Breaking News
Abhishek Banerjee: বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগ, প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জাতীয় মহিলা কমিশনের      Convocation: যাদবপুরের পর এবার রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সমাবর্তনে স্থগিতাদেশ রাজভবনের      Sandeshkhali: স্ত্রীকে কাঁদতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন 'সন্দেশখালির বাঘ'...      High Court: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ হাইকোর্টের      Sandeshkhali: সন্দেশখালিতে জমি দখল তদন্তে সক্রিয় সিবিআই, বয়ান রেকর্ড অভিযোগকারীদের      CBI: শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ! তদন্তে সিবিআই      Vote: জীবিত অথচ ভোটার তালিকায় মৃত! ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ধূপগুড়ির ১২ জন ভোটার      ED: মিলে গেল কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর, শ্রীঘই হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ ইডির      Ram Navami: রামনবমীর আনন্দে মেতেছে অযোধ্যা, রামলালার কপালে প্রথম সূর্যতিলক      Train: দমদমে ২১ দিনের ট্রাফিক ব্লক, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, প্রভাবিত কোন কোন রুট?     

MansiDas

AKD Group: তবুও শান্তি, তবু আনন্দ...

প্রসূন গুপ্ত: এই পৃথিবীর একমাত্র ভবিতব্য জন্ম হলেই মৃত্যু হবে। এই ভবিষ্যৎ বাণীর জন্য বিজ্ঞান বা জ্যোতিষী হওয়ার দরকার হয় না। একটু বয়স বাড়লে মানুষ জানতে পারে তাঁকে একদিন চলে যেতে হবেই। কোনও শক্তি এর ব্যতিক্রম হতে দেবে না। তবুও মানুষ আনন্দ করে। যতদিন বেঁচে থাকা যায় ততদিন ইচ্ছাশক্তি নিজের চলনকে ছাড়িয়ে যেতে চায়। তবে এটাও বাস্তব অসময়েও চলে যায় অনেকেই।

AKD গ্রুপের অন্যতম পরিচালক মানসী দাস চলে গেলেন মাত্র ৫৮ বছরেই। ঠিক ৬ মাস আগেও দিব্বি দায়িত্ব নিয়ে চলেছিলেন। হঠাৎ পেটের যন্ত্রণা, পরীক্ষা এবং কর্কট রোগ ধরা পরলো। একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে। তারপর কয়েক মাসের লড়াই। হেরে গেলেন। এ যেন জীবনে একটাই ইনিংস। কত রান করতে পারো?

কিন্তু এই মানসীকে চিনত ক'জনা? খুব বেশি কেউ নয়তো। টেলিভিশন কোম্পানির ফার্স্ট লেডি অথচ অজানা অচেনা কেন? আসলে পাবলিসিটি পছন্দই করতেন না। খুব সাধারণ শিক্ষিত সাংস্কৃতিক পরিবারে একটা শিক্ষাই পেয়েছিলেন বাবা-মায়ের কাছ থেকে যে, মানুষের জন্য কাজ করো।

বিরাট ব্যবসায়ী পরিবারে বিয়ে হয়েছিল। প্রাচুর্য ছিল বিস্তর। সে পরিবারে মেজবৌদি হওয়া সত্ত্বেও সংসারের অনেকটা দায়িত্ব এসে গেল তাঁর কাছে। শ্বশুর/শাশুড়ির রান্না অনেক কাজের লোক থাকার পরেও নিজের হাতে করতেন। স্বামী, পুত্র বা বাড়ির বাকি সদস্য, এমনকি বাইরের মানুষের পাতও পড়ত তাঁদের বাড়িতে। সেটা পারতেন কারণ সেভাবেই মানুষ হয়েছিলেন বাপের বাড়িতে। টিউশন করে রোজগার করেছিলেন যে।

এরপর এলো টেলিভিশন কোম্পানি। AKD গ্রুপের সিটিভিএন, পরে সিএন ইত্যাদি। এই বাণিজ্যে এলে ঝঞ্ঝাট অনেক। পেশায় শত্রুবৃদ্ধি তো অবশ্যম্ভাবী। ভয়ঙ্কর কঠিন রাজনৈতিক চাপ এসেছিল বারবার, কর্তা শুভাশীষের পাশে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন চিরকাল।

এরপর ব্যবসা বাড়লো। হলো ডক্টর প্লাস, আবরণ। চিকিৎসা কেন্দ্র এবং জামা কাপড়ের দোকান। দায়িত্ব নিলেন তার। কর্মীরা ভারী খুশি। কাজ তো আছেই তার সাথে খাওয়া দাওয়া পিকনিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। একটা যেন ইনস্টিটিউট। কারোর সমস্যা হলেই 'ম্যাডাম', একদম লুকিয়ে টাকা গুঁজে দিতেন হাতে। এছাড়া সুখেদুখে তো সাথে থাকা বটেই। অসুস্থ হলেন, শুভাশীষ তো ২৪ ঘন্টা তাঁর পাশে। কতগুলো সংসার চলতো অতি গোপনে তাঁর সাহায্যে। দীর্ঘদিনের কর্মচারীরা যেন পরিবারের অঙ্গ। কে লিকার চা খাবে বা দুধ চা কার পছন্দ সবদিকে নজর।

এই মানসী দাসকে কেউ চেনে না। তিনি বিখ্যাত তো নন। সারা জীবন নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলেছেন। ভাল যেমন বুঝতেন তেমন বিপদের গন্ধও পেতেন। চিকিৎসা কেন্দ্র চালানোর কারণে রোগের বিষয়টি বুঝতেন চমৎকার। কিন্তু নিজের কর্কট রোগ বুঝতেই পারলেন না? সোমবারের সন্ধ্যায় যখন হাজার ডিগ্রির চুল্লিতে তাঁর নিথর দেহটি প্রবেশ করলো, তখন শতাধিক কর্মীরা ভেঙে পড়েছেন কান্নায়। কিন্তু তিনি তো ইনিংস শেষ করে ফেলেছেন। চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। শীতের ঝাপসা কুয়াশা গ্রাস করেছে নিমতলা। অজানা অচেনা কি অধরাই থাকবেন? বলুন আপনারা?

4 months ago