মাঝরাতে গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা। সকাল হতেই মাথায় ব্যান্ডেজ বাধা অবস্থায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ৯টার একটু পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে যান গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনের ওই এলাকায়। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই এলাকা পরিদর্শন করেন। দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। মৃতদের পরিবার পিছু ৫লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসায় ১ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে। রাতেই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে মৃতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”রমজান মাসে এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা সকলে অত্যন্ত মর্মাহত। অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা এটা এবং বেআইনি কাজের জন্য এই ঘটনা ঘটল। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া অ্য়াকশন নেওয়া হোক। উদ্ধারকাজ দ্রুত হচ্ছে।”
সাতসকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন বেআইনি ভাবে তৈরি করা হচ্ছিল বহুতল সেকারণেই এই ঘটনা।
মেয়র জানিয়েছেন, কোনও অনুমতি না নিয়েই প্রমোটার বহুতলটি নির্মাণ করছিল। পুরো ঘটনার তদন্ত হবে। তবে আগে ঘটনাস্থল থেকে আটকে থাকাদের উদ্ধার করা জরুরি। কিন্তু কীভাবে পুরসভার নজর এড়িয়ে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে গার্ডেনরিচ মেয়রের নিজের এলাকা। সেখানে এই ধরনের ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
ফিরহাদ হাকিম বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে উদ্ধারকাজ আগে শেষ করতে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। কিন্তু ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় সেখানে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের পৌঁছতে সময় লেগেছে। স্থানীয়রাই উদ্ধারকাজ শুরু করে দিয়েছিল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম আরও জানিয়েছেন, বাম আমল থেকেই বেআইনি ভাবে নির্মাণ শুরু হয়েছিল এলাকায়। এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে পরিস্থিতি। তারপরেও কোন গলিতে কে বেআইনিভাবে নির্মাণ করছে তা বোঝা অত্যন্ত কঠিন। দোতলার অনুমোদন নিয়ে পাঁচ তলা বাড়ি বানানো হচ্ছিল। সেকারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
প্রসূন গুপ্তঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের দীর্ঘ ৪০ বছরের আলাপ। অত্যন্ত কাছের থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেছি। বহুবার তাঁর বাড়িতে গিয়েছি কাজে বা আমন্ত্রণেও। তাঁর সঙ্গে বহু সফরের অভিজ্ঞতা আছে কাজেই এখন, যখন বৃহস্পতিবার তিনি পরে গিয়ে মারাত্মক আহত হন, তখন বিভিন্ন মহল বিভিন্ন ভাবে তার বিবরণ দিচ্ছে। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন, তিনি কি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন নাকি বাড়িতে হঠাৎ মাথা ঘুরে পরে গেলেন অথবা কেউ পিছন থেকে ধাক্কা দিলো?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংঘাতিক মানসিক শক্তির অধিকারী। যে কোনও মহিলার থেকেও সৃষ্টিশীল শক্তি তাঁর বেশি। রোজ বাড়িতে বা ট্রেডমিল মারফত প্রচুর হাঁটাহাঁটি করেন যা কল্পনাতীত। সেই তিনি সন্ধ্যায় হাটতে গিয়ে পরে গেলেন এবং মারাত্মক আঘাত পেলেন, বিষয়টি আমি যেন বিশ্বাস করতে পারছি না। তিনি পরে যাওয়ার পরেই তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর ফেটে যাওয়া মাথায় তিনটি এবং নাকে একটি সেলাই করা হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। আপাতত স্থিতিশীল রয়েছেন, শুক্রবার দুপুর বারোটায় এই খবর পেলাম কালীঘাট সূত্রে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচুর পরিশ্রম করতে পারেন এবং একটি শিশুর থেকেও কম খাওয়া দাওয়া করেন। সারাদিন চা, কখনও এক আধটা বিস্কুট কিংবা ছোলা ভাজা খান। যা খাওয়ার রাতে খান। ইদানিং যথেষ্ট টেনশনে রয়েছেন। সামনে নির্বাচন। এছাড়া দলের অন্দরে নানান চাপ ইত্যাদি আছেই। মমতা যা দশ বছর আগে পারতেন তা আজকেও একই ভাবে চালিয়ে যাবেন এটা ভাবাও ভুল। কাজেই নিজের শরীরের দিকে নজর তো রাখতেই হয়। যা তিনি পরোয়া করেন না।
বৃহস্পতিবার প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন একডালিয়ায়। খুবই ক্লান্ত লাগছিলো। সুব্রতবাবুর কথা স্মরণ করে ভীষণই আবেগতাড়িত হয়ে পড়ছিলেন। কিন্তু একই সাথে তাঁকে ক্লান্তি সম্ভবত চেপে ধরেছিলো। ভাষণ দিতে গিয়ে আটকে যাচ্ছিলো কথা। আমার কেন মনে হচ্ছিলো উনি কি অসুস্থ বোধ করছেন? সব মিলিয়ে পুরাতন মমতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। তারপর বাড়ি ফিরেই তো এই কান্ড।
তবে চিকিৎসকদের কথা, তাঁর মনে হতে পারে পিছন থেকে কেউ ধাক্কা দিয়েছে। কিন্তু তেমনটি নয়। আসলে নাকি মাথা ঘুরে যাওয়ার সময়ে এতটাই বিশৃঙ্খল ছিল তাঁর মগজশক্তি যা মনে হতে পারে কেউ ধাক্কা দিয়েছে। সে যাই হোক না কেন দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে বিভিন্ন রাজনৌতিক ও অন্য পেশার ব্যক্তিরা তাঁর সুস্থতা কামনা করেছে। আমরাও কামনা করি।
কপালে চারটে সেলাই নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসএসকেম হাসপাতালে চিকিৎসকরা মুখ্যমন্ত্রীর এই পড়ে যাওয়ার নেপথ্যে ‘পুশ ফ্রম বিহাইন্ড' কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন। অর্থাৎ পিছন থেকে ধাক্কা। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল বিভিন্ন মহলে। বাড়িতে কীভাবে এই ঘটনা ঘটতে পারে, তা নিয়ে নানামহলে নানা প্রশ্ন। এরই মাঝে ‘পুশ ফ্রম বিহাইন্ড’-এর ব্যাখ্যা দিল এসএসকেএম।
এসএসকেএম-এর ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিষয়টা আদতে পিছন থেকে কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন তা একেবারেই নয়। উনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছেন। সেই সময় কেউ ধাক্কা দিলে যেমন অনুভূত হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সেরকম মনে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকদের। সেটাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু সেটা কোনওভাবেই কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন তেমনটা নয়।
পুলিস সূত্রে খবর, চিকিৎসকের তরফে কোনও ধাক্কা দেওয়া হয়নি জানানোই, আপাতত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ধাক্কা তথ্য না থাকলে অভিযোগ দায়ের করবে না পুলিস। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এসেছিলেন কলকাতা পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েল।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হয়েছিল হাসপাতালে। তাঁর কপালে গুরুতর আঘাত ছিল। কপাল ফেটে রক্ত বেরোয়। হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এমআরআই, সিটিস্ক্যান করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই হইহই পড়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি শেয়ার করে তাঁর আরোগ্য কামনা করতে অনুরোধ জানিয়েছিল অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী সকলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর আরোগ্য কামনা করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই তাঁর চিকিৎসায় কার্ডিও,মেডিসিন, সহ আরও বেশ কয়েকটি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। আপাতত শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল মুখ্যমন্ত্রীর। তবে আজ, শুক্রবার ফের শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীকে।
গুরুতর আহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটের বাড়িতে হাঁটাহাটি করার সময় আচমকা পড়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনটাই সূত্রের খবর। কপাল ফেটে রক্ত বেরোতেই তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, উডবার্ন ওয়ার্ডের সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে ভর্তি রয়েছেন তিনি। একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আঘাত কতটা গুরুতর তা খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকরা। এমআরআই, সিটি স্ক্যান করা হবে।
লোকসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার সংবাদে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন অনুরাগীরা। এই দুঃসংবাদ জানানো হয়েছে তৃণমূলের সোশাল মিডিয়া পেজে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কপাল থেকে নাক বেয়ে রক্ত পড়ছে, হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে রয়েছেন মমতা। ক্যাপশনে লেখা, 'আমাদের চেয়ারপার্সন গুরুতর আহত হয়েছেন। উনার জন্য প্রার্থনা করুন আপনারা।' তাঁর সুস্থতা কামনায় ভক্তরা ভিড় করেছেন হাসপাতালে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণ কলকাতায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মূর্তির উদ্বোধন করেন মমতা। এর পর তিনি বাড়ি চলে যান। ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরাই দ্রুত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছয়। এই নিয়ে পর পর বেশ কয়েক বার দুর্ঘটনায় আঘাত পেলেন তিনি।
ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস। বেশ কয়েকটি আসনে বদলানো হলো প্রার্থী। ফলে বিদায়ী অনেক সাংসদই টিকিট পেলেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় একঝাঁক নতুন মুখ। নজিরবিহীনভাবে লোকসভার ৪২ প্রার্থী নিয়ে র্যাম্পে হাঁটলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রার্থী তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, দেখে নিন একনজরে-
কোচবিহার থেকে লড়বেন- জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া
আলিপুরদুয়ার- রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বড়াইক
জলপাইগুড়ি- সাংসদ নির্মল চন্দ্র রায়
দার্জিলিং- গোপাল লামা
রায়গঞ্জ- কৃষ্ণ কল্যানী
বালুরঘাট- মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র
মালদা উত্তর- প্রাক্তন আইপিএস প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়
মালদা দক্ষিণ- শানোয়াজ আলী রেহান
জঙ্গিপুর- খলিলুর রহমান
বহরমপুর- ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান
মুর্শিদাবাদ- আবু তাহের খান
কৃষ্ণনগর- মহুয়া মৈত্র
রানাঘাট- মুকুটমণি অধিকারী
বনগাঁ- বিশ্বজিৎ দাস
ব্যারাকপুর- পার্থ ভৌমিক
দমদম- প্রফেসর সৌগত রায়
বারাসত- ডক্টর কাকলি ঘোষ দস্তিদার
বসিরহাট- হাজী নুরুল ইসলাম
জয়নগর- প্রতিমা মণ্ডল
মথুরাপুর- যুবনেতা বাপি হালদার
ডায়মন্ড হারবার- তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
যাদবপুর- সায়নী ঘোষ
কলকাতা দক্ষিণ- মালা রায়
কলকাতা উত্তর- সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
হাওড়া- ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়
হুগলি- অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়
আরামবাগ- মিতালী বাগ
তমলুক- আইটি সেলের রাজ্যের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য
কাঁথি- উত্তম বারিক
ঘাটাল- দীপক অধিকারী (দেব)
মেদিনীপুর- জুন মালিয়া
ঝাড়গ্রাম- কালিপদ সরেন
পুরুলিয়া- শান্তি রাম মাহাতো
বর্ধমান-দুর্গাপুর- কীর্তি আজাদ
আসানসোল- শত্রুঘ্ন সিনহা
বাঁকুড়া- অরূপ চক্রবর্তী
বোলপুর- অসিতকুমার মাল
বীরভূম- শতাব্দী রায়
বিষ্ণুপুর- সুজাতা খাঁ
সুপার সানডে! লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে একেবারে কোমর বেঁধে প্রচারের ময়দানে নেমেছে বিজেপি-তৃণমূল। আজ, 'জনগর্জন সভা' তৃণমূলের। আর সেই সভায় যোগ দিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী-সমর্থকরা ইতিমধ্যে এসে উপস্থিত হয়েছেন ব্রিগেড ময়দানে। ক’দিন আগে বিজেপি রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ২০টি আসনের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছিল। সূত্রের খবর, আজকের সভামঞ্চ থেকে তৃণমূল ৪২টি আসনেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিতে চলেছে।
৪২ এ ৪২-এর লক্ষ্যে 'জনগর্জন সভা' থেকেই প্রচারে নেমে পড়বেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এদিন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সভা থেকেই প্রার্থী তালিকা তৃণমূল সুপ্রিমো ঘোষণা করা হবে। ইতিমধ্যে বাংলার ২০ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে চমক দিয়েছে বিজেপি। পাল্টা ব্রিগেডের ময়দানই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার করবেন সুপ্রিমো। ৪২ টি লোকসভা আসনেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৭ই মার্চ বিজেপিতে যোগদান করেছেন। আবার তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তাপস রায়ও ঘাসফুল শিবির ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। পাল্টা বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীকে ঘরে তুলেছে তৃণমূল। ব্রিগেডের মঞ্চে আরও বড় কোনও চমক থাকতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
একেবারেই হাইভোল্টেজ রবিবার। একদিকে তৃণমূলের 'জনগর্জন' সভা। আর অন্যদিকে তৃণমূলের ব্রিগেডের পালটা আজ সন্দেশখালিতে সভা করবেন শুভেন্দু অধিকারী। উপস্থিত থাকবেন সন্দেশখালির মহিলারা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই সভা হবে।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। দিন ঘোষণা না হলেও একেবারে জোরদার প্রচারে নেমে পড়েছে ডান-বাম রাজনৈতিক দলগুলি। বিশেষ করে বাংলায় সন্দেশখালির ইস্যুকে কেন্দ্র করে লাগাতার বিক্ষোভ-মিছিল, আন্দোলনে নেমেছিল বঙ্গ বিজেপি। সন্দেশখালির বুকেই সভা করবেন আজ শুভেন্দু-সুকান্তরা।
এক ইঞ্চি ময়দান ছাড়তে নারাজ ঘাসফুল শিবিরও। ব্রিগেডের 'জনগর্জন' সভার মধ্যে দিয়ে একেবারে পুরোদমে লোকসভা নির্বাচনে নেমে পড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, ব্রিগেডের ময়দান থেকেই সন্দেশখালি ইস্যুতেও বার্তা দিতে পারেন তাঁরা, এমনটাই সূত্রের খবর।
নতুন রূপে তৈরি করা হয়েছে 'জনগর্জন' সভা মঞ্চ। ৩৩০ ফুট লম্বা র্যাম্প মূল মঞ্চের সামনে তৈরি হয়েছে। মূলত বিদেশের বিভিন্ন মিউজিক কনসার্ট কিংবা ফ্যাশন শো'তে এমন র্যাম্প দেখা যায়। সেই মঞ্চ তৈরি হয়েছে ব্রিগেডের। আর এই র্যাম্প ধরেই জনতার মাঝে পৌঁছে যাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অন্যদিকে মূল মঞ্চ লম্বায় ৭২ ফুট, মাটি থেকে ১২ ফুট উপরে তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চের পিছনে থাকছে এলসিডি। যাতে ব্রিগেডের সমস্ত কোণা থেকে সবাই দেখতে পারেন। শুক্রবার রাত থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মীরা আসতে শুরু করেছে।
যদিও সন্দেশখালিতে সভার আগে মহিলাদের ভয় দেখানোর অভিযোগ সামনে আসছে। বিজেপির দাবি, সন্দেশখালির মানুষ যাতে বিজেপির সভায় না যেতে পারে সেজন্য ভয় দেখানো হচ্ছে। যদিও শাসকদলের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, বাস কিংবা অন্য কিছু তো তৃণমূলের ব্রিগেডের জন্য পাওয়া যাবে না। সন্দেশখালির মহিলারাই মাঠ ভরাবেন বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। তাঁর সঙ্গে এদিন সন্দেশখালির সভায় থাকবেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
বাংলার একাধিক জেলায় হঠাৎই নিষ্ক্রিয় আধার কার্ড! এমন অভিযোগ উঠতেই মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-সহ কেন্দ্রীয় সরকার ডার্টি গেমস খেলছে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও ইতিমধ্যে আধার সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তারপরেও আধারকে ইস্যু বানিয়ে হাওয়া গরম করছেন মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। সংখ্যালঘু, তফশিলি তাস খেলে কি ভোটের আগে হাওয়া ঘোরানোর চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির। মতুয়া সম্প্রদায়কেও পাশে টানার চেষ্টায় মমতা। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, সন্দেশখালি-কাণ্ডে ভোটের আগে ব্যাকফুটে শাসক দল। তাই কি নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে হাওয়া গরম করছেন মুখ্যমন্ত্রী, উঠছে প্রশ্ন।
আধার-কাণ্ডে বিহিত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীকে, নবান্ন থেকে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আধার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই দাবি খোদ সামাজিক মাধ্যমে করছেন বিরোধী দলনেতা। তারপরেও কেন এত চড়া সুর মুখ্যমন্ত্রীর, বিরোধী মহলে উঠছে প্রশ্ন। সন্দেশখালি-কাণ্ডে কি পায়ের তলায় মাটি সরেছে শাসক দলের? তাই কি আধার নিয়ে সোচ্চার হয়ে পাশে থাকার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, এই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই ইস্যুতে অভিযোগ আবার গুরুতর। তাঁর দাবি, ভোট পাগল মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের জন্য উন্মাদ হয়ে গিয়েছেন। নথি তুলে তাঁর দাবি, কোনও আধার কার্ড বাতিল হয়নি। টাকা দিয়ে এই কাজ রাঁচি থেকে করিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গুরুতর অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। এই কাজে রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমারের ভূমিকাও দেখছেন শুভেন্দু। মমতার প্রতিশ্রুতি আধারের বিকল্প কার্ড দেবে তাঁর সরকার। এই ঘোষণাকেও তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা।
এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় সন্দেশখালি ইস্যুতে। জাতীয় এসসি কমিশনের পর জাতীয় মহিলা কমিশনও বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে মুখ খুলেছেন। যদিও সন্দেশখালিকে গুরুত্বহীন বানাতে চক্রান্ত, বিরোধীদের উসকানি দাবি করে আসরে রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শাসক দলের নেতারা। তাই কি ঘুরিয়ে আধার কার্ডকে ইস্যু বানিয়ে ভোটার থুরি মানুষের মন জয়ের চেষ্টা, উঠছে প্রশ্ন।
প্রসূন গুপ্তঃ রাজনৈতিক জটিলতা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না তৃণমূল নেতৃত্বের। কখনও ইডি বা সিবিআই, কখনও সন্দেশখালি অথবা দলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান। এরই উপর অভিনেতা, সাংসদ দেবের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার আভাস। সম্প্রতি বাজেট অধিবেশনে দেব লোকসভায় বলেই ফেলেন যে, আগামীতে যেন তাঁর কেন্দ্র ঘাটালের উন্নয়নের দিকে নজর দেয় সরকার। কারণ নাকি তাঁকে আর পাওয়া যাবে না।
এখানে প্রশ্ন ১) ফের বর্তমান সরকারই যে ফেরত আসবেন, তা দেব কি পরোক্ষে জানিয়ে দিলেন? ২) তিনি কি আর রাজনীতিতে থাকতে চাইছেন না? এর পরেই দেব সংবাদ তুষের আগুনের মতো ছড়িয়ে পরে। যদিও বেশ কয়েকদিন ধরেই বেসুরো ছিলেন তিনি। শোনা গিয়েছে, দেবের এই অনাগ্রহের পর নাকি উত্তর-পূর্বের কোনও এক অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী দেবকে ফোন করেন এবং বিজেপিতে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। উত্তরে দেব কি জানিয়েছিলেন তা অবিশ্যি জানা যায় নি।
শোনা গিয়েছিল, আরও দুটি ঘটনা ১) কয়েক মাস আগে দেবের প্রোডাকশনের ছবি প্রজাপতি নন্দনে রিলিজ করতে দেওয়া হয় নি, এতে ভয়ঙ্কর ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। তারপরেই দলের অতি অপছন্দের কোনও এক প্রচার মাধ্যমে তিনি উপস্থিত থেকে নাকি এমন সব ছবি তুলে প্রকাশ করেন যাতে দল খুশি হতে পারেনি। ২) তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া মিঠুন চক্রবর্তীকে নিজের ছবিতে নেওয়া এবং তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, দলের একাংশের আপত্তি ছিল। এসব কারণ বাদেও তাঁর কেন্দ্র ঘটালে কোনও এক নেতা নাকি দেবকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। কাজেই সব মিলিয়ে অভিমানী দেব নাকি আর রাজনীতিতে থাকবেন না শোনা যাচ্ছিলো।
শনিবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবের সঙ্গে নিজের অফিস ক্যামাক স্ট্রিটে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেন এবং সেখান থেকে বেরিয়ে দেব চলে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সবশেষে মধুরেণ সমাপয়েৎ। দেব ফের প্রার্থী হচ্ছেন ঘটালে।
তবে একটি কথা না বললেই নয়, তৃণমূল দল চলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এবং তাঁর ছবি বহন করেই দলের এতো শক্তিবৃদ্ধি, তা সত্বেও দেব কে নিয়ে এতো ভাবনার কি আছে? উত্তর বোধহয় জানা থাকলেও কেউ মুখে আনবেন না তৃণমূলের।
সমস্ত জল্পনার অবসান। দলেই থাকছেন দেব। সূত্রের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনেতা সাংসদ দেব জানিয়েছেন দল যেখানে দাঁড়াতে বলবে সেখানেই দাঁড়াবেন তিনি।দীর্ঘ ৫o মিনিটের বৈঠকে মিলল সমাধান সূত্র। এমনটাই খবর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে।
শনিবার বিকেলে ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা কালীঘাটে গেলেন দলের তারকা সাংসদ দেব। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন বলে খবর। বেশ কয়েকমাস যাবৎ ঘাটাল লোকসভার একাধিক নেতার সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয় সাংসদ দেবের। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বাড়িতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বৈঠকে কড়া ভাষায় জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতাকে সতর্ক করেন।
সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'দেব ভালো ছেলে, ওকে কেন বিরক্ত করছেন।' গত ৩ রা ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত তিনটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতি থেকে ইস্তফা দেন দীপক অধিকারী ওরফে দেব। জল্পনা শুরু হয় এবার কি তাহলে রাজ্যসভা? লোকসভা অধিবেশনের শেষ দিনে দেবের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট একাধিক জল্পনা উসকে দেয়। কেউ কেউ বলতে শুরু করেন এবার আর রাজনীতি নয়, একেবারে অভিনেতা দেবকেই দেখা যাবে।
যদিও সূত্রের খবর, ৫০ মিনিটের বৈঠকে দলের বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে এদিন আলোচনা করেছেন দেব। সেই আলোচনা চলাকালীন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেব জানিয়েছেন, নির্বাচনে লড়াই করতে রাজি তিনি। বৈঠক শেষে হাসি মুখেই বেরিয়ে যান দেব।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি পালনে তোড়জোড় শুরু প্রশাসনের। মুখ্য়মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় শুরু হতে চলেছে ১০০ দিনের ক্য়াম্প। শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করতে ক্যাম্প করবে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। যাদের এখনও পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজ করেও বকেয়া টাকা রয়েছে শ্রমিকদের। তাঁরা তাঁদের সঠিক প্রমাণ দিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন এই ক্যাম্পে। তাঁদের নাম রেজিস্ট্রেশন করানো হবে এই ক্যাম্পে। তারপরেই তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য় টাকা পাবে।
আগামীকাল অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সেই রেজিস্ট্রেশন ক্যাম্প। জেলার সমস্ত লোক সভা কেন্দ্রে হবে এই রেজিস্ট্রেশন ক্যাম্প। এই ক্য়াম্প শেষ হওয়ার পর জেলা প্রশাসন থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে কারা কারা ১০০ দিনের বকেয়া টাকা পাবে।
প্রসূন গুপ্ত: নরেন্দ্র মোদী লোকসভা চলাকালীন আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে দাঁড়ায় এই যে, এপ্রিলের আগে ভোট হবে না, কিন্তু ইতিমধ্যেই দেশের ৫৬টি রাজ্যসভার আসন খালি হচ্ছে, কাজেই তা ফেব্রুয়ারির মধ্যে পূর্ণ করতে হবে। আগামী ২৭ মার্চ দেশের এই কটি আসনে ভোট যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৫টি আসনে নির্বাচন হতে চলেছে।
রাজ্যসভার ভোট দেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র বিধায়কদের আছে। এই মুহূর্তে বাংলার বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রবল শাক্তিশালী এবং তাদের দলে ২২৫ জন বিধায়ক রয়েছে (বিজেপি থেকে ভেঙে বেরিয়ে আসা ১২ জন তার মধ্যে আছে)। অন্যদিকে বিজেপির শক্তি ৬৬ জনের মোটামুটি। অতএব তৃণমূল ৪ জন এবং বিজেপি ১ জন সাংসদ বেছে নিতে পারবে। প্রশ্ন হচ্ছে কারা হতে পারেন আগামীর রাজ্যসভার সাংসদ।
গুঞ্জনে বহু নাম ঘোরাফেরা করছে। সম্প্রতি অমিত শাহ দিল্লিতে সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে বাংলার দায়িত্বে থাকা অন্য নেতাদের সঙ্গেও। সেখানে নাম উঠে এসেছে মূলত দুই ব্যক্তির, মিঠুন চক্রবর্তী এবং অনির্বান গাঙ্গুলির। অবিশ্যি দুটি নাম ঘোরাফেরা করছে মানেই তাদের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়া হবে এমন নিশ্চয়তা নেই। তবু নাম তাদের রয়েছে।
অন্যদিকে তৃণমূলের প্রার্থী ঠিক করবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজগৃহে অনেক্ষণ আলোচনা করেছেন মমতা। যাঁরা সাংসদ ছিলেন যথা শুভাশিস চক্রবর্তী, ড.শান্তনু সেন, নাদিমুল হক এবং আবির বিশ্বাস। এ ছাড়া তৃণমূলের একাংশের ভোটে জিতেছিলেন
কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র তথা আইনজীবী অভিষেক মনুসিংভী। মমতার অত্যন্ত কাছের কংগ্রেস নেতাকে ফের ফিরিয়ে আনতে পারেন এমন গুঞ্জন বাজারে আছে সে ক্ষেত্রে তৃণমূল তিন জন প্রার্থী দিতে পারবে। অথবা মমতা ৪ জন তৃণমূলকেই পাঠাবেন রাজ্যসভায়। বাদের তালিকা রয়েছে বলে খবর। বাদের খাতায় শান্তনু সেন এবং নাদিমুল রয়েছেন। যদি এমনটি হয় তবে নতুন মুখ কে হতে পারবেন ? উত্তরে জানা যাচ্ছে, এমন কাউকে মমতা পার্লামেন্টে পাঠাতে চাইছেন যিনি দলের ও দেশের হয়ে কথা বলতে পারবেন। আর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চিত্র পরিষ্কার হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের জন্য সাময়িক বন্ধ ভিআইপি রোডে চলা অরেঞ্জ লাইনের মেট্রোর কাজ। মেট্রো সূত্রে খবর, দিল্লি সফরে যাওয়ার জন্য ভিআইপি রোড ব্যবহার করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মেট্রো কাজ বন্ধ রাখার জন্য আবেদন করা হয় বিধাননগর পুলিস কমিশনারেটের পক্ষ থেকে। সেই কারণের সোমবার বেলা ১২ টা থেকে বন্ধ থাকছে মেট্রোর কাজ।
প্রসঙ্গত, বর্ধমান সফর থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। ড্যাশবোর্ডের ধাক্কার মাথায় সামান্য চোটও পান তিনি। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার নিরাপত্তার কোনও খামতি রাখতে নারাজ প্রশাসন। পুলিস সূত্রে খবর, সেই কারণেই মেট্রোর কাজ বন্ধ রাখার জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে মেট্রো কর্তৃপক্ষ অরেঞ্জ লাইনের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নির্মাণ বন্ধের কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বলেই জানান মেট্রো আধিকারিকেরা।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরে মেট্রোর কাজ বন্ধ রাখা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। রাজ্য প্রশাসনকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু লেখেন, এই লাইনের কাজ বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। হাজার হাজার নয়, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ গাড়ি এই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করে। এর পরেই বিরোধী দলনেতা বিধাননগর পুলিসের উদ্দেশ্যে ২টি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। লেখেন, নির্মাণ কাজ যদি নিরাপদ না হয়, তাহলে ট্রাফিক বিভাগ জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য আগে কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কি চিন্তার বিষয় নয়?
মেট্রো রেলওয়ের নির্মাণ কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার কথা বলে আপনারা মুখ্যমন্ত্রীকে কী বার্তা দিতে চাইলেন? হীরক রানি যেখানেই যাবেন সেখানে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে?
আর এখানেই ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মেট্রোর মত এতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য বন্ধ রাখা যায়। যেখানে দেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে, সেখানে বিধাননগর পুলিসের এই নির্দেশিকা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। তা বলাই বাহুল্য।
বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবে না তৃণমূল। তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা নিয়ে তাঁকে কিছু না জানানোয় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অসৌজন্যের অভিযোগও তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী৷ এমতাবস্থায় একই দিনে মালদহ জেলায় মুখোমুখি হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধী। আগামী ৩১ শে জানুয়ারি ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা নিয়ে বিহার থেকে মালদহ জেলায় প্রবেশ করবেন রাহুল গান্ধী। আর সেদিনই মালদহ শহরের ডি এস এ ময়দানে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। আর একই দিনে দুই দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীদের সভাঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
৩১ শে জানুয়ারি বিহারের কাঠিয়ার থেকে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর রতুয়া হয়ে ইংরেজ বাজারে আসবেন রাহুল গান্ধী। রাত্রিবাস করবেন মালদহের সুজাপুরে। এরপর ১ তারিখ মুর্শিদাবাদে পৌঁছবে ন্যায়যাত্রা।
জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালিসাধন রায়ের অভিযোগ, তৃণমূল আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আর সেই কারণে তাদের কর্মসূচি লন্ডভন্ড করার জন্য ইচ্ছে করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা রাখা হয়েছে। পুলিস প্রশাসনকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলাই উদ্দেশ্য। পাল্টা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শুভময় বসু বলেন, এই রাজ্যে কংগ্রেস বিষময় রাজনীতি করছে। রাহুল গান্ধী কর্মসূচি করবে, মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব প্রশাসনিক সভা করবে। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূল থেকে সরে যাচ্ছে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তৃণমূল, আর সেই কারণেই কংগ্রেসের কর্মসূচির দিন ইচ্ছে করে প্রশাসনিক সভা রাখা হয়েছে। কটাক্ষ বিজেপি দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুরির।
বরাবরই মালদহ জেলা ছিল কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি। ২০১৮ সালে কংগ্রেসের কাছ থেকে মালদহ জেলা পরিষদ ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। ২০১৯ সালে কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্র জিতে যায় বিজেপির খগেন মুর্মু। দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে মাত্র ৮ হাজার ভোটে জয়ী হন কংগ্রেসের আবু হাশেম খান চৌধুরী।
২০২১ সালে জেলার বারটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আটটিতে জয়লাভ করে তৃণমূল, চারটি যায় বিজেপির দখলে। নিজেদের শক্ত ঘাঁটিতে শূণ্য হাতে ফিরতে হয় কংগ্রেসকে। আর সেই হারানো মাটি উদ্ধার করতে রাহুল গান্ধীর এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে এমনই কংগ্রেস সূত্রে খবর। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে তৎপর তৃণমল।
ফের আঘাত পেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর গাড়ির সামনে হঠাৎ অন্য এক গাড়ি চলে আসায় ব্রেক কষতেই মাথায় চোট পান তিনি। তবে এই চোট তেমন গুরুতর নয় বলেই জানা গিয়েছে। আজ অর্থাৎ বুধবার গোদার জনসভা থেকে বেড়োনোর সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা সেরে কলকাতা ফিরেছেন।
২৪ জানুয়ারি, বুধবার বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা ছিল। সেখানে পৌঁছতে হাওড়ার ডুমুরজলা থেকে এদিন হেলিকপ্টারে চেপে রওনা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর কলকাতায় ফেরার সময় গাড়িতে চেপে রওনা দেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে হঠাৎ একটি গাড়ি চলে আসায় তাঁর গাড়ি জরুরী ভিত্তিতে ব্রেক কষতেই মাথায় আঘাত পান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কপাল উইন্ড স্ক্রিনে ঠুকে যায়। এরপর বেশ কিছুক্ষণের জন্য তাঁর কনভয় দাঁড়িয়ে যায়। প্রায় দেড় মিনিট পর ফের কনভয় কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত গুরুতর নয়। সামান্য আঘাত পেয়েছেন তিনি। কনভয়ের সামনে কী করে গাড়ি চলে এলো তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তবে জানা যাচ্ছে, কুয়াশার কারণেই দুর্ঘটনার কবলে পরে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি।