নববর্ষের দিনে উত্তর-মধ্য জাপানে আঘাত হেনেছে ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭.৬। ভূমিকম্পের পরেই উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। যার ফলে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার ভোররাতে জাপানের ভূ-কম্পনে কেঁপে ওঠার একটি ভিডিও এই মূহুর্তে ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্য়মের পাতায়। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, জোরে জোরে কাঁপছে রেলস্টেশন সহ মেট্রো রেল। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি সিএন ডিজিটাল।
Footage from the local Shinkansen station in Ishikawa prefecture, extremely powerful shaking! #japan #earthquake pic.twitter.com/moNwOIH7xp
— MEER YASIR (@MEERYASIR0056) January 1, 2024
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, এদিন ভূমিকম্প শুরু হয়েছে উত্তর-মধ্য জাপানে। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৬ মাত্রা। এর ফলে তৈরী হয়েছে সুনামির সম্ভাবনা। তাই ইশিকাওয়া, নিগাতা এবং তোয়ামা প্রিফেকচারের পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে সুনামির সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে এই ভূমিকম্পে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর মেলেনি এখনো পর্যন্ত।
মানুষের অনেক রকমের স্বপ্ন বা শখ থাকে। কারোর এলাহি বাড়ি বানানোর ইচ্ছা থাকে, আবার কারো গাড়ি কেনার শখ থেকে থাকে। আবার বাড়ি-গাড়ি ছাড়াও মানুষের আরও স্বপ্ন থাকে। কিন্তু কারো যদি স্বপ্ন হয়, কুকুর হওয়ার, তবে কেমন হয় বলেন তো? অবাক হচ্ছেন? তবে এমনটাই হয়েছে এক ব্যক্তির সঙ্গে। জাপানের (Japan) এক যুবকের স্বপ্ন কুকুর (Dog) হওয়ার। চার পায়ে হেঁটে, অন্য কুকুরদের সঙ্গে থেকে কেমন লাগে, সেই অনুভূতিই তিনি নিজে উপভোগ করতে চান। ফলে তিনি তাই করেছেন। তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে তিনি হয়েছেন 'কুকুর'। তবে তাঁর জন্য তাঁকে খরচ করতে হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ডলার যা ভারতীয় অর্থে ১৬ লক্ষের বেশি।
জানা গিয়েছে, জাপানের সেই ব্যক্তির নাম টোকো। তিনি তাঁর কুকুর হওয়ার স্বপ্ন সত্যি করতে এক ফ্যাশন ডিজাইনারের কাছে যান। আর সেখানেই অবিকল কুকুরের মত দেখতে পোশাক বানিয়ে দেওয়া হয়। সেই পোশাক এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে যে, তা দেখে বোঝাই যাবে না যে, এটি কোনও কুকুর নয়, একজন মানুষ।
This man spent $20,000 on a suit to live out his life as a border collie. If you were forced to spend $20,000 on something frivolous, what would it be? pic.twitter.com/RpCJGflAUD
— Ian Miles Cheong (@stillgray) July 29, 2023
এক ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, টোকো কুকুরের পোশাক পরে হুবহু কুকুর সেজে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবার আশেপাশের কুকুরদের সঙ্গে মেলামেশাও করছেন। আর টোকোর এমন কাণ্ড দেখে হতবাক নেটদুনিয়া। এমনও যে কারোর শখ হতে পারে তা টোকোকে না দেখলে জানাই যেত না। তবে জাপানের এই যুবকের শখপূরণ গতবছরেই হয়েছে। কিন্তু ফের তাঁর এই কাণ্ড বর্তমানে ভাইরাল হচ্ছে।
বিমানবন্দরের (Airport) রানওয়েতে দু’টি বিমানের (Plane) ধাক্কা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি বিমানের অংশ। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে জাপানের (Japan) টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে।
এক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ট্যাক্সিওয়েতে ছিল ব্যাঙ্ককগামী থাই ওয়ারওয়েজের বিমান। টেক অফের প্রস্তুতি নিচ্ছিল বিমানটি। সেই সময়ই সেখানেই ছিল ইভা এয়ারওয়েজের অন্য একটি বিমান। এরফলে দু’টি বিমানের একসঙ্গে হওয়ায় ধাক্কা লাগে।
এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় থাই বিমানের ডানার অংশ। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য বিমানটি আর উড়তে পারেনি। ওই বিমানে ছিলেন ২৫০ জন যাত্রী এবং ১৪ জন ক্রু সদস্য। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুর্ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর জানাননি ইভা এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ। তবে কী ভাবে দু’টি বিমান রানওয়েতে পাশাপাশি চলে এলো, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
শিনজো আবের পর ফুমিও কিশিদা। ফের জাপানে প্রাণঘাতী হামলার কবলে প্রধানমন্ত্রী (Attack on Japan PM)। জানা গিয়েছে, শনিবার এক শহরের একটি সভায় কিশিদার (Fumio Kishida) বক্তৃতা শুরুর আগে মঞ্চের অদূরে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে তিনি অক্ষত, এমনটাই জানিয়েছে একাধিক জাপ সংবাদমাধ্যম। এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত খবরে বলা, লোহার পাইপের টুকরোর মতো একটি বস্তুর ভিতরে বিস্ফোরক রাখা ছিল। ঘটনার পরেই দ্রুত কিশিদাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। বিস্ফোরণের পরেই সভাস্থলে শুরু হয় হইচই। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক এক ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাই মাসে পশ্চিম জাপানের এক শহরে কর্মসূচিতে বক্তৃতা চলাকালীন একইভাবে হামলার মুখে পড়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন এক আততায়ী। গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি শিনজোকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর নেওয়া এক সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই হামলা। পুলিসকে জানিয়েছিল আততায়ী।
অফিসে গিয়ে ধূমপান করায় জরিমানা এক ব্যক্তির। ঘটনায় জরিমানা ধার্য করল এক সরকারি সংস্থা। ওই ব্যক্তির থেকে জরিমানা করা হয়েছে ১.৪৪ মিলিয়ন ইয়েন, যা ভারতীয় মুদ্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। এছাড়াও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁর ছ’মাসের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে ১০ শতাংশ করও। ঘটনাটি ঘটেছে জাপানের ওসাকায় এক সরকারি অফিসে।
জানা গিয়েছে, ধূমপান নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে জাপানের ওসাকায় কঠোর আইন রয়েছে। সেই আইনে বলা হয়েছে, সরকারি অফিস, সংস্থা ও অফিস চত্বরে ধূমপান করা যাবে না। গত ১৪ বছর ধরে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি মোট সাড়ে ৪ হাজার বার ধূমপান করেছেন। যার জেরেই এমন জরিমানা। ২০১৯ সালে এক সরকারি স্কুলের শিক্ষকও ৩ হাজার ৪০০ বার ধূমপান করায় তাঁকেও বিপুল অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছিল।
জাপানের এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওসাকার একটি সরকারি অফিসে কাজের ফাঁকে ধূমপান করতেন ওই ব্যক্তি এবং তাঁর দুই সঙ্গী। অফিসের এইচআর (হিউম্যান রিসোর্সেস) থেকে বারবার সতর্ক করলেও কোনও কাজ হয়নি, তখন তাঁদের কড়া হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। তারপরেও ওই তিন জন লুকিয়ে ধূমপান চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
২০২২র ডিসেম্বরে তিন জনকে ফের এইচআর তলব করলে সেখানেও তাঁরা মিথ্যা কথা বলেন। তবে এবার ধূমপান করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়তেই ‘শাস্তি’র ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। এমনকি ওই কর্মীকে ‘লোকাল পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্ট’-এ ‘কর্তব্যে নিষ্ঠার অভাব’-এর অভিযোগ এনে জরিমানাও করা হয়েছে। এছাড়াও অফিসের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁর বেতনও কাটা হয়েছে।
ফের ভূমিকম্প (Earthquake)। এবার কম্পন অনুভূত হয়েছে জাপানে (Japan)। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.১। শনিবার গভীর রাতে কেঁপে ওঠে জাপানের হোক্কাইড শহর। যার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।
এখনও পর্যন্ত তেমন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। যদিও ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার মধ্যেই পড়ে জাপান। এর থেকেও বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়ে থাকে এখানে। সেই সঙ্গে সুনামিও হতে দেখা গিয়েছে। তবে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প নেহাত কম নয়। হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সম্প্রতি কিছুদিন ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল চিন-আফগানিস্তান তাজিকিস্তান সীমান্ত। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৮। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ ভূমিকম্প কেঁপে ওঠে তুর্কি ও সিরিয়া। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। শক্তিশালী সেই ভূমিকম্পে কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে দুই দেশ। ভূমিকম্পের জেরে চোখের নিমেষে ভেঙে পড়ে একের পর এক বাড়ি। গোটা বিশ্বজুড়ে এভাবে ভূমিকম্পের ফলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সকলের মধ্যে।
রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের চোখে কাতার বিশ্বকাপ। 'অবিশ্বাস্য' জাপানের খেলা দেখে কী মতামত মন্ত্রীর
মন্ত্রী (Bengal Minister) হিসাবে প্রচুর কাজ থাকে, নতুন পাওয়া দায়িত্বও অনেক। কিন্তু তাই বলে ফুটবল দেখবো না তাই কী হয় নাকি? সেই ১৯৭৮-এ ছেলেবেলা থেকে টিভিতে চোখ রাখতাম শুধু একটু নতুন খেলা দেখার জন্য। আমি ঘোরতর ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক ছিলাম, অবশ্য এখন নিরপেক্ষ থাকতেই হয়। লাল হলুদের খেলা থাকলে নৈহাটি থেকে যেভাবেই হোক ময়দান এবং অনেক পরে সল্টলেক যেতাম। ওই খেলাতেই সন্তুষ্টি ছিল আমাদের। কিন্তু নিয়মিত ভাবে বিদেশি খেলা দেখা এই বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) থেকেই। ৮২-র স্পেন বিশ্বকাপে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা (Brazil-Argentina) কিছু করতে পারল না। দেখেছিলাম জার্মানি আর ইতালির দুর্দান্ত ফাইনাল, সাদা-কালো টিভিতে। তখন অবশ্য ওটুকু যথেষ্ট ছিল। এরপর ৮৬-র মারাদোনার আর্জেন্টিনা থেকে হলুদ-সবুজ জার্সির ব্রাজিল বাঙালিকে টেনেছে। এক দল ব্রাজিল, তো অন্য দল আর্জেন্টিনা। যদিও তখন ধীরে ধীরে সমর্থন আদায় করছে ইতালি এবং জার্মানি।
কিন্তু এশিয়ার দেশগুলির সম্বন্ধে আমাদের উৎসাহ ছিল অনেক কম। নেহেরু কাপে বিদেশি দলগুলি এসেছিলো ৮০-র গোড়ায়। কিন্তু তার মধ্যে চীন, কোরিয়া বা রাশিয়ার খেলা আমাদের ভালো লাগলেও ভক্তি যোগায়নি। ইস্টবেঙ্গল তো উত্তর কোরিয়ার একটি ক্লাবকে হারিয়েছিল। কিন্তু গত ৩৫-৩৬ বছর ধরে আমাদের বৈঠকখানায় বিদেশ দিব্বি ঢুকে গিয়েছে। ইউরোপিয়ান বা লাতিন আমেরিকান ক্লাব ফুটবল আমরা আজ দেখে অভ্যস্ত। জাপান নিয়ে ভাবিনি কখনও।
এবারেও শত কাজ, সংগঠন, টিভি অনুষ্ঠান ইত্যাদির শেষে বিশ্বকাপে চোখ রেখেছি। কোনও খেলা ছাড়ছি না, ঘুম বলতে ওই দু-তিন ঘন্টা। বৃহস্পতিবার জাপানের খেলায় চোখ রেখেছিলাম। অন্যদিকে ভেবেছিলাম জার্মানি তো জিতবেই আর জাপান বোধহয় পারবে না। সবচেয়ে বড় কথা জাপানের প্রতিপক্ষ স্পেন, কাপ জেতার অন্যতম দাবিদার। কিন্তু এ কি দেখলাম! আমি চমৎকৃত, কোনও ভাষাই যথেষ্ট নয় প্রশংসার। পাসিং বা তিকিতাকা ফুটবলকে দমিয়ে দিয়ে এক গোল খেয়েও ভয়ঙ্কর জাপানকে দেখলাম প্রেসিং ফুটবল খেলতে। আমাদের মহাদেশে চিন নিয়ে আমরা লাফাই, কিন্তু জাপান শিল্প সংস্কৃতি সভ্যতা এবং তাদের দেশের ফুটবলে তারা এতটাই এগিয়েছে যে আলোচনার কিছু নেই। দুই ফুটবল দৈত্যকে সূর্যোদয়ের দেশ হারালো শ্রেফ 'দৌড়ে'। আমাদের ফুটবলে কতটা আগের তুলনায় উন্নতি হয়েছে পরের কথা। কিন্তু জাপানকে দেখে ভারত কিন্তু জেদ বাড়াতেই পারে। জাপান আজ সারা এশিয়ার উদাহরণের সুধা। সেলাম জানাই জাপানকে এবং চাই বাকি খেলাগুলিতেও তারা যেন এই স্পিরিট ধরে রাখতে পারে। (অনুলিখন : প্রসূন গুপ্ত)
প্রসূন গুপ্ত: সুবিশাল কিছু অঘটন ঘটায় বিদায় নিয়েছে কোনও নামী দল, এমন ঘটনা এখনও দেখা যায়নি। তবে কে বেশি শক্তিধর কার শক্তি কম, এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এবারের বিশ্বকাপে (Qatar World Cup 2022) সম্ভব নয়। কাতার ব্যতীত প্রতি দল তাদের সেরা খেলা দেখানোর চেষ্টা করছে। ফলস্বরূপ লিগ রাউন্ডে তাবড় তাবড় দল নাস্তানাবুদ হয়েছে তথাকথিত ছোট দলের কাছে। কে জানতো সৌদির কাছে পরাজিত হবে আর্জেন্টিনা বা জাপান হারিয়ে দেবে জার্মানিকে (Japan versus Germany)।
অঘটন অনেক হয়েছে এবং এটা পরিষ্কার কেউ বেড়াতে আসেনি কাতার বিশ্বকাপে। অস্ট্রেলিয়া ব্যতীত বাকি এশিয়ান দলগুলি মোটামুটি বিদায় নিয়েছে। কিন্তু ফিফার কাছে বার্তা গিয়েছে যে আগামীতে এরাই সেরা হওয়ার দাবিদার হবে। আফ্রিকা তারই মধ্যে খানিক ম্রিয়মান। মরক্কো বা সেনেগাল ছাড়া পরের রাউন্ডের বলার মতো কে আছে? লাতিন আমেরিকার দেশগুলি ভালো খেললেও পরের দিকে আলোচনা করার মতো আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় বা আমাদের ঘড়িতে যখন শুক্রবার, তখন জাপানের সঙ্গে স্পেনের রাউন্ডের শেষ খেলা। অন্যদিকে জার্মানির সঙ্গে কোস্টারিকার। শেষ ম্যাচে স্পেনের বিরুদ্ধে জার্মানি যা খেলেছে, তাতে কোস্টারিকা হয়তো তাদের কাছে সমস্যা হবে না। কিন্তু এই কোস্টারিকা আচমকা গোল করে জাপানকে না হারালে জার্মানির ভাগ্য আগের দিনই নির্ধারিত হয়ে যেত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান ছিল জার্মানির মিত্র। দুটি দেশকেই যুদ্ধের পর ভঙ্গুর অবস্থায় দেখা গিয়েছিল। কিন্তু জেদি এই দুই দেশ দ্রুত নিজেদের ফের বিশ্বমাঝে অন্যতম শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার করে তুলেছে। আজ রাতে জাপানকে হারতে হবে প্রাক্তন বন্ধুকে পরের রাউন্ডে পাঠানোর জন্য। কিন্তু ১৯৪৫-এ তারা তো হারেনি।
স্পেন অন্যতম শক্তিধর ফুটবল দল। কিন্তু তারা আজ জান লড়িয়ে দেবে পরের রাউন্ডে শীর্ষে থাকার জন্য। কার্যত জার্মানিকে তাকিয়ে থাকতে হবে জাপানের পরাজয়ের দিকে এবং অবশ্যই লাতিন শক্তিকে হারাতে হবে। নজরে কিন্তু রাত সাড়ে ১২টা।
এবারের বিশ্বকাপে (Qatar World Cup 2022) কোনও জ্যোতিষের ভবিষ্যৎবাণী মিলবে কিনা সন্দেহের। রবিবারটিও ছিল না ব্যতিক্রমী। সাধারণত জুন-জুলাইতে বিশ্বকাপ (FIFA World Cup) ফুটবল হয়ে থাকে কিন্তু ওই সময়ে কাতারে ৪৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকে কাজেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্টেডিয়াম (Football Stadium) যতই থাকুক দর্শকদের খেলা বাদে শহরে ঘুরে বেড়ানোটাই অসম্ভব। তাহলে খেলাটা দেখবে কে? ফলে এই সময়টাই বেছে নেওয়া হয়েছিল। অসময়ের বিশ্ব ফুটবল নিয়মের বাইরে ফলাফলে অর্থাৎ খেলার ফল একেবারেই ভিন্ন হচ্ছে, যেমনটি হলো রবিবার।
প্রথম খেলা ছিল জার্মানিকে হারিয়ে দেওয়া জাপান বনাম স্পেনের কাছে ৭ গোল খাওয়া কোস্টারিকা। সকলেই ভেবেছিল অনায়াসেই জাপান ফের তার ভেলকি দেখাবে। কিন্তু হল উল্টো, প্রথম থেকেই কোস্টারিকা তার ডিফেন্সকে শক্ত রেখে মিডফিল্ডারদের একটু নিচ থেকে অপারেট করছিল। পাস খেলছিল তারা গগনে গগনে কাজেই অনেকটাই খাটো চেহারার জাপানি খেলোয়াড়দের হেড নিতে অসুবিধা হচ্ছিল। আক্রমণ কিন্তু জাপান করেছিল কিন্তু গোল পাওয়ার জায়গায় যেতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে কোনটার আক্রমণে ৮০ মিনিটে জয়ের গোল পেয়ে যায় কোস্টারিকা।
ওই এক গোলে জাপানের পরের রাউন্ডে ওঠা অনিশ্চিত হয়ে পড়লো। অন্যদিকে শেষ খেলায় এই মানের কোস্টারিকা রবিবারে খেলা জার্মানিকে হারাতে পারবে বলে মনে করা কঠিন। পরের খেলা আফ্রিকার মরক্কো বনাম কালো ঘোড়া বেলজিয়াম। সারা খেলায় বেলজিয়ামকে খুঁজে বেড়াতে হল তাদের পুরাতনী ছন্দকে। নিয়মিত জিম করা শক্তির প্রদর্শন করলো মরক্কো। দু-দুটি গোল করে জানিয়ে দিল আফ্রিকা নক আউট পর্যায়ে যেতে পারে। এই ম্যাচে ফ্রি-কিক থেকে গোল প্রথম দেখা গেল।
তৃতীয় খেলায় নতুন দল কানাডা খেলার ৬৮ সেকেন্ডে প্রথম গোল করে চমক দিল। তারপর অন্তত ৩৫/৪০ মিনিট খেললো ইউরোপিয়ান পাওয়ার ফুটবল। পাসিং থেকে বল কেড়ে নেওয়া সমস্তটাই ছিল দেখার মতো। প্রথম অর্ধের শেষ দিকে খেলা ধরলো ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে ২০১৮-র রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়াকে ফিরে পাওয়া গেল। অজস্ৰ পাস খেলে বেদম করে দিল অনভিজ্ঞ কানাডাকে। চার চারটি গোল পেল তারা।
শেষ খেলাটি ছিল সবচাইতে আকর্ষণীয়। শিল্পের তিকি-তাকা বনাম ইউরোপের সেরা পাওয়ার পাসিং ফুটবল। প্রথমেই গোল পেয়ে যায় জার্মানি কিন্তু নতুন নিয়মের ফাঁদে পরে বাতিল হয়ে তা। দ্বিতীয়ার্ধের আগে অবধি স্পেন মুহুর্মুহু আক্রমণ সানায় জার্মানির দিকে। নয়্যার ছিলেন যেন চীনের প্রাচীর। এরপর খেলোয়াড় বদল করে মাঠে আসে স্পেনের আলভারো মোরাতো এবং এসেই গোল। খেলার বাকি তখন ৩৫ মিনিট।
এরপর খেলার রং বদলে যায়। জার্মানি বুঝিয়ে দেয় কেন তারা ৪ বারের চ্যাম্পিয়ন। রুডিগার, লিও গোরেৎসগ, লেরওয়ে সানে একের পর এক আক্রমণ বানাতে থাকে স্পেনের গোল লক্ষ্য করে। দুর্ভাগ্য তাদের ৩ গোল পাওয়া দল শেষ পর্যন্ত নিকোলাস ফুলকরুসের গোলে সমতা ফেরায়। এই দল অঘটন না হলে অনায়াসে হারাতে পারে কোস্টারিকাকে। নক আউটে ফের ইউরোপের দাপট থাকবে তা এখনিই বলে দেওয়া যায়।
জার্মানদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়ের (Japan beats German) দিন মন জয় করলেন জাপানি সমর্থকরা। জয়ের উৎসবের সঙ্গেই দায়িত্ব পালন। কাতারে (Qatar World Cup 2022) নজর কাড়ল জাপানি সমর্থকদের সংস্কৃতি। ২০১৪ আর ২০১৮-র বিশ্বকাপেও দেখা গিয়েছিল ম্যাচ শেষে জাপানি সমর্থকরা স্টেডিয়াম পরিষ্কার (Stadium Cleaning) করে মাঠ ছেড়েছেন। এবারও তার অন্যথা হল না। জয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসে গেলেও নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে ভুললেন না তারা। ম্যাচের সময় খাওয়ার প্যাকেট, জলের প্যাকেট-সহ বিভিন্ন জমা হওয়া আবর্জনা সংগ্রহ করে তারপর স্টেডিয়াম ছাড়লেন জাপানি সমর্থকরা।
জার্মানদের ২-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বফুটবলকে তাক লাগিয়েছে জাপান। এবার দায়িত্ব পালন করে বিশ্ববাসীর মন জয় করলো সে দেশের সমর্থকরা। কাতার ইকুয়েডর প্রথম ম্যাচেও স্টেডিয়ামে থাকা কিছু জাপানি সমর্থককে ম্যাচ শেষে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করতে দেখা যায়। ২০১৮-র বিশ্বকাপেও তাদের এই কাজের জন্য ফিফার থেকে পুরষ্কৃত হয়েছিল জাপানিরা। সেই দায়িত্ববোধ ধরে রেখেই ঐতিহাসিক জয়ের দিন আন্দোলন ভেসে যাওয়ার মধ্যেও দায়িত্ব পালন করে গেলেন জাপানিরা।
সৌদি আরবের পর এবার জাপান (Japan Beats Germany)। কাতারে জার্মানির বিরুদ্ধে সূর্যোদয় জাপ বাহিনীর। চলতি বিশ্বকাপে (Qatar World Cup 2022) ফের অঘটন এশিয়া দেশের হাত ধরে। মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে আরব্য রজনী দেখেছিল ফুটবল বিশ্ব। এবার দোহার খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল জাপান। এদিন জার্মানির রক্ষণভাগের ফাঁকফোকর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে জাপান। সামনে জার্মানির মতো মহাশক্তি থাকলেও গুটিয়ে থাকেননি জাপ ফুটবলাররা।
গোটা ম্যাচে চোখে চোখ রেখে জার্মানদের সঙ্গে লড়াই করলেন তাঁরা। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল জাপান, বরং ধীরে শুরু করেন মুলার-গোটজেরা। ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই জাপানের করা গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়। এদিকে, সারা মাঠজুড়ে জাপান দৌড়চ্ছে দেখে নিজেদের খেলায় ফেরে জার্মানরা।
৩৩ মিনিটে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় জার্মানি। পেনাল্টি থেকে গোল করেন গুন্ডায়ান। এই গোলের জন্য পুরোপুরি দায়ী জাপানের গোলরক্ষক গোন্ডা। তিনিই বক্সের মধ্যে ফাউল করেন জার্মানির এক ফুটবলারকে। যদিও পুরো ম্যাচ আর সেভাবে কোনও ভুল করেননি এই গোলরক্ষক। বরং দুটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন নিজের শক্ত হাতে। অপরদিকে, দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে জার্মানি। প্রায় সারাক্ষণই বল ঘোরা ফেরা করেছে জাপানের অর্ধে। কিন্তু সেই আক্রমণকে গোলে রূপান্তরিত করতে পারেনি টমাস মুলাররা। উলটে দু'গোল হজম করে অঘটন ঘটিয়ে দেয় চারবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সুরা পানের (Alcohol)প্রবণতা অত্যধিক বেড়েছে। যা নিয়ে চিন্তিত বাবা-মায়েরাও। কিন্তু এমন এক দেশ রয়েছে, যেখানে তরুণরা (young generation) মদ্যপান কমানোয় মাথায় হাত পড়েছে সরকারের। শুনে অবাক লাগলেও বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে জাপানে (Japan)।
জাপানের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনা মহামারীর সময় থেকে সে দেশের তরুণ যুবকরা মদ্যপান কম করছেন। যার ফলে লোকসান হচ্ছে মদের দোকানদারদের। বিক্রি একেবারেই কমের দিকে। যার ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে জাপান সরকারও। কারণ মদ বিক্রি থেকে একটা মোটা রাজস্ব সরকারের খাতে আসে।
এর ফলে নানা উপায় বার করার চেষ্টা করছে সরকার। তরুণ যুবকদের মদ্যপানে উৎসাহিত করতে আয়োজন করছে প্রতিযোগিতার। জাপানের ‘ন্যাশনাল ট্যাক্স এজেন্সি’-র তত্ত্বাবধানে ‘সেক ভাইভা’ নামে এক প্রচারাভিযান শুরু করা হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য তরুণদের মধ্যে মদ খাওয়ার চাহিদা বাড়ানো।
এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন বিভিন্ন মদের দোকানদাররা। তাঁরা কীভাবে মদ বিক্রি বাড়ানো যায় তা নিয়ে নানা উপায় শেয়ার করবেন। আর এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার শেষ তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর। অক্টোবর মাসে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগীদের বাছাই করা হবে। এবং এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে নভেম্বরে।