তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ছক জঙ্গিদের। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে কলকাতা পুলিসের অ্যাডিশনাল কমিশনার মুরলীধর শর্মা জানান, অভিষেকের বাড়িতে হামলার ছক কষছে। এমনকি জঙ্গিরা নাকি এরই মাঝে অভিষেকের বাড়িতে রেইকি করেও গিয়েছে। অর্থাৎ বাড়ির চারপাশে নিঃশব্দে তারা ঘুরে বেড়িয়েছে। আর এই পরিকল্পনায় নাম উঠে আসছে রাজারাম রেগির। মুম্বই হামলার ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে একজন এই রাজারাম রেগি। সোমবার তাঁকে মুম্বই থেকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিস।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের আপ্তসহায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রাজারাম রেগি। তারপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে থেকে ঘুরে যায় সে। ২৬/১১-র মুম্বই হামলার তদন্তে এই জঙ্গির নাম প্রকাশ্যে এসেছিল।
কলকাতা পুলিসের অতিরিক্ত সুপার মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, আজ, সোমবার মুম্বইয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজারাম রেগি কেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ভিডিওগ্রাফি করেছিলেন, কেন অভিষেকের এবং তাঁর আপ্তসহায়কের ফোন নম্বর নিয়েছিলেন সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামক স্ট্রিটের অফিসেও তিনি গিয়েছিলেন। হঠাৎ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন টার্গেট করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কলকাতা পুলিসের তরফে আরও জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনেও রাজারাম রেইকি করেছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে এই ঘটনার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।
লাহোরে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন গীতিকার জাভেদ আখতার। একটা সাহিত্য উৎসবে যোগ দিতে এই মুহূর্তে পড়শি দেশের বন্দর শহরে রয়েছেন জাভেদ। সেখানে কথপোকথনের মাঝেই ১৫ বছরের পুরনো মুম্বই হামলার প্রসঙ্গ তুললেন এই প্রবীণ চিত্রনাট্যকার। তিনি বলেন, 'আমরা পাকিস্তানি শিল্পী নুসরত ও অন্যদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি ভারতে, কিন্তু আপনারা কখনও লতা মঙ্গেশকরের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেননি।' জাভেদের এই বক্তব্যকে সমর্থনে এগিয়ে আসেন উপস্থিত অনেক দর্শক।
২৬/১১ প্রসঙ্গে জাভেদ বলেন, 'মুম্বই হামলার ব্যাপারে সকলেই জানেন। হামলাকারীরা নরওয়ে বা ইজিপ্ট থেকে আসেনি। হামলার পরিকল্পনাকারীরা এখনও আপনাদের দেশে অবাধে ঘুরে বেড়ায়। ভারতীয়রা যদি এ নিয়ে মনে ক্ষোভ পুষে রাখেন, আপনাদের সেটা অনুভব করা উচিত।' এভাবেই পাকিস্তানে দাঁড়িয়ে সে দেশের সমালোচনা করেন জাভেদ আখতার।
২৬/১১ হামলার স্মৃতি এখনও ভোলেননি দেশবাসী। একদশক পর ফের ফিরল মুম্বই হামলার আতঙ্ক (2008 Mumbai attacks)। আজমল কাসভদের কায়দায় ফের সাগর পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে পাকিস্তানি অস্ত্র বোঝাই বোট। উদ্ধার করা হয় বিপুল অস্ত্র সমেত বোট। ধৃত ১০ জন সন্দেহভাজন। গুজরাট এটিএস ও ইন্ডিয়ান কোস্ট গার্ড-এর যৌথ অভিযানে এটি সফল হয়। ধৃত সন্দেহভাজন ১০ জনই পাকিস্তানি বলে অনুমান। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল অর্থের মাদক। কোথায় হামলার ছক কষেছিল, হামলার চেষ্টার নেপথ্যে কারা, তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বই হামলার সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি। করাচি থেকে জলপথে মুম্বইয়ে পা রেখেছিল আজমল কাসভ সহ ১০ লস্কর জঙ্গি। প্রথমে ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস রেল স্টেশনে হামলা চালায় তারা। এরপর এক এক করে কামা হাসপাতাল, লিওপল্ড ক্যাফে, তাজ হোটেল, ওবেরয় ট্রাইডেন্ট, নরিম্যান হাউসে হামলা চলে। সন্ত্রাসী হামলায় ১৬৪ জন প্রাণ হারান। কমপক্ষে ৩০৮ জন আহত হন। ঘটনার পরে স্বীকার করেছে যে, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিগেন্স (আইএসআই)-এর মদতে এই হামলা চলে। সারা বিশ্বে এই ঘটনা তীব্রভাবে নিন্দিত হয়।
উল্লেখ্য, ২৬/১১ হামলার পর সরকার ও প্রশাসন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোরতা বাড়ায়। প্রতিটি স্তরে ক্রমবর্ধমান কঠোরতার কারণে, গত ১৪ বছরে এমন হামলার ঘটনা ঘটেনি। পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীরা হামলা করলে তাদের জবাব দেওয়া হচ্ছে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এয়ার স্ট্রাইক (Air Strike) দিয়ে। কিন্তু ফের যে বড়সড় হামলার ছক কষছে তা স্পষ্ট।