পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুনের মামলায় গ্রেফতার ভাঙড়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার উত্তর কাশীপুর থানার পুলিস আরাবুলকে গ্রেফতার করে। পুলিস সূত্রে খবর, খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আরাবুলকে গ্রেফতারের ঘটনায় ভাঙড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আজ, শুক্রবার তাঁকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হয়। ১২ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিস সূত্রে খবর, আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে আসেন উত্তর কাশীপুর থানায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভাঙড় ডিভিশনের ডিসি সৈকত ঘোষ। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে ঝামেলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয় আরাবুল ইসলামকে। ভাঙরের দাপুটে এই তৃণমূল নেতা ও তাঁর ছেলে আসেন উত্তর কাশীপুর থানায়। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির পাশাপাশি আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনাতেও আরাবুল ইসলামের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। অর্থাৎ বিজয়গঞ্জ বাজারে গণ্ডগোলের ঘটনায় খুন, অস্ত্র আইন, খুনের চেষ্টা, সরকারি কর্মচারীদের কাজে বাধা-সহ একাধিক ধারায় মামলা হয়। তার প্রেক্ষিতেই এই গ্রেফতারি বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, সাত মাসের পুরনো মামলায় ধৃত তাজা নেতা আরাবুল ইসলাম। যদিও একই মামলায় এখনও মুক্ত বিধায়ক শওকত মোল্লা। কান পাতলেই ভাঙরে শোনা যাচ্ছে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কথা।
বালি চুরি, চাকরি চুরির পর এবার শশ্মান চুরির অভিযোগ। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের নিজেদের টাকায় বানানো শ্মশানে লাগানো হচ্ছে পঞ্চায়েতের বোর্ড। এমনকি শুধু বোর্ড লাগিয়ে শান্ত হননি পঞ্চায়েত। ফিফটিন ফিন্যান্সের, বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে না পেরে গ্রামের লোকেদের নিজেদের টাকায় তৈরীর জিনিসের উপর ভাগ বসিয়েছে। ঘটনায় শোরগোল পড়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়া ব্লকের রামচন্দ্রপুর উদয় গ্ৰাম পঞ্চায়েতর হুগলি গ্ৰাম।
এমন বোর্ড দেখে হতবাক গ্রামবাসী ও বিরোধীদলীয়রা। তাঁদের দাবি বাদুড়িয়া রামচন্দ্রপুর উদয় গ্ৰাম পঞ্চায়েত ফলাও করে যে বোর্ড লাগিয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। গ্রামবাসিন্দারা একত্রিত হয়ে নিজেদের টাকা খরচ করে অন্তিমকালে মানুষকে বিদায় জানাতে চারটি লোহার বার তৈরি করা হয়েছিল। অথচ পঞ্চায়েতের বোর্ডে সেখানে লেখা আছে ১৫০০ অদক্ষ শ্রমিক অর্থাৎ শ্রমিকরা প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা শ্মশান ঘাট নির্মাণ করেছেন সাধারণ মানুষদের জন্য।
পঞ্চায়েতের তরফ থেকে যে বোর্ড লাগানো হয়েছে তাতে লেখা আছে শ্মশানের ভূমি ও বৃক্ষরোপণ করার জন্য প্রায় ১৫০০ কর্মচারী নিয়ে তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকারও বেশি ব্যয় করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের একটাই প্রশ্ন, আমরা নিজেদের টাকা খরচ করে এই চারটে থাম অন্ত্যষ্টিক্রিয়া করার জন্য তৈরি করেছিলাম। অথচ পঞ্চায়েত বোর্ডে যা যা লিখেছে যে লক্ষ টাকার, তারও বা কাজ কোথায়?
যদিও পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। নদীর পাশে ভূমিটাকে রক্ষণ করার জন্য আমরা কাজ করেছিলাম। বৃষ্টি এবং জোয়ারের জলে ভেসে গিয়েছে। কিন্তু এই হিসেব মানতে নারাজ বর্তমান বিরোধী দলগুলি। বিরোধীরা আরো প্রশ্ন তোলেন, পঞ্চায়েত যদি কাজ করেছি বলে দাবিও করে তাহলে কাজের লেশমাত্র টুকু কেন পাওয়া গেল না ওই স্থানে। শাসক ও বিরোধী পাল্টা আক্রমণে বাদুড়িয়া ব্লকের রামচন্দ্রপুর উদয় গ্ৰাম পঞ্চায়েত উত্তাপে ভরা।
জয়নগরের পর এবার আমডাঙা। তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের উপর বোমা বর্ষণ। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে নারায়ণা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর কিছু সঙ্গীও। আমডাঙা থানার পুলিস জানিয়েছে, আহত ওই পঞ্চায়েত প্রধানের নাম রূপচাঁদ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় কান্দেপপুর বাজারে দলীয় কাজে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁকে দুষ্কৃতীরা বোমা মারে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এ বিষয়ে আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমান সিএন-কে জানিয়েছেন, ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমডাঙা থানার পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
মাছ চুরি করা নিয়ে অশান্তি। আর তার জেরে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানার গোতানের কামারহাটি গ্রামে।
জানা গিয়েছে ঘটনার সূত্রপাত সোমবার দুপুরে। মন্ত্রীর বাড়ির পুকুর থেকে মাছ চুরি করার অভিযোগ ওঠে আদিবাসী এক যুবকের বিরুদ্ধে। এদিকে তাঁকে পালটা মারধর করার অভিযোগও ওঠে ওই পুকুরের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে পালটা মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। বাড়ির কাচ, বারান্দা ও দরজা ভেঙে দেয় একদল জনতা।
সোমবার ওই আদিবাসী যুবককে মারধর করার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ভর্তি করা হয় স্থানীয় আরামবাগ হাসপাতালে। এরপর সোমবার রাতে গ্রামে বিক্ষোভ দেখান উত্তেজিত জনতা। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিলেও মঙ্গলবার ফের তাঁরা জড়ো হয়ে ভাঙচুর চালান। পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
দিন-দুপুরে চলল গুলি। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মৃত্যু উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জীপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান মহম্মদ রাহি। বুধবার দুপুরে পঞ্চায়েত অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রধানকে লক্ষ করে ২-৩ রাউন্ড গুলি চলে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় কিষাণগঞ্জের এক বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে উত্তরবঙ্গে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে পথেই মৃত্যু হয় পঞ্চায়েত প্রধানের খবর প্রশাসন সূত্রে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুটি বাইকে কালো কাপড় পড়ে আসে চারজন দুষ্কৃতী। গুলির আওয়াজ পেয়ে ছুটে যেতেই উধাও দুষ্কৃতীদল। ঘটনার বেশ কিছু সময় পরেও রাস্তায় রক্তের দাগ স্পষ্ট। দিনে-দুপুরে গুলি চলল কীভাবে? এ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী? প্রশ্ন তুলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ক্ষুব্ধ মানুষজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিস বাহিনী।
খুনের পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র না কি পুরোটাই পরিকল্পিত ঘটনা ? তা জানতে ইতিমধ্য়ে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস প্রশাসন। তৃণমূল জেলা সভাপতির দাবি, দিন-দুপুরে গুলি চলার ঘটনায় জন প্রতিনিধিরাও সুরক্ষিত নয়? ফলে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত রয়েছেন সাধারণ মানুষ। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তৃণমূলের দ্বারাই সুরক্ষিত নয় তৃণমূল, সুর চড়িয়েছে বিজেপি।
কয়েক ঘণ্টার জন্য গায়েব। তারপরই পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাইছেন তৃণমূল (TMC) পঞ্চায়েত প্রধান। এক্কেবারে ফিল্মি প্লট পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের সরবেড়িয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতে। রবিবার রাত ৮টা থেকে নিখোঁজ ছিলেন সরবেড়িয়া ২ নম্বর পঞ্চায়েতের নব নির্বাচিত প্রধান (Panchayat Pradhan) কার্তিক চন্দ্র ভুঁইয়া। অভিযোগ, অপহরণ করা হয়েছিল প্রধানকে। এই নিয়ে যখন সবাই চিন্তিত ঠিক তখনই রাত ১২ টা নাগাদ নিজেই ফিরে আসেন অপহৃত প্রধান।
মুক্তি পেয়েই শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদে ইস্তফা দিতে চাইছেন প্রধান। ছাড়তে চান পঞ্চায়েত সদস্য পদও। জয়লাভের পর হাসি হাসি মুখে ৫ বছরের উন্নয়নের শপথ নিয়েছিলেন, কয়েক মাসের মধ্যে সেই প্রধানেরই কী ভীমরতি হল? অপহরণকারীরাই কি তবে প্রধানের এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে?
এই নাটকের রহস্য ভেদ করতে হলে পিছিয়ে যেতে হয় কয়েক মাস। ১২ আসনের সবকটিতে জয়লাভ করেও প্রধান পদ নিয়ে ভাঙন ধরে সরবেড়িয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলে। জানা গিয়েছে, দল কমল জানা নামে এক সদস্যকে প্রধানের পদে বসাতে চাইলেও সিংহভাগ জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য কার্তিক চন্দ্র ভুঁইয়ার পাল্লা ভারী করে। দলের হুইপ অমান্য করেই ভোটাভুটিতে অংশ নেন পঞ্চায়েত সদস্যরা। তাতেই প্রধানের মুকুট ওঠে কার্তিক চন্দ্র ভুঁইয়ার মাথায়। কিন্তু অভিযোগ, দলের একাংশের দাপটে পদ পেয়েও পঞ্চায়েতে প্রবেশ করতে পারেননি প্রধান। তাহলে কি দলের একাংশের হাতেই অপহৃত হয়েছিলেন তিনি? অভিযোগ ঘুরিয়ে প্রধানকেই কাঠগড়ায় তুলছে তৃণমূল।
এক অপহরণে ভোল বদল। রাস্তার কাঁটা সরাতেই কি প্রধানের কিডন্যাপিং? তাতে জড়িত দলেরই একাংশ? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মারপিঠ, খুন, মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়া, ভোট লুঠ সহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে রাজ্য সরকার অর্থাৎ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে অল্প বিস্তর হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনী সংক্রান্ত মামলায় ফের রাজ্য সরকারের উপর অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মামলায় রাজ্যের ক্ষতিপূরণে খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, রাজ্যের পেশ করা তথ্যের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে আরও তথ্য জানতে চায় আদালত।
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের পেশ করা তথ্যের পরেও আদালত জানতে চায়, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মৃত ব্যক্তির সংখ্যা কত! এছাড়া হোম গার্ডের চাকরি দেওয়া সকল ব্যক্তির নাম, যাদেরকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল তাদের নাম, নির্বাচনী হিংসায় আহতদের সংখ্যা কত? তাদের কত টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে?
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনী সংক্রান্ত মামলায় বিরোধীদের তরফে আদালত প্রমাণ পেয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসায় ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র ৭ জনকে ক্ষতিপূরণ ও চাকরি দেওয়া হয়েছে। ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়ছে কয়েক জনকে। বাকিদের কেন কিছু পায় নি। কেন বাকিদের কিছু দেওয়া হয়নি? আহত কতজন? কি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে?জানতে চায় আদালত।২৬ নির্বাচন কমিশন কে জানাতে হবে সব তথ্য।
গাছে বেঁধে এক পঞ্চায়েত সদস্যের (Panchayat member) ভাইপোকে পিটিয়ে খুনের (Death) অভিযোগের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) জেলার গোয়ালপোখর থানার ইলোয়াবাড়ি এলাকায়। মৃত ওই যুবকের নাম পল্টু ওরাও (২৫)। বাড়ি গোয়ালপোখর থানার ধরমপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর এলাকায়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক পাঞ্জিপাড়ার শান্তি নগর এলাকায় একটি মিলে কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা হন ওই যুবক। রাতে গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়া ফাঁড়ির পুলিস ইলোয়াবাড়ি এলাকা থেকে ওই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। গভীর রাতে চিকিৎসা চলাকালীন ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার সকালে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন যুবককে কেউ বা কারা বেধড়ক মারধর করেছে। ইসলামপুর মহকুমা ভর্তি রয়েছে। সকালে পরিবারের লোকজন ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে গেলে তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, পল্টুকে কী কারণে মারধর করা হয়েছে, তা তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না।
পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Elections) নিয়ে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলতেই প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিজেপি আমলে একাধিক দুর্নীতি নিয়ে তোপ দাগেন তিনি। পাশাপাশি বিরোধী জোট নিয়ে প্রমাণ ছাড়াই একাধিক ভুল মন্তব্য করছেন বলেও অভিযোগ তাঁর।
বিজেপির ক্ষেত্রীয় পঞ্চায়েতিরাজ পরিষদের পূর্বাঞ্চলীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে এরাজ্যের সদ্যোসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। শসক দলের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন। কিন্তু তার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে অডিও বার্তায় পাল্টা জবাব দেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।
তিনি অভিযোগ করেন, টিম ইন্ডিয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যা ইচ্ছে বলে যাচ্ছেন। মমতার আরও অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী চাইছেন দেশের সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে থাকুক, গরিব মানুষ মারা যাক। একই সঙ্গে মোদী জমানার দুর্নীতির কথাও উল্লেখ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পি এম কেয়ার ফান্ড, রাফাল চুক্তি সহ একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়ে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections) হিংসার (violence) ঘটনা নিয়ে ফের মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM)। কোলাঘাটে বিজেপির পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণ দেন তিনি। সেখানেই বাংলার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবারের ওই ভার্চুয়াল সভায় প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ভোটে জয়ের পর প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোট লুঠ করা হয়েছে। পাশাপাশি, বিরোধীরা যাতে প্রার্থী না দিতে পারে তার জন্য তড়িঘড়ি ভোটের দিন ঘোষণা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে রক্তের খেলা চলেছে তা গোটা দেশ দেখেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভোট গণণা প্রসঙ্গ টেনে এনেও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী। তার অভিযোগ, গণনা কেন্দ্রে কোনও বিজেপি প্রতিনিধিকে বসতে দেওয়া হয়নি। শাসক দলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করার পাশাপাশি দলের কর্মীদের পরিশ্রমের জন্য কুর্নিশ জানান তিনি। এবিষয়ে তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের পুরনো বৈভব ফেরানোর চেষ্টা করছে দলের কর্মী ও সমর্থকরা।
আদিবাসী সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। কটাক্ষের সুরে তাঁর বক্তব্য, 'ওখানে আমাদের আদিবাসী ভাইবোনকে কী ভাবে অত্যাচারিত হতে হয় তা আমাদের জানা আছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেও অনেক বিজেপি প্রতিনিধিরা জয়ী হয়েছেন। আমি সেই সব প্রতিনিধিদের অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।'
পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা হুগলির জাঙ্গিপাড়ার ফুরফুরায়। বৃহস্পতিবার বেলা বারোটার সময় বোর্ড গঠনের কথা ছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বোর্ড তৈরি না হওয়ায় ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। তৃণমূল অভিযোগ করে, পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আইএসএফ এবং সিপিএম। শুরু হয় দু পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি।
এলাকায় দ্রুত দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ উঠেছে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে। ফুরফুরা পঞ্চায়েতের ২৯টি আসনের মধ্যে ২৪টি পেয়েছে তৃণমূল। আইএসএফ ও সিপিএম জোটের দখলে ৫ টি আসন। অভিযোগ, বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে বুধবার রাত থেকেই অশান্তি চলছে।
অশান্তির মাঝে বাতিল হয়ে গেল বোর্ড গঠন। আজ বোর্ড গঠন হবে না বলে জানালেন বিডিও। আইএসএফের অভিযোগ, জোর করে ফুরফুরায় পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার বিরুদ্ধেই তারা আদালতে গিয়েছিল।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার দিনেও রক্ত ঝড়েছিল। ভোট পরবর্তী বোর্ড গঠনের সময়েও রক্ত ঝড়ল মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে। বুধবার রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু হল জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যর ছেলের। সাদল গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের সময় এই রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় নিহতের নাম হুমায়ুন কবীর। মাত্র এক মাসে আগেই বিয়ে হয়েছিল হুমায়ুনের। থাকতেন সৌদি আরবে। সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছিলেন বিয়ে করতে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হুমায়ুনের মা সানোয়ারা বিবি প্রথমে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এদিন সকালে বোর্ড গঠনের পর তাঁর বাড়িতে হামলা করে দুষ্কৃতীরা। তখন খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন হুমায়ুন। পরিবারের দাবি, তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়। মুর্শিদাবাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, পঞ্চায়েতের বোর্ড করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে ভাঙড়েও। তৃণমূল-আইএসএফ মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচ জন আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ব্যাপাক বোমাবাজির অভিযোগও উঠেছে।
পঞ্চায়েত ভোট মিটে গেলেও আরও ১০ দিন রাজ্যে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)। সোমবার সকালে এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। পাশাপাশি তাঁর নির্দেশ, আগামী ১০ দিন কোথাও কোনও অশান্তির খবর পেলেই সেখানে বাহিনীকে পাঠাতে হবে।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পরেও ১০ দিন বাহিনী থাকার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। এই আশঙ্কা করে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করে প্রিয়ঙ্কা টিব্রেওয়াল।
রাজ্যের পরিস্থিতি বিচার করে আরও একমাস রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা যায় কিনা তা কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজ্যে আরও ১০ দিন রাজ্যে বাহিনী থাকবে।
পঞ্চায়েত ভোটের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে কলকাতায় এসেছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। শনিবার শহরের একটি অভিজাত হোটেলে রাজ্যের সব জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। প্রাথমিক পর্যায়ের একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়।
সূত্রের খবর এরপর ১৯ অগাস্ট রাজ্যে আসবে নির্বাচন কমিশনের ৩ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। যার নেতৃত্বে থাকবেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার নীতীশ ব্যাস। তবে শুধু এরাজ্য নয়, সব রাজ্যেই প্রতিনিধি দল যাবে বলে জানা গিয়েছে।
নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্ব খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তারপর বিভিন্ন জেলায় জেলায় সমীক্ষা এবং ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হবে।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালের ১৬ মে। তার আগেই নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। বিভিন্ন সূত্রের খবর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।