আগামী ২৪ ডিসেম্বরই হবে টেট পরীক্ষা। ওই দিনই কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের ডাক দিয়েছে কয়েকটি সংস্থা। আর সেকারণেই প্রাথমিকের চাকরির টেট পরীক্ষা পিছনোর আর্জি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে দিলীপ ঘোষের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করা হবে না। ২৪ ডিসেম্বরই হবে টেট পরীক্ষা। রাজ্য প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে প্রত্যেক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে। এ ব্যাপারে পরিবহন দফতরকে উপযুক্ত পরিবহন ব্যবস্থা রাখতে হবে। যারা পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেখাবে সেই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে হবে নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
ভারতের ইতিহাসে কার্যত নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলা। আদালতে জোর ধাক্কা কমিশনের। আদালত অবমাননার অভিযোগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহার বিরুদ্ধে রুল জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোর্টের নির্দেশ অবমাননা করা হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অবমাননার কাজ করেছেন বলেই মনে করছে আদালত। অবমাননার আইন অনুযায়ী রুল জারি করার নির্দেশ রয়েছে। রুল জারি অর্থাৎ আদালতে আসতে হবে নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহাকে। আগামী ২৪ নভেম্বর আদালতে এসে উত্তর দিতে হবে কমিশনারকে। এর আগে এ রাজ্যে কোনও নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে এরকম রুল জারি করার নজির নেই বলেই মত আইনজীবীদের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ কয়েকজনের করা মামলার ভিত্তিতেই এদিন এই রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকে শুরু করে মনোনয়ন পর্বেও একাধিক অশান্তিতে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলা। রাজ্যের সেই অশান্ত পরিস্থিতির জেরেই আদালতে জমা পড়েছিল ভুরিভুরি অভিযোগ। দায়ের হয়েছিল একাধিক মামলা। নির্বাচনী পর্বে ভোটে কারচুপি, ব্যালট বাক্স লুঠ, বিরোধীদের উপর আক্রমন-সহ একাধিক অভিযোগের নিষ্পত্তি ঘটাতে বারবার আদালতের দ্বারস্থ হতে দেখা যায় বিরোধীদের। এমনকি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। সেই বাহিনী মোতায়েন নিয়ে নানা টালবাহানার সাক্ষী বাংলা। সেই সময় নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় বিরোধী শিবিরের নেতাদের। ফলস্বরূপ রক্তস্নাত নির্বাচনের সাক্ষী থেকেছে বাংলা। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। সেই প্রেক্ষাপটে আদালতের যাবতীয় নির্দেশকে সামনে রেখে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য ছিল, হাইকোর্টের যে নির্দেশ, তা মান্যতা দেয়নি নির্বাচন কমিশন। সেই মামলার শুনানিতেই এই নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ২৪ নভেম্বর কি হয় সেটাই এখন দেখার।
কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election) করানোর প্রস্তাব দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata Highcourt)। সোমবার নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম মন্তব্য করেন, স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যেতে পারে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন পরিচালনার দাবি করে আসছে বিজেপি সহ প্রত্যেকটি বিরোধী রাজনৈতিক দল। তাদের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ দিয়ে নির্বাচন করলে তা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করা সম্ভব নয়। তাই অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করা হয়েছে। সোমবার মামলার শুনানিতে সেই প্রস্তাবই রাখলেন প্রধান বিচারপতি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা সহ মোট পাঁচ দফা আবেদন নিয়ে মামলা করেছে হাইকোর্টে। শুক্রবার দায়ের করা ওই মামলার শুনানি হয় সোমবার। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি ভোটের দিন পিছোনোরও প্রস্তাব দিয়েছে আদালত। এবিষয়ে আদালত জানিয়েছে, ১৪ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে।
২৩ দিনে ২৩ জনকে চাকরি দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের (High court)। ছয়টি ভুল প্রশ্নের ভিত্তিতে হওয়া মামলার ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি পর্ষদকে প্রশ্নপত্রে থাকা ভুল শোধরাতে হবে। তাই ২৩ জন উত্তীর্ণদের চাকরি দিতে হবে, যারা ওই ছটি ভুল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। আগামী ২৩ দিনের মধ্যেই তাদেরকে চাকরি দিতে হবে নির্দেশ বিচারপতি (Justice) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Avijit Ganguly)।
২০১৪ সালের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষায় সোহম চৌধুরী-সহ আরও ২৩ জন আবেদন করে ২০১৬ সালে ও ২০২০ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রশ্নে ছটি প্রশ্নে ভুল ছিল। ২০১৩ সালের পরীক্ষা, সে সময় কিছু এবং এরপর কিছু নিয়োগ হয় ২০২০ সালে। কিন্তু এই ২৩ জন-সহ বেশ কয়েকজনকে টেট অনুত্তীর্ণ বলে ঘোষনা করা হয়। RTI করে তারা জানতে পারেন, তাদের দেওয়া উত্তরপত্রে ছটি প্রশ্ন ভুল ছিল, কিন্তু তারা সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন অথচ নম্বর পাননি।
পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫-র ডিসেম্বরে সোহমদের ছয় নম্বর দেয় পর্ষদ। ফলে তাঁরা টেট উত্তীর্ণ হন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তের যুক্তি, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় এমন অনেকে যদি চাকরি পান, তবে এই মামলাকারীরাও চাকরি পাওয়ার যোগ্য। কারন প্রশিক্ষণহীনরা যদি চাকরি পেতে পারে তাহলে সোহমরা কেন নয়? সোহমরা তো প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী। ছয় বছর ধরে এই ২৩ জন বঞ্চিত হয়েছেন, এখন তারা এই চাকরির পাওয়ার অধিকার রাখে। এরপরই এই শুনানির ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ।
এই ২৩ জনকে আগামি ২৩ দিনের মধ্যে চাকরি দেবার নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ২৩ দিনের মধ্যে পর্ষদকে নিয়োগ পত্র দিতে হবে এমনটাই নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
সুপ্রিম কোর্টে শুক্রবার বড়সড় ধাক্কা খেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম বিধানসভা নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তির জন্য উপযুক্ত জায়গা কলকাতা হাইকোর্ট। এই মন্তব্য করে শুভেন্দুর আবেদন ফেরালো শীর্ষ আদালত। নন্দীগ্রামের বিধানসভা ভোট গণনাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলা ভিনরাজ্যে স্থানান্তরের আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে হাইকোর্টেই মামলা ফেরাল শীর্ষ আদালত। এরপরেই পিটিশন প্রত্যাহার করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।
পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রাম আসনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর আবেদনে SC আদেশ দিতে অস্বীকার করেছে। তিনি পিটিশন প্রত্যাহার করেন।
শুভেন্দুর নির্বাচনকে কলকাতা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন মমতা। সুভেন্দু দাবি করেছিলেন যে বিষয়টি অন্য কোনও হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হোক।
ফের আক্রমণের মুখে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। তিনি এজলাসে দেরিতে বসেন। এই অভিযোগ পত্র বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় প্রধান বিচারপতির (chief justices ) কাছে। এই চিঠি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে জানান যারা এই চিঠি লিখেছেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (contempt of court)মামলা করা হবে। তার আগে তাদের হলফনামা (affidavit) দিয়ে আদালত জানতে চাইবে এই চিঠি তে সই করার কারণ।
বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই বার্তা পেয়ে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী অরুনাভ ঘোষ (Arunavo Ghosh)। অরুণাভ ঘোষের দাবি, যত দিন যাচ্ছে বিচারপতি-আইনজীবীদের সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। এর প্রত্যুত্তরে প্রধান আইনজীবী জানান আদালতের গরিমা রক্ষার দায়িত্ব বিচারপতি এবং আইনজীবী উভয়েরই। পাশাপাশি আইনজীবীদের দাবি, কোর্টে সংবাদমাধ্যমের (media) অবাধ বিচরণ বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষুণ্ণ করছে। কোর্টরুমের প্রসিডিং ভিডিওগ্রাফি করছে সংবাদ মাধ্যম। সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার আবেদনও জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তাঁদের এই আবেদন ও ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
সম্প্রতি ভরা এজলাসে একেরপর এক উত্তপ্ত কথোপকথনে জড়িয়ে পড়েন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এবং আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। সুকন্যা মণ্ডল শুনানিতেও উত্তেজক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। এই বাগযু্দ্ধের জেরে আইনজীবীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত চত্ত্বরে ব্যানারও পড়েছিল। এবার অভিযোগ স্বয়ং বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনায় দ্বিধাবিভক্ত বিচার ব্যবস্থা।
বাংলার শাসক-বিরোধী নেতাদের সম্পত্তিবৃদ্ধি (Asset Case) নিয়ে মামলা চলছে হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের (Union Minister) এবং রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর একাধিক নেতার সম্পত্তি খতিয়ান চেয়ে দায়ের জনস্বার্থ মামলা (PIL)। আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার প্রধান বিচারপতির কাছে এই মামলা দায়েরের অনুমতি চাইলে, কোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে।
নতুন এই মামলায় রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, ধর্মেন্দ্র প্রধান, রাজনাথ সিংয়ের নাম রয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে বিরোধী দলের দুই পরিচিত মুখ সুজন চক্রবর্তী এবং রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নামও যুক্ত হয়েছে মামলায়। আদালতের কাছে আইনজীবীর আবেদন, 'ইডি এবং সিবিআইয়ের কাছে এই নেতারা তাঁদের সম্পত্তির খতিয়ান দিক। সেই খতিয়ান তদন্ত করে দেখুক কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো। গরমিল পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক।'
সম্প্রতি তৃণমূলের ১৯ নেতামন্ত্রীর সম্পত্তিবৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলায় ইডিকে পার্টি করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই নির্দেশের বিরোধিতায় আবার পাল্টা আবেদন করেছেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী। সেই আবেদনের শুনানি চলছে হাইকোর্টে। পাল্টা রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর ১৭ জনের সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়ে দায়ের হয়েছে মামলা। এই মামলায় তালিকাভুক্ত হয়েছে লকেট চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, তন্ময় ভট্টাচার্য, মহম্মদ সেলিমের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির নামে মামলার দিকে তাকিয়ে রাজ্য রাজনীতি।