সারা দেশজুড়ে যখন ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস (Independence day 2023) পালন করা হচ্ছে, সেই সময় ঘটে গেল এক অপ্রীতিকর ঘটনা। স্বাধীনতা দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন মধ্যপ্রদেশের (MadhyaPradesh) স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বিধানসভার স্পিকার। এই জোড়া ঘটনা ভিন্ন সময়ে পৃথক জায়গায় ঘটেছে। সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের মউগঞ্জে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের সময় মঞ্চেই পড়ে যান বিধানসভার স্পিকার গিরিশ গৌতম। আবার রাইসেনের এক অনুষ্ঠানে অসুস্থ হয়ে পড়েন মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. প্রভুরাম চৌধুরী।
সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের মউগঞ্জে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হচ্ছিল। পতাকাল উত্তোলনের পর তিনি মঞ্চে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। আর সেসময় আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন বিধানসভার স্পিকার গিরিশ গৌতম। সেখানে উপস্থিত আধিকারিকরা তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি বর্তমানে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। অন্যদিকে রাইসেনে পতাকা উত্তোলনের পর প্যারেড শুরু হয়েছে। আর সেসময় মঞ্চে চেয়ারে বসেছিলেন স্বাস্থ্য়মন্ত্রী ড. প্রভুরাম চৌধুরী। কিন্তু তখনই হঠাৎ চেয়ার থেকে পড়ে যান। এরপর তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তবে তাঁদের অসুস্থ হওয়ার পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। কিন্তু জানা গিয়েছে, স্পিকার গিরিশ গৌতম স্থিতিশীল রয়েছেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা খারাপ কেন হয়ে যায়, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ৭৭ তম দেশের স্বাধীনতা দিবস (Independence Day 2023)। সারা দেশজুড়ে উদযাপন করা হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস। আপনারা তো এই দিনে সারা দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে দেখে থাকেন। তবে আপনারা কি জানেন, ভারতের জাতীয় পতাকা কারা তৈরি করে ও কোন কাপড়েরই বা তৈরি করা হয় এই পতাকা। জানা গিয়েছে, ভারতের জাতীয় পতাকা তৈরি করার লাইসেন্স দেশের একটি মাত্র সংস্থারই রয়েছে। আর সেই সংস্থাটিকে ভারত সরকারের বিআইএস (BIS) সার্টিফায়েড অর্থাৎ 'ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস'-এর তরফে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কোন সংস্থা তৈরি করে জাতীয় পতাকা?
সংস্থাটির নাম হল 'কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সমযুক্ত সংঘ'। ১৯৪৭ সালে তৈরি করা হয়েছিল এই সংস্থাটি। আর এই সংস্থারই ভারত সরকার স্বীকৃত জাতীয় পতাকা তৈরির একমাত্র অনুমতি রয়েছে। সরকারের তরফে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সংস্থাটি কর্নাটকের হুব্বালি জেলার বেঙ্গারিতে অবস্থিত। সূত্রের খবর, এই সংস্থার তৈরি পতাকাই লালকেল্লা, সংসদ ভবন, রাষ্ট্রপতি ভবন, প্রতিরক্ষা দফতর সহ প্রতিটি মন্ত্রকে উত্তোলন করা হয়। আরও জানা গিয়েছে, এই সংস্থায় মহিলা কর্মীদের সংখ্যাই বেশি। প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ মহিলারাই করে থাকেন।
সংস্থার পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, ২০২৩ সালের ১৫ অগাস্টের মধ্যে শুধুমাত্র জাতীয় পতাকা তৈরি করেই ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যবসা করার পরিকল্পনা নিয়েছে এই সংস্থা। জানা গিয়েছে, গত বছর স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সরকার 'হর ঘর তিরঙ্গা' প্রচারাভিযান ঘোষণা করার পর এটি টানা দ্বিতীয় বছর ধরে ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকারও বেশি উপার্জন করেছে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে 'হর ঘর তিরঙ্গা' কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পের কারণেই তাদের ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে।
কোন কাপড়ে তৈরি করা উচিত দেশের পতাকা?
জানা গিয়েছে, দেশের জাতীয় পতাকাটি হাতে কাটা তুলোর সুতো, সিল্ক বা খাদি দিয়ে তৈরি করা উচিত। পতাকার আকৃতি আয়তাকার হওয়া উচিত। এর দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের অনুপাত ৩:২ হওয়া উচিত।
আজ ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবস (Independence day 2023)। সারা দেশজুড়ে আজ ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস পালন করা হচ্ছে। ফলে এদিন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ লাল কেল্লায় পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। এরপর ঠিক সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ পতাকা উত্তোলন করলেন তিনি। পতাকা উত্তোলনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীকে লালকেল্লায় 'গার্ড অফ অনার'ও দেওয়া হয়। এরপর পতাকা উত্তোলনের পরই প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। তাঁর এই বক্তৃতায় উঠে এসেছে মণিপুর থেকে শুরু করে দুর্নীতি, তুষ্টিকরণ, পরিবারবাদের প্রসঙ্গ।
স্বাধীনতা দিবসের দিন লাল কেল্লায় দাঁড়িয়ে তিনি জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ভাষণে প্রথমেই উঠে এসেছে মণিপুরের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মণিপুর উত্তপ্ত। মা-বোনেদের সম্মান নষ্ট হয়েছে। তবে মণিপুরে শান্তি বজায় রাখতে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে প্রয়াস চালিয়েছে। ধীরে-ধীরে মণিপুর শান্ত হচ্ছে। এখন মণিপুরে শান্তি রয়েছে। গোটা দেশ মণিপুরের পাশে রয়েছে। এরপরই তিনি দেশের নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য বক্তৃতা দিয়েছেন। মহিলাদের আরও বেশী করে স্বাধীনতা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত উন্নত দেশে পরিণত হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এখানেই থেমে নেই, প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা দিবস উদযাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই তোপ দাগেন দুর্নীতি, পরিবারবাদ ও তুষ্টীকরণের বিরুদ্ধে। ভারতের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে পরিবারবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে বলে নাম না করে রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও ভারতের অর্থনীতিকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সেটাই লক্ষ্য বলে তিনি জানিয়েছেন।
১৪০ কোটি দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণ করে ২০৪৭ সালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় ভারতকে বিশ্বভারত করে তোলার বার্তা দিয়ে ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ শেষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বক্তব্যের শেষে 'ভারতমাতা কি জয়', 'বন্দে ভারত' বলে শ্লোগানও দেন তিনি।