টাকি সফরের (Taki Tour) দ্বিতীয় দিনে অভিনব জনসংযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee)। প্রথমে ইছামতীর (Ichamati River) বুকে লঞ্চে সফর। তারপর হাসনাবাদ ব্লকের খাঁ পুকুর এলাকার একটা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে খোশ গল্প এবং প্রগতি সংঘের মাঠে গিয়ে স্থানীয়দের শীত পোশাক বিতরণ। খেজুর পাতা দিয়ে চাটাই তৈরি শেখা এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসেই ট্যাংরা মাছের ঝোল, আলু আর কচুর তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়া (Lunch at Hasnabad)। এভাবেই পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) মাস কয়েক আগে জনসংযোগে জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর 'দিদি'কে হাতের কাছে পেয়ে নিজেদের অভাব-অভিযোগও জানালেন গ্রামবাসীরা।
এদিন খাঁ পুকুরের যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন, সেখানকার এক কর্মী এলাকার রাস্তার উন্নয়ন এবং জলের জোগান প্রতুল রাখার আবেদন জানান। উনি এসেছেন ভালো লেগেছে, স্কুল পরিদর্শন করে গিয়েছেন ভালোই লাগছে। ক্লাসরুমে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রী বাচ্চাদের হাতে জামাকাপড় তুলে দিয়েছেন এবং কিছু প্রশ্ন করেন। এদিন জানান প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক। বুধবার যে বাড়ির উঠোনে বসে মুখ্যমন্ত্রী ভাত খেয়েছেন, সেই বাড়ির গৃহকর্ত্রী নমিতা মণ্ডল জানান, মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন খুব খুশি হলাম। উনি বলেছেন তরকারি রান্না খুব ভালো হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই এলাকা বন্যায় প্রতি বছর বাঁধ ভাঙে, সেই সমস্যা সমাধানে সুন্দরবনের জন্য মাস্টার প্ল্যান জমা দিচ্ছি। প্রকৃতি আমাদের হাতে নেই, তাই বাঁধ ভাঙার সমস্যা নিজে ঘুরে দেখতে এসেছি। কীভাবে আপনাদের ভালো হয়, মঙ্গল হয় দেখতে এসেছি। রাজ্য সরকার ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়েছে ভাঙন রোধে।
এদিকে, হাসনাবাদের খাঁ পুকুর গ্রামে নমিতা মণ্ডলের বাড়িতে মধ্যহ্ন ভোজ সারেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত বিষয় তিনি জানান, এত রান্না কীভাবে করলাম, জানতে চাইলেন। পাশাপাশি পানীয় জলের সমস্যা, বাঁধ ভাঙার সমস্যা, ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর ভেঙে যাচ্ছে, এসব বললাম। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন দুয়ারে সরকারে আবেদন করুন, ধীরে ধীরে সব হবে। গ্রামেরই এক প্রবীণ সদস্য জানান, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীকে ঘরের কথা বলেছি, পানীয় জল, চালের কথা বলেছি। সময়ে বিধবা ভাতা পাই, সেটাও জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ঠিক আছে ঘর হবে।'
শালপাতার থালায় পছন্দের ডাল-আলু পোস্ত ভাত তৃপ্তি করে খেলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় বিজেপির (BJP) মহিলা বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির বাড়িতে মধ্যহ্নভোজ সারেন মিঠুন চক্রবর্তী, সুকান্ত মজুমদার এবং সুভাষ সরকার। তাঁদের পদে ছিল ডাল, ভাজা, পোস্ত, পাঁপড়, চাটনি। এই হরেক পদ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের হাতে পরিবেশন করেই 'মহাগুরু'-সহ সুকান্ত মজুমদার, সুভাষ সরকারদের খাওয়ালেন শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক। আর তৃপ্তি ভরে পছন্দসই এই খাবার (Lunch at Bakura) খেয়ে মিঠুনের মন্তব্য, 'এটাই তো বাঙালির খাবার, বাড়িতেও তো বাঙালি খাবার খাই।' তিনি বলেছেন, 'আগে কথা দিয়েছিলাম চন্দনার বাড়িতে আসবো এবং খাবো। সেটাই করতে এলাম।'
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য বিজেপির একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে বাংলায় মিঠুন চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকে বিজেপির শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির বাড়িতে মধ্যহ্নভোজ সারেন তিনি। অংশ নিয়েছেন মেজিয়ার পঞ্চায়েত কর্মী সম্মেলনে। মিঠুনের সঙ্গে চন্দনা বাউড়ির বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ সুভাষ সরকার। এদিন চন্দনা এবং তাঁর পরিবার নিজ হাতেই মধ্যহ্নভোজের হরেক পদ রান্না করেছেন।
বৃহস্পতিবার চন্দনা বাউড়ির গ্রামে উপচে পড়েছিল ভিড়। টলিউডের 'মহাগুরু'কে একবার চোখের দেখা দেখতে বাড়ির ছাদে, পাঁচিলে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের। বুধবারও পুরুলিয়ার কর্মসূচির মাঝেই এভাবেই মধ্যহ্ন ভোজ সেরেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী।