
শিক্ষা সম্মেলন হয়ে গেল। কিন্তু অভিযোগ ডাকা হল না রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যদের। তবে রাজ্যের নিযুক্ত রেজিস্ট্রারদের এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এই সম্মেলনে রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যদের না ডাকার কারণ হিসাবে রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যরা অনুপ্রবেশকারীদের মতো।
এই সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে ফের উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী। সাফ জানান, সিভি আনন্দ বোস নিযুক্ত উপাচার্যদের বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে কলকাতায় বসতে চলেছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। তার আগে একটি বণিকসভার সহায়তায় শুক্রবার একটি শিক্ষা সম্মেলনের আয়োজন করেছিল শিক্ষা দফতর। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দেশ-বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা আদায়ের দাবিতে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিও দিয়েছিলেন। সেই চিঠি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, অবশেষে ওই চিঠির জবাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বুধবার রাজভবনে রাজ্যপাল সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো জবাবি চিঠির বিষয়টি জানান তিনি। ইতিমধ্যে ওই চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও পাঠিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকার কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। যদিও ওই চিঠিতে ঠিক কী বলা হয়েছে সেবিষয়ে কিছু জানাননি রাজ্যপাল।
কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে এবং ১০০ দিনের কাজের টাকার দাবিতে প্রথমে দিল্লিতে ধরনা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর কলকাতাতে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসেন তিনি। অবশেষে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেন তিনি।
একাধিক ইস্যুতে রাজ্য-রাজভবন সম্পর্কে চির ধরেছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী একে অপরকে ব্যাপক কটাক্ষ করেছেন। শনিবার সন্ধে নাগাদ স্পেন সফর শেষ করে রাজ্যে ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই ফের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে রাজ্যপালের লেখা ওই চিঠির বিষয়বস্তু কী তা জানা যায়নি। তবে সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফর সম্পর্কে জানতেই ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীকে এই প্রথম চিঠি পাঠাননি রাজ্যপাল। এর আগেও একাধিকবার রাজভবনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এমনকী মধ্যরাতেও চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
একাধিক চিঠি পাঠালেও রাজ্য- রাজভবন সম্পর্কের কোনও উন্নতিই হয়নি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গলাতেও রাজ্যপালের কটাক্ষ শুনতে শোনা গিয়েছে। এই অবস্থায় শনি রাতে রাজভবনের তরফে হঠাৎ কেন চিঠি পাঠানো হল সেবিষয়ে প্রশ্ন উঠছেই।
'শিক্ষা ব্যাবস্থা ব্যক্তিগত অহংয়ের জায়গা নয়,' রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সার্চ কমিটি গঠনের নির্দেশ শীর্ষ আদালতের। বাংলার উপাচার্য নিয়োগ বিতর্কে এবার নয়া মোড়। এবার নিয়োগ জট মেটাতে সার্চ কমিটি গঠন করবে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল, ইউজিসি-কে নাম জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এক সপ্তাহের মধ্যে সেই নামের প্রস্তাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবারের শুনানিতে বিচারপতিরা রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, যদি আদালত একটি সার্চ কমিটি গঠন করতে চায়, তাহলে তাঁদের কী বক্তব্য। রাজ্য সরকারের তরফে একটি আবেদন করা হয়, তাহলে কমিটিতে কে কে থাকবেন, সেই দায়িত্বও আদালত যেন নেয়। আদালতই দায়িত্ব নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করে দিক।
রাজ্যপাল ও UGC-র তরফ থেকেও আইনজীবীরা জানিয়ে দেন, তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট তিন পক্ষকেই বলে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি তৈরির জন্য তিন থেকে পাঁচ জন বিশেষজ্ঞের প্রস্তাবিত নামের তালিকা তৈরি করতে। সেই প্যানেল থেকেই বিশেষজ্ঞদের কমিটি তৈরি করবে শীর্ষ আদালত। তার ভিত্তিতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি হবে। একটি সার্চ কমিটি গঠন করবে সুপ্রিম কোর্ট।
মূলত রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এই সার্চ কমিটি। অর্থাৎ উপাচার্য নিয়োগে পুরো রাশ নিজের হাতে নিল শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, এর আগের শুনানিতে আদালত স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিল, রাজ্যপাল অর্থাৎ চ্যান্সেলর, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে শিক্ষামন্ত্রীকে আলোচনায় বসতে হবে। রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বার করতে হবে। শুক্রবারের শুনানিতে সেই বিষয়টি আবার উত্থাপিত হয়। আদালত এদিনও জানতে চায়, আদৌ রাজ্য সরকার ও রাজ্যপাল এই ধরনের কোনও আলোচনায় বসেছিল কিনা।
আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে মানহানির নোটিস। প্রাক্তন উপাচার্যদের তরফে চার পাতার এই নোটিস পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যপালের কোনও এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, আচার্য ক্ষমা না চাইলে মামলার পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাক্তন উপাচার্যরা।
বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন প্রাক্তন উপাচার্যরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্র, দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা, আশুতোষ ঘোষেরা। তাঁদের অভিযোগ, বাংলার শিক্ষাকে ধ্বংস করছেন রাজ্যপাল আইন মেনে কিছুই করছেন না। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুন। তাঁদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তারই প্রতিবাদ স্বরূপ মানহানির নোটিস পাঠানো হয়েছে তাঁকে।
সম্প্রতি,রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, সরকার মনোনীত উপাচার্যদের নিয়োগ করা যায়নি, কারণ তাঁরা কেউ দুর্নীতিগ্রস্থ, কেউ রাজনীতির খেলা খেলেছেন, কেউ আবার ছাত্রীদের হেনস্থা করেছেন। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে।
গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত চলছে। রাজ্যকে না জানিয়েই একাধিক অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস, আর তা নিয়েই শুরু বিতর্ক। এবার আগুনে পড়ল আরও ঘি। ১৫ জন রেজিস্ট্রারকে শো-কজের সিদ্ধান্ত শিক্ষা দফতরের। বিকাশ ভবনে এই সংক্রান্ত বৈঠকে যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদেরকেই শো-কাজের সিদ্ধান্ত।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নেতৃত্বে শুক্রবার বিকাশভবনে একটি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে রেজিস্ট্রারদের গরহাজিরা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। এদিকে রাজ্যপালের তরফে চিঠি দিয়ে এই বৈঠকে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা ছিল রেজিস্ট্রারদের কাছে। সব মিলিয়ে তথৈবচ অবস্থা। কিন্তু বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় শিগগিরিই তাঁদের কাছে শো-কোজ নোটিস পৌঁছে যাবে বলে খবর।
জি-২০ সামিটের সাফল্য কামনায় বাবুঘাটে গঙ্গা পুজো করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এদিন ভোর ৬টার সময় সেখানে পৌঁছন তিনি। এরপর গঙ্গার ঘাটে মন্ত্রোচ্চারণ, ফুল, আরতির মাধ্যমে গঙ্গা পুজো দেন রাজ্যপাল। হাত জোড় করে জি ২০ সাফল্যের কামনা করে প্রার্থনা করেন। একইসঙ্গে, বাংলা যাতে দুর্নীতি মুক্ত ও হিংসা মুক্ত হয়, তার জন্যও প্রার্থনা করেন।
রাজ্যপাল এদিন গঙ্গা পুজোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "গোটা বিশ্বের কাছে ভারতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চ হল জি২০ এবং ভারত তার সেই লক্ষে ইতিমধ্যেই যাত্রা শুরু করেছে তাই জি২০-এর সাফল্য, ভারতের সাফল্য এবং পশ্চিমবঙ্গের সাফল্যের জন্য এই পুজো করা হয়েছে।"
শুক্রবার বাবুঘাটে রাজ্যপালের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধদেব সাউ-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন বাবুঘাটে।
শনিবার থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে জি ২০ সামিট। সেই উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে রাজধানী। ২০টি দেশের রাষ্ট্রনেতারা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। বৃহস্পতিবারই ভারতে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রাষ্ট্রনেতাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বিদেশ থেকে বিলাসবহুল গাড়ি আনানো হয়েছে দিল্লিতে। সূত্রের খবর, খোদাই করা রুপোর এবং সোনার পাত্রে খাবার পরিবেশন করা হবে অতিথিদের
রাজ্যপালের অনুমোদনের কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ এটা আইন নয়, প্রস্তাব। পশ্চিমবঙ্গ দিবস বিতর্কে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । জুন নয়, অক্টোবরও নয়, পয়লা বৈশাখই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন নিয়ে অনড় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ১ বৈশাখই হবে পশ্চিমবঙ্গ দিবস। যদিও বিজেপির বক্তব্য, প্রস্তাব বিধানসভায় পাশ করানো গেলেও রাজ্যপালের অনুমোদন পাওয়া যাবে না। তাই তাঁদের দাবি, রাজ্য দিবসের প্রস্তাব পাশ হলেও তা কার্যকর করা যাবে না। তারই জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এটি প্রস্তাব মাত্র। কোনও আইন নয়। তাই এতে রাজভবনের অনুমোদনের কোনও প্রয়োজনই নেই। তবু, সৌজন্যের খাতিরে প্রস্তাবটি রাজভবনে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন মমতা।
বৃহস্পতিবার তুমুল হইহট্টগোল দিয়ে শুরু হয় বিধানসভার অধিবেশন। প্রথমে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি এবং গেরুয়া মানচিত্র আঁকা জামা পরে বিধানসভায় প্রবেশ করেন বিজেপি বিধায়করা। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি তোলেন স্পিকার।
এরপর বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ নিজের বক্তব্য রাখার সময় স্পষ্ট জানিয়ে দেন ২০ জুন ছাড়া বাংলা দিবস পালন করা অসম্ভব। অন্যদিকে ১৬ অক্টোবর বাংলা দিবস পালন করার দাবি তোলেন আই এস এফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁর কথায় ওই দিন বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়েছিল। সেকারণে ওই দিনটি বাংলা দিবস পালন করা যেতে পারে।
ধরণা প্রসঙ্গে মমতাকে কটাক্ষের পর রাজ্য শিক্ষা দফতরকেও এক হাত নিলেন রাজ্যপাল বোস। দিল্লি থেকে বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষাকে দুর্নীতি মুক্ত করার বার্তা দেন। তিনি বলেন,'শিক্ষাক্ষেত্রকে মাফিয়া মুক্ত করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দুর্নীতির আখড়া চলতে পারে না’ তবে এ দিন ইংরেজিতে নয়, আচার্য বোসকে দেখা গেল বাংলা বলতে।
এর আগে আচার্যের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বাংলার একটি প্রবাদ উল্লেখ করে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, “রাজ্যপাল বাংলা প্রবাদকেই মান্যতা দিলেন। যাহা চালভাজা, তাহাই মুড়ি। যিনি আচার্য, তিনিই উপাচার্য।” আজ রাজ্যপাল পাল্টা পুরো বাংলা ভাষাতেই ৫ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি বার্তা পাঠান রাজভবন থেকে। সেই বার্তাতেই স্পষ্ট কেন তিনি সরকারের পছন্দ মত উপাচার্য নিয়োগ করতে চান নি।
সি ভি আনন্দ বোস বলেছেন, “হিংসামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত হওয়া প্রয়োজন। বাংলার শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে এটা বেআইনি-বেআইনি-বেআইনি। সব উপাচার্যকে ইস্তাফা দিতে হয়েছে।” বোস বলেন, “আমি চ্যান্সেলার হিসাবে নিয়োগ করেছি উপাচার্যদের। সরকার বলেছে সেগুলি বেআইনি নিয়োগ। হাইকোর্ট বলেছে আমি ঠিক।' এরপরেই তিনি বলেন, ' রাজ্য সরকারের পছন্দ মত উপাচার্যদের মধ্যে কেউ ছিল দুর্নীতি পরায়ণ, আবার কেউ ছাত্রী নিগ্রহে অভিযুক্ত। কিংবা কেউ রাজনীতির খেলা করছে।'
'ধরণা দিতে চান, রাজভবনে ভিতরে আসুন।' মমতার পাল্টা কটাক্ষ রাজ্যপাল বোসের গলায়। শিক্ষক দিবসের দিন রাজভবনের সামনে ধরনায় বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই হুঙ্কারের দু’দিনের মাথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবার আন্দোলনে স্বাগত জানালেন রাজ্যপাল বোস। ফলে শিক্ষায় রাজভবন-নবান্ন সংঘাতে এবার নয়া মোড় দেখা গেল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের পাল্টা মুখ খুললেন এবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
বুধবার দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেছেন রাজ্যপাল। রাজভবন যাওয়ার পূর্বে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে দু’হাত জোড় করে বলেন, “আমার সাংবিধানিক সহকর্মী মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত তাঁর প্রতিবাদ আন্দোলনের জন্য। করজোড়ে রাজভবনের ভেতরেই তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি।”
রাজ্য শিক্ষাদফতরের সঙ্গে আলোচনা না করেই উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন রাজ্যপাল বোস। এই নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এখন চরমে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত কড়া ভাষায় রাজ্যপালকে বিঁধেছেন। কখনও পাঙ্গা না নেওয়ার হুঁশিয়ারি তো কখনও রাজ্যপাল কর্তৃক উপাচার্যদের বেতন বন্ধের হুঙ্কার দিতে দেখা গিয়েছে তাঁদের।
গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন কোনও রকম রাখঢাক না করেই কার্যত সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা। বলেন, “শিক্ষাব্যবস্থাকে বাঁচাতে প্রয়োজনে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসব।” মুখ্যমন্ত্রীর সেই হুঁশিয়ার পর কেটেছে দুটো দিন। আজ রাজ্যপাল ফিরেছেন কলকাতায়। আর বঙ্গে এসে মুখ্যমন্ত্রীর ধরনা দেওয়ার হুঁশিয়ারিকে কার্যত হাসিমুখে স্বাগত জানাতে দেখা গেল তাঁকে।
ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক। মঙ্গলবার মাঝরাতে কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। আর তার ফলে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত আরও বাড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই রাজ্যপালের নাম না করে তাঁর এই উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, তাতেও কোনও লাভ হয়নি। কোনও কিছু তোয়াক্কা না করে নিজের কাজে ব্রতী রাজ্যপাল।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার মাঝরাতে রাজ্যপাল কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য হিসাবে অধ্যাপক কাজল দে-কে নিয়োগ করছেন। রাজ্যপালের নিয়োগপত্রে সই করার ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। রাজভবনের তরফে উপাচার্য নিয়োগের খবর প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
রাজ্যপাল বলেছিলেন, নতুন করে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আচার্য হিসাবে তিনি নিজেই ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতিকালীন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। শুধু তাই নয়, অভিযোগ রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। যা নিয়ে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকে ফের রাজ্যপালের প্রসঙ্গ তুললেন তিনি। জানালেন, রাজ্যপাল পদাধিকার বলে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হলেও অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রাজ্যপালের কথা মেনে চললে আর্থিক সাহায্য করবে না রাজ্য। মঙ্গলবার এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যপালের কথা শুনে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি চলবে তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক অবরোধ তৈরির ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য়পালের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত পৌঁছল আরও চরমে। মঙ্গলবার সকালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।
রাজ্যপাল তথা আচার্যের নাম উল্লেখ না করেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নির্দেশ মেনে চললে আর্থিক অবরোধ করা হবে। এমনকী রাজভবনের সামনে ধর্নাতেও তিনি বসতে পারেন বলেও ঘোষণা করেছেন।
মঙ্গলবার ধনধান্য অডিটরিয়ামে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন। তাঁর অভিযোগ, শিক্ষাব্যবস্থাকে স্তব্ধ করিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করেছেন রাজ্যপাল। এরপরেই আর্থিক অবরোধ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন তিনি। সরাসরি জানিয়ে দেন, এরকম চলতে থাকলে অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন,"আমি বলে দিচ্ছি, এই যদি চলতে থাকে তাহলে অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করা হবে। দেখি কে চালায়।" তারসঙ্গে মনে করিয়ে দেন, রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রধান হলেও অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ব়্যাগিং রুখতে তৎপর আচার্য সিভি আনন্দ বোস। সেক্ষেত্রে তাঁর ভরসা এখন প্রযুক্তিই। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন আনন্দ বোস। চন্দ্রযান -৩ এর সাফল্যকে সামনে রেখে ব়্যাগিং নির্মূল করতে ইসরোর প্রযুক্তি কাজে লাগাতে চাইছেন রাজ্যপাল।
ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন রাজ্যপাল বোস। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে র্যাগিং রুখতে উপযুক্ত প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এমনকী এই বিষয়ে হায়দরাবাদে অ্যাডভান্সড ডেটা প্রসেসিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁর। জানা গিয়েছে, এই আলোচনা দ্রুত বাস্তবে পরিণত করতে তৎপর রাজ্যপাল। বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় বাংলা। একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছিলেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। এছাড়াও একাধিক বিভাগের অধ্যাপকরাও ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। যদিও, ওই বৈঠকে আলোচনা কী হয়েছে, তা জানা যায়নি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্তের অনুরোধ করে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দের কাছে চিঠি দিল পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। তদন্তে কী উঠে এল তা জানতে রিপোর্টও চেয়েছে তারা। এবিষয়ে একটি প্রেস বিবৃতিও প্রকাশ করেছে তারা।
ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে এক ছাত্রের মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন উদ্বিগ্ন। আবাসিকদের মধ্যে কয়েকজন বেআইনিভাবে সেখানে থাকছেন বলেও জানা গিয়েছে। সেকারণে যেহেতু রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সেকারণে উপযুক্ত তদন্তের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করা হয়েছে।
পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে একটি চিঠিও দিয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশন। এখনও পর্যন্ত তদন্তের গতিপ্রকৃতি কোনদিকে এবং কী কী বিষয় উঠে এসেছে সেবিষয়ে জানতে চেয়ে একটি রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত সৌরভ চৌধুরীকে ২২ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার সন্ধে নাগাদ প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এবং শনিবার দুপুরে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে নজিরবিহীন ঘটনা। রাজ্যেপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য। রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এক্রিয়ারের বাইরে গিয়ে উপাচার্য নিয়োগের অভিযোগ করা হয়েছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এবার একই অভিযোগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, রাজ্য-রাজনীতিতে রাজভবন বনাম রাজ্যের সংঘাতে এই ঘটনা নয়া মোড়। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি অভিযোগ করেছেন, উপাচার্য নিয়োগে কোনও আইন মানছেন না সিভি আনন্দ বোস। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আবেদন গৃহীত হয়েছে। এ নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত কী বলে সে দিকেই আগামী দিনে নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।
এদিকে, তাঁর নিয়োগ করা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মাস খানেক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অমিতাভ দত্ত। কিন্তু তিনি প্রাপ্য সমস্ত সুবিধা নিচ্ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। একই দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তারপর শুক্রবার তাঁকে আচমকা উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। তবে কী কারণে এই সিদ্ধান্ত তা জানা যায়নি।