বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ। কিন্তু, এবারও দলে ফেরা সম্ভব হল না হার্দিক পাণ্ডিয়ার। ৫ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও তিনি অনিশ্চিত। আদৌ কি বিশ্বকাপের একটি ম্যাচেও আর দেখা যাবে হার্দিককে ? বৃহস্পতিবার ম্যাচের আগে হার্দিককে নিয়ে বড় আপডেট দিলেন রোহিত শর্মা।
কী জানালেন ভারতীয় অধিনায়ক ? রোহিত জানিয়েছেন, হার্দিক ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি করছেন। খুব শীঘ্রই তাঁকে আবার মাঠে দেখা যাবে। তবে, কবে, সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি হিটম্যান।
রোহিতের কথায়, "হার্দিকের উন্নতি হচ্ছে ভালই। এটাকে ঠিক রিহ্যাব বলা চলে না। তবে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে হার্দিক যাচ্ছে,যে ভাবে উন্নতি করছে তাতে আমরা খুশি। কিন্তু এটা এমন ধরনের চোট যেখানে আমাদের প্রতি দিন নজর রাখতে হবে। হার্দিক কতটা সুস্থ, কত শতাংশ ফিট হয়েছে সেটা নজর করতে হবে। তবে এটা বলতে পারি, হার্দিকের উন্নতি যে ভাবে এগোচ্ছে তাতে খুব শিগগিরই আমরা ওকে মাঠে দেখতে পাব।'
হার্দিক পান্ডিয়ার অনুপস্থিতিতে প্রয়োজনে তিন স্পিনার এবং দুই ফাস্ট বোলারকেও খেলাতে পারে ভারতীয় দল। এই বিষয়ে রোহিত বলেন, ' হার্দিকের অনুপস্থিতিতে আমি আমার সব বিকল্প খোলা রেখেছি। পরিস্থিতি যদি দাবি করে, আমরা অবশ্যই তিনজন স্পিনার নেব। আমাদের বোলাররা পরিস্থিতির সুবিধা নিতে জানে।’
প্রসূন গুপ্তঃ একেবারে অন্দরের খবর যে বাংলাদেশ ম্যাচে পায়ে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান হার্দিক পাণ্ড্য। বিশ্বকাপে ভারতের পক্ষে এটি মোটেই সুবিধার বিষয় নয়। এখনও পর্যন্ত ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপের যে খেলা হয়েছে নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে টিম ইন্ডিয়াই সেরা। ৫টি ম্যাচের প্রতিটিতে জিতেছে ভারত এবং দাপটের সঙ্গে। কখনওই সমস্ত উইকেট হারায়নি তারা। এক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ৪৮ ওভার অবধি খেলা গড়িয়েছিল। ভারতের পরেই নিউজিল্যান্ডের অবস্থান। এবারে দুটি কঠিন দল অপেক্ষা করছে, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ঠিক এই সময়ে হার্দিকের প্রয়োজন ছিল দলে, কিন্তু জানা যাচ্ছে তাঁর পায়ের চোট অনেকটাই। সারতে অন্তত দিন কুড়ি সময় ন্যূনতম লাগা উচিত বলেই সূত্রের খবর।
যে কোনও দল কতটা শক্তিশালী তা নির্ণয় হয় দলে কতজন অলরাউন্ডার আছে তার উপরে। ১৯৮৩-তে ভারতীয় দল তেমন আহামরি ছিল না কিন্তু দলে নিয়মিত ৬জন অলরাউন্ডার ছিল। ২০১১ তে যুবরাজ সিং সহ বেশ কয়েকজন ব্যাটার বল করতে পারতেন। এবারের ভারতীয় দলে সঠিক অলরাউন্ডার রয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্য ও জাদেজা। এর মধ্যে হার্দিক যদি মাঠের বাইরে থাকেন তবে তাঁর জায়গা নেবে কে? ৫জন বোলার কি যথেষ্ট? কোনও একজন ফ্লপ করলে ষষ্ঠ বোলার কোথায়? শার্দুল ঠাকুর অনেকটা দলের বোঝা। ব্যাট পরীক্ষিত নয়, বোলিং খুব কাজের নয় কাজেই হার্দিকের জায়গা নেবে কে। হার্দিক চোট পাওয়াতে দুটি পরিবর্তন করতে হয়েছিল কিউইদের সঙ্গে। মহম্মদ শামি এবং সূর্যকুমার যাদব। এবারে শামি অসাধারণ বল করতে ম্যাচ উৎরে গিয়েছিলো কিন্তু এরপর নকআউট পর্যায়ে ষষ্ঠ বোলার তো দরকার। ভারতীয় বোর্ড আরও অপেক্ষা করতে চাইছে। যদি আগামী সপ্তাহে ঠিক না হয় তবে হয়তো খেলোয়াড় বদল হতে পারে। কিন্তু কে হবেন সেই খেলোয়াড়? জানা যায়নি।
চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (বিধায়ক/অভিনেতা): ক্রিকেট ফুটবল আমার জীবনের চলার পথে অন্যতম সাথী। এক সময়ে ছেলেবেলায় দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে খেলেওছি। খেলা দেখা আমার একটা নেশা। বিশ্বকাপ ফুটবল হোক বা ক্রিকেট, দেখতে তো হবেই। পুজোর সময়ে আমার কেন্দ্রে যাওয়া আসা থাকবে কিন্তু তারই ফাঁকে আজকের অধিনায়ক মোবাইলে খেলায় চোখ রেখেছি। আমার কাছে সব ম্যাচই প্রাধান্য পায়। আমি আগের লিখনিতে লিখেছিলাম যে, দুরন্ত ফর্মে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। আমাদের প্রথম চার ব্যাটার অর্থাৎ রোহিত, গিল, কোহলি এবং রাহুল প্রায় প্রতিদিনই ভালো ব্যাট করে দিচ্ছে কিন্তু তার আগে বোলিংয়ে বুমরা, সিরাজ এবং জাড্ডু ও কুলদীপ এতটাই ভালো বল করছে যে ব্যাটারদের টেনশন নিতে হচ্ছে না। আমি একটা ব্যাপার দেখে অবাক হচ্ছি, চারটি ম্যাচেই উল্টোদিকের দল শুরুটা বেশ ভালো করেও শেষ পর্যন্ত হঠাৎ খেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও বাংলাদেশের একই ব্যাপার। দিব্বি শুরু করেছিল লিটন দাস। ৯০ রান উঠে যাওয়ার পরে মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশ আজ হয়তো ৩০০ পার করবে কিন্তু হঠাৎ গুটিয়ে গেলো। জাড্ডু বা জাদেজা যেমন ফিল্ডিং করেছে তেমনিই বোলিং কিন্তু ম্যাচের সেরা হলো সেঞ্চুরি করা কোহলি। ভারত ফের ৭ উইকেটে জিতলো। এখন এটা একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
ভারতের এখন যা দলগত অবস্থা, আমি বলবো সর্বকালের সেরা একদিবসীয় দল। ওপেনিংয়ে রোহিত নিয়মিত ভালো রান পাচ্ছে কিন্তু ওঁর একটাই সমস্যা, ছক্কা হাঁকাতে চায়। মারবে না কেন? মারার জন্যই তো স্বল্প ওভারের ক্রিকেট কিন্তু একেবারে অনসাইড হিটার। একটা সিক্সারের পর ফের পরের বলেও ওই চেষ্টা। কালকে আউটও হলো ওই ভাবেই। ও অধিনায়ক এটা ভুলে গেলে চলবে কেন? আমি বরং বলবো টপ ফর্মে খেলছে বিরাট কোহলি। জীবনের অন্যতম সেরা ফর্মে আছে। ফের বলতেই হয় সচিনের অভাব পেতে দিচ্ছে না বিরাট। অসাধারণ খেলা। কি ধৈর্য কি পরিশ্রম। মাঠ কামড়ানো স্ট্রোক। কিন্তু আমার চিন্তা হার্দিক প্যান্ডিয়াকে নিয়ে। কাল পায়ের গোড়ালিতে ছোট পেয়ে গেলো। দেখুন চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে মিডলে এমন একজন খেলোয়াড় দরকার যে ব্যাট করবে আবার বলটিও করবে। অর্থাৎ অলরাউন্ডার। দেখবেন অলরাউন্ডারদের জন্যই ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুবার। ১৯৮৩-তে কপিল, মহিন্দার, ২০১১-তে যুবরাজ সিং। এবারে সেই কাজটিও করা দরকার এবং এক্সপার্ট হচ্ছে হার্দিক। আমি মনে করি শার্দুল ঠাকুর মোটেই সেই কাজটি করতে পারবে না। শ্রেয়স কিন্তু ভালো খেলছে না, আবার সে বোলারও নয়। সুতরাং হার্দিক ফিরে আসুক। (অনুলিখনঃ প্রসূন গুপ্ত)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পঞ্চম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারের দায় নিজের ঘাড়েই নিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। তাঁর কথায়, হার-জিত একটা প্রক্রিয়ার অঙ্গ। সেটা থেকে শেখাই আসল। ভুল থেকেই শিক্ষা নিতে হবে। সেই শিক্ষা নিয়েই তাঁরা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, রবিবারের ম্যাচে ব্যাটিং ও বোলিং দুই দিক থেকেই ব্যর্থ ভারত। ৮ উইকেট বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ম্যাচের হার্দিক সংবাদমাধ্যমকে ভারতের হারের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। মূলত, ব্যাটিংকেই দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর ব্যর্থতার কথাই উল্লেখ করেছেন। হার্দিক বলেন, "প্রথম দশ ওভারের পরেই আমরা পিছিয়ে পড়েছিলাম। বিশেষত আমি ব্যাট করতে আসার সময়। আমি আসার পর রানের গতি কমে যায়। যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে খেলতে পারিনি। যার মাশুল দিতে হল।'
হার্দিক আরও বলেন,'আমি মনে করি নিজেদের পরীক্ষার মধ্যে ফেলা উচিত। এই ধরনের ম্যাচগুলোয় করা ভুল থেকেই শিক্ষা নিতে হবে আমাদের।' একইসঙ্গে তিনি এদিন তরুণ ক্রিকেটারদের প্রশংসাও করেন।
উল্লেখ্য, চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দাপটের সঙ্গে খেলে সিরিজে সমতা এনেছিল ভারত। কিন্তু, রবিবার নির্ণায়ক ম্যাচে হার মানতে হল হার্দিকদের। ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে সিরিজ না জিতেই ফিরতে হচ্ছে ভারতকে।
মুম্বইয়ের (MI) বিজয় রথ দৌড়েই চলেছে, তাঁরা যে প্লে অফার লড়াইয়ে ভীষণ ভাবে ঢুকে পড়েছে সেটা পরিষ্কার। বৃহস্পতিবার মুম্বই ২৭ রানে হারিয়েছে গুজরাতকে (GT)। ১২ ম্যাচ খেলে রোহিত শর্মাদের পয়েন্ট ১৪। গুজরাতের কাছে হেরেও আইপিএলের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে হার্দিক পাণ্ড্যরা (Hardik Pandya)। ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে গুজরাত। বাকি ২ ম্যাচের একটি জিতলেই প্লে অফ নিশ্চিত গুজরাতের। ১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। বাকি ২ ম্যাচের একটি জিতলেই প্লে অফে পৌঁছে যাওয়ার কথা সিএসকে-র।
গুজরাত টাইটান্সকে (MI vs GT) ২৭ রানে হারিয়ে আইপিএলে প্লে অফে ওঠার দৌড়ে ভালমতোই রইল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ১২ ম্যাচ খেলে রোহিত শর্মাদের পয়েন্ট ১৪। পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে উঠে এসেছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রাজস্থান রয়্যালস। বাকি ২ ম্যাচ জিতলেই প্লে অফে পৌঁছে যাবেন সঞ্জু স্যামসনরা। অন্তত দশ ম্যাচ খেলে ফেলেছে প্রত্যেকটি দল, অথচ দশ দলের কেউই প্লে অফের দৌড় থেকে ছিটকে যায়নি, কারও প্লে অফের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যায়নি, আইপিএলের (IPL) ইতিহাসে কখনও এ জিনিস হয়েছে?
পয়েন্ট টেবিলে ১২ ম্যাচ খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স। তবে হার্দিক পাণ্ড্যরা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্লে অফের যোগ্যতা পায়নি। বাকি ২ ম্যাচের একটিতে জিতলেই প্লে অফ নিশ্চিত। এমনকী, ২ ম্যাচ হেরে গেলেও প্লে অফে পৌঁছে যেতে পারেন তাঁরা। ১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। বাকি দুই ম্যাচের একটি জিতলেই প্লে অফে পৌঁছে যাবেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট সহ তিন নম্বরে উঠে এল মুম্বই। ১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট লখনউ সুপার জায়ান্টসের। তারা রয়েছে পাঁচ নম্বরে। বাকি তিন ম্যাচের ৩টি জিতলেই প্লে অফ নিশ্চিত। ২টি জিতলেও ভাল সুযোগ থাকবে।
তিন দল রয়েছে ১০ পয়েন্টে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই প্লে অফে ওঠার। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। তারা রয়েছে ছয় নম্বরে। শেষ দুটি ম্যাচই হেরেছেন বিরাট কোহলিরা। বাকি তিন ম্যাচ জিততেই হবে তাঁদের। ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্টে রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। সাতে রয়েছে কেকেআর। শেষ ২ ম্যাচের দুটি জিতলে প্লে অফের দরজা খুলতে পারে নাইটদের সামনে। তবে রান রেট ভাল রাখতে হবে। তার জন্য বড় ব্যবধানে জয় চাই। পাশাপাশি তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলের ফলের ওপর। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে পাঞ্জাব কিংস। নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকায় পয়েন্ট সমান হলেও আরসিবি ও কেকেআরের চেয়ে পিছিয়ে পাঞ্জাব।
ঋদ্ধিমান সাহা ও শুভমন গিলের দাপটে ঘরের মাঠে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ৫৬ রানে হারালেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। ঋদ্ধি ও শুভমন দু’জনে মিলে ১৭৫ রান করেছেন। গোটা লখনউ দল করেছে ১৭১ রান। টসে জিতে প্রথমে গুজরাতকে ব্যাট করতে পাঠান ক্রুণাল। ব্যাটে ঝড় তোলেন শিলিগুড়ির ঋদ্ধি। পেসার, স্পিনার কাউকে রেয়াত করলেন না ঋদ্ধি। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা কাজে লাগান তিনি। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে যশ ঠাকুরকে লং রানের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে অর্ধশতরান করেন ঋদ্ধি। আবেশ খানকে স্কোয়্যার লেগ অঞ্চলে ছক্কা মারতে গিয়ে ৪৩ বলে ৮১ করে আউট হন ঋদ্ধি। তিনি মারেন ১০টি চার ও চারটি ছক্কা। অর্থাৎ, ৮১ রানের মধ্যে ৬৪ রান এসেছে বাউন্ডারিতে।
ঋদ্ধি যতক্ষণ মারছিলেন ততক্ষণ ধরে খেলছিলেন শুভমন। কিন্তু ঋদ্ধি ফেরার পরে আক্রমণাত্মক শট খেলা শুরু করলেন তিনি। বাকি সময়টা শুভমন শো। হার্দিক, মিলাররা তাঁকে সাহায্য করলেন। এ বারের আইপিএলে ভাল ছন্দে রয়েছেন শুভমন। সেটাই আরও এক বার দেখা গেল। ২৯ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। ঋদ্ধির মতো শুভমনেরও শতরান করার সুযোগ ছিল। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলের পরে সেই আশা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু শেষ দুই বলে স্ট্রাইক পাননি শুভমন। তার ফলে ৯৪ রানে অপরাজিত থেকে গেলেন তিনি। দল করল ২২৭ রান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেছিলেন লখনউয়ের দুই ওপেনার কাইল মেয়ার্স ও কুইন্টন ডি’কক। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন তাঁরা। মেয়ার্স এ বারের আইপিএলে ছন্দেই ছিলেন। ডি’ককও প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে হাত খোলা শুরু করেন। মাত্র ৪ ওভারে দলের রান ৫০ পেরিয়ে যায়। পাওয়ার প্লে-তে ৭৮ রান করেন তাঁরা। দেখে মনে হচ্ছিল, টান টান খেলা হতে চলেছে। কিন্তু ৩২ বলে ৪৮ রান করে রশিদ খানের দুরন্ত ক্যাচে আউট হন মেয়ার্স। সেখানেই খেলার ছবি বদলে যায়। ডি’কক নিজের অর্ধশতরান করলেও বাকিরা কেউ রান পাননি। দীপক হুডা, মার্কাস স্টোইনিস, নিকোলাস পুরানরা অল্প রানে আউট হয়ে যান। ৪১ বলে ৭০ রান করে ডি’কক আউট হয়ে গেলে লখনউয়ের জয়ের সব আশা শেষ হয়ে যায়। বল হাতে ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন গুজরাতের মোহিত শর্মা।
ঘরের মাঠে রাজস্থান রয়্যালসের (RR) কাছে হেরেছিল গুজরাত টাইটান্স (GT)। গত মরসুমে ফাইনাল মিলিয়ে তিন বার মুখোমুখি হয়েছিল হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) নেতৃত্বাধীন গুজরাত টাইটান্স ও রাজস্থান রয়্যালস। তিন বারই জিতেছিলেন হার্দিকরা। গত বার রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল সঞ্জুদের। এ বারও দুর্দান্ত ছন্দে দু-দল। ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পরিস্থিতিতে ছিল টাইটান্স। সেখান থেকে অভাবনীয় জয়।
৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জিতল গুজরাত টাইটান্স। তাও আবার ৩৭ বল বাকি থাকতেই। এতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেন হার্দিক নিজেও। উইকেট নিলেন, দুর্দান্ত একটা ক্যাচ এবং অবশ্যই ব্যাট হাতে ১৫ বলে ৩৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। শুরুর ধাক্কা দেন হার্দিক পান্ডিয়া। জস বাটলারকে ফেরান তিনি। জশ লিটলের বোলিংয়ে হার্দিকের দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। সবচেয়ে হতাশার আউট যশস্বীর। গত ম্যাচে শতরান করেছিলেন। এই ম্যাচে অধিনায়কের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ফেরেন যশস্বী। মাঝের ওভারে রশিদ খান এবং নুর আহমেদের আফগান স্পিন জুটির দাপট। রশিদ ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। নুর আহমেদ নিয়েছেন ২ উইকেট। ২০ ওভারও ব্যাট করতে পারেনি রাজস্থান। ১১৮ রানেই অলআউট। যা ৩৭ বল বাকি থাকতেই তুলে নিল টাইটান্স। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামা শুভমন গিল ৩৫ বলে ৩৬ রানে ফেরেন। ঋদ্ধিমান সাহা ৩৪ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। হার্দিক অপরাজিত ১৫ বলে ৩৯ রানে।
লখনউয়ের (LSG) বিরুদ্ধে আবার ব্যাটিং ব্যর্থতার শিকার গুজরাত টাইটান্স (GT)। লখনউয়ে খেলতে নেমে বড় রান করতে পারল না তারা। হার্দিক পাণ্ড্যের (Hardik Pandya) অর্ধশতরান না থাকলে তাদের স্কোর একশোও পেরোত কি না সন্দেহ। ঋদ্ধিমান সাহা এবং হার্দিক বাদে কোনও ব্যাটারই দাঁড়াতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত লখনউয়ের বিরুদ্ধে আগে ব্যাট করে ১৩৫-৬ তুলল গুজরাত।
লখনউয়ের বিরুদ্ধে শুরুতেই ধাক্কা খায় গুজরাত। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান দলের সবচেয়ে ছন্দে থাকা ক্রিকেটার শুভমন গিল। তাঁকে শূন্য রানে ফেরান ক্রুণাল পাণ্ড্য। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য এবং ঋদ্ধিমান সাহা। দু’জনে মিলে গুজরাতের রান তুলতে থাকেন।
কিন্তু লখনউয়ের পিচ খুবই ধীর গতির ছিল। যে কারণে বল ব্যাটে আসছিল দেরিতে। ফলে দ্রুত গতিতে রান তুলতে সমস্যা হচ্ছিল ঋদ্ধি এবং হার্দিকের। ঋদ্ধি তবু একটু বোলারদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করছিলেন। তবু খুব বেশি আগ্রাসী ব্যাটিং দেখা যায়নি। মরসুমের প্রথম অর্ধশতরান হয়ে যেতে পারত ঋদ্ধির। অল্পের জন্য তা হয়নি। ৩৭ বলে ৪৭ রান করে ফেরেন। অফস্টাম্পের বাইরে লোপ্পা বল ফেলেছিলেন ক্রুণাল। ঋদ্ধি ছয় মারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শটে জোর ছিল না। লং অনে সহজ ক্যাচ নেন দীপক হুডা।
ঋদ্ধি যাওয়ার পরের ওভারেই অভিনব মনোহরকে হারায় গুজরাত। বড় রান করতে পারেননি বিজয় শঙ্করও (১০)। এই অবস্থায় দলের রান তোলার ভার নিজের কাঁধেই তুলে নেন হার্দিক। শেষের দিকের ওভারগুলিতে মারতে দেখা যায় তাঁকে। রবি বিষ্ণোইয়ের ১৮তম ওভারে ওঠে ১৯ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলেই মার্কাস স্টোয়নিসকে ছয় মারেন হার্দিক। তবে দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে যান।
অল্প রানের জবাবে শেষ ওভারে গিয়ে জয় পেলো গুজরাত (Gujarat Titans)। বৃহস্পতিবার পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ৬ উইকেটে জয়লাভ করল গুজরাত। বৃহস্পতিবার টসে জিতে, পঞ্জাবকে (Punjab) প্রথম ব্যাট করতে পাঠায় হার্দিকরা (Hardik Pandya)। ব্যাটে নেমে খুব ভালো শুরু হয়নি পঞ্জাবের। প্রথম দিকে উইকেট হারানোর পর শর্ট, জিতেশ শর্মা ও স্যাম কারাণের ব্যাটের উপর ভরসা করে, ২০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান করে পঞ্জাব। জবাবে ব্যাট করতে নেমে খুব ভালো শুরু করে গিল ও ঋদ্ধিমান সাহা। কিন্তু শেষের দিকে গিয়ে রান রেট স্লো হয়ে গেলে, শেষ ওভারে গিয়ে ম্যাচ জিততে হয় গুজরাতের।
বৃহস্পতিবার টসে জিতে প্রথম বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন হার্দিকরা, ব্যাট করতে পাঠায় পঞ্জাবকে। ব্যাটে নেমে ভালো শুরু হয়নি তাদের। শিখর ধাওয়ান রান না পেলেও, ২৪ বলে ৩৬ রান করেন শর্ট। পাশাপাশি শাহরুখ খান ও স্যাম কারাণ ২২ রান করে। স্যাম কারাণ ২২ বলে ২২ রান করে, ও শাহরুখ খান ৯ বলে ২২ রান করে।
ওদিকে ১৫৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে, ভালো শুরু করে ঋদ্ধিমান সাহা ও গিল। গিল ৪৯ বলে ৬৭ রান করে এবং ঋদ্ধিমান ১৯ বলে ৩০ রান করে। এক বল বাকি থাকতেই নিজের প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় গুজরাত। প্রথমে বল করতে নেমে গুজরাতের শামী, লিটল, রশিদ ও জোসেফ একটি করে উইকেট পান। দুটি উইকেট পান মোহিত শর্মা। ওদিকে পঞ্জাবের পক্ষে অর্ষদীপ, রাবাডা, হারপ্রীত ও স্যাম কারাণ একটি করে উইকেট নেন।
হার্দিক (Hardik Pandya) নেই দলে (GT), অতিরিক্ত সুবিধা কি নিতে পারবে কেকেআর (KKR)? রবিবার দুপুরে হঠাৎ হার্দিকের বদলে টস করতে এলো রশিদ খান। তখনিই খটকা হয়েছিল, টস শেষে রশিদই জানিয়ে দিল হার্দিক নেই, সামান্য অসুস্থতার জন্য ওকে বাইরে রাখতে হয়েছে।
আইপিএলে কলকাতার বিরুদ্ধে টস করতে নামেন রশিদ খান। টসে জেতেন রশিদ। প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তারপরেই গুজরাতের পরিবর্ত অধিনায়ক বলেন, ‘হার্দিক একটু অসুস্থ। তাই এই ম্যাচে ও খেলছে না। খুব একটা ভয়ের কিছু নেই। ওকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইছি না। অনেক বড় প্রতিযোগিতা। আশা করছি পরের ম্যাচেই ওকে পাব আমরা।’
এ বারের আইপিএলের শুরু থেকেই গুজরাতের অধিনায়কত্ব করেছেন হার্দিক। দল জিতলেও ব্যাটে-বলে খুব একটা ভাল খেলতে পারেননি তিনি। অবশ্য হার্দিক যে খেলবেন না তা আগে থেকে জানায়নি গুজরাত। ম্যাচের আগে কিছু জানা যায়নি। একেবারে টসে বোঝা যায়, অধিনায়ক ছাড়াই কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে গুজরাত।
ব্যাটে-বলে খুব বেশি ছন্দে না থাকলেও হার্দিক থাকা মানে প্রতিপক্ষ চাপে থাকবে। অধিনায়ক হিসাবে সফল তিনি। তাই হার্দিক না থাকায় কিছুটা হলেও সুবিধা হবে কেকেআরের।
মুন্নি চৌধুরী: অবশেষে অপেক্ষার অবসান। চলে এসেছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ৩১শে মার্চ শুরু হতে চলেছে আইপিএল (IPL)। তবে এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে রয়েছে একাধিক চমক। সিনেমায় রোম্যান্টিক গান হোক বা ইমোশনাল গান, সবেতে একটা নাম সবার আগে উঠে আসে। তা হল অরিজিৎ সিং (Arijit Singh)। আট থেকে আশি সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এবার আইপিএল-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা যাবে তাঁকে। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হতে চলেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটানস (Gujarat Titans) এবং মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) (Chennai Super Kings)। এবার আইপিএল-র প্রথম ম্যাচ হতে চলেছে আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আইপিএল ২০২৩ ফাইনাল হবে আগামী ২৮ মে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে শেষবার আইপিএল-এর জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয় ভারতে। তারপর করোনার কারণে বর্ণাঢ্য ভাবে আয়োজন করা যায়নি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। অবশেষে ৪ বছর পর এবার ফের আইপিএল-র উদ্বোধনে জৌলুস ফিরছে। হোম ও অ্য়াওয়ে ফর্ম্যাটে চলবে লিগের খেলা। এবার আবার পুরনো রূপে ফিরেছে আইপিএল-২০২৩।
গুজরাট টাইটানস-এর নতুন নেতা হার্দিক পাণ্ডে। গত আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করে রকেট উত্থান হয় হার্দিকের। বলা যায়, পাকাপাকিভাবে টি-টোয়েন্টিতে দলনেতা হওয়ার দিকে এগিয়ে গিয়েছেন অনেকটা। আর সেই হার্দিকের ২২ গজে অন্যতম অনুপ্রেরণা মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে হার্দিককে বারবার বলতে শোনা গিয়েছে, ধোনি মন্ত্রেই বিশ্বাসী তিনি। আইপিএল-র দুনিয়ায় এক্সপেরিয়েন্সের এভারেস্ট বলা হয় ধোনিকে। এবার একেবারে শুরুর দিনই গুরু বনাম শিষ্যের লড়াই হতে চলেছে। সকল ক্রিকেটপ্রেমীরা মুখিয়ে রয়েছেন লড়াইয়ের ফলাফলের দিকে।
তবে গত আইপিএল-এ যে জল্পনা উঠেছিল এবারও তা জিঁইয়ে রয়েছে। আইপিএল ক্রিকেটার হিসেবে মহেন্দ্র সিং ধোনির এটিই শেষ মরশুম হতে চলেছে বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে ধোনি নিজে কিছু জানাননি। তবে ধোনিপ্রেমীদের অল্পবিস্তর মন খারাপও রয়েছে। কারণ, জানা গিয়েছে, ক্যাপ্টেন কুলের বাঁ পায়ে চোট রয়েছে। তবে সেটা যাতে গুরুতর না হয় সেই প্রার্থনায় করছেন ভক্তরা।
উল্লেখ্য, আইপিএল-র সাফল্য় তালিকায় রোহিত শর্মার পরেই রয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এবার ধোনি যদি চেন্নাই সুপার কিংসকে চ্যাম্পিয়ন করাতে পারেন তাহলে রোহিতের কীর্তি স্পর্শ করবেন মাহি। এটা ধোনির শেষ আইপিএল মরশুম কিনা সে ব্যাপারে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রোহিত বলেন, 'তিনি গত ২-৩ বছর ধরেই শুনে আসছেন এটাই ধোনির শেষ মরশুম। কিন্তু এমএস যা ফিট রয়েছেন, তাতে আরও কয়েক মরশুম খেলা চালিয়ে যেতেই পারেন।' আর এই খবরে উচ্ছ্বসিত সিএসকে ফ্যানরা।