শব্দ দূষণ (Sound Pollution) নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ প্রশাসনের? রাজ্য সরকার (Mamata Government) এবং পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের (Pollution Control Board) কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে এই মর্মে করা জনস্বার্থ মামলায় এই রিপোর্ট তলব আদালতের। জানা গিয়েছে, এই জনস্বার্থ মামলায় উল্লেখ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের গাইডলাইন এবং পরিবেশ আদালতের নির্দেশকেও মানা হচ্ছে না। বেপরোয়াভাবে চলছে শব্দ দূষণ। এই বিধিভঙ্গে রাজ্য সরকার এবং পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড কী পদক্ষেপ নিয়েছে? সেই মর্মেই রিপোর্ট পেশের নির্দেশ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের।
মামলায় অভিযোগ, 'কেন্দ্র, রাজ্য এবং সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন এবং পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যজুড়ে যথেচ্ছ ভাবে বাজানো হচ্ছে ডিজে, লাউড স্পিকার, মাইক্রোফোন ইত্যাদি।' এই মামলার প্রেক্ষিতেই আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকার এবং পালিউশন কন্ট্রোল বোর্ডকে হলফনামা জমা দিয়ে জানাবে কী কী পদক্ষেপ এযাবৎকাল গ্রহণ করা হয়েছে। কীভাবে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ-সহ কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি কার্যকর করেছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সুপ্রিম কোর্টের ২০০৫ সালে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি ২০০০ সালে লাগু হয়েছে। এই মর্মে রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি আছে ২০০৯ সালে।
এবার হাইকোর্টের নির্দেশ, রাজ্যকে জানাতে হবে কলকাতা পুরসভা এলাকায় এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কতগুলো অভিযোগ জমা পড়েছে। পুলিস কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সেটাও হলফনামায় উল্লেখ করতে হবে। ৩ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
ফের সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) পিছিয়ে গেল বাংলার ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা (DA Case) মামলার শুনানি। রাজ্যের হলফনামায় ত্রুটির কারণে ১৫ মার্চ পর্যন্ত শীর্ষ আদালতে পিছিয়েছে শুনানি। সোমবার বিচারপতি ডি মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের ডিভিশনে বেঞ্চে এই মামলা ওঠে। বাংলার সরকারি কর্মীদের বহুদিনের প্রাপ্য এই বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দেবে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। এই আশায় নতুন বছর থেকে বুকে আশা বাঁধতে শুরু করেন সরকারি কর্মীরা (Government Employee)। কিন্তু দু'মাস শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় ফের হতাশ হলেন তাঁরা।
ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। ৫ ডিসেম্বর থেকে শুনানি পিছিয়ে করা হয়েছিল ১৪ ডিসেম্বর। সেদিন দুই বাঙালি বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং হৃষীকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা ওঠে। কিন্তু সরে দাঁড়ান বিচারপতি দত্ত।
ফলে নতুন করে বেঞ্চ পুনর্গঠন হয় এবং জানুয়ারির ১৬ তারিখ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে শীর্ষ আদালত। এদিনও পিছিয়ে গেল শুনানি। ফলে আরও ৬০ দিনের অপেক্ষা রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারীর।
মোদী সরকারের (Modi Government) অন্দরে প্রশংসিত মমতা সরকারের 'দুয়ারে সরকার' প্রকল্প (Duare Sarkar)। কেন্দ্রের তরফে প্লাটিনাম পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে এই সামাজিক প্রকল্পকে। শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে (Rashtrapati Bhawan) মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ডিজিটাল ইন্ডিয়া পুরস্কার ২০২২-র মঞ্চ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ট্যুইটার পেজে এই সাফল্য তুলে ধরেছে। রাজ্যের শাসক দল লিখেছে, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যতিক্রমী নেতৃত্বে বাংলা আবার দিশা দেখিয়েছে। পশ্চিম বাংলার সরকারের সামাজিক প্রকল্প দুয়ারে সরকার ডিজিটাল পুরস্কার ২০২২-র মঞ্চে পুরস্কৃত হয়েছে। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।'
স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi Card) নিয়ে ফের কঠোর রাজ্য সরকার (Mamata Government)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বপ্নের প্রকল্প নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department)। নয়া এই নির্দেশিকা প্রযোজ্য সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালের (Private Hospital) জন্য। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসা শুরুর আগে রোগীকে রেফার করা হলে বা রোগীর মৃত্যু হলে বেসরকারি হাসপাতাল ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্যাকেজের পুরো টাকা পাবে না। জানা গিয়েছে, অস্ত্রোপচার ব্যর্থ হলে বেসরকারি হাসপাতাল পাবে শুধু মাত্র ইমপ্ল্যান্টের খরচ এবং প্যাকেজের ৩০ শতাংশ টাকা।
অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে পরে যদি মনে হয় অস্ত্রোপচার সম্ভব নয় তাহলে ৩৫ শতাংশ টাকা বরাদ্দ হবে। আর আংশিক অস্ত্রোপচার হলে মিলবে ৫০ শতাংশ টাকা। ৫০ শতাংশ টাকা মিলবে অস্ত্রোপচার চলাকালীন সময়ে রোগীর মৃত্যু হলে। তবে অস্ত্রোপচারের আগেই রোগীর মৃত্যু হলে মিলবে ২৫ শতাংশ টাকা। খবর, বিনা পরীক্ষা করে বা চিকিৎসা না করেই রেফার করা হলে বেসরকারি হাসপাতাল কোনও টাকাই পাবে না। কিডনি ও গলব্লাডারের পাথর যদি পুরোপুরি ভাবে বের না করতে পারে হাসপাতাল, তবে ওই হাসপাতাল পাবে ৬০ শতাংশ টাকা।
আবার, অপারেশনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অসুস্থ ব্যক্তির মৃত্যু হলে ৭০ শতাংশ টাকা মিলবে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার আগেই রোগীর মৃত্যু হলে মিলবে ৮৫ শতাংশ টাকা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসা সম্পূর্ণ শেষ করার আগেই রোগীকে রেফার করলে মিলবে ৫০ শতাংশ টাকা।
মনে করা হচ্ছে, এতে রোগী পরিষেবার মান বাড়বে। এর ফলে বেসরকারি হাসপাতালগুলি আরও সহানুভূতিশীল হবে। নবান্ন আগেই কড়া অবস্থান নিয়ে জানিয়েছিল, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ না করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা আরও উন্নত করতে রোগী সুরক্ষায় নজর নবান্নের।
দেশের সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পর এবার কলকাতা হাইকোর্টেও (Calcutta High Court) স্বস্তি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary)। তাঁর উপর সিঙ্গল বেঞ্চের থাকা রক্ষাকবচের বিরোধিতা করে রাজ্যের (Mamata Government) করা মামলায় তাড়াহুড়ো নেই। তাই তিন সপ্তাহ পিছিয়ে গেল শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চেয়ে রাজ্যের করা আবেদনের শুনানি। তিন সপ্তাহ পর অর্থাৎ ৯ জানুয়ারি নির্দিষ্ট বেঞ্চে আবেদনের নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চের। অর্থাৎ তিন সপ্তাহ বহাল থাকলো বিরোধী দলনেতার উপর হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দেওয়া রক্ষাকবচ। দেশের শীর্ষ আদালতের পর এবার কলকাতা হাইকোর্টেও মুখ পুড়লো রাজ্যের।
শুভেন্দুর বিরুদ্ধ এফআইআর করা যাবে না এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য আবেদন করেছিল সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন পাঠিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্য ফের কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে মামলা দায়ের আবেদন জানায়। সেই মোতাবেক রাজ্যের করার আবেদনের শুনানি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে ওঠে। কারণ এই মামলার জন্য বরাদ্দ করা বেঞ্চ অন্যত্র আছে, তাই সেই বেঞ্চ হাইকোর্টে ফিরলে তারাই শুনবে রাজ্যের আবেদন।
এদিন শুনানিতে রাজ্যের তরফে যুক্তি দেখানো হয়, 'আমরা আসানসোলে কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে তিনজনের মৃত্যু ঘটনার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধ মামলা দায়ের করতে চাই। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মন্থর নির্দেশ আছে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে আদালতের নির্দেশ নিতে হবে। ওর বিরুদ্ধ অভিযোগ না করতে দিলে প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনা রয়েছে।' এরপরেই বিচারপতির প্রশ্ন, 'ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত কি শুরু হয়ছে? পোস্ট মর্টেম কি হয়ছে? যদি তদন্ত শুরু হয় তবে প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনা নেই। তাড়াহুড়ো কীসের, রাজ্য কি বিচারপতি মন্থর নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করেছে?'
ঝালদা পুরসভায় (Jhalda Municipality) চেয়ারম্যান নিয়োগ প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে (Calutta High Court) বড় ধাক্কা রাজ্য সরকারের (Mamata Government)। আগামি ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। ঝালদা পুরসভায় চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরের জারি বিজ্ঞপ্তির উপর স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের। পুরুলিয়ার জেলা শাসক আপাতত প্রশাসক হিসেবেই কাজ করবেন।
ঝালদা পুরসভায় আস্থা ভোটের পরেও রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেছেন এক তৃণমূল কাউন্সিলর। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী কাউন্সিলররা। আজ দুপুর দুটোয় মামলার শুনানি হয়েছে। এদিকে, আস্থা ভোটে জিতে ঝালদা পুরসভার বিরোধী শিবির পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে শিলা চট্টোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছে।
রাজ্য সরকার ২ ডিসেম্বর একটি নোটিফিকেশন করে তৃণমূল কাউন্সিলর জবা মাছুয়াকে সেই জায়গায় নিযুক্ত করেন। এই পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার বহির্ভূত, হাইকোর্টে এমনটাই অভিযোগ মামলাকারীর আইনজীবীর।
এদিন শুনানিতে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এমন কোন পরিস্থিতি তৈরি হলো যে রাজ্য সরকারকে তড়িঘড়ি প্রশাসক বসাতে হলো? চেয়ারম্যান নির্বাচন করার জন্য ৭ দিনের সময়সীমা ছিল।
প্রসূন গুপ্ত: বৃহস্পতিবার নির্ধারিত হয়ে গেল আর অস্থায়ী রাজ্যপাল নয়, এবার ৫ বছরের জন্য নতুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই নিয়মরক্ষায় নতুনত্ব বা অভিনবত্ব কিছু নেই তবু তৃণমূলের প্রশ্ন থাকে, ইনি কি পূর্বসূরি ধনকরের মতো হবেন নাকি নিরপেক্ষ? অন্যদিকে বিজেপির কাছে প্রশ্ন, সাময়িক রাজ্যপাল লা গণেশনের মতো হবেন নাকি ফের তাঁদের মনপসন্দ ধনকরের মতো নিরপেক্ষ? আসলে এই 'নিরপেক্ষতা' শব্দটি এখন ক্লিশে হয়ে গিয়েছে। যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি ভাবে তাদের মনের মতো প্রশাসন বা সংবাদমাধ্যম হওয়া মানেই নিরপেক্ষ নতুবা পক্ষপাতদুষ্ট। সর্বত্রই এই ভাবনার মধ্যে সমস্ত রাজনৈতিক দল।
লা গণেশন দ্রুত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় মানুষ হয়ে পড়েছিলেন। কালীপুজোয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান গনেশন। এরপর অস্থায়ী রাজ্যপালের আমন্ত্রণে তাঁর চেন্নাইয়ের বাড়িতো যান মমতা। এরই মাঝে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী, গণেশনের সাক্ষাৎ চেয়েও পাননি। ফলে গুঞ্জনে এই কারণেই কি তাঁকে সরিয়ে বোসকে দায়িত্ব দেওয়া হলো।
এবার প্রশ্ন কেমন মানুষ এই বোস? জানা গিয়েছে কেরালার ভূমিপুত্র আনন্দ বোস একজন প্রাক্তন আইএএস। দুর্দান্ত তাঁর কর্ম জীবন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড.মনমোহন সিংয়ের প্রিয়পাত্র ছিলেন বোস। ২০১১-তে কর্মজীবন শেষ হলে তিনি বিজেপির ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন বলে সংবাদ।
তাঁকে নাকি সরকারি নানা উপদেষ্টামণ্ডলীতে রাখা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে সম্মান দিয়ে 'ম্যান অফ আইডিয়াস' বলে অভিহিত করেছেন। ২০১৯-এ তাঁর বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে অথবা রাজ্যসভার সদস্য হয়ে মোদী মন্ত্রিসভাতে আসার কথা ছিল। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক সেটা আর হয়নি।
নতুন রাজ্যপাল স্থির হওয়ার আগে নিয়ম করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নাকি তা করেননি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অবশ্য অমিত শাহ ফোন করে বাড়তি জানান মমতাকে। ক্ষুব্ধ মমতা শাহকে বলেন, 'ফের তাঁকে না জানিয়েই কেন বারবার রাজ্যপাল নিয়োগ হচ্ছে।' অমিত শাহ মমতাকে নিশ্চিন্ত করেন, নতুন রাজ্যপাল আপনার খুব পছন্দের হবে। উনি খুব ভালো লোক। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে মমতার সঙ্গে অমিত কথা বলেন। এখন লক্ষ টাকার প্রশ্ন, রাজ্যপাল কারও কাছের লোক হবেন নাকি রাজ্যের সংবিধান প্রধান হয়ে রাজ ভবনে বসবেন।
ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা (DA Case) মামলায় রাজ্যের আবেদন গ্রহণ করল না সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। আবেদনে ত্রুটি এই যুক্তি দেখিয়ে আবার নব্বই দিন পর আবেদন করতে নির্দেশ মমতা সরকারকে (Mamata Government)। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) দাখিল করেছিল রাজ্য। সেই আবেদনই ত্রুটির কারণে খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিকে, প্রথম স্যাট এবং পরে কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় হারে ডিএ সরকারী কর্মীকে দিতেই হবে। মে মাসে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল আগামি তিন মাসের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দিতেই হবে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ডিএ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্চ্য করেনি নবান্ন। ফলে আদালত অবমাননার মামলা সরকারী কর্মী সংগঠনের তরফে করা হয়েছিল হাইকোর্টে। সেই মামলাতেও ধাক্কা খেয়েছিল রাজ্য সরকার।
কিন্তু ডিএ জটের জল ফের সুপ্রিম কোর্টে গড়ানোয় বিশ বাঁও জলে সরকারী কর্মীদের প্রাপ্য। এমনটাই মনে করছেন আইনজ্ঞরা। তবে এই টানাপোড়েনের শেষ দেখে ছাড়বেন সরকারী কর্মীরা, এমনটাই জানিয়েছে তাদের সংগঠন।
রাজ্যের প্রায় ৪১ হাজার পুজো কমিটিকে (Durga Puja 2022) ৬০ হাজার করে অনুদান দিয়েছে সরকার (Mamata Government)। এবার সেই টাকা কী খাতে, কীভাবে খরচ হয়েছে? সেই হিসেব চেয়ে পাঠাল নবান্ন (Nabanna)। ৩ দিনের মধ্যে উপযুক্ত বিল, ভাউচার ও শংসাপত্র-সহ অডিট রিপোর্ট জমা দিতে পুজো কমিটিগুলোকে নির্দেশ। এ বছর কলকাতা পুলিসের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ৩,০০০ পুজো এবং রাজ্য পুলিসের নিয়ন্ত্রণাধীন মোট ৩৫টি জেলা ও কমিশনারেট এলাকায় ৩৭ হাজার ২৮টি পুজোর জন্য মোট ২৪০ কোটি ১৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা অনুদান (Puja Donation) বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় আদালতে জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে।
জানা গিয়েছে, জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা, নিরাপত্তা প্রচার, মহিলাদের ক্ষমতায়নের মতোন সামাজিক কাজে টাকা খরচ করতে এই অনুদান। তাই ঠিক কোন কোন খাতে সেই অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা জানাতে বলা হয়েছে। রাজ্যের অনুদানের টাকা যদি ক্লাব বা পুজো কমিটিগুলি স্থানীয় কোনও উন্নয়নের কাজে ব্যাবহার করে থাকে, তাও জানাতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। বারবার দরবার সেই অর্থ না মেলায় ক্ষুব্ধ নবান্ন। ১০০ দিনের কাজের টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি দরবার করেন মুখ্যমন্ত্রীও। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং আবার রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে এ বিষয়ে দেখা করতে সময় দেয়নি। তাই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া অর্থ পেতে লাগাতার দিল্লিকে তাগাদা দিচ্ছে পঞ্চায়েত দপ্তর। এমনটাই নবান্ন সূত্রে খবর।
ফের মমতা সরকারের (Mamata Government) বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে সরব শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা (Opposition Leader) চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী (Finance Minister) নির্মলা সীতারমণকে এই অভিযোগ করেন। পাশাপাশি তাঁর অনুরোধ এই অভিযোগের প্রকৃত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক অর্থ মন্ত্রক। কেউ যাতে দুর্নীতি এবং কেন্দ্রের ভাবমূর্তি কলুষিত না করতে পারে। সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করুক অর্থ মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার তাঁর পাঠানো ওই চিঠি শুক্রবার টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা।
West Bengal LoP and BJP leader Suvendu Adhikari has written to Union Finance Minister Nirmala Sitharaman alleging West Bengal govt illegally diverting funds provided by the Central government pic.twitter.com/rR1nyqzPJg
— ANI (@ANI) September 30, 2022
সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ সঠিক খাতে ব্যয় না করার অভিযোগ। তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রের নির্দিষ্ট খাতে বরাদ্দ টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প-সহ রাজ্যের অন্য প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি জানান, কয়েক মাস আগে দিনের আলো দেখেছে পাবলিক ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এই প্রকল্প চালু করেছেন। সেই ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে বরাদ্দ টাকা খরচের রাজ্য এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে নোডাল অ্যাকাউন্ট খুলেছে। সেই ব্যাঙ্কেই সরকারের জরুরি ত্রাণ তহবিল রয়েছে। পাবলিক ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বরাদ্দ অর্থের বেশিরভাগ অংশ সেই তহবিলে নিয়ে সুদ-সহ অন্য খাতে ব্যবহার করছে মমতা সরকার।
তাঁর দাবি, 'এই অভিযোগ গুরুতর ভাবে খতিয়ে দেখলে অনিয়ম ধরা পড়বে। আর রাজ্য সরকার যে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় টাকা আটকে রাখা হয়েছে। সেই অভিযোগও মিথ্যা প্রমাণিত হবে।'
হাইকোর্টে বাতিল হয়ে গেল মমতা সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প (Duare Ration Scheme)। রাজ্য সরকার গৃহীত এই প্রকল্প জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা (National Food Security Law) আইনের পরিপন্থী। এই যুক্তিতে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের নির্দেশিকা খারিজ করল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ (Calcutta High Court)। আইনের চোখে এই প্রকল্পের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। বুধবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন। আদালতের এই রায়ে রেশন ডিলার্সদের বহুদিনের আইনি লড়াই সাফল্যের মুখ দেখল। এমনটাই দাবি বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশনের।
একুশের ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার সরকার গড়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের অনুকরণে দিল্লিবাসীর দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প নিয়েছেন কেজরিওয়াল সরকারও। কিন্তু এই প্রকল্পের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করে রেশন ডিলার্সদের সংগঠন। যদিও সেই মামলায় তাঁদের বিপক্ষে রায় দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু সেই রায়ের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে দরবার করেন বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশন, রেশন ডিলার জয়েন্ট ফোরামের সদস্যরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই দুয়ারে রেশন প্রকল্প বাতিল করে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
দুয়ারে রেশন প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছিল রেশন ডিলারদের। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন তাঁরা। এই অভিযোগ তুলে প্রথম একটি মামলা দায়ের হয়েছিল মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চে। কিন্তু আদালত সেই মামলা খারিজ করে দেয়। পরে ডিভিশন বেঞ্চে আইনি লড়াইয়ে সাফল্যের মুখ দেখেন রেশন ডিলাররা।
কোর্ট নির্দেশ দিলে শিক্ষক এবং অশিক্ষক (SSC) নিয়োগে বঞ্চিত সব চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগে প্রস্তুত রাজ্য (Mamata Government)। আদালত (High Court) বললে, সুপারিশের ফলে হওয়া ব্যতিক্রমী নিয়োগ বাতিল করে সেই শূন্যপদেও নিয়োগ করতে রাজি রাজ্য। মঙ্গলবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে এই দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি, শিক্ষা দফতরের সচিব। তিনি জানান, ভুল কর মেধাতালিকার ক্রম ভেঙে সুপারিশের ভিত্তিতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, যারা মেধাতালিকার ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন, তাঁরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই জন্য শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। রাজ্য ইতিমধ্যে ৫২৬১টি শূন্যপদ তৈরি করেছে। ১৬০০ পদ তৈরি হয়েছে শারীরশিক্ষা কর্মশিক্ষার পদপ্রার্থীদের জন্য। ওয়েটিং লিস্টে থাকা বঞ্চিত সব শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে আরও প্রায় ১৪ হাজার শূন্যপদ তৈরি করছে রাজ্য। ব্যতিক্রমী নিয়োগের জেরে র্যাঙ্ক জাম্প করা বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের এই পদে নিয়োগ করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী মন্তব্য, 'মুখম্যন্ত্রী চান না কেউ বঞ্চিত থাকুক কিংবা কারও চাকরি যাক। তাই মহামান্য আদালতের কাছে দুটি সুপারিশ পাঠিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের কাছে অনুরোধ সরকারের সদিচ্ছার উপর ভরসা করে আন্দোলন প্রত্যাহার করুন। পুজো বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে কাটান। আদালত যা নির্দেশ দেবে, সেই নির্দেশের সদর্থক সমাধান করতে আমরা প্রস্তুত।'
তিনি জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হবে। ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি হবে। কার্বন কপি ফিরছে, ওএমআর শিটে স্বচ্ছতা আসছে।
DA বা মহার্ঘ ভাতা মামলায় হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার (Mamata Government)। বকেয়া ডিএ প্রদান সংক্রান্ত ডিভিশন বেঞ্চের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের। মে মাসের রায় বহাল রেখেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে বৃহস্পতিবার আবার জানিয়ে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের তরফে অর্থাভাবের যুক্তি দেওয়া হলেও, সেই যুক্তি খারিজ হয়েছে আদালতে। ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ে পুজোর আগে কয়েক হাজার সরকারি কর্মীর মুখে হাসি ফুটবে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্ট যাবে তারা। তাই আগেভাগেই শীর্ষ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করতে চলেছে সরকারি কর্মী ফেডারেশন। যাতে তাঁদের না জানিয়ে কোনও শুনানি না হয় আদালতে। কর্মী সংগঠনের দাবি, 'শীর্ষ আদালতে মুখ পুড়বে সরকারের। বরং সুপ্রিম কোর্ট সুদ-সহ বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিতে পারে। কারণ বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ের উল্লেখ করে জানিয়ে দিয়েছে কেন ডিএ বকেয়া রাখা যাবে না।'
সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একজন জানান, ২০১৬ থেকে স্যাট, হাইকোর্ট, হাইকোর্ট স্যাট করে বকেয়া ডিএ প্রদান দেওয়া নিয়ে গড়িমসি করছে। বরং রাজ্যকে কটাক্ষের সুরে হাইকোর্ট বলেছে আপনারা নতুন করে আবেদন করছেন কেন? রায় পুনর্বিবেচনা মানে আগের রায়ে কোনও ভুল-ত্রুটি থাকলে সেটা সংশোধন। তাই আপনাদের এই আবেদন গৃহীত নয়য়। ২০ মে ২০২২-র রায় মেনেই ডিএ দিতে হবে।'
তিনি জানান, আমরা কোয়ান্টাম অফ ডিএ চাইনি। অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স মেনে প্রাপ্য ডিএ চেয়েছি। এদিকে, আদালত অবমাননার একটি পৃথক মামলা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে। সেই মামলার শুনানি ৯ নভেম্বর হবে। মে-অগাস্ট তিন মাসের মধ্যে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও, সেই রায় মানেনি সরকার। তাই আদালত অবমাননার এই মামলা।
প্রসূন গুপ্ত: কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন নয়, যেকোনও রাজ্যের পুর বা প্যাকেট ভোটের দায়িত্ব থাকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে সাধারণত পঞ্চায়েত দফতর থেকে অনুমোদন নিয়ে রাজ্য সচিবালয় মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে নির্বাচন কমিশনকে জানায় ,সেই মোতাবেক দিন ঠিক হয়। পশ্চিমবঙ্গের আগের পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল ২০১৮-তে। সেই ভোট ঘিরে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল বিস্তর। ভোটে শতকরা ৯০% শতাংশ আসন পেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু এই ভোট নিয়ে রাজ্যের এক বিরাট সংখ্যক ভোটারের ক্ষোভ ছিল যে ভোট হয়েছে গা-জোয়ারিতে।
এবারে পঞ্চায়েত ভোটের সময় হিসাবমতো ২০২৩-এর মে মাসে। কিন্তু শোনা যাচ্ছিল, যে ভোট এগিয়ে এসে হতে পারে ডিসেম্বর ২০২২-এ। কিন্তু এখনও তা ঠিক না হলেও রাজনৈতিক মহলের ধারণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট এগিয়ে আনলেও তা কোনওভাবে হয়তো ফেব্রুয়ারির আগে নয়। এখানেও প্রশ্ন থাকে ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক এবং তারপরে উচ্চ মাধ্যমিক। কাজেই পরীক্ষার আগে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করলে আইনি বাধায় ভোট প্রচার করতে পারবে না কোনও দলই। সুতরাং ঘুরেফিরে ফের ওই পরের গ্রীষ্মেই চলে আসছে।
অন্যদিকে অভিমত না যে করেই হোক তৃণমূল দ্রুত ভোট করে নিতে চাইবে। এই পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন লোকসভা ভোটের সেমিফাইনাল বলা যেতে পারে। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে হয়তো দলনেত্রী তার আভাস দিতে পারেন। একই দলের অন্য পরিকল্পনা রয়েছে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
অভিষেক সমস্ত প্রার্থী ঠিক করছেন বলেই খবর। তিনি চাইছেন নতুন স্বচ্ছ মুখ। অভিষেক জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে ভোটকে কেন্দ্র করে কোনওরকম বেচাল যেন না হয়। অবাধ ও সুস্থ নির্বাচন চাইছেন তিনি। একইসঙ্গে শুরু হচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি শিক্ষন শিবির নিউটাউনে। এখানে বিজেপির কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা আসছেন এবং আসন্ন ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে শিক্ষাদান হবে। খেলার রবিবারের পর রাজনীতির সোমবার যে ব্যস্ত থাকবে তা বলাই বাহুল্য।
শুক্রবার বকেয়া ডিএ-র (DA) দাবিতে নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ে বিক্ষোভ দেখান সরকারি কর্মীদের সংগঠন সংগ্রামী ঐক্য মঞ্চ। শনিবার তারাই রাজপথে নেমে প্রতিবাদ মিছিলে (Protest Rally) পা মেলালো। দাবি সেই একটাই, সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা অবিলম্বে প্রদান করুক মমতা সরকার (Mamata Government)। এদিনের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের প্রায় ২৯টি সংগঠন।
তবে শুধু প্রাপ্য ডিএ নয়, এদিনের মিছিলে স্বচ্ছভাবে স্থায়ী নিয়োগের দাবিও উঠেছে। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত আয়োজিত করা হয়েছিল এই মিছিল। মিছিল থেকে প্রশ্ন ওঠে, রাজ্য সরকার পুজো অনুদান দিলেও, প্রাপ্য ডিএ কেন মিলছে না? ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট মে মাসে নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে প্রাপ্য বকেয়া। চলতি মাসেই শেষ সেই সময়সীমা। যদিও ডিএ মেটাতে আরও সময় চেয়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ রাজ্য সরকার।
এই পদক্ষেপ ঘিরে ফের তুঙ্গে চাপানউতোর। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ৩১% মহার্ঘ ভাতার দাবিতে ৩০ অগাস্ট কর্মবিরতি পালন করবে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত পালিত হবে কর্মবিরতি। রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের এই সংগঠন।
সংগঠনের তরফে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে শুক্রবার অভিযোগ তোলা হয়েছে, ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা চাইতে গেলে সরকারি কর্মীদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা প্রত্যক্ষ সংগ্রামে নামবো। ৩০ তারিখের কর্মসূচির পর বৃহৎ আন্দোলনের পথে হাঁটবো।
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, 'কেন্দ্রের ডিএ এবং বাজার দরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব রাজ্যেই তাদের বকেয়া ডিএ দিচ্ছে। কিছু রাজ্য এখনও কিস্তিতে পিছিয়ে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩১% ডিএ বকেয়া। তারপরেও সরকারের ভূমিকা এবং বঞ্চনার প্রতিবাদে আমাদের কর্মসূচি। মূলত তিন দফা দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি পালন হবে।'