আদিবাসী সম্প্রদায় কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে ভোগান্তি হতে পারে নিত্যযাত্রীদের। এই আন্দোলনের জেরে একাধিক রেল বাতিলের ঘোষণা করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অবধি বাতিল থাকবে একাধিক ট্রেন, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেল। মঙ্গলবার বাতিল রয়েছে ভাগলপুর–রাঁচি বনাঞ্চল এক্সপ্রেস, এবং গোড্ডা–টাটানগর এক্সপ্রেস। এছাড়াও আরও ৭টি ট্রেন বাতিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সেগুলি হল - সেকেন্দ্রাবাদ-দ্বারভাঙা এক্সপ্রেস,কাটিহার-টাটানগর এক্সপ্রেস, লোকমান্য তিলক টার্মিনাল-কামাখ্যা এক্সপ্রেস, কামাখ্যা-রাঁচি এক্সপ্রেস, গোরক্ষপুর-হাতিয়া মৌর্য এক্সপ্রেস, রাজেন্দ্রনগর টার্মিনাল-দুর্গ সাউথ বিহার এক্সপ্রেস, রাক্সৌল-সেকেন্দ্রাবাদ স্পেশাল।
তফশিলি উপজাতি মর্যাদার দাবিতে এর আগেও আন্দোলনে নেমে রেল অবরোধের ডাক দেয় কুড়মি সম্প্রদায়।
ঝাড়গ্রামে গিয়েই চমক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কথা ছিল বুধবার কুড়মিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধেতেই ডেকে নিলেন কুড়মি নেতাদের। যে প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঝাড়গ্রামের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কনভয়ে হামলার অভিযুক্ত কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো। কী কথা হল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে? তা কিন্তু স্পষ্ট করেননি রাজেশ।
তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচির সময় তাঁর গাড়িতে হামলা চালানোর পাশাপাশি মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে রাজেশ মাহাতোর বিরুদ্ধে। তাঁর সঙ্গে মমতার বৈঠক হওয়ায় রীতিমতো সরগরম রাজ্যরাজনীতি।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা নিয়ে একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমের তরফে রাজেশ মাহাতোকে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি তিনি স্বীকার করে নেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয়ে কথা হয়েছে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলকে কুড়মিরা সহযোগিতা করবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীও রাজেশের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার ছবি শেয়ার করেছেন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। ফলে বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বদলির পর গ্রেফতার কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো (Rajesh Mahato)। সেসঙ্গেই অভিষেকের কনভয়ে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার রাজেশ সহ আরও ৩ অভিযুক্ত। গতকাল অর্থাৎ শনিবার শালবনিতে (salboni) মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় কুড়মিদের (Kurmi) নির্দোষ বলে দাবি করেন। তারপরেও ৪ কুড়মি আন্দোলনের নেতাকে গ্রেফতার করায় নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও ওই ঘটনা নিয়ে শালবনি থেকে মমতা জানিয়ে দেন, শুক্রবার অভিষেকের কনভয়ে কুড়মিরা হামলা করেনি। করেছে বিজেপি। তার আগে অভিষেক দাবি করেছিলেন যে, কুড়মিদের বিক্ষোভে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনতে পেয়েছিলেন তিনি। এর পর মমতা বলেছিলেন, 'কুড়মি ভাইয়েরা এ কাজ করে না। করেছে বিজেপি।'
ঝাড়গ্রাম থানার পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ, আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজি মাহাতো-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেকের কনভয়ে হামলা এবং রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছিল আরও চার জনকে। তাঁদের তিন দিনের জন্য পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। ওই কাণ্ডে শনিবার রাজেশকে প্রাথমিক ভাবে আটক করে পুলিস। এফআইআরে যে ১৫ জনের নাম ছিল রাজেশ তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhshek Banerjee) কনভয়ে হামলা। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার (Birbaha Hansda) গাড়ি ভাঙচুর। নবজোয়ার কর্মসূচিতে এসে বিজেপিকে সরাসরি আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর। জানালেন, কুড়মি ভাইরা একাজ করতেই পারে না।
শালবনির নবজোয়ার অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'শুক্রবার রাতে বীরবাহা হাঁসদা,আমাদের দলের মন্ত্রী, তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করেছে। সে একটা আদিবাসী কন্যা। সে অনেক কাজ করে। সিনেমায় কাজ করে, নাটকে কাজ করে। ওকে আমি অনেক কাজ করাই। ওর গাড়ি ভেঙেছে। আমি এখনও বিশ্বাস করি, আমার কুড়মি ভাইয়েরা এই কাজ করতে পারে না।' তিনি আরও বলেন, 'আমি মনে করি, কুড়মিদের নাম করে বিজেপির স্লোগান নিয়ে এই অত্যাচার করেছে বিজেপি দল। তারা আদিবাসী মেয়ের গায়ে হাত দিয়েছে। অভিষেককে অ্যাটাক করতে গিয়েছিল। অনেক মিডিয়ার গাড়ি ভেঙে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও মনে রাখবেন। যেটা পুলিশ আইনত বুঝবে, পুলিশ করবে' শুক্রবার রাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা হয়। অভিযোগ ওঠে কুড়মি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
তবে কুড়মি আন্দোলনকে নিয়েও কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমি মাহাতো নেতাদের ভেবে দেখতে বলব, আপনি যদি বলেন, একটা স্কুল করে দিন, আমি করে দেব। যারা কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত, রেল লাইন অবরোধ করছেন, রাস্তা অবরোধ করছেন , কারও বাড়ি ভাঙছেন, কারও গাড়ি ভাঙছেন। এখানে জাতিদাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। যে মাথাগুলো করছেন, আপনাদের মাথায় ছাতা আমি ধরব। আর যদি মনে করেন বিভেদের রাজনীতি করবেন, টাকা খেয়ে বিজেপি যা বলবে। মুখোশ পরে বিজেপির স্লোগান, আর রাম, বাম, ডান। অভিষেকের কনভয়ে অ্যাটাক করা হচ্ছে। বীরবাহা হাঁসদার কনভয়ে অ্যাটাক করা হচ্ছে কেন!'
মণি ভট্টাচার্য: শুক্রবার রাতে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda), ও অভিষেকের (Abhishek Banerjee) কনভয়ে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র রাজনৈতিক তরজা ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। পুলিস জানিয়েছে এ ঘটনায় খুনের চেষ্টা সহ আরও বেশ কিছু জামিন অযোগ্য ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে, তদন্তে নেমে এখনও ৪ কুড়মি নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। শুক্রবার রাতে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুর করা হয় ঝাড়গ্রাম জেলার গড় শালবনিতে। ভাঙচুর করা হয় আরও ভিআইপির গাড়ি। কুড়মিদের নিয়ে অস্বস্তিতেই ছিল তৃণমূল, এর আগে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এলাকায় কুড়মিদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। এই আবহেই মন্ত্রীর কনভয়ে হামলা, গাড়ি ভাঙচুরে কুড়মি সহ বিজেপিকে দুষেছেন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুড়মি নেতৃত্ব ও বিজেপি জেলা নেতৃত্ব।
এ বিষয়ে তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির জেলা সভাপতি তুফান মাহাতো সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'কোনও ভাবেই এই আন্দোলনের সঙ্গে বিজেপি যুক্ত নয়, মন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুরে বিজেপিকে দুষে কোনও লাভ নেই, কুড়মি আন্দোলনে বিজেপির পার্টি অফিসে ঢিল পড়েছে, দিলীপ ঘোষের বাড়িও ভাঙচুর হয়েছে।'
যদিও শনিবার সকালে সিএন ডিজিটালের তরফে ঝাড়গ্রাম জেলা কুড়মি আন্দোলনের আহ্বায়ক সুদীপ মাহাতোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'এই অভিযোগ মিথ্যে। কুড়মিরা কোনও ভাবেই এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।' তিনি আরও বলেন, 'যখন শাসক দলের কনভয় থাকে তখন জেলার কর্মীরা ওনাদের রাস্তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে থাকে, এ দৃশ্য নতুন নয়। তবে এ ঘটনা কে করেছে সেটা ধরার দায় পুলিস প্রশাসনের। প্রশাসনের গাফিলতিতেই এমন ঘটনা।' পাশাপাশি ৪ জন কুড়মি আন্দোলনকারীদের গ্রেফতারি নিয়ে বলেন, 'যতক্ষণ অবধি তাঁরা দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন, ততক্ষন তাঁদের সঙ্গে আছি। পুলিসের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা হল এর ডে পুলিশকেই নিতে হবে।'
শনিবার এ বিষয়ে ওই জেলার পুলিস সুপার রাহুল সিনহা সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'পর্যাপ্ত পুলিস রাস্তায় ছিল। বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ হয়েছে, কোথাও কম কোথাও আবার বেশি পুলিস ছিল, গোটা রাস্তায় কোথায় কিভাবে পুলিসি নিরাপত্তা ছিল সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। এখনও ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।'
খড়্গপুরে (Kharagpur) দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বাংলো ঘেরাও করলেন কুড়মি (Kurmi) আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা। বাংলোর মেন গেট লাথি মেরে খুলে ফেলে বিক্ষোভকারীরা। এরপর বাংলোর সামনে বাগানে ঢুকে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। নষ্ট করে ফুলের টব। উপড়ে দেয় বাগানের বহু গাছ। তাঁদের দাবি দিলীপ ঘোষকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
সম্প্রতি দিলীপ ঘোষের করা মন্তব্য নিয়ে অসন্তোষ ও বিতর্ক দানা বাধে কুড়মি সমাজ। কুড়মিদের করা বেফাঁস মন্তব্য ঘিরেই কুড়মিদের মধ্যে আরও বেশি ক্ষোভ জমা হয়েছিল। সেই ক্ষোভের প্রকাশ পাওয়া গেল বুধবার। ফলে দিলীপ ঘোষের সাময়িক বিপাকে পড়ে।
এদিনের বিক্ষোভে সামিল ছিলেন কুড়মি সমাজের শীর্ষ নেতা অজিত মাহাত। বিক্ষোভের সময় অজিতবাবু সাংবাদিকদের বলেন, 'দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো ছিল। তিনি আরএসএসের ক্যাম্পে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কুড়মি সমাজের প্রতি এ ধরনের মন্তব্য তিনি কীভাবে করতে পারলেন? দিলীপবাবুকে ক্ষমা চাইতেই হবে।
তফসিলি উপজাতির তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে সিআরআই (CRI) রিপোর্টের উপর রাজ্যকে কেন্দ্রের কাছে জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট পাঠাতে হবে। সেই দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কুড়মি (Kurmi) জনজাতির মানুষ। মাস খানেক আগে তাঁদের লাগাতার অবরোধে স্তব্ধ হয়েছে বাস-ট্রেন চলাচল। নবান্ন তাঁদের সঙ্গে বৈঠকেও বসে। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র উঠে আসেনি।
এরফলে নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন কুড়মি আন্দোলনের নেতারা। তারই মধ্যে কুড়মি আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে 'খালিস্তানি' নেতাদের তুলনা টেনে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার তৃণমূল বিধায়ক (TMC) তথা দলের জেলা আহ্বায়ক অজিত মাইতি (Ajit Maiti)।
শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্ষীয়ান নেতা অজিত মাইতি বলেন, 'আমরা কুড়মি ভাইদের বিপক্ষে নই। কিন্তু, কিছু কুড়মি নেতা খালিস্তানি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের মতো আচরণ করছেন। কুড়মি সম্প্রদায়ের সরল মানুষদের ভুল বোঝাচ্ছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাঁদের মর্যাদা দেওয়ার মালিক নয়। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় এই সংক্রান্ত বিষয় পাশ করিয়ে দিল্লিতে পাঠিয়েছেন। এখন দিল্লিই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেবে। যাঁরা মানুষের সরকারকে টেনে নামানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, এবার আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করব। সরকার বিরোধী আন্দোলনে আমরা মদত দিতে দেব না। আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নেতাদের বলব, কুড়মি সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষদের বোঝান যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে।'
তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যের কথা প্রকাশ্যে আসতেই প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিজেপি-সহ বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, এই মন্তব্যে ফের প্রমাণ হল তৃণমূল কংগ্রেস মুখে সহানুভূতি দেখালেও তারা আসলে জনজাতি ও আদিবাসী বিরোধী।
তফসিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতির দাবিতে কুড়মিদের (Kurmi) ঘাঘর ঘেরা কমিটির ডাকা ১২ ঘণ্টা বনধে বুধবার সকাল থেকেই স্তব্ধ হল বাঁকুড়া (Bankura) এবং ঝাড়গ্রামের (Jhargram) জনজীবন। বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের বিক্রমপুর, খাতড়া, সারেঙ্গা, পি মোড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় বনধের সমর্থনে পথে নামেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। বিক্রমপুর এলাকায় বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়ক এবং খাতড়া এলাকায় বাঁকুড়া-রানিবাঁধ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে শামিল হন কুড়মিরা।
বুধবার সকাল থেকেই বনধের প্রভাবে বাঁকুড়ার রাইপুর, রানিবাঁধ, সারেঙ্গা, সিমলাপাল এবং খাতড়া ব্লকের দোকান-বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বাস এবং অন্যান্য যাত্রিবাহী গাড়ি চলাচলও বন্ধ। ফলে অসুবিধায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। তবে বাঁকুড়া সদর মহকুমা এবং বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় কুড়মিদের বন্ধের সে অর্থে কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি। ওই দুই মহকুমা এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দোকান-বাজারও খোলা।
কুড়মিদের তফসিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করা এবং কুড়মালি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে সপ্তাহ দুই আগে পুরুলিয়ার কুস্তাউর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে ‘রেল টেকা, ডহর ছেঁকা’ (রেল রোকো ও পথ অবরোধ) কর্মসূচির ডাক দেন কুড়মিরা। এই কর্মসূচির জেরে টানা ৫ দিন ধরে বিপর্যস্ত ছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা এবং খড়্গপুর শাখার রেল চলাচল। একাধিক সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় যান চলাচলেও তার প্রভাব পড়ে। চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার সাধারণ মানুষ। পাঁচ দিন পর সরকারি আলোচনার আশ্বাসে অবরোধ উঠলেও তখনই আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন যে দ্রুত দাবিপূরণ না হলে তাঁরা আবার আন্দোলন করবেন। কুড়মি নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পরেও কুড়মিদের তফসিলি উপজাতিভুক্ত করার ব্যাপারে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ না করায় বুধবার আবার জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে ‘হুড়কা জাম’ (বন্ধ)-এর ডাক দেয় কুড়মিদের ঘাঘর ঘেরা কমিটি। এই আন্দোলনকে বাইরে থেকে সমর্থন জানায় কুড়মিদের আরও বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন।
বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ঝাড়গ্রামে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিসবাহিনী। বুধবার সকাল থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচ মাথার মোড় প্রায় জনশূন্য। সকাল থেকে খাঁ খাঁ করছে রাস্তাঘাট। যেখানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে একাধিক দূরপাল্লার সরকারি এবং বেসরকারি বাস। সেখানে কেবলমাত্র একটি সরকারি বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় কলকাতা যেতে গিয়েও বাড়ি ফিরতে হচ্ছে যাত্রীদের। কলকাতাগামী সরকারি বাসের এক কন্ডাক্টর বলেন, ‘সকালে বাস নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় আবার ফিরে এসেছি। কলকাতা যেতে পারিনি। বন্ধের জেরে সকাল থেকে কোনও বেসরকারি বাসের দেখা নেই। ভাবছি, বাস ডিপোতেই ফিরে যাব।’
ঝাড়গ্রাম শহরের দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ। কয়েকটি স্কুল ছাড়া শহরের সরকারি, বেসরকারি স্কুলগুলোও বন্ধ রয়েছে। কুড়মি সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের সংগঠনের পতাকা বেঁধে দিয়েছেন। ঝাড়গ্রাম পুরসভার গেটেও বাধা রয়েছে কুড়মি সামাজিক সংগঠনের ঝান্ডা। ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি, শিলদা, বিনপুর, গিধনি, গোপীবল্লভপুর, সাঁকরাইলেও যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে এই বন্ধের। আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো বলেন, ‘সকাল থেকে বনধের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। আমাদের দাবিগুলো সাধারণ মানুষ সমর্থন করছেন। তাই রাস্তাঘাট ফাঁকা এবং দোকানপাটও বন্ধ।’
অবশেষে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর ও আদ্রা শাখায় ট্রেন চলাচল শুরু হল। দীর্ঘ পাঁচ দিন ধরে ওই লাইনে কুড়মি সমাজের অবরোধের জেরে প্রায় ৪৫০টি ট্রেন বাতিল করতে হয় দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষকে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক অম্বর বোস বলেন, 'অবরোধের জেরে আমাদের ডিভিশনে যাত্রীদের অনেক ভোগান্তি হয়েছে। অবরোধ উঠে যাওয়ায় আমরা খুব শীঘ্রই ওই দুই লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা করেছি।'
রবিবার সকাল থেকে টালবাহানা শুরু হলে, প্রথমে পুরুলিয়া অঞ্চলের অবরোধ তোলে কুড়মিরা। তারপর কুস্তাউর ও খেমাশুলি অঞ্চলে অবরোধ উঠলে রবিবার প্রথম ট্রেন চালানো শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, গতকাল অর্থাৎ রবিবার সকাল ১১:৪৫ নাগাদ কুস্তাউর স্টেশনের অবরোধ উঠলেও খেমাশুলি অঞ্চলে অবরোধ চালিয়ে যান কুড়মিরা। বিশাল পুলিস বাহিনী তাদের বোঝালেও তারা অবরোধ তুলতে চান না। এরপর তাঁদের উচ্চ নেতৃত্বের মারফত অবরোধ তোলার নির্দেশ পেলে, ওই দিন অর্থাৎ রবিবারই রাত ৮ টা ১৯ নাগাদ, খেমাশুলিতে অবরোধ উঠে যায়। পাশাপাশি রবিবারই কোটশিলা স্টেশনে বেলা ১২টা ২৫ নাগাদ সময় অবরোধ শুরু করে কুড়মিরা। রাত আটটার সময় কোটশিলা স্টেশনের অবরোধও তুলে নেওয়া হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে খবর, ৯ এপ্রিল এবং ১০ই এপ্রিল যেসব ট্রেনগুলো বাতিল ছিল, তাদের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেস ও ট্রেন ১০ তারিখ অর্থাৎ সোমবারই চালানো হবে। সোমবার সকাল নটা অবধি রেল সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ১০ তারিখ অর্থাৎ সোমবার পূর্বে বাতিল হওয়া ৪৭ টি ট্রেন চালাবে দক্ষিণ পূর্ব রেল। তাদের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে, ওই তালিকায় রয়েছে হাওড়া-পুনে এক্সপ্রেস, আজাদহিন্দ এক্সপ্রেস, হাওড়া-জগদলপুর এক্সপ্রেস, হাওড়া-আমেদাবাদ এক্সপ্রেস, হাওড়া-মুম্বাই এক্সপ্রেস, ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া স্পেশাল, টাটানগর-খড়গপুর এক্সপ্রেস, হাওড়া-চক্রধরপুর এক্সপ্রেস এবং হাওড়া-বোকারো স্টিল এক্সপ্রেস।
অবশেষে অবরোধ (Agitation) প্রত্যাহার কুড়মিদের (Kurmi)। দীর্ঘ ৫ দিন রাজ্য সড়ক পথ, রেল পথে অবরোধ করেন তাঁরা। কুড়মিদের অবরোধের জেরে দক্ষিণবঙ্গে (South Bengal) চরম তাপে ভোগান্তি হচ্ছিল সাধারণ মানুষের। তাঁদের আন্দোলনের জেরেই দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ৫ দিনে প্রায় ৪৫০টি ট্রেন বাতিল হয়। চরম দুর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ মানুষ থেকে নিত্যযাত্রীরাও। অবশেষে রবিবার সকাল থেকে অবরোধ-আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা। কিন্তু খেমাশুলিতে এখনও অবরোধ বহাল রয়েছে। আরপিএফ-এর বিশাল বাহিনী পথে নেমেছে সেখানে।
সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের গাফিলতির অভিযোগ তুলে রেল ও সড়ক পথ অবরোধ করেন তাঁরা। দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনে খড়গপুরে ও আদ্রাতে বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করেন তাঁরা। আরও জানা গিয়েছে, খেমাশুলি, কুস্তাউর, সহ বাঁকুড়াতেও চলে অবরোধ। রবিবার কুড়মি সমাজের স্পষ্ট দাবি, মানুষের কথা ভেবে অবরোধ প্রত্যাহার করলাম, কিন্তু আন্দোলন চলবে। এছাড়া তাঁরা আরও জানান, রাজ্যের প্রস্তাব মানছেন না তাঁরা। নিজেরাই এই অবরোধ প্রত্যাহার করলাম।
সূত্রের খবর, রাজ্যের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে কুড়মি সমাজের বেশ কয়েকটি সংগঠন, প্রতিবাদে পথে নেমেছিল। এই কুড়মি সমাজের একটি সংগঠনের পক্ষে কৌশিক মাহাতোর দাবি, '১৯৫১ সালে আমাদের এই জাতিকে উপজাতি কোটা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, কোনও কারণ ছাড়াই। সেই জন্য ২০১৫ সালে আমরা সরকারের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলন গড়ে তুলি।' কৌশিক বুধবার সিএন-ডিজিটালকে জানান, 'রাজ্যের একটি সিআরআই রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পরবর্তী প্রক্রিয়ায় উপজাতি লিস্টে নথিভুক্ত করতে পারে কেন্দ্র সরকার। আন্দোলনের পরে ২০১৭ সালে সেই সিআরআই রিপোর্ট রাজ্যের তরফে পাঠানো হয়, সেই রিপোর্টে অনেক গাফিলতি আছে।'
কুড়মি আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক আন্দোলনকারীর অভিযোগ, 'রাজ্যের গাফিলতির জন্য এই রিপোর্টটা ভুল গিয়েছে এবং তাদের গাফিলতির জন্যই বিষয়টা পিছিয়ে যাচ্ছে।' সূত্রের খবর, গত বছর, ২০২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে কুড়মি সমাজ আন্দোলনে নেমেছিল। কিন্তু সেসময় সরকারের প্রতিশ্রুতিতে অবরোধ ও আন্দোলন তুলে নেন তাঁরা। বুধবার কুড়মি আন্দোলনের এক নেতা শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, 'রাজ্য সরকার সেপ্টেম্বর মাসে বলেছিল ৩ মাসের মধ্যে সিআরআই রিপোর্টটা ঠিক করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, কিন্তু তারপর থেকে ৬ মাস হয়ে গেল পাঠায়নি। এভাবে ৬ বছর আমাদের অবহেলা করছে রাজ্য।'
অবশেষে কাটল জট। উঠে গেল কুড়মিদের রেল রোকো আন্দোলন। শনিবার পঞ্চমদিনে পড়েছিল তাঁদের এই আন্দোলন। তবে এবার ১০০ ঘণ্টা পর আন্দোলন প্রত্যাহার কুড়মিদের। ৩ জেলার ডিএমের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত। কুড়মিদের (kurmi) রেল রোকো আন্দোলনের আজ ছিল পঞ্চম দিন। পুরুলিয়া (Purulia) কুস্তাউর রেল স্টেশনে (railway station) রেল ট্র্যাকে বসে আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার রাজ্য সরকার সিআরআই (CRI) রিপোর্ট কুড়মিদের হাতে তুলে দিলেও তাতে ভুল রয়েছে বলে দাবি কুড়মিদের। তাই এই অবরোধ চলছিল। যার প্রভাবে একের পর দাঁড়িয়ে ছিল দূরপাল্লার ট্রেন। রেল লাইনের বিক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছিল জাতীয় সড়কে। ওড়িশা ঢোকা এবং বেরনোর সড়কে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল পণ্যবাহী ট্রাক।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার অবশেষে সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠায় রাজ্য সরকার। তবে সেই রিপোর্ট এ কী আছে, তা দেখে আলোচনা করে রেল অবরোধ প্রত্যাহর করবে কুড়মি সমাজ, এমনটাই জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যে তার একটি প্রতিলিপি আদিবাসী কুড়মি সমাজের সদস্যদের হাতে তুলে দেয় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। শুক্রবারের পর শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনে মধ্য দিয়ে রেললাইনে বসে চলেছে খাওয়া দাওয়া। রেলট্র্যাকেই ঘুমোচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। এক কথায় পাঁচদিনের এই রেল অবরোধের জেরে পুরুলিয়া জনজীবন বিপর্যস্ত। যদিও রেল আধিকারিক থেকে জেলা প্রশাসন ধাপে ধাপে কুড়মি সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করলেও তাতে কাজ হয়নি। রেল অবরোধের জট কাটাতে ব্যর্থ প্রশাসন। তবে দাবি না মানা হলে আগামি দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে আদিবাসি কুড়মি সমাজ। মূলত এসটি সম্প্রদায়ভুক্ত এবং ভাষাকে ষষ্ঠ তফসিলির অন্তরভুক্ত করার দাবিতেই এই রেল অবরোধ।
শুক্রবার চারদিনে পড়লো কুড়মি (kurmi) সমাজের রেল রোকো আন্দোলন। পুরুলিয়া (Purulia) কুস্তাউর রেল স্টেশনে (railway station) হওয়া এই রেল অবরোধ জেরে বিপাকে সাধারণ রেল যাত্রীরা। প্রায় ৭২ ঘণ্টা অতিক্রম, তবুও নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। যতক্ষন না সিআরআই (CRI) রিপোর্ট সংশোধন করে রাজ্যে সরকার কেন্দ্র সরকারকে পাঠাচ্ছে ততক্ষণ তাঁদের এই আন্দোলন চলবে।
শুক্রবার অবশেষে সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠালো রাজ্য সরকার। তবে সেই রিপোর্ট এ কী আছে, তা দেখে আলোচনা করে রেল অবরোধ প্রত্যাহর করবে কুড়মি সমাজ, এমনটাই জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যে তার একটি প্রতিলিপি আদিবাসী কুড়মি সমাজের সদস্যদের হাতে তুলে দেয় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের দেওয়া চিঠিতে বরফ গলেনি, তাই আন্দোলন তুলতে ব্যর্থ প্রশাসন। ফলে অব্যাহত পুরুলিয়া রেল অবরোধ। বৃহস্পতিবার পর শুক্রবার সকাল থেকে আন্দোলনে মধ্য দিয়ে রেললাইনে বসে চলছে খাওয়া দাওয়া। রেলট্র্যাকেই ঘুমোচ্ছেন আন্দোলনকারীরী। এক কথায় চারদিনের এই রেল অবরোধের জেরে পুরুলিয়া জনজীবন বিপর্যস্ত। যদিও রেল আধিকারিক থেকে জেলা প্রশাসন ধাপে ধাপে কুড়মি সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করলেও তাতে কাজ হয়নি। রেল অবরোধের জট কাটাতে ব্যর্থ প্রশাসন। এর জেরে সার দিয়ে একাধিক স্টেশনে দাঁড়িয়ে দূরপাল্লার ট্রেন। বাতিল হয়েছে কয়েকজোড়া এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেন।
অন্যদিকে ঝাড়গ্রামে কুড়মি সমাজের অবরোধ আন্দোলনের জেরে জাতীয় সড়কে ট্রাকের লম্বা লাইন। ধাপে ধাপে প্রায় ওড়িশা বর্ডার জামশোলা পর্যন্ত ট্রাক দাড়িয়ে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন সাধারণ যাত্রীরা। রাস্তায় লাইন দিয়ে দাড়িয়ে পিয়াজের ট্রাক। যা ইতিমধ্যে নষ্ট হতে শুরু করেছে। আরও নানা ধরনের সামগ্রীর একই হাল। ঝাড়গ্রাম বাজারের কাঁচামালের অবস্থাও একই রকম। এখান থেকে ঝাড়খন্ড, ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে সব্জী পাইকারি করা হত। যা এই মুহুর্তে পুরোটাই বন্ধ। বাইরের সব্জিও ঢুকছে না ঝাড়গ্রামে। ফলে পুজোর আগে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা।