বাড়িতে পোষ্য (Pets) থাকলে, তাদের সবসময় বাইরে ভ্রমণে (Trip) নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। অনেকেই তাঁদের পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে যেতে চান, কিন্তু তা আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেই সকল পোষ্য অভিভাবকদের জন্য সুখবর এনেছে ভারতীয় রেল (Indian Railways) কর্তৃপক্ষ। পোষ্য কুকুর এবং বিড়ালদের জন্য অনলাইনে টিকিট (Online ticket) বুকিং পরিষেবা চালু করার কথা ভাবছে রেলমন্ত্রক। এই পরিষেবা চালু হয়ে গেলেই রেলযাত্রীরা (Passengers) তাঁদের পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে কোনওরকম সমস্যা ছাড়াই ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেড়াতে পারবেন তা অনুমান করা হচ্ছে।
এখন পোষ্যের অভিভাবকদের জন্য একটি চার সিটের কেবিন অথবা কুপের টিকিট বুক করতে হয়। কারণ, পুরো কেবিন বুক করলে তবেই তাঁরা পোষ্যের সঙ্গে যাত্রা করতে পারবেন। এছাড়াও ভ্রমণযাত্রার আগে পোষ্যকে অবশ্যই টিকাকরণ করাতে হবে। অনলাইনে পোষ্যের টিকিট বুক করার পরে তাঁর ফোটোকপি করিয়ে নিজের সঙ্গে রাখুন। পার্সেল বুকিং কাউন্টারে গিয়ে পোষ্যের টিকিটটি সংগ্রহ করতে হয়। ট্রেন ছাড়ার ঘণ্টাখানেক আগে স্টেশনে পৌঁছে যেতে হয় পোষ্যকে নিয়ে। স্টেশনে গিয়ে আপনাকে পার্সেল অফিসে যেতে হয়। সেখানে যাত্রীকে টিকিট, পোষ্যের টিকাকরণ এবং ফিটনেস সার্টিফিকেট, ভ্রমণের সার্টিফিকেট তৈরি করাতে হয়। এই প্রক্রিয়াগুলি শেষ হলে, বুকিং করা টিকিট হাতে পাওয়া যায়।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, হুম এখন যে নামটা প্রত্যেক রেল যাত্রীর মুখে মুখে। কী এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, আর কেনই বা এত নাম ডাক এই সেমি হাই স্পিড ট্রেনের। তার কারণ অবশ্য অনেক প্রথমত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সহ সেমি হাই স্পিড ট্রেন, পরিষেবা খুব ভাল, মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে ভাড়া। সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় যেটা, সেটা এটা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে বানানো ট্রেন। ভারতীয় রেলের একটি বিভাগ আইসিএফ বা ইন্ট্রিগাল কোচ ফ্যাক্টরি।
তামিলনাড়ু জেলার চেন্নাইতে অবস্থিত। ২০১৮ সালে অক্টোবর মাসে এই ট্রেনের ট্রায়াল করা হয়েছিল প্রাথমিক স্তরে। সেই অনুসারে ট্রেন টি কে অনেকে ট্রেন-১৮ বলা হয়। ট্রেনটির সর্বাধিক গতিসীমা ১৮০ কিমি প্রতি ঘন্টা।
ট্রেনটি মাত্র ১৩০ সেকেন্ডে সর্বাধিক গতি তুলতে সক্ষম । প্রথম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে নিউ দিল্লি থেকে বারানসি স্টেশন পর্যন্ত। তারপর ১৭ই ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিক ভাবে চলাচল শুরু করে ট্রেনটি। ট্রেনটির দুই রকমের কোচ একটি CC ও অপর টি EC অর্থাৎ একটি চেয়ার কার ও একটি এক্সিকিউটিভ চেয়ার কার। ভারতে এই মুহূর্তে ৮ টা বন্দে ভারত এক্সপ্রেস আছে।
গত ৩০শে ডিসেম্বর ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ভার্চুয়াল) ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব , পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল, ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ফ্ল্যাগ অফ করে হাওড়া - নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের মধ্যে বন্দে ভারতের উদ্বোধন করেন। ২রা জানুয়ারি ২০২৩ বানিজ্যিক ভাবে চলাচল করে। ট্রেন টি সকাল ৫টা ৫৫ তে ছেড়ে বেলা ১টা ২৫ মিনিটে এন জে পি ষ্টেশনে পৌছায়।
৭ঘন্টা ৩০ মিনিটের এই যাত্রায় আপনাকে ভাঁড়া দিতে হবে - AC Chair Car (CC)তে ১৪৫৫ টাকা ও Executive Chair Car (EC) তে ২৬০০ টাকা। বোলপুর , মালদা, বারসই ষ্টেশনে ট্রেনটির স্টপেজ রয়েছে । সপ্তাহে ৬দিন চলাচল করবে ট্রেনটি। দেওয়া হবে খাবার। সকালে ব্রেক ফাস্ট, দুপুরের লাঞ্চ আবার ফিরতি পথে বিকেলের স্ন্যাক্স ও ডিনার দেওয়া হবে। সাথে দেওয়া হবে সন।
এক্সিকিউটিভ চেয়ার কারের সিট গুলি আবার ১৮০ ডিগ্রি ঘোরানো যায়। অর্থাৎ জানলার দিকে মুখ করেও বসতে পারবেন যাত্রীরা।ট্রেনটিরগতিবেগের কথা মাথায় রেখে ট্রেনটির ডিজাইন ও ফাইবার বডি করা হয়েছে।ট্রেনটির টেস্টিং স্পিড ১৭৬ কিমি প্রতি ঘন্টা হলেও এর সার্ভিস স্পিড ১৬০ কিমি প্রতি ঘন্টা হবে। ট্রেনটির ব্রেকিং সিস্টেমে রয়েছে পিস্টন টাইপ অয়েল ফ্রি এয়ার কম্প্রেসর ও এয়ার ইউনিট। ইলেক্ট্রো নিউমেটিক, ও মাইক্রোপ্রসেসর কন্ট্রোলড ব্রেক যেটি সরাসরি ব্রেক হিসেবে কাজ করে। Towing Mode অপারেশন ব্রেক ও আছে যেটি indirect ব্রেক হিসেবে কাজ করে। চাকায় ব্রেক মাউন্ট করা থাকে ব্রেক ক্যালিপার ইউনিটস এর সাথে। ইলেক্ট্র-ডায়নামিক ব্রেক প্রধান ব্রেক সিস্টেম। প্রয়োজনীয় সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সজ্জিত এই ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ।
ট্রেনের বিশেষ কিছু প্রজুক্তি ও রয়েছে দেখে নিন-
✔ কেন্দ্রীয় ঘোষণা সিস্টেম রয়েছে। যা চালক বা ট্রেন ম্যানেজার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
✔ উন্নত যন্ত্রপাতি সহ ট্রেন পরিষ্কারের সুবিধা।
✔ ট্রেনের ভিতরে সম্পূর্ণ সি সি টিভি ক্যামেরা দ্বারা নজরদারি আছে।
✔ দক্ষ/বিশেষজ্ঞ দ্বারা ট্রেনটি মেইন্টেনেন্স করা হয়
✔ অগ্নিনিরবাপক সুরক্ষার জন্য অ্যালার্ম সিস্টেম রয়েছে।
✔ যাত্রী সুরক্ষার কারনে ট্রেনের দরজাগুলি সয়ংক্রিয়।
ভিডিও সৌজন্যে : ICF
ট্রেনে ভ্রমণ কমবেশি প্রত্যেকেই প্রায় করে থাকি আমরা, কিন্তু এই ট্রেন যাত্রার সময় আমরা বেশকিছু হলুদ বোর্ডে কালো দিয়ে লেখা কিছু নির্দেশ দেখি। এখন প্রত্যেকের মনেই এরম নির্দেশর কারন সম্পর্কে কৌতূহল থাকে। যদিও নির্দেশগুলো ট্রেনের চালক ও গার্ড (ট্রেন ম্যানেজার) এর উদ্দেশে দেওয়া থাকে। এখন দেখে নিন কোন নির্দেশের অর্থ কি?
W/L এইরকম নির্দেশের অর্থ হল চালক কে লম্বা হর্ন বাজাতে বলা হয় , সামনে লেভেল ক্রসিং থাকলে বা কোনো বাঁক থাকলে যাতে আশেপাশের মানুষ শুনতে পায় তার জন্য এরম নির্দেশ দেওয়া থাকে।
C/T আবার অনেক সময় এরম নির্দেশ থাকে এর অর্থ হল সামনে গতিবেগ নিয়ন্ত্রন করতে বলা হয় চালক কে। পাশাপাশি কত গতিতে চালাতে হবে সেই গতিসীমা নির্দেশ করা থাকে। যাতে কোনোরকম দুর্ঘটনা ছাড়াই ট্রেন যেতে পারে।
T/P OR T/G এই নির্দেশের অর্থ চালক কে পূর্বের গতিসীমায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি। চালক চাইলে গতি বাড়াতে পারেন। অর্থাৎ রেলের পরিভাষায় এটাকে বলে Termination of Caution । এটি দুরকম ভাবে থাকে T/P ও T/G । মানে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ক্ষেত্রে T/P । মালগাড়ির ক্ষেত্রে T/G ।
আমরা অনেক সময় দেখি ট্রেনের শেষ বগির পেছনে একটি X মার্ক থাকে হলুদ রঙের। এটির মানে হল এই ট্রেনটির শেষ বগি এটি , এর পরে কোনো বগি নেই। আবার দেখি ছোট লাল বোর্ডে সাদা দিয়ে লেখা LV কথাটা লেখা আছে এর মানে হল একই , অর্থাৎ এটি হল Last Vehicle । কেবিনম্যান যাতে বুঝতে পারেন যে ট্রেনের শেষ কামরা সেটি।