আবারও খবরের শিরোনামে কলকাতা বিমানবন্দর। এবার সিআইএসএফ জওয়ানের সার্ভিস রাইফেল থেকে চলল গুলি। বিমানবন্দরের ৫ নম্বর গেটের কাছে ওয়াচ টাওয়ারে ঘটেছে ঘটনাটি। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই নিজের সার্ভিস রাইফেল থেকে গুলি চালিয়েছেন কর্তব্যরত সিআইএসএফ জওয়ান। পরবর্তীতে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ওই জওয়ানকে। তবে শেষরক্ষা হল না। মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ঘটনাস্থলে যায় সিআইএসএফের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও বিমানবন্দর থানার পুলিস। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার জেরে বিমানবন্দরজুড়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হঠাৎই বিমানবন্দর ৫ নম্বর গেটে গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। তাতেই কর্তব্যরত অন্যান্য সিআইএসএফ থেকে শুরু করে সকলে সতর্ক হয়ে যান। তারপর জানা যায় ৫ নম্বর গেটের যে টাওয়ার, সেখান থেকেই গুলির আওয়াজ এসেছে। এরপর অন্যান্য কর্মীরা টাওয়ারের উপর ওঠেন। ততক্ষণে লুটিয়ে পড়েছেন ওই সিআইএসএফ কর্মী। নিজের এসএলআর রাইফেল থেকে নিজেকেই গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন সিআইএসএফ জওয়ান।
পুলিস সূত্রে খবর, কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। ২০২২ থেকে সিআইএসএফ-এ কর্মরত ছিলেন ওই জওয়ান।
সন্দেশখালি ইস্যুতে যেন শাসকের চক্ষুশূল বিরোধীরা। দীপাঞ্চলের মানুষের মুখোমুখি হতে গিয়ে এবার বাধা পেলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। কলকাতার সায়েন্স সিটির কাছে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয় আইএসএফ বিধায়ককে। পুলিসের এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ বিধায়ক।
সন্দেশখালির পাশাপাশি বাসন্তী যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ঠিক কোথায় যেতে বাধা? পুলিসকে প্রশ্ন নওশাদের। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে দাবি করা হয় পুলিসের তরফে। এরপরেই পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়ান আইএসএফ বিধায়ক। ১৪৪ ধারা দেখিয়ে আটকানো হয় নওশাদকে। প্রশ্ন, সায়েন্স সিটি থেকে সন্দেশখালির দূরত্ব ৬২ কিলোমিটার। সেখানে কীভাবে ১৪৪ ধারা জারি হল?
দীর্ঘ বাকবিতণ্ডার পর গ্রেফতার করা হয় নওশাদ সিদ্দিকিকে। গ্রেফতার করে প্রগতি ময়দান থানার পুলিস। যদিও গ্রেফতারির কারণ জানতে চাইলে, কোনও উত্তর দেয়নি পুলিস। তবে কি সন্দেশখালিতে শুধুমাত্র শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদেরই অবাধ বিচরণ?
বিজেপি নেতা বিকাশ সিং ও সন্দেশখালির প্রাক্তন বাম বিধায়ক নিরাপদ সরদারের পর শাসকের কোপে এবার আইএসএফ নেত্রী আয়েশা বিবি। শনিবার রাতে হঠাৎই মিনাখার আইএসএফ নেত্রী আয়েশা বিবিকে গ্রেফতার করে সন্দেশখালি থানার পুলিস। তাঁর বিরুদ্ধে সন্দেশখালির ঘটনায় গ্রামবাসীদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে পুলিস। আইএসএফ নেত্রীকে থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফুঁসছে আইএসএফ শিবির।
দিনের পর দিন অত্যাচারিত হয়েছে সন্দেশখালি মা-বোনেরা। সেই অভিযোগ সামনে আসতেই ভয় পেয়েছে রাজ্য সরকার। সেই কারণেই এই পদক্ষেপ। বিরোধী কণ্ঠরোধে আর কত কঠিন হবে রাজ্য পুলিস? জবাব চায় বাংলার মানুষ। এমনটাই দাবি আইএসএফের।
প্রসঙ্গত, এখনও উত্তেজনা কমেনি সন্দেশখালিতে। প্রতিদিনই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে একাধিক এলাক। বেড়েছে পুলিসি নজরদারি। এলাকায় নিজে ঘুরছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। গত দু’দিনে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেড়মজুর। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিও তৈরি হয়। কিন্তু, এখনও অধারা সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহান।
আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতারের পরদিনই রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড়। একদিকে যেমন উদ্ধার হয়েছে তাজা বোমা, অন্যদিকে দলীয় পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে আইএসএফ এবং তৃণমূল কর্মীরা বচসায় জড়িয়ে পড়েন। আর তা রীতিমতো সংঘর্ষে পৌঁছয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় উওর কাশীপুর থানার পুলিস। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিসকে লাঠিচার্জ করতে হয় বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। শুক্রবার সকালে তৃণমূল ও আইএসএফ সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় ভাঙরের কোচপুকুর এলাকা। অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ফেস্টুন ব্যানার লাগাচ্ছিলেন এলাকায়। আর তা কেন্দ্র করে আইএসএফ কর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। পরবর্তীতে বচসা পৌঁছয় হাতাহাতিতে। এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের পক্ষ থেকে উত্তর কাশীপুর থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, কোচপুকুরে সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের জিরানগাছা প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে এঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় রেফার করে দেয় চিকিৎসকেরা।
ফাঁকা গ্যালারি, ফাঁকা চেয়ার, হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ! আইএসএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের দৃশ্যটা এবারে এমনটাই দেখা গিয়েছে। রবিবার নেতাজি ইন্ডোরে গালিচা বিছিয়ে প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা আইএসএফ-এর। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে হাজার জনের বেশি জমায়েত না করেই এই সভা হয়। এমনকি কর্মী-সমর্থকদের জন্য বসারও কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে খবর।
আইএসএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা নিয়ে সরগরম হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতি। কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে চেয়েছিল আইএসএফ নেতৃত্ব। তবে তাতে বাদ সাধে রাজ্য সরকার। বিষয়টির জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভার অনুমতি দিলে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। আর সেখানেই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করার অনুমতি খারিজ হয়ে যায় আইএসএফ-এর। যে কোনও ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সভা করার নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মতো রবিবার নেতাজি ইন্ডোরে প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা করে আইএসএফ। আইএসএফ প্রধান নওশাদ সিদ্দিকির দাবি, এক হাজারের থেকে কম লোক নিয়ে সভা হয়েছে।
বাংলার শাসকদলের তরফে বারংবার দাবি করা হয় যে, রাজ্যে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে তৃণমূল ছাড়া অন্য কেউ সভা করতে গেলে কেন বাধার সম্মুখীন হতে হয়? সভার অনুমতির জন্য কেন বারবার আদালতে ছুটতে হয় বিরোধীদের? এটাই কি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশের নমুনা?
আগামী ২১ জানুয়ারি আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। আর সেই উপলক্ষে ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে চায় নওশাদ সিদ্দিকির দল। সভার জন্য হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিসের কাছ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু মেলেনি পুলিসের অনুমতি। তাই এবার নওশাদের দল কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হল। মঙ্গলবার সভার অনুমতি চেয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার শুনানির সম্ভাবনা।
সূত্রের খবর, পুলিসের তরফে কারণ হিসেবে লিখিতভাবে জানানো হয়, গত বছর রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে আইএসএফের সভায় বিস্তর অশান্তি হয়েছিল। ধরপাকড়ও হয়। এছাড়া শহরের প্ন্যতম ব্যস্ত এলাকা হওয়ায়, সভার কারণে যানজট তৈরি হতে পারে। সাধারণ মানুষকে অসুবিধের মধ্যে পড়তে হতে পারে। তা মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা থেকেই পুলিস আইএসএফের সভার অনুমতি দেয়নি।
বিরোধী শিবিরের সভা-অনুষ্ঠানে শাসকদলের বাধা এই রাজ্যে নতুন কিছু নয়। এবারও হয়নি তার অন্যথা। হলদিয়ায় বিপ্লবীর সতীশ সামন্তের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভাতেও বাধা শাসকদলের কর্মী সদস্যের।সভায় থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পুলিস সেই সভার অনুমতি দিয়েছে। আবার ওই সভায় ঢোকার মূল ফটকের বাইরে তৃণমূলকে ধরনা করারও অনুমতি দিয়েছিল পুলিস। এমনকি বিজেপির ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন ছিঁড়ে দিয়েছে বলেও তাদের বিরুদ্ধে উঠেছিল অভিযোগ।সভাকে কেন্দ্র করে তৈরি জটিলতা সম্পর্কিত সেই মামলায় শুক্রবার বিরোধী দলনেতাকে সভা করার অনুমতি দিল উচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশ মাফিক সভাস্থলে মোতায়েন থাকবে পুলিস। বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকবে সিআইএসএফ। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত উপস্থিত না থাকায় বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসেই হল এই মামলার শুনানি।
মূলত হলদিয়া হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে আয়োজিত এই সভার আগেই অনুমতি দিয়েছিল পুলিস। হলদিয়া বন্দর এলাকায় রয়েছে এই সভাস্থল। শহীদ স্মরণে আয়োজিত সভা প্রতিবছরই হয়। এবছরও অনুষ্ঠিত হবে। মামলার শুনানি চলাকালীন এমনটাই জানান, আবেদনকারী আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার। অন্যদিকে রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, সভায় যেমন পুলিসি অনুমতি আছে ঠিক তেমনই অনুমতি আছে তৃণমূলের ধরনা কর্মসূচিতেও। তবে পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে নিরাপত্তা দেবে পুলিস। বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তায় থাকবে সিআইএসএফ।
ধরণা, সভা উভয়ই মানুষেরর গণতান্ত্রিক অধিকার। সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত।তবে পুলিসের ভূমিকায় খুশি বিচারপতি মান্থা। এতদিনে পুলিস বিরোধীদেরও সাহায্য করছে বলেও মন্তব্য বিচারপতির। আদালতের নির্দেশে হলদিয়া বন্দর এলাকায় বিজেপির এই সভায় শান্তি বজায় থাকে কিনা এখন সেটাই দেখার।
ভাঙড়ে যেতে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। নিউটাউনের হাতিশালার কাছে নওশাদের পথ আটকায় কলকাতা পুলিস। পুলিসের দাবি, ১৪৪ ধারা থাকায় ভাঙড়ে যেতে পারবেন না নওশাদ। অন্যদিকে, নওশাদের দাবি, তিনি ভাঙড়ের বিধায়ক, তাহলে কেন তাঁকে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে বেশকিছুক্ষণ পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা চলে নওশাদের। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি গোটা ভাঙড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে তল্লাশি চালানোর দাবি জানান।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নওশাদ বলেন, "তৃণমূলের নেতারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ আমি বিধায়ক, আর আমায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। "আমি শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছি। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পুরো ভাঙড়ে তল্লাশি চালানো হোক।"
ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা-র দাবি, কেউই ঢুকতে পারছে ভাঙড়ে। সেখানে নওশাদ গিয়ে উস্কানি দিতে চাইছেন। এমনই অভিযোগ তুলেছেন শওকত।
পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড়। বোমা-গুলি, রাজনৈতিক সংঘর্ষে বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারের পর থেকে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী আইএসএফ (ISF) প্রার্থীর স্বামীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বুধবার, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা বসিরহাট (Basirhat) মহকুমার বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের পিফা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের ১২৯ নম্বর বুথে আইএসএফ প্রার্থীর জয়ের কারণে তৃণমূল ক্ষোভে বা আক্রোশে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাত তিনটে নাগাদ একদল দুষ্কৃতী রাতের অন্ধকারে আইএসএফের জয়ী প্রার্থী আরজিনা বিবির বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্বামী জামাত আলী গাজীকে বেধড়ক মারধর করে। অভিযোগ, এই বুথে আইএসএফ প্রার্থী জিতেছে, যার কারণে পরিকল্পনা করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এখানে এসে মারধর করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন জামাত আলী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
যদিও এই পুরো ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা সুরেশ মণ্ডল বলেছেন, এটা আইএসএফ দলীয় কোন্দল। এর সঙ্গে তৃণমূল কোনও রকমভাবেই জড়িত নয়। এই পঞ্চায়েতের ২৬ টা আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৭টা আসন জিতেছে। কেনই বা আমরা গন্ডগোল করব! পঞ্চায়েত আমাদের দখলে। পরিকল্পনা করে বিরোধীরা আমাদের দলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। এই ধরনের ঘটনা নিজেরাই ঘটিয়ে আমাদেরকে দোষারোপ করছে।
ভাঙড়ে (Bhangar) পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Election) কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংঘর্ষে (Political Violence) মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয়েছে আইএসএফ কর্মী রেজাউল গাজির। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন নওশাদ।
মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ কাঁঠালিয়া থেকে বিজয় মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আইএসএফ কর্মীরা। ভোগালিয়া গ্রাম থেকে গিয়েছিলেন আএইএসএফ সমর্থক জাইরুল গাজি, তাঁর ভাই রেজাউল এবং আরও কয়েক জন। জাইরুল জানান, আচমকাই মিছিলের উপর গোলাগুলি চালাতে শুরু করে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা৷ আর্তনাদ শুনে তিনি দেখেন মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন চারমাসের কন্যাসন্তানের বাবা রেজাউল। বেশ কয়েকক্ষণ দেহ নিয়ে আমবাগানে লুকিয়ে ছিলেন তাঁরা। কোনও অ্যাম্বুলেন্স আসেনি৷ অবশেষে একটি বাইকে করে ভাইয়ের দেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি।
এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন নওশাদ।
ভোটে কারচুপির অভিযোগে মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া এলাকা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক আইএসএফ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মারা গিয়েছেন আরও এক যুবক। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন পুলিশের এক পদস্থ কর্তা এবং এক পুলিশকর্মী। সোমবার সকাল থেকেই এলাকায় জোরদার পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। চলছে ধরপাকড়।
মঙ্গলবার ভাঙড়-২ ব্লকের কাঁঠালিয়ার গণনাকেন্দ্রে চলছিল জেলা পরিষদের ভোটগণনা। আইএসএফ নেত্রী রেশমা খাতুন অভিযোগ করেন, তাঁদের জেলা পরিষদের প্রার্থী জাহানারা খাতুন প্রথমে পাঁচ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বিডিও জানান, জাহানারা ৩৬০ ভোটে হেরে গিয়েছেন। আইএসএফ নেতৃত্বের দাবি, প্রশাসনের সঙ্গে ‘সেটিং’ করেছে তৃণমূল। তার পরেই ভোটের এই ফল ঘোষণা হয়েছে। তাঁরা পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলেন। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়। পুলিশের অভিযোগ, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকেরা তাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। এলাকায় একের পর এক বিস্ফোরণ হয়। বোমা এবং গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। কিন্তু অবস্থা বদলায়নি। আইএসএফের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশ গুলি চালিয়েছে। তাতে তাঁদের বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে হাসান আলি নামে বছর ছাব্বিশের এক কর্মীর। কলাডাঙার বাসিন্দা হাসানকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ হাসানকে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আক্রমণ করেন। তাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ওই যুবক।
রাজু মোল্লা নামে আরও এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ৩৫ বছরের রাজুর দেহ উদ্ধার হয়েছে ভাঙড়-২ ব্লক এলাকায়। তাঁর পরিবারের দাবি, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। মঙ্গলবার রাতে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ঘটকপুকুরে দিদির বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় কাঁঠালিয়া এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন রাজু। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্য দিকে, পুলিশের এক পদস্থ কর্তার হাতে গুলি লেগেছে। এক পুলিশকর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার দু’জনেরই অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
মঙ্গলবার রাতে গুলি এবং বোমার লড়াইয়ের মধ্যে সারা রাত গণনাকেন্দ্রের একটি ঘরের মধ্যেই আটকে ছিলেন এক ভোটকর্মী এবং পুলিশকর্মীরা। বুধবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী এসে তাঁদের উদ্ধার করে। সকাল সকাল ঘটনাস্থলে যান এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত-সহ পুলিশের পদস্থ কর্তারা। শুরু হয় ধরপাকড়। আপাতত থমথমে পুরো এলাকা। নতুন করে অশান্তির খবর নেই। তবে কাঁঠালিয়া হাই স্কুল চত্বর থেকে ভাঙড়ের কাশীপুর রোড জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ইটের টুকরো, বোমার সুতলি ইত্যাদি। পুলিশের একের পর এক গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।
তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে সিপিআইএম (CPIM) ও আইএসএফের (ISF) সংঘর্ষ, বোমাবাজি। এই বোমাবাজির ফলে ৫ জন তৃণমূল কর্মী আহত (Injured) হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা (Deganga) থানার অন্তর্গত আমুলিয়া পঞ্চায়েতের বোড়ামাড়ি এলাকায়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দেগঙ্গা থানার পুলিস (Police)। পুলিস আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু তাজা বোমাও উদ্ধার করে পুলিস।
তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ, শুক্রবার সকালে মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের উপর হামলা চালায় সিপিআইএম ও আইএসএফ কর্মীরা। তারপরেই শুরু হয় বেধড়ক মারধর এবং বোমাবাজি। এই ঘটনায় আহতও হয়েছেন ৫ জন তৃণমূল কর্মী, এমনটাই অভিযোগ করছে শাসক দলের কর্মীরা।
সুপারি কিলার দিয়ে তাঁকে খুনের চক্রান্তের (Conspiracy) অভিযোগ তুললেন আইএসএফ (ISF) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি (Nawshad Siddique)। নওশাদ সিদ্দিকী জানান, ভাঙড়ের তৃণমূল নেতারা ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে আমাকে খুন করার চক্রান্ত করছে। রবিবার বিকালে ভাঙড়ের একটি জনসভা শেষ করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন তিনি। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, তুষার ঘোষ সহ একাধিক বাম ও আইএসএফ নেতৃত্ব।
খুনের চক্রান্তের প্রসঙ্গে নওশাদের বক্তব্য, তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে পেরে উঠছে না তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেকারণে তাঁকে খুনের চক্রান্ত করছে শাসক দলের নেতারা। নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস আমার সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবে কোনওভাবেই পেরে উঠছে না। তাই অনৈতিক পথ অবলম্বন করেছে। সুপারি কিলার দিয়ে আমাকে খুনের চেষ্টা চলছে। তবে দিনের শেষে গণতন্ত্রের জয় হবে। সংবিধানের জয় হবে।'
আইএসএফ (ISF) প্রার্থীকে (Candidate) প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) বিরুদ্ধে। ঘটনাটি হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে। পাশাপাশি হামলা চালানোরও অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
রবিবার সকালে জগৎবল্লভপুরে নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়েছিলেন আইএসএফ প্রার্থী দীননাথ মুখোপাধ্যায়। টোটোতে তিনি ইচ্ছানগরী এলাকায় প্রচার করছিলেন। অভিযোগ সেসময় প্রচারে বাধা দেয় শাসক দল।
আইএসএফের এর তরফে জানানো হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচনী প্রচার করছিল। কিন্তু হঠাৎ তৃণমূল আশ্রিত কয়েকজন দুষ্কৃতী তাদের উপর হামলা চালায়। দীননাথ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাদের সঙ্গে থাকা মাইক ভেঙে দেওয়া হয়। সঙ্গে পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে ওই এলাকায়।
আইএসএফের এর তরফে আরও জানানো হয়েছে, তাদের কাছে উপযুক্ত অনুপত্র ছিল। কিন্তু তারপরেও হামলা চালানো হয়েছে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুন্ডু জানিয়েছেন, সিপিএম এবং বিজেপি নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করেছে। এর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত নয়।
একদিকে যখন ভাঙড় (Bhangar), দেগঙ্গা (Deganga) সহ গোটা রাজ্যের বহু জায়গায় তৃণমূলের (Tmc) বিরুদ্ধে হামলা, অশান্তির অভিযোগ আনছে আইএসএফ (ISF), তখন আইএসএফ ও তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা (Chandrakona), রবিবার এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, দলীয় পতাকা লাগানো নিয়ে আইএসএফ ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়, তার জেরেই পরিস্থিতি সংঘর্ষের আকার নেয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিস বাহিনী। পুলিসের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিস সূত্রে খবর, এই সংঘর্ষের জেরে দুপক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত। তাঁদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া তৃণমূল সূত্রে খবর, এ ঘটনায় তিনজন তৃণমূল কর্মী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও এ ঘটনায় এখনও অবধি পাওয়া খবর অনুযায়ী কোনও পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নি। এই সংঘর্ষের দায় নিতে চায় নি কোনও পক্ষই। এ ঘটনায় এখনও অবধি কাউকে গ্রেফতার না করলেও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্তে নেমেছে পুলিস।