
রাজ্যে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার সাঁড়াশি চাপে কামারহাটি পুরসভা। সূত্রের খবর, গতবার ১৮ কর্মীকে তলব করা হলেও এবার ওই পুরসভার ৩৪ জন কর্মীকে তলব করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের তলবের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখিও হয়েছিলেন পুরসভার কর্মীরা। আবার সেই পুরসভার কর্মীদের তলব করা হল।
এ বিষয়ে পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল সাহা বলেন, ‘সিবিআইয়ের নির্দেশ মতো পুরসভার কর্মীরা সিবিআই দফতরে হাজিরা দিচ্ছেন। পাশাপাশি, সিবিআই যে সমস্ত নথি চেয়ে পাঠিয়েছে, সেই সব নথিও পাঠানো হয়েছে। এর পরেও যা যা নির্দেশ আসবে, আমরা মেনে চলব।’ প্রসঙ্গত, কামারহাটি তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের বিধানসভা কেন্দ্র। এর আগে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযানের অভিযোগ তুলে পুরসভায় গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির মামলায় ধৃত অয়ন শীলের একটি সংস্থার মাধ্যমে ওই ১৪টি পুরসভায় কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। তাদের দাবি, টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, রাজ্যের ১৪টি পুরসভায় তল্লাশি চালানোর সময়েই নথি সংগ্রহ এবং আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মূলত ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পুরসভাগুলিতে নিয়োগের পদ্ধতি এবং নির্দেশিকার নথি যাচাই করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, ২০১৭-এ অয়নের সংস্থা বরাহনগর পুরসভায় প্রথম নিয়োগের বরাত পায়। ২০১৮-২০১৯ নাগাদ নিয়োগের পরীক্ষা হয়। অভিযোগ, তাতে পুরসভার কাউন্সিলরদের একাংশের নিকটাত্মীয়দের চাকরি হয়েছে বিভিন্ন পদে। মজদুর পদে কাজে যোগ দিয়ে কেউ কেউ পুর-প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করছেন বলেও অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, ধৃত অয়নের সূত্রেই তাঁর পরিচিত শ্বেতা চক্রবর্তীর নাম উঠে এসেছিল। সেই শ্বেতা কামারহাটি পুরসভাতেই চাকরি করেন। অয়নের সূত্রে শ্বেতার নাম উঠে আসার পর পুরসভায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাও বলেছিলেন মদন।
কামারহাটির (Kamarhati) ইএসআই হাসপাতালের এক কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু (Dead Body)। মৃতদেহটি উদ্ধার (Recovery) হয় হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকা থেকে। তবে এই ঘটানায় মৃতার পরিবার খুনের অভিযোগ তুলেছে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এমনকি পরিবারের লোকেরা মৃতার স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় মৃতদেহটি গোলাবাড়ি থানার পুলিস (Police) উদ্ধার করে কামারহাটি থানায় খবর দেয়। তারপরেই কামারহাটি থানার পুলিস মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিস। তবে মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কামারহাটি থানার পুলিস। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
প্রাথমিক তদন্ত করে পুলিস জানায়, মৃত ওই ব্যক্তির নাম বিপ্লব বোস। তিনি কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালে কাজ করতেন। গত চারদিন আগে নিখোঁজ হয় বিপ্লব। তারপরেই তাঁর স্ত্রী চৈতালী সবকিছু নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যায়। এমনকি নিখোঁজ হওয়ার পর ২১ তারিখ বিপ্লব বোসের মা বেলঘরিয়া থানায় একটি মিসিং ডাইরিও করেন। অবশেষে সোমবার হাওড়া গোলাবাড়ি এলাকা থেকে বিপ্লবের ফোন ট্র্যাক করে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় মৃতার পরিবার জানায়, ১০ বছর আগে বিপ্লবের বিয়ে হয় রাজারহাটের বাসিন্দা চৈতালী ভট্টাচার্যের সঙ্গে। বাড়ির অমতেই মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন বিপ্লব। তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকেই বিপ্লবের উপর শারীরিক অত্যাচার করতেন স্ত্রী চৈতালী। পরিবারের আরও দাবি, চৈতালী একটি বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঝামেলা অশান্তি লেগেই থাকতো তাঁদের দাম্পত্য জীবনে। এমনকি মাঝে মাঝেই এই অশান্তির জন্য বিপ্লব হাসপাতালের কোয়াটারেই থাকতেন। পরিবারের অভিযোগ, ওই বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের জেরেই স্ত্রী চৈতালী খুন করেছে বিপ্লবকে, এমনই অভিযোগ করছে মৃতের পরিবার।
'অনুপম দত্তের পর এবার আপনার নম্বর।' কামারহাটি পুরসভার (Kamarhati Municipality) ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় এমনি হুমকির মুখে পড়তে হল তৃণমূল (TMC) মহিলা কাউন্সিলরকে। অভিযোগ, কামারহাটি পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেলঘরিয়া (Belgharia) ৪ নম্বর রেলগেটের পাশে একটি বাড়ি নির্মাণ হচ্ছিল। কাউন্সিলর গিয়ে বাধা দেওয়ায় তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ জানান, 'কামারহাটির গুড্ডু রহমনের বিরুদ্ধে।'
ওই পুরমাতা আরও অভিযোগ করেন, 'ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, ওয়ার্ডে ঢুকতে গেলে তাঁর কথা শুনতে হবে। নইলে যেভাবে পানিহাটি পুরসভার কাউন্সিলর অনুপম দত্ত যেভাবে চলে গেলেন, এরপর তাঁর নম্বর। ওয়ার্ডে থাকতে গেলে গুড্ডু রহমানকে টাকা দিতে হবে বলেও অভিযোগ করেন।' পুরমাতা বেলঘরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই নিয়ে কামারহাটি পুরসভার পুরপিতা গোপাল সাহা জানান, 'এরকম ঘটনা ঘটে থাকলে তা সত্যি দুঃখজনক। এ বিষয়ে খোঁজ নেবেন তিনি। এছাড়া অভিযোগ এলে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।'
এ বিষয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি নেতা জয় সাহা। তিনি বলেন, 'রাজ্যজুড়ে খেলা শুরু হয়েছে। তবে ভয়ংকর খেলা এখনও বাকি রয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলই অভিযোগ করা শুরু করেছে। অবৈধ নির্মাণ হবে, আর তৃণমূলের কাউন্সিলরের কাছে টাকা যাবে না তা কি হয়? চোর-ডাকাতের সরকার, খুব তাড়াতাড়ি শেষ হবে।'
কামারহাটি (Kamarhati) ষষ্ঠীতলায় তৃণমূল (Tmc) কর্মীর নির্মীয়মান আবাসন থেকে তাজা বোমা (Bomb) উদ্ধার। বৃহস্পতিবার সকালে কামারহাটি থানার পুলিস গিয়ে বোমাগুলি উদ্ধার করে। পুলিস সূত্রে খবর, অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী এখনও পলাতক। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মদন মিত্রর ছায়াসঙ্গী মহম্মদ মুস্তাফা হোসেন ওরফে রিন্টু নামে এক তৃণমূল কর্মীর নির্মীয়মান আবাসন থেকে ৫টি তাজা বোমা উদ্ধার করল কামারহাটি থানার পুলিস। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়। এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর কোনোরকম প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। ঘটনার পর থেকে পলাতক তৃণমূল কর্মী মহম্মদ মুস্তাফা হোসেন ওরফে রিন্টু।
এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা কমল দাস জানান, 'আইন আইনের পথে চলবে। মদন মিত্র আমাদের জননেতা। তাঁর সঙ্গে অনেকেই ছবি তোলেন। মদন মিত্রের সাথে কারও ছবি থাকলে, সে তাঁর ঘনিষ্ঠ হবে এটা সঠিক নয়।' পাশাপাশি বিজেপি নেতা কিশোর কর বলেন, কামারহাটি অঞ্চলে মদন মিত্র এই ধরনের দুষ্কৃতীদের নিয়ে সঙ্গে করে ঘোরাফেরা করেন। তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। এই ধরনের ঘটনা দেখে কেউ আর তৃণমূল কংগ্রেস দল করতে চাইছেন না। এ বিষয়ে বিজেপির পাল্টা পত্রিক্রিয়া, 'তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য বোমাগুলি মজুত করেছিল।'
জেল খাটতে হলে চেয়ারম্যান (Chairman) খাটবে, কাউন্সিলর খাটবে, বিধায়ক খাটবে, এমপি খাটবে, কিন্তু কর্মচারীরা যেখানে ছিল সেখানেই থাকবে। মন্তব্য কামারহাটি (Kamarhati) পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল সাহার। কিন্তু কেন এমন বললেন তিনি? কারণ, অয়ন শীল (Ayan Shil) গ্রেফতার হয়েছে। রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় করে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম উঠেছে ৭০টি পুরসভার। অয়নকে গ্রেফতারির পর মধ্যখানে কেটে গিয়েছে ৩-৪টে দিন। বিতর্কের মাঝেই কামারহাটি পুরসভায় কাজে যোগ দিয়েছেন শ্বেতা চক্রবর্তী। আগেই জানিয়েছিলাম, শ্বেতা কামারহাটি পুরসভায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত। সেই পদেই নিজের কাজে যোগ দেন তিনি। শুক্রবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন খোদ কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র।
শুক্রবার মদন মিত্র শ্বেতার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে যাওয়ার পর, শ্বেতাকে জিজ্ঞেস করা হলে শ্বেতা জানান, 'উনি আমাদের বিধায়ক, উনি আসতেই পারেন।' পাশাপাশি শুক্রবার নিয়োগ বিতর্কে শ্বেতার নাম জড়ানোয়, ওই পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, 'যদি জেল খাটতে হয়, চেয়ারম্যান খাটবেন, কাউন্সিলর খাটবেন, বিধায়ক খাটবেন, এমপি খাটবেন। কিন্তু কর্মচারীরা যেখানে ছিল সেখানেই থাকবেন। এর কোনও ব্যতিক্রম হবে না। যদি অন্যায় আমরা করে থাকি তাহলে শাস্তি আমাদেরই হবে। প্রত্যেকেই সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছে।' কামারহাটি পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল সাহা আরও বলেন, 'হাসিমুখে কাজ করুন। সাধারণ মানুষকে তাঁদের পরিষেবাটা দিন।'
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রথমবার ফেসবুক (Facebook) লাইভে মুখ খুললেন রাজ্য রাজনীতির অন্যতম রঙিন মানুষ মদন মিত্র (Madan mitra)। মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক লাইভ করেন তিনি। ফেসবুক লাইভে বামকে সরাসরি আক্রমণ করেন কামারহাটি (Kamarhati) বিধানসভার বিধায়ক মদন মিত্র। মদনের এই লাইভ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এমনিতেই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ইডির সক্রিয়তায় জেলে রয়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। ফলত তা নিয়েই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভ করে তিনি বলেন, 'বাম আমলের ৩৪ বছরে আমাদের অর্থাৎ তৃণমূলের কোনও ছেলে চাকরি পায়নি। কয়েক কোটি বেকার রেখেছে সিপিআইএম। সিপিআইএম চলে গিয়েছে। বেকার কি চিরকাল বেকার থাকবে?' এছাড়া ওই লাইভ তিনি আরও বলেন যে, 'নিয়ম, প্রক্রিয়া সঠিক রেখে যদি চাকরি দেওয়া হয়, সেটা অন্যায় নয়। আমি সুযোগ পেলে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের আবার চাকরি দেব। ৩৪ বছর ধরে সিপিএম নিজেদের ছেলেদের চাকরি দিয়ে এসেছে। কেন্দ্রে তো বিজেপি একতরফা চাকরি দিচ্ছে।'
এই লাইভের পরেই শুরু হয় বিতর্ক। সম্প্রতি একটি সভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, 'আমার কোটার চাকরি আমি তৃণমূলের ছেলেদেরই দেব। যাঁরা মাঠে যান, দেওয়াল লেখেন, আমার হয়ে ভোট চান, চাকরি তাঁরাই পাবেন।' ব্রাত্য বসুর এই মন্তব্যের পর শুরু হয়েছিল জোর বিতর্ক। এবার ব্রাত্যর পথেই হাঁটলেন মদন মিত্র।
দেখে নিন সেই ভাইরাল ভিডিওঃ
যদিও এ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সিপিআইএমের নেতা সুজন চক্রবর্তী। বুধবার তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'মদন মিত্র একটু পিছিয়ে থাকছেন টিআরপিতে, তাই তিনি ফেসবুক লাইভ করে পর্দায় আসার চেষ্টা করছেন। তিনি তো ব্রাত্যর পথেই হাঁটছেন এ আর নতুন কী?' এছাড়া তিনি আরও বলেন, 'ব্রাত্য বসুকেও বা দোষ দেবেন কেন। মুখ্যমন্ত্রীই তো বলেছিলেন বেশ করেছি। ওনার পথেই ব্রাত্য, ব্রাত্যর পথেই মদন।' তিনি বুধবার শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলেন, 'ওঁদের আবার নীতি কী? এসবের মানে যে যত বেশি টাকা দিতে পারবে, সে চাকরি পাবে।'
মামা-ভাগ্নি পরিচয়ে একই আবাসনে থাকতেন অয়ন-শ্বেতা (Ayan-Shweta)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক অবাক করা তথ্য খুঁজে পেয়েছে ইডি (ED Radar)। এক অয়নকে পাকড়াও করে বিতর্কে, টলিউড (Tollywood) পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর নাম। নিয়োগ দুর্নীতিতে (Education Scam) সম্প্রতি অয়ন শীলকে গ্রেফতার করেছে ইডি। তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালত ১৩ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। জানা গিয়েছে, কামারহাটি পুরসভা এলাকায় এক আবাসনে থাকতেন অয়ন-শ্বেতা। মামা-ভাগ্নি সম্পর্কে তাঁরা থাকতেন বলে দাবি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর। তবে আগে একসঙ্গে থাকলেও বছর দুয়েক দু'জন একসঙ্গে থাকছিল না বলে জানান ফ্ল্যাটের এক আবাসিক।
অয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সমস্ত নথি, ওএমআর শিট যাচাই করে ইডি জানতে পেরেছে উদ্ধার হওয়া ওএমআর শিট, আসল উত্তরপত্র। পুরসভা এবং শিক্ষা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়ন শীলের বাড়ি থেকে শুধুমাত্র স্কুল নয়, একইসঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু পুরসভারও ওএমআর শিট মিলেছে। সেই সব ওএমআর শিট থেকে মিলেছে প্রভাবশালীদের সুপারিশ সংক্রান্ত তথ্য।
স্কুল সার্ভিসের গুরগাঁওয়ের সংস্থার মতো অয়নের সংস্থা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করত গোটা পদ্ধতি, তা জানতে চাইছেন ইডি কর্তারা। পাশাপাশি ইডির আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অয়নের কালো টাকা খেটেছে টলিউডে। তৈরি হয়েছে একাধিক সিনেমা! অয়নের দুর্নীতির জাল কত দূর অবধি? তা জানতে ইডির নজরে শ্বেতা চক্রবর্তীও।
ইডির সূত্র মারফত খবর, কবাডি কবাডি ছবির প্রযোজনা করেছিলেন অয়ন শীল। অয়নের সংস্থার ব্যানারে ওই ছবির প্রযোজনা হয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, সেই ছবির পরিচালনা করেছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। অয়নের বাড়ি থেকে ওই ছবি প্রযোজনার নথি উদ্ধার। চুক্তিপত্র থেকে ছবির খরচের হিসেব মিলেছে তল্লাশিতে। ২০২১ সালে তৈরি হয় ওই ছবি।
অর্জুন চক্রবর্তী, সোহিনী সরকারের মতো নামজাদা অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ছিলেন ওই ছবিতে। অয়ন শীলের, প্রোডাকশন হাউজের, যে প্রথম সিনেমাটি কাবাডি কাবাডি, সেই সিনেমার ট্রেলার লঞ্চয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল শ্বেতা চক্রবর্তী।
ইডি সূত্রে খবর, শ্বেতা চক্রবর্তী এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে, গত ১৮ তারিখ যখন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটরেট আধিকারিকরা সল্টলেকের এফডি ব্লকে যায়, তার আগে থেকে অয়ন শীলকে সতর্ক করেন মেসেজ পাঠিয়েছিলেন শ্বেতা। ইডির দাবি, 'শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রমোটিং ব্যবসা মূল দায়ভার ছিল অয়ন শীলের কাঁধে। আর এই প্রোমোটিংয়ের যে প্রজেক্টগুলি হতো, সেই প্রজেক্টের প্ল্যান পাশ করতো কামারহাটি পৌরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শ্বেতা চক্রবর্তী। এই শ্বেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে অয়ন শীলের স্ত্রী, কাকলি শীলের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল।'
এছাড়া ইডির চাঞ্চল্যকর তথ্য, অয়নের বাড়িতে মিলেছে ইম্পার অডিট সংক্রান্ত নথিও। অয়নের অফিসে মিলেছে ইম্পার ব্যালান্স শিটও। পাশাপাশি অয়ন শীলের ছেলে অভিষেক শীলের পেট্রোল পাম্পের হদিস মিললো। সেখানে বড় আর্থিক লেনদেন হয়েছে। যার পার্টনার ইমন গঙ্গোপাধ্যায়, কে এই ইমন গঙ্গোপাধ্যায়। কী যোগসূত্র রয়েছে খতিয়ে দেখছে ইডি।
কামারহাটিতে গ্য়াসের সিলিন্ডার (Kamarhati Blast) ফেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। ঘটনায় এক শিশু ও মহিলা সহ ৬ জন গুরুতর আহত (Blast Injury) হয়। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাগর দত্ত হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি করা হয়েছে। কামারহাটির মসজিদ মোড়ে একটি অটোরিক্সা গ্যাস রিফিলিংয়ের দোকানে বিস্ফোরণটি ঘটে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ঘটনাস্থলে বেলঘরিয়া ও খড়দহ থানার বিশাল পুলিস বাহিনী।
জানা গিয়েছে, কামারহাটির মসজিদ মোড়ে একটি অটোরিক্সা গ্যাস রিফিলিংয়ের দোকানে বিস্ফোরণটি হয়। ডোমেস্টিকাল গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস কাটাই করে অবৈধভাবে অটোতে ভরার সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে দোকানে। ঘটনায় এক শিশু ও মহিলা-সহ ৬ জন গুরুতর জখম। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদেরকে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ এই ঘটনার পরেই এলাকায় উত্তেজনা ছাড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বেলঘড়িয়া ও খড়দহ থানার বিশাল পুলিসবাহিনী। ইতিমধ্য়েই ঘটনাস্থলটিকে ব্য়ারিকেড করে দেয় পুলিস।
ঘটনাস্থলে ব্যারাকপুরের ডিসি সাউথ অজয় প্রসাদ-সহ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ ও এসিপি বেলঘড়িয়া প্রিয়ব্রত বক্সী। ঘটনাস্থল ঘুরে ব্যারাকপুর কমিশনারের ডিসি সাউথ অজয় প্রসাদ জানান, বিস্ফোরণের একটা ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন জখম, কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এখনও চিকিৎসাধীন। পরে ওই ব্য়ক্তির সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কামারহাটি এনআরএ রোডে বেলা ১২টা নাগাদ আচমকাই বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। গোটা এলাকায় ধোঁয়া ছেয়ে গিয়েছিল। বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে বলেই গুজব ছড়ায়। পরে স্থানীয়রা ওই অবৈধ গ্য়াসের দোকানের সামনে চার পাঁচ জনকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে, সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে কামারহাটি সাগর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এলাকাবাসীরা আরও জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কামারহাটির বেশ কিছু অঞ্চলের রাস্তায় যে সিএনজি অটো চলে তার বেশিরভাগ অটোচালক অর্থ সাশ্রয়ের জন্য এই অবৈধ কাটা গ্যাস সেন্টারে অটোর জ্বালানি ভরেন। গ্যাস রিফিলিং পাম্পিং সেন্টারে বাড়তি খরচ থেকে রেহাই পেতেই অটোচালকরা কাটাই গ্যাসের পথে পা বাড়ায়। ডোমেস্টিকাল সিলিন্ডার থেকে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গ্যাস ভরা হয় অটোতে। মঙ্গলবারও ঠিক সেই রকমই কাজ চলছিল কামারহাটির মসজিদ পাড়ায়। তখনই আচমকাই সেই গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ ঘটে।
ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষ। এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কামারহাটির (Kamarhati) মিত্র বাগান এলাকা। গোষ্ঠী সংঘর্ষে আহত (injured) ১ জন। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় বেলঘড়িয়া থানার পুলিস (police)। জানা গিয়েছে, বুধবার কামারহাটির মিত্র বাগান এলাকায় বিধায়ক মদন মিত্রের একটি সভা চলছিল। সেই সভা শেষ হওয়ার পর তৃণমূলকর্মী শানু খান বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় ৯ থেকে ১০ জন দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকায় এবং তাঁর উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। তারপর তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
আহত তৃণমূল কর্মী জানান, বিধায়ক মদন মিত্রের ছায়াসঙ্গী আনিসুর রহমানের লোকজন তাঁর উপর হামলা চালিয়েছে। আহত অবস্থায় ওই তৃণমূলকর্মীকে কামারহাটি সাগর দত্ত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান এলাকার স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ব্যাপক পুলিস আসে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেলঘড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আহত তৃণমূল কর্মী শানু খান। পাশাপাশি, আহত তৃণমূল কর্মীর দাদা ইমরান খান বিধায়ক মদন মিত্রর উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, তিনি তাঁর ছায়াসঙ্গী আনিসুর রহমানকে যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে কামারহাটির মানুষ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তাঁরা সেটা জানেন। পরপর কামারহাটিতে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বকে কটাক্ষ করেছে বিজেপিও।
ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর (Death) অভিযোগ। এবার কাঠগড়ায় কামারহাটির (Kamarhati) সাগর দত্ত হাসপাতাল (Sagore Dutta Hospital)।মৃত নিমতা (Nimta) আলিপুর এলাকার বছর ৫৫-র বাসিন্দা উত্তম পাল। জানা গিয়েছে, পেটে গলব্লাডারের স্টোন অপারেশনের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন সাগর দত্ত হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল মাইক্রো সার্জারি দ্বারা অপারেশন করানো হবে। কিন্তু অপারেশনের পরে পরিবারের লোকজন দেখতে পান রোগীর মাইক্রো সার্জারির মাধ্যমে অপারেশন করা হয়নি। পেট কেটে অপারেশন করা হয়েছে। এবং সেই অপারেশন করার পরে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগীর পরিবারের লোকজন হাসপাতালের সামনে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
রোগীর পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তারকে দিয়ে অপারেশন না করিয়ে জুনিয়ার ডাক্তারদের দিয়ে অপারেশন করানো হয়েছে। এবং মাইক্রো সার্জারি না করে সাধারণভাবে অপারেশন করা হয়েছে। এর ফলেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দোষী ডাক্তারের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকজনেরা।
এছাড়াও হাসপাতালের আরো কয়েকটি রোগীর পরিবারের অভিজোগ, হাসপাতালের পরিষেবা একদমই ভালো নয়। ডাক্তারের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। রোগীকে এনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এই নিয়ে হাসপাতালের মধ্যেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়
কামারহাটিতে (Kamarhati) তৃণমূলের (TMC) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ এবং গুলি চলার অভিযোগ। উভয়পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি রয়েছে বলে খবর। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের (Madan Mitra) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে।
অভিযোগ, এলাকা দখল এবং তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কামারহাটি তিন নম্বর ওয়ার্ডের ক্রিক স্ট্রিট এলাকা। বিধায়ক মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ গুড্ডুর এলাকার মানুষজনের অভিযোগ, রবিবার রাত আটটা নাগাদ সাগর দত্ত হাসপাতালে গুড্ডুর লোকদের উপরে আক্রমণ করা হয়। তাঁদের তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতাল ভর্তি রয়েছে।
গুড্ডুর এলাকার লোকেদের আরও অভিযোগ, রাত দশটা নাগাদ দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফসানা খাতুনের ছেলের নেতৃত্বে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন গুড্ডুর এলাকায় গিয়ে খোলা আকাশে চার থেকে পাঁচটা গুলি ছোড়ে এবং এলাকার মানুষদের ভয় দেখায়। এরফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ক্রিক স্ট্রিট তিন নম্বর ওয়ার্ড অঞ্চলের এলাকার মানুষ।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিস। অপরদিকে মদন মিত্রের সঙ্গী দু'নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফসানা খাতুনের অভিযোগ, তাঁর অঞ্চলের দুটো ছেলেকে এমন ভাবে মেরেছে তাঁরা কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর আরও অভিযোগ, গুড্ডু মাসে দুবার করে দীঘায় থাকে আর সেই সময় ফোনে ফোনে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এলাকায় ছোট ব্যবসায়ী, বড় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তোলাবাজি গুন্ডামি করে বেড়ায় এবং ভয় দেখায়।
এককথায়ম তৃণমূল কংগ্রেসের এবং মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে এলাকা দখল এবং তোলাবাজি নিয়ে নিজেদের বিবাদের জেরে এলাকা উত্তেজনা আতঙ্ক ছড়ায়।
কামারহাটির জনসভায় সৌগত রায়ের (TMC MP Sougata Ray) মন্তব্য ঘিরে শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর। একযোগে সমালোচনার সুরে বিঁধেছে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, 'একজন অধ্যাপকের মুখ থেকে এ ধরনের কথা শুনে লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের (TMC) দৌলতে বাংলার রাজনীতি একদম নর্দমায় পরিণত হয়েছে।' সরব সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও (Sujan Chakraborty)।
তিনি বলেন, 'সৌগত রায় আজ নোংরা, ফ্যাসিস্টদের মতো কথা বলেছে। হিম্মত আছে, কারণ আমরা সমালোচনা করবই। রাজ্যজুড়ে যা চলছে, তার সমালোচনা হবে না? এই মুহূর্তে তৃণমূলের বড় সমালোচক সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা।'
একধাপ এগিয়ে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, 'চাপে পড়ে উনি এ কথা বলেছেন। সৌগত দা-কে যতটা চিনি এই ধরনের কথা বলার মানুষ নয়।'
আর কী বললেন বিরোধী নেতারা?
এদিকে, কামারহাটির জনসভায় দমদমের সাংসদ মন্তব্য করেন, 'তৃণমূলের সমালোচকদের গায়ের চামড়া দিয়ে পায়ের জুতো তৈরি হবে। সেইদিনের জন্য অপেক্ষা করুন।' এতেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যদিও সমালোচনা শুরু হতে ঢোক গিলেছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেছেন,'এই মন্তব্য রূপক হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম। না করলেই ভালো হত। ভুল হয়েছে।'
তৃণমূলের (TMC) সমালোচকদের গায়ের চামড়া দিয়ে পায়ের জুতো (Shoe) তৈরি হবে। সেইদিনের জন্য অপেক্ষা করুন। রবিবার কামারহাটির (Kamarhati) এক জনসভায় এমনই মন্তব্য করলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)।
তিনি জোরের সঙ্গে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ছিল, আছে এবং থাকবে। পশ্চিমবাংলার মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল তৃণমূল কংগ্রেস। আমরা ২০২৬ পর্যন্ত ম্যানডেট পেয়েছি, আমাদেরই সরকার চলবে। আর যারা আমাদের বেশি নিন্দা করছে, এরপর আমি বলব, তৃণমূলের সমালোচকদের গায়ের চামড়া দিয়ে পায়ের জুতো তৈরি হবে।
তাই আজ থেকে বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করুন। দল যে সব প্রোগ্রাম দেবে, সেইসব অনুসরণ করে চলুন।
এবার নিজের কানে শুনুন, সৌগত রায়ের সেই মন্তব্য।
সৌগত রায়ের মন্তব্য ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল প্রবীণ সাংসদের বিতর্কিত ওই মন্তব্য। তিনি এদিন আরও বলেন, তৃণমূল কিন্তু রাস্তায় আছে। আমরা কোনও দোষ করিনি যে আমাদের ঘরে ঢুকে যেতে হবে। বিজেপি, সিপিএমকে হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছি, কামারহাটিতে তৃণমূলের সব চোর বলে মিছিল করলে তাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেব যে পার্টি অফিসে ঢুকে যেতে হবে। সাবধান থাকবেন।
সামনের বার অধীরের বিজেপি ছাড়া আর কোথাও যাবার জায়গা নেই। বিজেপিতে গিয়েও অধীর চৌধুরী জিতবেন না। শুভেন্দু অধিকারী নাম নারদ কেলেঙ্কারিতে ছিল। অথচ একবারও শুভেন্দুকে ডাকেনি সিবিআই।
সৌগত বলেন, দুর্নীতি থেকে আমরা দলকে আলাদা করছি। কিন্তু নিরোপেক্ষ তদন্ত যদি না হয়, শাসকদল আবার রাস্তায় নামবে। ইডি-সিবিআইয়ের কলকাতার অফিস অবরুদ্ধ করে দেব।
বেলঘরিয়া বাসুদেবপুরের এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগে দু'বছর পর গ্রেফতার প্রাক্তন কাউন্সিলর। এই ঘটনায় প্রথম থেকেই মৃতের বাড়ির লোকের অভিযোগের তির ছিল ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর রূপালি সরকারের দিকে। ২০২০-র করোনা অতিমারীর সময় এলাকায় ত্রাণ বিলির ব্যবস্থা করেছিলেন সৌমেন দাস। সেই সময় তাঁর উপর রূপালি সরকারের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছিল। এই হামলায় গুরুতর আহত সৌমেনের সেই বছরেই ১৯ মে মৃত্যু হয়ে। তারপরেই রূপালি-সহ তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে ছেলেকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।
সেই ঘটনার দু'বছর পর শনিবার ব্যারাকপুর আদালতে রূপালি আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাঁকে গ্রেফতারির নির্দেশ দেন। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন রূপালিদেবী। তারপরেই কামারহাটি পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করে ৭ দিনের পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
দলের প্রাক্তন কাউন্সিলরের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেছেন, আইন আইনের পথে চলবে। এই ঘটনায় মৃতের মা বলেছেন, দুই বছর বাদে একজন গ্রেফতার হয়েছে এটা ভালো খবর। কিন্তু আমি চাই প্রত্যেকএর যাবজ্জীবন বা ফাঁসি হোক। এমনকি গত দুই বছর ধরে হুমকি-ধমকির সামনেও পড়তে হয়েছে সৌমেনের পরিবারকে। এমনটাই অভিযোগ মৃতের মায়ের।
জায়গার নাম এমনই যে সেই নাম বলতে কেমন যেন লাগত স্থানীয়দের। সমস্য়া একদিনের নয়। দীর্ঘদিন ধরেই কামারহাটি পৌরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিয়নাথ ঘোষ রোড অঞ্চলে লোকমুখে প্রচলিত একটি জায়গার নাম জোড়া পায়খানা। আর তা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তির শিকার হয়েছেন স্থানীয় মানুষজন। পুরভোটের আগে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি ছিল, এবার অন্তত এই নামটার পরিবর্তন করা হোক। অটো থেকে রিক্সা যে কাউকে বললেই আপনাকে সঠিক স্থানে পৌঁছে দেবে। কিন্তু ঠিকানাটা বলতে বাধো বাধো ঠেকে এলাকাবাসীর।
শুক্রবার বিধায়ক মদন মিত্র ও বিদায়ী পৌর প্রধান গোপাল সাহার উপস্থিতিতে এই অদ্ভুত নামটি পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগী হন স্থানীয় মানুষজন। সরকারিভাবে না হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে শুক্রবার& থেকে জোড়া পায়খানা মোড় নাম পরিবর্তন করে নারায়ণ দেবনাথ মোড় নামকরণ করেন।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারিভাবে এই নাম পরিবর্তন হবে এমনটাই জানালেন বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি আরও বলেন, তবে শুধু নাম পরিবর্তন করলেই চলবে না। মদন মিত্র বলেন, 'একটা টেবিল এবং চারখানা চেয়ার থাকতে হবে। যাতে সেখানে টেনিদা-সহ চারমূর্তি আড্ডা দিতে পারেন।'
তবে এবার এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা। তাঁরা এখন সরকারিভাবে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় তারই অপেক্ষায়।