লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের আইটি সেলে নজর মুখ্যমন্ত্রীর। সূত্রের খবর, বিজেপির আইটি সেলের বিরুদ্ধে লড়াই পোক্ত করতে রাজ্য জুড়ে ৩৭ জনের আইটি সেলের দল গঠন করল তৃণমূল। এবং ঐ আইটি সেলের রাজ্য সভাপতি হলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। লোকসভা ভোটের আবহে নিঃসন্দেহে এই কমিটি গঠন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
বছরখানেক আগে দেবাংশুকে আইটি সোশ্যাল মিডিয়া সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দলের তরফে। তবে সে দায়িত্ব তিনি এককভাবে পালন করছিলেন। এবার ৩৭ জনের কমিটি তৈরি হল। সেই কমিটির সভাপতি হলেন দেবাংশু। এছাড়া চারজন সহ সভাপতি আছেন। আছেন একাধিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদকও। রয়েছেন এক্সিকিউটিভ সদস্যও।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে আইটি ও সোশ্যাল মিডিয়া সেলকে ঢেলে সাজিয়ে তৃণমূল বুঝিয়ে দিচ্ছে, শুধু রাজনীতির ময়দানেই লড়াই নয়, জোর টক্কর চলবে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও। বিজেপির আইটি সেল অত্যন্ত সক্রিয়। অমিত মালব্য়কে সামনে রেখে বিভিন্ন ইস্যুতে তারা যেভাবে কখনও প্রচারক, কখনও বিরোধিতার সুর চড়ায় তার সঙ্গে পাল্লা দিতে সেভাবে কোনও রাজনৈতিক দলকেই দেখা যায় না।
প্রসঙ্গত, এনডিএ বিরোধী জোট ইন্ডিয়া (I.N.D.I.A) বিজেপি বিরোধিতায় বিশেষ জোর দিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর। এর জন্য বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া কমিটিও তৈরি করেছে তারা। বিভিন্ন রকমের প্রচারেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে এই কমিটিকে। এবার তৃণমূলও আলাদা কমিটি গড়ল আইটি সেলের জন্য।
বিশেষ সংবাদদাতা: আশিবার রহমান রবিবার তাদের টিসিসিএফ-এর বাৎসরিক অনুষ্ঠান পালন করলো। মজার বিষয় কে এই আশিবার অথবা টিসিসিএফ? এরা কারা? অনুষ্ঠানটি তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানারে করা হয়েছে অথচ তৃণমূল নেতৃত্ব হয়তো এই গ্রুপ বা আশিবারকে চেনেই না, তবে এরা কারা? যেকোনও রাজনৈতিক দলের নিজস্ব আইটি বা সোশাল মিডিয়া সেল থাকে। এ ব্যাপারে ভারতে পয়লা নম্বরে রয়েছে বিজেপি এবং এরপরেই রয়েছে সিপিএম। বিজেপির আইটি সেল যথেষ্ট শক্তিশালী। সম্পূর্ণ টিমটি চালায় তাদের নিজস্ব আইটি সেল। ভালো-মন্দ সব বিষয় তারা ফেসবুকে পোস্ট করে। দ্রুত ভাইরাল হয় সেসব পোস্ট।
প্রধানমন্ত্রী নিজেও নিয়মিত সোশ্যাল নেটওয়ার্কে থাকেন। ভোটের সময়ে এই আইটি সেলের জোরালো প্রচারে ভর করে বিশেষ সুবিধা পায় গেরুয়া শিবির। এরপরেই সিপিএম, তাদেরও নিজস্ব টিম রয়েছে। মাঝেমধ্যে মজাদার পোস্ট কিংবা কার্টুন যেকোনও দর্শককে আকর্ষিত করে। তৃণমূলের অন্তত লক্ষাধিক ছেলেমেয়েরা দলের হয়ে পোস্ট করলেও কোথাও সংগঠনের অভাবে সেগুলি জনপ্রিয় হয় খুব কম।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই আইটি সেল নিয়ে নিয়মিত উৎসাহ প্রদান করলেও এখনও পর্যন্ত সংগঠিত হতে পারেনি এই সেল। কারণ অবশ্যই এই আইটি সেলা ছাড়াও বেসরকারি ভাবে অজস্র গ্রুপ আছে। অন্তত কয়েকশো অথচ তাদের একছাদের তলায় আনা যায়নি। এছাড়া ওই একদল নানা পোস্ট করে নিজেদের উদ্যোগে, নিজেদের পয়সায়।
এতগুলো গ্রুপের খবর দলের কাছেই কোনও বার্তা নেই। অথচ এই গ্রুপগুলির সদস্যদের অনেকেই ভোটের সময়ে পোস্টার মারে, ভোটার স্লিপ বিলি করে, বুথে বসে, বিনিময়ে কিছুই চায় না তারা। সরকারি চাকরির বিতর্কে এদের কারও নাম আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।
এরা পাগলের মতো দলকে ভালোবেসে কাজ করে এবং সোশ্যাল নেটে পোস্ট দেয়, এরকমই আলোচিত গ্রুপটি। নিজেরা পয়সা চাঁদা তুলে নানা অনুষ্ঠান করে। এদের অধিকাংশই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অথবা বেকার। রবিবার এরকমই এই অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়েছে এক সঙ্গে চলতে হবে, লড়তে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে খাটতে হবে ইত্যাদি, উপস্থিতি চোখে পড়ার মতোন। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, বিধায়ক ড.রানা চ্যাটার্জী এবং অবশ্যই তৃণমূলের মুখপাত্র এবং আইটি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেবাংশু ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখলেন। কিন্তু এক ছাতার তলায় আসার বিষয়টি আলোচিত হলেও, তা কবে বা কীভাবে পর্দার আড়ালেই রইলো।
বিজেপি (BJP) আইটি সেলের জেলা নেত্রীকে হেনস্থা এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ (Harassment)। ঘটনায় চাঞ্চল্য দুর্গাপুরে (Durgapur)। অভিযোগের তির তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধেই। শহর স্তব্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি বিজেপি নেতৃত্বের। ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে পাল্টা দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। সম্প্রতি, সুচিস্মিতা পাণ্ডে কর্মকার নামে বিজেপি যুব মোর্চার আইটি সেলের ওই মহিলা নেত্রী স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাস্থল দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার অন্তর্গত বিধাননগর ফাঁড়ির অন্তর্গত সপ্তর্ষি পার্ক এলাকা। ঘটনায় রীতিমতো জয় বাংলা স্লোগান তুলে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুর ১২টা, বিজেপি নেত্রী সুচিস্মিতা পাণ্ডে কর্মকারের একটি লুব্রিকেন্টের দোকান আছে সপ্তর্ষি পার্কে। অভিযোগ, ওই সময় বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর দোকানে আসে এবং জয় বাংলা স্লোগান দিতে দিতে, দাবি জানায় এক কর্মীর বকেয়া বেতন মিটিয়ে দিতে হবে।
এই নিয়ে দু-এক কথা হতে না হতে তাঁর গায়ে হাত দেওয়া হয়। ওড়না ছিঁড়ে দেওয়া হয়, সঙ্গে আজ থেকে দোকান বন্ধ রাখার নিদান দেওয়া হয়। বিজেপি জেলা নেত্রী জানান, ২০২০ সালে তাঁর দোকানের এক কর্মচারী নিজে থেকেই কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর সমস্ত পাওনা গন্ডা মিটিয়েও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যে মাসে কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন সেই কর্মী, সেই মাসের চোদ্দ দিনের বেতন বাকি ছিল। অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। কিন্তু তিনি আর যোগাযোগ করেননি। অথচ দোকানের বাকি কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ ছিল। হঠাৎ ২০২০ র বকেয়া সামান্য বেতন চাইতে তিনি দলবল নিয়ে চলে আসবে এটাই অবাক করা ঘটনা।
বিজেপি যুব মোর্চার আইটিসেলের এই মহিলা নেত্রীর অভিযোগ, তিনি বিজেপি করেন, তাঁর গোটা পরিবার বিজেপিকে সমর্থন করেন। তাই এতদিন পর তাঁর ওপর রাগ মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় বিধাননগর ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়েরও তিনি করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে গোটা ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত গোটা পরিবার। পরিবারের আশঙ্কা যদি দোকানে ঢুকে দিনের আলোতে এরা জয় বাংলা স্লোগান তুলে তাঁকে হেনস্থা করতে পারে, তাহলে যখন তখন যা কিছু করতে পারবে এই দুষ্কৃতীরা।
এদিকে, অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে পাল্টা দাবি করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সব মিলিয়ে এক মহিলা বিজেপি জেলা নেত্রীকে এইভাবে হেনস্থার ঘটনায় রীতিমতো দুর্গাপুরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিস দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।