রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে (Ration Scam) জেরবার রাজ্য। চালকল মালিক থেকে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। ইতিমধ্যে জেল হেফাজতে রয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর এবারে রেশনের সামগ্রী বিলিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় (Bagda)। এরকম ঘটনা এর আগেও একাধিকবার দেখা গিয়েছে। কিন্তু এতদিন ভ্রূক্ষেপ ছিল না প্রশাসন ও পুলিসের। কিন্তু প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী এবারে জেলে যেতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন থেকে রাজ্য পুলিস। জানা গিয়েছে, রেশনের সামগ্রী বিলিতে প্রায় ৫ বছর ধরে অনিয়ম করার অভিযোগ উঠেছে বাগদার হরিনাথপুর এলাকায়। দিনের পর দিন মিলছে কম রেশন সামগ্রী। ১৯ কেজির স্লিপ দিয়ে ১৫ কেজি পণ্য দেওয়ার অভিযোগ। ফলে এই অভিযোগে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার রেশন ডিলারকে ঘিরে বিক্ষোভে সামিল বাসিন্দারা। চাপে পড়ে অবশেষে নিজের দোষের কথা স্বীকার করলেন খোদ রেশন ডিলারের ছেলে শান্তনু সাধু।
রেশন দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রেশন বণ্টনে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রাহকরা। কোথাও কম সামগ্রী, কোথাও পোকা ধরেছে ন্যায্য সামগ্রীতে, আবার কোথাও রেশনে দেওয়ার খাদ্যের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে পশু খাদ্য। এবারে রেশনের সামগ্রী পরিমাণে কম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বাগদার হরিনাথপুর এলাকার গ্রামবাসীদের। অভিযোগ, প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন গ্রাহকের থেকে ৫ বছর ধরে চাল, আটা, চুরি করেছে হরিনাথপুরের রেশন ডিলার। চাপে পড়ে অভিযোগ স্বীকার রেশন কর্মীর। তাঁর দাবি, ডিলারের কথা মতোই কাজ হয়েছে। এর পর মঙ্গলবার রেশন ডিলার নিবেদিতা সাধুর ছেলে শান্তনু সাধুর কাছে প্রশ্ন করতেই তিনি জানান, 'ভুল হয়েছে'।
ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন বাগদা ফুড ইন্সপেক্টর সঞ্জীব চক্রবর্তী ও বাগদা থানার পুলিস। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করেন ফুড ইন্সপেক্টর। পাশাপাশি রেশন ডিলারের ছেলে শান্তনু সাধু ও কর্মচারীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিস।
আবারও সরকারি হাসপাতালে সক্রিয় দালালচক্র। এসএসকেএম -এর পর এবার সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাতপাতালেও টাকার বিনিময়ে মিলছে পরিষেবা। দালালরাজের ডেরা এবার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। হাসপাতালের অন্দরে দালালচক্রের বিরুদ্ধে সরব কামাহরহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র থেকে শুরু করে একাধিক রোগী ও তাঁর পরিবার। শনিবার সাগর দত্ত হাসপাতালে দালালরাজ বন্ধ করতে প্রশাসনের কাছে করজোরে আবেদন করেন কামারহাটির বিধায়ক।
হাসপাতালে একাধিক সাইন বোর্ডে সরকারের তরফে বড় বড় করে লেখা রয়েছে বিনামূল্যে মিলবে যাবতীয় পরিষেবা। কিন্তু বাস্তবে সেই নিয়ম কি কার্যকর হয়েছে হাসপাতালে? জবাবটা মিলল একাধিক রোগী ও রোগীর পরিবারের কথায়। বেড পাওয়া থেকে শুরু করে রক্তের ব্যবস্থা করতে হাসপাতালে দিতে হচ্ছে কখনও ৫০ আবার কখনও ১০০ টাকা। কিন্তু সেই টাকার কোনও উল্লেখ নেই সরকারি রসিদে। মূলত টাকা দিলেই দ্রুত মিলবে পরিষেবা।রোগীর পরিবারের তরফে উঠে আসছে এমনই একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।
সম্প্রতি মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করতে এসেও বিপত্তির সম্মুখীন এক দম্পতি। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছিল, 'কিছু' দিলেই হবে কিছু ব্যবস্থা। হাসপাতাল থেকে রক্ত নিতে হলে 'কিছু' দিতে হবে। অভিযোগ রোগীর পরিবারের।
টাকার বিনিময়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়ার নামে হাসপাতালে ঘুরছে একাধিক দালাল। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, কারা রয়েছে এই দালালচক্রের নেপথ্যে? রক্তের প্রয়োজনে কিংবা বেড পেতে হাসপাতালে দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে রোগীকে। সেই পরিষেবা টাকা দিলেই কয়েক মুহুর্তের মধ্যে কীভাবে পাইয়ে দিতে পারে একজন সামান্য দালাল? এসএসকেএম হাসাপাতালের পর সাগার দত্ত মেডিক্যাল কলেজেও প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে সক্রিয় দালালরাজ? আবারও প্রশ্নের মুখে সরকারি হাসাপাতালের পরিষেবা।
জ্বরে আক্রান্ত যুবতীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসক (Doctor) তথা পঞ্চায়েত সমিতির (Panchayat Samiti) প্রাক্তন সভাপতির (Former President) বিরুদ্ধে। বনগাঁর (Bangaon) গাইঘাটা থানা এলাকার ঘটনা। শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ এই খবরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘ সময় ওই চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বছর ২৪-এর ওই যুবতী থানার দারস্থ হন এবং অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার নাম সুব্রত সরকার৷
যুবতী ও তাঁর পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই ওই যুবতী ও পরিবারের লোকেরা সুব্রত সরকারের কাছে চিকিৎসা করাতেন। ওই যুবতী কলেজ পাস করে বর্তমানে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি টিউশনি করেন৷ একদিন সন্ধ্যায় টিউশনি করে ফেরার পথে তাঁর জ্বর বেশি থাকায় ওই চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন৷ সে সময় চেম্বারে কেউ ছিলনা৷ অভিযোগ, ওষুধ নিয়ে বেরোনোর সময় হঠাৎই অভিযুক্ত চিকিৎসক তাঁকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেন। জোর করে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এরপরে ওই যুবতী কোনওভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বাড়ির লোকের কাছে সমস্ত ঘটনার কথা খুলে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ খবর পেয়ে সুব্রত সরকারের চেম্বারের সামনে ভিড় করেন গ্রামের বাসিন্দারা৷ পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দা ও যুবতীর পরিবারের লোকেরা স্থানীয় পুলিস ফাঁড়িতে গিয়ে ওই অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন৷
যুবতীর পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি 'অভিযুক্ত সুব্রত সরকার এর আগেও এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটিয়েছেন৷ অর্থের জোরে, ক্ষমতা জোরে ঘটনাগুলো ধামাচাপা দিয়েছেন৷ এবার তাঁর শাস্তি চাই।'
আজ অর্থাৎ শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023)। সকাল ৭ টা থেকেই শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া। মনোনয়নের দিন থেকেই রাজ্যজুড়ে একাধিক কর্মী নিহত ও আহত হয়েছেন। আর এই ভোটের দিনও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য। ভোট প্রক্রিয়া শুরু হতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠে আসছে একাধিক অভিযোগ। এদিন উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Paragana) বিভিন্ন এলাকা ভোটকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শাসকদলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মোহনপুরে প্রকাশ্যে গুলি করার অভিযোগ উঠে এসেছে। এছাড়াও নির্দল প্রার্থীর সমর্থককে খুন করার অভিযোগ উঠছে বারাসতের কদম্বগাছিতে। বোমাবাজি করে বুথ দখলের অভিযোগও উঠে এসেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে।
শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার মোহনপুর পঞ্চায়েতের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী অরিজিৎ দাসকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া ও তাঁর বুথ ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠে এসেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পূর্বাশা এলাকাও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আবার বোমাবাজি করে বুথ দখলের অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে আমডাঙার ১ নম্বর রাহানা এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে আইএসএফ। আইএসএফ-এর অভিযোগ, রাহানা ১ নম্বর এলাকায় তিনটি বুথে মাত্র ২ জন রাজ্য পুলিস দিয়ে ভোট করানো হচ্ছে। নেই কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফলে তাঁরা কেন্দ্রবাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে। আর এই অবরোধ তুলতে গেলে পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ করে আইএসএফ।
অন্যদিকে, কদম্বগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪২ নম্বর বুথের নির্দল প্রার্থীর সমর্থককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে। কদম্বগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৯ ও ৬০ নম্বর বুথে ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীদের বিরুদ্ধে। আর এর প্রতিবাদে টাকি রোডে ভোটার ও আইএসএফ অবরোধে বসেছে। এদিকে আবার হাবড়া কুমড়ো পঞ্চায়েত এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করতে রাতভর বাইক বাহিনীর তাণ্ডব চলেছে বলে অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে। মূলত কুমড়া বেলের মাঠ, আনখোলা, বায়ারঘাটা, পাঁচঘরিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় বাইক বাহিনীর তাণ্ডব চলছে।