ভাসানের (Immersion) সময় মদ খাওয়াকে ঘিরে বচসা, তর্কাতর্কি! দুষ্কৃতীদের দায়ের কোপে মৃত দমকল কর্মী (Fire Brigade Staff) তুহিনশুভ্র ঘোষ।। কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar Incident) রানীনগর এলাকায় বুধবার রাতের এই ঘটনায় বৃহস্পতিবারও চাঞ্চল্য। এই দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে সরব স্থানীয় মানুষ থেকে মৃতের পরিবার। প্রত্যেকেই প্রশাসনিক গাফিলতির দিকে আঙুল তুলেছে। অত্যাধিক রক্তক্ষরণের কারণে ওই দমকল কর্মীর মৃত্যুর হয়েছে। পরিবারকে জানান চিকিৎসকরা। ঠিক কী হয়েছিল?
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রানীনগর চৌমাথা মোড়ে কয়েকদনের সঙ্গে মদ্যপান নিয়ে বচসা বাঁধে। সেই সময় ভাসানের প্রস্তুতি চলছিল। আমাদের দিকে ওরা দা নিয়ে তেড়ে এসে হামলা চালায়। আমার মুখে আঘাত লাগলেও প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসি। কিন্তু তুহিন ওদের মধ্যে পড়ে যায়। ওর পায়ে কোপ মেরেই পালায় অভিযুক্তরা। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় তুহিনকে হাসপাতালে ভর্তি করলেও শেষরক্ষা হয়নি। যারা এই কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করা গিয়েছে।
নিহতের ভাই জানিয়েছে, এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বাড়লেও প্রশাসন নিষ্ক্রিয়। এক স্থানীয় জানান, এই এলাকায় প্রায় মদের আসর বসে। আমাদের পরিবার নিয়ে চলাফেরা করতে অসুবিধা হয়। এই ঘটনা যখন ঘটেছে, আমরা বিসর্জন দেখছিলাম। পরে পুলিস আসলে আমরা যে যার বাড়িতে ঢুকি।
সিত্রাং (Cyclone Sitrang) আশঙ্কায় উৎসবপ্রিয় বাঙালিকে ঘরে থাকতেই পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। সোমবার বাড়ির পুজোর (Kali Puja 2022) প্রস্তুতির ফাঁকেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তিনি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ, ল্যান্ডফল, গতিবেগ এবং বাংলায় তার প্রভাব কতটা? এসব নিয়ে বিস্তারিত বলেন। কালীঘাটে নিজের বাড়িতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশের বরিশালে ল্যান্ডফল হবে রাত ১২টা নাগাদ। বাংলায় হালকা-মাঝারি ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলায় দুর্যোগের সম্ভাবনা আছে। আমরা যাঁদের উদ্ধার করেছি, তাঁরা যেন কোনওভাবেই সরকারি ত্রাণ শিবির না ছাড়েন। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। আর উৎসব করুন , পুজো করুন সঙ্গে খুব দরকার না পড়লে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে মায়ের ভোগ রান্না করেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ক্রমেই উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এদিন সন্ধ্যার পর গভীর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সিত্রাং। মঙ্গলবার ভোর রাতে দুই ২৪ পরগনাকে ছুঁয়ে বরিশালে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়া দফতর সূত্রে এমনটাই খবর। পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার তরফেও খোলা হয়েছে সিত্রাং কন্ট্রোল রুম।
সিত্রাং (Cyclone Sitrang) প্রভাবে ঝড়ের সঙ্গে এবার বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি। কালীপুজোর (kali Puja 2022) সন্ধ্যাতেই কলকাতা এবং তার সংলগ্ন জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানালো মৌসম ভবন (Weather Office)। এদিকে, সোমবার দুপুরের মধ্যে উপকূলের থেকে প্রায় ৩০০ কিমি দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। সাগরদ্বীপ এবং বরিশালের মাঝে ল্যান্ডফল করবে এই ঘূর্ণিঝড়। পাশাপাশি সোমবার সকাল থেকে রাজ্যের দক্ষিণের জেলাগুলিতে থমথমে আকাশ। ভোর থেকে ঝিরঝিরে কিংবা মাঝারি বৃষ্টি রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলা এবং গাঙ্গেয় বঙ্গে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, এই ঝিরঝিরে বৃষ্টি কিছুই না। বেলা গড়ালে সিত্রাংয়ের প্রভাবে আরও বাড়তে পারে বৃষ্টি।
সোমবার সকাল থেকে রাজ্যের দক্ষিণের জেলাগুলিতে থমথমে ছিল আকাশ। ভোর থেকে নাগাড়ে বৃষ্টিও শুরু হয়েছিল বেশ কিছু এলাকায়। তবে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, এই ঝিরঝিরে বৃষ্টি কিছুই না। বেলা গড়ালে সিত্রাংয়ের প্রভাবে আরও বাড়তে পারে বৃষ্টি।
অপরদিকে, সোমবার কালীপুজো তাই রবিবার থেকেই প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে। সোমবার সকালে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতা-সহ দক্ষিণের ৭ জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিও হতে পারে। তাই কালীপুজো এবং মঙ্গলবার দীপাবলি, এই দুটো দিন বৃষ্টি মাটি করতে পারে উৎসবের আমেজ।
আমেরিকায় চোখের অস্ত্রোপচার সেরে কলকাতায় ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এই মাসের মাঝামাঝিই তাঁর চোখের অস্ত্রোপচারের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাই নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষও করেন। অবশেষে কালীপুজোর (Kali Puja 2022) দিন চিকিৎসা করিয়ে নিজের শহরে ফিরলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক। বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা না বললেও, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ২০১৬ সালে বহরমপুর থেকে কলকাতা ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি। তখনই চোখে গুরুতর আঘাত পান তিনি।
সেই সময় বাঁ চোখের নিচে গালের অরবিট বোনে গুরুতর আঘাত পান অভিষেক। প্রথমে অরবিট ফ্লোর রিপেয়ারিং হয়। তার জন্য তখন চিকিত্সক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৈরি করা হয় ১২ জনের একটি বিশেষজ্ঞ দল। অরবিট বোনের অপারেশনের পরবর্তী অপারেশন হয় ও তারপর হয় প্লাস্টিক সার্জারি। তারপর কেটে গিয়েছে ৬টি বছর। ২০২২-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ অস্ত্রোপচার করতে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
গত শনিবার ট্যুইটারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখের ছবি, সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। ট্যুইটার ও ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লেখেন, 'যাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসায় অভ্যস্ত, এমনকি তাঁর চোখের চিকিৎসা নিয়েও নানা কথা রটান,তাঁরা ভাল করে ছবিটা দেখুন। ওর চোখের আজকের অবস্থা।'
বর্তমানে নৈহাটির "বড়মা" বিখ্যাত রাজ্য তথা দেশজুড়ে, ২১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ঘন কৃষ্ণবর্ণ প্রতিমা স্বর্ণলঙ্কারে ভূষিতা, বড় মা পুজোর মূলমন্ত্র হল "ধর্ম হোক যার যার, বড় মা সবার" , যে যার আশা বিশ্বাস নিয়ে বড়মার কাছে আসে পূজা দিতে। মায়ের ভক্তরা মানত করেন ও দন্ডি কাটেন, মনের ইচ্ছা পূরন হলেই ভক্তরা আবার মাকে অলঙ্কার গড়িয়ে দেন
উল্লেখ্য, ৯৪ বছর আগে ভবেশ চৌধুরী এবং তার সঙ্গীরা নবদ্বীপ গিয়েছিলেন রাস উৎসব এর দর্শন করতে, সেই স্থানে গিয়ে তিনি রাধাগোবিন্দর বিশাল মূর্তি দেখে তাঁর ও মনের ইচ্ছে জাগে সেও একটি বড় কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করবেন। এখন গোটা রাজ্য তথা রাজ্যের বাইরে থেকেও বড়মার টানে আসেন অনেক ভক্ত এবং তাদের দানের পয়সায় পুজোর আয়োজন করা হয়। দক্ষিণা কালী রূপে পূজিত হয় মা, তাই বলি দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই এখানে।
প্রাচীন রীতি মেনে কোজাগরী পূর্ণিমায় নৈহাটির ঐতিহ্যবাহী বড়মা পুজোর কাঠামো পুজো করা হয় । পুজোর দিন সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে পুজো দেওয়ার জন্য পাশাপাশি গঙ্গাবক্ষ থেকে মানতকারী ভক্তরা দণ্ডি কেটে পুজো দেন। বেলা বাড়তেই পুলিশি পাহারায় মা কে অলঙ্কার পরানো শুরু হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে কিছুটা এই পুজোয় , এখন অনলাইনে পুজো দেখা যায় ঘরে বসে।
প্রচুর ভক্তের জনসমাগম হয় পুজো দেওয়ার জন্য। সারা রাতই প্রায় চলে পুজো। পরের দিন সকালে সমস্ত প্রসাদ ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
ভোগ রান্না করা হয় বড়মা নিবাসে, বড়মার পুজোর সমস্ত রান্না করা হয় গাওয়া ঘি দিয়ে, তাছাড়া ১১ টা অমাবশ্যার রাতে মাকে পুজো করা হয় যেখানে ৭০০ কেজির ভোগ রান্না করা হয়। প্রতিবার পুজোর সময় পাওয়া শাড়ী বিলি করা হয় দুঃস্থদের মধ্যে এবং বেনারসি শাড়ী থাকলে সেটি গরীব অবিবাহিত মেয়েদের জন্যে দেওয়া হয়। বড়মার কাছে দেওয়া ফল ও ফুল বিতরণ করা হয় হাসপাতালের মানুষদের মধ্যে।
, সর্বোপরি বিসর্জনের দিন মায়ের পরিহিত গহনা খুলে ফুলের অলঙ্কার পরানো হয়। হাতে একটি বৃহৎ মিষ্টান্ন ও এক হাতে ঘট ঝোলানো হয়। এই ভাবে মায়ের কাঠামো ধীরে ধীরে গঙ্গা বক্ষের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কথিত আছে বড় মা বিসর্জনের আগে নৈহাটিতে কোনো ঠাকুর বিসর্জন হয়না। রাস্তার দু ধারে অগণিত ভক্তের সমাগম , চলে বাতাসালুট। কারোর চোখে অস্রু ধারা , কারোর আবার করজোড়ে একটাই প্রার্থনা "আবার এসো মা"।
ভিডিও কৃতজ্ঞতা ঃ নৈহাটি বড় কালী পূজা সমিতি
মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষ শেষ হয় এবং সূচনা হয় দেবীপক্ষের। মহালয়ার দিনে পিতৃপুরুষদের তর্পণ করার প্রথা প্রচলিত আছে। পিতৃপক্ষের সময় বিদেহী আত্মারা জল গ্রহণের জন্য মর্ত্যে আসেন। তার পর থেকে দীপাবলি পর্যন্ত তাঁরা মর্ত্যেই বিচরণ করেন। দীপাবলির সময় পিতৃলোকে ফিরে যান তাঁরা। কিন্তু যেদিন তাঁরা ফিরে যান সেই দিনটি আসলে অমাবস্যা। এই অন্ধকারে পিতৃপুরুষদের যাতে ফিরে যেতে সমস্যা না-হয়, তাই তাঁদের উদ্দেশে অন্ধকার পথ আলোকিত করে রাখা হয়। তাই ঘরে ঘরে জ্বালানো হয় প্রদীপ।
এ ভাবে কালীপুজোর সঙ্গে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা জড়িয়ে পড়েছে। তবে দীপান্বিতা অমাবস্যার সময় কেন কালীপুজো করা হয়, তারও ইতিহাস রয়েছে।
ষোড়শ শতাব্দীতে নবদ্বীপের স্মার্ত পণ্ডিত ও নব্যস্মৃতির স্রষ্টা রঘুনন্দন দীপান্বিতা অমাবস্যায় লক্ষ্মীপুজোর বিধান দেন। তবে কালীপুজোর কোনও উল্লেখ করেননি তিনি। এর পর অষ্টাদশ শতকে প্রকাশিত কালী সপর্যাস বিধিতে প্রথম বার দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীপুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু সপ্তদশ শতকে বাংলায় কালীপুজোর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশকেই বাংলায় কালীমূর্তি ও কালীপূজার প্রবর্তক বলে মনে করা হয়।
এর আগে কালীর উপাসকরা তামার টাটে কালীর যন্ত্র এঁকে বা খোদাই করে তাঁর পুজো করতেন। অষ্টাদশ শতকে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় কালীপুজোকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এর পর উনিশ শতকে কৃষ্ণচন্দ্রের পৌত্র ঈশানচন্দ্র ও বাংলার ধনী জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় কালীপুজো জনপ্রিয়তা অর্জন করে।