এবার রাজ্য সরকারের স্ক্যানারে বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ভিন রাজ্যের চিকিৎসকরা।বাংলায় চিকিৎসা করতে গেলে এই রাজ্যে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক বলে জানাল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। এই নিয়ে নতুন নিয়ম আনতে চলছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।রাজ্যের সাতটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের তালিকা চাইল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলোকে। ইতিমধ্যে ওই হাসপাতাল গুলির চিকিৎসকদের আধার ও প্যান কার্ডের তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। দিতে হবে কোন রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিল রেজিস্ট্রেশনের নম্বর রয়েছে ওই চিকিৎসকের।
এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে মেডিক্যাল কাউন্সিল জানিয়েছে, রাজ্যে চিকিৎসায় গাফিলতির তদন্তের ক্ষেত্রে দেখা যায়, অভিযোগ ওঠা চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন ভিন রাজ্যের। সেক্ষেত্রে নিয়মে ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। আর এই সমস্যার সমাধানে এই রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করতে চলেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। তিন মাসের মধ্যে ভিন রাজ্যের চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে।
যে সমস্ত ভিন রাজ্যের চিকিৎসকের, ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন নেই। কিন্তু এই রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত, তাদেরকে তিন মাসের মধ্যে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। উচ্চশিক্ষায় পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করতে ভিন রাজ্য থেকে যে সমস্ত ডাক্তারি পড়ুয়ারা এ রাজ্যে আসবেন, তাঁদেরকেও বাধ্যতামূলক নিজের নাম রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল নথিভুক্ত করতে হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশে চলা রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের (State Medical Council Vote) ভোটেও উত্তেজনা এড়ানো গেল না। নির্বাচনে তুমুল অশান্তি ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে। আর এই ঘটনায় কাঠগড়ায় শাসক দলপন্থী চিকিৎসক সংগঠন (Doctors Forum)। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বিধান নগর (Bidhannagar) দক্ষিণ থানার বিশাল পুলিস বাহিনী। জানা গিয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল বোর্ড গঠনের শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮-তে। সেই সময় নির্বাচনে অশান্তির ওই নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হয়।
এরপর চলতি বছর হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার সেই নির্বাচন পুনরায় হয়। কোর্টের তরফে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকের উপস্থিতি এবং ভোট গ্রহণস্থলে সিসিটিভি লাগানো নিশ্চিত করা হয়েছিল। এই ভোটের নিয়ম, প্রত্যেক ভোটদাতার বাড়িতে পোষ্টের মাধ্যমে ব্যালট পেপার পৌঁছবে। এদিন ভোট গ্রহণের সময় দেখা যায় বেশ কয়েকজন বান্ডিল বান্ডিল ব্যালট ব্যাগ থেকে বের করে ড্রপবক্সে ফেলছে। যদিও নিয়ম এক ব্যক্তি একটি ব্যালট খামবন্দি অবস্থায় ড্রপ বক্সে ফেলবে বা পোস্টের মাধ্যমে পাঠাতে পারবেন।
কিন্তু একসঙ্গে অনেকগুলো ব্যালট, একাধিক ব্যক্তি ড্রপ বক্সে ফেলতে থাকায় অপরপক্ষ রুখে দাঁড়ায়। মূলত ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে বহু সংখ্যক ব্যালট ড্রপ করার অভিযোগ ওঠে। তাঁরা ভোটে কারচুপি এবং রিগিংয়ের অভিযোগ তোলে। রিটার্নিং অফিসার অভিযোগ পেয়ে বাধা দিতে এলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। গালিগালাজ শুরু করে দেন বলে অভিযোগ।
এতে উত্তেজনা বাড়ায় বিধান নগর দক্ষিণ থানায় খবর যায়। ঘটনাস্থলে বিধান নগর দক্ষিণ থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন। ভোট প্রক্রিয়া কিছুক্ষণ বন্ধ থাকলেও আবার শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। তবে কোর্ট নির্দেশে অবমাননা করার অভিযোগ তুলে পুজোর পরে আদালতে দরবার করতে পারে একপক্ষ। আগামী ১৮ তারিখ অবধি এই ভোটগ্রহণ চলবে। এই বিষয়ে এদিন রিটার্নিং অফিসারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি টু শব্দ করেননি। উলটে অটো নিয়ে তাঁকে বেড়িয়ে যেতে দেখা যায়।
এই গণ্ডগোল প্রসঙ্গে এক প্রার্থী তথা চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত জানান, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন সিসিটিভির সামনে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক রাখতে হবে। আমরা গণ্ডগোলের আশঙ্কা করছিলাম। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং কীভাবে এতগুলো ব্যালট পেল? তদন্তের দাবি করেন ওই চিকিৎসক। যদিও বিরোধী শিবিরের দিকে পাল্টা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে শাসক দলপন্থী চিকিৎসক সংগঠন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ছটি চিকিৎসক সংগঠন বনাম শাসক দল পন্থী চিকিৎসক সংগঠনের এই ভোটযুদ্ধ।