সন্দেশখালি-কাণ্ডের মূল চক্রী শেখ শাহজাহানকে সিবিআই-এর হেফাজতে হস্তান্তরের নির্দেশ। পাশাপাশি, সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তও করবে সিবিআই। মঙ্গলবার এমনটাই নির্দেশ প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের। সেইমত আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার সিবিআই এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে শাহজাহানকে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ভবানী ভবনে প্রবেশ করল সিবিআই আধিকারিকরা। হাইকোর্টের নির্দেশে বিকেল সাড়ে চারটের মধ্য়ে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এর আগে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। গত সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই শুনানিতে সন্দেশখালি-কাণ্ডের মূল চক্রী শেখ শাহজাহান কার হেফাজতে থাকবে, তা নিয়ে ইডি, সিবিআই এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে জোর সওয়াল হয়। এই ইস্যুতে ইডির বক্তব্য ছিল যে, শাহজাহান যতক্ষণ পর্যন্ত সিআইডি হেফাজতে থাকবে, তত বেশি তথ্য প্রমাণ লোপাট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। তাই শাহজাহানকে সিবিআই-এর হেফাজতে দেওয়া হোক।
পাশাপাশি, মামলার তদন্ত সিবিআই-কে দেওয়ার আর্জিও জানান ইডি আধিকারিকরা। শুনানি শেষে সেই মামলার রায়দান স্থগিত রাখে আদালত। মঙ্গলবার ইডির ওই দাবিকে মান্যতা দিয়েই সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে শাহজাহানকে সিবিআই-এর হাতে হস্তান্তরের নির্দেশও দেয় আদালত।
কীভাবে জামিন পাওয়ার পরও কাউকে গ্রেফতার করা যায়? সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিআইএম নেতা নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করে রাজ্য পুলিসকে তীব্র ভর্ৎসনা বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের। গোটা ঘটনায় পুলিস সুপারের রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট।
শতাধিক নারীর অভিযোগ যার বিরুদ্ধে, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস গ্রেফতার করেছিল সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদকে। ১৭ দিন ধরে জেলে ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ যথেষ্ঠ বোকা বোকা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে নিরাপদকে। এভাবে কোনও নাগরিককে কি গ্রেফতার করা যায়? রাজ্যের আইনজীবী রুদ্রদীপ নন্দীর কাছে জানতে চান বিচারপতি।
নিরাপদের নামে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয় ৯ ফেব্রুয়ারি। তবে তাঁর নামে জেনারেল ডায়েরী করা হয় ১০ ফেব্রুয়ারি। এফআইআর-এর পর একই অভিযোগের ভিত্তিতে কীভাবে জেনারেল ডায়েরীহল? পুলিস তা নিল কীভাবে? এই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। এমনকি, যাঁরা নিরাপদকে অযাচিতভাবে গ্রেফতার করলেন, সেই পুলিস অফিসারদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কেন গ্রেফতারি নয়? এতগুলো দিন তাঁর জেলে থাকার দরুন ক্ষতিপূরণই বা দেবে কে? বিচারপতির এমন প্রশ্নে যে চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য এবং রাজ্য পুলিস, তা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই যখন সন্দেশখালির নারীরা রাস্তায় বেরিয়ে শিবু হাজরার গ্রেফতারির দাবি তুলেছিল, তখন অন্তরালে থেকেই শিবু হাজরা ১১১ জনের নামে এফআইআর দায়ের করেন থানায়। যে ১১১ জনের নামের মধ্যে প্রথম নাম ছিল এই নিরাপদ সর্দার। তখনই, পুলিস এক অভিযুক্তর অভিযোগের ভিত্তিতে অতিসক্রিয়তা দেখিয়ে গ্রেফতার করে নিরাপদকে। বিচারের বাণী শেষমেশ আলো দেখালো। রাজ্য পুলিসের একতরফা অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও বাড়ছে সন্দেশখালির, মত ওয়াকিবহাল মহলের।
সন্দেশখালির পুলিস শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারবে, নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। সন্দেশখালি জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের। এমনকি শেখ শাহজাহানের নামে লুক আউট নোটিশ দিতে হবে। দুটো সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে হবে রাজ্যকে, এমনটাই নির্দেশ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম-এর। প্রায় দু'মাস কেটে গেল এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। কবে গ্রেফতার হবে তাঁর...?
গতকাল অর্থাৎ রবিবার সংবাদ মাধ্য়মের সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, শেখ শাহজাহানকে সুরক্ষা দিয়েছে আদালত। তাই তাঁর গ্রেফতারিতে কোনও বাধা নেই। আজ, সোমবার বিষয়টি নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলায় নিযুক্ত আদালত বান্ধব জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। বিষয়টি শোনার পরই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তথ্য খারিজ করে প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি বিষয়ে আদালত কোনদিনও কোনওরকম স্থগিতাদেশ দেয়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে সন্দেশখালির থানা চাইলেই শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারে।
প্রায় এক বছর সাত মাস ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেল হাজতে রয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি অন্যতম অভিযুক্ত। এমন দাবি ইডি ও সিবিআই করে এসেছে বরাবর৷ এবার ইডির বিশেষ অধিকর্তার রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলায় এই তলব বলে জানা গিয়েছে। কবে থেকে নিম্ন আদালতে বিচারপর্ব শুরু করা সম্ভব? সেই বিষয়ে রিপোর্টে আদালতকে জানাতে হবে। বুধবার এমনই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
এদিনের আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, অনির্দিষ্টকালের জন্য কাউকে হেফাজতে রাখা যায় না। এক বছর সাত মাস জেলে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। সেই কথা ঠিক আছে। কিন্তু আর কতদিন? ইডির আইনজীবী ও আধিকারিকের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন বিচারপতির।
প্রেসিডেন্সি জেলের পহেলা বাইশ বিশেষ সেলে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বান্ধবী অর্পিতাও জেল হেফাজতে। একের পর এক তথ্য সামনে এসেছে তদন্ত মাধ্যমে। অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল। একের পর এক সম্পত্তির হদিশ মিলেছিল। তৃণমূলের সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা, দলের মহাসচিবের জায়গা হয়েছিল গারদের ওপাড়ে। দল তার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার মতোই। মন্ত্রিসভা থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেভাবে এত দিনে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কথা খরচ করেনি।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেশ কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে জামিনের আবেদন করে এসেছেন। নিজে জামিনের সওয়াল করেছেন। তিনি কোথাও যাবেন না। বাড়িতেই থাকবেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থ। এভাবে আর জেলবন্দি থাকতে পারছেন না। আদালতে বহু বার এমন কথা বলে কাতর আবেদন করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কোনওবারই জামিন মেলেনি৷ ইডি ও সিবিআই বরাবর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রভাবশালী বলে আখ্যা দিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম মুখ। এই দাবিও করা হয়েছে। জামিন বরাবর না মঞ্জুর হয়েছে আদালতে।
এবার আদালত এই বিষয়ে নিজেই প্রশ্ন করেছে৷ আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি। ওই দিন ইডিকে এই বিষয়ে বক্তব্য রাখতে হবে। তাহলে কি এবার শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া?
এবার সংশোধনাগারে গর্ভবতী হয়ে পড়ছেন মহিলারা। সংশোধনাগারে মৃত্যু হলেই বন্দিদের মৃতদেহ পাচার করে দেওয়া হচ্ছে? এমন অভিযোগে আদালতের নির্দেশে ক্রিমিনাল বেঞ্চের মামলায় এবার রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব কলকাতা হাইকোর্টের।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন আদালত বান্ধব আইনজীবী তাপস ভঞ্জ জানান, সুপ্রিম নির্দেশে আদালত বান্ধব পশ্চিমঙ্গের বিভিন্ন আদালত ঘুরে দেখেন। তিনি চাক্ষুষ করেন, কীভাবে মহিলারা সংশোধনাগারে অত্যাচারিত হয়। পরবর্তীতে সেই সংক্রান্ত আরও তথ্য সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও জানান আইনজীবী তাপস ভঞ্জ।
মামলার শুনানি চলাকালীন এসব শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, সন্ধ্যে ছয়টার মধ্যে সব বন্দিদের জেলে প্রবেশ করানোই নিয়ম। এর অন্যথা হলে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। এটা কারোর ক্ষমতা দেখানোর বা চ্যালেঞ্জিং বিষয় না, এটা মহিলাদের সুরক্ষা এবং সকল বন্দিদের জীবনের প্রশ্ন। এরই সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের এটা মাথায় রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চ।
অবশেষে মামলায় মঙ্গলবারের শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ৮ মার্চের মধ্যে রাজ্যকে জানাতে হবে জেল সংক্রান্ত সব তথ্য। কীভাবে বন্দিদের সংশোধনাগারে রাখা হয়? মহিলাদের সেল ওভার ক্রাউডেড কিনা? মেডিক্যাল সাপোর্ট কীভাবে দেওয়া হয়? সংশোধনাগারে গাইনো চিকিৎসক কতজন আছেন? কোন পর্যায়ে অসুস্থ বন্দিদের চিকিৎসা দিতে বাইরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়? মহিলা বন্দিদের সংশোধনাগারে প্রবেশ ও থাকার সময় কোথায় কত কর্মী কতক্ষন ডিউটি করেন? এই সব তথ্য রাজ্যের তরফে দিতে হবে আদালতে।
সন্দেশখালিতে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা-সহ পুলিসি নিষ্ক্রিয়তা এবং কিছু ক্ষেত্রে পুলিসি অতিসক্রিয়তার অভিযোগে সরব মামলকারী সংযুক্তা সামন্ত। সন্দেশখালি বাসিন্দা বিশেষ করে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের কাছে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান মামলাকারী সংযুক্তা সামন্ত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই মুহূর্তে দ্রুত শুনানির প্রয়োজনীয়তা নেই। তালিকা মোতাবেক নির্দিষ্ট দিনে শুনানির জন্য উঠবে এই মামলা। আদালতে মনে করছে, প্রাথমিক তদন্তে অনেকে গ্রেফতার হয়েছে, পরিস্থিতি আপাতভাবে নিয়ন্ত্রণে। কোর্ট নির্দেশে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারও করেছে প্রশাসন। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলা হাইকোর্টে শুনানির জন্য উঠতে পারে বলে আদালত সূত্রে খবর। তাই এই মুহূর্তে দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ হাইকোর্টের।
এদিকে সোমবার আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, মামলাকারী কে, কোন সমাজকর্মী, কোন বিশেষ ব্যক্তি? আপনি নিজে সন্দেশখালি গিয়েছিলেন? আইনজীবীর পাল্টা জাবাব, না, আমি যাইনি। তবে ওখানের পরিস্থিতি আলাদা। প্রধান বিচারপতির পাল্টা সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে জনস্বার্থ মামলা করছেন? সিঙ্গল বেঞ্চ আজ সন্দেশখালির মামলা শুনবে, সেটা আগে দেখুন। তবে আইনজীবীর মন্তব্য, শুধু মিডিয়া রিপোর্ট নয়। রাজ্যপালের রিপোর্টও রয়েছে মামলায়। এভাবেই সওয়াল-জবাবের পর প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন তালিকা মোতাবেক নির্দিষ্ট দিনেই শুনানির জন্য উঠবে মামলা।
উল্লেখ্য, মামলাকারী সংযুক্তা সামন্ত সিআরপিএফ-এর পাশাপাশি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ও মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু যেহেতু মামলাকারী সন্দেশখালি এলাকার বাসিন্দা নয়, পাশাপাশি তিনি সেখানে যাওয়ার চেষ্টাও পর্যন্ত করেননি, তাই এই মুহূর্তে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মনে করছেন দ্রুত শুনানির আর্জিতে সাড়া দেওয়া সম্ভব নয়।
পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। সমাধানের নামে দুর্নীতি হয়েছিল, উঠেছিল এমনই অভিযোগ। জানা গিয়েছিল, পাড়ায় সমাধানের রেকমেন্ডেশনে একাধিক শিক্ষক বদলি করা হয়েছিল। তবে প্রশ্ন জেগেছিল, এই 'পাড়ায় সমাধান'-এর আইনি বৈধতা কী? কাদের সিদ্ধান্তে ওই শিক্ষকদের বদলি? আগেও জানতে চেয়েছিল আদালত।
সম্প্রতি এই মামলায় বোর্ডের কাছে আদালত হলফনামা চাইলে, সেই হলফনামায় বোর্ডের উল্লেখ, কমিশনের নির্দেশেই ওই সকল বদলি করা হয়েছিল। শুধু তাই না, সেখানে সই ছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীরও। এরপরেই সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ২১৬ জন শিক্ষকের বদলিতে মন্ত্রীর এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিচারপতির মন্তব্য, বোর্ডের হলফনামায় প্রকাশ, পাড়ায় সমাধান থেকে আসা রেকমেন্ডেশনের আবেদন গৃহীত হয়ে বদলি হয়েছে কমিশনের নির্দেশে। এরপরেই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কমিশনকে এই নির্দেশ কে দিল? মিনিস্টার ইন চার্জই বা কীভাবে সই করলেন? সেই রেকর্ড আদালতের কাছে পেশ করতে হবে বলেই মন্তব্য করেন বিচারপতি। শুধু তাই না, মামলায় রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি হয়েছে সামনে এসেছে। এরপর রাজ্য ঠিক করুক, এই মামলার তদন্ত রাজ্য তার হাতে রাখবে, নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দেবে আদালত।
যদিও সমস্ত প্রশ্নের উত্তরেই রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার কিছু সময় লাগবে। তাঁকে বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করতে হবে, আর তার জন্যই সময় চাওয়া বলে জানান আইনজীবী কিশোর দত্ত। সোমবার পাড়ায় সমাধান মামলার শুনানির শেষে বিচারপতির নির্দেশ, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যকে এই মর্মে তাদের সব বক্তব্য পেশ করতে হবে আদালতে। এখন দেখার পরবর্তী শুনানিতে কোন দিকে মোড় নেয় পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির মামলা।
স্কুল সার্ভিস কমিশন মামলায় নতুন নির্দেশ। এবার চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট দেখার সময় বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট। যার ফলে আগামী ২৩শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিজেদের OMR দেখতে পারবেন চাকরিপ্রার্থী এবং বিতর্কিত চাকরি প্রাপকরা। OMR নিরীক্ষণের জন্য এর আগে ৯ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় নির্ধারিত করেছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। এবার চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এখনও পর্যন্ত ২ হাজারের কিছু বেশি প্রার্থী তাদের ওএমআর পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে এদিন আদালতে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের অন্যতম আইনজীবী প্রমিত রায় অভিযোগ করেন মক্কেলরাও OMR নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেটা দেখানো হয়নি। সিবিআইয়ের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, যদি ৫৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী তাদের ওএমআর দেখতে চায় তাহলে সিবিআইকে সেটাই দেখাতে হবে। মামলায় পরবর্তী শুনানি ৪ মার্চ।
মেয়েকে বিএড কলেজে ভর্তি করতে গিয়ে অনিয়মের খোঁজ। মামলাকারী দেখেছিলেন, কলেজ যেখানে থাকার কথা সেখানে নেই। রয়েছে অন্যত্র। দেখে সন্দেহ হওয়ায় খোঁজ করতে গিয়ে এরকম আরও ছয়টি কলেজের সন্ধান পান মামলাকারী। অভিযোগ, কলেজগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন না নিয়েই ভর্তি নিচ্ছে।
মামলাকারীর আইনজীবী দেবযানী সেনগুপ্তর অভিযোগ, এনসিটিই গাইডলাইন অনুসরণে এইসব কলেজ স্থাপন করা যায়। নিজস্ব বাড়ি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকা সেখানে বাধ্যতামূলক। সেগুলি ঠিকঠাক থাকলে তবেই রাজ্য সরকার সেই প্রতিষ্ঠানকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেয়। তারপর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাফিলিয়েশন বা অনুমোদন দিতে হয়। কিন্তু এই কলেজগুলির ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, এমন অন্তত ১৫ টি কলেজ আছে, যেগুলির অনুমোদনের নবীকরণ পর্ব চলছে এখনও।
সবটা শোনার পর বিচারপতির মন্তব্য, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। সর্বাধিক প্রচারিত একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি সংবাদপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়কে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়কে উল্লেখ করতে হবে, কোন কোন কলেজের অনুমোদন আছে। স্পষ্টত বিচারপতির নির্দেশ, অনুমোদনহীন কলেজে ছাত্র ভর্তি করা যাবে না। আদালতের নির্দেশে মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ছয় মাস পর।
প্রধান শিক্ষক ও পঞ্চয়েত সদস্য কেন এখনও গ্রেফতার হয়নি? তা রাজ্যের কাছে জানতে চায় আদালত। মাধ্যমিক শেষ হলে উপযুক্ত টিচার ইনচার্জ কে হবেন তা আদালতকে জানাতে নির্দেশ এসডিও তথা অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে। নরেন্দ্রপুর স্কুলকাণ্ডে সোমবার এমনই মন্তব্য হাইকোর্টের।
নরেন্দ্রপুর বলরামপুর এম এন বিদ্যামন্দিরে দুষ্কৃতীরা ঢুকে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মারধরের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় সোমবার আদালতে রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য। তবে আদালত জানতে চায় এতদিনে কেন মাত্র ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে?
এফআইআর-এ নাম থাকা বাকি ব্যক্তিরা এখনও কেন গ্রেফতার নয়? রাজ্যের কাছে প্রশ্ন আদালতের। পাশাপাশি ওই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার অবস্থান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন বিচারপতি।মাধ্যমিকের পর স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে? বোর্ডের কাছে জানতে চায় আদালত।
এদিন আদালতে নরেন্দ্রপুর থানার আইসি অনির্বাণ বিশ্বাস রিপোর্ট জমা দিয়ে আদালতে জানান, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার মোট ৮ জন। মনসুর রহমান, আলোক রফিউর নতুন করে গ্রেফতার হয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আগাম জামিনের আবেদন করলেও তিনি এখনও পলাতক। তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আকবর আলি কোথায়? ১৫ জনের নাম আছে এফআইআর-এ। তার মধ্যে আর কতজন গ্রেফতার? মাধ্যমিক পরীক্ষা কেমন চলছে ওই স্কুলে? SDO কি স্কুলের দায়িত্বে কাউকে রেখেছেন? পঞ্চায়েত এর সদস্যদের কি খবর? তাদের কি গ্রেফতার করা গেল? প্রধান শিক্ষক কি সাসপেন্ড? মাধ্যমিক পরীক্ষার পর স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব কি হবে?
বোর্ডের আইনজীবী কুহেলী ভট্টাচার্য জানান, প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ডেড করা হয়েছে।তাঁকে বহিষ্কার করা হয়নি। স্কুলের দায়িত্ব বোর্ডের। রাজ্যের আইনজীবী সুমন চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ডেড করা হয়েছে। আমরা আলোচনা করে বলতে পারব কার হাতে স্কুলের দায়িত্ব দেওয়া যায়।
কিন্তু এখনও কেন প্রধান শিক্ষক অধরা, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য বা পুলিস। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৩ ফেব্রুয়ারি।
আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে ইডির বিশেষ আদালতের দ্বারস্থ সন্দেশখালিকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে শেখ শাহজাহানের তরফে আইনজীবী জাকির হুসেন এই আগাম জামিনের আবেদন জানান। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি।
এর আগে, চলতি মাসের ৫ তারিখে রেশনবন্টন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা। সেই সময় বেশকিছু ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনটি মামলা দায়ের হয়। এদিন বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন শেখ শাহজাহানের আইনজীবী। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জানিয়েছেন, মামলার নথিগুলি সামনে এলে বিষয়টি বিবেচনা করা যাবে। এ বিষয়ে ইডির আইনজীবী ভাস্কর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সোমবার এই কপিটি তাদের দেওয়া হয়েছিল। এই অবস্থায় আগামী শনিবার শুনানির দিন ধার্য করলে ভালো হয়। পাশাপাশি, এই আদালতের ৪৩৮-এর অধীনে বিচার করার ক্ষমতা নেই, সেকথাও তিনি তুলে ধরেন। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আগামী শনিবার এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারক। ওই দিন DSG থাকবেন বলে সূ্ত্রের খবর।
শাহজাহানের আইনজীবীর দাবি, ঘটনার সময় শাহজাহান সেখানে উপস্থিত ছিল, এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এদিকে, সন্দেশখালির ঘটনার পর ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও অধরা শেখ শাহজাহান। তার নাগাল পাচ্ছে না রাজ্য পুলিস। ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করা হয়েছে।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে যে, শাহজাহান আগাম জামিনের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে পারলেও কেন তার হদিশ পাচ্ছে না রাজ্য পুলিস? শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকার জন্যই কি শাহজাহানকে ধরতে অনীহা রাজ্য পুলিসের?
ডিভিশন বেঞ্চে ফের ধাক্কা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মেডিক্যাল কলেজ দুর্নীতি মামলায় বুধবারই তাঁর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ হয়। এবার সিবিআইয়ের দায়ের এফআইআরও খারিজ করে দিল বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, আদালত থেকে সংগৃহীত নথি ফেরত দিতে হবে সিবিআইকে।
সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিত করার কথা জানার পরেও কি করে রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিস সেই রায়ের কপি সিবিআইকে পাঠালো? বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। আগামী সোমবার মামলার শুনানি।
উল্লেখ্য, ডাক্তারি পরীক্ষায় রিজার্ভ পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ভুয়ো শংসাপত্র। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন দুর্নীতির আবহেই ডাক্তারি পরীক্ষায় এমবিবিএস-এর রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের অভিযোগে আদালতে মামলা রুজু হয়েছিল। এই ঘটনাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ১৪ জন চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিল করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরে আবারও মিলেছে জাতিগত ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের তথ্য প্রমাণ। আর তারপরেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।
মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদে নাম নথিভুক্ত করাতে হয় নবম শ্রেণিতে। সেই রেজিস্ট্রেশনের একটা নির্দিষ্ট সময় ধার্য করা থাকে। এবছরও তা ধার্য করা হয়েছে। তবে এই রেজিস্ট্রেশন নিয়ে উদাসীন রাজ্যের কয়েকটি স্কুল। যার জেরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর তোপের মুখে পড়লেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা। রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় এই প্রধান শিক্ষকদের নিজের পকেট থেকে দিতে হবে ফাইন। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
বিচারপতি বসু নির্দেশ দিয়েছেন, মোট ২ লক্ষের বেশি টাকা জরিমানা দিতে হবে চার প্রধান শিক্ষককে। এদের মধ্যে রয়েছে, ভগবানপুর কেবিএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান। তাঁকে দিতে হবে ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি টাকা। পর্ষদের দাবি, ওই স্কুলের ২৪ জন পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তালিকায় রয়েছে নব নালন্দা (শান্তিনিকেতন) হাইস্কুলের নাম। সেখানে এক পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ফলত, প্রধান শিক্ষক গৌরগোপাল চট্টোপাধ্যায়কে ৫০ হাজারের বেশি টাকা জরিমানা করেছে আদালত। এছাড়া হুগলির বিনাপানি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বাতী বসুকে দশ হাজারের বেশি টাকা জরিমানা দিতে হবে। কারণ সেখানে একজন ছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। রয়েছে আসানসোলের সেন্ট মেরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মনিকা সরকার। তাঁকে ২৫ হাজারের বেশি টাকা জরিমানা। বৃহস্পতিবার এই পড়ুয়াদের তথ্য জমা নেবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বলে জানা গিয়েছে।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে শুনানি ছিল নিয়োগ মামলার দুই মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ এবং ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। সেই মামলায় পার্থ এবং সুজয় দু’জনের জামিন চেয়ে আদালতে সওয়াল করছিলেন রাজ্যের এজি। রাজ্যের এজির সওয়ালে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। রাজ্যের প্রতিনিধি কেন নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল করছেন রাজ্যের এজি কিশোর দত্তের কাছে জানতে চান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। প্রশ্ন করেন, আপনার কাছে অনুমতি আছে? তারপরেই বিচারপতি স্পষ্ট করে দেন রাজ্যের অনুমতি পত্র ছাড়া সওয়াল শোনা সম্ভব নয়। যার জেরে পিছিয়ে গেল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের জামিন মামলার শুনানি।
উল্লেখ্য, রাজ্যের এজি পদে স্থলাভিষিক্ত হওয়ার আগে থেকেই পার্থ এবং সুজয়ের জামিনের মামলা হাইকোর্টে লড়ছেন কিশোর দত্ত। সেই মামলা চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। এই আবহেই রাজ্যের নতুন এজি পদে দায়িত্ব নেন কিশোর। তারপরে বুধবার পার্থ এবং সুজয়ের জামিনের শুনানি পড়ে। নিজের হাতে থাকা পুরোনো মামলা নিজেই লড়তে এসেছিলেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী। কিন্তু সওয়াল করতে এসেই বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। এর পরেই সময় চান রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত। রাজ্যের অনুমতি নিয়ে সওয়ালে অংশ নেওয়ার কথা জানান তিনি। বিচারপতি জানান, রাজ্য যদি অনুমতি দেয়, তবে আদালতের কোনও অসুবিধা নেই।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পার্থের জামিনের মামলার শুনানি হবে। সুজয়ের মামলাটির পরবর্তী শুনানি ৬ ফেব্রুয়ারি।
মাধ্যমিকের সময়সীমা পরিবর্তনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা কলকাতা হাইকোর্টে। রাজ্যের কাছে জবাব তলব কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। ছাত্র ছাত্রীদের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন বিচারপতি। রাজ্যকে সময় পরিবর্তনের ব্যাপারে মতামত জানানোর নির্দেশ দেন। আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলার শুনানির সম্ভাবনা। রাজ্যকে জানাতে হবে সময় পরিবর্তনের পিছনে কী ভাবনা ছিল তাদের, এমনটাই নির্দেশ বিচারপতির।
মামলাকারী আইনজীবীর দাবি, আগের সময়েই পরীক্ষার নির্দেশ দিক আদালত। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন সময়ে পরীক্ষা হলে সমস্যায় পড়বে বহু ছাত্রছাত্রী। বিশেষত গ্রামাঞ্চল, পাহাড় বা সুন্দরবন এলাকার ছাত্রছাত্রীরা সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হত সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে, শেষ হত দুপুর ৩টেয়। প্রথম ১৫ মিনিট প্রশ্নপত্র পড়ে দেখার জন্য সময় দেওয়া হত পড়ুয়াদের। এবার সময় এগিয়ে আনা হয়েছে। পর্ষদের নোটিস অনুযায়ী, পরীক্ষা শুরু হবে ৯ টা ৪৫ মিনিটে, শেষ হবে দুপুর ১টায়।