ভারতরত্নে সম্মানিত হতে চলেছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবানি। শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এলকে আডবানি ১৯৯০-এর দশকে রাম জন্মভূমি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৮০ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির জন্মের অন্যতম রূপকার তিনি।
লালকৃষ্ণ আডবানিকে ভারতরত্ন দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি আবেগঘন মুহূর্ত বলে জানান তিনি। নিজের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী মোদী ৯৬ বছর বয়সী ওই নেতার সঙ্গে তাঁর দুটি ছবি ট্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনজীবনে আডবানিজির দীর্ঘ সেবা স্বচ্ছ্বতা আর সততায় ভরা। রাজনীতির নীতিশাস্ত্রে যা অনুকরণীয় মান স্থাপন করেছে বলে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেছেন,আডবানিজির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও লেখেন, "তিনি আমাদের সময়ের শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনেতা। একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে পৌঁছে গিয়েছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী পদে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি। সংসদীয় ক্রিয়াকলাপে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।”
প্রসূন গুপ্ত: ২০১৯-এর ভোটে বাজপেয়ী বা আদবানি ঘনিষ্ঠ অনেকে বিজেপির টিকিট পায়নি। বয়সের কারণে বাদ দেওয়া হয়েছিল লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং মুরলী মনোহর জোশীর মতো নেতাদের। প্রার্থী ছিলেন না যশবন্ত সিনহা, শত্রুঘ্ন সিনহা-সহ অনেকেই। তাৎপর্যের বিষয় এই যে এঁরা সকলেই বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। এদের কেউ কেউ রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছিলেন, কেউ আবার কংগ্রেস বা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। শত্রুঘ্ন তো সম্প্রতি ফের লোকসভা সদস্য হয়েছেন তৃণমূলের টিকিটে।
এই ব্যতীত বিজেপির সংসদীয় বোর্ড আছে নীতি নির্ধারক কমিটি। যার সদস্যরা প্রবল ক্ষমতাবান এবং দলের সংগঠনের পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকে। ১১ জন সদস্য সারা ভারত থেকে এই দায়িত্বে।
সদ্য গঠিত বোর্ড দেখলেই বোঝা যাবে আসন্ন ২০২৪-এর নির্বাচনকে মাথায় রেখে মূলত মোদী, অমিত শাহ ঘনিষ্ঠরাই দায়িত্বে এলেন। নতুন কমিটির প্রায় সবাই রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের নেতা। কিন্তু এই সংসদীয় কমিটি আরএসএস-র নির্দেশে হয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া গেলো না। এই কমিতিতে জায়গা পায়নি যোগী আদিত্যনাথ।
তবে বাদ গিয়েছেন জাতীয় রাজনীতির মামা অর্থাৎ দীর্ঘদিনের মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। শিবরাজ বরাবর আদবানি ঘনিষ্ঠ হিসেবে গেরুয়া শিবিরে পরিচিত। সবাইকে চমকে দিয়ে বাদ গিয়েছেন বাজপেয়ী-আদবানি ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি নীতিন গডকড়িও।
নীতিন গডকড়ির বাদ যাওয়া সম্ভাব্য ছিল, কিন্তু যোগী? জানা গিয়েছে, গুণগানে তিনি কোনও দিনই মোদীর পছন্দের নয়। পছন্দের নয় অমিত শাহেরও। অথচ শোনা যাচ্ছিলো মোদীর পর নাকি যোগীই বিজেপির মুখ। সেই রাস্তাটাই কি এবার তবে বন্ধ করে দেওয়া হলো? মোদীর উত্তরসূরি হিসেবে খুলে গেলো অমিত শাহের সম্ভাবনা? অন্যদিকে কমিটিতে এলেন কর্ণাটকের বিতর্কিত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়াদুরাপ্পা। এ ছাড়া যাঁরাই এসেছেন তাঁরা মোদী ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ব্যতিক্রম শুধু রাজনাথ সিং। বাজপেয়ীর স্নেহধন্য রাজনাথ রয়ে গেলেন, তবে তা কতদিনের জন্য তার উত্তর পাওয়া যাবে ২০২৪ এর টিকিট তাঁর ভাগ্যে আছে কিনা দেখার পর।