বীরভূম আমদল হিন্দু মিলন মন্দিরের ধর্মীয় শোভাযাত্রার অনুমোদন চেয়ে এবার আদালতের দ্বারস্থ সঙ্ঘ। ১ এপ্রিল সকাল ৮ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ধর্মীয় শোভাযাত্রার অনুমতি চাইলে সে অনুমতি দেয়নি পুলিস বলেই আদালতে অভিযোগ করেছে সঙ্ঘ। তাদের দাবি বিগত ৩৭ বছর ধরে এই ধর্মীয় শোভা যাত্রা হয়। শর্ত সাপেক্ষে শোভা যাত্রার অনুমোদন দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
এদিন আবেদনকারী আইনজীবী কৃষ্ণেন্দু সরকার তার শুনানিতে বলেন, আমি প্রথম ১৭ তারিখ আবেদন করি। তারপর আরও দুই বার আবেদন করি। কিন্তু পুলিসের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
রাজ্যের আইনজীবী অমল সেন উত্তরে বলেন, ৩৭ বছরের এই শোভাযাত্রার কোনও বছর পুলিসের কাছে আবেদন করা হয় না। এই প্রথম তারা আবেদন করেছেন। পুলিসের রিপোর্ট দেখুন। এর আগে পুলিস ওই সঙ্ঘের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। পুলিস একটা আলাদা রুট সাজেস্ট করেছে। সেটা দিয়ে গেলে কোনও অসুবিধা নেই। ওদের পছন্দ মতো রুটে পূর্বপাড়া মাজার রয়েছে। তাই একটু বদল করার আবেদন করা হয়েছে। পুরো রাস্তা বদল নয়। এক কিলোমিটারের মত রাস্তা ঘোরানো হচ্ছে। আর শব্দদূষণ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। ওই সময় স্কুলের সময় তাই অসুবিধা হতে পারে।
মোবাইল চুরির ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ভার্চুয়ালি হাজিরা কলকাতা পুলিস কমিশনার।আদালতে হাজির হয়ে পুলিস কমিশনার জানান কলকাতা হাইকোর্টের আগের যে নির্দেশ ছিল তা ইতিমধ্যে মানা হয়েছে। এদিন সিপির হাজিরাতে খুশি আদালত। ফের এই ধরনের আদালত অবমাননা যেন আর না হয় এমনটাই হুঁশিয়ারি বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার।
পঙ্কজ কুমার দুগার নামে এক ব্যক্তির মোবাইল হারানোর ঘটনার জল গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। ২০২২ সালের ওই মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আদালতে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্ট কমিশনার নিজে জমা না দেওয়ার কারণে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে। আবেদন ছিল ১৮ জুন, ২০২২ তারিখে পঙ্কজের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন কোথায় সেটা জানাতে হবে মোবাইল সংস্থাকে। তার সাথে আবেদন ছিল, আলিপুর পুলিস কোর্ট থেকে হাজরা ক্রসিং ও কালীঘাট ফায়ার স্টেশন পর্যন্ত পুর এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়ার। আদালত পুলিস কমিশনারকে যাবতীয় ফুটেজ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু কমিশনার রিপোর্ট না দিয়ে কালীঘাট থানার ওসি ওই রিপোর্ট জমা দেন।
হাই কোর্টের নির্দেশ না মানায় কলকাতার পুলিস কমিশনারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। পরবর্তী শুনানি ২২ মার্চে ভার্চুয়ালি হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় সিপি-কে। অভিযোগ ওঠে একটি মোবাইল ফোন চুরির মামলায় কলকাতার পুলিস কমিশনারকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা তিনি মানেননি। আদালত অবমাননার সেই অভিযোগ শুনেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, "আদালতের নির্দেশ কি খেলার জিনিস? পুলিস কি মনে করছে আদালতের নির্দেশ না মানলেও চলবে? ভুলে যাবেন না হাই কোর্টের ক্ষমতা কত? কেন আদালত অবমাননার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেব না?"
কলকাতার আরও একটি বেআইনি নির্মাণকে জরিমানার অঙ্ক দ্বিগুণ করে দু- লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের। বেআইনি নির্মাণগুলির ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট যে চরম পদক্ষেপের পথে হাঁটছে তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কলকাতার নন্দীবাগান এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক দ্বিগুণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। এর আগে ওই বেআইনি নির্মাণের জন্য প্রোমোটারকে এক লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। বুধবার সেই অঙ্ক বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করেছেন বিচারপতি সিনহা।
কিন্তু কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ঠিক এমন নির্দেশ? কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বোরোর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দীবাগান এলাকায় কোনরকম অনুমতি ছাড়া একটি তিন তলার বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছিল। নজরে আসতেই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু পুরসভায় পাল্টা ওই বেআইনি নির্মাণকে আইনি অনুমোদন দেওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছিলেন প্রোমোটার। তাতে কাজ না হওয়ায় পরে প্রমোটার নিজেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আবেদন ছিল নির্মাণটিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারপতি সিনহা তাতে কোন আমল দেননি। উল্টে প্রোমোটার কে ১৮ মার্চের মধ্যে জরিমানা বাবদ এক লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু সেই নির্দেশ পালন না করে পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রোমোটার। যেহেতু সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি তাই বুধবার বিচারপতি সিনহার কাছে জরিমানার অঙ্ক জমা দেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় চান প্রোমোটারের আইনজীবী। আর এতেই চটে যান বিচারপতি। তিনি বলেন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি এবং ইচ্ছাকৃত জরিমানা এড়ানোর জন্য ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রোমোটার। চূড়ান্ত সাহসিকতার কাজ করছে প্রোমোটার। তাই তাকে এবার দ্বিগুণ জরিমানা দিতে হবে। এরপরই বিচারপতি নির্দেশে জানিয়ে দেন, ২২ মার্চের মধ্যে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে ওই প্রোমোটারকে। ২৭ মার্চ তার রশিদ জমা দিতে হবে আদালতে। সেইদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি।
২০২২ সালের টেটে ১৫ প্রশ্ন ভুলের মামলায় পর্ষদের কাছে হলফনামা তলব কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার। আদালতের নির্দেশ মত, পরবর্তী শুনানিতে পর্ষদকে দিতে হবে রিপোর্ট। আগামী ২ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি।
চাকুরী প্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এদিন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ১৫ প্রশ্ন ভুল মামলার প্রশ্নগুলো বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে করা হয়ছে বলে জানিয়েছে পর্ষদ।তাই বিশেষজ্ঞদের মতামত পর্ষদকে দিতে হবে। তা না হলে পর্ষদের যুক্তি গ্রাহ্য হবে না।
পর্ষদের আইনজীবী সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিশেষজ্ঞদের মতামত প্রকাশ্যে আনতে হলে বিশেষজ্ঞদের নাম প্রকাশ করতে পারবে না পর্ষদ।
বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা জানান, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের নাম প্রকাশ না করেও মতামত দেওয়া যায়। তবে পর্ষদের বক্তব্য জানতে চায় আদালত। টেটে প্রশ্নপত্র ভুলের অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে পরীক্ষার্থীরা। বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসে আবেদন করেন ৫০০ পরীক্ষার্থী। ২০২২ সালের টেটের প্রশ্নপত্রে ১৫ টি প্রশ্ন ভুল ছিল বলে, অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের। যার ফলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। প্রশ্ন ভুল নিয়ে পর্ষদকে স্থায়ী সমাধান বের করতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, যদি পর্যদ কোনও সমাধান সূত্র বের করাতে না পারে তাহলে হাইকোর্টই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। অবশ্য এই প্রথম নয় আর আগেও হাইকোর্টে টেটের প্রশ্ন ভুলের মামলায় নিজেদের ভুলের কথা স্বীকার করেছিল পর্ষদ। এখন দেখার বিশেষজ্ঞদের মতামত আদালতে দেওয়ার ক্ষেত্রে পর্ষদ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
লোকসভা নির্বাচনের আবহেই মতুয়া মহাসংঘের দায়িত্ব নিয়ে টানাপোড়েন। যার কারণে আদালতের দ্বারস্থ হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁ লোকসভার বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়ার পর থেকেই দ্বিধাবিভক্ত হয়েছে সংঘ পরিবার। এবার মহাসংঘের দায়িত্ব নিয়েও পারস্পরিক বিরোধিতা গড়াল আদালত পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে ক্ষমতা হস্তান্তর সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করে দেয় পুলিস। যার ফলে আদালতের দ্বারস্থ শান্তনু। আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্যায় মামলার করার অনুমতি চেয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের একক বেঞ্চে দ্বারস্থ হন। আগামী বুধবার মামলার শুনানির সম্ভবনা।
সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনায় শেখ শাহজাহান এখন সিবিআই হেফাজতে। ইডি যাতে তাঁকে গ্রেফতার করতে না পারে, সেজন্য আগাম জামিনের আবেদন তিনি জানিয়েছিলেন। সেই জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বার রশিদীর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে৷
রাজ্য পুলিস তাঁকে গ্রেফতার করে। আদালতের নির্দেশ মতো এখন শেখ শাহজাহান সিবিআই হেফাজতে। ইডিও মামলা করেছে কলকাতা হাইকোর্টে। ইডি যেন তাঁকে গ্রেফতার না করে। সেই কারণেই আগাম জামিনের আবেদন জানান শেখ শাহজাহান।
ইডি কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করেছে ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে হামলার ঘটনায়। হেফাজতে থাকা এক অভিযুক্তের সূত্রে তারা শেখ শাহজাহানের নাম জানতে পেরেছে। তার নিজের হাতে লেখা চিঠি থেকে শেখ শাহজাহানের নাম উঠে এসেছে। সওয়ালে দাবি করেছে ইডি। সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময় তাদের মারধর করা হয়। আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। পরে আবার তল্লাশি চালাবার আগেই সব সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এমনই আদালতে দাবি করেছে ইডি।
এখন চার দিনের সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন শেখ শাহজাহান। চলতি সপ্তাহতেই ফের তাকে বসিরহাট আদালতে তোলা হবে। এদিকে শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ জিয়াউদ্দিন মোল্লাকেও সিবিআই গ্রেফতার করেছে। গতকাল, সোমবার সিবিআই তাঁকে তলব করেছিল। তিনি নিজাম প্যালেসে সিবিআই জেরার মুখোমুখি হন। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
সন্দেশখালি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার সঙ্গে মোট চারটি মামলা একত্রে শুনানি করতে চায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হয়েছে, কিন্তু সন্দেশখালিতে এখনও শাহজাহানের ভয় বর্তমান। সেখানে এখনও তার অনেক ছায়ারা ঘোরাফেরা করছে। মানুষের হিউম্যান রাইটস লঙ্ঘিত হয়েছে। এখনও শান্তি ফেরেনি সন্দেশখালিতে। তাই সন্দেশখালিতে শান্তি ফেরানো নিয়ে চিন্তিত আদালতের তৈরি করা আদালত বান্ধব এবং মামলার আবেদনকারীরা। তাঁরা আদালতে দাবি করেন, সন্দেশখালিতে দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনার। সার্বিক শান্তি ফেরাতে প্রধান বিচারপতির কাছে আর্জি জানান তাঁরা। প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার বার্তা দেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। আগামী ৪ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি।
অন্যদিকে, শেখ শাহজাহানের আইনজীবী দৃষ্টি আকর্ষণ প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের। প্রধান বিচারপতির নির্দেশের প্রেক্ষিতেই গ্রেফতার হয় শেখ শাহজাহান। তাই তাঁর জামিনের বিষয়ে শুনানি এখানেই করা হোক বলে আদালতে আবেদন করেন শাহজাহানের আইনজীবী। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন শেখ শাজাহানকে জামিনের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের নির্দিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানাতে হবে।
সন্দেশখালির ঘটনায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আর্জিও বৃহস্পতিবার জানানো হয় কোর্টে। বিশেষত যারা এলাকায় থাকেন তাদের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা প্রয়োজন। যেহেতু সিবিআইয়ের হাতে এখন তদন্ত হস্তান্তর করা হয়েছে। সিবিআইকেই এই মামলায় যারা সাক্ষী হিসাবে কোনও বয়ান দিয়েছে বা কথা বলেছে তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে নির্দিষ্ট আইন ও গাইডলাইন মেনে। এই আবেদনের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন তদন্তকারীদের এই ব্যাপারে আদালতকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল এদিন আদালতে জানান সন্দেশখালিতে প্রায় ৮০ জন আক্রান্ত রয়েছেন, যাদের অভিযোগ রয়েছে। একথা শোনার পর, আক্রান্তদের বিষয়ে জানাতে প্রধান বিচারপতি একটা আবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন তাঁর বেঞ্চে বিচারাধীন মামলায়। এলাকার মানুষ যারা আক্রান্ত বলে অভিযোগ জানাতে চান তারা তাদের পরিচয় এবং কিভাবে আক্রান্ত ওই আবেদনে স্পষ্ট করে জানাতে হবে।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল রাজ্যের! রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। এমনকি ইডির তরফে এই ম্যামলায় দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, ইডির আবেদন গ্রহণ করেছেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চ। কিছুক্ষণ পরই শুরু হবে শুনানি।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি ইডির ওপর হামলার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। এবং শেখ শাহজাহানকে গতকাল বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে সিআইডিকে সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। সেই কারণে গতকাল সিআইডির পক্ষ থেকে শেখ শাহজাহানকে সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ, রাজ্যের এই আবেদন খারিজ করে দিয়ে আবার কলকাতা হাইকোর্টে তাদের ফেরত পাঠিয়েছে। তারপরই রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল ইডি।
প্রধান বিচারপতি আজ এজলাসে না বসায়। প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের মামলার শুনানি হবে বিচারপতি হরিশ টন্ডন বিচারপতি হিরণময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। ফলে এটা স্পষ্ট যে এই ঘটনায় এখনও অবধি আদালতে জোড়া ধাক্কার মুখে রাজ্য।
সন্দেশখালি-কাণ্ডের মূল চক্রী শেখ শাহজাহানকে সিবিআই-এর হেফাজতে হস্তান্তরের নির্দেশ। পাশাপাশি, সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তও করবে সিবিআই। মঙ্গলবার এমনটাই নির্দেশ প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের। সেইমত আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার সিবিআই এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে শাহজাহানকে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ভবানী ভবনে প্রবেশ করল সিবিআই আধিকারিকরা। হাইকোর্টের নির্দেশে বিকেল সাড়ে চারটের মধ্য়ে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এর আগে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। গত সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই শুনানিতে সন্দেশখালি-কাণ্ডের মূল চক্রী শেখ শাহজাহান কার হেফাজতে থাকবে, তা নিয়ে ইডি, সিবিআই এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে জোর সওয়াল হয়। এই ইস্যুতে ইডির বক্তব্য ছিল যে, শাহজাহান যতক্ষণ পর্যন্ত সিআইডি হেফাজতে থাকবে, তত বেশি তথ্য প্রমাণ লোপাট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। তাই শাহজাহানকে সিবিআই-এর হেফাজতে দেওয়া হোক।
পাশাপাশি, মামলার তদন্ত সিবিআই-কে দেওয়ার আর্জিও জানান ইডি আধিকারিকরা। শুনানি শেষে সেই মামলার রায়দান স্থগিত রাখে আদালত। মঙ্গলবার ইডির ওই দাবিকে মান্যতা দিয়েই সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে শাহজাহানকে সিবিআই-এর হাতে হস্তান্তরের নির্দেশও দেয় আদালত।
কীভাবে জামিন পাওয়ার পরও কাউকে গ্রেফতার করা যায়? সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিআইএম নেতা নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করে রাজ্য পুলিসকে তীব্র ভর্ৎসনা বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের। গোটা ঘটনায় পুলিস সুপারের রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট।
শতাধিক নারীর অভিযোগ যার বিরুদ্ধে, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস গ্রেফতার করেছিল সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদকে। ১৭ দিন ধরে জেলে ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার নিরাপদ সর্দারের জামিন মঞ্জুর করে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ যথেষ্ঠ বোকা বোকা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে নিরাপদকে। এভাবে কোনও নাগরিককে কি গ্রেফতার করা যায়? রাজ্যের আইনজীবী রুদ্রদীপ নন্দীর কাছে জানতে চান বিচারপতি।
নিরাপদের নামে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয় ৯ ফেব্রুয়ারি। তবে তাঁর নামে জেনারেল ডায়েরী করা হয় ১০ ফেব্রুয়ারি। এফআইআর-এর পর একই অভিযোগের ভিত্তিতে কীভাবে জেনারেল ডায়েরীহল? পুলিস তা নিল কীভাবে? এই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। এমনকি, যাঁরা নিরাপদকে অযাচিতভাবে গ্রেফতার করলেন, সেই পুলিস অফিসারদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কেন গ্রেফতারি নয়? এতগুলো দিন তাঁর জেলে থাকার দরুন ক্ষতিপূরণই বা দেবে কে? বিচারপতির এমন প্রশ্নে যে চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য এবং রাজ্য পুলিস, তা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই যখন সন্দেশখালির নারীরা রাস্তায় বেরিয়ে শিবু হাজরার গ্রেফতারির দাবি তুলেছিল, তখন অন্তরালে থেকেই শিবু হাজরা ১১১ জনের নামে এফআইআর দায়ের করেন থানায়। যে ১১১ জনের নামের মধ্যে প্রথম নাম ছিল এই নিরাপদ সর্দার। তখনই, পুলিস এক অভিযুক্তর অভিযোগের ভিত্তিতে অতিসক্রিয়তা দেখিয়ে গ্রেফতার করে নিরাপদকে। বিচারের বাণী শেষমেশ আলো দেখালো। রাজ্য পুলিসের একতরফা অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও বাড়ছে সন্দেশখালির, মত ওয়াকিবহাল মহলের।
সন্দেশখালির পুলিস শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারবে, নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। সন্দেশখালি জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের। এমনকি শেখ শাহজাহানের নামে লুক আউট নোটিশ দিতে হবে। দুটো সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে হবে রাজ্যকে, এমনটাই নির্দেশ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম-এর। প্রায় দু'মাস কেটে গেল এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। কবে গ্রেফতার হবে তাঁর...?
গতকাল অর্থাৎ রবিবার সংবাদ মাধ্য়মের সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, শেখ শাহজাহানকে সুরক্ষা দিয়েছে আদালত। তাই তাঁর গ্রেফতারিতে কোনও বাধা নেই। আজ, সোমবার বিষয়টি নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলায় নিযুক্ত আদালত বান্ধব জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। বিষয়টি শোনার পরই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তথ্য খারিজ করে প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি বিষয়ে আদালত কোনদিনও কোনওরকম স্থগিতাদেশ দেয়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে সন্দেশখালির থানা চাইলেই শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারে।
প্রায় এক বছর সাত মাস ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেল হাজতে রয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি অন্যতম অভিযুক্ত। এমন দাবি ইডি ও সিবিআই করে এসেছে বরাবর৷ এবার ইডির বিশেষ অধিকর্তার রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলায় এই তলব বলে জানা গিয়েছে। কবে থেকে নিম্ন আদালতে বিচারপর্ব শুরু করা সম্ভব? সেই বিষয়ে রিপোর্টে আদালতকে জানাতে হবে। বুধবার এমনই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
এদিনের আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, অনির্দিষ্টকালের জন্য কাউকে হেফাজতে রাখা যায় না। এক বছর সাত মাস জেলে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। সেই কথা ঠিক আছে। কিন্তু আর কতদিন? ইডির আইনজীবী ও আধিকারিকের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন বিচারপতির।
প্রেসিডেন্সি জেলের পহেলা বাইশ বিশেষ সেলে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বান্ধবী অর্পিতাও জেল হেফাজতে। একের পর এক তথ্য সামনে এসেছে তদন্ত মাধ্যমে। অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল। একের পর এক সম্পত্তির হদিশ মিলেছিল। তৃণমূলের সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা, দলের মহাসচিবের জায়গা হয়েছিল গারদের ওপাড়ে। দল তার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার মতোই। মন্ত্রিসভা থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেভাবে এত দিনে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কথা খরচ করেনি।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেশ কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে জামিনের আবেদন করে এসেছেন। নিজে জামিনের সওয়াল করেছেন। তিনি কোথাও যাবেন না। বাড়িতেই থাকবেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থ। এভাবে আর জেলবন্দি থাকতে পারছেন না। আদালতে বহু বার এমন কথা বলে কাতর আবেদন করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কোনওবারই জামিন মেলেনি৷ ইডি ও সিবিআই বরাবর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রভাবশালী বলে আখ্যা দিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম মুখ। এই দাবিও করা হয়েছে। জামিন বরাবর না মঞ্জুর হয়েছে আদালতে।
এবার আদালত এই বিষয়ে নিজেই প্রশ্ন করেছে৷ আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি। ওই দিন ইডিকে এই বিষয়ে বক্তব্য রাখতে হবে। তাহলে কি এবার শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া?
এবার সংশোধনাগারে গর্ভবতী হয়ে পড়ছেন মহিলারা। সংশোধনাগারে মৃত্যু হলেই বন্দিদের মৃতদেহ পাচার করে দেওয়া হচ্ছে? এমন অভিযোগে আদালতের নির্দেশে ক্রিমিনাল বেঞ্চের মামলায় এবার রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব কলকাতা হাইকোর্টের।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন আদালত বান্ধব আইনজীবী তাপস ভঞ্জ জানান, সুপ্রিম নির্দেশে আদালত বান্ধব পশ্চিমঙ্গের বিভিন্ন আদালত ঘুরে দেখেন। তিনি চাক্ষুষ করেন, কীভাবে মহিলারা সংশোধনাগারে অত্যাচারিত হয়। পরবর্তীতে সেই সংক্রান্ত আরও তথ্য সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও জানান আইনজীবী তাপস ভঞ্জ।
মামলার শুনানি চলাকালীন এসব শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, সন্ধ্যে ছয়টার মধ্যে সব বন্দিদের জেলে প্রবেশ করানোই নিয়ম। এর অন্যথা হলে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। এটা কারোর ক্ষমতা দেখানোর বা চ্যালেঞ্জিং বিষয় না, এটা মহিলাদের সুরক্ষা এবং সকল বন্দিদের জীবনের প্রশ্ন। এরই সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের এটা মাথায় রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চ।
অবশেষে মামলায় মঙ্গলবারের শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ৮ মার্চের মধ্যে রাজ্যকে জানাতে হবে জেল সংক্রান্ত সব তথ্য। কীভাবে বন্দিদের সংশোধনাগারে রাখা হয়? মহিলাদের সেল ওভার ক্রাউডেড কিনা? মেডিক্যাল সাপোর্ট কীভাবে দেওয়া হয়? সংশোধনাগারে গাইনো চিকিৎসক কতজন আছেন? কোন পর্যায়ে অসুস্থ বন্দিদের চিকিৎসা দিতে বাইরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়? মহিলা বন্দিদের সংশোধনাগারে প্রবেশ ও থাকার সময় কোথায় কত কর্মী কতক্ষন ডিউটি করেন? এই সব তথ্য রাজ্যের তরফে দিতে হবে আদালতে।
সন্দেশখালিতে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা-সহ পুলিসি নিষ্ক্রিয়তা এবং কিছু ক্ষেত্রে পুলিসি অতিসক্রিয়তার অভিযোগে সরব মামলকারী সংযুক্তা সামন্ত। সন্দেশখালি বাসিন্দা বিশেষ করে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের কাছে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান মামলাকারী সংযুক্তা সামন্ত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই মুহূর্তে দ্রুত শুনানির প্রয়োজনীয়তা নেই। তালিকা মোতাবেক নির্দিষ্ট দিনে শুনানির জন্য উঠবে এই মামলা। আদালতে মনে করছে, প্রাথমিক তদন্তে অনেকে গ্রেফতার হয়েছে, পরিস্থিতি আপাতভাবে নিয়ন্ত্রণে। কোর্ট নির্দেশে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারও করেছে প্রশাসন। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলা হাইকোর্টে শুনানির জন্য উঠতে পারে বলে আদালত সূত্রে খবর। তাই এই মুহূর্তে দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ হাইকোর্টের।
এদিকে সোমবার আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, মামলাকারী কে, কোন সমাজকর্মী, কোন বিশেষ ব্যক্তি? আপনি নিজে সন্দেশখালি গিয়েছিলেন? আইনজীবীর পাল্টা জাবাব, না, আমি যাইনি। তবে ওখানের পরিস্থিতি আলাদা। প্রধান বিচারপতির পাল্টা সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে জনস্বার্থ মামলা করছেন? সিঙ্গল বেঞ্চ আজ সন্দেশখালির মামলা শুনবে, সেটা আগে দেখুন। তবে আইনজীবীর মন্তব্য, শুধু মিডিয়া রিপোর্ট নয়। রাজ্যপালের রিপোর্টও রয়েছে মামলায়। এভাবেই সওয়াল-জবাবের পর প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন তালিকা মোতাবেক নির্দিষ্ট দিনেই শুনানির জন্য উঠবে মামলা।
উল্লেখ্য, মামলাকারী সংযুক্তা সামন্ত সিআরপিএফ-এর পাশাপাশি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ও মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু যেহেতু মামলাকারী সন্দেশখালি এলাকার বাসিন্দা নয়, পাশাপাশি তিনি সেখানে যাওয়ার চেষ্টাও পর্যন্ত করেননি, তাই এই মুহূর্তে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মনে করছেন দ্রুত শুনানির আর্জিতে সাড়া দেওয়া সম্ভব নয়।
পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। সমাধানের নামে দুর্নীতি হয়েছিল, উঠেছিল এমনই অভিযোগ। জানা গিয়েছিল, পাড়ায় সমাধানের রেকমেন্ডেশনে একাধিক শিক্ষক বদলি করা হয়েছিল। তবে প্রশ্ন জেগেছিল, এই 'পাড়ায় সমাধান'-এর আইনি বৈধতা কী? কাদের সিদ্ধান্তে ওই শিক্ষকদের বদলি? আগেও জানতে চেয়েছিল আদালত।
সম্প্রতি এই মামলায় বোর্ডের কাছে আদালত হলফনামা চাইলে, সেই হলফনামায় বোর্ডের উল্লেখ, কমিশনের নির্দেশেই ওই সকল বদলি করা হয়েছিল। শুধু তাই না, সেখানে সই ছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীরও। এরপরেই সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ২১৬ জন শিক্ষকের বদলিতে মন্ত্রীর এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিচারপতির মন্তব্য, বোর্ডের হলফনামায় প্রকাশ, পাড়ায় সমাধান থেকে আসা রেকমেন্ডেশনের আবেদন গৃহীত হয়ে বদলি হয়েছে কমিশনের নির্দেশে। এরপরেই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কমিশনকে এই নির্দেশ কে দিল? মিনিস্টার ইন চার্জই বা কীভাবে সই করলেন? সেই রেকর্ড আদালতের কাছে পেশ করতে হবে বলেই মন্তব্য করেন বিচারপতি। শুধু তাই না, মামলায় রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি হয়েছে সামনে এসেছে। এরপর রাজ্য ঠিক করুক, এই মামলার তদন্ত রাজ্য তার হাতে রাখবে, নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দেবে আদালত।
যদিও সমস্ত প্রশ্নের উত্তরেই রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার কিছু সময় লাগবে। তাঁকে বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করতে হবে, আর তার জন্যই সময় চাওয়া বলে জানান আইনজীবী কিশোর দত্ত। সোমবার পাড়ায় সমাধান মামলার শুনানির শেষে বিচারপতির নির্দেশ, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যকে এই মর্মে তাদের সব বক্তব্য পেশ করতে হবে আদালতে। এখন দেখার পরবর্তী শুনানিতে কোন দিকে মোড় নেয় পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির মামলা।