গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তীর (Nachiketa Chakraborty) বিরুদ্ধে উঠে এলো অভিযোগ। কথা দিয়েও নাকি গান গাইতে গেলেন না অনুষ্ঠানে, এমনই অভিযোগ গায়কের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ওপার বাংলার এক গায়কের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ উঠেছিল। প্রতারণার দায়ে তাঁকে গ্রেফতার করেছিলেন বাংলাদেশের পুলিস। অবশেষে মোটা টাকা মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছিলেন গায়ক। প্রশ্ন উঠছে, নচিকেতার বিরুদ্ধেও কী অভিযোগ এতটাই গুরুতর?
জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় বরাহনগরের রবীন্দ্রভবনে একটি অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার কথা ছিল। গায়ক আসবেন, এমন প্রচার হয়ে গিয়েছে এলাকায়। গায়ক নচিকেতাকে একবার চোখের সামনে দেখবেন, ঢিল ছোড়া দূরত্বে বসে তাঁর গান শুনবেন এই আশায় ছিলেন এলাকাবাসী। তবে দেখা যায়, নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও গায়ক গান গাইতে এলেন না। তবে এই বিষয়ে আসল খবর জানালেন গায়ক নিজেই।
নচিকেতা চক্রবর্তী নিজের সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, 'সাধারণত কোনও অনুষ্ঠানের পারিশ্রমিক অনুষ্ঠানের নির্ধারিত দিনের অন্তত ৪৮ ঘন্টা আগে মিটিয়ে দেওয়ার কথা থাকে। আজকের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেই কাজ করা হয়নি। এমনকি নচিকেতা স্বয়ং আজ সন্ধ্যা ৬টা অবধি অপেক্ষা করা সত্ত্বেও আয়োজকদের তরফ থেকে তাঁর সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ করা হয়নি।'
আয়োজকদের তরফে নাকি নচিকেতাকে কেবল ১০ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়। গায়কের হিসাবরক্ষক বারংবার আয়োজকের কাছে আরও ৬০ হাজার টাকা অগ্রিম চান (যেমনটা গায়কের নিয়ম)। হিসাবরক্ষক আয়োজকদের এও বলেন, যে প্রাপ্য টাকা অগ্রিম দিয়ে অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা বাকি টাকা দিতে পারেন। কিন্তু আয়োজকদের তরফে চূড়ান্ত অবহেলা দেখা যায়। রবিবার সন্ধ্যার দিকে আয়োজকরা বলেন, তাঁরা নাকি টাকা জোগাড় করে উঠতেই পারেননি। এরপর নচিকেতার টিমের তরফে আয়োজকদের বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সৌমেন সুর: নয়ের দশক সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্রান্তিকাল। খোলা বাজারের মুক্ত অর্থনীতি, ভোগবাদী বাজার সংস্কৃতির আগ্রাসন, সোভিয়েত রাশিয়ার পতন, রাজনৈতিক আন্দোলনের বিষয়হীনতা এবং বাঙালির গতানুগতিক সংস্কৃতি চর্চায়, বাঙালি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। এলো সংগীতে একটু পরিবর্তন। 'মহীনের ঘোড়াগুলি, মেঘনাদ, অনুশ্রী-বিপুল, প্রতুল মুখোপাধ্যায়, এরা অন্যরকম গানের কান্ডারী ছিল। বিশেষ করে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গানে ছিল জাগরণের বানী। বাদল সরকারের থার্ড থিয়েটারের মতো খালি গলায় অন্য ধরনের উদ্দীপ্ত মনোজ্ঞ গানে মন প্রাণ ভরে উঠেছিল কলকাতার সংগীত প্রেমীদের। মূলত কলকাতার বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষিত তরুণদের গান শুনিয়েছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়।
এমন সময় সুমন চট্টোপাধ্যায় (কবীর সুমন)-এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন 'নিউ সং' আন্দোলনের প্রেক্ষিত অনুভবে রেখে, পিট সিগার, বব ডিলান, জনি ক্যাশ, লেনার্ড কোহেনদের উত্তরাধিকার বহন করে বাংলা গানের সুমনের পদক্ষেপ। ১৯৯২ সালে 'তোমাকে চাই' অ্যালবামে বানী, সুর ও যন্ত্রানুষঙ্গে শ্রোতারা হলেন সব ক্ষেত্রেই তিনি একক ভূমিকা নিলেন। এই অভিনবত্ব দেখে বাংলার মানুষ তাঁকে দুহাত প্রসারিত করে বুকে টেনে নিলেন। এরপর 'একে একে বসে আঁকো', 'ইচ্ছে হলো', 'ঘুমাও বাউন্ডুলে', 'গানওয়ালা','চাইছি তোমার বন্ধুত্বা', 'জাতিস্মর' প্রভৃতি অ্যালবামের সুমনের একটা নিজস্ব গানের ভুবন তৈরি হয়ে যায়। গানের কথায়, দেশি-বিদেশি সুরের বৈচিত্র্যে এবং বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহারে সুমন পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের কাছে গভীর প্রভাব ফেললেন।
এই সময়ে আর একজন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীর প্রকাশ ঘটে। তিনি হলেন নচিকেতা চক্রবর্তী। তার গান-বাজনা সূত্রপাত আটের দশকে। নয়ের দশকে তার বেশ কিছু অ্যালবাম অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়। সাধারণ মানুষের আশা নিরাশা, ক্ষোভ প্রতিবাদ, প্রেম, স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা তাঁর গানে বানীরূপ পায়।