আজ থেকে লোকসভা ভোটের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরে প্রথম সভা করেন তিনি। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে প্রচার শুরু করলেন তিনি। মহুয়াকে কেন লোকসভা থেকে ‘তাড়িয়েছে’ বিজেপি, সেই ব্যাখা দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়ের পরিবারকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে খোঁচা দিলেন মমতা।
জনসভায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মহুয়াকে জেতাবেন। আপনারা জেতানোর পরেও ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ মহুয়া জোরে জোরে কথা বলত। বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলত। ওকে জেতালে ও যোগ্য জবাব দিতে পারবে। বিজেপির মুখোশ টেনে ছিঁড়ে দিতে পারবে।’ পাশাপাশি ধুবুলিয়ার সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠ থেকে বিজেপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মমতা। বলেন, জেতার বিষয়ে নিশ্চিত হলে কেন রাজ্যে ইডি? কেন সিবিআই? কেনই বা ইনকাম ট্যাক্স অফিসাররা?
সূত্রের খবর, ভিন রাজ্যেও প্রচারে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। অসমে দুটি সভা করবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। আগামী ১৭ এবং ১৮ এপ্রিল অসমে দুটি জায়গায় সভা করবেন তিনি।
লোকসভা ভোটের আগে নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়েই মাথায় চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কপালে চারটে সেলাই পড়েছিল। তারপরে বিশ্রামেই ছিলেন তিনি। আজ অর্থাৎ রবিবার থেকে লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমেছেন তিনি। প্রথমেই বেছে নিয়েছেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রকে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কৃষ্ণনগরে সভা করে গিয়েছেন।
বাংলার উন্নতি মানে দেশের উন্নতি। আর বাংলাকে আত্মনির্ভর করতেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। শনিবার কৃষ্ণনগর থেকে এমনটাই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার সাত হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পরে এদিনও ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের কথা জানান। বাংলার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী সর্বদা রয়েছেন। এমনটাই কৃষ্ণনগরের সভা থেকে আশ্বাস দিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ফারাক্কা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত হাইওয়ে তৈরি করা হয়েছে। মোদী জমানায় পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়নের দরজা খুলে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রাজ্যের একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। এর মধ্যে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন করেন। ফরাকা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত চার লেনের জাতীয় সড়কের উদ্বোধনও করেন। আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ রেল প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন তিনি। তিনি বলেছেন, রঘুনাথপুরে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে এগারো হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার ও শনিবার মিলিয়ে রাজ্যের জন্য বাইশ হাজার কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। শুক্রবার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, বাংলায় রেলের উন্নয়ন এমন হওয়া দরকার যেমনটা অন্য রাজ্যে রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, বিকশিত ভারত গড়ার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেখানে গরিব, মহিলা ও যুবদের সব থেকে বড় ভূমিকা থাকবে।
কৃষ্ণনগরের সভায় জনগণের ঢল দেখা যায় এদিন। তিনি বলেন, বাংলার বিকাশ হলেই দেশের বিকাশ। এই রাজ্য থেকে বিজেপিকে ৪২ টি আসনের সবকটিই দখল করতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসও ৪২ টির মধ্যে ৪২টি দখলের স্লোগান রেখেছিল। তারপর তারা গিয়ে থামে ২২ টিতে।
লোকসভা ভোটের প্রচারের দ্বিতীয় দিনে কৃষ্ণনগরে জনসমুদ্র প্রধানমন্ত্রীর সভায়। যা দেখে উচ্ছ্বসিত নরেন্দ্র মোদী সহ বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। ভাষণের শুরুতেই মোদী সভায় উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কারণ, শনিবার কৃষ্ণনগরের যে গভর্নমেন্ট কলেজের ময়দানে মোদীর সভার আয়োজন করা হয়েছিল, তা ছোটো হয়ে গিয়েছে। তিনি সবাইকে যে যেখানে রয়েছেন, সেখানেই উপস্থিত থেকে ভাষণ শুনতে অনুরোধ করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণ নাম নিয়ে শুরু করেন বক্তৃতা। তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'তৃণমূল মানে দুর্নীতিবাজ, পরিবারতন্ত্র, বিশ্বাসঘাতক'। বাংলাকে গরিব করে রাখতে চায়। সেই কারণেই তৃণমূল সরকার দরিদ্রদের জন্য় প্রকল্প চালু করতে দিচ্ছে না। এই তৃণমূলকে ভোটের মাধ্য়মে শিক্ষা দিতে হবে। এমনকি তৃণমূল বাংলার মানুষকে নিরাশ করছে। এতদিন রাজ্য় সরকার চায়নি সন্দেশখালির দোষী গ্রেফতার হোক। তৃণমূল সন্দেশখালির মায়েদের আর্তি শোনেনি। কিন্তু সন্দেশখালির পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। তাই তৃণমূল অপরাধীকে ধরতে বাধ্য় হয়েছে। সন্দেশখালি প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এমনকি মোদীর গলায় শোনা যায় বাংলাও। তিনি বাংলায় বলেন, মোদীর গ্যারান্টি মানে, সেই গ্যারান্টি পূর্ণ হওয়ার গ্যারান্টি। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে প্রথম এইমসের গ্যারান্টি দিয়েছিলাম। তা হয়েছে। কল্যাণীতে এইমস তৈরি হওয়ায় তৃণমূল সরকার মুশকিলে পড়েছে। তৃণমূল সরকার এই বড় হাসপাতাল পরিবেশগত অনুমতি দিতে বাধা দিচ্ছে। তিনি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চালু করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
আরামবাগের পর কৃষ্ণনগরে প্রধাুনমন্ত্রী। শনিবার সকাল ১০ টা নাগাদ নদিয়ার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ ময়দানে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সিসিটিভি ক্য়ামেরায় মোড়া রয়েছে গোটা সভা। এদিন সভার পাশাপাশি পাশের মাঠে একটি প্রশাসনিক সভার আয়োজন রয়েছে সেখান থেকে বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সভা ঘিরে উদ্দীপনা তুঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের। সভাস্থল ঘিরে কড়া নিরাপত্তা।
'টাকা নিয়ে প্রশ্ন' মামলায় লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) সাংসদপদ খারিজ হওয়ার প্রস্তাব ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। এখন কার্যত সময়ের অপেক্ষা। আর সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূলে পদোন্নতি হল মহুয়ার। কল্লোল খাঁকে সরিয়ে লোকসভা ভোটের আগে মহুয়াকে নদিয়ার কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করল তৃণমূল। 'ক্যাশ ফর কোয়েশ্চেন' বিতর্কে মহুয়া মৈত্র থাকলেও দল থেকে ব্রাত্য নন তিনি, বরং তাঁর উপরই ভরসা রাখল তৃণমূল (TMC)।
Thank you @MamataOfficial and @AITCofficial for appointing me District President of Krishnanagar (Nadia North) .
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) November 13, 2023
Will always work with the party for the people of Krishnanagar.
আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই আজ অর্থাৎ সোমবার কিছু জেলার নেতৃত্বে বদল এনেছে ঘাসফুল শিবির। তখনই জানা গেল, 'ক্যাশ ফর কোয়েশ্চেন' বিতর্কের মাঝেই দলে ওজন বাড়ল মহুয়ার। একেবারে সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হল মহুয়া মৈত্রকে। টাকা নিয়ে প্রশ্ন কাণ্ডে, দলের তরফে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে না দেখা গেলেও দলের এই সিদ্ধান্তে বোঝাই গেল মহুয়ার পাশেই রয়েছে দল। এর পরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মহুয়া। ক্যাপশনে লিখেছেন, "কৃষ্ণনগরের (নদিয়া উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসকে ধন্যবাদ জানাই। কৃষ্ণনগরের সাধারণ মানুষের জন্য আমি সবসময় দলের হয়ে কাজ করে যাব।"
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘা এখনও শুকোয়নি। ফের ব়্যাগিং’য়ের অভিযোগ শিক্ষাক্ষেত্রে। তবে এবার বিশ্ববিদ্যালয় নয় স্কুলে। কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণি ৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে ব়্যাগিং’য়ের অভিযোগ। ইতিমধ্যেই স্কুল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে খবর।
অভিযোগ শিক্ষক দিবসের দিন ক্লাসেই ধূমপান করছিলেন তারা। আগ্নেয়াস্ত্র স্কুলে নিয়ে আসেন তাঁরা। জোর করে ছোটদের পোশাক খুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাড়ি গিয়ে ছাত্ররা সেসব জানালে, অভিভাবকরা লিখিত অভিযোগ জানান বিদ্যালয়ে। ওই ছাত্ররা অভিযোগ স্বীকার করে নেওয়ার পর স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় বলে খবর।
সাতসকালে শিয়ালদহ মেইন লাইনে ট্রেন অবরোধ। আর এর ফলে বড় প্রভাব পড়েছে ট্রেন চলাচলে। সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে শুরু হয়েছে অবরোধ। মদনপুর স্টেশনে এই অবরোধ চলছে। ১২ কোচের ট্রেনের দাবিতে অবরোধ করেন নিত্যযাত্রীরা। দিনের ব্যস্ত সময় এই অবরোধের জেরে নিত্যযাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন। আপাতত এই শাখায় আপ ও ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ।
বিশেষ করে শিয়ালদহ মেন শাখায় কাকিনাড়া, নৈহাটি, শ্যাম নগর, হালিশহর সহ বিভিন্ন স্টেশনে ব্যাপক ভিড় যাত্রীদের। অবরোধের জেরে দাঁড়িয়ে লালগোলা প্যাসেঞ্জার সহ বেশ কয়েকটি দুরপাল্লার ট্রেনও। ইতিমধ্যে শান্তিপুর লোকালও বাতিল করা হয়েছে। ফলে যে ট্রেনগুলি শিয়ালদহের দিকে আসছিল কার্যত বাদুর ঝোলা হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে ট্রেনগুলিতে উঠতে বাধ্য হন নিত্যযাত্রীরা।
অবরোধকারী যাত্রীদের বক্তব্য, দিনের ব্যস্ত সময়, যখন বেশি ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা, তখন এই লাইনে দেওয়া হয় মেমু (MEMU) ট্রেন। যার গেট ছোট হওয়ায় যাত্রীদের উঠতে সমস্যা হয়। এই সমস্যার কথা জানিয়ে আগেও বহুবার রেলের কাছে তাঁরা আবেদন করেছেন। সকাল থেকে অফিস টাইম পর্যন্ত ১২ বগির ট্রেন দেওয়া হোক। কিন্তু তাতে কোনও সুরাহা হয়নি। এভাবে ছোট গেটে মেমু ট্রেনেই কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়েছে তাঁদের। আর গ্যালোপিং ট্রেনগুলকেও মদনপুরে স্টপেজ দিতে হবে। এই বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের লিখিত প্রতিশ্রুতির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, রেলের তরফে আশ্বাস এবং তা দ্রুত কার্যকর করা না হলে এভাবেই প্রতিবাদ জারি রাখবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অবরোধকারীরা। মদনপুরে রেল অবরোধের প্রভাব পড়েছে অনেক দূর পর্যন্ত। অন্যদিকে সংক্ষিপ্ত রুটে যে সমস্ত ট্রেন চলছে কমপক্ষে সেগুলিও ত্রিশ মিনিট দেরিতে চলছে বলে খবর।
ব্যাঙ্কে (Bank) চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার (Fraud) অভিযোগ। অভিযোগের ভিত্তিতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল বিধাননগর উত্তর থানার পুলিস (Police)। কৃষ্ণনগর (Krishnanagar) থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই ব্যক্তিকে। সোমবার অভিযুক্তকে বিধাননগর আদালতে তোলা হয়েছে। পুলিস অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় আদালতে। জানা গিয়েছে, ধৃত ওই ব্যক্তির নাম বিজন দে। তিনি রানাঘটের বাসিন্দা।
পুলিস সূত্রে খবর, অনলাইন থেকে চাকরি প্রার্থীদের ডেটা সংগ্রহ করতেন। এরপর ব্যাঙ্কে চাকরি দেওয়ার নাম করে ফোন করে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিতেন। তবে চাকরি প্রার্থীদের থেকে টাকা পাওয়ার পর কোনও রকম চাকরি দিতেন না বিজন দে।
পুলিসের দাবি, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ জমা পড়ে বিধাননগর উত্তর থানায়। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই রবিবার রাতে কৃষ্ণনগরে হানা দিয়ে বিজন দে নামক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ঠিক একই পদ্ধতি প্রয়োগ করে আর কত চাকরিপ্রার্থীদের থেকে এইভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তার তদন্ত শুরু করেছে বিধান নগর উত্তর থানার পুলিস।
পঞ্চায়েত ভোটের আগেই ফের রাজ্যে দুষ্কৃতী তাণ্ডব। এবার ঘটনাস্থল নদিয়ার কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar) নগেন্দ্রনগর। শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতী তাণ্ডব ও বোমাবাজির (bombing) জেরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ একদল দুষ্কৃতী ওই এলাকায় বোমাবাজি করে ও বেশ কয়েকটি বাইক ভাঙচুর চালায়। যার জেরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ওই এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কোতয়ালী থানার পুলিস (police)। অভিযোগ, পুলিসের সামনেও চলে বোমাবাজি। পরে বিশাল পুলিসবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে, ঘটনার পরেও এলাকায় তাজা বোমা (bomb) পড়ে থাকতে দেখা যায়। উদ্ধার ৩টি তাজা বোমা।
কৃষ্ণনগর শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কৌশিক বিশ্বাসের দাবি, শুক্রবার এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় বেশকিছু দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় ও বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। অবশ্য পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই তৃণমূল নেতা আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। উভয়পক্ষের সংঘর্ষের জেরে মাঝে পড়ে আতঙ্কিত এলকাবাসী। পুলিসি নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
একদিকে যেখানে টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভ, আন্দোলনে রণক্ষেত্র কলকাতার রাস্তা, অন্যদিকে এই আবহেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ময়দানে নামলেন স্বয়ং তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার তিন দিনের নদিয়া (Nadia) সফরের দ্বিতীয় দিনে দলীয় সভায় কার্যত দলের পুরনো ইমেজ ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হলেন তিনি। এদিন সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারের একাধিক নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শোনা গেল তাঁর গলায়। সেই সঙ্গে ফের সুর চড়ালেন সিএএ (CAA) প্রয়োগের বিরুদ্ধে। 'নির্বাচন আসলেই 'ক্যা' 'ক্যা' রব ওঠে, আপনাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। নির্বাচন আসলেই মাথায় 'এনআরসি' ঢোকে, মতুয়া, রাজবংশী, পাহাড়িদের নিয়ে বাংলা ভাগের চেষ্টা করে! বাংলায় 'ক্যা' করতে কখনই দেব না আমরা। আপনাদের ভোটেই মোদী (Narendra Modi) প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ভোটাধিকার না থাকলে আমাদের জিতিয়েছেন কী করে?' সিএএ প্রসঙ্গে এভাবেই কেন্দ্রের বিরোধিতায় মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।
অপরদিকে, অন্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধেও এককথায় তোপ বর্ষণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'বিজেপি বড় বড় কথা বলছে, আর তার দুই শাগরেদ বাম-কংগ্রেস। কিচ্ছু করে না। ইলেকশনের সময় রাম বাম শ্যাম, জগাই-মাধাই-গদাই এক হয়ে যায়। এ ওর কাছ থেকে কানাঘুষো করে, নানা রকম আদান প্রদান চলে, রাজনীতির পাশাপাশি আরও কিছু লেনদেন চলে,' বললেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে 'ব্যাপম' কেসের প্রসঙ্গ তুলে মমতার মন্তব্য, 'কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে! মধ্যপ্রদেশে ব্যাপমে কতজন গ্রেফতার হয়েছে জানতে চাই। ইচ্ছা করে করে ইলেকশনে যাতে কাজ করতে না পারেন তাই আমার অফিসারদের ভয় দেখাচ্ছে। এরা তৃণমূলের মান সম্মান নষ্ট করতে চাইছে।'
এরই পাশাপাশি, তৃণমূল কংগ্রেসকে 'মানবিক' সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে 'দানবিক' সরকার বলে কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর। তবে এদিন আবারও মতুয়া মন পেতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াস এবং সেই সঙ্গে মুকুল রায়কে ফের গুরুত্ব প্রদানকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। এবার আসন্ন পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর এই স্ট্র্যাটেজি তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কের পালে কতটা হাওয়া লাগায় সেটাই এখন দেখার।
ভাসানের (Immersion) সময় মদ খাওয়াকে ঘিরে বচসা, তর্কাতর্কি! দুষ্কৃতীদের দায়ের কোপে মৃত দমকল কর্মী (Fire Brigade Staff) তুহিনশুভ্র ঘোষ।। কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar Incident) রানীনগর এলাকায় বুধবার রাতের এই ঘটনায় বৃহস্পতিবারও চাঞ্চল্য। এই দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে সরব স্থানীয় মানুষ থেকে মৃতের পরিবার। প্রত্যেকেই প্রশাসনিক গাফিলতির দিকে আঙুল তুলেছে। অত্যাধিক রক্তক্ষরণের কারণে ওই দমকল কর্মীর মৃত্যুর হয়েছে। পরিবারকে জানান চিকিৎসকরা। ঠিক কী হয়েছিল?
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রানীনগর চৌমাথা মোড়ে কয়েকদনের সঙ্গে মদ্যপান নিয়ে বচসা বাঁধে। সেই সময় ভাসানের প্রস্তুতি চলছিল। আমাদের দিকে ওরা দা নিয়ে তেড়ে এসে হামলা চালায়। আমার মুখে আঘাত লাগলেও প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসি। কিন্তু তুহিন ওদের মধ্যে পড়ে যায়। ওর পায়ে কোপ মেরেই পালায় অভিযুক্তরা। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় তুহিনকে হাসপাতালে ভর্তি করলেও শেষরক্ষা হয়নি। যারা এই কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করা গিয়েছে।
নিহতের ভাই জানিয়েছে, এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বাড়লেও প্রশাসন নিষ্ক্রিয়। এক স্থানীয় জানান, এই এলাকায় প্রায় মদের আসর বসে। আমাদের পরিবার নিয়ে চলাফেরা করতে অসুবিধা হয়। এই ঘটনা যখন ঘটেছে, আমরা বিসর্জন দেখছিলাম। পরে পুলিস আসলে আমরা যে যার বাড়িতে ঢুকি।
রোজভ্যালি (rosevalley) বন্ধ হওয়া সত্ত্বেও, নাম পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে কাজ চালাচ্ছে রোজভ্যালি, এমনই অভিযোগ আমানতকারীদের। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে নদিয়ায় (Nadia)। জানা যায়, রোজভ্যালির আমানতকারীদের টাকা ফেরত না পাওয়ায় একটি আলোচনাসভা বসে। ঘটনাস্থল নদিয়ার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠ। নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের রোজভ্যালির আমানতকারীরা একত্রিত হয়ে একটি আলোচনা সভা করেন সোমবার। সেখান থেকে আমানতকারীরা জানান, রোজভ্যালির যে সমস্ত জমি, জায়গা ও হোটেল রয়েছে সেগুলি আইনের চোখে ফাঁকি দিয়ে তাঁদের ব্যবসা চলাচ্ছে।
কিন্তু রোজভ্যালি পলিসির আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।
আমানতকারীদের আরও দাবি, রোজভ্যালির বিভিন্ন সম্পত্তি অন্যজনের নামে চালানো হচ্ছে। অথচ নদিয়া জেলা-সহ বিভিন্ন জেলার আমানতকারীরা তাঁদের বকেয়া টাকা ফেরত পাচ্ছে না। তারা আরও জানান, রোজভ্যালির আমানতকারীদের ম্যাচিওর হওয়ার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আগামীদিন তাঁরা পথে নেমে বৃহত্তর আন্দোলন করবেন। তবে কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকার এই বিষয় নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, বলেই তাঁদের অভিযোগ। কেন্দ্র এবং রাজ্য বোঝাপড়া করে তাঁদের ব্যবসা করতে দিচ্ছে।
এমনকি তাঁদের বিস্ফোরক মন্তব্য, ইডি, সিবিআইকে প্রতিমাসে ১০ লক্ষ করে টাকা দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করে রেখেছে রোজভ্যালির কর্মকর্তারা। আমানতকারীদের স্পষ্ট দাবি, অবিলম্বে গ্রাহক থেকে শুরু করে সমস্ত আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। না হলে আগামীদিনে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
প্রসূন গুপ্ত: এই মুহূর্তে সংসদে সেরা বাগ্মী সাংসদের মধ্যে অন্যতম তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। তাঁর এবং শশী থারুরের বক্তব্য শুনতে সরকারি দলের সাংসদের ভিড় থাকে লোকসভায়। ইংরাজিতে চোস্ত এই দুই সাংসদে যুক্তি-তক্কের জুড়ি মেলা ভার। কৃষ্ণনগরের সাংসদ উচ্চ শিক্ষিতা, বিদেশ থেকে বিশেষ পড়াশুনো এবং সর্বোপরি দিল্লির রাজনীতিতে জড়িয়ে ছিলেন অনেকদিন। এক সময়ে কংগ্রেসের বা রাহুল গান্ধীর সহযোগী ছিলেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন এবং ২০১৬-তে করিমপুর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রিয়পাত্রী হিসাবে তাঁর একটা বিশেষ স্থান ছিল দলে। ২০১৯-এ মাস্টারস্ট্রোক দেওয়ার মতো মমতা তাঁকে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেন এবং মহুয়া জিতেও আসেন। মনে রাখতে হবে এই জয় মোটেই সহজ কাজ ছিল না, কারণ সেবার ১৮টি আসন জয় করেছিল বিজেপি এবং কৃষ্ণনগরেও ভালো জায়গায় ছিল গেরুয়া দল। কিন্তু মহুয়া তাঁর নিজস্ব পরিচিতি এবং সামাজিক অবস্থানকে ব্যবহার করে ভোটারদের কাছে বিশেষ বার্তা দিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন।
এ হেন মহুয়া অনেক সময়ে প্রেসের সামনে বা নিজের পেজে নানা মন্তব্য করে জনমানসে জনপ্রিয় হয়েছেন। কখনও আবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। কয়েক ডজন ফ্যান ক্লাব আছে তাঁর নামে। কয়েক মাস আগে তিনি কালীপুজো নিয়ে কিছু মন্তব্য করে বিজেপির রোষানলে পড়েন। ওই সময়ে দল তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি কারণ ধর্মের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। মহুয়া কিন্তু তাঁর মন্তব্য থেকে এক চুলও সরে যাননি।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের কর্মিসভা থেকে তিনি দলনেত্রীর হালকা ধমক খেয়েছেন। মমতা পরিষ্কার জানিয়েছেন, মহুয়ার প্রাক্তন বিধানসভা কেন্দ্র করিমপুর, যা কিনা নদিয়াতে হলেও লোকসভা হিসাবে আবু তাহেরের মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে পড়ছে। অতএব মহুয়া তাঁর নিজের কেন্দ্র কৃষ্ণনগর নিয়েই যেন থাকেন। করিমপুরের দায়িত্ব আবু তাহেরের। স্বাভাবিক ভাবেই ভরা জনসভায় থতমত খেয়ে যান মহুয়া।
পরে তিনি তাঁর পেজে লেখেন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদেই তিনি আজ একটা জায়গা করে নিয়েছেন। অতএব তাঁর নির্দেশ মেনে চলবেন কিন্তু করিমপুরের ভোটার যেহেতু তিনি, অতএব সেখানেও তিনি থাকবেন। প্রশ্ন উঠেছে মহুয়া কি বিদ্রোহী, নাকি অভিমানী বার্তা দিলেন। মহুয়া ঘনিষ্ঠরা অবশ্য বলেছে, এটা খারাপ কি বার্তা, তিনি তো দলনেত্রীর আদেশ মেনেই তাঁর পেজে মন্তব্য করেছেন। বাকি বিষয়টি কোথায় যায় সেটাই দেখার।