
উদ্যোগপতি রতন টাটাকে ভারত রত্ন (Bharat Ratna to Tata) দেওয়ার আবেদন নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট (Delhi High Court)। সরকারকে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করেছে হাইকোর্ট। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিপিন সঙ্ঘীর বেঞ্চ বলেছে, 'একজন ব্যক্তিকে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দেওয়ার নির্দেশ কোর্টের এক্তিয়ারভুক্ত নয়। সরকারকে তারা কোনওভাবেই এই নির্দেশ পাঠাতে পারে না।'
শুধু তাই নয়, এই মামলায় করা আবেদন নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে আদালত। বিচারপতি নবীন চাওলা বলেন, 'এটা কী ধরনের আবেদন? সরকারকে কেউ এভাবে নির্দেশ দিতে পারে?'
অন্তত অনুরোধ জানাক আদালত। দিল্লি হাইকোর্টের কাছে পাল্টা সওয়াল করেন মামলাকারীর আইনজীবী। সেই সওয়ালের পাল্টা আদালতের মন্তব্য, 'আপনি গিয়ে অনুরোধ করুন। কোর্ট কেন হস্তক্ষেপ করবে?'
এরপরেই আদালত সেই মামলা খারিজ করলে, আবেদনকারীর তরফে প্রত্যাহার করা হয় মামলা। হাইকোর্টে দায়ের করা আবেদনে মামলাকারী রাকেশ দাবি করেছেন, 'দেশকে সর্বতোভাবে সেবা করছেন রতন টাটা। পাশাপাশি এই উদ্যোগপতির জীবনযাপন ছিমছাম। তাই তিনি ভারত রত্ন পাওয়ার যোগ্য।'
পাশাপাশি আবেদনে উল্লেখ, 'রতন টাটার জীবনযাত্রা দেশ তথা বিশ্বের একাধিক উঠতি উদ্যোগপতির কাছে উদাহরণ। উনি একজন নেতা এবং সফল উদ্যোগপতি।'
মাত্রাতিরিক্ত বিল, চিকিত্সায় গাফিলতি সহ নানাবিধ অভিযোগ ওঠে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েন। চিকিত্সার খরচ মেটাতে গিয়ে ঘটিবাটি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার ঘটনাও কম নয়।
এসব থেকে মানুষকে কিছুটা হলেও সুরাহা দিতে রাজ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন। অস্বাভাবিক বিল এবং চিকিত্সার গাফিলতির বহু অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে। কমিশন বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের খরচ বেঁধে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন।
এবার কমিশনের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে মামলা ঠুকে দিল কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল। স্বাস্থ্য কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে উঠে গেল প্রশ্ন। রাজ্যের চারটি নামী বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের করেছে হাইকোর্টে। বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছে। রাজ্যের এই নামী হাসপাতালগুলি হল আমরি হাসপাতাল, মেডিকা, নেওটিয়া এবং অ্যাপোলো।
গতকাল কলকাতা হাইকোর্টে অ্যাপোলো হাসপাতালের অভিযোগ নিয়ে মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে যোগ দেয় বাকি তিনটি হাসপাতাল। অ্যাপোলোর তরফে শুনানিতে সওয়াল করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম এবং অরিন্দম ব্যানার্জি।
স্কুলে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় বারবার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এবং এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা এস পি সিনহার নাম আসায় আজ রাত ১২ টার মধ্যে তাঁকে জেরা শুরুর নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। স্কুলে লাগাতার বেআইনি নিয়োগ নিয়ে যে সব মামলা আসছে আদালতের কাছে, সেখানে বহু মামলায় এসপি সিনহার নির্দেশ কাজ করেছে বলে তথ্য রয়েছে আদালতের কাছে। তাই আজই তাঁকে জেরা শুরুর নির্দেশ। কাল ফের এই মামলার শুনানি। সেই শুনানির সময়ই জেরা সংক্রান্ত রিপোর্ট সিবিআইকে জমা দিতে হবে হাইকোর্টে।
এদিন বিচারপতি জানিয়ে দেন, এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি বা বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় তিনি তদন্তভার সিবিআইকেই দেবেন।
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর রায়ের উপর স্থদিতাদেশ দেওয়ায় বুধবার কার্যত ব্যাপক ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপের সুপারিশ জানিয়ে প্রশাসনিক রায় জারি করেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারপতি কাজ করতে পারবেন কিনা, তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিন দেশের প্রধান বিচারপতি এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। দুই প্রধান বিচারপতির কাছে এই রায়ের কপি পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশও দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
মাটিয়া ও ইংরেজবাজার ধর্ষণকাণ্ডে রাজ্যের কাছে কেস ডায়েরি ও তদন্ত-রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি অত্যাচারিতার মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দিতে হবে আদালতে। একজন অভিজ্ঞ সিনিয়র ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে তৈরি করতে হবে মেডিক্যাল বোর্ড। পরবর্তী শুনানিতে রিপোর্ট জমা করতে হবে। ৮ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি। বাবা-মা চাইলে দেখা করতে যেতে পারবে বলেও নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, এইসব ঘটনা নির্ভয়ার ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে। শুক্রবার সকালের ঘটনা। একটা গোটা দিন এক কিশোরীকে খুঁজে পাওয়া গেল না। পরের দিন মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেল তাকে। স্থানীয় হাসপাতাল হয়ে আরজিকর-এ ভর্তি করা হয়েছে মেয়েটিকে। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্ষত, বিশেষ করে গোপনাঙ্গে ক্ষত বেশি। এমতাবস্থায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেন তিনি।
বিজেপির পক্ষের আবেদনকারী আইনজীবী বলেন, আমরা আরজিকর হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিস ওখানে আমাদের ঢুকতে দেয়নি। পরিবারের আইনি সাহায্যে বাধা তৈরি হচ্ছে। পুলিস ওই পরিবারের সঙ্গে কারোর যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না। কল্যাণ চৌবে একবার তার পরিবারের লোকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। তখন জানা গিয়েছিল, কেউ তাঁদের কোনও কাগজে টিপছাপ নিয়েছিল। কিন্তু পরে আর তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এটা তো গেল মাটিয়ার ঘটনা। ইংরেজবাজারের ঘটনা আরও সাংঘাতিক। পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ গ্রামে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের দিকে সূর্য ডোবার পর কোনও আলো থাকে না। ফলে অপরাধ বাড়ছে ওইসব এলাকায়। এটাও সেই কারণেই ঘটানো সম্ভব হয়ছে। সিট গঠন করে এই ঘটনার তদন্ত করতে দেওয়া হোক।
মাটিয়া ও ইংরেজবাজারের ঘটনা জঘন্যতম অপরাধ, স্বীকার করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, দুটোই সিরিয়াস অপরাধ। আমরা তদন্ত করছি। নির্যাতিতদের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সাহায্য করেছে সরকার। মেডিক্যাল বোর্ড গঠন হয়েছে। তারা ভালো আছে। কিন্তু কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয় না। কারণ মেয়েটির ভবিষ্যৎ রয়েছে।
এমন ঘটনা হাইকোর্টে এর আগে ঘটেছে কি না, তা কেউ মনে করতে পারছেন না। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর রায়ের উপর স্থদিতাদেশ দেওয়ায় কার্যত ব্যাপক ক্ষোভপ্রকাশ করলেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপের সুপারিশ জানিয়ে প্রশাসনিক রায় জারি করলেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারপতি কাজ করতে পারবেন কিনা, তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিন দেশের প্রধান বিচারপতি এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। দুই প্রধান বিচারপতির কাছে এই রায়ের কপি পাঠানোর জন্য আজই রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি এবং নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় তাঁর নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। তাতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ মনে করছে, দুর্নীতিগ্রস্তদের সুযোগ দিতেই এমন পদক্ষেপ করছে ডিভিশন বেঞ্চ। সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি খুঁজে বার করতে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে একক বেঞ্চের হাত। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারের নামে দ্বিচারিতা করছে।
বিচারপতি বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে আমার চেম্বারে একজন যান এসএসসির উপদেষ্টা মামলার বিষয়ে। তাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে আমার এই প্রশাসনিক রায়। ভারতের প্রধান বিচারপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি তদন্তের খাতিরে যদি আমাকে ডেকে আমার চেম্বারে আসা ব্যক্তির নাম জানতে চান, আমি সেই নাম বলতেও রাজি আছি। কিন্তু এই প্রশাসনিক রায়ে আমি ওই নাম উল্লেখ করছি না।
ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের মামলায় আগামী শুক্রবারের মধ্যে মামলার কেস ডায়েরি তলব করল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রাজ্য পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্ট আদলতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপর আবেদনকারী তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুকে নিরাপত্তা দিতে হবে বলেও এদিন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবেদনকারীর আইনজীবী কৌস্তব বাগচি আদালতে বলেন, এই পুরসভায় ১২ টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৫, নির্দল ২ এবং তৃণমূল পেয়েছে ৫ টি আসন। তপন কান্দু কংগ্রেসের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তারপর থেকেই ঝালদা থানার আই সি ফোনে বারবার তাঁকে দল ছাড়তে বলেন। এও বলেন, কাউকে কথা দেওয়া আছে। এই রেকর্ডিং পেন ড্রাইভে রাখা আছে।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার প্রশ্ন, নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর অভিযোগ কেন এফআইআর হিসাবে দেখা হল না।
উল্লেখ্য, ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে সোমবার আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী। দ্রুত শুনানি চেয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতেই হাইকোর্ট ওই নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, রাজ্যজুড়ে গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধীরা সোচ্চার মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগে। ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন দিয়েই এবারের অভিযোগপর্ব শুরু হয়েছিল।
ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে তাঁর স্ত্রী।
দ্রুত শুনানি চেয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল সোমবার। কাল মঙ্গলবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা বলে হাইকোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যজুড়ে গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধীরা সোচ্চার মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগে। ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন দিয়েই এবারের অভিযোগপর্ব শুরু হয়েছিল। তারপরই খুন হন পানিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলর। এরপরই বিরোধীদের নিশানায় বীরভূমের বগটুইকাণ্ড। সেখানেও প্রথমে খুন করা হয় তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখকে। তারপর ওই রাতেই কাছের গ্রামে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বেশ কয়েকজনকে।
এর আগে হাওড়ার আমতায় আনিসের রহস্যমৃত্যুর ঘটনাতেও সিবিআই তদন্ত চেয়ে সরব তাঁর বাবা। তিনিও সিটের তদন্ত নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন।
বগটুইকাণ্ডে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই ওই গ্রামে গিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। সোমবার মূল ভাদু শেখকে হত্যার ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস।
এবার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের ঘটনাতেও সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে এলেন তাঁর স্ত্রী।
ভাদু শেখের খুনের তদন্ত করবে কে?
দিকনির্দেশ চেয়ে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনপত্র দাখিল করার নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি।
হাইকোর্টের নির্দেশে গণহত্যার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে গেলেও ভাদু শেখের খুনের তদন্ত এখনও করছে রাজ্য পুলিস। মামলাকারীর বক্তব্য, ভাদু শেখের খুনের তদন্তভার সিবিআই না নিলে সম্পূর্ণ তদন্ত হবে না। তাই সুস্পষ্ট নির্দেশিকা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ আইনজীবীরা।
মামলা দায়েরের অনুমতি দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে প্রকাশ্যে খুন করে দুষ্কৃতীরা। তারপর কাছেই গ্রামে একসঙ্গে কয়েকজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে যায়। হাইকোর্টে একসঙ্গে চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেগুলির শুনানি শেষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। নির্দেশ পেয়ে সিবিআই তদন্ত শুরুও করে দিয়েছে।
মামলাকারীরা চাইছেন, মূল যে ঘটনাকে ঘিরে ওই গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, সেই ভাদু শেখ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বও দেওয়া হোক সিবিআইকে। না হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে না।
হেট স্পিচ (Hate Speech) বা ঘৃণাভরা বক্তব্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাইকোর্টের। নির্বাচনী বক্তৃতা এবং অন্য সময়ে দেওয়া বক্তৃতা। এই দুই সময়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এই মন্তব্যই করেছেন বিচারপতি চন্দ্রধারী সিং। ২০২০ উত্তর-পূর্ব দিল্লি (Delhi Riots 2020) সংঘর্ষের আগে ঘৃণাভরা ভাষণ দিয়েছেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর এবং পরবেশ বর্মা। এই অভিযোগ তুলে ওই দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাত। এই দু'জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চেয়ে নিম্ন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন নেত্রী। কিন্তু সেই আদালত বৃন্দা কারাতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। পাল্টা দিল্লি হাইকোর্টে (Delhi High Court) একই আবেদন নিয়ে দরবার করেন বৃন্দা কারাতের আইনজীবী অদিত পূজারী। সেই মামলার শুনানিতে সম্প্রতি এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
আদালতের মন্তব্য, অনেক কথা হাসিমুখে বললে সেটা অপরাধযোগ্য নয়। কিন্তু আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বললে অপরাধযোগ্য।' মামলাকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, 'এটা কি নির্বাচনী বক্তৃতা? নির্বাচনী বক্তৃতা আর সাধারণ সময়ে দেওয়া বক্তৃতার পার্থক্য রয়েছে। সাধারণ সময়ে কোনও বক্তৃতা দেওয়া হলে তা উস্কানি হতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের সময়ে রাজনীতিকরা একে অপরকে অনেক কথা বলেন। যদিও সেটা ঠিক নয়। কিন্তু তাতে ফৌজদারি অপরাধ হচ্ছে কিনা, সেটা আমাকে বিচার করতে হবে।'
বিচারপতির মত, 'হাসিমুখে বলা কথা আর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বলা কথার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। নয়তো ভোট প্রচারে সব রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার এফআইআর দায়ের হত। গণতান্ত্রিক দেশে সকলের বাকস্বাধীনতার রয়েছে। তাই কখন কোথায় কী উদ্দেশ্যে এই বক্তৃতা দেওয়া হয়েছে, তা আগে বিচার করা প্রয়োজন। ভোটে জেতার জন্য দেওয়া বক্তৃতা আর উস্কানিমূলক বক্তৃতা এক নয়।'
যদিও আইনজীবী অদিত পূজারী পাল্টা জানান, নির্বাচনী বক্তৃতা হোক বা না হোক ওই বক্তব্যে উস্কানিমূলক উপাদান রয়েছে। পাল্টা বিচারপতি বলেন, 'আমি সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে মন্তব্য করেছি। বিশেষভাবে এই মামলার প্রেক্ষিতে নয়। ধরুন আপনি একটি পরিবেশ তৈরি করতে কোনও কথা বললেন। সেখানে আমি অপরাধ করার উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছি না। কারণ অন্য রাজনৈতিক দল আবার অন্য কিছু বলে। সকলেই নিজের সমর্থকদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করেন।' বৃন্দা কারাতের করা এই মামলার রায়দান শুক্রবার স্থগিত রেখেছে আদালত।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, শুক্রবারের শুনানিতে পরবেশ বর্মার বক্তব্যের একটি অংশ তুলে ধরেন বিচারপতি সিং। অভিযোগ, সেই অংশে পরবেশ বলছেন, 'এরা আপনাদের বাড়িতে ঢুকে মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করবে।' এখানেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, 'এরা বলতে এখানে কাদের বোঝানো হচ্ছে? আবেদনকারীরাই বা কেন ধরে নিচ্ছেন যে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের সদস্যদের উদ্দেশ্যেই এ কথা বলা হচ্ছে?'
এই প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী অদিত পূজারী জানান, শাহিন বাগ আন্দোলনকারীদের প্রেক্ষিতে একথা বলেছেন পরবেশ। পাল্টা বিচারপতি জানতে ছেয়ছিলেন, তবে কি কেবল একটি সম্প্রদায়ের সদস্যরাই ওই আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন? তার প্রমাণ কোথায়?
সকালে হাইকোর্ট (Calcutta High Court) নির্দেশ দিতেই রামপুরহাট-কাণ্ডে (Rampurhat Incident) তদন্তভার হাতে নিতে তৎপর সিবিআই। শুক্রবার দুপুরে রামপুরহাট থানার কাছে এই মামলার এফআইআর কপি চেয়ে পাঠায় কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা (CBI)। সিবিআই সূত্রে খবর, কোর্ট নির্দেশের পরই সিবিআইয়ের অন্দরমহল শুরু হয়েছে তোড়জোড়।
সূত্র অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশে যে সিট গঠিত হবে, তার পর্যবেক্ষণে থাকবেন একজন যুগ্মঅধিকর্তা ও ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার। আপাতভাবে স্থির হয়েছে বিধাননাগরের সিজিও কমপ্লেক্সের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে তদন্ত পরিচালিত হবে। কলকাতার পাশাপাশি আসানসোল থেকেও প্রয়োজনে টিম যাবে বীরভূমে বলে আপাতভাবে স্থির হয়েছে।
সূত্র অনুসারে তদন্তভার হাতে নিয়েই সিবিআই রাজ্য পুলিশের সিটের কাছ থেকে কেস ডায়েরি চেয়ে ইমেল পাঠিয়েছে। এযাবৎকাল উদ্ধার হওয়া নমুনা নিজেদের সংগ্রহে নেবে। পাশাপাশি ধৃত আনারুল শেখকেও হেফাজতে নেবে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা।
অন্য দিকে আদালতের নির্দেশে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র খুঁজে বার করতে বা এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় রাজনীতি বা বেআইনি আর্থিক লেনদেন বা বালি পাচার চক্র যুক্ত আছে কিনা খতিয়ে দেখবে সিবিআই।
এই ঘটনায় অপসারিত ওসি-সহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। খতিয়ে দেখা হবে ওই সব অফিসারদের ফোনের কললিস্ট। একসঙ্গে এই ঘটনায় অন্য প্রভাবশালীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেলের মধ্যে সিট গঠন হবে।
এদিকে, বগটুই-কাণ্ডে দিন দুয়েক আগে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবকে ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ মেনেই শুক্রবার বেলা ১২টার কিছু পর বগটুইতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় ফরেনসিক টিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন ব্যালিস্টিক বিশেষজ্ঞরা। ঘুরে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তারা।
ঠিক কীভাবে আগুন লাগানো হয়েছিল, বাইরে থেকে কোনও বিস্ফোরক ছোড়া হয়েছিল কিনা, এসব নমুনা সংগ্রহ করতেই বগটুইয়ের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো ঘুরে দেখেন বিশেষজ্ঞরা।
কলকাতা হাইকোর্ট রামপুরহাট-কাণ্ডে (Rampurhat Case) সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ৭ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেবে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা (CBI)। আর বীরভূমে সাম্প্রতিককালে সংগঠিত এই নারকীয় ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যেতেই তেড়েফুঁড়ে নেমেছে বিরোধী শিবির। শুক্রবার হাইকোর্ট রায় দিতেই ট্যুইট করে সিবিআই তদন্তকে স্বাগত জানান বিজেপি নেতা (BJP) অমিত মালব্য। তবে খোঁচা দিয়ে তৃণমূলের মন্তব্য, 'সিবিআই তদন্ত শুধু পশ্চিমবাংলায় হয়। তাও সিবিআই তদন্ত সবরকম সাহায্য করবে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার।'
এদিকে, হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'বাংলায় গণতন্ত্র আজ ভূলুণ্ঠিত। মুখ্যমন্ত্রী যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব দিয়েছেন, আশা করি সিবিআই তদন্তে সেই তত্ত্ব সামনে আসবে।' পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের উষ্মা, 'বাংলায় কোনও পক্ষপাতিত্ব হয় না। সিট তদন্ত অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে সিবিআই কতটা তদন্ত করবে? এখানে কোর্ট যখন রায় দিয়েছে আমি আর কিছু বলব না।'
রাজ্যের শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, 'এখন সিবিআই তদন্তের কোনওরকম বিরোধিতা করবে না রাজ্য। বরং তৃণমূল সরকার সবরকম সাহায্য করবে। ইতিমধ্যে রামপুর-কাণ্ডে যা যা করণীয় রাজ্য করেছে। রাজনৈতিক রঙ না দেখে গ্রেফতার হয়েছে। সিবিআই তদন্ত শুধু বাংলায় হয়। তবে সঠিক পথে তদন্ত পরিচালিত না হলে প্রতিবাদ গণআন্দোলন হবে।'
পাশাপাশি রামপুরহাটের ঘটনা দুঃখজনক এবং অনভিপ্রেত স্বীকার করে কুণালের দাবি, 'রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যা যা করণীয়, তার থেকে বেশী করছে। ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারির ক্ষেত্রে কোনও রাজনীতিক রং দেখা হয়নি।' সিবিআইয়ের প্রতি তোপ দেগে কুণালের মন্তব্য, 'সিবিআই নিরপেক্ষ নয়, ওরা বিজেপি পক্ষ। তৃণমূল কংগ্রেসের লুকনোর কিছু নেই। ভালো হয়েছে রাজ্যের দিকে আর কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না।'
এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, 'কোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত জরুরি। সিট দিয়ে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে না।'
অপরদিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অধীর চৌধুরী সিটকে নিশানা করে বলেছেন, 'সিটের যারা মাথা তারা সকলেই খুনি। এই তদন্ত যাতে বিচারকের তত্ত্বাবধানে হয়।'
রামপুরহাট মামলায় হাইকোর্ট সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এবার এই মামলায় (Rampurhat Case) রাজ্যের বিশেষ এক্তিয়ার আটকাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ মামলাকারীরা। শীর্ষ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করেন তাঁরা। এই ক্যাভিয়েটে বলা, রাজ্য যাতে শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) গিয়ে একতরফা নির্দেশ না নিয়ে আসতে পারে।
আইন বিশেষজ্ঞদের দাবি, ক্যাভিয়েট দাখিল মানে কোনওভাবে বিরোধীপক্ষ, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে এককভাবে মামলা করে কোন নির্দেশ যাতে না নিয়ে আসতে পারে। এদিকে, রামপুরহাটে বগটুই গ্রামের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, "আমরা ওই ঘটনার বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেছি। মামলার পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই মামলা সিবিআই-কে দেওয়া প্রয়োজন। বিচার এবং সমাজে প্রতি ন্যায়ের কারণে স্বচ্ছ তদন্ত করে সত্য সামনে আনা জরুরি।" সেই কথা মাথায় রেখে এই মামলাটি সিবিআই-র হাতে তুলে দিতে চায় আদালত। তাই রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে তারা তুলে দিক।
রামপুরহাটে বগটুই গ্রামের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।(highcourt)। এদিন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, "আমরা ওই ঘটনার বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেছি। মামলার পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই মামলা সিবিআই-কে দেওয়া প্রয়োজন। বিচার এবং সমাজে প্রতি ন্যায়ের কারণে স্বচ্ছ তদন্ত করে সত্য সামনে আনা জরুরি।" সেই কথা মাথায় রেখে এই মামলাটি সিবিআই-র হাতে তুলে দিতে চায় আদালত। তাই রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে তারা তুলে দিক।
বগটুইয়ের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলাকে একত্র করে শুনানি হয় হাইকোর্টে। এর আগে বুধবার রাজ্য পুলিশের সিট বা বিশেষ তদন্তকারী দলের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছিল হাইকোর্ট। মোট চারটি মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। ৪ জন আবেদনকারীর আবেদন ছিল সিবিআই, এনআইএ অথবা যে কোনও নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থাকে দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করা হোক। পাশাপাশি নিরাপত্তা দিতে হবে সাক্ষী ও গ্রামবাসীদের। আক্রান্তদের পরিবারকে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কলকাতা হাইকোর্ট সিসিটিভি বসানোর নির্দেশ আগেই দিয়েছিল।
পাশাপাশি হাই কোর্টের নির্দেশ, এই মামলায় রাজ্যের গঠিত সিট কোনও তদন্ত করতে পারবে না। তাছাড়া শুধু মাত্র ‘কেস পেপার’ তৈরি করেই থেমে থাকবে না সিবিআই। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করবে এবং তদন্তের প্রয়োজনে গ্রেফতারও করবে। পরবর্তী শুনানির মধ্যে জানাতে হবে তারা তদন্ত কত দূর এগিয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ এপ্রিল।
এখন সিবিআই তদন্তের দিকে তাকিয়ে স্বজনহারা পরিবার ।
মেয়ে-বাবা একসঙ্গে রাস্তায় বেরলেও ইভটিজিংয়ের কবলে পড়তে হবে। এটা সেই বাবার কাছে দুর্ভাগ্যের বিষয়। সম্প্রতি এক মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেছে কেরল হাইকোর্ট। পাশাপাশি ইভটিজিংয়ের মামলায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করেছে আদালত। এই মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণী তরুণীর বাবাকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
আদালত আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করতে গিয়ে বলেছে, 'অভিযুক্ত নিগৃহীতার বাবাকে হেলমেট দিয়ে মেরেছে। কারণ প্রাক্তন এই পুলিসকর্মী মেয়ের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করেছিলেন।'
এটা দুর্ভাগ্যজনক, কটূক্তি- শ্লীলতাহানির জন্য বাবা এবং মেয়ে একসঙ্গে হাঁটতে পারবেন না। তাহলে এই ধরনের অপরাধ থামানো উচিৎ। এভাবেই অভিযুক্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে হাইকোর্ট। যদিও আদালতে অভিযুক্তর দাবি, কিশোরীর বাবাই তাঁর উপর হামলা করেছিলেন। এই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীও আছেন।'
পাল্টা কোর্টের মন্তব্য, এটা স্বাভাবিক অভিব্যক্তি একজন অভিভাবকের। সে সন্তানের প্রতি করা কটূক্তির প্রতিবাদ করবেই। যদিও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে কোনও কসুর করেননি অভিযুক্ত। তিনি বলেছে, আমার লঘু পাপে গুরু মামলা দেওয়া হয়েছে। আইপিসির ৩০৮ জামিন অযোগ্য ধারা আমার বিরুদ্ধে দায়ের হয় না।
এদিন প্রথম থেকেই অভিযুক্তের আগাম জামিনের বিরোধিতা করেছেন সরকারি আইনজীবী। তিনি বলেছেন, 'অভিযুক্ত এবং অপর এক শাগরেদ কিশোরীর উদ্দেশ্যে কটূক্তি করছিলেন, তখন সঙ্গে থাকা প্রাক্তন পুলিসকর্মী বাবা প্রতিবাদ করেন। তাতেই সেই ব্যক্তির উপর হামলা করেন অভিযুক্তরা।'
রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় চারটি জনস্বার্থ মামলার একসঙ্গে শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলায় আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে বারবার আদালতে কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই কেস ডায়েরি জমা পড়ল আদালতে। তবে তা আবেদনকারীরা আপাতত পাচ্ছেন না। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তা জমা দেওয়া হয় মুখবন্ধ খামে।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এদিন আদালতে বলেন, চার্জশিট না দেওয়া পর্যন্ত কাউকে কেস ডায়েরি দেওয়া যায় না। তাই মুখবন্ধ খামে তা আদালতের হেফাজতে দেওয়া হল।
এদিন তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে ৩১ টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরই। পাশাপাশি সাক্ষীদের সুরক্ষা দেওয়া হয়ছে। যে যা খুশি বলতে পারে, তবে আবেদনপত্রে তার কোনও চিহ্ন নেই। আমরাও চাই আসল সত্য বেরিয়ে আসুক। তাই স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় সমর্থন জানিয়েছি। সব রাজনৈতিক নেতাদের ওখানে যেতে দেওয়া হয়েছে। সিপিআইএম গিয়েছে, বিজেপি গিয়েছে। কংগ্রেস বলছে, তারা যেতে পারেনি, এটা আমি খোঁজ নিচ্ছি।
অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, দিল্লি থেকে ফরেনসিক টিম আসার কথা আজকের মধ্যেই। তার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ফরেনসিক টিমকে সিআইএসএফের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের বলা হয়েছিল। আমরা তাতেও কোনও বাধা দিইনি।