ঝাড়গ্রামে গিয়েই চমক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কথা ছিল বুধবার কুড়মিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধেতেই ডেকে নিলেন কুড়মি নেতাদের। যে প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঝাড়গ্রামের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কনভয়ে হামলার অভিযুক্ত কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো। কী কথা হল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে? তা কিন্তু স্পষ্ট করেননি রাজেশ।
তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচির সময় তাঁর গাড়িতে হামলা চালানোর পাশাপাশি মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে রাজেশ মাহাতোর বিরুদ্ধে। তাঁর সঙ্গে মমতার বৈঠক হওয়ায় রীতিমতো সরগরম রাজ্যরাজনীতি।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা নিয়ে একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমের তরফে রাজেশ মাহাতোকে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি তিনি স্বীকার করে নেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয়ে কথা হয়েছে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলকে কুড়মিরা সহযোগিতা করবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীও রাজেশের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার ছবি শেয়ার করেছেন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। ফলে বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার (Election Commissioner) বিতর্কে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjeee)। বৃহস্পতিবার পাটনা যাওয়ার সময় কলকাতা বিমানবন্দরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বিতর্কে মুখ খুলে বিরোধীদের কটাক্ষ করেন তিনি। এদিন তিনি স্পষ্ট বলেন, 'নির্বাচন কমিশনারকে সরাতে হলে ইমপিচমেন্ট করতে হবে। যা অতন্ত্য জটিল প্রক্রিয়া।' রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (Panchayat Election) পাশেই থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'রাজ্যে এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন এর আগে কখনও হয়নি।
মনোনয়ন পর্বে হিংসা অশান্তি অভিযোগ নিয়ে বারবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলগুলি। এ বিষয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র কটাক্ষ করেন বিরোধীদের। তিনি বলেন, 'মাত্র চারটি বুথে অশান্তি হয়েছে, মোট ২ লক্ষ ৩৪ হাজার প্রার্থী। ৪ টি বুথে ঝামেলায় দু তিনজন মারা গিয়েছেন। তাও একটি বুথে দুজন তৃণমূল কর্মী। এরপরে তিনি বিরোধীদের কটাক্ষ করে আরও বলেন, 'যত বাংলাকে বঞ্চনা করবেন, যত বাংলাকে লাঞ্চনা করবেন মনে রাখবেন ভোটটা মানুষ দেবে, যত ঘাটাবে, যত পেছনে লাগবে, মানুষ তত ভোট দেবে। মানুষের এজলাসে বিচার হবে।'
পাশাপাশি এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য পুলিশের পাশে থেকেই ভোটে লড়ার বার্তা দেন মমতা। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সমস্ত পদ্ধতি মেনেই যা হবার হয়েছে। পাশাপাশি তিনি রাজ্য পুলিসের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, 'বাংলার পুলিশ যে কোন রাজ্যের পুলিশের থেকে দক্ষ।'
'কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি খুঁজে নিন।' ডিএ (DA) বা মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjeee)। একই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ডিএ ‘বাধ্যতামূলক’ নয়। এখানেই শেষ নয় রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে অনেকের। সেসবের পিছনে ডিএ আন্দোলনকেই দেখছেন তিনি।
মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন চলছেই। তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে এই আন্দোলন। এই আন্দোলনকে নিয়ে প্রকাশ্যে মমতা বন্দোপাধ্যায় ও অভিষেককে অনেক বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি খুঁজে নিন না। তা হলে আরও বেশি বেতন পাবেন, আরও বেশি ডিএ পাবেন। আমাদের রাজ্য সরকারের চাকরিতে যখন ঢুকেছেন, তখন এখানে যা নিয়মকানুন রয়েছে সেই মতো করছি।’
সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা আরও জানালেন, রাজ্যের কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে ভালবেসেই তিনি বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দিতেন। সরকারি কর্মচারীদের একাংশ কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে সরব অনেক দিন ধরেই। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তারই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরির সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে মমতা আরও একটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারীদের কাজের পর্যালোচনা করে। পারফরম্যান্স ভাল না হলে চাকরি চলে যায় উচ্চপদস্থদেরও। আমরা তো ওসব এখনও করি না।' ডিএ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, '১২৬ শতাংশ ডিএ দিয়েছি। ষষ্ঠ পে কমিশনের টাকাও দিয়ে দিয়েছি।'
যদিও এ বিষয়ে মমতাকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে ডিএ আন্দোলনকারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষে এক আন্দোলনকারী কিঙ্কর অধিকারী বলেন, 'ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকার। হাইকোর্ট সেই নির্দেশও দিয়েছে। ওনার সরকারে সরকারি কর্মচারীদের চোর-ডাকাত বলেছেন, ওনার উচিত পদত্যাগ করা।' এছাড়া চাকরি হারানোর পিছনে ডিএ আন্দোলন, মমতার এই মন্তব্যের পাল্টা তিনি বলেন, 'দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার, সেটা বারবার কোর্টে প্রমাণ হয়েছে, অসৎ উপায়ে চাকরি দিয়ে জেলে রয়েছেন ওনার ঘনিষ্ঠ নেতা। আদালত সঠিক কাজ করেছে।'