মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই পড়ুয়ার অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে তিনি বিঁধলেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। বুধবার নিজের সোশ্যাল মাধ্যমে মমতা লেখেন, ‘মণিপুরে দুই নিহত তরুণের শোকাহত পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। তাঁদের মায়েদের কান্নায় প্রতিফলিত বেদনা এবং যন্ত্রণা আমাকে গভীর ভাবে প্রভাবিত করেছে। রাজ্য সরকার দায়িত্ব নিচ্ছে না। তাদের জবাবদিহি করাতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতি হতাশাজনক।’’
বুধবারই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দাবি করেছিলেন, বাইরে থেকে কিছু লোক এসে মণিপুরকে অশান্ত করছে। কেন্দ্রের এই দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল নেত্রী। এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লিখেছেন, ‘‘ইম্ফলের শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা ন্যায়বিচার এবং ঐক্যের দাবিতে মণিপুরের সঙ্গে আছি। আসুন আমরা মণিপুরের চেতনার পুনর্নির্মাণ এবং পুনরুজ্জীবনে সচেষ্ট হই। একসঙ্গে মিলে আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যত তৈরি করতে পারি।’’
গত ৬ জুলাই থেকে ওই দুই পড়ুয়া অপহৃত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের অপহরণ এবং খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার থেকে নতুন করে অশান্ত হয়েছে মণিপুরকে। ইতিমধ্যেই বুধবার থেকে কুকি অধ্যুষিত মণিপুরের পাহাড়ি এলাকায় আগামী ছ মাসের জন্য আফস্পা বলবৎ করা হয়েছে।
এখনও মণিপুরের (Manipur) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং নতুন করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। ফলে নিজের জায়গার এমন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বক্সার মেরি কম (Mary Kom)। এই আবহে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) চিঠি লিখলেন তিনি। তাঁর 'কম' গ্রামকে বাঁচাতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে অমিত শাহের কাছে আবেদন করলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার মণিপুরের বিষ্ণপুর এবং চাঁদচূড়াপুরে ফের মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এই সংঘর্ষে ৮ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ১৮ জন আহত হন বলে খবর। এর পরই ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মেরি কম। মণিপুরের স্বীকৃত ৩৫টি উপজাতির অন্যতম হল 'কম'। মেরি সেই উপজাতি ভুক্ত। ফলে তিনি অমিত শাহকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, মণিপুরের কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের কারণে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কম উপজাতির মানুষ। অথচ তাঁরা এই সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত নয়। অথচ অনবরত হিংসায় তাঁদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
তাই বৃহস্পতিবার শাহকে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে মণিপুরের হিংসা বন্ধ করতে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন মেরি কম। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য কমদের গ্রামগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েনের অনুরোধ করেছেন প্রাক্তন সাংসদ।
মণিপুরের স্মৃতি এখনও টাটকা। এরমধ্যেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবার রাজস্থানে (Rajasthan)। আদিবাসী এক যুবতীকে মারধর করার পর, নগ্ন করে ঘোরানো হয়, যার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিযোগ, স্ত্রী অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন এই সন্দেহে উচিত শিক্ষা দিতে যুবতীকে বিবস্ত্র করে ঘোরান অভিযুক্ত। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাজস্থানের প্রতাপগড় জেলায়।
মণিপুরের ঘটনায় রীতিমত তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। যার পরে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে চরম বিরুদ্ধতা শুরু করে বিরোধী দল গুলি। এর কিছু দিন কাটতে না কাটতেই এরকম মধ্যযুগীয় বর্বরতার অভিযোগ কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে। অভিযোগ, মণিপুরের ছায়া রাজস্থানেও। অভিযোগ যুবতীকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরান অভিযুক্ত।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শান্তি ফিরেছে মণিপুরে। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেওয়ার সময় এমনই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মণিপুর হিংসা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তাল দেশ। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা। এই ইস্যুতে উত্তাল হয় সংসদও। মণিপুরের হিংসা নিয়ে আগেও মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। আজ, ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে আবারও তাঁর বক্তৃতায় উঠে এল মণিপুর প্রসঙ্গ।
এদিন লালকেল্লা থেকে মণিপুর হিংসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দেশের উত্তরপূর্ব, বিশেষ করে মণিপুরে বিগত কয়েক দিন ধরে হিংসা হয়েছে। সেখানে মা-বোনদের সম্মানহানি ঘটেছে। তবে কয়েকদিন হল সেখানে শান্তি ফিরেছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার শান্তি বজায় রাখার জন্য এবং সেখানকার সমস্যা মেটাতে একসঙ্গে কাজ করবে। দেশবাসী মণিপুরের পাশে রয়েছে।"
এদিন, ২০১৪ থেকে ২০২৩ এই সময়ের মধ্যে তাঁর সরকার কী করছে, তা লালকেল্লা থেকে ফের একবার দেশবাসীর সামনে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। গ্যারান্টি দিয়ে নিজের আগামী পাঁচ বছরের সরকারের রূপরেখাও তৈরি করে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। দাবি করলেন, আগামী পাঁচ বছরে ভারত অর্থনীতিতে বিশ্বের তিন নম্বরে উঠে আসবে।
এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে এল মধ্যবিত্তদের কথাও। তাঁর কথায়, লক্ষ্য দেশের স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন। আর তার ভিত তৈরি করবেন এই দেশের মধ্যবিত্তরাই
মণিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে আলোচনায় রাজি সরকার। বুধবার মণিপুর নিয়ে অনাস্থা বিতর্কে অংশ নিয়ে লোকসভা একথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানিয়েছেন, অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে মণিপুরে হিংসা হয়েছে। যা ক্ষমার অযোগ্য। কিন্তু যাঁরা এই হিংসা নিয়ে রাজনীতি করেছে, তাঁরা ক্ষমার আরও অযোগ্য।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অমিত শাহের দাবি, এই ইস্যুতে অনাস্থা এনে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন বিরোধীরা। একইসঙ্গে মণিপুর নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও এদিন উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই ঘটনার পিছনে বিদেশি হাত রয়েছে বলেও দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিন লোকসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্ন, কোন স্বার্থে মণিপুরে গিয়েছিল বিরোধী প্রতিনিধি দল। তাঁর অভিযোগ, বিরোধী প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়েছিল একমাত্র রাজনীতি করতে। এমনকী, মহিলাদের বিবস্ত্র করার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পিছনেও ষড়যন্ত্র ছিল বলেও এদিন লোকসভায় দাবি করেন অমিত শাহ।
তাঁর দাবি, পুলিশের হাতে এই ছবি প্রথমে দেওয়া উচিত ছিল। যদিও পুলিশের তৎপরতায় অভিযুক্তদের খুব গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। বিরোধীরা বারবার দাবি করেছেন, মণিপুর যেতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। এই দাবি এদিন কার্যত খারিজ করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, সরকারি চেষ্টায় ইম্ফলে দ্রুত শান্তি ফিরছে।
মণিপুর সামলাতে ব্যর্থ কেন্দ্র। এই অভিযোগ করে সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধীরা। মঙ্গলবার থেকে তার উপর আলোচনা শুরু হয়েছে লোকসভায়। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এদিন বক্তব্য রাখার কথা ছিল। তিনি রাখেননি। তবে শোনা যাচ্ছে ১০ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর জরুরি ভাষণের দিন মণিপুর নিয়ে নিজের বক্তব্য জানাবেন ওয়াইনাডের সাংসদ।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হল ইম্ফলে। রাজ্যের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অসম রাইফেলসকে। কুকিদের পাশে দাঁড়িয়ে মেইতদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ করা হয়েছে অসম রাইফেলসের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এমনকী, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে মণিপুর পুলিশের পক্ষ থেকেও।
হিংসা কবলিত মণিপুরে সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে নৃশংস আচরণ করার অভিযোগে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুর জেলায় এই বাহিনীর বিরুদ্ধে মিছিলও হয়েছে।
মণিপুরে (Manipur Violence) ‘আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাস' ফেরাতে নানা চেষ্টা চলেছে। এবার গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সোমবার মণিপুরের হিংসা মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়। সেখানে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজের তদারকির জন্য প্রাক্তন বিচারপতিদের (তিন জনই মহিলা) নিয়ে একটি কমিটি গড়ল সর্বোচ্চ আদালত। এছাড়াও মণিপুরে পাঠানো হবে ৪২টি স্পেশ্যাল ইনভেস্টেগেশন টিম তথা 'সিট'।
মণিপুরের বিভিন্ন হিংসার ঘটনার তদন্ত, ত্রাণের কাজ, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং বিভিন্ন ধ্বংস হয়ে যাওয়া ধর্মীয় স্থানের পুননির্মাণের মতো মানবিক কাজগুলি পর্যালোচনার জন্য প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেপি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের গড়া কমিটিতে রয়েছে দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত তিন মহিলা বিচারপতি। এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল। এছাড়া কমিটিতে থাকছেন বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শালিনী ফাঁসালার জোশী এবং দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আশা মেনন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, মণিপুরের জনগণের আস্থা বাড়ানোর জন্যই তাদের চেষ্টা। তিনি বলেছেন, ১১ টি এফআইআর সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট তাতে হস্তক্ষেপ করবে না। তবে সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দেবে যাতে তদন্তকারী দলে ৫ জন আধিকারিককে ডিএসপি বা এসপি পদমর্যাদার হতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, এই অফিসারদের অন্য রাজ্যের হতে হবে, তাঁরা স্থানীয়দের সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলবেন। প্রধান বিচারপতি আরও বলেছেন রাজ্য সরকার ৪২ টি সিট তৈরির কথা বলেছে। সুপ্রিম কোর্ট চায় প্রতিটি সিটের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে একজন পরিদর্শক থাকা উচিত, যিনি অন্য রাজ্যের আধিকারিক হবেন। এছাড়াও অন্য রাজ্য থেকে ডিএজি পদমর্যাদার ৬ জন আধিকারিক থাকা উচিত, যাঁরা ওই ৪২ টি সিটের কাজের তত্ত্বাবধান করবেন।
মণিপুরে অশান্তি যেন থামার নাম করছে না। আবার নতুন করে উত্তপ্ত উত্তর পূর্বের এই রাজ্য। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মেইতেই মহিলাদের সংঘর্ষে আহত অন্তত ১৭ জন। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ব্যারিকেড ভাঙতে যায় মেইতেই জনগোষ্ঠীর মহিলারা তাঁদের বাধা দেয় অসম রাইফেলস এবং র্যাফ। সেখান থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। সংঘর্ষে ইটবৃষ্টি শুরু করে উত্তেজিত জনতা।
একই জেলার কাংভাই এবং ফউগাকচাও-এ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। উল্লেখ্য, গত ৪ মে রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় দুই মহিলাকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাঁদের বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় হয় গোটা দেশ। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ঘটনার নিন্দা করে। এছাড়া কুকি ও মেইতেই সংঘর্ষের জের এখনও অব্যাহত।
বিজেপির প্ররোচনায় দেশ জ্বলছে। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, হরিয়ানা থেকে মণিপুর, প্রতিটি জায়গায় অশান্তির পিছনে রয়েছে বিজেপি মদত। তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, বিজেপি সবসময় অশান্তির রাজনীতি করে। আর সেই রাজনীতি করছে বিজেপি।
মানুষের কথা বলে না বিজেপি। তৃণমূল নেত্রীর দাবি, সাধারণ মানুষ কী চায়, সেটাই জানতে চায় না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। হরিয়ানার ঘটনায় সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর দাবি করেছেন, রাজ্যের সব মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। এই ইস্যুতে খট্টরের এই দাবিকে সমর্থন করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বিজেপির প্ররোচনাকে তিনি সমর্থন করেন না। হরিয়ানার ঘটনায় বিজেপির যে উস্কানি রয়েছে এদিন সেই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর দাবি, বাংলায় কিছু হলেই কেন্দ্রীয় দল আসছে। কিন্তু কোথায় হরিয়ানা ও মণিপুরে তো কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা যাচ্ছেন না। মণিপুর নিয়ে ১০ তারিখ সংসদে বিবৃতি দেওয়া কথা প্রধানমন্ত্রী। সেই ব্যাপারে তিনি তাকিয়ে রয়েছেন বলেও এদিন জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। হরিয়ানা, মণিপুরের পাশাপাশি এদিন বাংলার রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কীভাবে এবং কেন জ্বলছে মণিপুর, তা একবার নিজের চোখে দেখে আসা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। বুধবার রাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে মণিপুর হিংসা নিয়ে অভিযোগ জমা দেওয়ার পর এই দাবি, বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাগড়ে জানিয়েছেন, তাঁরা মণিপুর সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন। ওই রাজ্যের মহিলাদের উপর কীভবে অত্যাচার করা হচ্ছে, সেই ব্যাপারেও জানানো হয়েছে।
এদিন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করতে যান বিরোধী জোটের প্রতিনিধিরা। সেই দলেই ছিলেন সম্প্রতি মণিপুর থেকে ঘুরে আসা ইন্ডিয়ার ২১ প্রতিনিধিও। মূলত তাঁরাই রাষ্ট্রপতিকে মণিপুরে কী চলছে, তা নিয়ে বিস্তারিত জানান। তাঁরা দাবি করেন, অবিলম্বে ওই রাজ্য থেকে ঘুরে আসা উচিত প্রধানমন্ত্রীর।
মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল মণিপুরে কোনও আইন নেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, তারপরের দিনে ওই রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীকে যাওয়ার অনুরোধ করলেন বিরোধীরা। এদিন রাষ্ট্রপ্রতি ভবনে ইন্ডিয়া প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার, তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসি নেতা ফারুক আবদুল্লার মতো নেতারা।
মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে এবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন কেন্দ্রের বিরোধী জোট মঞ্চ ইন্ডিয়া-র প্রতিনিধিরা। বুধবার তাঁদের মধ্যে সাক্ষাৎ হবে বলে জানা গিয়েছে। মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন তাঁরা।
মণিপুর নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ইন্ডিয়া জোট। সংসদের ভিতরেও প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছেন তাঁরা। রাজনৈতিক মহলের মত, এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির কাছে নালিশ করে কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে বিরোধী জোট।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে মঙ্গলবার মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি সেই আবেদন মেনে ইন্ডিয়া প্রতিনিধি দলকে বুধবার সাক্ষাতের জন্য সময় দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি ইন্ডিয়া জোটের ২৬ জন সংসদ সম্প্রতি মনিপুর পরিদর্শন করেছেন এবং সেখানে মনিপুরের রাজ্যপালের কাছে তারা স্মারকলিপি প্রদান করেন। মনিপুরের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি সহ আইন শৃঙ্খলা সব রক্ষার দাবিতে বিধানসভা ও লোকসভা অধিবেশন বয়কট করেছে ইন্ডিয়া জোট।
সোমবার মণিপুর নিয়ে উত্তপ্ত হল রাজ্য বিধানসভা। তর্ক-বিতর্কে জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। হিংসা বিধ্বস্থ মণিপুর নিয়ে সোমবারই নিন্দা প্রস্তাব নিয়ে আসে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা।
মনিপুর নিয়ে ইতিমধ্যেই মুলতবি হয়েছে লোকসভার অধিবেশন। ইতিমধ্যেই মনিপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ইন্ডিয়া জোটের ২৬ জন সাংসদ। এছাড়া মনিপুরের হিংসা নিয়ে এখনো অবধি রাজ্যসভার অধিবেশনে তুলকালাম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এবার ওই একই বিষয় নিয়ে বাক-বিতন্ডায় জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মণিপুরের ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব আনার পর বিধানসভায় সরব হন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানিয়ে দেন, পুরো ঘটনাটি মণিপুরের অভ্যন্তরীন বিষয়। এবং যেহেতু পুরো বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন, সেকারণে রাজ্য বিধানসভায় এনিয়ে আলোচনা করার অধিকার নেই। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। অবশেষে বিধানসভা ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা
মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া ইউকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিলেন কেন্দ্রের বিরোধী জোট মঞ্চ ইন্ডিয়া-র ২১ জন সাংসদ। শনিবার হিংসা বিধ্বস্থ মণিপুরের একাধিক এলাকা ঘুরে দেখেন। অবশেষে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেন বিরোধী সাংসদরা। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছে তাঁদের তরফে পেশ করা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়েও দ্রুত আলোচনার দাবি করেছেন তাঁরা।
যত দিন যাচ্ছে ততই মণিপুর থেকে একাধিক ভয়ঙ্কয় ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। শনিবার মণিপুরে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। পাশাপাশি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।
রবিবার রাজতভবনে স্মারকলিপি তুলে দেওয়ার পর অধীর চৌধুরী জানান, ২১ জন সাংসদ আলাদাভাবে স্মারকলিপি তুলে দিয়েছেন রাজ্যপালের হাতে। রাজ্যপাল তাঁদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
অগ্নিগর্ভ মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো ও গণধর্ষণের ঘটনা। এবার বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গত ৪ মে রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় দুই মহিলাকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাঁদের বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ এই ঘটনায় আগেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। এবার ঘটনার তদন্ত শুরু করবে সিবিআই।
মণিপুরের ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে সব মহলে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ঘটনার নিন্দা করে। বাদল অধিবেশনে মণিপুরকে হাতিয়ার করে প্রচার শুরু করেছে বিরোধী শিবিরও। এই পরিস্থিতিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। মণিপুরের ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক ব্যক্তি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুযায়ী, দুই মহিলার উপর অত্যাচারের ভিডিও করেছিলেন যিনি, তাঁকেই এবার গ্রেফতার করা হল। ধৃতের মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনায় আগে মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াল ৮।
মণিপুর ইস্যুতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সংসদে। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভে সামিল হন বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'। সেইসঙ্গে, ইন্ডিয়া জোটের সাংসদদের প্রতিনিধি দল মণিপুর যাচ্ছে। জানা গিয়েছে ২৯ ও ৩০ জুলাই মণিুপুরে যাবেন ২৬ দলের সাংসদরা।
বিরোধী জোট সূত্রে খবর, ২৯ জুলাই সাংসদরা দিল্লি থেকে মণিপুর পৌঁছবেন। দুদিন ধরে সেই রাজ্যে থাকবেও তাঁরা। বিরোধী সাংসদদের দলে কে কে থাকবেন, সেই নাম জানা যায়নি। অন্যদিকে, মণিপুর ইস্যুতে অশান্তির আবহে বৃহস্পতিবার গোটা ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গত ৪ মে রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় দুই মহিলাকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাঁদের বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় হয় গোটা দেশ। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ঘটনার নিন্দা করে।
বিশেষ সূত্রের খবর অনুযায়ী শনিবার ২৯ জুলাই মণিপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার। এবারের বাদল অধিবেশনে লোকসভা ও রাজ্যসভা উত্তাল মণিপুরের বিচ্ছিন্ন আন্দোলন নিয়ে। সেখানকার ঘটনা হয়তো খবরের কাগজ বা টেলিভিশনে সেভাবে প্রকাশ না হলেও সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। দেশে তো বটেই বিদেশেও ছড়িয়ে গিয়েছে মণিপুর কাণ্ড। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, কি কারণে একটি নির্বাচিত সরকার থাকা সত্ত্বেও এমন খুন, জখম বা নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। যদিও বাদল অধিবেশনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলে, নিন্দা করেছেন এই ঘটনার। কিন্তু এতে খুশি নয় বিরোধী দলগুলি। ইতিমধ্যে বিরোধী দলগুলির একটি জোট হয়েছে, নাম ইন্ডিয়া।
যদিও এই ইন্ডিয়া বলতে ভারত নয়, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেমোক্রিটিক্যাল ইনক্লুসিভ এলায়েন্স কিন্তু যুক্তাক্ষরে ইন্ডিয়া তো বটেই। এদের ২৬টি দল। এর মধ্যে কংগ্রেস থেকে তৃণমূল আপ ইত্যাদি দলের সঙ্গে বামপন্থী দলগুলিও আছে। মোদীর প্রেস বিজ্ঞপ্তির পরেও এরা চাইছে, প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় বিবৃতি দিন। শুক্রবার অবধি তেমন কোনও সম্ভাবনা অবিশ্যি দেখা যাচ্ছে না, কাজেই আজও দুটি কক্ষে কোনও আলোচনা হয়ে ওঠেনি। এরই মধ্যে ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন যে তারা শনিবার মণিপুর যাচ্ছেন।
মণিপুরের সঙ্গে লাগোয়া মিজোরামের প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়েছে। দেখা যাচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতে ত্রিপুরা, অসম বাদে কিন্তু একটি জাতি সংকটের হাওয়া দেখা যাচ্ছে। সরকার ব্যবস্থা নেওয়ার মধ্যেই উচ্চ আদালত থেকে সিবিআইকে তদন্ত করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ২০ জন বিরোধী প্রতিনিধিদের দল মনিপুর যাচ্ছে বলে সংবাদ। এর আগে অবিশ্যি তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল মনিপুর ঘুরে এসেছে কিন্তু এবারে তৃণমূল সহ বাকি দলগুলি যাচ্ছে। যারা যাচ্ছেন তারা লোকসভা বা রাজ্যসভার সদস্য। একদিনের সফর শেষে আগামী সোমবার এই বিষয়ে তারা ফের আইনসভা উত্তাল করতে পারে।