গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ের পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এলাকার অন্যান্য অবৈধ নির্মাণ নিয়ে অতি সক্রিয় কলকাতা পুরসভা। ভেঙে পড়া বাড়ির আশেপাশের অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পুরসভার তৎপরতা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। আগামী ২৮ তারিখেই ধ্বংসস্তূপের ২০০ মিটারের মধ্যে একটি পাঁচতলা বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলার নোটিশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি গার্ডেনরিচকাণ্ডের পরেই সিএন-এর ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল কীভাবে একটি বাড়ি আরেকটি বাড়ির উপর বিপজন্নকভাবে হেলে পড়েছিল। খবর সম্প্রচার হতেই তড়িঘড়ি সেই হেলে পড়া বাড়ির জন্য বিপর্যস্ত বহুতলটির একাংশ ভাঙার নির্দেশ পুরসভার। কিন্তু এই বহুতলের মালিকের দাবি, তার বাড়ি সম্পূর্ণ বৈধ। আইন-নিময়কানুন মেনে পুরসভার অনুমতি নিয়েই তৈরি বহুতলটি। বরং যে বাড়িটি হেলে পড়েছে, সেই বাড়িটিই অবৈধ নির্মাণ। এখন তাঁর বাড়ি ভাঙলে বিপজন্নক অবস্থায় থাকা বাড়িটি আরও হেলে পড়বে, আশঙ্কা বহুতলের মালিকের।
সূত্র্রের খবর, ২০২৩ সালের ৭ জুলাই দুটি বাড়ির মালিককেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল কলকাতা পুরসভায়। উভয়ের পক্ষকেই বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেয় পুরসভা। কিন্তু অবৈধ বহুতলের মালিক কোনও সহযোগিতা করেনি। পুরসভাকে বিষয়টি জানানোর পরও অবৈধ বহুতলের মালিকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি পুরসভার তরফে। বরং খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে কোনও হিয়ারিং-এর ডেট না দিয়ে, সরাসরি আইন অনুযায়ী তৈরি হওয়া বাড়িটির একাংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় পুরসভা। দাবি নোটিশ পাওয়া বাড়ির মালিকের।
কিন্তু গার্ডেনরিচ বিপর্যয়ের পরেই কেন প্রশাসনের এই অতি সক্রিয়তা? কেন বিপর্যয়ের আগেই হুঁশ ফেরে না সরকারের? এই প্রশ্নের নেই কোনও উত্তর। বরং এখনও সেই অসাধুভাবে নির্মাণের ঘটনাই আড়ালের চেষ্টা চলছে গার্ডেনরিচে। আর কোপ পড়ছে বৈধ নির্মাণের উপর। প্রশ্নের সম্মুখীন পুরসভার কর্ম দক্ষতা তা বলাই বাহুল্য।
গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। সরব রাজ্যবাসী। আর এভাবেই বারংবার একাধিক প্রাণের বিনিময়ে হুঁশ ফিরছে প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পর কলকাতা পুরসংস্থায় জমছে অভিযোগের পাহাড়। একাধিক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। তাও আবার জমা পড়ছে সরাসরি ডিজি বিল্ডিংয়ে। সূত্রের খবর, সেই সমস্ত অভিযোগ বোরো এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে কলকাতা পুরসংস্থার বিল্ডিং বিভাগ।
ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ জানালেন, সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে লুঠপাটের রাজ চলছে। পরিণাম, অসংখ্য প্রাণহানি। প্রশাসন জানে সবই শুধু দায় কেউ নিচ্ছেন না।
একদিকে যখন প্রশ্ন উঠছে, গার্ডেনরিচের মতো এমন জনবহুল, ঘিঞ্জি এলাকায় এমন অবৈধ নির্মাণের বহুতল গড়ে উঠল কীভাবে? অন্যদিকে এই ঘটনায় প্রকাশ্যে আসছে বেআইনি নির্মাণের এক নয়, একাধিক অভিযোগ। আর এখানেই প্রশাসনের গাফিলতি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে শহরবাসীর নিরাপত্তা নিয়েও। এতদিন কি ঘুমিয়ে ছিলেন প্রশাসন? আর কত লাশের পাহাড় জমা হলে এই সমস্যার সুরাহা মিলবে? জবাব চাইছে বাংলার মানুষ।
পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ। অভিযোগ বেআইনি নির্মাণের। যার ফলে চলে গেল কিছু অসহায় মানুষের প্রাণ। নির্মীয়মাণ ইমারত ভেঙে পড়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বাড়ছে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ, জমছে অভিযোগের পাহাড়। বেআইনি নির্মাণের কথা মেনে নিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং। স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিয়েছেন আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু ততক্ষণে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে কীভাবে মিললো বেআইনি নির্মাণের ছাড়পত্র? ইতিমধ্যে ঘটনায় কলকাতা পুরসভা শোকজ করেছে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার- কে।
রবিবার রাতে পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বহুতলের একাংশ ভেঙে পড়ে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে থাকাদের উদ্ধার এখনও জারি। ২০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে খবর। ওই এলাকাটি ১৫ নম্বর বোরো এলাকার অন্তর্গত। গার্ডেনরিচের ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক জন প্রোমোটারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রে খবর, এই ঘটনায় প্রোমোটার-সহ অন্যান্য জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর সোমবার সকালে এক্স হ্যান্ডেল দীর্ঘ পোস্ট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, এটা তৃণমূলের তৈরি বিপর্যয়। তিনি পোস্টে স্পষ্টভাবে লিখেছেন গার্ডেনরিচ এলাকায় ২০১০ সাল থেকে ৫ হাজারে বেশি এরকম বেআইনিভাবে জলাজমি ভরাট করে অন্তত ৮০০টি বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। যার নেপথ্যে সরাসরি তিনি কলকাতা পুরসভা ও মেয়রকেই দায়ী করেছেন। তৃণমূল ও পুলিসের যোগসাজশেই ভরাটের অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা। ফিরহাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুভেন্দু প্রশ্ন ছুঁড়ে দিযেছেন। গোটা এলাকায় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের হোম টার্ফ। ফিরহাদ হাকিম কি এর দায় এড়াতে পারেন? মেয়রের নাকের নিচে অবৈধ নির্মাণের ধারণা ছিল না? এদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে। এখানেই থামেননি শুভেন্দু। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
মৃতদের ৫ লক্ষ, আহতদের ১ লক্ষ ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত নয়। কারণ এটি একটি TMC-র তৈরী বিপর্যয়। মৃতদের ৫০লক্ষ, আহতদের ১০ লক্ষ ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ও মেয়রের বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনবিধি ভঙ্গের অভিযোগও আনেন শুভেন্দু। তিনি প্রশ্ন তোলেন ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়ে গিয়েছে আদর্শ নির্বাচন বিধি। মুখ্যমন্ত্রী বা মেয়র প্রত্যেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়েও কীভাবে প্রকাশ্যে তাঁরা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন? তাই এ ব্যাপারে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিরোধী দলনেতা।
গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনের দুর্ঘটনাকে ‘তৃণমূলের তৈরি বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করে এভাবেই মেয়র, মুখ্যমন্ত্রী, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিরোধী দলনেতা সরব হন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে।
বিজেপি করাটাই কি অপরাধ? এরাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর বারবার ধেয়ে এসেছে আক্রমণ। আর এবারেও যে তার অন্যথা হল না। আবারও তৃণমূল কাউন্সিলরের রোষের মুখে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কর্মী সুনীল সিং। অভিযোগ, তাঁর বাড়ির সামনে একটি র্যাম্প তৈরি করা হচ্ছিল। একেবারে ব্যক্তিগত পরিসরে। কিন্তু বুধবারই এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এসে সেই কাজ বন্ধ করিয়ে দেন। তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকিও দেন কাউন্সিলর। ঘটনায় বটতলা থানায় মেইল মারফত অভিযোগ দায়ের করা হলেও সেই অভিযোগে কোনও কর্ণপাত করছে না পুলিস। অভিযোগ সুনীল সিংয়ের।
যদিও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তারকনাথ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, সুনীল সিং দীর্ঘদিন ধরেই পুরসভার ফুটপাথ দখল করে বেআইনি নির্মাণ করেছেন। যে র্যাম্প তিনি তৈরি করছেন তাও সম্পূর্ণ বেআইনি বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি, সুনীল সিংকে মানসিক বিকারগ্রস্থ বলেও সম্বোধন করেন কাউন্সিলর তারকনাথ চট্টোপাধ্যায়। তবে এটিই প্রথমবার নয়, বিনা নোটিসে আগেই কলকাতা পুরসভার তরফে বুলডোজার দিয়ে বিজেপি কর্মীর সুনীল সিংয়ের বাড়ির সামনের ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। দোকানটি অবৈধ নির্মাণ বলে ভেঙে দেওয়া হয়। সুনীল সিংয়ের অভিযোগ ছিল, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও বিধায়ক শশী পাঁজার বিরুদ্ধে মামলা করাতেই এই পরিণতি। সেই প্রসঙ্গেও এদিন কাউন্সিলর বলেন, বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল পুরসভার কমিশনারের নির্দেশে।
কলকাতা পুরনিগমে অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি ও তৃণমূল কাউন্সিলরদের ঝামেলা, এ প্রসঙ্গে দুই দলেরই কাউন্সিলরকে শোকজ করলেন চেয়ারপার্সন মালা রায়। অভিযোগ, শনিবারের এই ঘটনার মাঝেই অসীম বসু বিজেপির সজল ঘোষের গায়ে হাত দেন।
এর আগে কলকাতা পুরনিগমে অধিবেশন চলাকালীন এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এদিন পুরনিগমের চেয়ারপার্সন মালা রায় অধিবেশন চলাকালীন বলেন, বিরোধীরা আজকাল প্রশ্ন করে না। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিরোধীদের এত সংখ্যা কমে গিয়েছে যে, তাদের কোনও প্রশ্ন থাকে না। এরপরই এ কথার প্রতিবাদ করেন সজল ঘোষ, বিজয় ওঝারা। এরপরই তৃণমূলের কাউন্সিলর অসীম বসু, রূপক গঙ্গোপাধ্যায়দের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়।
ভিডিয়ো ফুটেজে সজল ঘোষকে শার্টের কলার ধরে ধাক্কা দিতে দেখা গিয়েছে অসীম বসুকে। সজল ঘোষের কথায়, “আমার বাবা পাঁচ পাঁচবারের পুর প্রতিনিধি ছিলেন। অনেক ঝগড়া বিতর্ক হয়েছে। তবে অধিবেশনে কাউন্সিলর কখনও আক্রান্ত হননি। গায়ে পরিষ্কার হাতে তুলল। কলার ধরে টানছে। গায়ে হাত তোলা ছাড়া আর কী?” যদিও তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু বলেন, “যদিও কারও দিকে একটা আঙুল তোলেন, চারটে নিজের দিকে থাকে।”
কলকাতা পুরসভায় তৃণমূল ও বিজেপি দুই পক্ষের কাউন্সিলদের মধ্যে তীব্র বচসা। যার যারে হাতাহাতি শুরু হয় কলকাতা পৌরসভায়। সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার চেয়ারম্যান মালা রায়ের একটি বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ও বিজয় ওঝা। এরপরই তৃণমূল ও বিজেপির কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। মারধর করা হয় বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে।
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভায় বিজেপি কাউন্সিলররের বাড়ি ভাঙা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়, যার পরে তৃণমূল ও বিজেপি কাউন্সিলর, দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। সেবার সজল ঘোষ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এবং বিজেপি কাউন্সিলরের নির্মাণ ভাঙা নিয়ে সেসময় সজল ঘোষের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বিজেপি কাউন্সিলরদের উপর চড়াও হয় তৃণমূল কাউন্সিলররা।
উত্তরপ্রদেশের পর এবার শহর কলকাতায় বুলডোজার বিতর্ক। এবং তা নিয়েই দুপক্ষের হাতাহাতিতে উত্তাল হয়ে উঠল কলকাতা পুরসভা। সূত্রের খবর শ্যামপুকুর বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের বাড়ির অংশ বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় পুরসভা। তা নিয়েই দিনভর উত্তপ্ত শনিবারের পুর অধিবেশন। পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কাউন্সিলরেরা। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে হামলা চালিয়েছে বিজেপি। পাল্টা বিজেপির দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলরেরাই জবরদস্তি মারধর করেছেন তাঁদের।
কলকাতা পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা স্থানীয় বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বুলডোজ়ার চালিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরসভা। যদিও পুরসভার দাবি, বাড়িতে নয়, বাড়ির বেআইনি অংশ বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়েই শনিবার পুর অধিবেশনে সরব হন বিজেপির কাউন্সিলরেরা। অধিবেশনের শেষ প্রান্তে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ বিষয়টি তোলেন। কিন্তু চেয়ারপার্সন মালা রায় তাঁকে জানান, অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনা করা যায় না। প্রয়োজনে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে বলেন মালা। তখন সজল পাল্টা মানবিকতার খাতিরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে কোনও নাগরিকের বাড়ি ভেঙে দেওয়া যায় না। দয়া করে মানবিকতার খাতিরে বিষয়টি দেখুন।’’ অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিজেপি কাউন্সিলরদের সঙ্গে চেম্বারে কথা বলবেন বলে জানান।
অধিবেশন শেষ হতেই বিজেপি কাউন্সিলর ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করে দেয়। সেখানে বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা, মীনাদেবী পুরোহিত এবং সজল ঘোষের পাশাপাশি, হাজির ছিলেন অভিযোগকারী সুনীল সিংহ। ছিলেন উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষও। সাংবাদিক বৈঠক মিনিট দশেক চলার পরেই সেখানে প্রবেশ করেন তৃণমূল কাউন্সিলর মহেশ শর্মা। তাঁর প্রশ্ন, কাউন্সিলর ক্লাব শুধুমাত্র কাউন্সিলরদের জন্য, সেখানে বিজেপির জেলা সভাপতি কী করে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন! পাল্টা সজলরা বলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই করদাতা। সুতরাং সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করার অধিকার সকলেরই আছে। কাউন্সিলর ক্লাবে চলে আসেন বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত, অসীম বসু, রাজীব দাস, কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর। তার পর দু’পক্ষের কার্যত ধস্তাধস্তি বেধে যায়।
যাঁর বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙার অভিযোগ, বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের দাবি, তাঁর বাড়ি ভাঙার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর এফআইআর নেওয়া হয়নি। পরে আদালতের মাধ্যমে তাঁর অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়ে। সুনীলের অভিযোগ, তার পর থেকেই তাঁকে নিশানা করা হয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, বিজেপি কাউন্সিলর সজলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা তাঁদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করেছেন। একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়েছে। অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরেরা মেয়র ফিরহাদ এবং চেয়ারপার্সন মালার দ্বারস্থ হন। তাঁর কাছে লিখিত ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত, অসীম বসুরা। তাঁদের আবেদন, পুরসভা চত্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রবেশ যেন নিষিদ্ধ করা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন চেয়ারপার্সন মালা রায়।
করোনা সংক্রমণ (Covid Infection) রুখতে এবার মাস্কের উপরে জোর দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। বুধবার পুরসভায় (KMC) কোভিড সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে স্থির হয়েছে, রাজ্যর গাইডলাইন অনুসরণ করেই কোভিড মোকাবিলায় কাজ করবে কলকাতা পুরসভা। বৃহস্পতিবার থেকেই এই নয়া ব্যবস্থা কার্যকর। এই প্রসঙ্গে পুরসভার ডেপুটি স্পিকার অতীন ঘোষ জানান, 'কলকাতা পুরসভার মূল কার্যালয় এবং ১৬টি বরো অফিসে যাঁরা আসবেন, তাঁদের মাস্ক পরতেই হবে। যাঁরা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে আসবেন, তাঁদেরও মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। তবে শহরবাসীর জন্য মাস্ক বাধ্যতামূলক না করলেও, সকলকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।' তবে এই মুহূর্তে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেই খবর।
ডেপুটি মেয়র বলেন, 'যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে ৮০ শতাংশই টিকা নিয়েছেন। আমরা তৃতীয় টিকা চেয়েছি। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।'
শনিবার সকাল ১০টা থেকে আগামীকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার একটি বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পুরসভার জল সরবরাহ বন্ধ (water supply closed)। মূলত পুরনো পাইপলাইন বদলানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত পুরসভার (kmc)। ইতিমধ্যেই পুরসভা একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, এসপি পাইপলাইনে (water pipeline) বেশ কয়েক মাস ধরে ফাটল লক্ষ্য করা যাচ্ছিল এবং তার জেরেই পাইপলাইন বদলের সিদ্ধান্ত পুরসভার। এর জন্যই ২৪ ঘন্টা জল সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এছাড়াও গার্ডেনরিচ জল প্রকল্পের সংস্করণ এবং একাধিক বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের মেরামতির জন্য এই অঞ্চলগুলিতে জল সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। যার জেরে কলকাতার ৮ ও ৯ নম্বর বোরো অঞ্চলের এবং ১০, ১১, ১২ নম্বর বোরো অঞ্চলের সাধারণ মানুষ জল পরিষেবা থেকে বিঘ্নিত হবে। পাশাপাশি রাসবিহারী, যাদবপুর, কালীঘাট, গল্ফগ্রিন, টালিগঞ্জের মতো একাধিক অঞ্চলের একটি বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জল সরবরাহ বন্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন এলাকাবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাধারণ সানুষের এতে খুব সমস্যা হবে। গোটা দিন জল সরবরাহ বন্ধ থাকলে কাজ আটকে থাকবে। সেক্ষেত্রে কেনা পানীয় জল ব্যবহার করতে হবে।
শিয়ালদা (Sealdah House Collapse) পূরবী সিনেমা হলের সামনে বাড়ির এক অংশ ধসে দুর্ঘটনা। ৩৬ নম্বর মহাত্মা গান্ধী রোডের (MG Road) ওই বাড়ির সিঁড়ির অংশ সকাল ১১টা নাগাদ হঠাৎই ধসে পড়ে। ধসে আটক একাধিক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা গিয়েছে। ৩টি পরিবারকে নিরাপদে সরানো হয়েছে। এক কিশোরী এবং পোষ্য কুকুর-সহ প্রত্যেকেই এখন নিরাপদ। ল্যাডার এবং দড়ির মাধ্যমে এঁদের উদ্ধার করেছে দমকল (Fire Brigade)। এখনও পর্যন্ত বাড়ি ধসে হতাহতের কোনও খবর নেই। এই দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েল (CP Vineet Goyal) এবং মন্ত্রী শশী পাঁজা। নিরাশ্রয় পরিবারগুলোর জন্য থাকার ব্যবস্থা করছে পুরসভা (KMC)।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে বাড়ির মালিককে 'বিপদজনক বাড়ি' হিসাবে নোটিশ ধরিয়েছিল পুরসভা। তবে পাশের বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কাজের জন্য এই ঘটনা। এমনটাই অভিযোগ বাড়ির বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, 'আমরা ভালোই ছিলাম এই বাড়িতে। পাশের বাড়িতে নির্মাণকাজের জন্য আমরা আশঙ্কা করছিলাম বাড়িটা ভেঙে পড়বে। সেই অনুমান ঠিক হল। ভূমিকম্পেও এই বাড়ির কিছু হয়নি।' প্রশাসনের উদাসীনতার দিকেও আঙুল তুলেছে স্থানীয়রা।
এমনকি এই দুর্ঘটনার পরেও দুর্ঘটনাস্থলে স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুপস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, দমকলের দুটি ইঞ্জিনের সাহায্যে নিরাপদে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে খবর। বাড়ি পরিদর্শনে এসে নগরপাল জানান, 'দমকল এবং পুলিস যথেষ্ট ভালো কাজ করেছে। দ্রুত উদ্ধার করা গিয়েছে যারা আটকেছিলেন। মোট তিনটি পরিবার এখানে বাস করতেন।'
পাশাপাশি মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, 'বাড়িটা পূর্ব ঘোষিত বিপজ্জনক বাড়ি। তাও নানা কারণে বাসিন্দারা বাড়ি ছাড়তে পারেননি। এখন একটা সিঁড়ি ধসে গিয়েছে। যারা বাসিন্দা ছিলেন তাঁদের নিরাপদে সরানো হয়েছে। আপাতভাবে গৃহহীনদের একটা থাকার ব্যবস্থা চলছে। সবচেয়ে বড় কথা এই দুর্ঘটনায় কোনও হতাহত নেই।'
প্রায় দেড় দিন অতিক্রান্ত এখনও কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরের (TMC Councillor) রেস্তোরাঁয় আয়কর অভিযান (IT Raid) অব্যাহত। বুধবার সকাল থেকে ১৭৯ নম্বর এজেসি বোস রোডের একটি ব্যাঙ্কোয়েট কাম রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এই রেস্তোরাঁয় কলকাতা পুরসভার (KMC) ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আমিরুদ্দিন ববির অংশিদারিত্ব রয়েছে।
জানা গিয়েছে, তৃণমূল কাউন্সিলরের একটি গাড়িও রয়েছে রেস্তোরাঁর পার্কিং লটে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান দিয়ে ঘিরে গোটা বিল্ডিংয়ের তল্লাশি চালাচ্ছে আয়কর দফতর। যারা ভিতর থেকে বাইরে বেরোচ্ছেন, তাঁদের আগে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিতে হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে বাইরে থেকে কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।
এদিকে বুধবার তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হুসেনের বাড়ি-অফিসে সিবিআই তল্লাশি চলেছে। সূত্রের খবর, উদ্ধার হয়েছে ১১ কোটি টাকা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজ্যের প্রাক্তন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। যে যৎসামান্য টাকা উদ্ধার হয়েছে তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে সেই টাকা শ্রমিকদের বেতনের জন্য রাখা ছিল। এমনটাই সংবাদ মাধ্যমকে জানান তিনি।
কলকাতা (Kolkata) শহরজুড়ে বন্ধ হচ্ছে হুক্কা বার (Hookah Bar)। শুক্রবার জানিয়ে দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Mayor Firhad Hakim)। তিনি জানান, 'রেস্তোরাঁয় (Food Restaurant) যে হুক্কাবার চলে, সমাজের পক্ষে খারাপ। হুক্কায় যে কেমিক্যাল ব্যবহার হয়, সেটা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। পাশাপাশি কোনও কোনও হুক্কা বারে নেশা জাতীয় জিনিস মেশানো হচ্ছে। যদিও আমাদের কাছে কোনও প্রমাণ নেই। সেই নেশায় আসক্তি বাড়ছে তরুণ প্রজন্মের। ফলে হুক্কা বারের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে তাঁদের। তাই আমরা হুক্কা বারের নতুন করে লাইসেন্স দেব না। যাঁদের লাইসেন্স দেওয়া আছে, তাঁদের লাইসেন্স বাতিল করব। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্ত জানাবো। পুলিসের থেকেও সাহায্য নেব, হুক্কা বার বন্ধ করতে।'
তাঁর মন্তব্য, 'আগে ছাদে হুক্কাবার চলতো, অসুবিধা হতো না। এখন রেস্তোরাঁর সঙ্গেই হুক্কাবার চালানোর অনুমতি নেওয়া হচ্ছে। এতে মানুষ এবং সমাজের অসুবিধা হচ্ছে। এই হুক্কাবারগুলো মানুষ, সমাজের পক্ষে অসুবিধা তৈরি করছে। শুধু রেস্তোরাঁ চলুক, খাওয়া-দাওয়া চলুক অসুবিধা নেই। যারা হুক্কাবার চালান তাঁদের কাছে অনুরোধ করবো বন্ধ করতে।' তিনি জানান, প্রচুর অভিযোগ এবং আপত্তিকে প্রাধান্য দিয়ে এই সিদ্ধান্ত। বদ্ধ জায়গায় হুক্কাবার বন্ধ থাকবে। এখনই পুরসভা কড়া পদক্ষেপ নেবে না। অনুরোধ থাকবে বদ্ধ জায়গায় যাতে হুক্কা বার না চালানো হয়। পুলিসকেও বলা হয়েছে কড়া পদক্ষেপ নিতে। অনেক হুক্কা বারে মাদক মেশানো চলছে, সেটা নজরদারি করতে।
ডেঙ্গি (Dengue) প্রতিরোধে ব্যর্থ পুরসভা এবং ডেঙ্গি রোগীদের তথ্য গোপন করছে প্রশাসন। এই জোড়া অভিযোগে বিজেপি (BJP) যুব মোর্চার বিক্ষোভ মিছিল এবং কলকাতা পুরসভা (KMC) অভিযান ঘিরে মধ্য কলকাতায় ধুন্ধুমার। পুলিসের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধুন্ধুমার। রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন যুব মোর্চার কর্মীরা। মশার রেপ্লিকা নিয়ে এবং মশারি টাঙিয়ে রাজপথে বসে দেখানো হয় বিক্ষোভ। পুলিস-বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। চ্যাংদোলা করে অনেক বিজেপি কর্মীকে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা ইন্দ্রনীল খাঁ বলেন, 'তৃণমূল সরকার এবং তৃণমূল পুরসভার গাফিলতির অভিযোগে যুব মোর্চার এই অভিযান। রাজ্যে যেখানে যেখানে ডেঙ্গি বেড়েছে সেখানে সেখানে যুব মোর্চার কর্মীরা রাস্তায় নেমেছে।' বিজেপির মহিলা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল জানান, আসল তথ্য মানুষের সামনে রাখতে হবে। কোথায় কত টেস্ট হয়েছে, কীভাবে ডেঙ্গি প্রতিরোধে কাজ হচ্ছে, সেসব সামনে আনুক। করোনার সময় যেটা করেছে, ডেঙ্গির সময় একই জিনিস করছে সরকার। আমরা কি এভাবে মরব? তথ্য গোপন করছে, কত রোগী, কীরকম টেস্ট, সবকিছু গোপন করছে। এদিকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে পুলিসি নিগ্রহের অভিযোগ করেছেন যুব মোর্চার মহিলা কর্মীরা।
অপরদিকে, এই পুরসভা অভিযান প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, রাজনীতি করছে ওরা। যেহেতু সিপিএম রাস্তায় ছিল, তাই ওদেরও রাস্তায় নেমে দেখাতে হবে। প্রতিযোগিতা চলছে বিরোধীদের। পুরসভা যতটা করার করছে, তবে আগে মানুষকে সচেতন হতে হবে। শুধু কলকাতা নয় ঢাকা, লখনউ, ত্রিপুরা, সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গি হচ্ছে। শুধু কলকাতার একার দোষ দিয়ে লাভ নেই। বিরোধী দল তাদের মতো থাকুক, আমরা বিরোধী দলকে সম্মান করি। ওরা যদি ডেঙ্গি প্রতিরোধে সমাধান সূত্র বের করে তাহলে করুক।'
ডেঙ্গি (Dengue) পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে। শনিবার জানান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁর মন্তব্য, 'দু'বছর ডেঙ্গি ছিল না। আমরা কলকাতা পুরসভা (KMC) এবং রাজ্যের তরফে সচেতনতা প্রচার চলছে। মানুষ যাতে বাড়ির ছাদ এবং আশপাশে দিনে অন্তত একবার গিয়ে দেখেন কোনও জল জমে কিনা। সামনে পুজো প্যান্ডেলগুলোকেও ডেঙ্গি বিরোধী প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হবে।' এদিকে, পুরসভার (KMC) ৭৯ নম্বর ওয়ার্ড ডেঙ্গির কবলে।
অগাস্টে মৃত্যু হয়েছে ১৩ বছরের এক কিশোরের। এই মাসে ওই ওয়ার্ডে আক্রান্ত প্রায় চার জন। তাও এলাকায় জঞ্জাল ভর্তি, পরিষ্কার হয় না নর্দমা। ইতিউতি জমে রয়েছে জল। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা এমনটাই খবর। অপরদিকে, পুজো উদ্বোধনে বিধাননগর আসেন মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তায় পরে থাকা জঞ্জাল দেখে রীতিমতো ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভপ্রকাশের পরও চিত্র বদলায়নি বিধাননগরে। সল্টলেকের ইন্দিরা ভবনের ঠিক পিছনের রাস্তা আবর্জনায় ঢেকে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা, পথচলতি মানুষকে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। গাড়ি ঘুরিয়ে অন্য পথ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন গাড়ির চালকরা।
একদিকে আবর্জনার স্তুপ অন্যদিকে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গির উপদ্রব। বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে স্বাস্থ দফতর থেকে। বিধাননগর পড়ে বহু খালি জমি ও গোটা বিধাননগরজুড়ে রাস্তার ধারে ডাস্টবিন। সেই সমস্ত ডাস্টবিন পরিষ্কার করা হয় না তা দেখলেই বোঝা যায়। একই সঙ্গে খালি ডাস্টবিনগুলিতে জমছে বর্ষার জল, সেখান থেকেও বাড়তে পারে মশার উপদ্রব। মনে করা হচ্ছে, এই সমস্ত ডাস্টবিনগুলির জমা জলে ডিম পারতে পারে ডেঙ্গির মশা। একদিকে জঞ্জালের স্তুপ, অন্যদিকে ফাঁকা জমি ও খালি ডাস্টবিন ডেকে আনছে বিপদ। নজর নেই বিধাননগর পুরনিগমের।
রাজ্যব্যাপী পুজোর (Durga Puja 2022) গন্ধ। বিশ্বকর্মা পুজো (Viswakarma Puja) মানেই মায়ের আগমনের প্রহর গোনা। আর শনিবার দার্জিলিং থেকে হিঙ্গলগঞ্জ যন্ত্রের দেবতার পুজোয় মেতে রইল। পিছিয়ে নেই কলকাতা পুরসভা (KMC), মন্ত্রী সুজিত বসু এবং পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ছোট লালবাড়ির পুজোয় এবার সর্ব ধর্ম সমন্বয় দেখা গিয়েছে। পুরসভার নিকাশি বিভাগের সহ-ইঞ্জিনিয়ার আতাউর রহমান এবং তাজমূল হোসেন আয়োজন করেছিলেন বিশ্বকর্মা পুজোর। সেই আনন্দে শামিল হতে সপরিবারে হাজির ছিলেন মেয়র পারিষদ (নিকাশী) তারক সিং।
শুধু তারক সিং নয় আনন্দ ভাগ করে নিতে হাজির ছিলেন ডিজি (নিকাশি) শান্তনু ঘোষ-সহ বিভাগীয় আধিকারিক এবং কর্মীরা। এদিন তারকবাবু জানান, বাংলায় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ। চিরকাল ধরেই বাংলায় ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের উৎসব পালন করা হয়। পুরসভায় পুজো আয়োজনের অন্যত্ম উদ্যোক্তা তাজমূল জানান, বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজনে যুক্ত থাকতে পেরে আমি খুশি। প্রতিবার তাঁদের উদ্যোগেই পুজোর আয়োজন চলছে। একমাত্র বাংলায় সর্বধর্ম সম্প্রীতির নজির সবচেয়ে বেশি।
এদিকে, বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষ্যে ঘুড়ি উড়নোয় মাতলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। লেকটাউন শ্রীভূমি এলাকায় মন্ত্রীর বাসভবনের কাছে এক আবাসনের ছাদ থেকে ঘুড়ি উড়ান তিনি। তাঁকে অন্য ঘুরিকে ভো-কাট্টা করতেও দেখা গিয়েছে। এক কথায় এলাকার বাসিন্দা থেকে বন্ধুদের নিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোয় মেতে উঠলেন মন্ত্রী সুজিত বসু।