অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) দিল্লি যাত্রা প্রায় নিশ্চিত। অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ পেতে তাঁর আবেদনে সাড়া দিল না দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। উলটে আরও এক সপ্তাহ শুনানি পিছিয়ে দিলেন বিচারপতি দীনেশ শর্মা। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলার জন্য শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। এমনটাই সূত্রের খবর। এই সিদ্ধান্তে অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রায় সেভাবে কোনও বাধা রইলো না। এদিন তৃণমূল নেতার হয়ে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল (Kapil Sibal)।
তাঁর আইনজীবীর সওয়ালে মোটেও সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট। এমনটাও জানা গিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করার পর আবার দিল্লি হাইকোর্ট মামলা কেন? প্রশ্ন তোলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি। অনুব্রত আইনজীবীদের বক্তব্য, 'কলকাতা হাইকোর্টের মামলার বিষয় অন্য।' এদিকে, ইডির আইনজীবী জানান, 'অভিযুক্তর আইনজীবীদের বক্তব্য রেকর্ড করা হোক। ওরা দুরকম কথা বলছেন।'
এরপরেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার কথা বললে অনুব্রতর আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, 'সোমবার শুনানি হোক।' তার প্রতিবাদ করে ইডি আইনজীবীরা বলেন, 'অভিযুক্তর আইনজীবীরা গত ৯ জানুয়ারি থেকে শুধু সময় চাইছেন। মৌখিক আশ্বাসে সময় নেওয়া হচ্ছে। এতে তদন্তে সমস্যা হচ্ছে।' এরপরেই আদালত অন্তর্বর্তী কোনও স্থগিতাদেশ না দিয়ে মামলার শুনানি আগামি সপ্তাহ পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছে।
তৃণমূলের ১৯ রাজনীতিবিদের সম্পত্তি নিয়ে মামলায় দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের। তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা হাইকোর্টে দায়ের মামলার বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে যান। তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিবাল এবং সুহান মুখোপাধ্যায়। সেই শুনানিতেই স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের বেঞ্চ। ফলে বড়সড় স্বস্তি তৃণমূলের ১৯ নেতামন্ত্রীর।
এই মামলা ৫ বছরের পুরনো হলেও কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি ওই মামলায় ইডি-কে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তৃণমূল বিধায়ক। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে ছিল সেই মামলার শুনানি। কলকাতা হাইকোর্টের ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়ায়, আপাতত ওই মামলায় কোনও শুনানি করা যাবে না।
এদিকে, যে ১৯ জন নেতামন্ত্রীর নাম রয়েছে, তাঁরা হলেন--
ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, অমিত মিত্র, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক,মলয় ঘটক, শিউলি সাহা, অরূপ রায়,সব্যসাচী দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বর্ণকমল সাহা, জাভেদ খান, গৌতম দেব, ইকবাল আহমেদ। এছাড়াও নাম রয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও অর্জুন সিংয়ের। যাদের মধ্যে একজন বিজেপির টিকিটে লোকসভায় জিতে একুশের ভোটের পরে তৃণমূলে ফিরেছেন। অপরজন আপাতত রাজনীতিতে সক্রিয়। এঁদের পাশাপাশি প্রয়াত দুই নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডেরও নাম রয়েছে তালিকায়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাও রয়েছেন সেই তালিকায়।
অভিযোগ, ২০১১ সালের পর অর্থাৎ তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এসব নেতাদের সম্পত্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শীর্ষ আদালতে তৃণমূল দাবি করেছে, ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের কটাক্ষের মুখে ভারতীয় ফুটবল সংস্থার (AIFF) প্রাক্তন সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেল (Prafulla Patel)। হুঁশিয়ারির সুরে দেশের শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ভারতীয় ফুটবলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন প্রফুল্ল। সোমবারই এআইএফএফ-র উপর থেকে প্রশাসক কমিটিকে (সিওএ) সরিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এআইএফএফ নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা। সেই নির্দেশ মেনে আগামী ২ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। এদিকে, সোমবারের শুনানিতে প্রফুল্লকে একহাত নিয়েছেন বিচারপতিরা। ভারতীয় ফুটবলের বর্তমান অবস্থার জন্য তাঁকেই দায়ী করেছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে প্রফুল্লের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি জানান, নির্বাচনের তদারকির জন্য সুপ্রিম কোর্ট যে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করতে চাইছে, তাতে কয়েকটি রাজ্য সংস্থার আপত্তি রয়েছে। এই মন্তব্যের পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। প্রফুল্লের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, 'আপনি বিশ্বকাপ আয়োজনে বাধা দিচ্ছিলেন। আপনি ভারতীয় ফুটবলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। সেটা এখনও করে চলেছেন। আমরা আপনাকে বুঝে নেব।'
বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও জানান, রাজ্য সংস্থাগুলির সম্মতির পরেই রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, 'এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে কেউ আবেদন করেনি। এমনকি, রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিদেরও এতে সম্মতি রয়েছে।'
সুপ্রিম কোর্টে প্রফুল্লের হয়ে সিবাল জানান, আমার মক্কেল চেয়েছিলেন নির্বাচন হোক। মহিলাদের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব তাঁর আমলেই পাওয়া। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন হোক ও ভারতীয় ফুটবলের উপর থেকে নির্বাসন তুলে নেওয়া হোক। এই বক্তব্যের পরে বিচারপতি চন্দ্রচূড় প্রশ্ন করেন, এআইএফএফ-র নির্বাচন হলে কি ফিফায় নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন প্রফুল্ল? জবাবে প্রফুল্ল জানিয়েছেন, তিনি সেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধি। ভারতীয় ফুটবলের ভালর জন্যই সেখানে লড়াই করছেন তিনি।