যাদবপুরকাণ্ডে এখনও উত্তপ্ত রয়েছে গোটা রাজ্য। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে আরও এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। গত মাসে ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক স্কুল পড়ুয়ার (Student) ঝুলন্ত (Hanging Body) দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের (Kakdwip) হারুডপয়েন্ট কোস্টাল থানার স্টিমারঘাট এলাকায়। ঘটনায় প্রতিবেশী দুই সিনিয়র পড়ুয়ার বিরুদ্ধে হেনস্থা, হুমকির অভিযোগ তুলেছিল মৃতের পরিবার। এমনকি এই ঘটনায় থানায় ওই দুই সিনিয়র পড়ুয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। তবে এতদিন কেটে গেলেও পুলিস প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে দাবি করে মৃতের পরিবার।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই ছাত্রের নাম তৃণাঙ্কুর ধর (১৫)। কাকদ্বীপ সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যামন্দিরের দশম শ্রেণির পড়ুয়া ছিল সে। অন্তত্য মেধাবী ছিল ওই ছাত্র। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, তৃণাঙ্কুরকে প্রায়শই উত্যক্ত করত ওই দুই প্রতিবেশী সিনিয়র পড়ুয়া। জুলাই মাসের শুরুতেই মৃত ছাত্রের ওপর জুলুম চরমে ওঠে। তবে এই ঘটনার প্রতিবাদ করে সে। যার জেরে দুই সিনিয়রের রোষানলেও পড়তে হয়। এমনকি দুই সিনিয়র পড়ুয়ার পা ধরে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করা হয় তৃণাঙ্কুরকে। পাশাপাশি সেই মুহূর্তের ভিডিও তুলে তা সমাজমাধ্য়মে ছড়িয়েও দেওয়া হয়। যার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল তৃণাঙ্কুর। তাই মানসিক অবসাদের জেরে ১৬ জুলাই নিজের বাড়িতেই আত্মহত্যা করে সে।
মৃতের পরিবারের দাবি, এই ঘটনার পরেই ২৭ জুলাই ওই দুই অভিযুক্তর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে পুলিস প্রশাসনের তরফ থেকে একনও পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
নবজোয়ার কর্মসূচির শেষদিনে কাকদ্বীপে (Kakdwip) ফের একমঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আর এই মঞ্চ থেকেই অভিষেককে বিশেষ উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একটা বাঁধানো ছবি। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর মা ও কোলে বসে ২ বছরের অভিষেক। ছবিটা নিজের হাতে অভিষেকের হাতে তুলে দিলেন মমতা। ভরা মঞ্চে মমতার পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। কেন এই ছবি উপহার, তার কারণও ব্যাখ্যা করলেন তৃণমূল নেত্রী।
বিরোধীদের বলতে শোনা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই রাজনীতিতে অভিষেকের পরিচিতি। পরিবারতন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এদিন সেসব প্রশ্নেরই জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনীতি নিয়ে অভিষেকের বোধ, জ্ঞান নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে বারবার, এদিন তারই জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ২ বছর বয়স থেকে রাজনীতি করছে অভিষেক।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতির সরণি হেঁটে বলেন, '১৯৯০ সালে সিপিএম যখন আমায় মেরে চৌচির করে দিয়েছিল, সেই সময় আমি হাসপাতাল থেকে যখন বাড়ি আসি মা আমার কাছে সবটা জানতে চায়। আমি তখন দেখি অভিষেক মায়ের কোলে বসে ঘটনা শুনছে। তার পর থেকে ওকে দেখতাম একটা ঝান্ডা নিয়ে বলত, দিদিকে মারলে কেন সিপিএম জবাব দাও। আমি এই ছবিটা ওকে উপহার দিতে চাই। যেটা আগামিদিন ওর সংরক্ষণের তালিকায় থাকবে। আপনারা বুঝতে পারবেন, ও আজ থেকে রাজনীতি করে না। ২ বছর বয়স থেকে করে।" এরপরই সেই ছবি অভিষেকের হাতে তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিপিএমের (CPIM) সঙ্গে থেকে বাংলায় কংগ্রেস (Congress) যেন তৃণমূলের (TMC) সাহায্য আশা না করে। কাকদ্বীপের (Kakdwip) জনসভা থেকে কংগ্রেসকে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে সাহায্য তিনি করবেন। কিন্তু, বাংলায় যেন কংগ্রেস কোনও সাহায্য প্রত্যাশা না করে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই এবার বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কংগ্রেস বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে জোট বেঁধে আবার সংসদে আমাদের সাহায্য চাই। বিজেপি বিরোধিতার জন্য আমরা দিল্লিতে তাও সাহায্য করব। কিন্তু বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে ঘর করে তৃণমূলের সাহায্য যেন না আশা না করে কংগ্রেস।' স্পষ্ট করে দিলেন, জাতীয় স্তরে সমঝোতা করতে চাইলেও এ রাজ্যে সিপিএমের সঙ্গে থাকলে সেটা সম্ভব নয়।
এদিকে, ২৩ জুন পাটনায় বিজেপি বিরোধী জোটের সম্মিলিত বৈঠক। তাতে উপস্থিত থাকার কথা মমতা এবং কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের। তার আগে মমতার মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডের (Life Sentence) আদেশ কাকদ্বীপ (Kakdwip Court) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের। এক মহিলাকে খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত সমর পাত্রকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন বিচারক তপন কুমার মণ্ডল। জানা গিয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা এলাকার পাতি বুনিয়ার বাসিন্দা।
কাকদ্বীপ কোর্টের সরকারি আইনজীবী এই কেসের পিপি ইনচার্জ অমিতাভ রায় জানান, 'ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা এলাকায় ১২/০৪/২০১৮-তে একটি কেস রেজিস্টার্ড হয়। অভিযুক্তর নামে কেস নম্বর ৩০/২০১৮, আইপিসি-র আন্ডার সেকশন ৩০২ ধারায় একটি মামালা রুজু হয়। নামখানা থানার দারিদ্রনগরের এক গরীব পরিবারের মেয়ে দুর্গা মাঝিকে লোভ দেখিয়ে বকখালির মৌমিতা হোটেলে নিয়ে যায় সমর পাত্র। সেখানেই তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করে আসামি।'
তদন্তে জানা গিয়েছে, খুন করে হোটেলের জানালা ভেঙে পালিয়ে যায় সে। প্রায় দেড় মাস পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মোট ১৮ জন সাক্ষী ও ৬৩টি ডকুমেন্টস পেশ করা হয় আদালতে।
সব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারক তপন কুমার মণ্ডল অভিযুক্ত সমর পাত্রের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন। তবে এই রায় শোনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন সমর পাত্রর পরিবার। সমর পাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন।
৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে বেপাত্তা সমবায়ের ম্যানেজার বাবু। রাজ্যের একাধিক জেলার মতই এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ (Kakdwip) ব্লকের রামগোপালপুরেও একই ঘটনা। রামগোপালপুরের হরেন্দ্রনগর কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির (Cooperative Societies) বর্তমানের হাল বেহাল। বর্তমানে মিলছে না কোনও লোন, হচ্ছে না কোনও সমবায়ের কাজ। ফলে সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় দু'বছর আগে সমবায়ের ম্যানেজার বাবলু হালদার প্রায় ছয় লক্ষ টাকা তছরূপ করে সমবায়ে আসা বন্ধ করে দেন। বহুবার আলোচনা করে সমাধানের সূত্র পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানেও জালিয়াতি করেন বিগত ম্যানেজার। এরপর আত্মসাৎ করা টাকার বিনিময়ে সমিতির নামে জায়গা লিখে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই জায়গা সমিতি দখল করতে গেলে জানতে পারে, ম্যানেজার তাঁর ছেলের নামে জায়গা রেকর্ড করে দিয়েছেন। তাঁর সমাধান এখনও পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। বর্তমানে বোর্ডের মেয়াদ শেষ হলেও মেয়াদ শেষের আগেই সুজাতা সাউ নামে এক মহিলাকে হিসাব রক্ষক পদে সমিতি আনে।
তবে তিনিও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অফিসের কম্পিউটার লকারের চাবি নিয়ে বাড়িতেই রয়েছেন। বর্তমানে তিনি আর অফিসে আসতে চান না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এমত অবস্থায় সমবায় অফিস বন্ধের পথে। গ্রাহকরা পড়ছেন সমস্যায়।
দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীদের দাবি ছিল বেহাল রাস্তা (Road Problem) সংস্করণ করে যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা করে দেওয়ার। যাতায়াত যন্ত্রণা প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে বড় অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা বেহাল দশা নিয়ে একপ্রকার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী (villagers)। ঘটনাটি কাকদ্বীপ (Kakdwip) ব্লকের ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোবিন্দরামপুর গ্রামের (Gobindarampur village)।
এই গ্রামে অবস্থান করছে কালনাগিনী নদী। নদীর কাঁচা বাঁধের উপরে দীর্ঘ বছর ধরে রয়েছে ইটের রাস্তা। দশ বছর আগে এই রাস্তাটি ইটের করা হয় ঠিকই। কিন্তু সংস্করণের অভাবে সেই রাস্তার আজ বেহাল রূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সীমা বাঁধের শুলিস গেট থেকে অশুখটিয়ার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দীর্ঘ কিলোমিটার লম্বা। চওড়া প্রায় আট ফুট। কিন্তু রাস্তার চেহারা একেবারেই খারাপ। ইটের হাড়গোড় বেরিয়ে গিয়েছে। মাটি বেরিয়েছে অনেক জায়গায়।
গ্রামবাসীদের দাবি রাতের অন্ধকারে চুরি হয়ে যাচ্ছে এই রাস্তার ইট।এই বেহাল রাস্তা দেখেও দেখতে পাচ্ছেন না কোনও জনপ্রতিনিধি। ভোট আসে, ভোট যায়। নদী পাড়ের মানুষদের এই অসহায় অবস্থা জারি রয়েছে। এবং যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা থেকে আজও বঞ্চিত। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে এই রাস্তা সংস্করণ না হলে পঞ্চায়েতে তাঁরা ভোট বয়কটের দাবি জানিয়েছেন।
এই গ্রামে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষের বাস। আর এই বেহাল রাস্তার উপর দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন কয়েক হাজার মানুষ। এমনকি এই রাস্তার উপর দিয়ে আনতে পারে না কোনও ইঞ্জিন ভ্যান বা সাইকেল। কারণ যেকোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তা সংস্করণ করে সু-ব্যবস্থা করে দিক সরকার। সরকার একেবারে নির্বিকার। সব মিলিয়ে সমাধান যে কবে মিলবে সেই অপেক্ষায় রয়েছে এই নদীর পাড়ের মানুষেরা।
এক বৃদ্ধের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে (Unnatural death) কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ থানার (Kakdwip police station) অন্তর্গত উত্তর গোবিন্দ এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম শ্রীমন্ত দাস। মেয়ে ও স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তিকে খুন (Murder) করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মৃত শ্রীমন্ত দাসের বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। বাড়িতে ঢুকে দেখেন মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন শ্রীমন্ত। তবে মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে পরিবারের লোকজন প্রথমে অন্য কিছু জানান। পরে পুলিস এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মৃতের পরিবার জানায়, গলায় দড়ি দিয়ে মারা গিয়েছেন।
কিন্তু প্রতিবেশীদের দাবি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই মৃত ব্যক্তির বাড়িতে চরম অশান্তি হয়। এবং সেই অশান্তির জেরে ওই ব্যক্তির স্ত্রী এবং মেয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তাঁকে।
মৃতর গলাতে স্পষ্ট দড়ির দাগ রয়েছে এমনটাই জানা যায়। ইতিমধ্যে কাকদ্বীপ থানার পুলিস মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। পাশাপাশি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করেছে। খুন না আত্মহত্যা করেছেন শ্রীমন্ত, তা তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।