপন্থী মতাদর্শে অটল বিশ্বাসের জন্য পরিচিত। মামলায় গ্রেফতার হওয়া পাঁচ অভিযুক্তের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় অংশ নেন তিনিও। সংসদকাণ্ডে ধৃত এক অভিযুক্তর সঙ্গে তার এক গুরুত্বপূর্ণ চ্যাটিংও পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই সংসদকাণ্ডের পুনর্নির্মাণ করার জন্য ছয় জন আটক ব্যক্তিকেই নিয়ে আসা হবে সংসদে।
বুধবারও লোকসভায় 'সাসপেনশন' অব্যাহত। এবারে সাসপেন্ড করা হল কেরলের দুই সাংসদকে। প্রথম জন, আলাপুঝার সিপিএম সাংসদ এএম আরিফ। দ্বিতীয় জন, আঞ্চলিক দল কেরল কংগ্রেস (মণি)-র নেতা তথা কোট্টয়মের সাংসদ সি থমাস। এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে লোকসভা এবং রাজ্যসভা থেকে মোট ১৪৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল। এর মধ্যে লোকসভার সাংসদ সংখ্যাই ৯৭ জন।
সংসদকাণ্ডের 'মাস্টারমাইন্ড' ললিত ঝা-এর (Lalit Jha) বিষয়ে জানতে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালেই ইকো পার্ক থানায় হাজির দিল্লি পুলিসের স্পেশাল টিম (Delhi Police)। এরপরই দিল্লি পুলিসের ৪ প্রতিনিধি দল এসে পৌঁছলেন ললিতের বাগুইআটির হেলাবটতলার বাড়িতে। ললিত সম্পর্কিত তথ্য নিতে বাগুইআটি হেলাবটতলা বাড়িতে এসেছেন দিল্লি পুলিস। এখানেই থেমে নেই দিল্লি পুলিস। তাঁরা ললিতের ফোনের বিভিন্ন তথ্য খুঁজে বের করতেও পৌঁছে যান বিএসএনএলের দফতর অর্থাৎ টেলিফোন ভবনে। উল্লেখ্য, ললিত ঝা যে মোবাইল নম্বরটি ব্যবহার করত, সেটি বিএসএনএল নম্বর (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেল)।
সংসদকাণ্ডের পর থেকেই ললিতের বাংলা যোগ প্রকাশ্যে এসেছে। ললিত যে কলকাতার দু'জায়গায় ভাড়া থাকতেন তা জানতে পেরেছে দিল্লি পুলিসের স্পেশাল টিম। ফলে ললিতের বিষয়ে খোঁজ করতে তাঁরা রাজ্যে এসেছেন। সোমবার থেকেই তাঁরা তদন্ত করতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার সকালেই তাঁরা পৌঁছে যান বাগুইআটি হেলাবটতলার ভাড়া বাড়িতে।
জানা গিয়েছে, বিগত তিন বছর ধরে ভাড়া ছিলেন ললিত ঝা ও তার পরিবার। ১০ই ডিসেম্বর বাগুইআটি হেলাবটতলার বাড়ি থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল ললিত। সে যেই ঘরে ভাড়া থাকত, সেই ঘরে তালা বন্ধ থাকার কারণে ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি দিল্লি পুলিসের আধিকারিকরা। বাড়ির মালিককে প্রায় দেড় ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সেখান থেকে বেরিয়ে যায় দিল্লি পুলিস। এর পরই ললিতের ফোন নম্বরের যাবতীয় কল লিস্ট এবং কল হিস্ট্রি জানতে বিএসএনএলের দফতর অর্থাৎ টেলিফোন ভবনে পৌঁছে যান দিল্লী পুলিসের আধিকারিকরা। সংসদকাণ্ডে ললিত সম্পর্কে আর কী কী তথ্য প্রকাশ্যে আসে, সেটাই এখন দেখার।
সোমবারের পর মঙ্গলবারও উত্তপ্ত সংসদ চত্বর। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবারও চরম হই হট্টগোলের জন্য লোকসভা থেকে সাসপেন্ড করা হল আরও ৫০ জন সাংসদকে। এদের মধ্যে রয়েছেন সুপ্রিয়া সুলে, মণীশ তেওয়ারি, শশী থারুর, মোঃ ফয়সাল, কার্তি চিদাম্বরম, সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, ডিম্পল যাদব এবং দানিশ আলী সহ লোকসভার আরও বিরোধী সাংসদ। এনাদের প্রত্যেককেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের বাকি সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে গান্ধী মূর্তির সামনে লাগাতার ধরনা করেন ৯২ জন 'সাসপেন্ডেড' সাংসদ। আর ধরনা করার সময়ই নতুন করে বিতর্কে জড়ান তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন লোকসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের নকল করে দেখান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপরই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে শুরু জোর চর্চা।
সোমবার শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতেই চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় সংসদের দুই কক্ষেই। এর পরই একাধিক সাংসদের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে লোকসভা ও রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়। সোমবার লোকসভা থেকেই ৩৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ৭৮ জন ও গত সপ্তাহে মোট ১৪ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। আর আজ বরখাস্ত করা হয় ৫০ জনকে। ফলে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিরোধী দলের মোট ১৪২ জন সাংসদকে শীতকালীন অধিবেশনের বাকি সময়ের জন্য বরখাস্ত করা হল।
আবার আজ যখন সংসদের বাইরে বরখাস্ত হওয়া সাংসদরা ধরনায় বসেছিলেন, তখন তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের ব্যবহার এবং কথাবার্তার কৌতুক অভিনয় করে দেখান তিনি। আর সেটি ক্যামেরাবন্দি করেন রাহুল গান্ধী। ফলে দু'জনের এমন কীর্তিতে ধেয়ে আসছে কটাক্ষ। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার হতেই ঝড়ের গতিতে ভাইরাল। দু'জনের এই কীর্তিকে কটাক্ষ করে ধনখড় বলেন, 'একজন সাংসদ উপহাস করছেন এবং দ্বিতীয় সাংসদ সেই ঘটনার ভিডিওগ্রাফ করছেন, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক, হাস্যকর, অগ্রহণযোগ্য।'
সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডের মূলচক্রী ললিত ঝা-এর সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জানতে ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসেছে দিল্লি পুলিসের স্পেশাল টিম। এবারে এই সংসদকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের বিষয়ে তথ্য জানতে মেটা থেকে শুরু করে 'পেটিএম', 'গুগল পে'-কে চিঠি দিয়েছে দিল্লি পুলিস।
জানা গিয়েছে, সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডে অভিযুক্তদের সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নেওয়ার জন্য paytm এবং google pay কে চিঠি দিয়েছে দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সেল। ১৩ ডিসেম্বর বা তার আগে 'পেটিএম' বা 'গুগল পে'র মাধ্যমে কী কী টাকা-পয়সার লেনদেন করেছিল অভিযুক্তরা, কাকে কাকে পাঠিয়েছিল বা কারা গ্রহণ করেছিল এই সমস্ত বিষয়ে খতিয়ে দেখছে দিল্লি পুলিস। আর সেই সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য জানার জন্য চিঠি লিখেছে দিল্লি পুলিস।
এছাড়াও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের নিয়ন্ত্রক সংস্থা 'মেটা' কেও চিঠি লিখে অভিযুক্তদের সমস্ত অ্যাকাউন্টের ডিটেলস চেয়ে পাঠাল দিল্লি পুলিস। 'ভগৎ সিং ফ্যান ক্লাব' নামে যে সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপের মাধ্যমে অভিযুক্তরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন সেটি ইতিমধ্যেই ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। সেই সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য এবং অভিযুক্তদের নিজেদের মধ্যে করা চ্যাট জানতে চেয়ে মেটাকে (META) জরুরী ভিত্তিক চিঠি দিয়েছে দিল্লি পুলিস।
সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডে তদন্ত করতে এবারে কলকাতায় এসেছে দিল্লি পুলিসের এক তদন্তকারী টিম। অভিযুক্তদের বিষয়ে একাধিক তথ্য জোগাড় করতে সোমবার কলকাতায় পৌঁছল দিল্লি পুলিসের বিশেষ দল। সংসদকাণ্ডের মূলচক্রী ললিত ঝা-এর সঙ্গে বাংলা যোগ আগেই পাওয়া গিয়েছে। এবারে তাই সেসব যোগসূত্র খুঁজতেই কলকাতায় এসেছে দিল্লি পুলিস। তাঁদের প্রথমে গিরিশ পার্ক থানায় যেতে দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই নীলাক্ষ আইচের হালিশহরের বাড়িতেও গিয়েছে দিল্লি পুলিসের বিশেষ দল।
জানা গিয়েছে, সোমবার দিল্লি পুলিসের স্পেশাল টিম কলকাতায় পৌঁছতেই ললিতের ২১৮ রবীন্দ্র সরণীর বাড়িতে যায়। সেই বাড়ি তালা বন্ধ থাকায়, বাড়ির কেয়ারটেকারকে ডেকে পাঠানো হয়েছে গিরিশ পার্ক থানায়। ২১৮ রবীন্দ্র সরণীর যে ঘরে ললিত থাকত সেই ঘর খুলে তল্লাশি করতে চাইছে দিল্লি পুলিসের আধিকারিকরা। ললিতের সম্পর্কে খোঁজ নিতে এলাকার এক ব্যক্তিকে গিরিশ পার্ক থানায় তলব করল দিল্লি পুলিস। জনৈক ব্যক্তিকে ইতিমধ্যেই গিরিশ পার্ক থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে। ললিতের বাড়িতে কার কার যাতায়াত ছিল সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ললিত কার কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখত, পশ্চিমবঙ্গের কারা কারা ছিল, তাদের কারোর সঙ্গে সংসদের ঘটনার কোনো যোগাযোগ রয়েছে কিনা। সংসদে বিক্ষোভ দেখানোর আগে এই বিষয়ে কার কার সঙ্গে ললিত কথা বলেছিল এ সব বিষয়ে জানার চেষ্টা করছে দিল্লি পুলিস। গিরিশ পার্ক থানা ললিত ঝা সম্পর্কে কী কী তথ্য জোগাড় করেছে সেই সমস্ত তথ্য একবার দেখে নিতে চাইছে দিল্লি পুলিস। ললিতের সমস্ত ঠিকানাতেই তল্লাশি চালাতে পারে দিল্লি পুলিস, এমনটাই সূত্রের খবর।
অন্যদিকে সংসদ ভবনে স্মোক বোমা কাণ্ডে হালিশহরে নীলাক্ষের বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি পুলিসের বিশেষ দল। এরমধ্যে দু'জন রাজ্য পুলিসের আইবি অফিসার এবং দু'জন দিল্লীর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি রয়েছে। প্রথমে নীলাক্ষের বাবা কে ডাকেন তাঁরা। এরপর ঘরে গিয়ে নীলাক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডের পরই দিল্লিপ পুলিসের হাতে গ্রেফতার একের পর এক অভিযুক্ত। এমনকি এই কাণ্ডের 'মূলচক্রী' ললিত ঝাকেও গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সেল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর থেকেই প্রকাশ্যে এসেছে একের পর এক নয়া তথ্য। এর আগে ললিতের সঙ্গে বং কানেকশনের কথা জানা গিয়েছে। এবারে জানা গেল, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কীভাবে তার গ্রুপের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছিল।
সংসদের অন্তরে ধোঁয়া কাণ্ডে ইতিমধ্যে দিল্লি পুলিসের তরফে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড ললিত ঝা-কে। গ্রেফতারের পর থেকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ললিতকে। দিল্লির পুলিসের স্পেশাল সেলের আধিকারিকরা মনে করছেন, এই বঙ্গে বসেই ললিত সংসদে প্রবেশের ছক কষেছিল। আবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা একদিকে চালিয়ে গিয়েছে ললিত। অন্যদিকে এই গোটা কর্মকাণ্ডে কোন কোন সদস্য তার সঙ্গে থাকবে, কার কী ভূমিকা থাকবে, সবটাই ছক কষেছিল ললিত। পরিবারকে বিহারে পাঠিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে, তার দিল্লি যাত্রা সবটাই আগে থেকে ঠিক করা ছিল ললিতের।
সংসদে ধোঁয়া কাণ্ড (Parliament Smoke Case) নিয়ে সোমবার সকাল থেকেই বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তাল লোকসভা ও রাজ্যসভা। সোমবার হইচইয়ের জেরে লোকসভার অধিবেশন বেলা ১২টা পর্যন্ত মুলতুবি। কিন্তু অবশেষে বিরোধীদের তুমুল হৈ-হট্টগোলের মধ্যেই শুরু হয় লোকসভার কাজ। তবে রাজ্যসভা দুপুর ২ টো পর্যন্ত স্থগিত। শুক্রবারের মতো আজও সংসদের উভয় কক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে সরব হবেন বিরোধীরা বলেই সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায় সংসদে ধোঁয়া কাণ্ড নিয়ে আলোচনার জন্য কুড়িটির বেশি নোটিশ জমা পড়েছে। ফলে সবকিছু মিলিয়ে আজও সংসদ ভবন এই সমস্ত ইস্যুতে যথেষ্ট উত্তপ্ত থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সোমবার সকাল থেকেই রাজ্যসভা ও লোকসভায় বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে লোকসভার অধিবেশনে স্পিকার ওম বিড়লা জানান, সংসদে হামলা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হচ্ছে। এছাড়াও তিনি বলেন, যেভাবে বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, স্লোগান দিচ্ছেন, তা লোকসভার মর্যাদার পরিপন্থী। তিনি আরও বলেন, এই ধোঁয়া কাণ্ড নিয়ে রাজনীতি করা দুঃখের বিষয়। তিনি বিরোধীদের অনুরোধ করেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য।
অপরদিকে আইপিসি সিআরপিসি সংশোধনী বিল নিয়ে আজ আলোচনায় মরিয়া চেষ্টা চালাবে সরকার পক্ষ। সবকিছু মিলিয়ে আজও সংসদ ভবন এই সমস্ত ইস্যুতে যথেষ্ট উত্তপ্ত থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডের পর 'মূলচক্রী' ললিত ঝা-এর (Lalit Jha) সঙ্গে কলকাতা কানেকশন তো আগেই জানা গিয়েছে। এবারে পশ্চিম মেদিনীপুরের কানেকশনও খুঁজে পাওয়া গেল। পুলিস সূত্রে খবর, ললিত ঝা, নীলাক্ষ আইচ এর তৈরি করা 'সাম্যবাদী সুভাষ সভা'র সঙ্গে এবার যোগ পাওয়া গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের। তারা তাদের সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছিল বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো। এছাড়াও এই কাণ্ডে নাম উঠে এসেছে আরও এক ব্যক্তির।
সাম্যবাদী সুভাষ সভা- ললিত ঝা, নীলাক্ষ আইচদের এই সংগঠনই এখন দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার এই সংগঠন নিয়ে উঠে এলো আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিভিন্ন জেলায় সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ করে সংগঠন বাড়ানোর কাজে নেমেছিল ললিত ঝা-রা। কীভাবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর, মেদিনীপুর শহরেও থাবা বসিয়েছিল 'সাম্যবাদী সুভাষ সভা'। জানা গিয়েছে, মাস কয়েক আগে সমাজ মাধ্যমেই যোগাযোগ করা হয় দাসপুরের ল ক্লার্ক হিমাংশু শেখর মান্নার সঙ্গে। দাসপুর, ঘাটাল সহ আশেপাশের এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল হিমাংশুকে। এলাকায় সংগঠন তৈরি করারও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাকে। রবিবার সকালে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে হিমাংশু জানায়, এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ফান্ড জমা করতে বলা হয়েছিল তাকে। ললিত ঝা-রা যে সংসদে হামলার মতো এত বড় ঘটনা ঘটাতে পারে তা একেবারেই টের পাননি হিমাংশু। টিভিতে সংসদ হামলার খবর দেখানোর পরেই গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যায় হিমাংশু।
একইভাবে মেদিনীপুর শহরেও টার্গেট করা হয় মনীষ মাইতি নামে এক যুবককে। শনিবার রাতে মেদিনীপুর শহরে ডিরোজিও নগরে মনীষের বাড়িতে গেলেও দেখা মেলেনি। বাড়িতে তালা। ঠিক এই ভাবেই 'সাম্যবাদী সুভাষ সভা' নিজেদের জাল বিস্তারের চেষ্টা করছিল পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। যার মধ্যে বাদ যায়নি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাও। এই সংগঠনের আসল উদ্দেশ্য কী বা সমাজ সেবার আড়ালে কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য এই সংগঠনের ছিল কিনা তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
সংসদ (Parliament) কক্ষে ধোঁয়া কাণ্ডের 'মূলচক্রী' ললিত ঝাঁ (Lalit Jha)। যাকে নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য থেকে জাতীয় রাজনীতি। এই ঘটনার সঙ্গেই একাধিকবার বং কানেকশনও উঠে এসেছে। এরই মধ্যেই ললিতকে পুলিসি হেফাজতে নিলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে পুলিস। আর জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেশে বেকারত্বের সমস্যার জন্যই এই হামলার ছক কষা হয়েছিল বলে ললিত জানিয়েছে পুলিসকে।
সংসদে অবৈধভাবে অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়েছিল দুই যুবক। সেখানে ঢুকে স্মোক বম্ব ছোড়ে তারা। যার জেরে হলুদ ধোঁয়ায় ভরেছিল সংসদের অন্দর। তখন তাঁদের অন্য সঙ্গীরা সংসদের বাইরে স্লোগান এবং স্মোক বম্ব ফাটাচ্ছিল। এদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ললিত এবং মহেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সংসদে হানার বিষয়ে আরও তথ্য জানার চেষ্টাও করছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু পুলিস জানিয়েছে, ললিতের কথায় একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, সংসদে হামলার প্ল্যান সাকসেস না হলে ললিত দ্বিতীয় প্ল্যান তৈরি করে রেখেছিল বলেও পুলিসকে জানিয়েছে সে। এরপরই সে জানায় যে, মূলত দেশে বেকারত্বের সমস্যার জন্যই এই হামলা করা হয়েছিল।
সূত্রের খবর, যেহেতু ললিতকে আপাতত সাত দিনের পুলিস হেফাজতে রয়েছে, তাই তাকে নিয়ে দিল্লি পুলিস সংসদে ও সংসদের বাইরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে পারে।
সংসদে ঢুকে হানা এবং রঙিন ধোঁয়া ছড়ানোর কাণ্ডে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। সংসদ হামলার ২২ বছর পূর্তিতেই নতুন সংসদ ভবনের লোকসভা কক্ষে দুই যুবকের হানা। বুধবারের এই ঘটনার পরেই গ্রেফতার করা হয় চারজনকে। সেই রাতেই আটক হয়েছিল বিক্রম নামে এক ব্যক্তি। তারপর এদের সকলের সূত্র ধরেই উঠে আসে এই ঘটনার মূলচক্রী ললিত ঝাঁর নাম। তারপর গ্রেফতার হয় পঞ্চম ব্যক্তি ললিত ঝাঁ। এরপরেই ললিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দিলি পুলিসের হাতে উঠে আসে একের পর এক তথ্য। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে, রাজস্থানের নাগৌর জেলার বাসিন্দা মহেশ কুমাওয়াতকে। তিনিও ঘটনার দিন দিল্লিতে ছিলেন, পুরো ষড়যন্ত্রের তিনিও এক অংশ।
জানা গিয়েছে, ললিতদের গোটা পরিকল্পনায় তৈরি ছিল দুটি প্ল্যান। যাকে বলে 'প্ল্যান এ' এবং 'প্ল্যান বি'। সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে যদি নীলম এবং অমল ব্যর্থ হতেন, তবে বিক্ষোভ দেখাতেন কৈলাশ এবং মহেশ নামে ললিতের অপর দুই বন্ধু। শুধু তাই না, এই ধোঁয়া কাণ্ডের পর, যাতে সহজেই ললিত রাজস্থানের গেস্ট হাউসে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারেন, সেই কারণে ঘটনার একদিন আগে থেকেই তাঁর নিজের আইডি দিয়ে রাজস্থানের গেস্ট হাউস বুকিং করে রেখেছিলেন ললিত। জানা গিয়েছে, রাজস্থানের ওই গেস্ট হাউস থেকেই সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডে ললিতের সহযোগী সাগর, মনোরঞ্জন, নীলম এবং অমলের মোবাইল ফোন ললিত পুড়িয়ে দেন প্রমাণ লোপাটের জন্য। হার্ডডিস্কের মাধ্যমে প্রমাণ জোগাড়ের জন্য যার ধ্বংসাবশেষ ইতিমধ্যেই উদ্ধার করেছে দিল্লি পুলিস।
এই ঘটনায় বারবার উঠে আসছে ভগৎ সিং ফ্যান ক্লাব নামে একটি হোয়াটস্যাপ গ্রুপের কথা। এই গ্রুপেই সংসদে হামলার যাবতীয় পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দিল্লি পুলিস সূত্রে খবর। গত দেড় বছর ধরেই এই পরিকল্পনা চালাচ্ছে ললিত। এমনকি, সংসদের বাইরে ও ভিতরে নিরাপত্তা নিয়ে বহু দিন ধরে ইন্টারনেটে পড়াশোনা করছিলেন এই পুরো দল। জেরার পর জানা গিয়েছে, সাতটি স্মোক বম্ব নিয়ে সংসদে ঢোকার পরিকল্পনা করেছিল ললিতরা। দিল্লি পুলিসকে ললিত আরও জানায়, তিনি এবং তাঁর সহযোগীরা সংসদের ভিতরে ও বাইরে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনাও করেছিলেন। কিন্তু তা তাঁরা বাস্তবায়িত করতে পারেননি।
সবমিলিয়ে যা বোঝা যাচ্ছে, ললিতকে জেরা করে ধীরে ধীরে খুলছে সংসদের ধোঁয়া কাণ্ডের বহু জট। ধীরে ধীরে বাইরে আসছে পরিকল্পনা ঘিরে আসল তথ্য। ইতিমধ্যেই লোকসভার নিরাপত্তাকে, ঘটনার পর আরও জোরালো করতে ক্যাবিনেট বৈঠক সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে, ললিতদের মূল উদ্দেশ্যই ছিল সংসদে ঢুকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে বিক্ষোভ দেখানো। এখন দেখার বিষয়, দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সেলের তদন্তে সংসদে ঢুকে হানা এবং রঙিন ধোঁয়া কাণ্ডে আরও কী কী তথ্য বেরিয়ে আসে।
সংসদ কক্ষে ধোঁয়া কাণ্ডের 'মূলচক্রী' ললিত ঝাঁ। যাকে নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য থেকে জাতীয় রাজনীতি। ললিতের কলকাতা যোগের তদন্তে নেমে লালবাজার খোঁজ পায় ললিতের বাড়ির। ভাড়া বাড়িতে কলকাতায় থাকতেন ললিত। বাগুইআটি এবং বড়বাজারের দুই বাড়ির মধ্যে ২১৮ রবীন্দ্র সরণি পুলিসদের সন্দেহের তালিকার একেবারে শীর্ষে।
আপাতত সূত্র মারফত যা জানা গিয়েছে, তাতে কলকাতায় ললিতের মোট দুটি বাড়ির সন্ধান মিলেছে। এক, বড়বাজারে ২১৮ নম্বর রবীন্দ্র সরণি, যেখানে এই মুহূর্তে ললিত ও তাঁর পরিবার না থাকলেও সেখানে ললিত প্রাইভেট টিউশন করেন এবং ললিতের আধার কার্ডে এই ঠিকানার উপস্থিতি। আর দুই, বাগুইআটির একটি ভাড়া বাড়ি। এখন পুলিসের মনে প্রশ্ন জাগছে, বিহারের ছেলে ললিত থাকেন বাগুইআটিতে। তাহলে ২১৮ রবীন্দ্র সরণি কীভাবে তাঁর আধার কার্ডের ঠিকানায় রইল, তা নিয়েই ধন্দে পুলিস।
অপরদিকে জানা যাচ্ছে, সপরিবারে বাগুইআটির এক ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন ললিত ও তাঁর পরিবার। পাড়ায় বেশ ভালো ছেলে বলেই পরিচিত ললিত। বাগুইআটির বাড়িওয়ালার সঙ্গে ২০২০ সালে ললিতের চুক্তিপত্রে সই হয়। তারপর সেই চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হলে, বহুবার বলার পর অবশেষে ২০২৩ সালে ললিতের মায়ের নামে নতুন করে চুক্তিপত্র হয়।
ললিত যখন বাগুইআটিতেই থাকেন, তাহলে বড়বাজারের ২১৮ রবীন্দ্র সরণির নামে আধার কার্ড কেন? এই মুহূর্তে এই প্রশ্নটাই ভাবাচ্ছে পুলিসকে। আরও জানা গিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর রাতেই ললিত তাঁর পরিবারকে পাঠিয়েছিল দেশের বাড়িতে। পাড়ার লোককে বলেছিল, কাজে নিজে সে যাচ্ছে দিল্লি। সুতরাং, সবটাই আগে থেকে ভেবে রাখা পরিকল্পনা। ঠিক এভাবেই তদন্তে তাঁর বাড়ি নিয়ে আরও তথ্য উঠে আসতে পারে, সন্দেহ পুলিসের। ললিতের আধার কার্ডের ঠিকানা, ২১৮ নম্বর রবীন্দ্র সরণি রয়েছে সেই সন্দেহের তালিকার একেবারে শীর্ষে।
সংসদ থেকে বহিষ্কারের পর সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্র। লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করলেন তিনি। এবার মহুয়া মৈত্রকে দ্রুত বাংলো খালি করার নির্দেশ দিল মিনিস্ট্রি অফ আরবান অ্যাফেয়ারস।
লোকসভায় মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন অর্থাৎ 'ক্যাশ ফর কোয়ারি'র অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। আইনজীবী ও মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয় অন্তত দেহাদ্রাই একই অভিযোগ তুলেছিলেন। এরপরই লোকসভার এথিক্স কমিটি তদন্ত শুরু করে। তখনই সংসদ থেকে মহুয়াকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে এথিক্স কমিটি। সংসদে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন শুক্রবার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। কমিটির রিপোর্ট পেশের পর ধ্বনিভোটে মহুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন স্পিকার ওম বিড়লা।
সংসদ থেকে বহিষ্কারের দিন মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরী থেকে ইন্ডিয়া জোটের বহু নেতা। এথিক্স কমিটির তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে তখনই প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া। এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ১৫ পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন মহুয়া। অনলাইনে দায়ের করা এই মামলা শিগগিরই শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করল এথিক্স কমিটি। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, মহুয়াকে বহিস্কারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৬ জন সদস্য এবং বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৪ জন। ডিসেম্বরের বসবে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন। সেখানেই ওই রিপোর্ট পেশ করা হবে।
হীরানন্দানি গ্রুপের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এথিক্স কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে হাজির হয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। মহুয়ার অভিযোগ, ওই প্যানেলে তাঁকে ব্যক্তিগত একাধিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। যদিও বৈঠকের মাঝেই বেরিয়ে আসেন তৃণমূল সাংসদ। বৃহস্পতিবার ওই কমিটি সরকারিভাবে তাদের রিপোর্ট পেশ করতে চলেছে।
এদিকে এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকরের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ করেন মহুয়া। তিন পাতার একটি চিঠি লিখে তাঁর অভিযোগ, বৈঠকের সময় তাঁকে মৌখিকভাবে তাঁর 'বস্ত্রহরণ' করা হয়েছে । তাঁর সঙ্গে অনৈতিক, নোংরা আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন সাংসদ ।