সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট নিয়ে জট এখনও অব্যাহত। এখনও এসএসকেএম-এ ভর্তি রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ওরফে কালীঘাটের কাকু। ফলে ইডির পক্ষে এখনও কাকুর ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা যে অতি প্রয়োজন তা আদালতে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা। অন্যদিকে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের মানসিক স্বাস্থ্য কেমন রয়েছে, তা জানতে চায় এসএসকেএম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে মেন্টাল টাফনেস পরীক্ষা করানোর কথা জানিয়ে জেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিল। এবার জেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, আদৌ কি তারা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম এর আবেদনে সাড়া দেবে, নাকি আদালতকে জানিয়ে তবেই অনুমতি দেবে তারা, সেটাই দেখার।
প্রসঙ্গত, কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ কাজ কবে সম্পন্ন করা যাবে তা নিয়ে ধন্ধে রয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। এসএসকেএম থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছে না ইডি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার ইডির তরফে এসএসকেএম থেকে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের মেডিকেল রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে।
ইরা খান (Ira Khan) বলিউড অভিনেতা আমির খান (Amir Khan) এবং তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী রীনা দত্তর (Reena Dutta) কন্যা। অভিনয় জগতে আসেননি ইরা। তাঁর জীবনের লক্ষ্য অন্য কিছু। ইরা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চান। কারণ অবসাদ তিনি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। একসময় ইরা অবসাদের শিকার হয়েছিলেন। সেকথা এর আগে অনেকবার প্রকাশ্যে বলেছেন তিনি। কিন্তু এই মানসিক জটিলতার মূল কারণ যে তাঁর পরিবার, সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে সেকথা জানালেন তারকা কন্যা।
ইরা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'অবসাদ কেবল একটি কারণে হয় না। তুমি যে আবহে বড় হয়ে উঠবে তাই-ই তোমার ব্যক্তিত্ব তৈরী করবে। আমি যেরকম পরিবারে বড় হয়েছি সেরকম পরিবেশ মানসিক স্থিতিকে প্রভাবিত করে না, একথা বললে ভুল হবে। আমার জীবনের প্রতিটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাই আমাকে প্রভাবিত করেছে। আমি যে পরিবারের অংশ তা ১০০ শতাংশ আমার মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলেছে।কিছু ক্ষেত্রে এই পরিবেশ আমাকে সাহায্য করেছে, কিছু ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য করেনি।'
তিনি আরও যোগ করেন, 'আমি যখন চিকিৎসা করতাম, তখন ভয় পেতাম আমাকে কেউ বুঝবে না। আমার কাছে অর্থের যোগান ছিল, এবং সমর্থন ছিল। তখনই অবসাদ এবং ভয় আমাকে পঙ্গু করে দিয়েছিল। আমি ওই অনুভূতিকে ভয় পেতাম এবং ভাবতাম এমন অনেকে রয়েছেন যারা এমন অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তো আমি ২০২১ সালে আগস্তু শুরু করি।'
প্রসূন গুপ্ত: আজকের কর্পোরেট দুনিয়াতে কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ তা নিয়ে কে আর এতো ভাবে? পৃথিবী নিজের গতিতে এগিয়ে চলেছে। অর্থনৈতিক বাজার এতটাই ভয়ঙ্কর যে সাধারণ মানুষ মন ভালো রাখবে তার উপায় কী। সংসার চালাতেই মানসিক চিন্তা চেপে ধরে। অবশ্য কেউ বলতেই পারে, সময়ের সঙ্গে অর্থনীতিও এগিয়ে চলে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আজকের মানুষ সঞ্চয় করতে পারছে না। কাজেই মানুষের মানসিক চাপ বেড়েই চলেছে। এই চাপের সঙ্গে শরীরের নানা সংকট। রক্তচাপ থেকে রক্তে শর্করা, মানুষের আয়ু বৃদ্ধি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু যতদিন বেঁচে থাকা ততদিন সময়ের সঙ্গে লড়াই করে যেতেই হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আজ বিশ্বে মানসিক রোগ বাড়ছে। আগে এই সমস্যা ছিল আমেরিকা বা ইউরোপের দেশগুলিতে। যদিও তা সর্বদা অর্থনৈতিক নয়, কিন্তু তৃতীয় বিশ্বে এই মানসিক রোগ হচ্ছে। অনেকটাই বর্তমান অবস্থায় বেঁচে থাকার তাগিদে। কিন্তু উপায় কী এর থেকে সরে আসার?
কেউ বলবে পরিবারকে সময় দাও, কেউ বলে চলো বেড়িয়ে আসি কিংবা নেশায় বুঁদ হয়ে থাকো বা সিনেমা-ওটিটি দেখে চালাও। মানসিক শান্তি ফেরাতে এর কোনওটাই দীর্ঘস্থায়ী নয়। আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৬১তম জন্মদিবস। তিনি মাত্র ৩৯ বছর বেঁচে ছিলেন। তাঁর অবদান এই সমাজের জন্য লিখে শেষ করা যাবে না। বিবেকানন্দ কোনওদিন নিজের জন্য ভাবেননি। উৎসর্গ করেছিলেন নিজেকে সমাজের জন্য। তিনি কাউকে ধর্ম নিয়ে উপদেশ দেননি তবে ব্যতিক্রম একটিই, ধ্যান।
ধ্যান করা মানে শুধুই ঈশ্বর চিন্তা নয়। স্বামীজী আত্মোপলব্ধি করায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বলতেন সকলেই কোনও না কোনও সময়ে ধ্যান করেন, যখন একা থাকে। হয়তো ঘুমোতে যাওয়ার সময়। ওই যা আমরা একান্তে ভাবি এক মনে তাই ধ্যান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন খারাপ হলে একা থাকতে এবং কোনও একটি বিশেষ বিষয়ে, যদি তা কোনও সমস্যা হয়ে থাকে তাও, এক মনে ভাবতে এবং ওই ভাবনা থেকেই বেরিয়ে আসবে সমস্যার সমাধান।