যে কোনও ধরনের পোশাক আর পরা যাবে না মন্দির চত্বরে, এমনটাই নির্দেশিকা জারি পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple) কর্তৃপক্ষের। মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেককেই মন্দিরে টর্ন জিন্স, হাফ প্যান্ট, স্লিপলেস জামা পরে আসতে দেখা যায়। কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, মন্দিরে 'সভ্য পোশাক' পরে আসতে হবে। কারণ মন্দির কোনও বিনোদনের জায়গা নয়। তাই এবারে ভক্তদের জন্য নতুন পোশাক বিধি এনেছে জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ।
সূত্রের খবর, সোমবার জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে পোশাক বিধির নির্দেশিকা জারি করা হয়। তবে এবছর থেকে নয়, ২০২৪-এর ১ জানুয়ারি থেকে ভক্তদের এই নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। জানা গিয়েছে, সোমবার পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের নীতি আয়োগ সাব-কমিটির বৈঠক হয়, সেখানেই অশালীন পোশাক নিয়ে আলোচনা করা হয়। ফলে ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা ভেবেই পোশাক বিধি জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে কেবল পোশাকবিধি চালু করা নয়, সেটি কার্যকর করার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, নজরদারির জন্য জগন্নাথ মন্দিরের ‘সিংহদুয়ারে’ নিরাপত্তারক্ষী এবং অভ্যন্তরে ‘প্রতিহারী’-তে সেবায়েত থাকবে। নতুন বছর থেকে পোশাক বিধি কার্যকর করা হলেও আজ, মঙ্গলবার থেকেই এই বিষয়ে প্রচার শুরু হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
আর ৪৮ ঘণ্টাও বাকি নেই মহাযজ্ঞের। ২০ তারিখ পুরীর (Puri) জগন্নাথ ধামে প্রতিবারের মতো এবারেও পালিত হতে চলেছে রথযাত্রা (Ratha Yatra)। জোর কদমে চলছে রথ সাজানোর কাজ। ইতিমধ্যেই পুরীর ধামে শুরু হয়েছে ভক্ত সমাগম। সর্বত্রই থিক থিক করছে ভিড়। জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রার পর, পুরীর মন্দির বন্ধ থাকে ১৫ দিন। এরপর রথের দিন খোলে মন্দির।
বিশেষ কারিগরের হাতে তৈরী হয় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার রথ। জগন্নাথের রথের নাম ‘নন্দীঘোষ’, ভগবান বলরামের রথের নাম 'তালধ্বজ' এবং দেবী সুভদ্রার রথের নাম হল 'দর্পদলন'। এই রথে চড়েই মন্দির ভ্রমণ করেন তিন দেবতা। রথের চাকা তৈরিতেও রয়েছে বিশেষ মাহাত্ম্য। এই মহাযজ্ঞ দেখতে প্রতিবছরই লাখো লাখো ভক্ত সমাগম হয় জগন্নাথ ধামে। হোটেলগুলিও আগাম বুক হয়ে থাকে। এই সময় নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয় মন্দির চত্বর।
জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার পুণ্য তিথিতে পুরীর ধামে তিল ধারণের জায়গা নেই। লাখো লাখো ভক্তের সমাগম হয়েছে এই মহা পুণ্য স্নান দর্শনে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা আসেন এই স্নানযাত্রা দর্শনে। এদিকে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। পুরীর মহোৎসবে হিট স্ট্রোকে এদিন মৃত্যু হয় এক ভক্তের। তাঁর বাড়ি রাজস্থান। ৪৭ বছরের আম্বালাল লাইনে দাঁড়িয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর স্বেচ্ছাসেবকরা তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর রথের আগে জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীজগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা পালিত হয়। গানে প্রার্থনায় ১০৮টি সোনার কলসের জলে স্নান করানো হয় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহ। শাস্ত্র মতে, এই দিনেই আবির্ভূত হয়েছিলেন জগন্নাথ দেব। কথিত আছে, যদি কেউ ভক্তিসহকারে একবার স্নানযাত্রা মহোৎসব দর্শন করেন তাঁর পাপ ধুয়ে যায়। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী মনে করা হয়, এরপর জ্বর আসে তিন ভাইবোনের। এরপর দিন ১৫ বন্ধ থাকে মন্দির।
সৌমেন সুর: বাগবাজারের ৭ নম্বর গিরিশ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িটি বলরাম বসুর বাসভবন। ভক্ত বলরাম, এই বাড়ির রথ, সাজানো হয়েছে ভীষণ সুন্দরভাবে। ছোট রথ, অথচ কী অপূর্ব। ফুল, মালা, পতাকায় সেজে উঠেছে অপরূপ সাজে। রথে শ্রীজগন্নাথ দেবের আরোহণের পর পরিবার প্রথা অনুযায়ী কুলপুরোহিত শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের আরতি করলেন। ভক্ত বলরাম জগন্নাথকে নিত্য সেবা দেন। শ্রীরামকৃষ্ণ ভাব অবস্থায় বলরামকে দেখেছিলেন শ্রীচৈতন্যের কীর্তন দলে। গৃহী ভক্ত, জমিদার বংশের ছেলে কিন্তু মনটা বড় সরল। শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, 'বলরামের পরিবার সব একসুরে বাঁধা। কর্তা গিন্নী ছাড়াও এ বাড়ির ছোট বড় সব ছেলেমেয়ে ঠাকুর ভক্ত। ভগবানের নাম না করে জলগ্রহণ করে না এবং পুজোপাঠ, সাধুসেবা, দানধ্যান প্রভূতিতে সকলের সমান অনুরাগ।' শ্রীরামকৃষ্ণের শতাধিকবার পাদস্পর্শে ধন্য এই বাড়ি। বর্তমান যার পরিচয় বাগবাজার বলরাম মন্দির।
কথামৃতের বর্ণনা অনুসারে জানা যায়, ১৮৮৪ সালে উল্টোরথের দিন ঠাকুর এই বাড়িতে প্রথম পদধূলি দেন। এর পরের বছর ১৪ জুলাই রথের দিন ঠাকুর উপস্থিত হন বলরামের রথযাত্রায়। সন্ধ্যায় জগন্নাথ দেবের আরতির পর রথযাত্রা শুরু হয়। শ্রীরামকৃষ্ণ ভাব অবস্থায় প্রথম টান দিলেন রথের রশিতে। শঙ্খ, উলুধ্বনি আর কীর্তনের সঙ্গে রথ চলতে থাকে।
রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গে স্বামী-সারদানন্দ বর্ণনা দিচ্ছেন, ঠাকুর স্বয়ং রথের রশি ধরে অল্পক্ষণ টানলেন, পরে ভাবাবেশে তালে-তালে নৃত্য করতে লাগলেন। সে সময় সকলেই আত্মহারা, ভাবভক্তিতে উন্মাদ। এরপর একসময় কীর্তন শেষ হয় এবং ঠাকুর ও অন্যান্য ভক্তরা প্রসাদ গ্রহণ করেন।
ভক্তজনের উপস্থিতিতে আজও এই বাড়ি পরিণত হয় যেন জগন্নাথ ক্ষেত্র এই কলকাতাতেই। রথের দিন আজও সেই একইভাবে পালিত হয় বলরাম ভবনে রথযাত্রা।
ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের (Puri Jagannath Temple) কাছে একটি শপিং মলে ভয়াবহ আগুন (Fire Incident)। বুধবার সন্ধ্যায় লাগা আগুন ১২ ঘণ্টার চেষ্টাতেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ঘটনাস্থলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে দমকলের বিশাল বাহিনী। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পুড়ে ছাই প্রায় ৪০টিরও বেশি দোকান। আগুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে পর্যটকেদের মধ্যে। পর্যটকদের (Puri Tourist) দ্রুত নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বাজার সংলগ্ন হোটেলগুলির মধ্যে থাকা মানুষজনকেও অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মন্দির চত্বর সংলগ্ন গোটা এলাকা ব্যারিকেড করে চলেছে আগুন নেভানোর কাজ।
#ଅସୁସ୍ଥ_ଅଗ୍ନିଶମ_କର୍ମଚାରୀ
— Kanak News (@kanak_news) March 8, 2023
ପ୍ରବଳ ଧୂଆଁରେ ଅଣନିଶ୍ୱାସୀ ଅଗ୍ନିଶମ କର୍ମଚାରୀ । ୨ ଜଣ ଅସୁସ୍ଥ ହୋଇଥିବା ସୂଚନା । #Fire #Puri #Odisha pic.twitter.com/5Ef5V9lmYs
ওড়িশার স্থানীয় সংবাদ সংস্থা থেকে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ প্রথম আগুন লেগেছিল গ্র্যান্ড রোডের মারিচীকোট চকের লক্ষ্মী মার্কেট কমপ্লেক্সের একটি জামা কাপড়ের দোকানে। সেখান থেকই আগুন ছড়িয়ে পড়ে বাজার চত্বরের গায়ে গায়ে লেগে থাকা দোকানগুলিতে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তত ৪০টি দোকান আগুনে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত। এমনকি বাজারের পাশের বেশ কয়েকটি হোটেলও কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে।
আগুন লাগার সময় পুরী মন্দিরের কাছেই ওই বাজার চত্বরে উপস্থিত ছিলেন বহু পর্যটক। আগুনের খবর ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে পর্যটকেদের মধ্যে। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রশাসন যথাযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
দমকল বাহিনী জানিয়েছে, যে সময় আগুন লাগে, সে সময় পুরীর মন্দিরের কাছেই ওই বাজার চত্বরে হাজির ছিলেন বহু পর্যটক। তবে ওই বাজার চত্বর থেকে সমস্ত পর্যটককেই উদ্ধার করা গিয়েছে। তাঁরা আরও জানায়, ওই বাজার চত্বরে বেশ কিছু গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করা ছিল। সেই সব সিলিন্ডার দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত। দমকলের মুখপত্র জানান, ‘আগুন অনেকটা ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে। তবে আশা করছি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিভবে।’
ইঁদুরের উৎপাতে ত্রস্ত পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple Puri)। যত দিন যাচ্ছে, বাড়ছে মূষিকের (Rodent Animal) উৎপাত। রীতিমতো নাকি তাণ্ডব চালাচ্ছে তারা। কখনও বিগ্রহের পোশাক কেটে, কখনও আবার পুজোর সময় উৎপাত করে পুরোহিতদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে ইঁদুর। কোভিড অতিমারি (Corona Pandemic) এবং লকডাউনের সময় থেকে পুরীর মন্দিরে এই উৎপাত শুরু বলে দাবি সেবায়েতদের। লকডাউনের সময় দীর্ঘ সময় মন্দির বন্ধ ছিল। সেই সুযোগে বংশবিস্তার করেছে মূষিক বাহিনী। তারপর অতিমারি কাটলেও ইঁদুর তাড়ানো যায়নি মন্দির থেকে। বরং প্রভু জগন্নাথের ডেরায় তাদের দাপট বাড়ছে।
ইঁদুরের দৌরাত্ম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মন্দিরের পুরোহিতরা। তাঁরা জানিয়েছেন, মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ কাঠের তৈরি। ইঁদুর যদি তা-ও কেটে ফেলে, তাহলে বিপদ বাড়বে। সেবায়েতরা জানান, বিগ্রহের পোশাক কেটে ফেলছে ইঁদুর। গর্ভগৃহে পুজোর সময়েও তারা নানা উৎপাত করছে। অবিলম্বে ইঁদুরের এই তাণ্ডব বন্ধ করা দরকার বলে মনে করছেন তাঁরা।
এই ঘটনায় এক সেবায়েত বলেন, 'আমরা ইঁদুরগুলিকে ধরে বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করছি। শুধু ইঁদুর নয়, মন্দিরে রয়েছে বিছেও। তাদেরও তাড়ানোর চেষ্টা চলছে।' মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, দেবতার প্রতি উৎসর্গীকৃত ফুল খেয়ে ফেলছে ইঁদুর। বিগ্রহের পোশাকও কাটছে ফেলছে। কিন্তু মন্দিরের মধ্যে প্রাণীহত্যা নিষিদ্ধ। তাই ইঁদুরের বিষ দেওয়া যাচ্ছে না। ইঁদুর ধরে ধরে মন্দিরের বাইরে ফেলে আসছেন কর্মীরা।'