
শিক্ষা ও রেশন দুর্নীতির পর এবার অভিযোগ উঠেছে শস্যবিমা দুর্নীতির। গ্রামের প্রকৃত কৃষকদের জমির পরিমাণ কমিয়ে ভুয়ো কৃষক হিসেবে শস্যবিমা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ। বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের হাউসিবাদ গ্রামের এমন ঘটনা জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে কৃষি দফতর। অভিযোগ, একটি গ্রামের ২২ জন ভুয়ো কৃষক হিসাবে মোটা অঙ্কের বিমার টাকা পেয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত কয়েকবছর থেকেই এ রাজ্যের কৃষকরা খারিফ (বর্ষাকালীন ফসল) ও রবি (শীতকালীন ফসল) মরসুমে নিজেদের শস্যবিমা করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাই দুটি মরসুমে পৃথকভাবে নিজেদের চাষযোগ্য জমির বিবরণ সহ শস্যবিমা করার জন্য ব্লক স্তরের কৃষি দফতরে আবেদন জানান কৃষকরা। সেই আবেদনের তথ্য যাচাই করে কৃষি দফতর তা পাঠিয়ে দেয় বিমা সংস্থার কাছে। আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারনে ফসলহানী হলে সরাসরি বিমা সংস্থা কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিমার টাকা জমা করে।
চলতি বছরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বাঁকুড়ার ছাতনায় খারিফ মরসুমে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কারণ বৃষ্টির অভাবে বহু জমিতে ধান রোপণ করতে পারেননি ওই ব্লকের কৃষকরা। সেই কারণে সম্প্রতি বিমা সংস্থার তরফে ছাতনা ব্লকের কৃষকদের শস্যবিমার টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে। আর তাতেই উঠে এসেছে বড়সড় বেনিয়মের অভিযোগ। ছাতনা ব্লকের হাউসিবাদ গ্রামের কৃষকদের একাংশের দাবি, গ্রামের প্রকৃত কৃষকরা যে পরিমাণ জমির তথ্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন তা ইচ্ছাকৃত ভাবে কমিয়ে দিয়েছে কৃষিদফতর। অভিযোগ, গ্রামের যে সমস্ত কৃষকদের নিজস্ব জমি নেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে মোটা মোটা অঙ্কের বিমার টাকা ঢুকেছে।
ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে স্থানীয় বিডিও, জেলা শাসক এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ পেতেই তদন্ত শুরু করেছে কৃষি দফতর।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromondeal Express) দুর্ঘটনায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। প্রিয়জনকে হারিয়েছেন অনেকে। সেই ক্ষত সারতে এখনও সময় লাগবে অনেকটা। আর এধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা (Train Accident) থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে ট্রেনে ওঠার আগে বিমা করে রাখতে ভুলবেন না। খুব কম খরচেই বিমা করার সুযোগ দিচ্ছে রেল। টিকিট কাটার সময় মাত্র ৩৫ পয়সা খরচ করতে হবে। তাহলেই মিলবে বিমার সুবিধা। রেল দুর্ঘটনায় কোনও বিমা (Insurance) করা যাত্রীর মৃত্যু হলে, তিনি পেয়ে যেতে পারেন ১০ লক্ষ টাকা।
কোনও যাত্রী দুর্ঘটনায় প্রাণে বাঁচলেও পুরোপুরি অক্ষম হয়ে পড়েন, তবেও তিনি ১০ লক্ষ টাকা পাবেন। যদি আংশিক অক্ষম হন, পাবেন ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য ২ লক্ষ টাকা। শুধু তাই নয়। রেল দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যু হলে দেহ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার খরচ হিসাবেও আইআরসিটিসি ১০ হাজার টাকা দেবে বলেই বিমার নিয়ম বলছে।
বিমার সুবিধা পাওয়ার জন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে হবে। কনফার্ম টিকিটের সঙ্গে আর এসি টিকিটেও মেলে বিমার সুবিধা। টিকিট কাটার পরে মোবাইলে বিমা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানিয়ে দেয় আইআরসিটিসি। তবে বিমা বাধ্যতামূলক নয়।
এ যেন পুরো সিনেমার গল্প। দুর্ঘটনায় স্ত্রী মারা গেলে প্রায় ২ কোটি টাকা পাবেন স্বামী। আর সেই টাকার লোভেই স্বামী পথ দুর্টনার গল্প সাজিয়ে হত্যা করলেন স্ত্রীকে। আর হত্যার (Murder) ছক যেভাবে কষেছেন, তা সিনেমার স্ক্রিপ্টের চেয়ে কোনও অংশে কম না। ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের (Rajasthan) জয়পুরে। অভিযুক্ত স্বামীর নাম মহেশ চাঁদ। আপাতদৃষ্টিতে এটি পথদুর্ঘটনা (Road Accident) মনে হয়েছিল সকলের। পরে পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে পুরো ঘটনাটিই পূর্ব পরিকল্পিত।
জানা গিয়েছে, ১.৯০ কোটি টাকার বীমা পাওয়ার জন্য অভিযুক্ত স্বামী একটি এসইউভি গাড়ি ভাড়া করেছিলেন। এরপর একপ্রকার স্ত্রীকে মিথ্যে মানতের কথা বলে মন্দিরে পাঠান। মহেশের অনুরোধে তাঁর স্ত্রী শালু, খুড়তুতো ভাইয়ের বাইকে চেপে মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন। সেসময় পরিকল্পনা মতো গাড়িটি পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে বাইকটিকে। অসমর্থিত একটি সূত্র এই দুর্ঘটনায় শালু ও তাঁর তুতো ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করলেও পুলিস সূত্রে এখনও পর্যন্ত একজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে ৫ অক্টোবরের। হত্যার আগে মহেশ চাঁদ তাঁর স্ত্রীকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার বীমাও করিয়েছিলেন। সেই বীমার শর্ত ছিল বিমাকারীর স্বাভাবিক মৃত্যু হলে ১ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা পাবেন মহেশ। পুলিসের অনুমান, এই টাকার লোভ সামলাতে পারেননি মহেশ। তাই আঁটঘাট বেঁধে স্ত্রীকে মারার পরিকল্পনা করেন। মহেশ এরপর মুকেশ সিংহ রাঠৌর নামে এক কুখ্যাত ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি করেন। শালুকে মারার জন্য ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন মুকেশ। মহেশ সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম দেন মুকেশকে।
ডিসিপি বন্দিতা রানা জানিয়েছেন, মহেশ ও তাঁর স্ত্রী শালুর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত। শালু ২০১৯ সালে মহেশের বিরুদ্ধে যৌতুক নিয়ে তাঁকে হয়রানি করার অভিযোগ জানিয়ে মামলাও করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারও করা হয় মহেশকে। কিছুদিন পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যান তিনি।
পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে, মহেশ তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন যে, একজন পণ্ডিত বলেছেন প্রত্যেকদিন ১ বার করে ১২ বার মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করলে সুখী দাম্পত্য জীবনযাপন করতে পারবেন। স্বামীর চাপে শালু তাঁর ভাই রাজুর মোটরসাইকেলে করে মন্দিরে যান। পিছনে পিছনে যায় ভাড়া করা এসইউভি গাড়িটি। তার পিছনে বাইকে করে সমস্ত বিষয়টির উপর নজর রাখছিলেন মহেশ। ভোর ৪টে ৪৫ নাগাদ শালুর বাইকের পিছনে ধাক্কা মারে গাড়িটি।
ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শালুর। দূর থেকে দেখে মহেশ বাইক ঘুরিয়ে চলে যান। পুলিস সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিষয়টি বুঝবে পারেন, এটি সাজানো ঘটনা। এই মামলায় পুলিস মহেশ, রাজু, মুকেশ সিং রাঠোর, সোনু সিং এবং রাকেশ বৈরওয়া সহ পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
এতদিন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় (Accident) বাবা-মা মারা গেলে বিবাহিত ছেলেরা বিমায় ধার্য করা (insurance compensation) ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এবার থেকে বিবাহিত মেয়েরাও বাবা-মার দুর্ঘটনায় বিমা বাবদ ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন বলে একটি মামলার রায়দানে জানাল কর্ণাটক হাইকোর্ট (Karnataka High Court)।
সূত্রের খবর, মামলাটি ২০১২ সালের। উত্তর কর্ণাটকের হুবলিতে ৫৭ বছর বয়সি এক মহিলা গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর ওই মহিলার পরিবারের লোকেরা অর্থাৎ তাঁর স্বামী, এক পুত্র এবং তিন বিবাহিত কন্যা বিমা সংস্থার কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। কিন্তু বিমা সংস্থাটি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে বিবাহিত মেয়েদের ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে। মৃত মহিলার পরিবার বাধ্য হয়ে বিমা সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের শরণাপন্ন হন। তারা বিমা সংস্থাটিকে বার্ষিক ছয় শতাংশ হারে সুদ-সহ পাঁচ লক্ষ ৯১ হাজার ৬০০ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশ মানতে নারাজ ছিল বিমা সংস্থাটি। তারা ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
ওই মামলার রায় প্রসঙ্গে হাইকোর্টের বিচারপতি এইচপি সন্দেশ বলেন, “আদালত কখনওই বিবাহিত ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে ভেদাভেদ করতে পারে না। মৃত ব্যক্তির বিবাহিত কন্যা বিমার ক্ষতিপূরণ পাবেন কি পাবেন না, তা নিয়ে বিতর্ক কখনওই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”