ফের দিল্লি হাইকোর্টে জোর ধাক্কা মণীশ সিসোদিয়ার (Manish Sisodia)। আজ, সোমবার ফের দিল্লির প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রীর জামিনের আবেদন খারিজ করল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় (Delhi Excise Policy Case) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তিহাড় জেলে বন্দি তিনি। গত শনিবার কিছুক্ষণের জন্য স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষপর্যন্ত হয়নি। এরপর তাঁর স্ত্রীর অসুস্থতার জন্যই ছয় সপ্তাহের জন্য জামিনের আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় দিল্লি হাইকোর্ট।
স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য এবার ছয় সপ্তাহের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সোমবার হাইকোর্ট প্রাক্তন আপ মন্ত্রীর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। সোমবার মামলার শুনানিতে জামিনের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। প্রভাবশালী তকমা দিয়ে সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রভাবিত করার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এরপরেই আপ নেতার জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি। তবে জামিনের আর্জি খারিজ করে দিলেও অসুস্থ স্ত্রীর সঙ্গে ফের একটা দিন কাটানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে সিসোদিয়াকে।
২০০ কোটি টাকা তছরুপ-কাণ্ডে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের (Jacueline Fernandez) অন্তর্বর্তী সুরক্ষা বাড়ল। দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট (Delhi Court) সূত্রে শনিবার জানানো হয়েছে, আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত এই সুরক্ষা থাকবে। এই সময়ের মধ্যে নতুন চার্জশিট এবং আনুষঙ্গিক নথি সবপক্ষের আইনজীবীদের কাছে পেশ করবে ইডি (ED)। গত ১৭ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী জামিনে (Interim Bail) ছাড়া পান জ্যাকলিন। অগস্ট মাসে সুকেশ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে তছরূপ মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। এরপর ইডি তলব করে তাঁকে। শুধু তা-ই নয়, তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত আরও অনেককেই থানায় হাজিরা দিতে ডেকেছিল দিল্লির আর্থিক অপরাধ দমন শাখা। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্ত করছে ইডি। তার মধ্যেই ৩৭ বছর বয়সি জ্যাকলিনের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন মঞ্জুর।
ইডি যখন জ্যাকলিনের বিরুদ্ধে মামলায় চার্জশিট দাখিল করে, তখন অভিযোগ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। ইডির তদন্ত পদ্ধতি ‘বেঠিক’ এবং ‘অন্যের মদতপুষ্ট’ বলে পাল্টা অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য দিল্লির এক আদালতে আবেদন করেছিলেন তিনি। সেই অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হয় শেষমেশ।
এদিকে, তদন্তে ইডি জানতে পেরেছে জ্যাকলিনের ‘স্বপ্নের পুরুষ’ ছিলেন সুকেশ! ২০০ কোটি টাকার তছরুপ মামলায় তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় সংস্থা জানতে পেরেছে ‘কনম্যান’ সুকেশকে বিয়েও করতে চেয়েছিলেন বি-টাউনের এই মোহময়ী নায়িকা।
সন্তানসম্ভবা (Pregnant) একজন মহিলাকে যদি জেলের মধ্যে সম্তানের জন্ম দিতে হয়, তাহলে তাঁর মনের অবস্থা কী হতে পারে? আর যে সন্তান (New Born) পৃথিবীর আলো দেখবে, এর জন্য তার মনেও কি আদৌ কোনও ভালো প্রভাব পড়বে? মাতৃত্ব চলাকালীন প্রতিটি সন্তানসম্ভবা মহিলাই উপযুক্ত সম্মানের অধিকারিণী। সংবিধানেই একথা বলা আছে। এমনই মন্তব্য করে এক সন্তানসম্ভবার তিনমাসের অন্তর্বর্তী জামিন (Interim Bail) মঞ্জুর করেছে দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। অপহরণ এবং খুনের চেষ্টার মামলায় ওই মহিলা বর্তমানে জেলে রয়েছেন।
বিচারপতি অনুপকুমার মেন্ডিরাত্তা বলেছেন, গর্ভে সন্তান আসাটা একটি বিশেষ ঘটনা। কিন্তু সেই মা যখন জেলের মধ্যে সম্তানের জন্ম দেবেন, তখন তিনি তো মানসিকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেনই, সেই সন্তানকেও সারা জীবন এই দুঃসহ স্ম়তি বয়ে বেড়াতে হবে। জন্ম কোথায়, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তাকে বারেবারে বিব্রত হতে হবে। অপরাধীকে ছেড়ে দেওয়া যদি মারাত্মক বিপজ্জনক কিছু না হয়, তাহলে ওই সন্তানকে যাতে জেলের মধ্যে জন্ম নিতে না হয়, সেটাই আদালত বিশেষভাবে চাইবে। মহিলা, ১৬ বছরের নিচে কেউ এবং অসুস্থদের জন্য ছাড়ের কথাও আইনেই বলা আছে।
তাছাড়া জেলের রুলেই বলা আছে, বাইরে কোনও হাসপাতালে যদি ডেলিভারির ব্যবস্থা করতে হয়, তাহলে সাময়িক জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে। কোর্ট এটাও জেনেছে, ওই জেলে ডেলিভারির কোনও ব্যবস্থা নেই এবং সেই কারণে ওই মহিলাকে রেফার করা হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে। এরপরই কোর্ট তাঁকে ২০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তিনমাসের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে।
কোটি কোটি টাকা সহ ধরা পড়া ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) সেই তিন বিধায়কের (MLA) তিনমাসের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন (Interim Bail) মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট (High Court)। এই মামলায় আবেদনকারীর আইনজীবী মুকুল রয়াগ্নি বলেন, টাকা উদ্ধার কখনও কগনিজেবল অপরাধ নয়। তার জন্য হেফাজতের প্রয়োজন নেই। অভিযুক্তদের একজনের ৩টি পেট্রোল পাম্প আছে, একজন ব্যবসায়ী। তাঁদের কাছে এই টাকা থাকতেই পারে।
অভিযোগকারীর আইনজীবী বলেন, অর্থের বিনিময়ে দল পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই কারণে তিনি জামিনের বিরোধিতা করছেন। শ্বাশতগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এঁদের জামিন দিলে তদন্ত ব্যাহত হবে। কারণ, তদন্ত প্রাথমিক পর্যায় আছে। অভিযুক্তরা শাড়ি কেনার কথা বললেও তাঁদের কাছ থেকে কোনও শাড়ি উদ্ধার হয়নি। কিছু জাল বিল উদ্ধার হয়েছে। এঁরা প্রভাবশালী। ২০২১ এ এই ধরনের অভিযোগ আছে।
সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালতের মন্তব্য, তিন অভিযুক্ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, যারা তাদের একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে ভোট দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে দল পরিবর্তনের অভিযোগ উঠেছে। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, অভিযোগকারীর সাথে কথোপকথনের কোনও ট্র্যাকিং লিস্ট এখনও তদন্তে উল্লেখ নেই। কলকাতা স্টেশনের কথা উল্লেখ থাকলেও সেই সময় যে তারা গ্রেফতার, তার উল্লেখ নেই। ১৫ দিনের তদন্তে অভিযোগকারীর কোনও স্টেটমেন্ট, অভিযোগকারীর অভিযোগমতো কোনও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা কোনও ইলেকট্রনিক তথ্য বা নথির উল্লেখ নেই কেস ডায়েরিতে।
বিচারপতির মতে, এটা ঠিক, অভিযুক্তদের কাছ থেকে হিসাব বহির্ভূত টাকা উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্তরা ইতিমধ্যে তদন্তে যোগ দিয়েছে। এই তদন্তে অন্যান্য রাজ্যের সহযোগিতার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তদের কোনও হাত নেই।
এরপরই বিচারপতি শর্তসাপেক্ষে ৩ মাসের অন্তর্বতী জামিন মঞ্জুর করেন। শর্তগুলি হল
১) ১ লাখ টাকা বন্ড
২) কলকাতা ছেড়ে যেতে পারবেন না অভিযুক্তরা।
৩) তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে।
৪) সপ্তাহে ১ দিন তদন্তকারী অফিসারের সাথে দেখা করতে হবে।
৫) মামলার বিচার হবে এমএলএ-এমপি কোর্টে।
পরবর্তী শুনানি ১০ নভেম্বর।