ভোটারের সংখ্যা থেকে বেশি ভোট পড়ার অভিযোগ উঠল হাবড়ার একাধিক বুথে। ঘটনাচক্রে ওই একই ব্লকে ব্যালট পেপার খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মহাদেব মাটির বিরুদ্ধে। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এবিষয়ে বিডিওর রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি।
ভোটারের থেকে বেশি ভোট পড়ার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, হাবড়া ২ ব্লকের তিনটি বুথে মোট ভোটারের থেকে বেশি সংখ্যক ভোট পড়েছে। এবিষয়ে আগামী ৪ অগাস্ট আদালতে রিপোর্ট জমা দেবেন হাবড়া ২-এর বিডিও।
অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল বিধায়কের হুমকির বিরুদ্ধে করা মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কুলপির এক সিপিএম প্রার্থীর করা মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কুলপির রামকৃষ্ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএম প্রার্থী ছিলেন অর্পিতা বণিক সর্দার। তাঁর অভিযোগ, ভোট গণনার দিন প্রথমে তাঁকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর কয়েকজন দুষ্কৃতী নিয়ে ওই গণনাকেন্দ্রে ঢোকেন তৃণমূল বিধায়ক যোগ রঞ্জন হালদার। অভিযোগ তারপরেই একটি মাত্র ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
কলকাতার রাজপথে মিছিলের অনুমতি পেল না রাজ্য বিজেপি (BJP)। বুধবার অনুমতি ছাড়াই পঞ্চায়েত ভোটের হিংসার প্রতিবাদে বুধবার রাস্তায় নামল বিজেপি। মিছিলে রয়েছেন রাজ্যের প্রথম সারির নেতারা। রয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ দিলীপ ঘোষরা।
এদিকে, পুলিসের অনুমতি না পেলেও কলেজ স্কোয়ার থেকে মিছিল শুরু করেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, বুধবার কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করবে বিজেপি। এদিকে, শুক্রবার তৃণমূলের 'শহীদ দিবস' পালন। ধর্মতলায় ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে । ধর্মতলাতে বিজেপির মিছিল হলে সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে, পুলিস যে অনুমতি দেবে না মিছিলে, তা আগেভাগেই জানত রাজ্য বিজেপি। তাই তাঁরা পুলিসের অনুমতি ছাড়াই মিছিল শুরু করেছেন বলে খবর।
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিবাদ করা, মিটিং-মিছিল করা রাজনৈতিক দলের অধিকার। তাই মিছিল মিছিলের মতো চলবে। পুলিস তো আটকানোর চেষ্টা করবেই। পুলিস ব্যারিকেড করবে, আমরা ব্যারিকেড ভাঙব। এভাবেই রাজনৈতিক আন্দোলন চলে।'
১২ হাজার ৪৯২ টি বুথ দখল, প্রায় ৬৫০ জন গুরুতর আহত, প্রায় ২ হাজার জন আহত। ১১ জনের মৃত্যু। এছাড়া নির্বাচন কমিশন ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে কলকাতার রাজপথে মহামিছিলে পা মেলালেন বিজেপি নেতা-কর্মীবৃন্দরা। বুধবার সকাল থেকেই এই মিছিল নিয়ে উত্তাপ ছড়িয়েছে। একদিকে যখন মিছিল রুখতে গার্ডরেল দিয়েছে পুলিস অন্যদিকে তখন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ছবি বুকে নিয়ে ধিক্কার মিছিল বিজেপির, পাশাপাশি কোমরে দড়ি বেঁধে অভিনব প্রতিবাদে নেমেছে বিজেপি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে। সেই সংক্রান্ত একটি তালিকা তৈরি করে ইতিমধ্যে নবান্নে জমা করেছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী চেয়ার, টেবিলের পাশাপাশি একাধিক স্কুলের ওয়াশ বেসিনও উধাও হয়ে গেছে।
যে কোনও নির্বাচনের পর স্কুল ও কলেজের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে তা দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেয় নির্বাচন কমিশন। একই ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষতিক্ষতির বিষয়ে জানাতে জেলাগুলিকে এবিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারপরেই শিক্ষা দফতর একটি রিপোর্ট তৈরি করে নবান্নে পাঠিয়েছে।
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। একাধিক স্কুলের ফ্যান, লাইট, ইলেকট্রিক তারের কেসিং উধাও হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও বাথরুমের প্যান, ওয়াশ বেসিন, মগ, হাইবেঞ্চ, লো বেঞ্চ নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। স্কুল শিক্ষা দফতর জানিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের জেরে মোট ৩৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। তা দ্রুত মেটাতে নবান্নকে অনুরোধ করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Elections) পর্ব শেষ হয়ে গেলেও রাজ্য়জুড়ে অশান্তি কিন্তু এখনও অব্য়হত রয়েছে। বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির ২৮ নম্বর আসনের প্রার্থী সুদীপ্ত বসুকে তৃণমূলে যোগদান করানোর জন্য তুলে নিয়ে যায় কিছু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের (Malda) হবিবপুর এলাকায়।
অভিযোগ, সুদীপ্তকে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য রীতিমতো চাপ দেওয়া হয়। অভিযোগ, তাঁকে একটি অপরিচিত জায়গায় তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তারপরেই বিজেপি কর্মী সমর্থক ও তাঁর পরিবারের চেষ্টায় তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তবে এই বিষয়ে থানায় এখনও পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি বিজেপির তরফে।
অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির জয়ী প্রার্থী ইচ্ছা করেই তৃণমূলে যোগদান করতে এসেছিল। পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি করার অপরাধে প্রাণ হালদার নামে এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দীঘা সুকান্ত পল্লী ২০৪ নম্বর বুথে৷ আহত কর্মী বর্তমানে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷
শনিবার, রাতে আহত ওই কর্মীর সঙ্গে বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতালে দেখা করতে আসেন বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার সহ বিজেপি নেতারা৷ প্রাণ বলেন "গ্রামে বিজেপি জিতেছে সেই আক্রোশে তাঁকে চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে স্কুলের পিছনে ধরে মারধর করেছে তৃণমূলের দু তিনজন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে বেশ কিছু মানুষের, সেসময় গোটা রাজ্য অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ বারুদের তলায় ছিল, এ বললেও ভুল বলা হবে না। নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই গোটা রাজ্য জুড়ে দফায় দফায় বোমা উদ্ধার হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোট মিটলেও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ধার হচ্ছে মজুত রাখা তাজা বোমা। তেমনই শুক্রবারও রাজ্যের দুটি জেলায় পৃথক ভাবে বহু বোমা উদ্ধার হয়। সূত্রের খবর, বীরভূমের দুটি পৃথক জায়গা এবং উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থেকে বহু বোমা উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন।
সূত্রের খবর, শুক্রবার গোপন সূত্রের থেকে খবর পেয়ে নানুরের ব্রাহ্মণখণ্ড গ্রামের একটি পুকুর পাড় থেকে দু ড্রাম বোমা উদ্ধার করে নানুর থানার পুলিস। ওই একই দিনে বীরভূমের তারাপীঠ থানার পরুন গ্রামে লাহা নিস্পরুন হাইস্কুলের পাশে একটি পুকুরপাড় থেকে ১১ টা ৩৫ মিনিটে উদ্ধার হয় ব্যাগ ভর্তি তাজা বোমা। শুক্রবার সকালে ওই এলাকার বাসিন্দারা বোমা ভর্তি দুটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর পুলিসে খবর দিলে তারাপীঠ থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে বোমা উদ্ধার করে ও জায়গাটিকে ঘিরে রাখে। পুলিশের অনুমান দুটি ব্যাগে ১২-১৫ টি বোমা রয়েছে। খবর দেওয়া হয় বোম্ব স্কোয়াডে। কে বা কারা স্কুলের পাশে বোমা গুলি মজুত করে রেখেছে সেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে তারাপীঠ থানার পুলিস।
একই দিনে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার কলসুর সরদার পাড়ার জনবহুল এলাকার একটি পুকুর থেকে শুক্রবার দুপুরে দুটি তাজা বোমা উদ্ধার করল দেগঙ্গা থানার। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন দুপুরে স্থানীয়রা পুকুরে স্নান করতে গিয়ে দেখেন একটি ব্যাগে পলিথিনে মোড়া দুটি তাজা বোমা, পুকুরের জলে ভাসতে দেখে তাঁরা পুলিসকে খবর দেয়। পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটলেও জনবহুল এলাকায় বোমা উদ্ধারে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections) ভয়ঙ্কর তাণ্ডবের স্মৃতি এখনও রয়েছে বিদ্যালয়ের ভিতরে। শুক্রবার, মালদহের (Maldah) খরবার গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উদ্ধার (rescue) হয় দুটি বোমা (bomb)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে খরবা ফাঁড়ির পুলিস। এই বোমা উদ্ধারকাণ্ডে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িযেছে গোটা স্কুল চত্বর এলাকায়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন খরবার গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের কোণ থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি বোমা। এছাড়াও শৌচালয় থেকে পাওয়া গিয়েছে বাঁশের লাঠি। ভাঙন ধরেছে দেওয়ালে। এমনকি স্কুলের ক্লাসরমের ভিতরে থাকা পাখাগুলিও বাঁকানো অবস্থায় রয়েছে। তবে স্কুলে আরও বোমা থাকতে পারে বলে এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে। এরপর খবর দেওয়া হয়েছে বম্ব স্কোয়াডকে।
আপাতত বন্ধ রয়েছে স্কুলের পাঠ্যক্রম ব্যবস্থা। তবে এই বোমা উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা ক্ষুব্ধ রয়েছেন। তাঁদের একটাই দাবি, দিন দিন রাজনৈতিক হিংসার প্রভাব যেন বেড়েই চলেছে। যার ফলে সমস্যায় পড়ছে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে দীর্ঘ ১৫ বছরের তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি দখল। আনন্দে মস্তকমুণ্ডল করতে দেখা গেল বিজেপি-কর্মী সমর্থকদের। তাঁদের কথায়, এতদিন তৃণমূলকে যে ভোট দিয়েছেন তাঁরা, সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেই মাথা ন্যাড়া করেছে একের পর এক বিজেপি সমর্থক ও কর্মীরা। নদিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের ভাজনঘাট টুঙ্গি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতে দীর্ঘ ১৫ বছর তৃণমূলের দখলে ছিল। তবে, এবছর ১৮টি আসনের মধ্যে ১২টিতেই জয় পেয়ে পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। তারপরই শুরু হয়ে গিয়েছে সেলিব্রেশন। বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় দেখা গেল সকাল থেকে লাইন দিয়ে মস্তকমুণ্ডন করছেন একের পর এক বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। গেরুয়া সমর্থকদের দাবি, মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে এতদিন কোনও কাজ করেনি তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত। এতদিন তাঁদের ভোট দিয়ে ভুল করেছেন তাঁরা। তাই মাথা ন্যাড়া করে মস্তকমুণ্ডন করেছেন তাঁরা।
যদিও, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। পাল্টা শাসকদলের কটাক্ষ, পঞ্চায়েত ভোটে পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগেই ‘শেষকৃত্য’ সম্পন্ন করে রাখল বিজেপি।
ফের রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। গণনা পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও ফের ১৫টি বুথে নির্বাচনের নির্দেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার। হাওড়ার সাঁকরাইলের ১৫টি বুথে ফের নির্বাচন হবে। ওই ১৫টি বুথের গণনাকে কার্যত বাতিল ঘোষণা করেছে কমিশন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন, ভোটগ্রহণ ও গণনা, তিন পর্যায়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। গণনার দিন সাঁকরাইলের ১৫টি বুথে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার ছিনতাই করা হয়। গণনার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। সাঁকরাইলে তৃণমূল বিধায়ক প্রিয়া পালের বিরুদ্ধে ব্যালট লুঠের অভিযোগ ওঠে।
পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার দুটি বুথ ও হুগলির সিঙ্গুরেও পুনর্নির্বাচন হবে। সাঁকরাইলের ২৪৭-২৫৪ নম্বর, মোট ৯টি বুথ, সারেঙ্গার ২৬৭, ২৬৮, ২৭১ ও ২৭৭ নম্বর বুথেও নির্বাচন বাতিলের নির্দেশ। সিঙ্গুরের বেরাবেরির ১৩ নম্বর বুথে ফের নির্বাচন হবে। হাবড়া ২-এর ভুরকুন্ডার ১৮ নম্বর বুথ, ৩১ নম্বর বুথ, ও গুমা পঞ্চায়েত কেন্দ্রের ১২০ নম্বর বুথেও নির্বাচনের সিদ্ধান্ত কমিশনের।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ে খুশি অনুব্রত মন্ডল। কিন্তু কবে জেল থেকে মুক্তি হবে, তা জানতে পারেননি। গরুপাচার মামলায় এক বছর ধরে জেলে আছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন অনুব্রত। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অনুব্রত মন্ডলকে জেরা করতে পারে ইডি, এমনটাই সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তে নেমে মিলেছে বিস্ফোরক তথ্য। এই মামলায় এখনও অবধি তৃণমূল নেতা, মন্ত্রী সহ বহু সরকারি আধিকারিকও গারদের ওপারে আছেন। এবার এই মামলায় বীরভূমের বেতাজ বাদশাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি।
সূত্রের খবর, বয়ান রেকর্ড করার জন্য ইতিমধ্যেই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে আবেদন করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। আগামী ২০ জুলাই বিচারক রঘুবীর সিংয়ের বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি আছে। ইডির আবেদন মঞ্জুর হলে অনুব্রতকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে জেরা করতে পারে ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শাসক দলের একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়িয়েছে। জেলে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহার মতো নেতারা। টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
মণি ভট্টাচার্য: পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election) ঘোষণার পর থেকে এখনও অবধি রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি পার। কিন্তু এবার মৃত্যুর পরিসংখ্যান বলছে অন্যবারের তুলনায় চিত্রটা কিছুটা আলাদা। প্রত্যেকটি একক দলের কর্মীদের মৃত্যুর সংখ্যার তুলনায় ৪ গুন্ বেশি তৃণমূল কর্মীদের মৃত্যু হয়েছে। একটি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখনও অবধি রাজনৈতিক হিংসা (Political Violence), বোমা বিস্ফোরণ, ইত্যাদি সব মিলিয়ে মোট ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই হিংসা ও মৃত্যু নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এছাড়া মমতা বন্দোপাধ্যায় অথাৎ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক হিংসায় বিরোধী দলগুলির থেকে শাসক দলের কর্মীর মৃত্যু বেশি হয়েছে এ ঘটনা বিরল, এমনটাই রাজনৈতিক মহলের দাবি, এঘটনায় অবশ্য শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, 'মমতা বন্দোপাধ্যায় মৃত্যুর হিসেবে কমিয়ে বলছেন।'
যদিও সূত্রের খবর অনুযায়ী, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বোমাবাজি, রাজনৈতিক হিংসায় রাজনৈতিক কর্মীর ছেলে, পোলিং এজেন্ট, প্রার্থীর পরিবার সহ তৃণমূল কর্মী বা তৃনমূল সমর্থনকারী মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে সমানভাবে বিজেপি কর্মী ও বিজেপি সমর্থনকারী মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৭ জন কংগ্রেস কর্মীও রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন। রাজনৈতিক হিংসায় বাদ যায়নি নির্দল বা সিপিআইএম। সিপিআইএম কর্মীদের ৪ জন প্রাণ হারিয়েছে, হিংসায় প্রাণ গিয়েছে ১ জন নির্দল কর্মীরও। এ ছাড়া ভাঙড়ে হিংসায় বৃহস্পতিবার অবধি প্রাণ গিয়েছে ৩ জন আইএসএফ কর্মীরও। ফলে এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট যে অন্য যে কোনও একক দলের কর্মীদের নিরিখে তৃণমূল কর্মীরাই বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দোপাধ্যায় ১৯ জনের মৃত্যুর হিসেব দেখালেও রাজনৈতিক হিংসায় যে তৃণমূলেরই বেশি মৃত্যু হয়েছে সেটা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা অবধি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, পঞ্চায়েত নির্বাচনী হিংসায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৪ জন, মুর্শিদাবাদে ১৪ জন, কোচবিহারে ৬ জন, মালদহে ৬ জন, উত্তর দিনাজপুরে ৪ জন, নদিয়ায় ৩ জন, পুরুলিয়ায়, উত্তর ২৪ পরগনায়, পূর্ব বর্ধমানে ২ জন করে মৃত্যু হয়েছে, এছাড়া বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ জন করে মৃত্যু হয়েছে।
পাশাপাশি অলিখিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১ দফার ভোটে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৮ সালে ৩ দফার ভোটে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালে ৩ দফার ভোটে ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালে ১ দফা নির্বাচনে এখনও অবধি ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী আইএসএফ (ISF) প্রার্থীর স্বামীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বুধবার, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা বসিরহাট (Basirhat) মহকুমার বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের পিফা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের ১২৯ নম্বর বুথে আইএসএফ প্রার্থীর জয়ের কারণে তৃণমূল ক্ষোভে বা আক্রোশে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাত তিনটে নাগাদ একদল দুষ্কৃতী রাতের অন্ধকারে আইএসএফের জয়ী প্রার্থী আরজিনা বিবির বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্বামী জামাত আলী গাজীকে বেধড়ক মারধর করে। অভিযোগ, এই বুথে আইএসএফ প্রার্থী জিতেছে, যার কারণে পরিকল্পনা করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এখানে এসে মারধর করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন জামাত আলী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
যদিও এই পুরো ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা সুরেশ মণ্ডল বলেছেন, এটা আইএসএফ দলীয় কোন্দল। এর সঙ্গে তৃণমূল কোনও রকমভাবেই জড়িত নয়। এই পঞ্চায়েতের ২৬ টা আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৭টা আসন জিতেছে। কেনই বা আমরা গন্ডগোল করব! পঞ্চায়েত আমাদের দখলে। পরিকল্পনা করে বিরোধীরা আমাদের দলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। এই ধরনের ঘটনা নিজেরাই ঘটিয়ে আমাদেরকে দোষারোপ করছে।
ভাঙড়ে (Bhangar) পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Election) কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংঘর্ষে (Political Violence) মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয়েছে আইএসএফ কর্মী রেজাউল গাজির। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন নওশাদ।
মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ কাঁঠালিয়া থেকে বিজয় মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আইএসএফ কর্মীরা। ভোগালিয়া গ্রাম থেকে গিয়েছিলেন আএইএসএফ সমর্থক জাইরুল গাজি, তাঁর ভাই রেজাউল এবং আরও কয়েক জন। জাইরুল জানান, আচমকাই মিছিলের উপর গোলাগুলি চালাতে শুরু করে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা৷ আর্তনাদ শুনে তিনি দেখেন মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন চারমাসের কন্যাসন্তানের বাবা রেজাউল। বেশ কয়েকক্ষণ দেহ নিয়ে আমবাগানে লুকিয়ে ছিলেন তাঁরা। কোনও অ্যাম্বুলেন্স আসেনি৷ অবশেষে একটি বাইকে করে ভাইয়ের দেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি।
এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন নওশাদ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক হিংসায় মৃতদের পরিবারবর্গকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার। নবান্নে বুধবার এ কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণে পাশাপাশি হোমগার্ডের চাকরিও দেওয়া হবে।
মমতা দাবি করেন, ৭১ হাজার বুথে ভোট হয়েছে৷ গোলমাল হয়েছে তার মধ্যে অল্প কয়েকটি বুথে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মারা গিয়েছেন ১৯ জন। তার মধ্যে ১০-১১ জনই তৃণমূলের। নির্বাচনের দিন ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ৪ জন তৃণমূলের। মমতা জানিয়েছেন, আর্থিক সাহায্য এবং চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভেদাভেদ থাকবে না৷ রাজনৈতিক রং দেখা হবে না।
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা করেছেন বিরোধী নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী৷ তিনি দাবি করেন, মৃতের সংখ্যা কমিয়ে বলছেন মমতা। মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। ২ লক্ষের পরিবর্তে ৫০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তিনি।
পঞ্চায়েত ভোটের ফলপ্রকাশের পর সাংবাদিক বৈঠকে দুঃখপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, হিংসা চাননি, তবু বহু মানুষ পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। অশান্তির যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন বিরোধীদের কাঁধে। বললেন, 'আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের লক্ষ্য শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা।'
পঞ্চায়েত ভোট এবং গণনাকে কেন্দ্র করে কার্যত বোমা-বারুদের স্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা বাংলা। লাগাতার বোমাবাজি, গুলি চলছ। ভোটের দিনে প্রাণ গিয়েছে ২০ জনের। তবে মনোনয়ন ও ভোট পরবর্তীতে মোট মৃতের সংখ্যা ৫০-এরও বেশি।
ভাঙড় ও মুর্শিদাবাদের অশান্তির দায় বিরোধীদের কাঁধে চাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'কোনও মৃত্যুই কাম্য নয়। তবে বেশিরভাগ মৃত্যু হয়েছে আমাদের কর্মীর। ১৯ জনের প্রাণ গিয়েছে।' পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিজেপি ও সমস্ত বিরোধী দল গুলিকে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কটাক্ষ করেছেন এবং দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন শান্তি বজায় রাখার।
বিজেপির প্ররোচনায় পা না দিয়ে সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election) মিটতে না মিটতেই ফের ইডির (ED) দুয়ারে ডাক পড়ল আইনমন্ত্রীর (Law Minister)। চলতি মাসে তৃতীয় সপ্তাহে তাঁকে দিল্লির ইডি দফতরে তলব করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত নোটিস ইতিমধ্যেই মন্ত্রীর কাছে পৌঁছে গিয়েছে বলে খবর। উল্লেখ্য, আগেও একাধিকবার ইডি তলব করেছে তাঁকে। কিন্তু, বারবার হাজিরা এড়িয়েছেন। এবারও দিল্লি যাবেন কি না, সেই বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
গত মাসের শেষের দিকেও তাঁকে তলব করেছিল ইডি। সেইসময় আইনজীবী মারফত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ই-মেল করে মলয় ঘটক জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত ভোটে প্রচার ও অন্যান্য কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত। সেই কারণে দিল্লি যেতে পারছেন না। সেইসঙ্গে তিনি জানান,পঞ্চায়েত ভোটের কাজকর্ম মিটে গেলে তিনি দিল্লি যাবেন। ইডি আধিকারিকদের মুখোমুখি হবেন। পঞ্চায়েত ভোট তো প্রায় মিটেই গিয়েছে। সেক্ষেত্রে এবার কি কথা রাখবেন মন্ত্রী, দিলিতে ইডি দফতরে হাজিরা দেবেন? তা সময়ই বলবে।
উল্লেখ্য, কয়লাপাচার কাণ্ডে আগেও একাধিকবার মলয় ঘটককে তলব করেছে ইডি। তাঁর বাড়িতে গিয়েও তল্লাশি করেছে সিবিআই। কিন্তু, বারবার হাজিরা এড়িয়েছেন মলয় ঘটক। প্রায় ১২ বার ইডির হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি।